× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
A bunch of demands from the police week that the home minister said
google_news print-icon

পুলিশ সপ্তাহে একগুচ্ছ দাবি, যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

পুলিশ-সপ্তাহে-একগুচ্ছ-দাবি-যা-বললেন-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
রাজারবাগ পুলিশ লাইন টেলিকম অডিটরিয়ামে শনিবার রাতে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। ছবি: নিউজবাংলা
আইজিপির র‍্যাংক ব্যাচ ফোর স্টার করা,‌ পুলিশ হাসপাতালকে মেডিক্যাল কলেজ করা, বঙ্গবন্ধু ইউনিভার্সিটি অফ পুলিশ অ্যান্ড ক্রিমিনাল জাস্টিস নামে পুলিশের জন্য বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় করাসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন কর্মকর্তারা।

পুলিশ সপ্তাহের পঞ্চম দিনে নিজেদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরেছেন এই বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।‌ রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনে শনিবার রাতে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে এসব দাবি তুলে ধরা হয়।

পুলিশের পক্ষ থেকে তুলে ধরা দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী কাগজে-কলমে পুলিশ অধিদপ্তর চায় না; তারা চায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার হিসেবে লিখতে।

এ ছাড়া আইজিপির র‍্যাংক ব্যাচ ফোর স্টার করা,‌ পুলিশ হাসপাতালকে মেডিক্যাল কলেজ করা, বঙ্গবন্ধু ইউনিভার্সিটি অফ পুলিশ অ্যান্ড ক্রিমিনাল জাস্টিস নামে পুলিশের জন্য বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় করাসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন তারা।

রাজারবাগ পুলিশ লাইন টেলিকম অডিটরিয়ামে রাত ৮টায় মতবিনিময় সভা শুরু হয়ে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলে।

সভায় পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি তুলে ধরার পর বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘চাকরিরত অবস্থায় পুলিশ সদস্য মারা গেলে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি যৌক্তিক দাবি। সিনিয়র সচিব এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, সাইবার জগতটা আমাদের জন্য নতুন। অপরাধীরা এই জায়গাটায় অত্যন্ত সক্রিয়। এখানে আমাদের অনেক কিছু করতে হবে। আমাদের সাইবার ইউনিট আরও শক্তিশালী করতে হবে।

‘নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি এসেছে। যত বেশি আমরা পুলিশকে প্রশিক্ষণ দিতে পারব, তত বেশি দক্ষ পুলিশ বাহিনী তৈরি হবে। এ দাবিটাও যৌক্তিক।’

উপস্থিত কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রূপান্তরের দাবি এসেছে। আপনাদের হাসপাতালটি ইতোমধ্যে ভালো মানের একটি হাসপাতালে রূপান্তর করা হয়েছে। এটাকে আপনারা কলেজে রূপান্তরিত করতে চান।

‘আপনারা বিষয়টি আরও একটু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলবেন। কারণ আমাদের যে পরিমাণ মেডিক্যাল কলেজ আছে, কোনো কোনো মেডিক্যাল কলেজে তো শিক্ষকই নেই।’

‘বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আমাদের সচিব দেখবেন। প্রত্যেক বিভাগে একটি করে আধুনিক হাসপাতাল হবে- এটাও আমি যৌক্তিক দাবি মনে করি।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশকে সব জায়গায় যেতে হয়। তাই যানবাহনের প্রয়োজন আছে। যানবাহনের জন্য এবারও আমাদের বাজেট ছিল। অতিমারির ধকল যেতে না যেতেই ‌ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হয়েছে। যানবাহন সংগ্রহের বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান হবে এবং পুলিশের যানবাহনকে টপ প্রায়োরিটি দিতে হবে।’

পুলিশের পক্ষ থেকে উত্থাপিত অন্যান্য দাবির বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পঞ্চম গ্রেডের কর্মকর্তাদের বদলি ও পদোন্নতি পুলিশ হেডকোয়ার্টার কর্তৃক সম্পাদনের কথা বলা হয়েছে। এটাও আমাদের সচিব মহোদয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন। এটা কিভাবে আরও সুন্দর ও যুগোপযোগী করা যায় এবং আপনারা ভালো সেবা পান সেটা তিনি দেখবেন।

