সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টেকেরঘাট সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে এক বৃদ্ধাকে মারধর করেছে বিএসএফ। এ সময় তাদের গুলিতে এক যুবক গুরুতর আহত হয়েছেন।
গুলিবিদ্ধ দেলোয়ার হোসেন তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের বুরুঙ্গাছড়া গ্রামের রাশিদ মিয়ার ছেলে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে বুরুঙ্গাছড়া গ্রামের পেছনে সীমান্তবর্তী একটি কূপে গোসল করতে যান এক বৃদ্ধা। এ সময় সীমান্তের ওপারে বিএসএফের টহল দলের সদস্যরা সীমান্ত এলাকায় কেন প্রশ্ন করে তাকে বেধড়ক মারধর করে।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রামের লোকজন এসে এর প্রতিবাদ করলে বিএসএফের ১৫/২০জনের একটি দল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বুরুঙ্গাছড়া গ্রামে ঢুকে গুলি চালায়। এ সময় ২৭ বছর বয়সী দেলোয়ার তে গুলিবিদ্ধ হন।
সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুবুর রহমান নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তাহিরপুর সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের লাঠির আঘাতে একজন মহিলা আহত হয়েছেন। তাছাড়া একজনের শরীরে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। আমরা ইতোমধ্যে পতাকা বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ ঘটনায় প্রতিবাদলিপি পাঠানো হবে।’
প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে গুলির কথা স্বীকার
এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়। এতে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন ট্যাকেরঘাট কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার জাফর আহমদ ও বিএসএফের পক্ষে শিলং ১৯৩ ব্যাটালিয়নের বড়ছড়া কোম্পানি কমান্ডার দিলিপ শিং।
১৫ মিনিট স্থায়ী এই বৈঠকে পতাকা বৈঠকে প্রথমে গুলি চালানোর ঘটনা বিএসএফ অস্বীকার করে। পরে বিজিবির পক্ষ থেকে ঘটনা ও আহতদের ছবি দেখালে বিএসএফ স্বীকার করে।
ট্যাকেরঘাট কোম্পানি কমান্ডার জাফর আহমেদ বলেন, ‘প্রথমে তারা ফায়ারিংয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে। আমরা তা চ্যালেঞ্জ করে ঘটনা ও আহতদের ছবি দেখালে তারা বলেন যে হলে হতেও পারে।’
তারা শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গুলি চালানোর বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন বলে বিজিবিকে আশ্বস্ত করেন।
বিএসএফ অভিযোগ করে, বাংলাদেশি নাগরিকদের ইট-পাটকেলের আঘাতে বিএসএফের ৮ থেকে ১০ জন সদস্য আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন:সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, আনিসুল হক, দীপু মনি ও সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খানের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ তাদের কারাগার থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এসময় তদন্তকারী কর্মকর্তারা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের সাতদিন করে রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন রেজার আদালত তাদের বিভিন্ন মেয়াদের রিমান্ডের আদেশ দেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গুলিতে ওবায়দুল ইসলাম নিহতের মামলায় হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, দীপু মনিকে চার দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকায় মো. সুজন নামের এক ব্যক্তি গুলিতে নিহতের মামলায় আনিসুল হকের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এ আন্দোলনের সময় মোহাম্মদপুরের বসিলায় মিরাজুল ইসলাম অর্ণব নিহতের মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খানের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
