ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অতীতের সোনালী সময় ফিরিয়ে আনতে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের গৌরব রবি কে বলে অস্তাচলে? আমরা আজ অঙ্গীকার করবো, ছাত্রলীগের এই গৌরব রবিকে অস্তাচলে যেতে দেবো না। ছাত্রলীগের বর্তমান নেতৃত্বকে বলবো, অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নবতর পথযাত্রার সূচনা করতে। আমরা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং টাইম পার করছি। সামনে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ। এসব চ্যালেঞ্জ আমাদের অতিক্রম করতে হবেই।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যু নেই। বঙ্গবন্ধু জাতিকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আর তার উত্তরসূরী শেখ হাসিনা জাতির মুক্তির কাণ্ডারি।
শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিকেল ৩টা ১৫ মিনিটে ওবায়দুল কাদের অনুষ্ঠানস্থলে এসে উপস্থিত হন। এরপর জাতীয় সঙ্গীত এবং দলীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
এ সময় মঞ্চে ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি প্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানীসহ সাবেক বর্তমান নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানস্থলে ছাত্রলীগের বিভিন্ন হল ইউনিট, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়, মহানগর এবং জেলা কমিটি নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় কর্মীদের প্রতিজ্ঞাবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ছাত্রলীগের কর্মীরা হতাশ কেন? রাজনীতি কমিটমেন্টের বিষয়। রাজনীতিতে কমিটমেন্ট থাকলে রেজাল্ট একদিন আসবেই। মূল্যায়ন একদিন হবেই। অনেক সংগ্রাম এবং আন্দোলনের বাঁধ পেরিয়ে আজ আমি আওয়ামী লীগের তিন তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। আমি আজ মোট ১৭ বছরের একজন মন্ত্রী। কে আমি? ছাত্রলীগ। আমি শেখ হাসিনার একজন নিবেদিত প্রাণ কমিটেড কর্মী।’
এ সময় ছাত্রলীগের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়েছে। করোনা সংকটে ঘরে ঘরে গিয়ে চিকিৎসাসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে। ছাত্রলীগকে আমি সাধুবাদ জানাই। এখনও আমাদের অনেক পথ চলা বাকি।
দ্রুত ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কমিটি হয়েছে প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারির। বাকি কমিটি পূর্ণাঙ্গ হতে যেন দেরি না হয়। অনেক কর্মী আশা নিয়ে বসে আছে। তাদের প্রোভাইড করুন। দেরি করার কোনও সুযোগ নেই। উই হ্যাভ নো টাইম। আমরা প্রতিকূল স্রোতে সাঁতার কেটে চলছি। এই যুদ্ধে জয়ী হতে হবে।’
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশে আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। ঘুরে দাঁড়ানোই আমাদের চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ আমাদের অতিক্রম করতে হবে। ছাত্রলীগকে বলতে চাই, আমি তোমাদের কাছে স্মার্ট বাংলাদেশ..... এরপরই মঞ্চ ভেঙে পড়ে যান ওবায়দুল কাদেরসহ মঞ্চে উপস্থিত ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতারা।
এর কিছুক্ষণ পর ভাঙা মঞ্চ থেকে উঠে খালি জায়গায় দাঁড়িয়ে ফের বক্তব্য রাখেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, ‘একটু আগে আচমকা মঞ্চ ভেঙে গেছে। এটা স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু নেতাদের মঞ্চে ওঠা, এত নেতা আমার দরকার নেই। আমাদের আরও কর্মীর দরকার। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে স্মার্ট কর্মীর দরকার। যেকোনো মঞ্চে গেলে সামনের লোকের চেয়ে মঞ্চে লোক বেশি। এত নেতা কেন? নেতা উৎপাদনের এত বড় কারখানা আমাদের দরকার নেই। কর্মী উৎপাদনের কারখান চাই। সেটাই হোক ছাত্রলীগ।’
পরে তিনি পায়রা উড়িয়ে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রার উদ্বোধন ঘোষণা করেন। ছাত্রলীগের বিশাল শোভাযাত্রাটি অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ, মৎস্যভবন, প্রেসক্লাব, পুরানা পল্টন মোড়, জিরো পয়েন্ট হয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।
