যুক্তরাষ্ট্রে ১৪টি বাড়ি কেনার অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান। তার দাবি, ১৪টি নয়, যুক্তরাষ্ট্রে শুধু একটি বাড়ি তার স্ত্রীর নামে কেনা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ওয়াসা ভবনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তাকসিম এ দাবি করেন।
তিনি বলেন, ‘গত সোমবার একটি দৈনিকে আমার নামে যুক্তরাষ্ট্রে ১৪টি বাড়ি কেনার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এটা ডাহা মিথ্যা। এর কোনো সত্যতা নেই। ১৪টি নয়, শুধু একটি বাড়ি আমার স্ত্রীর নামে কেনা। বাকি কোনোটিই আমার বা পরিবারের কারও নয়।’
ওয়াসার এমডি আরও বলেন, ‘প্রকাশিত প্রতিবেদনে যে ১৪টি বাড়ির কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে ৫টি বাড়িতে আমার পরিবার বিভিন্ন সময় ভাড়া থেকেছে। আর একটি বাড়ি আমার স্ত্রীর নামে। আমি, আমার স্ত্রী, সন্তান সবাই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।’
স্ত্রী-সন্তান যুক্তরাষ্ট্রে ‘ওয়েল স্টাবলিশড’ জানিয়ে তাকসিম এ খান বলেন, ‘সেখানে একটি বাড়ি কেনায় খুব অসুবিধার কিছু নেই। আমার স্ত্রীর নামেই ওই একটা বাড়ি আছে। সেটাকেও বাড়ি বলা যাবে না, এটা একটা অ্যাপার্টমেন্ট।’
‘ওয়াসার তাকসিমের যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ বাড়ি!’ শিরোনামে সোমবার দৈনিকটিতে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক শহরে ১৪টি বাড়ি কিনেছেন ঢাকা ওয়াসার এমডি তাকসিম। বাড়িগুলোর দাম হাজার কোটি টাকার বেশি, যেগুলো তিনি বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থে কিনেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।’
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘ঢাকা ওয়াসার শীর্ষ এ কর্মকর্তার বাড়ি কেনার টাকার উৎস ও লেনদেনের তথ্য খতিয়ে দেখছে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল ও একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা।’
সংবাদটিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘আমেরিকায় তাকসিমের বাড়ি কেনা এবং অর্থ পাচারকারী হিসেবে আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থায় তার নাম থাকা নিয়ে দুটি অভিযোগ জমা পড়েছে দুদকে।’
প্রকাশিত এই সংবাদ আদালতের নজরে আনা হলে সোমবার হাইকোর্ট অভিযোগের জোর তদন্তের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন:
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগের পলায়নের পর বিএনপিকেও রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে সরিয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে রাজনীতি শূন্য করতে দেশি-বিদেশি মহলের প্ররোচনায় আবারও একটি নতুন ‘মাইনাস-টু ফর্মুলা’ সক্রিয় হয়েছে।
এক সাক্ষাৎকারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে আব্বাস বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ, খাগড়াছড়ির সাজেক ও নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালকে কেন্দ্র করে ‘অশুভ উদ্দেশ্য’ সাধনে সচেষ্ট মহলগুলো দেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে একটি গুরুতর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল বিভিন্ন অজুহাতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার মাধ্যমে এমন চক্রান্তকারীদের ফাঁদে পা দিচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস ঘোষিত ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন না হলে দেশকে বড় ধরনের খেসারত দিতে হবে বলেও সতর্ক করেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা।
আব্বাস বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন নতুন এক মাইনাস-টু ফর্মুলা চালু হয়েছে, যা ১/১১ সময়কার মাইনাস-টু ফর্মুলার মতোই। আগেরবার সেটি এসেছিল সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে। আর এবার দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা ভিন্ন আকারে একই চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।’
তিনি বলেন, এসব অপচেষ্টার অংশ হিসেবে একটি গোষ্ঠী সমন্বিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা ও রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে বিএনপিকে ‘খারাপ’ বা ‘অবিশ্বস্ত’ রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছে।
তিনি অভিযোগ করেন, এখনো প্রশাসনের ভেতরের আওয়ামীপন্থি ব্যক্তি এবং রাজনৈতিক ও আদর্শিক গোষ্ঠীর একাংশ বিএনপিকে দুর্বল করতে সক্রিয় রয়েছে। ‘তারা মনে করছে, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা দেশের বাইরে থাকা অবস্থায় বিএনপিকে সরিয়ে দিতে পারলেই দেশের শাসন ক্ষমতা তাদের হাতে চলে যাবে।’