‘মন্ত্রণালয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স নামটি ব্যবহার করা...। এখানে কোনো সমস্যা নেই। কেন বলা হয় না এটা আমি নিজেও জানি না। সিনিয়র সচিব মহোদয়কে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে বলব। পুলিশে কর্মরত সিভিল স্টাফদের অবসরকালীন রেশন সুবিধা…। এটা অন্য বাহিনী পায় কি না আমরা চেক করে দেখব।’

পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আপনাদের পক্ষ থেকে উত্থাপন করা দাবির মধ্যে যেগুলো মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের সিনিয়র সচিব করতে পারবেন, তিনি ইমিডিয়েটলি করে দেবেন। আর যেগুলোতে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের প্রয়োজন পড়বে, সেগুলো পর্যায়ক্রমে এবং আলোচনা করে যৌক্তিক দাবিগুলো পূরণে আমরা চেষ্টা করব।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আরেকটি দাবি এসেছে- আমাদের আইজিপি মহোদয়কে সিনিয়র সচিব...। যেখানে আমরা বলছি সিনিয়র সচিব সেখানে তাকে সিনিয়র সচিব ঘোষণা দিতে বিলম্ব কেন আমার জানা নেই। যেগুলো কনফার্ম রয়েছে সেগুলো যেন তারা দ্রুত ভোগ করতে পারেন, সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখা উচিত।’

আরও পড়ুন:
নয়াপল্টনের ঘটনার বর্ণনা দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সড়কে সমাবেশ করতে দেয়া হবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বিএনপি সব সময় ষড়যন্ত্রের চিন্তা করে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ডিসেম্বরকে ‘মুক্তিযোদ্ধা মাস’ চান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সমাবেশের নামে বিশৃঙ্খলা করলে ভুল করবে বিএনপি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

মন্তব্য

আরও পড়ুন

তদন্ত কমিশনের সংবাদ সম্মেলন

গুমের শিকার ব‍্যক্তিদের চার ধরনের পরিণতি হতো

গুমের শিকার ব‍্যক্তিদের চার ধরনের পরিণতি হতো

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই গুম করা হতো বলে জানিয়েছেন গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। গুমের শিকার ব্যক্তিদের সম্ভাব্য ৪ ধরনের পরিণতি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে সংবাদ সম্মেলনে গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিটির সভাপতি এসব তথ্য জানান। কমিশনে দাখিল করা অভিযোগ বিশ্লেষণে এসব তথ্য দেন তিনি।

তিনি বলেন, গুমের শিকার ব্যক্তিদের সম্ভাব্য যে ৪ ধরনের পরিণতি হয়েছে, তা হলো: ১. গুমের শিকার ব্যক্তিকে হত্যা করা। ২. বিচারের আগেই মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করে জঙ্গি তকমা দিয়ে বাংলাদেশেই বিচারাধীন বা নতুন ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতার দেখানো।৩. তাকে সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাঠিয়ে সে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা করা। ৪. ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে, অল্পসংখ্যক ক্ষেত্রে মামলা না দিয়ে ছেড়ে দেওয়া।

গুম কমিশনের ২য় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন গত ৪ জুন প্রধান উপদেষ্টা বরাবর জমা দেওয়ার পর আজ দুপুরে রাজধানীর গুলশানে গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মইনুল ইসলাম চৌধুরী এ সব কথা বলেন।

গুম কমিশনের সভাপতি বলেন, বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকারের আমলে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি এবং ভিন্ন মতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত দমননীতির অংশ হিসেবে গুমকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরেও বহু অপরাধী ও তাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকায় অনেক জোরালো প্রমাণ ও নিদর্শন ধ্বংস, অনেক ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক অসহযোগিতা, সাক্ষীদের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানারকম ভীতিকর ও আতঙ্কজনক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। তবুও বহু ভুক্তভোগী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের অভিযোগ ও অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন। তারা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিস্তারিতভাবে সে কাহিনি তুলে ধরেছেন।

গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির সভাপতি আরো বলেন, বিগত সরকারের শাসনামলে গুম একটি সুশৃঙ্খল ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপে ‘জঙ্গিবাদবিরোধী’ অভিযানের ছায়াতলে ইসলামি উগ্রবাদের হুমকিকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করা, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন ও শাসন দীর্ঘায়িত করার উদ্দেশে পরিচালিত হয়েছিল। ভুক্তভোগীদের মধ্যে ছিলেন- মেধাবী শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক কর্মী ও সাংবাদিক থেকে সাধারণ জনগণ।

মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এ প্রক্রিয়ায় তারা ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে অস্ত্র বানিয়েছিল। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবাধীন করে এবং নির্যাতন ও গোপন আটকের সংস্কৃতি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে চালু করেছিল। এমনকি সাধারণ নাগরিকদের বেআইনি পন্থায় বারবার ভারতীয় বাহিনীর হাতেও তুলে দেওয়া হয়েছিল।

কমিশন অফ ইনকোয়ারি অ্যাক্টের ধারা ১০ এ(১) ও (২) অনুযায়ী কমিশনে দাখিলকৃত ১৩১টি অভিযোগের বিষয়ে আইন মোতাবেক জিডি রেকর্ডপূর্বক ভিকটিমদের সন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পুলিশ মহাপরিদর্শক বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, গোপন আটক কেন্দ্রের অস্তিত্ব এখন আর অস্বীকার করা যায় না। সকল ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীরা প্রায় একই ধরনের প্রক্রিয়ার শিকার হয়েছেন। পদ্ধতিগত নির্যাতন, সন্ত্রাসী হিসেবে প্রচার, একই ধরনের আইন অনুযায়ী অভিযোগ দায়ের ও একই ধরনের ভাষায় বর্ণনা। বিভিন্ন পটভূমি থেকে আসা ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতার এই সামঞ্জস্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে স্পষ্ট করে।

তিনি বলেন, প্রতিবেদনে ১৯ শতাংশ ফেরত না আসা ১২ জন ভিকটিমের বিষয়ে অগ্রগতি তুলে ধরেছি, যাদের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধান সম্পন্ন হয়েছে। তাদের গুমের জন্য কারা দায়ী, তা প্রাথমিকভাবে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। চলমান অনুসন্ধানের স্বার্থে এই মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।

ফিরে না আসা ভিকটিমদের বিষয়ে অপরাধী ও গুমের অপরাধ সংঘটনের স্থানসহ নানাবিধ বিষয়ে তথ্যের ঘাটতি বা পুরোনো কললিস্ট না পাওয়াসহ নানারকম বিলম্বঘটিত প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হলেও কমিশন আন্তরিকতার সঙ্গে অনুসন্ধান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

প্রতিবেদনে কমিশন সন্ত্রাসবিরোধী যে সব মামলায় অপব্যবহার হয়েছে, তা ন্যায় বিচারের মানদণ্ড বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতনের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়ার মতো উপযুক্ত কাউন্টার টেরোরিজম মেথড বের করার জন্য দুটি সুপারিশ করা হয়।

এ সময় গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির সদস্য অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত বিচারক মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকার কর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কমিশনের সদস্য নাবিলা ইদ্রিস, মানবাধিকার কর্মী ও কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The accused in the murder case

আদালত থেকে পালাল হত্যা মামলার আসামি

আদালত থেকে পালাল হত্যা মামলার আসামি

ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের এজলাস থেকে হাজতখানায় নেওয়ার পথে পুলিশকে মারধর করে পালিয়েছেন হত্যা মামলার এক আসামি।

আসামি শরিফুল ইসলাম (২২) দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ থানার হরিপুর গ্রামের মৃত শফিক আহম্মেদের ছেলে। তিনি রাজধানীর খিলগাঁও থানার জিসান হোসেন (১৪) হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার পর সংশ্লিষ্ট আদালতের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কনস্টেবল শহিদুল্লাহকে মারধর করে ছুটে পালিয়ে যান আসামি শরিফুল। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার ইনচার্জ এসআই রিপন।

তিনি বলেন, আসামিকে আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়ার সময় পুলিশকে আঘাত করে তিনি পালিয়ে যায় আসামি শহিদুল।