এর আগে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে অনুষ্ঠিত সমাবেশে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, এই ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এক ইঞ্চি মাটিতেও পাকিস্তানি প্রেতাত্মাদের আস্ফালন সহ্য করা হবে না। তারা যেখানেই বাংলার মানুষের শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করবে সেখানেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের কঠোর হাতে দমন করবে। বাংলাদেশে পাকিস্তানি ভাবধারার পদলেহন করার চেষ্টা করা হলে সেই পা ভেঙে দেয়া হবে। যে হৃদয় আরেকটিবার শেখ হাসিনাকে হত্যার চিন্তা করবে সেই কলিজা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছিঁড়ে ফেলবে।’
ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ ঘোষণার পর এদেশের ছাত্র সমাজ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পক্ষে রায় দিয়েছে। আগামী নির্বাচনে দেশরত্ন শেখ হাসিনার নিরঙ্কুশ বিজয় নিশ্চিতে আমাদের শপথ নিতে হবে। আমরা মনে করি, বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে নির্বাচিত করা দেশপ্রেমের অংশ।’
এদিকে মঞ্চ ভেঙে পড়ার ঘটনায় ছাত্রলীগের সাবেক সাত নেতা আহত হন। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে হাসাপাতালে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
আহতরা হলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক লিলি, ঢাকা দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ-সম্পাদক শেখ আনিসুজ্জামান রানা, বিএম’র ইসি মেম্বার মো. জাবেদ, বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বরিকুল ইসলাম বাঁধন ও ঢাকা দক্ষিণ ছাত্রলীগের সদস্য মো. জসিম উদ্দিন।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক )মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া জানান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্চ ভেঙে আহতদের মধ্যে লিলি নামে একজনের পা ভেঙেছে, তাকে স্কয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
এদিকে দুর্ঘটনার বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, ‘অতিরিক্ত নেতা স্টেজে ওঠার কারণে ভেঙে পড়েছে, নাকি ডেকোরেশনের কোনও ত্রুটি আছে, তা খতিয়ে দেখবো। বিগত বছরগুলোতে যাদেরকে ডেকোরেটরের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এবারও তাদেরকেই দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু তারপরও কেন এই ধরনের দুঃখজনক ঘটনা সেটি আমরা খতিয়ে দেখবো।’
আহতের সংখ্যা নিয়ে তিনি বলেন, ‘সব মিলিয়ে ৫-৭ জন আহত হয়েছেন।’
আরও পড়ুন:ঈদুল ফিতরকেন্দ্রিক যাত্রায় দেশের সড়ক-মহাসড়কে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও এক হাজার ৩৯৮ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
যাত্রীদের স্বার্থ সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করা সংস্থাটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন।
ঈদযাত্রায় অন্যান্য পথে দুর্ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একই সময়ে রেলপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত, ২১ জন আহত হয়েছে। নৌপথে দুটি দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত, পাঁচজন আহত হয়েছে।
‘সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৪১৯টি দুর্ঘটনায় ৪৩৮ জন নিহত ও ১ হাজার ৪২৪ জন আহত হয়েছে।’
যাত্রী কল্যাণ সমিতির সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে মোজাম্মেল বলেন, ‘প্রতি বছর ঈদকেন্দ্রিক সড়ক দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় সংগঠনটি ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রী হয়রানীর বিষয়টি দীর্ঘদিন যাবত পর্যবেক্ষণ করে আসছে। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এবারের ঈদে লম্বা ছুটি থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ শতাংশ মানুষের বেশি যাতায়াত হয়েছে। বর্তমান সরকারের বিগত ১৫ বছরে ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে দেশের সড়ক-মহাসড়কের অবস্থা আগের তুলনায় ভালো থাকায় যানবাহনে গতি বেড়েছে।