আব্বাস বলেন, ‘যারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল রাখতে চায়, তারাই নিজেদের স্বার্থে নতুন করে মাইনাস-টু ফর্মুলা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। ১/১১–তে এটি এক রূপে এসেছিল, তখন একটি সেনাসমর্থিত সরকার ছিল। এখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতার বাইরে থাকায় ভিন্ন ধরনের ‘মাইনাস-বিএনপি ফর্মুলা’ চালানো হচ্ছে।
কারা এর পেছনে রয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে আব্বাস বলেন, ‘শয়তান নানা ছদ্মবেশে আসে। একই দেশি-বিদেশি মাস্টারমাইন্ডরা নতুনভাবে মাইনাস-টু ফর্মুলা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে।’
তার মতে, এই প্রচেষ্ঠার উদ্দেশ্য একমাত্র বিএনপিকে দুর্বল বা সরিয়ে দিয়ে দেশের রাজনীতি নিজেদের স্বার্থে নিয়ন্ত্রণ করা। এই পরিকল্পনায় পিছনে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা সক্রিয়।
আব্বাস দাবি করেন, অনেক আওয়ামী লীগ সমর্থক আমলা আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে, কারণ তারা মনে করছে বিএনপিকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিলে তাদের ব্যক্তি স্বার্থ হাসিল হবে। ‘প্রতিশোধপরায়ণ মনোভাব থেকে তারা বিএনপিকে বাদ দিতে চায়।’
তিনি বলেন, এমনকি কিছু রাজনৈতিক দলও এই সুরে সুর মিলিয়ে বলছে, বিএনপি এখন সেই একই পথে এগোচ্ছে, যা একসময় আওয়ামী লীগ অনুসরণ করেছিল।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ইসলামী দলসহ কয়েকটি রাজনৈতিক শক্তি নানা ইস্যু উত্থাপন করছে, যাতে ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পথ রুদ্ধ হয়।
‘একটি দল তো বলছে, তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত নির্বাচন হতে দেবে না। তারা ফ্যাসিবাদীদের মতো আচরণ করছে’ যোগ করেন আব্বাস।
এই পরিস্থিতিতে আব্বাস দেশের জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ‘আমরা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছি, নিজ দেশের মাটি অন্যদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নয়।’ তার মতে, নতুন মাইনাস-টু ফর্মুলা বাস্তবায়নের চেষ্টা এবং সেন্ট মার্টিন, সাজেক ও নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনাল নিয়ে বিদেশিদের সঙ্গে আলোচনাও আসলে একই সূত্রে গাঁথা, ভিন্ন কোনো বিষয় নয়।
বিএনপির এই নেতা মনে করেন, আগামী নির্বাচন অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং হবে। বিএনপির বিপুল জনপ্রিয়তা থাকায় কিছু মহল প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে। ‘কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, জনগণ বিএনপিকে ভালোবাসে, মিথ্যা প্রচারণায় কেউ দলের জনপ্রিয়তা ক্ষুণ্ন করতে পারবে না,’ বলেন তিনি।
মির্জা আব্বাস বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রশাসন থেকে আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠদের সরাতে হবে। ‘অন্যথায়, সুষ্ঠু নির্বাচন করা কঠিন হবে।’ বিএনপি সাংগঠনিকভাবে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত এবং ফেব্রুয়ারিতে ভোটের প্রত্যাশায় রয়েছে বলে জানান তিনি।
সম্ভাব্য জোট নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে আব্বাসের ধারণা, কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে, যা সফল হলে দেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের ফেব্রুয়ারিতে ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘোষণার প্রতি আস্থা প্রকাশ করে আব্বাস বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করতে চাই, নির্বাচন সঠিক সময়েই হবে।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না—এ বিষয়ে আব্বাস বলেন, এটি তার ইচ্ছা ও শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করছে। এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ‘খালেদা জিয়া নিজেও এ বিষয়ে কিছু বলেননি।’
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে খালেদা জিয়ার কোনো ভূমিকা থাকবে কি না—এমন প্রশ্নে আব্বাস বলেন, সময়ই এই প্রশ্নের উত্তর দেবে।
ইসলামী দলগুলোর জোট গঠনের চেষ্টা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বিএনপি এতে চিন্তিত নয়। ‘বাংলাদেশের জনগণ উদারপন্থি মুসলিম, তারা সাম্প্রদায়িকতাকে নয়, গণতান্ত্রিক ও মধ্যপন্থি দলকেই পছন্দ করে।’
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি বাসায় বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে ফ্রিজের কম্প্রেসার বিস্ফোরণে একই পরিবারের নারী ও শিশুসহ ৯ জন দগ্ধ হয়েছেন।
