গত কয়েক দিন ধরে হাঁড়কাপানো শীতে ছিলেন রাজধানীর বাসিন্দারা। তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলেও শীতের অনুভূতি ছিল ১০ ডিগ্রির মতো। অর্থাৎ, মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পরিস্থিতিতে ছিলেন রাজধানীবাসী।
এমন পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে শনিবার। আজ তাপমাত্রা নেমে ৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যাতে কাঁপছে ঢাকার বাসিন্দারা। এর আগে ২০১৮ সালে ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকার পাশাপাশি নওগাঁ, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়েও বয়ে চলেছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।
আজ নওগাঁয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া দিনাজপুরে ১০ ডিগ্রি, পঞ্চগড়ে ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি, যশোরে ১০ ডিগ্রি ও চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এমন শীত দিনভর থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, দেশের কোথাও কোথাও শনিবার দুপুর পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা থাকতে পারে।
শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশের কোথাও বৃষ্টি হয়নি।
২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তরের শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে, তবে সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে দিনের তাপমাত্রা। দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়ার কারণে দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চলে মাঝারি থেকে তীব্র শীতের অনুভূতি থাকতে পারে।
আজও দেশের সর্বনিম্ন ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়। সর্বোচ্চ ২৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা টেকনাফে।
ঢাকায় বাতাসের গতি ছিল উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার।
ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৫টা ২৬ মিনিটে। আগামীকাল ঢাকায় সূর্যোদয় ভোর ৬টা ৪৩ মিনিটে।
আরও পড়ুন:বায়ুদূষণে নিয়মিত সামনের সারিতে থাকা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বাতাস আগের দিনের মতো শনিবারও সবচেয়ে দূষিত বলে জানিয়েছে আইকিউএয়ার।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানিটির র্যাঙ্কিংয়ে আজ সকাল ১০টা ১০ মিনিটের দূষিত বাতাসে ১০০ শহরের মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে ছিল বাংলাদেশের সবচেয়ে জনবহুল নগর।
গতকালের মতো আজও দূষিত বাতাসের দিক থেকে ঢাকার পরের অবস্থানে ছিল পাকিস্তানের লাহোর।
নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর, তা জানায় আইকিউএয়ার।
কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।
৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।
আইকিউএয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।
১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।
র্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়। তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।
সকালের নির্দিষ্ট ওই সময়ে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ২২১। এর মানে হলো খুবই অস্বাস্থ্যকর বাতাসের মধ্যে বসবাস করতে হয়েছে রাজধানীবাসীকে।
আইকিউএয়ার জানায়, ঢাকার বাতাসে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ২৯ দশমিক ২ গুণ বেশি।
আরও পড়ুন:হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে চা বাগান সম্প্রসারণের জন্য কাটা হচ্ছে বড় বড় গাছ। জঙ্গল পরিস্কার করতে ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে আগুন। সেই আগুনে পুড়ে মরছে বন্যপ্রাণী। স্থায়ীভাবে বাসস্থান হারানোর পাশাপাশি এসব বন্যপ্রাণী লোকালয়ে এসে পড়ছে শিকারিদের হাতে।
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার রশিদপুর বন বিটের আওতাধীন হাতিমারা চা বাগানের গির্জাঘর এলাকায় গত এক সপ্তাহ ধরে এমন ঘটনা ঘটছে।
স্থানীয়রা জানান, হাতিমারা চা বাগান কর্তৃপক্ষ প্রতি বছরই বাগান সম্প্রসারণ করে। চলতি বছর তারা গির্জাঘর এলাকায় বাগান সৃজনের লক্ষ্যে টিলা পরিস্কার শুরু করেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে গির্জাঘর এলাকার কয়েকটি টিলা থেকে অন্তত দেড়শতাধিক গাছ কেটে ফেলেছে বাগান কর্তৃপক্ষ। যে গাছগুলোর বয়স ৫০ থেকে ১০০ বছরের বেশি।