ডিএমপির প্রসিকিশন বিভাগের এডিসি মাইন উদ্দিন বলেন, আসামির হাতে হাতকড়া পরানো ছিল। তিনি ধাতব কিছু দিয়ে হাতকড়া ঢিলা করে কৌশলে খুলে ফেলে। পরে পুলিশ কনস্টেবলের হাতে আঘাত করে পালিয়ে যায়।

তিনি বলেন, আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। কোতোয়ালি থানাকে জানানো হয়েছে আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য। তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলমান।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The 5th Annual Senate Meeting in the BUP

বিইউপিতে ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভা অনুষ্ঠিত

বিইউপিতে ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভা অনুষ্ঠিত

১৯ জুন ২০২৫ তারিখে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) এর ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভা বিইউপির বিজয় অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিইউপির উপাচার্য ও সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ মাহ্বুব-উল আলম, বিএসপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, এমফিল, পিএইচডি।

সভার শুরুতে বিইউপির উপাচার্য ও সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ মাহ্বুব-উল আলম বিদায়ী সদস্যদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং নবনিযুক্ত সদস্যদের স্বাগত জানান। পরে বিইউপির ট্রেজারার এয়ার কমডোর মোঃ রেজা এমদাদ খান, জিইউপি, বিইউপি, এনডিসি, পিএসসি, জিডি(পি), ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট ১৩৪ কোটি ৮ লক্ষ টাকা ও ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের ১৩৪ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন।

সিনেট সদস্যগণ ট্রেজারার এর বক্তৃতার ওপর আলোচনা করেন এবং সর্বসম্মতিক্রমে বাজেট প্রস্তাব অনুমোদন করেন। এছাড়াও সিনেট সভায় ১৭তম বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপিত ও সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়। ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভাটি সার্বিকভাবে সঞ্চালনা করেন বিইউপির রেজিস্ট্রার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ রাব্বি আহসান, এনডিসি, পিএসসি।

সভায় সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মাহ্বুব তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিইউপি বয়সে নবীন হলেও এর শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও গবেষকগণের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও গবেষণা ভিত্তিক কার্যক্রমের অর্জনসমূহ জাতীয় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সুনাম বয়ে আনছে। যুগোপযোগী শিক্ষা প্রদান, গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নিত হওয়ার লক্ষ্যে অত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক একটি সুনির্দিষ্ট Academic Strategic Plan –২০৫০ প্রণয়ন করা হয়েছে।

Academic Strategic Plan এর মাধ্যমে পাঠ্যক্রমের আধুনিক মান নির্ধারণ, Outcome Based Education (OBE) কারিকুলাম প্রনয়ণ, গবেষণা, উদ্ভাবন, প্রকাশনা ও গবেষণা সহায়তার সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

মাননীয় উপাচার্য সকলকে অবহিত করেন যে বিইউপি’র গবেষণাভিত্তিক অগ্রযাত্রায় BUP Research Centre (BRC) অংঙ্গীভূত ফ্যাকাল্টি ও অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহে গবেষণা, উদ্ভাবন ও পরামর্শমূলক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার লক্ষ্যে কাজ করছে। 'Inspiring Innovation for Advancing Knowledge' শ্লোগানকে ধারণ করে, BUP Research Centre, গবেষকদের মানসম্মত গবেষণায় উৎসাহ দিচ্ছে এবং শিল্প-প্রতিষ্ঠান ও একাডেমিয়ার মধ্যে সংযোগ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

এছাড়াও তিনি উল্লেখ করেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষকদের গবেষণালব্ধ জ্ঞান প্রসারের উদ্দেশ্যে বিইউপি থেকে ৫টি জার্নাল প্রতিবছর নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে যা সকলের মাঝে সমাদৃত। সিনেট চেয়ারম্যান আরও উল্লেখ করেন যে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষার পাশাপাশি একজন সুশৃঙ্খল, নৈতিকতা সম্পন্ন সু-নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিইউপি বদ্ধপরিকর এবং সে লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের চারিত্রিক গুণাবলি ও আত্মিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সকল প্রোগ্রামের পাঠ্যক্রমে নৈতিক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে Need Based Education - কেও গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন যে, আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের মানসম্মত কারিকুলাম ও শিক্ষা পরিবেশের পাশাপাশি বৈচিত্র‍্যময় সাংস্কৃতিক সান্নিধ্যের গুরুত্বকে সামনে রেখে বিইউপি'তে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, নবপ্রজন্মের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সততা, চরিত্র গঠন ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং দেশপ্রেম জাগ্রত করতে পড়াশোনার পাশাপাশি বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য, জাতীয় দিবসগুলোর তাৎপর্য ও মাহাত্ম্য তুলে ধরে বিইউপি’র বিভিন্ন আলোচনা সভা, সিম্পোজিয়াম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনের কথা উল্লেখ করেন।