শনিবার (২৩ আগস্ট) ভোর সাড়ে ৩টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের হিরাঝিল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে দগ্ধদের উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়।
দগ্ধরা হলেন, আসমা বেগম (৩৫), তানজিল ইসলাম (৪০), তিশা (১৭), আরাফাত (১৫), হাসান (৩৫), মুনতাহা (১১), জান্নাত (৪), ইমাম উদ্দিন (১ মাস) ও সালমা বেগম (৩২)।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক সার্জন ডা. সুলতান মাহমুদ শিকদার জানান, শিশুসহ দগ্ধ ৯ জন আমাদের এখানে এসেছে। তাদের মধ্যে, হাসানের শরীরের ৪৪ শতাংশ, জান্নাতের ৪০ শতাংশ, মুনতাহার ৩৭ শতাংশ, সালমার ৪৮ শতাংশ, শিশু ইমামের ৩০ শতাংশ, আরাফাতের ১৫ শতাংশ, তিশার ৫৩ শতাংশ ও আসমার ৪৮ শতাংশ দগ্ধ হয়। তাদের সবার অবস্থায়ই আশঙ্কাজনক। তাদের মধ্যে শুধু তানজিল ইসলামকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
দগ্ধদের হাসপাতালে নিয়ে আসা রাকিবুল ইসলাম জানান, দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে হঠাৎ গ্যাস পাইপলাইন থেকে বিস্ফোরণে শিশুসহ দগ্ধ হয় ৯ জন। পরে তাদের উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসলে ভর্তি দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, আসমা বেগমের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর থানা চকগদ্দর গ্রামে। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার হিরাঝিল এলাকায় থাকতেন তারা। আসমা বেগম, তানজিল ইসলাম, তিশা, আরাফাত হলেন একই পরিবারের সদস্য। মোহাম্মদ হাসান তার স্ত্রী সালমা বেগম, মুনতাহা, জান্নাত ও ইমাম উদ্দিন, তারা সবাই একই পরিবারের। তাদের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার বাউফল থানার জৌদা গ্রামে। তারাই সবাই একই সঙ্গে থাকতেন। আসমা বেগম একজন পোশাক শ্রমিক ও হাসান দিনমজুরের কাজ করেন।
এ বিষয়ে আদমজী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. মিরন মিয়া বলেন , প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ফ্রিজে সরাসরি বৈদ্যুতিক লাইন দেওয়া ছিল। বৈদ্যুতিক লাইনের শর্ট-সার্কিট থেকে প্রথমে আগুন ধরে যায়, সেই আগুন থেকে ফ্রিজের কম্প্রেসার বিস্ফোরণ হয়। এতে পরিবারের সদস্যরা দগ্ধ হন। আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার আগেই স্থানীয়রা দগ্ধদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যান।”
তিনি আরও বলেন , “আমরা আশপাশে কিংবা ঘরের ভেতরে অন্য কোনো ধরনের গ্যাসের আলামত পাইনি। সবকিছুই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ফ্রিজের কম্প্রেসার থেকেই বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছিল।”
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আনুপাতিক পদ্ধতি বা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন সংবিধানে নেই। সংবিধানের বাইরে আমরা যেতে পারি না। যদি আইন পরিবর্তন হয় তাহলে এই পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে।
শনিবার (২৩ আগস্ট) সকাল ১০টায় রাজশাহী আঞ্চলিক লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রাজশাহী অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আগে তিনি এসব কথা বলেন।
এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচন হবে কি হবে না, এ নিয়ে কোনো রাজনৈতিক দলের বক্তব্যের ভেতর আমরা যেতে চাই না। প্রধান উপদেষ্টার কথা অনুযায়ী আমরা এগিয়ে যেতে চাই।’
‘প্রধান উপদেষ্টার চিঠি পাওয়ার পর থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি জোরদার করা হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে রমজানের আগে যাতে নির্বাচন হয় তার জোর প্রস্তুতি চলছে।’
কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, এ বিতর্ক নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আনুপাতিক পদ্ধতি বা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন সংবিধানে নেই। সংবিধানের বাইরে আমরা যেতে পারি না। এটা নিয়ে তর্ক বিতর্ক চলছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। আমি এর মধ্যে ঢুকতে চাই না। যদি আইন পরিবর্তন হয় তাহলে হবে।’
তিনি বলেন, ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স নয়, সেনাবাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আমরা কাজ করছি। সেনাবাহিনী যাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত হয় সেই ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। জেলা প্রশাসক বা পুলিশ সুপার যারা এর আগে নির্বাচনের দায়িত্বে ছিল, তাদের পদায়নের চিন্তা নেই।’