ইনু, মেনন, দীপু মনির মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত ৪ আগস্ট বিকেল পাঁচটার দিকে যাত্রাবাড়ীর কাজলা পেট্রোল পাম্পের সামনে আওয়ামী লীগের নেতাসহ ১৪ দলের নেতাকর্মীরা অবৈধ অস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে হাজার হাজার জনতার ওপর গুলি চালায়। এতে ওবায়দুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৫৮ জনকে আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন নিহতের আত্মীয় মো. আলী।
আনিসুল হকের মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ২০ জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলায় আওয়ামী লীগ পার্টি অফিসের সামনে মো. সুজন নামের এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো. রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন।
সাদেক খানের মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলায় গত ১৯ জুলাই অংশ নেন মিরাজুল ইসলাম অর্ণব। পরে আসামিদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
আরও পড়ুন:মানবপাচারের শিকার হয়ে মিয়ানমারের স্ক্যাম সেন্টারে বন্দি জীবন কাটানো ১৮ বাংলাদেশি অবশেষে দেশে ফিরছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ১টায় থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরেছেন তারা। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, ভালো চাকরি ও বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে মানব পাচারকারীরা দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে এই বাংলাদেশিদের প্রথমে থাইল্যান্ডে নিয়ে যায়। সেখান থেকে নেওয়া হয় মিয়ানমারের স্ক্যাম সেন্টারে। সেখানে পাচারকারীরা তাদের দিয়ে জোরপূর্বক সাইবার অপরাধমূলক কাজে করাতো। কেউ রাজি না হলে বৈদ্যুতিক শক দেওয়াসহ ভয়াবহ সব নির্যাতন করা হতো।
ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান (মাইগ্রেশন এন্ড ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম) বলেন, ‘ভুক্তভোগীদের পরিবারের পক্ষ থেকে তাদেরকে উদ্ধারের জন্যে ব্র্যাকের সঙ্গে যোগযোগ করে। এরপর আমরা বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সিআইডি ও থাইল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করি। সবার নিরলস প্রচেষ্টায় দুঃসহ বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছেন ১৮ বাংলাদেশি।’
উদ্ধার পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন, ওমর ফারুক, রাশেদুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলিফ, রায়হান সোবহান, শেখ আরমান, পাভেল চৌধুরী, মনির হোসেন, ইসমাইল হোসেন, নিজাম উদ্দীন, জহির উদ্দিন, তানভীর আকন্দ রাফি, তোয়ানুর খলিলুল্লাহ, সায়মন হোসেন, উজ্জ্বল হোসেন, মেহেদী হাসান, কায়সার হোসেন, শাহ আলম ও আকাশ আলী।
উদ্ধার বাংলাদেশিদের একজন চট্টগ্রামের আলিফ বলেন, ‘দুবাইতে আমি জাহাজে কাজ করতাম। আমাকে বেশি বেতনে ডাটা এন্ট্রির কাজের লোভ দেখিয়ে থাইল্যান্ড নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মানবপাচারকারীরা থাই-মিয়ানমার সীমান্তের ম্যাসটে নিয়ে যায়। যেখানে আমার মতো বিভিন্ন দেশের আরও অনেক মানুষকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বিক্রি করে দেওয়া হয় স্ক্যাম সেন্টারে। আমি ছয় মাস ভয়াবহ নির্যাতনের মধ্যে সেখানে বন্দি ছিলাম। জীবন বাঁচাতে আমি স্ক্যাম সেন্টারে কাজ করতে বাধ্য হই।’
সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পাচারকারীদের মূল হোতা ইফতেখারুল ইসলাম রনির বিরুদ্ধে মানব পাচারের অভিযোগে দেশের বিভিন্ন থানায় ৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা গত ১৮ জানুয়ারি তাকে চট্টগ্রাম এয়ারপোর্ট থেকে আটক করেছি। পাশাপাশি পাচারকারী চক্রের আরেক হোতা আব্দুল্লাহ আল নোমানকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন:বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বাসা থেকে অস্ত্র উদ্ধারের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ১৭ বছরের দণ্ড থেকে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে বাবরের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। জানা যায়, ২০০৭ সালের ২৮ মে বাবরের গুলশানের বাসার শোয়ার ঘর থেকে অবৈধ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করার অভিযোগে একই বছরের ৩ জুন রাজধানীর গুলশান থানায় এ মামলা হয়।
বিচার শেষে একই বছরের ৩০ অক্টোবর ঢাকার মহানগর নয় নম্বর বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালত বাবরকে ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে ২০০৭ সালেই আপিল করেন। এ মামলার কার্যক্রম হাইকোর্টের আদেশে স্থগিত ছিল। একই সঙ্গে রুল জারি করেন। এই রুল নিষ্পত্তি করে আজ হাইকোর্ট তার সাজা বাতিল করে রায় দেন।
২০০৭ সালের ২৮ মে আটক হন লুৎফুজ্জামান বাবর। সেই থেকে প্রায় ১৭ বছর কারাবন্দি ছিলেন বিএনপির এই নেতা।
এরপর বিভিন্ন মামলায় তার দণ্ড হয়। সেসব মামলা থেকে খালাস ও জামিনের পর চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্ত হন তিনি।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) যে ১২৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে, তাদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে।
এ তালিকায় চিহ্নিত অনেক হামলাকারীর নাম না থাকায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী।
বহিষ্কৃত এসব শিক্ষার্থী নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে খবর পাওয়া গেছে।
গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ১২৮ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই তালিকায় রয়েছে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ওয়ালি আসিফ ইনান ও ঢাবি শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নসহ আরও অনেকে।
তালিকায় নাম নেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত ও বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু ইউনুসের।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবি জুবায়ের বলেন, ‘তানভীর হাসান সৈকত, ইউনুসসহ স্পষ্ট ফুটেজ থাকা অনেক সন্ত্রাসীর নামই লিস্টে নাই। কাদের ইশারায় এই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, প্রশাসনকে তা স্পষ্ট জানাতে হবে। অপূর্ণাঙ্গ এই লিস্ট আমরা মানি না।’
সাবেক সমন্বয়ক রিফাত রশিদ লিখেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা ১২৮ জনের লিস্ট কারা তৈরি করছে, এইটা আমরা জানতে চাই। চোখের সামনে আমাদের যারা জসীম উদ্দীন হলের মাঠে ফেলে আমাকে আর হামজা ভাইকে পিটিয়ে মাথা ফাটানো মেহেদী হাসান শান্তের নাম নাই। আমার বোনদের যারা ভিসি চত্বরে পেটাল, তাদের নাম আসে নাই।’
তিনি লিখেন, ‘সবচেয়ে মজার ব্যাপার হইলো একটা সিঙ্গেল নারীকেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বহিষ্কার করে নাই। অথচ নির্যাতনের মাত্রা হিসাব করলে এরা পুরুষ ছাত্রলীগের থেকেও ভয়ংকর ছিল। নারী ছাত্রলীগার সন্ত্রাসীদের কারা শেল্টার দিচ্ছে?’
স্মৃতি আফরোজ সুমি লিখেন, ‘বহিষ্কৃতদের তালিকা করার তদন্তের দায়িত্ব কি কোনো লীগারকে দেওয়া হয়েছিলো? লিস্ট দেখে তো তাই মনে হচ্ছে। না হলে স্পষ্ট ফুটেজ, প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও প্রতি হল থেকে ১০ থেকে ১৫ জনের নাম বাদ পড়ে কীভাবে?’
সুমাইয়া ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী লিখেন, ‘১৫ জুলাই ছাত্রলীগের সবচেয়ে অমানবিক কাজ ছিল ঢাকা মেডিক্যালে হামলা। সেই হামলায় বেশির ভাগ হামলাকারী ছিল জগন্নাথ হলের। অথচ জগন্নাথ হল থেকে মাত্র দুজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। রিভু মন্ডল, রাজিব বিশ্বাসের মতো শীর্ষ সন্ত্রাসীরাও বাদ পড়ে গেল!’