এই সিনেট সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং বিইউপির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
BNP does not support the electoral college in the presidential election

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেকট্রোরাল কলেজব্যবস্থা সমর্থন করে না বিএনপি

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেকট্রোরাল কলেজব্যবস্থা সমর্থন করে না বিএনপি

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রস্তাবিত ইলেকট্রোরাল কলেজব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘জনগণের ভোটাধিকার হরণে এই ব্যবস্থাকে আরেকটি ছলচাতুরী হিসেবে দেখা হচ্ছে।’

গতকাল বুধবার বিকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য কমিশনের যে প্রস্তাব তাতে একটা ইলেক্টোরাল কলেজ করা হবে। এবং প্রায় ওনাদের ভাষ্য অনুযায়ী ৭০ হাজারের মতো ভোটার থাকবে। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার পর্যায়ের প্রতিনিধিগণ এখানে ভোটার হবেন। এবং রাষ্ট্রপতিকে সৎ, দক্ষ ও অভিজ্ঞ একজন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য ওখানে প্রস্তাব করা হয়েছে।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাবে আগের মতোই একমত নয় বিএনপি।

এই কাউন্সিলের জবাবদিহি না থাকায় সমর্থন করে না বিএনপি। এই কাউন্সিলে আরেকটি ভারসাম্যহীন অবস্থা তৈরি হবে বলে মনে করি আমরা।’

স্বাধীন বিচারব্যবস্থার দাবি জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘স্বাধীন বিচারব্যবস্থা হলে ভারসাম্যহীনতা দূর হবে, ফ্যাসিবাদ দমন করবে। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য, অন্য সাংবিধানিক পদ, সংস্থা স্বাধীন করতে পারলে সমস্যা থাকবে না।’

বিএনপি মনে করে সুশাসন নিশ্চিত করতে ন্যায়পাল করা যেতে পারে। বিদ্যমান ব্যবস্থা বজায় রেখে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ হলে তাদের যোগ করা যেতে পারে, বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আইন সংশোধন করা যেতে পারে। জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। বিএনপি মনে করে, দুদক ও মানবাধিকার কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করতে বিদ্যমান আইনগুলো সংস্কারের প্রয়োজন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Bhawal Chandipur Agrakhola road is like a death

ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়ক যেন মরণফাঁদ

চরম দুর্ভোগে এলাকাবাসী   
ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়ক যেন মরণফাঁদ

কেরানীগঞ্জের শাক্তা ও তারানগর ইউনিয়নের বুক চিরে চলা ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়কের বেহাল দশায় নিত্যদিন ভোগান্তিতে পড়ছে হাজারো মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে সড়কজুড়ে এখন গর্ত আর ধুলাবালি। সামান্য বৃষ্টিতে কাদায় যানবাহন আটকে যায়, আর শুকনো মৌসুমে উড়ে ধূলোর ঝড়।

রাস্তাটির বেহাল অবস্থার কারণে প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারী ও যানবাহনের চালকরা। ছোট-বড় গর্তে হোঁচট খেয়ে পড়ে আহত হন অনেক পথচারী। অন্যদিকে, যানবাহন চলাচলের অযোগ্য এই সড়কে প্রতিনিয়তই নষ্ট হয়ে পড়ে ভ্যান, অটোরিকশা, ট্রাকসহ বিভিন্ন গাড়ি। আকিজ ফাউন্ডেশন স্কুল, মেকাইল মাদ্রাসা ও অগ্রখোলা কমিউনিটি হাসপাতালের সামনের অবস্থা এতটাই খারাপ যে মাঝে মাঝেই উল্টে যায় যাত্রী বোঝাই যানবাহন ।