‘দেশের সবকটি সড়ক-মহাসড়কের পাশাপাশি পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেলের অবাধ চলাচলের কারণে মোট যাত্রীর সাত দশমিক পাঁচ শতাংশ মোটরসাইকেলে যাতায়াত করেছে। সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য ও পথে পথে যাত্রী হয়রানি চরমে উঠেছিল। গণপরিবহনগুলোতে ঈদকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যর কারণে বাসের ছাদে, ট্রেনের ছাদে, খোলা ট্রাকে, পণ্যবাহী পরিবহনে যাত্রী হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দরিদ্র লোকজনের ঈদে বাড়ি যেতে হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঈদযাত্রা শুরুর দিন ৪ এপ্রিল থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত বিগত ১৫ দিনে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও ১ হাজার ৩৯৮ জন আহত হয়েছে। বিগত ২০২৩ সালের ঈদুল ফিতরে ৩০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৮ জন নিহত ও ৫৬৫ জন আহত হয়েছিল।
‘বিগত বছরের সঙ্গে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ, প্রাণহানি ২৪ দশমিক ০৮ শতাংশ, আহত ১৪৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়েছে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের পঞ্চম তলায় শিশু হৃদরোগ (কার্ডিয়াক) বিভাগের আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র) লাগা আগুন পুরোপুরি নিভিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
শুক্রবার দুপুর দেড়টার কিছু সময় পর ওই আগুন লাগে। পরে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট প্রায় এক এক ঘণ্টার চেষ্টার পর ২টা ৪০ মিনিটে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, আগুন থেকে বাঁচতে ছোটাছুটি করে যে যেভাবে পেরেছেন সেভাবেই তাদের সন্তানদের নিয়ে হাসপাতালের বাইরের ফ্লোরে অবস্থান নিয়েছেন। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে এমনিতেই বাইরে অসহনীয় গরম। গরম সহ্য করতে না পেরে শিশুরা কান্নাকাটি করছে।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের গণমাধ্যম কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানান, আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে মোহাম্মদপুর ফায়ার স্টেশনের তিনটি ইউনিট, সিদ্দিক বাজার থেকে একটি ইউনিট, তেজগাঁও থেকে একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। ২টা ৪০ মিনিটে আগুন পুরো নিভিয়ে ফেলা হয়।
তবে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে লাগা এই আগুনে রোগীদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি বলেন, রোগীদের সবাইকে নিচে নামিয়ে আনা হয়েচে। ইউসিইউতে ১৭ জন রোগী ছিলেন আমরা নামিয়ে এনেছি। কারো কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
তিনি বলেন, হাসপাতালের বি ব্লকের ৫ তলার কার্ডিয়াক বিভাগের আইসিইউতে আগুন লেগেছে। আগুনের চেয়ে ধোঁয়া একটু বেশি ছড়িয়েছে। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।
আগুনের সূত্রপাত কীভাবে করা হলো এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখনও বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না। তবে আশঙ্কা করছি এসি থেকে আগুন লেগে থাকতে পারে।
পরে এক সংবাদ সম্মেলনে শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানান, কার্ডিয়াক বিভাগের আইসিইউতে লাগা আগুনের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির পাঁচ সদস্যের মধ্যে কার্ডিয়াক আইসিইউ বিভাগের প্রধানকে আহ্বায়ক করা হয়েছে।
এ ছাড়া কমিটিতে একজন মেইনটেইন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার, ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, ওয়ার্ড মাস্টার, একজন নার্স ও ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি রয়েছেন। তারা তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন।
এদিকে বিকেলে দেখা যায়, আগুন লাগার পর হাসপাপতালের ৫ তলা ও ৪ তলার পুরো ধোঁয়ায় ভরে গেছে। এ সময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে। আগুন থেকে বাঁচতে ছোটাছুটি করে যে যেভাবে পেরেছেন সেভাবেই তাদের সন্তানদের নিয়ে হাসপাতালের বাইরের ফ্লোরে অবস্থান নেন।
প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে এমনিতেই বাইরে অসহনীয় গরম। গরম সহ্য করতে না পেরে শিশুরা কান্নাকাটি করছে। ওপরে সবকিছু কখন ঠিক হবে তা জানেন না এ রোগী ও স্বজনরা। রোগীর অভিভাবক ও স্বজনরা আশঙ্কা করছেন, এমন অবস্থা চলতে থাকলে তাদের বাচ্চারা আরও অসুস্থ হয়ে পড়বে।
