ক্লুলেস ক্রাইম আইডেন্টিফাই করতে সাংবাদিকদের ভূমিকা খুবই জরুরি। সেজন্য শুধু গতানুগতিক নিউজ নয়, অনুসন্ধানের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরতে হবে ক্রাইম রিপোর্টারদের তাগিদ দিয়েছেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু।
সোমবার সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এ কথা বলেন।
ডেপুটি স্পিকার বলেন, ক্রাইম রিপোর্টিং এক দুঃসাহসিক অভিযান। সাংবাদিকরা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্কিল বৃদ্ধি করলে উপকৃত হবেন। সেইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও অসাধ্যকে সাধন করবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত আইজিপি ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ, র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
বার্ষিক সাধারণ সভার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ক্র্যাবের সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল, স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিকু। এছাড়াও ক্র্যাবের সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
‘রাতে শুনতে প্যানু যে হাঁর ছ্যালাকে পিটিয়া ম্যারা ফ্যালাছে। হ্যামার ছ্যালা দোষী লয়, হামি হাঁর ছ্যালাকে মারার বিচার চায়।’
আহাজারি করে কথাগুলো বলছিলেন রাকিবুল ইসলামের (রাকিব) মা। রাজশাহীতে পিটিয়ে মেরে ফেলা দুই শ্রমিকের একজন এই রাকিব।
ছেলের মৃত্যুর খবরে মা বেদনা বেগমের কান্না আর থামছে না। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহী নগরীতে এই ঘটনা ঘটলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জে মায়ের কাছে এই খবর পৌঁছে রাত ১২টায়।
রাজশাহীতে খাদ্যপণ্য প্রস্তুতকারী একটি প্রতিষ্ঠানের মালিকের বাসায় দুই নির্মাণ শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় কারখানা মালিকসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। মহানগরীর বিসিক শিল্প এলাকায় বৃহস্পতিবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রাকিবের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চৈতন্যপুর গ্রামে। শুক্রবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের মানুষ রাকিবের এমন করুণ মৃত্যুর খবরে হতবাক। তারা বলছেন, রাকিবকে তারা ভালো ছেলে হিসেবেই চেনেন, জানেন।
চৈতন্যপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে রাকিবুল ইসলাম ছিলেন সবার বড়। গত ৮ বছর ধরে তিনি রাজশাহীতে থেকে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। স্ত্রী শ্যামলী খাতুন এবং দুই মেয়ে রাবিয়া বাসরী ও রাইসা খাতুনকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।
স্বজনরা জানান, রাকিব নির্মাণ শ্রমিকদের সর্দার বা ঠিকাদার ছিলেন। বিভিন্ন নির্মাণ কাছে তিনি গ্রাম থেকে শ্রমিকদের নিয়ে যেতেন।
প্রতিবেশী শাহানারা বেগম বলেন, ‘বিনা অপরাধে একটা নির্দোষ ছেলেকে ওরা মিটিয়ে ম্যারা ফেলল; এটার সত্য বিচার চাই। দেশে আইন আদালত আছে, থানা-পুলিশ আছে। কোনো কিছু না কর্যার পরও কোনো মানুষ এভাবে মারা ফেল্যা দিতে পারে? এখন ওই যে দুটো ছোট ছোট মেয়ে আছে, স্ত্রীটা আছে, এদের কী হবে? এখন পরিবারটার কী হবে?’