সড়কের করুণ অবস্থার কারণে অনেক চালক ও পথচারী এখন পাশের বেলনা, কলাতিয়া ও নয়াবাজার হয়ে বিকল্প রাস্তায় যাতায়াত করছেন। এতে সময়, অর্থ ও দুর্ভোগ বাড়ছে।

এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কেরানীগঞ্জ ছাড়াও নবাবগঞ্জ, দোহার, সিরাজদিখানসহ দক্ষিণবঙ্গের হাজার হাজার মানুষ মোহাম্মদপুর হয়ে রাজধানীতে প্রবেশ করে। অথচ বছরের পর বছর ধরে অবহেলায় পড়ে আছে সড়কটি।

স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, ‘রাস্তাটার অবস্থা এমন যে, অটোরিকশা সিএনজিতে ওঠা মানেই কোমর ভাঙা। মাঝে মাঝেই যানবাহন পড়ে মানুষ আহত হয়। স্কুলের বাচ্চারা পর্যন্ত ভয়ে এই রাস্তায় যেতে চায় না। কোন এমপি-মন্ত্রী একবার এই রাস্তা দিয়ে গেলে বুঝত কষ্টটা কেমন।

একই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পণ্যবাহী ট্রাকচালক রাকিব হাওলাদার। তিনি বলেন, একবার গর্তে পড়লে গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়। ট্রাকে থাকা জিনিসপত্র পড়ে যায়, এভাবে থাকলে এই রাস্তা দিয়ে আর চলাচল করা সম্ভব নয়। এটি দ্রুত সংস্কার করা উচিত।

এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ বলেন, সড়কটি ইতোমধ্যে ডিপিপিতে অনুমোদন পেয়েছে। তাই এখন সংস্কার করা হচ্ছেনা। বছরের শেষ দিকে ২০ ফুট প্রশস্ত করে এবং আরও শক্তিশালী করে কাজ শুরু হবে। তখন রাস্তাটি আরো টেকসই হবে।

এদিকে এলাকাবাসীর দাবি, সংস্কার কাজ শুরুর আগ পর্যন্ত অন্তত গর্ত ভরাট করে সাময়িক চলাচলের উপযোগী করে তুলতে হবে। নইলে প্রতিদিন দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Twenty four bucks the family of four runs a family of four

আড়াইশ টাকা আয়ে চারজনের সংসার চালায় কিশোর তোফাজ্জল!

আড়াইশ টাকা আয়ে চারজনের সংসার চালায় কিশোর তোফাজ্জল!

একটা ভাঙাচোরা বাইসাইকেলই তার ভরসা। এ সাইকেল চালিয়ে ১৫ কিলোমিটার দুরের দুর্গম খাসিয়া পল্লীতে কাজ করে দুই-আড়াইশ টাকা রোজগার করে কিশোর তোফাজ্জল (১৪)। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ৯নং ইসলামপুর ইউনিয়নের কাঁঠালকান্দী গ্রামের আলী আহমেদ (৬৫) এর ছেলে তোফাজ্জল হোসেন। পরিবারে সে একমাত্র উপার্জনক্ষম। বাবা হার্টের রোগী, বোন আয়েশা খাতুন (২৫) মানসিক ভারসাম্যহীন আর বয়োবৃদ্ধ দাদী সমিতা বিবি (৮২) দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী।

তোফাজ্জল কান্নাজড়িত কন্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রতিদিনি সকালে ভাঙাচোরা একটি সাইকেল নিয়ে ১৫ কিলোমিটার দুরের খাসিয়া পল্লীতে কাজে যাই। সন্ধ্যায় ফিরি। যা রোজগার হয়, দুবেলাও খেতে পাইনা। এ দুনিয়ায় আল্লাহ ছাড়া আমাদের আর কেউ নাই। প্রতিবেশী ফজল মিয়া, আবু শহীদ এ পরিবারের দুরাবস্থার কথা জানিয়ে বলেন, প্রকৃতই তারা খুব অসহায় ও মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। তিনজনই অসুস্থ। মাঝে মধ্যে আমরা যতটা সম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।