গাছ কাটার পর টিলা পরিস্কার করতে ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে আগুন। এতে সেখানে বসবাস করা বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী ও জীবজন্তু পুড়ে মারা যাচ্ছে। অসংখ্য প্রাণী আহত হয়েছে। স্থায়ীভাবে বাসস্থান হারিয়ে বন্যপ্রাণীরা এদিক-ওদিক ছুটে বেড়াচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা জগদীশ গোয়ালা জানান, চা গাছ রোপণের জন্য টিলা পরিস্কার করা হচ্ছে। ১০০ বছরের পুরনো গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। সেখানে ছিল আম, জাম, কাঁঠাল, তেঁতুল, বট, আমলকী, বহেরা, আউলা ইত্যাদি। এ ছাড়াও বন্যপ্রাণীদের খাবারের জোগান দেয়ার মতো অনেক ধরনের গাছ ছিল। সেগুলো কেটে ফেলা হয়েছে।
গির্জাঘর এলাকার মো. নানু মিয়া জানান, যে টিলাগুলোতে আগুন দেয়া হয়েছে সেখানে মায়া হরিণসহ বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণী বাস করত। আগুন ধরিয়ে দেয়ার কারণে অনেক প্রাণী পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আহত অবস্থায় সেখান থেকে বেড়িয়ে এসেও অনেক প্রাণী মারা গেছে। কতগুলো যে আহত হয়ে জঙ্গলের ভেতরে গিয়ে মারা গেছে তার কোনো হিসাব নাই।
তিনি আরও জানান, যেগুলো এখনও জীবিত আছে সেগুলো একেবারে নিরুপায়। গাছগুলো কেটে ফেলার কারণে প্রাণীগুলো স্থায়ীভাবে বাসস্থান হারিয়েছে। অনেকগুলো লোকালয়ে এসে শিকারিদের হাতে পড়ে মারা যাচ্ছে। অনেকগুলো খরগোশ ও বন্যশূকর স্থানীয় কিছু লোকজন শিকার করে খেয়ে ফেলেছে।
এম সাইফুর রহমান বলেন, ‘সকালে আহত দুইটি বানর আমার বাড়িতে এসেছে। এর মধ্যে একটা বানরের লেজ অনেকটা পোড়া ছিল। কিন্তু কোথায় যাবে এগুলো? বাগান কর্তৃপক্ষ এটা মোটেও ঠিক করেনি।’
প্রকৃতি ও পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন মিতা ফাউন্ডেশনের সমন্বয়কারী রবি কাস্তে বলেন, ‘হাতিমারা চা বাগানের গির্জাঘর বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বনাঞ্চল রেমা-কালেঙ্গার কাছাকাছি হওয়ায় এখানে বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণীর বাস। এ ছাড়া মায়া হরিণের পছন্দের জায়গা এটি। এখানে থাকা আউলা নামে একটি গাছের ফল মায়া হরিণ খায়। এ প্রজাতির গাছগুলোও কেটে ফেলা হয়েছে। আগুন লাগিয়ে দেয়ায় অনেক বন্যপ্রাণী পুড়ে মারা যাচ্ছে। বানর, হনুমান, মায়া হরিণ ও শুকরসহ নানা প্রজাতির হাজার হাজার প্রাণী তাদের আশ্রয় হারিয়েছে।
‘আমরা বাগানের ব্যবস্থাপক মঈন উদ্দিন সাহেবের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি আমাদের মুখ বন্ধ রাখতে উল্টো হুমকি দেন। পরে আমরা বিষয়টি রশিদপুর বিট কর্মকর্তা ও বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। কিন্তু তিনদিন হয়ে গেলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’
জঙ্গলে আগুন দেয়া ও গাছ কাটার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে পরিবেশকর্মী ও সংবাদকর্মীদের তৎপরতার কারণে নতুন করে আগুন লাগানো বন্ধ করে কর্তৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে জানতে রোববার হাতিমারা চা বাগানে ঢুকতে বাধা দেন গেট পাহারাদার। এমনকি চা বাগানের ব্যবস্থাপক মঈন উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলতে তার কার্যালয়েও যেতে দেয়া হয়নি। মঈন উদ্দিনের মোবাইলে বারবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
সহকারী ব্যবস্থাপক আসিফ আঞ্জুম চৌধুরী জানান, বাগানের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তিনি কোনো কথা বলতে পারবেন না।
এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘গত তিনদিন ধরে এই বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে ফোন আসছে। সেখানে যেহেতু বন্যপ্রাণীদের বাস সেহেতু সেই এলাকায় গাছ কাটা বা আগুন দেয়া বাগান কর্তৃপক্ষের মোটেও ঠিক হয়নি। তবে এ ব্যাপারে আমি বিট কর্মকর্তাকে অবগত করেছি।’
রশিদপুর বন বিট কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি গত কয়েকদিন ধরেই ঘটনাস্থলে আসা-যাওয়া করছি। যে জায়গায় আগুন দেয়া হয়েছে এবং গাছ কাটা হয়েছে সেটি বাগানের নিজস্ব জায়গা। তবে এ ঘটনায় যদি কোনো বন্যপ্রাণী মারা যায় তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব। আমরা বিষয়টি নিয়ে এখনও তদন্ত করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয়রা আমাদেরকে যে ছবিগুলো দিয়েছেন সেগুলো এ ঘটনার নাকি পুরনো তা পর্যবেক্ষণ করছি। তদন্ত শেষ হওয়ার পরই এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলা যাবে।’