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহ সদরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের লোকদের ছুরিকাঘাতে বাবা ও ছেলেকে হত্যার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
ময়মনসিংহ র্যাব-১৪ সদর দপ্তরের অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকার সাভার থানাধীন বাইপাইল ও গাজীপুরের জয়দেবপুর থানাধীন টিএন্ডটি মোড় এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন সদর উপজেলার ভাবখালী ইউনিয়নের চুরখাই এলাকার মৃত আব্দুল আজিজের ৫২ বছর বয়সী ছেলে কামাল হোসেন, তার ৪০ বছর বয়সী স্ত্রী জাহানারা, তাদের ১৫ বছর বয়সী এক ছেলে এবং নবী হোসেনের ১৯ বছর বয়সী ছেলে মো. নাঈম।
নিহতরা হলেন একই এলাকার ৬০ বছর বয়সী আবুল খায়ের ও তার ২০ বছর বয়সী ছেলে ফরহাদ হোসেন।
র্যাব-১৪ সদর দপ্তরের অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান জানান, বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে নিজ জমিতে আবুল খায়ের হাল চাষ করছিল। এ সময় কামাল হোসেনের সঙ্গে জমির মাপযোপ করা নিয়ে তার কথা-কাটাকাটি হয়। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে কামাল হোসেন তার স্ত্রী, ছেলেসহ কয়েকজনকে ডেকে আনে।
পরে তারা ধারালো দা, চাকু, বাঁশের লাঠি ও লোহার রড নিয়ে এসে আবুল খায়েরকে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে। এ অবস্থায় তার ডাক-চিৎকারে ছোট ছেলে ফরহাদসহ অন্যান্য ছেলে, ভাই ও ভাইয়ের ছেলে বাঁচাতে আসলে কামাল হোসেনের নেতৃত্বে সবাইকেই এলোপাথারিভাবে মারধর করা হয়।
স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আবুল খায়ের ও তার ছেলে ফরহাদ হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় নিহত আবুল খায়েরের ছেলে কোতয়ালি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই হত্যায় জাড়িতরা পলাতক ছিলেন। ঘটনাটি র্যাব জানতে পেরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের পালিয়ে থাকার অবস্থান জানতে পেরে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে।’
অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান আরও বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যায় তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। তাদেরকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:সিলেটের এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড্ডয়ন সময়ের বিকট শব্দে একটি বোয়িং উড়োজাহাজের চাকা পাংচার হয়ে গেছে।
ওই সময় পুরো উড়োজাহাজে ঝাঁকুনি শুরু হয়, যাতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ১৪৮ যাত্রী, তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ওসমানী বিমানবন্দরের রানওয়েতে শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে ওই ঘটনা ঘটে।
সে সময় থেকে ওসমানীতে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ রয়েছে। বিকল্প ফ্লাইটে যাত্রীদের ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, বিমানের বোয়িং-৭৩৭ উড়োজাহাজটির ১৪৮ যাত্রী নিয়ে সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশে দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে উড্ডয়নের কথা ছিল। এটি রানওয়েতে যাত্রা শুরুর পরপর বিকট শব্দে পেছনের চাকা ফেটে যায়। ওই সময় পুরো উড়োজাহাজে তীব্র ঝাঁকুনির সৃষ্টি হয়।
ওই ফ্লাইটের যাত্রী মোস্তাক হায়াত খান বলেন, ‘হঠাৎ করে বিকট শব্দ হয়। এরপর বিমানটিতে ঝাঁকুনি শুরু হয়। এতে যাত্রীদের সকলেই ভয় পেয়ে যান। কেউ কেউ চিৎকারও শুরু করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঝাঁকুনি শুরু হলে পাইলট বিমানের গতি কিছুটা কমান। এরপর আবার উড্ডয়নের চেষ্টা করেন। তখন আবার ঝাঁকুনি শুরু হয়। পরে তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, পেছনের চাকা পাংচার হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার পর প্রায় ৪০ মিনিট আমরা বিমানের ভেতরে আটকে ছিলাম। পরে আমাদের বিমানবন্দরের লাউঞ্জে আনা হয়।’
চাকা ফেটে রানওয়েতে উড়োজাহাজ আটকে থাকার কারণে ওসমানীতে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ রয়েছে জানিয়ে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমদ বলেন, ‘ওই উড়োজাহাজের চাকা মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। মেরামতের পর এটি রানওয়ে থেকে সরিয়ে বিমানবন্দরের ফ্লাইট ওঠানামা সচল করা হবে।’
বিকেলের দিকে বিমানবন্দেরর কার্যক্রম স্বাভাবিক হতে পারে বলেও জানান তিনি।