সরেজমিন তোফাজ্জলদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি আবাসন প্রকল্পের ছোট্ট একটি ঘরে মেঝেয় জীর্ণ-শীর্ণ কাঁথায় শুয়ে আছেন সমিতা বিবি। অপুষ্টি আর ক্ষুধার যন্ত্রণায় ক্লান্ত। ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। যা বললেন বোঝা গেলো, ডালভাত খেয়ে ঈদের দিন পার করেছি। ক্ষিদের জ্বালায় রাতে ঘুম আসে না। একরত্তি নাতি আর কিইবা করবে। তবু যা করছে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। চাল ডাল আনলে ওষুধ আনতে পারে না। তবু প্রায়ই অনাহারে থাকতে হয়। ঈদে চান্দে প্রতিবেশীরা কেউ খাবার দেয়, কেউ সামান্য টাকা-পয়সা দেয়। এইভাবেই টিকে আছি।

স্থানীয়দের সহযোগিতাই একমাত্র ভরসা। মানুষের সাহায্যে দুমুঠো ভাত খেতে পারেন, যদি কেউ সাহায্যে না করে তাহলে না খেয়েই থাকতে হয়। তার বিলাপে চোখে জল চলে আসে। এ যেন দারিদ্র্যের এক করুণ চিত্র। এই অসহায় নারীর জীবন কাটছে অভাব আর কষ্টে। পা ভেঙে এক বছর ধরে শয্যাশায়ী। ছেলে আলী আহমেদও হার্টের রোগী। কোন কাজকর্ম করতে পারেন না। তাই ১৩/১৪ বছরের নাতি তোফাজ্জলের কাঁধেই সংসারের ভার। দুর্গম খাসিয়া পুঞ্জিতে কাজ করে দিনে আয় করে দুই-আড়াইশ টাকা মাত্র। এ টাকায় দুবেলা খাবার যোগানোই মুশকিল। তার ওপর অসুস্থ দাদি, বাবা আর মরার উপর খাঁড়ার ঘা মানসিক প্রতিবন্ধী বড় বোন আয়েশা খাতুন।

ইসলামপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক আহমেদ জানান, একসময় তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিলো না। কয়েক বছর আগে সরকারি আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে এ পরিবারের জন্য একটি ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোফাজ্জলদের দুরাবস্থা জেনে অনেকে খাদ্য সামগ্রী দিয়ে তাদের সহায়তা করছেন। তবে বয়োবৃদ্ধ সমিতা বিবি ও মানসিক প্রতিবন্ধী আয়েশা খাতুনের সুচিকিৎসা ও তোফাজ্জলদের আত্মনির্ভরশীল হওয়ার ব্যবস্থা জরুরি।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The common man is in danger of 6 months off the supply of drugs

ওষুধ সরবরাহ বন্ধ ৮ মাস বিপাকে সাধারণ মানুষ

ওষুধ সরবরাহ বন্ধ ৮ মাস বিপাকে সাধারণ মানুষ

সরকারিভাবে ওষুধ সরবরাহ না থাকায় ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে। প্রায় সাত-আট মাস কেন্দ্রগুলোতে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ থাকায় এতে তৃণমুলে বসবাসকারী অবহেলিত মানুষগুলো স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে। এমনটিই আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।

জানা গেছে, নড়াইল জেলার তিনটি উপজেলা ও একটি প্রশাসনিক থানা এলাকায় ৪০টি ইউনিয়ন পরিবারকেন্দ্র এবং মা ও শিশু কল্যাণকেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে সিভিল সার্জন কর্তৃক সাতটি স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র পরিচালিত হয় । বাকিগুলো পরিবার পরিকল্পনা কল্যাণ অধিদপ্তর থেকে পরিচালিত হয়ে থাকে।

সিভিল সার্জন কর্তৃক পরিচালিত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সদর উপজেলায় তিনটি, লোহাগড়া উপজেলায় তিনটি এবং কালিয়া উপজেলায় একটি। এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসাসেবার ওপর গ্রামাঞ্চলের নিম্নআয়ের সাধারণ মানুষগুলো সুস্থ ও সবলভাবে বেচে থাকার জন্য অনেকটিই নির্ভর করে। এসব কেন্দ্রগুলোতে সরকারি ওষুধ সরবরাহ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ । কেন্দ্রগুলোতে ওষুধ সংকটের কথা স্বীকার করেছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ।