আরও পড়ুন:পৌষের শেষে হিমেল হাওয়ায় কেঁপে কেঁপে ওঠা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঠান্ডা কমতে শুরু করেছে। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত এই কদিন আগেও কুয়াশাতেই ঢাকা পড়ছিল আকাশ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের দেখা মিললেও শীত যেন কমছিলই না। তবে এখন সেই অবস্থা নেই।
মাঘের শুরুতে কমতে থাকে ঠান্ডা। আকাশ ফুটে বের হতে থাকে তাপ দেয়া সূর্য। রাজধানী ঢাকায় তো বটেই, দেশজুড়েই এখন ঠান্ডা কমছে। এবার তা আরও কমার আভাস এলো।
আবহাওয়া অধিদপ্তর রোববার সকালে যে পূর্বাভাস দিয়েছে, তাতে দিন ও রাতের তাপমাত্রা বাড়ার কথা বলা হয়েছে। এই তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীত কমবে, অর্থ্যাৎ একটু গরমও বাড়বে।
মাত্র কদিন আগেও রাজধানীতে তাপমাত্রা কমতে কমতে এক পর্যায়ে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তারও নিচে নেমে গিয়েছিল। তবে রোববার দুপুর ১২টায় এ নগরে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামী ২৪ ঘণ্টা ঢাকার আকাশ হয়তো মেঘলা থাকবে, তবে তাপমাত্রা বাড়বে। এই অবস্থা থাকবে মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবারও।
সার্বিক পরিস্তিতিতে বোঝাই যাচ্ছে, ‘মাঘের শীতে বাঘ পালায়’ প্রবচনটি হয়তো গত কয়েক বছরের মতো এবারও থাকছে বইয়ের পাতাতেই। হাড় কাঁপানো তেমন একটা শীত আর এ মাসে পড়ার সম্ভাবনা নেই বললেই ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ষড় ঋতুর হিসেবে পৌষ ও মাঘ, এই দুইমাস হলো শীতকাল। মাঘে শীত পড়ার সম্ভাবনা কমে যাওয়ার মধ্য দিয়ে এবারের শীতও বিদায় নিচ্ছে কি না তা এখন দেখার বিষয়।
আগের কদিনে দেশের যেসব এলাকায় শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল, সেসব এলাকার অনেক জায়গাতেই এখন আর সে অবস্থা নেই। কমে এসেছে শৈত্যপ্রবাহের আওতা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম,পঞ্চগড়, মৌলভীবাজারের ওপর দিয়ে এখন শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শৈত্যপ্রবাহ আরও কমবে।
সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পাবে জানিয়ে এতে বলা হয়, আগামী ৭২ ঘণ্টায় তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।
অধিদপ্তর বলছে, শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকায় কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এ ছাড়া অন্য জায়গাগুলোতে মাঝারি থেকে হালকা কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়ার প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বোচ্চ ছিল চট্টগ্রামে ৩০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আরও পড়ুন:দেশের শীতলতম মাসের ২১তম দিনে ঠান্ডা কমে আসার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি বলেছে, রাতের তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কমতে পারে শীত।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, ‘উপমহাদেশীয় উচ্চতাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।’
এতে বলা হয়, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
কুয়াশা নিয়ে পূর্বাভাসে জানানো হয়, মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকায় কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্য জায়গায় কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
শৈত্যপ্রবাহের বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, ফেনী, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, কুষ্টিয়া, বরিশাল ও ভোলা জেলা এবং রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু কিছু এলাকা থেকে প্রশমিত হতে পারে।
তাপমাত্রা নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে শনি ও রোববার তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়তে পারে বলেও জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:ঘন কুয়াশার কারণে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজীরহাট নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে মাঝনদীতে আটকা পড়ে আছে দুটি ফেরি।