দুর্ঘটনার কারণে যাত্রীদের কোনো ক্ষতি হয়নি জানিয়ে হাফিজ আহমদ বলেন, ‘আটকে পড়া যাত্রীদের বিমান কর্তৃপক্ষ বিকল্প ফ্লাইটে ঢাকায় নিয়ে যাবে।’
আরও পড়ুন:রাজশাহীর গোদাগাড়ী সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে নদীপথে প্রতি মাসেই হেরোইন আনা হয় জানিয়ে র্যাব বলেছে, চক্রের নারী সদস্যদের মাধ্যমে সেসব মাদক পৌঁছানো হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর ও নওগাঁয় বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে ৫ কেজি ৪০০ গ্রাম হেরোইনসহ চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পাওয়ার কথা জানায় বাহিনীটি।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন শাকিবুর রহমান, তার স্ত্রী সেলিনা খাতুন ও শাকিবের সহযোগী রাজিয়া খাতুন।
র্যাব জানায়, নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে প্রতিনিয়ত ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম করে মাদক সরবরাহ করত চক্রটি। প্রতিটি চালান পরিবহনের জন্য বহনকারীকে দেয়া হতো ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। মাদকের চালান বেশি থাকলে শাকিব নিজেই মোটরসাইকেলে তা পৌঁছে দিতেন। সাধারণত মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হেরোইন বিক্রির টাকা লেনদেন করা হতো।
সংবাদ সম্মেলনে কী জানানো হলো
তিনজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে র্যাব, যাতে বক্তব্য দেন বাহিনীর লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, র্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১২-এর অভিযানে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে প্রায় তিন কেজি হেরোইনসহ শাকিবুর ও রাজিয়াকে আটক করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নওগাঁয় শাকিবের বাসা থেকে ২ কেজির বেশি হেরোইনসহ তার স্ত্রী সেলিনাকে আটক করা হয়।
গ্রেপ্তার তিনজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, শাকিব এই চক্রের অন্যতম হোতা। ইতোপূর্বে তিনি চুরিতে জড়িত থাকলেও প্রায় ২ বছর ধরে মাদক কারবার চালিয়ে আসছিলেন।
তিনি জানান, শাকিব সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে হেরোইন সংগ্রহ করে প্রথমে নিজের বাড়িতে সংরক্ষণ করতেন। পরবর্তী সময়ে মাদকদ্রব্যটি চাহিদা অনুযায়ী বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, গাজীপুর, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করতেন।
র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, শাকিবের স্ত্রী সেলিনা স্বামীর মাদক কারবারের সহযোগী। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আনা হেরোইনের চালান প্রথমে শাকিব নিজ বাড়িতে তার স্ত্রীর কাছে রাখতেন। বিভিন্ন সময় আস্থাভাজন মাদক কারবারিরা বাড়িতে গেলে সেলিনা তাদের হেরোইন সরবরাহ করতেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শাকিবের মাদক চক্রের অন্যতম সহযোগী হিসেবে প্রায় ১ বছর ধরে কাজ করে আসছেন গ্রেপ্তার রাজিয়া, যিনি রাজশাহী, বগুড়া, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় হেরোইন সরবরাহ করতেন। এ ছাড়া কয়েকবার শাকিবের সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে বিভিন্ন স্থানে হেরোইন সরবরাহও করেছেন তিনি। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার গাজীপুর ও সাভারের বিভিন্ন স্থানে হেরোইন সরবরাহের জন্য নওগাঁ থেকে শাকিবের সঙ্গে রওনা হন রাজিয়া। পথে গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকায় তাদের আটক করে র্যাব।
এক প্রশ্নের জবাবে র্যাবের কমান্ডার বলেন, এর আগে শাকিবের বিরুদ্ধে এলাকায় চুরির অভিযোগ থাকলেও এবারই প্রথম তিনি মাদকসহ আটক হয়েছেন। তিনিসহ চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে দেশের বাইরে মাদক পাঠানোর তথ্য পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত শাকিবের চক্রে ১০ থেকে ১২ জন জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে, যাদের অধিকাংশই নারী।
আরও পড়ুন:নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পারিবারিক কলহের জেরে গৃহবধূকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে।
উপজেলার চেঙ্গারকান্দি গ্রামে বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ৩২ বছর বয়সী আঁখি বেগম পিরোজপুর ইউনিয়নের চেঙ্গাকান্দি গ্রামের ইব্রাহিম প্রধানের মেয়ে। ঘটনার পর থেকে পলাতক আছেন তার স্বামী সাঈদুল ইসলাম। তিনি ওই একই গ্রামের বাসিন্দা।
সোনারগাঁ থানার পুলিশ পরির্দশক আহসান হাবিব নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানান।