বিগত সরকার আমলে দায়িত্ব পালন করা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের অধীনে ৫৭০০ কর্মকর্তা রয়েছে। তারা আগেও দায়িত্ব পালন করেছেন। এদের কোথায় পাঠাব? তবে যারা স্বপ্রণোদিত হয়ে বিগত নির্বাচনে অনিয়ম করেছিল, সেইসব নির্বাচন কর্মকর্তাদের রাখা হবে না’
সরকারের কোনো চাপ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই সরকার নির্বাচন নিয়ে আমাকে এখন পর্যন্ত কোনো চাপ দেয়নি। যদি চাপ দেয়, আমি পদত্যাগ করব, চেয়ারে থাকব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের এই মুহূর্তে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নেই। তাদের বিচার চলছে। বিচার চলাকালীন আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। দেখা যাক বিচারে কী হয়।’
সিইসি বলেন, ‘ভোট আসতে আসতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে রমজানের আগে যাতে নির্বাচন হয় তার জোর প্রস্তুতি চলছে। যারা বাক্স দখল করার স্বপ্নে বিভোর, তাদের স্বপ্নভঙ্গ হবে।’
‘যারা অস্ত্রবাজি করে ভোটে জিততে চাইবেন তাদের জন্য দুঃসংবাদ। ভোটকেন্দ্র দখলের ইতিহাস ভুলে যান। আমরা কঠোর অবস্থানে থাকব। ভোটকেন্দ্র দখলের চেষ্টা করলে পুরো কেন্দ্রের ভোট বাতিল করা হবে।’
পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সভায় রাজশাহী অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্বাচন বিষয়ে নানা দিকনির্দেশনা দেন।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তের মহিষকুন্ডি মুন্সিপাড়া এলাকায় পদ্মানদীতে কার্গো ট্রলারে স্থানীয় যুবকদের পিকনিক চলাকালে অভিযান চালিয়ে মাদকসহ দুই যুবককে আটক করেছে বিজিবি। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়।
আটকরা হলেন— রাব্বী হোসেন (২০), মহিষকুন্ডি পাকুড়িয়া গ্রামের হানিফ হোসেনের ছেলে এবং অনিক হোসেন (১৮), ডাকপাড়া গ্রামের মৃত ইমদাদুল হকের ছেলে।
ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল হাই সিদ্দিকী রায় প্রদান করেন। এতে রাব্বী হোসেনকে ২ মাসের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, আর অনিক হোসেনকে ৭ দিনের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে আশ্রায়ন বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার পদ্মানদীতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ওই কার্গো ট্রলার থেকে ৩ বোতল মদ, ৩৪৩ গ্রাম গাঁজা এবং ২ প্যাকেট পাতার বিড়ি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মাদকের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫ হাজার ৮১০ টাকা।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবির সহকারী পরিচালক জাকিরুল ইসলাম জানান, আটক দুই যুবককে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল জরিমানা প্রদান করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় আকিব ফার্মেসিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যাকমো (SACMO) চিকিৎসক শফিকুল ইসলামের ভুল চিকিৎসায় হাত-পা হারানো শিশু তানভীর (৮) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
শুক্রবার (২২ আগষ্ট) দিবাগত রাত ২:৩০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিশুটির বাবা মো: মোসলেম।
তানভীরের বাবা মোসলেম কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, আমার বুকের ধন আর নেই, আমাদের সবাইকে ফাকি দিয়ে আমার কলিজা আল্লাহর মেহমান হয়ে গেছে। আমার ছেলেটা পঙ্গু হয়েও যদি এই দুনিয়ায় বেচে থাকতো তাকে কোলে-পিঠে করে তার খেদমত করতাম। ঢাকা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকদের সকল চেষ্টাকে হার মানিয়ে গতরাত আড়াইটার দিকে আমার মানিক দুনিয়া থেকে বিদায় নিছে।
এদিকে শিশু তানভীরের মৃত্যুর খবরে তার গ্রামের বাড়ি কাচিয়া ইউনিয়নের ফুলকাচিয়া গ্রাম সহ পুরো উপজেলায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। আজ আছর বাদ জানাযা নামাজ শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
প্রসঙ্গত গত ৪ মাস আগে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে আকিবের ফার্মেসিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যাকমো শফিকুল ইসলামের ভুল চিকিৎসার পর থেকেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পরেন তানভীর। এরপর তার জীবন বাচাতে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিশুটির চার হাত-পা কেটে ফেলা হয়।