গত মঙ্গলবার ও গতকাল বুধবার জেলার কয়েকটি স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, চিকিৎসাসেবা নিতে আসা গ্রামের অনেক মহিলা চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসাপত্র নিয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। তাদের মুখখানা ছিল মলিন । আবার অনেক কেন্দ্র ছিল ফাকা। দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার একটি কক্ষে বসে গল্পে মেতে আছেন বন্ধুদের সঙ্গে। গত মঙ্গলবার সকাল ১১টায় সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. মো.আলাউদ্দীন কেন্দ্রের একটি কক্ষে চুপচাপ বসে আছেন । জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগে আমাদের এখানে ২৫ রকমের ওষুধ বরাদ্দ ছিল। তখন ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে শিশু-নারী ও পুরুষ স্বাস্থ্যসেবা নিতে জড়ো হতেন। গত সাত-আট মাস হলো কোনো ওষুধ সরবরাহ নেই । ফলে কেন্দ্রে রোগীদের তেমন ভিড়ও নেই। শুধু পরিবার পরিকল্পনা কিছু সামগ্রী আছে তাই দিয়ে সেবা চলছে। তিনি বলেন, এখানে যেসব রোগী আসে তার বেশিরভাগ হচ্ছে শিশু ও নারী। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আগে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ জন রোগীকে সেবা দিয়েছি। বর্তমানে ১৫ থেকে ২০ জনের বেশি হয় না।

ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ হলে তৃণমুলে সাধারণ মানুষ বিপদে এবং স্বাস্থ্যসেবা ঝুঁকিতে পড়বে বলে মনে করেন নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো.রবিউল ইসলাম।

তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সরকারের দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে। না হলে গ্রামের কৃষক শ্রেণির মানুষের জীবনের ছন্দ পতন ঘটবে। গতকাল বুধবার দুপুরে লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কুমড়ি গ্রাম থেকে ছোট শিশুকে কোলে নিয়ে স্বাস্থ্যসেবা নিতে এসেছেন সালমা আক্তার । তার কোলের শিশুর সর্দি-কাশি দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আগে এহেনে ডাক্তার দেহালি ওষুধ দেতো। এহোনে দেচ্ছে না । কাগজে লেহে দিলি আমাগে বাজারের দুয়ানতে কিনে নিতি হচ্ছে। আমরা গরিব মানুষ। অত টায়া পয়সা নাই আমাগে। তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, সরকাররে কচ্ছি আগের মতো আমাগে মাগনা (বিনা টাকায়) ওষুধ দিতি হবে।’

কালিয়া উপজেলার পহরডাঙ্গা ইউনিয়নের মুলশ্রী গ্রামের দীপ্তি রানী মণ্ডল বুকে ব্যথা অনুভব করলে নিজের ওষুধ নিতে এসেছেন ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে। তিনি বলেন, ‘এহেনের ডাক্তার সাদা কাগজে কী যেন লেহে দেলো। আর কলো এই কাগজ নিয়ে বাজারের দুয়ানেরতে অসুদ কিনতি হবে । কিরাম কতা হলো কওদিন বাপু । আমাগে যদি দুয়ানেরতে অসুদ কিনতি হবে তালি তুমরা এহানে বসে রইছো ক্যান ? আগেতো এমন কতা শুনিনি।’

জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক আলিফ নূর বলেন, ‘পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রগুলোতে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে প্রায় সাত থেকে আট মাস। যে কারণে সমাজের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। তিনি দাবি করেন, ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো বন্ধের মধ্যেও খোলা ছিল । ওষুধ না পেলেও চিকিৎসাসেবা বন্ধ ছিল না । যারা গর্ভবতী মা তারা চেকআপের জন্য কেন্দ্রে আসছেন । তাদের প্রয়োজনীয় সেবাও দেওয়া হচ্ছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে ওষুধ সরবরাহের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুত সংকট মোচন হবে ।

মন্তব্য

p
উপরে