স্থানীয় ও ওই গৃহবধূর শিশু সন্তানদের বরাতে তিনি জানান, পারিবারিক কলহের জেরে সাঈদুলের সঙ্গে প্রায় ঝগড়া হতো আঁখি বেগমের। বৃহস্পতিবার রাতেও তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে ঝগড়া হয়।
পরে আঁখিকে মারধর করে হাত-পা বেঁধে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় সাইদুল। পরে ঘর থেকে তার দুই সন্তানের চিৎকার শুনে লোকজন গিয়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তার রক্তাক্ত মুখ থেতলানো অবস্থায় দেখতে পায়। পরে স্থানীয়রা অচেতন অবস্থায় তাকে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ওই গৃহবধূকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
স্বজনরা জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে সাইদুলের সঙ্গে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় আখিঁর। তাদের দুই ছেলে ও চার মাসের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই স্বামী সাঈদুল তাকে নানা অজুহাতে মারধর করত। এ নিয়ে পরিবারের লোকজন শালিসও করেছে।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুব আলম জানান, ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত তার পলাতক স্বামীকে আটকের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যামামলা হবে।
আরও পড়ুন:দেশের ছয়টি আসনের উপনির্বাচনে কম ভোটার উপস্থিতি নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাকে ‘বানোয়াট’ আখ্যা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ক্ষমতাসীন দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা শুক্রবার এক বিবৃতিতে এমন আখ্যা দেন।
বিএনপির ছেড়ে দেয়া ছয়টি আসনে বুধবার যে উপনির্বাচন হয়, তাতে সামগ্রিক ভোটার পরিস্থিতি ৫ শতাংশের বেশি হয়নি বলে বৃহস্পতিবার দাবি করেন মির্জা ফখরুল।
রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুযায়ী, কোনো আসনে ভোটার উপস্থিতি ১৫ থেকে ২৫ শতাংশের বেশি নয়, তবে বিএনপির হিসাব বলছে, সংখ্যাটা ৫ শতাংশের বেশি হবে না।
ওই বক্তব্যের এক দিন পর দেয়া বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, উপনির্বাচনে সরকার পরিবর্তনের বিষয় থাকে না বলে জাতীয় নির্বাচনের তুলনায় এ নিয়ে ভোটারদের আগ্রহ কম থাকে।
তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি আরও বাড়বে এবং মানুষ ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ভোট দেবে।
উপনির্বাচন নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বুধবার অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনগুলোয় ভোটারের উপস্থিতি নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছেন। তিনি বিএনপির এক হিসাব তুলে ধরে বলেছেন, উপনির্বাচনগুলোয় ভোটার উপস্থিতি ৫ শতাংশের বেশি হয়নি, যা সম্পূর্ণভাবে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।’
কাদের আরও বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের লক্ষ্যে এ ধরনের নির্লজ্জ মিথ্যাচার করেছেন। প্রচণ্ড শীত ও প্রতিকূল আবহাওয়া উপেক্ষা করে ভোটাররা ভোট দিতে এসেছিলেন। সবগুলো উপনির্বাচনে ২৫ শতাংশের বেশি ভোটাররা ভোট প্রদান করেছেন।’
‘এমনকি ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৪৫ শতাংশের মতো। উপনির্বাচনে যেহেতু সরকার পরিবর্তনের কোনো বিষয় থাকে না, সেহেতু জাতীয় নির্বাচনের তুলনায় এটা নিয়ে ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ কম থাকে।’
আরও পড়ুন:বাগেরহাটের রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে চুরি হওয়া প্রায় অর্ধকোটি টাকার কয়লা গ্রেডিং মেশিন উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় চারজনকে আটক করা হয়েছে।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার ওই চারজনকে আটক করা হয়।
আটকরা হলেন রামপালের বর্ণী গ্রামের বাদশা শেখ, পিরোজপুরের নরখালি গ্রামের রাব্বি ইসলাম, ফকিরহাটের চিত্রা গ্রামের কার্তিক শীল ও খাজুরা গ্রামের আবুল কারিম।
রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) রাধে শ্যাম সরকার নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিত্বে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকা থেকে চারজনকে আটক করা হয়। পরে আটকদের তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার যাত্রাবাড়ি থেকে চুরি হওয়া মেশিনটি উদ্ধার করে। গত ১৬ জানুয়ারি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে মেশিনটি চুরি হয়।’
মন্তব্য