এদিকে এই ঘটনায় তাৎক্ষণিক বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন এবি জুবায়ের।
১২৮ জনের তালিকায় দুইজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীই ছিলেন না, এমন নামও এসেছে।
তাদের কীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে এসবসহ শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য জানতে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জারি করা গণবিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে রিটের ক্ষেত্রে স্থগিত করেছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি কেএম রাশেদুজ্জামান রাজার সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার রুলসহ এ আদেশ দেন।
ইসির ওই গণবিজ্ঞপ্তি কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে উচ্চ আদালত।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদের (রেসপনডেন্ট) এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গণবিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতার স্থগিতাদেশ শুধু রিটকারীর দলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম।
নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জারি করা গণবিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুমের করা রিটের শুনানি শেষে আজ এ আদেশ দেন হাইকোর্ট।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবেদা গুলরুখ।
নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জারি করা গণবিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে রবিবার হাইকোর্টে রিটটি করা হয়।
রিটে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনের সচিব, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনকে বিবাদী (রেসপনডেন্ট) করা হয়।
গত ১০ মার্চ রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে নির্বাচন কমিশন। ওই গণবিজ্ঞপ্তির ভাষ্য, ১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০ (ক)-এর অধীন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন করতে ইচ্ছুক এবং ২০০৮ সালের রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালায় উল্লিখিত শর্ত পূরণে সক্ষম রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুসারে বিধিমালায় সংযোজিত ফরম-১ পূরণ করে ২০ এপ্রিলের মধ্যে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার আহ্বান জানানো যাচ্ছে।
আর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০ (ক) অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দল ৯০ (খ) উল্লিখিত শর্তাবলী পূরণ সাপেক্ষে কমিশনে দলের নাম নিবন্ধন করতে পারবে। ৯০ (খ) ধারায় জেলা, উপজেলা পর্যায়ে কার্যালয় ছাড়াও নিবন্ধনের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু শর্ত উল্লেখ রয়েছে। যেমন: কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সক্রিয় কেন্দ্রীয় অফিস থাকা, অনূর্ধ্ব এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় জেলা অফিস এবং অন্যূন ১০০টি উপজেলা বা ক্ষেত্রমতে মেট্রোপলিটন থানায় অফিস প্রতিষ্ঠা, যার প্রতিটিতে সদস্য হিসেবে ন্যূনতম ২০০ ভোটারের তালিকাভুক্তি ইত্যাদি।
রিটকারী আইনজীবী রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য কমপক্ষে ১০০ উপজেলা ও ২২ জেলায় দলের কমিটি থাকতে হবে বলে আইনে উল্লেখ রয়েছে। অথচ পার্বত্য তিন জেলায় ২০টি উপজেলা রয়েছে, যে কারণে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী আগ্রহী হলেও রাজনৈতিক দল নিবন্ধন করতে পারবে না।
‘স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের সময় ২০১১ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে ওই শর্ত যুক্ত করা হয়। ৫ শতাংশ উপজেলায় এবং ১০ শতাংশ জেলা কমিটি থাকাসহ সর্বমোট ৫ হাজার সদস্য থাকলে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দেওয়ার সুপারিশ করেছে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। এ অবস্থায় তড়িঘড়ি করে পুরনো আইনে ওই গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘সংবিধানে রাজনৈতিক দলের যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, এই গণবিজ্ঞপ্তি সেই চেতনার পরিপন্থি, এসব যুক্তিতে রিটটি করা হয়। আজ হাইকোর্ট রুলসহ স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগ শাসনামলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে গঠিত তদন্ত কমিশনের মেয়াদ আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
১৫ মার্চ থেকে কমিশনের মেয়াদ আরও সাড়ে ৩ মাস বাড়িয়ে সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
‘কমিশন অব ইনকোয়ারি অ্যাক্ট, ১৯৫৬’ অনুযায়ী ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে গত বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের মধ্যে গুমের ঘটনা তদন্তে গত ২৭ আগস্ট কমিশন গঠন করেছিল সরকার। পরে ১৫ সেপ্টেম্বর কমিশনের দায়িত্বে ও প্রতিবেদন দাখিলের সময়সীমায় পরিবর্তন আনা হয়।
পাঁচ সদস্যের এ কমিশনের সভাপতি হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী।
তদন্ত সম্পন্ন করে তিন মাসের মধ্যে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করার কথা ছিল কমিশনের। পরে সময় বাড়ানো হয়। বাড়ানো সেই সময় গত ১৪ মার্চ শেষ হয়।
তদন্ত কমিশন ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, তদন্তকারী সংস্থা ও অনুরূপ যেকোনো বাহিনী বা সংস্থার কোনো সদস্য বা সরকারের মদদে, সহায়তায় বা সম্মতিতে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তি সমষ্টির ‘আয়নাঘর’ বা যেকোনো জ্ঞাত বা অজ্ঞাত স্থানে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান, তাদের শনাক্ত করা ও কোনো পরিস্থিতিতে গুম হয়েছিল— তা নির্ধারণ করা এবং সেই উদ্দেশ্যে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যসহ যেকোনো ব্যক্তি বা সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহের কাজ করছে।
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টা মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রসচিব নাসিমুল গনি এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বক্তব্য দেন।
মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ এবং রাজশাহীর পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম।
মন্তব্য