নৌ-দুর্ঘটনা এড়াতে শনিবার রাত সোয়া ৯টা থেকে এই দুটি নৌপথে সাময়িকভাবে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক শাহ মোহাম্মদ খালেদ নেওয়াজ জানান, পদ্মা নদীতে কুয়াশার ঘনত্ব বেড়ে যাওয়ায় ফেরির মার্কিং লাইটের আলো অস্পষ্ট হয়ে যায়। এতে নৌ-দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দেয়। যাত্রী ও যানবাহনের নিরাপত্তার কথা ভেবে নৌ-দুর্ঘটনা এড়াতে সাময়িকভাবে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এ সময় মাঝনদীতে দুটি ফেরি আটকা পড়ে আছে। কুয়াশার তীব্রতা কেটে গেলে পুনরায় ফেরি চলাচল শুরু করা হবে।
দেশের অধিকাংশ জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে, আর পাঁচ বিভাগের দু-এক জায়গায় হতে পারে হালকা কিংবা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তবে খুলনা, রংপুর, রাজশাহী, ময়নমনসিংহ ও সিলেট বিভাগে দু-এক জায়গায় হালকা বা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এতে বলা হয়, মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকতায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এই কুয়াশা কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
ফরিদপুর, মাদারীপুর, মানিকগঞ্জ, মোলভীবাজার, কুমিল্লা, ফেনী, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, কুষ্টিয়া, বরিশাল ও ভোলা জেলাসহ রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু এলাকা থেকে প্রশমিত হতে পারে।
সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে দিনাজপুরে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস কক্সবাজারের টেকনাফে।
আরও পড়ুন:রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বাড়ির পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে, খালে অথবা লেকে দেয়া হয়েছে। তা বন্ধ করতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। ড্রেনের পাইপের মুখে কলাগাছ ঢুকিয়ে আপাতত বন্ধ করা হচ্ছে এসব অবৈধ সংযোগ।
বুধবার সকাল থেকে বারিধারা এলাকায় চলা ডিএনসিসির অভিযানে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম।
অভিযানে বারিধারা ১১ নম্বর রোডের চারটি বাড়ির সামনে ড্রেনে কলাগাছ দিয়ে সারফেস ড্রেন থেকে পয়োবর্জ্যের অবৈধ সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়। বাড়ির মালিকরা অনতিবিলম্বে নিজ থেকে এসব সংযোগ বন্ধ না করলে স্থায়ীভাবে তা বন্ধ করার হুশিয়ারি দেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।
সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘দেশের সবচেয়ে অভিজাত এলাকা হিসেবে খ্যাত বারিধারা। সেখানে ৫৫০টি বাড়ির মধ্যে ৩৪২ বাড়ির পয়োবর্জ্যের সংযোগ দেয়া হয়েছে সারফেস ড্রেনে। সার্ভের রিপোর্ট অনুযায়ী, বারিধারা এলাকার মাত্র ৫টি বাড়ির পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে দেয়া হয়নি।
‘আটটি শর্তের মধ্যে এখানে ২০৩টি বাড়ি কিছু সংখ্যক শর্ত পূরণ করেছে। অন্যদিকে একদমই শর্ত পূরণ করেনি ৩৪২টি বাড়ি, সে সব বাড়ির পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘অভিজাত এলাকায় যদি এমন চিত্র আমাদের দেখতে হয়, তা অত্যন্ত দু:খজনক। সিটি করপোরেশনের সুয়ারেজ লাইনে পয়োবর্জ্যের সংযোগ দেয়া যাবে না। ওয়াসার পৃথক লাইনে এসব বাড়ির বর্জ্য যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি নেই।
‘যেখানে ওয়াসার লাইন নেই সেখানে নিজস্ব ব্যবস্থায় ইটিপি প্লান্ট বসিয়ে পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনা করতে হবে। আমাদের অভিযান ধারাবাহিকভাবে পরিচালনা করা হবে। পরে বনানী ও নিকেতন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হবে।’
পয়োবর্জ্যের কারণে লেকগুলোর পানি দূষিত হয়ে গেছে উল্লেখ করে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘লেকে মাছ চাষ করা যাচ্ছে না। যার কারণে মশা নিধনে ন্যাচারাল সলিউশন সম্ভব হচ্ছে না। আমরা ড্রেন ও খাল আর দূষিত হতে দিব না।’
মেয়র আতিকুল ইসলাম উত্তরায় নিজ বাড়িতে সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বসিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানান।
অভিযানের উপস্থিত ছিলৈন বারিধারা সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ফিরোজ হাসান। তিনি বলেন, বারিধারার বেশিরভাগ বাড়ির পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে দেয়া হয়েছে, এটি অন্যায়। মেয়র বিষয়টি জানিয়েছেন, আমরা এখন নিজেরাই সংশোধন করে নেব।’
অভিযানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, ডিএনসিসির সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর হাছিনা বারী চৌধুরী এবং বারিধারা সোসাইটির প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য