এ ঘটনায় শিশুটির মা গত ১৬ জুলাই ভোলা জেলা দায়রা জজ আদালতে স্যাকমো শফিকুল ইসলাম ও ফার্মেসি মালিক আকিবের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পুলিশ স্যাকমো শফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে, তিনি এখনো ভোলা জেলা কারাগারে রয়েছে। এ মামলার অন্যতম আসামি আকিব কে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নিদর্শনায় ঢাকা উত্তর মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক শরীফ উদ্দিন জুয়েলের নেতৃত্বে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পানিবন্দী অসহায় পরিবারগুলোর মাঝে ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করা হয়েছে।
শনিবার (২৩ আগস্ট) সকাল থেকে শুরু হয়ে দিনব্যাপী চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের প্রায় ২০০০ পরিবারকে ত্রাণ দেওয়া হয়।
এই ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে খাদ্যসামগ্রী, বিশুদ্ধ পানি, এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়।
শরীফ উদ্দিন জুয়েল ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের সময় বলেন, "বর্তমান দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে বিএনপি সর্বদা সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত। আমাদের দলের পক্ষে এটা শুধু ত্রাণ বিতরণ নয়, মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ ও ভালোবাসা প্রদর্শন।"
তিনি আরো বলেন, "পানিবন্দী মানুষের সঠিক সহায়তা নিশ্চিত করা আমাদের নৈতিক কর্তব্য। আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের পাশে দাঁড়ানোই প্রকৃত রাজনীতি।"
এছাড়া, তিনি স্থানীয় যুবদল, ছাত্রদল এবং অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ত্রাণ বিতরণে সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানান।
ত্রাণ বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলহাজ আলতাফ হোসেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ন আহব্বায়ক আবিদ হাসান সরকার মন্টি সরকার, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব রেজাউর রহমান মাসুম, উপজেলা কৃষক দলের আহবায়ক আরিফুর রহমান নান্নুসহ যুবদল, ছাত্রদল এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
ত্রাণ সহায়তা বিতরণে অংশগ্রহণকারী অসহায় বানভাসি মানুষরা আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে তাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি জানান।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লায় পদুয়ার বাজার ইউটার্নে লরির নিচে চাপা পড়ে একই পরিবারের চারজন নিহতের ঘটনায় হানিফ পরিবহনসহ লরির অজ্ঞাতনামা চালকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া সেনাবাহিনী, হাইওয়ে পুলিশ ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের সমন্বিত মতামতের ভিত্তিতে পদুয়ার বাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সামনে ইউটার্ন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না দেয়া পর্যন্ত সদর দক্ষিণ উপজেলার দয়াপুর ইউ টার্ন থেকে সকল যানবাহন ঘুরে আসতে হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আদনান বিন হাসান।
তিনি জানান, পদুয়ার বাজার ইউটার্ন এলাকাটি সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, হাইওয়ে পুলিশ ও ভারতের জনপদ বিভাগের কর্মকর্তারা পরিদর্শন করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রবিবার সড়ক ও যোগাযোগ বিষয়ক একটি সমন্বিত সভা রয়েছে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে।
সেখান থেকে সমন্বিত ভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আপাতত এই ইউটার্নটি বন্ধ থাকবে।
কুমিল্লা ময়নামতি হাইওয়ে ক্রসিং থানার উপ পরিদর্শক মোঃ আনিসুর রহমান জানান, গতকাল শুক্রবার দুপুরে পদুয়ার বাজার ইউটার্নে চলন্ত লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাইভেট কারকে চাপা দিলে একই পরিবারের চারজন নিহত হয়। এই ঘটনায় নিহত ওমর আলীর ভাই আবুল কালাম বাদী হয়ে উল্টো পথে আসা হানিফ পরিবহন এবং লরির চালকসহ অন্যান্য অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। সদর দক্ষিণ থানায় এই মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
কাল শুক্রবার দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ারবাজারে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সামনে ইউটার্নে সিমেন্ট বাহি লরির নিচে প্রাইভেট কার চাপা পরে একই পরিবারের চারজন নিহত হয়। এছাড়াও একই সময়ে ওই লরির সামনের অংশের নিচে চাপা পড়ে সিএনজির তিন যাত্রী আহত হয়। নিহতরা হলেন কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের মোহাম্মদ ওমর আলী(৮০), তার স্ত্রী নুরজাহান বেগম(৬৫), তার৷ বড় ছেলে আবুল হাশেম (৫০)ও ছোট ছেলে আবুল কাশেম(৪৫)। প্রাইভেটকারটি চালাচ্ছিলেন আবুল হাশেম।
মন্তব্য