প্রচণ্ড জ্বর, সর্দি ও ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ৭ দিন আগে শিশু হাসপাতাল আইসিইউতে ভর্তি হয় পাঁচ মাসের শিশু রাইয়ান। আগুন লাগার পর শিশুটির মা আতঙ্কে হুড়োহুড়ি করে শিশুটিকে নিয়ে নিচে নামে আসেন। বাচ্চাকে নিয়ে এই অসহনীয় গরমে অবস্থান নিয়েছেন হাসপাতালের বাইরে।
কয়েকজন শিশুর অভিভাবক জানান, পাঁচতলার আইসিইউতে যেসব বাচ্চা ছিল তাদের সমস্যা হচ্ছে। অনেক বাচ্চাকে অক্সিজেন দেয়া হচ্ছিল। তাদের অক্সিজেন ছাড়া নিচে নামানো হয়। তাদের প্রত্যেকের অবস্থা খুবই নাজুক ছিল।
মধ্যসত্ত্বভোগীরা যেন সুবিধা নিতে না পারে, সিন্ডিকেট করে কৃষকদের যেন বিপদে ফেলতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ।
শুক্রবার সকালে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার দেখার হাওরে বোরো ধান কাটা উৎসবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, মধ্যস্বত্বভোগীরা যেন সুবিধা নিতে না পারে, সিন্ডিকেট করে কৃষকদের যেন বিপদে ফেলতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা সজাগ থাকলে কৃষকরা বঞ্চিত হবেন না।
মন্ত্রী বলেন, কৃষকের উৎপাদিত ফসলের সঠিক মূল্য দিতে চায় সরকার। সরকারের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সুনামগঞ্জ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। এখানে বন্যা দুর্যোগ বেশি হয়। খড়াও হয়। জেলা প্রশাসনকে বলেছি, কৃষকদের ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিতে।
তিনি বলেন, কৃষিকে সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ। কৃষকের ধানের মূল্য নির্ধারণ করতে আগামী পরশু মিটিং করব। দাম নির্ধারণ করে সরকারের কাছে প্রস্তাবনা পাঠাব।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, সুনামগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য ড. মোহাম্মদ সাদিক, ১ আসনের সংসদ সদস্য রনজিত চন্দ্র সরকার, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ধরা আগুন প্রায় এক ঘণ্টা পর নিভিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
বাহিনীর মিডিয়া সেল জানায়, শুক্রবার বেলা দুইটা ৩৯ মিনিটে আগুন নেভানো হয়।
এর আগে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের কর্মকর্তা লিমা খানম নিউজবাংলাকে জানান, বেলা একটা ৪৭ মিনিটে হাসপাতালের শিশু হৃদরোগ কেন্দ্রে আগুন ধরার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাহিনীর পাঁচটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করে।
আগুনে হতাহতের কোনো কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে জানান এ কর্মকর্তা।
তিনি আরও জানান, আগুন ধরার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয় তদন্তের পর বলা যাবে।
এদিকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বার্তায় জানায়, আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয় নৌবাহিনী।
আরও পড়ুন:রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের কার্ডিওলজি বিভাগে শুক্রবার আগুন ধরেছে।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম দুপুরে নিউজবাংলাকে জানান, বেলা একটা ৪৭ মিনিটে আগুন ধরার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাহিনীর পাঁচটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করছে।
আগুনে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।
তিনি আরও জানান, আগুন ধরার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয় তদন্তের পর বলা যাবে।
আসন্ন জুলাইয়ের আগেই পান্থকুঞ্জকে নান্দনিক উদ্যানে পরিণত করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার সকালে নগরীতে পান্থকুঞ্জ পার্কের অভ্যন্তরে পান্থপথ বক্স কালভার্টের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মেয়র এ কথা জানান।
মেয়র তাপস বলেন, পান্থকুঞ্জ উদ্যান এই এলাকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্যান। এটা উন্নয়নের জন্য ২০১৭ সালে মেগা প্রকল্পের আওতায় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক কারণে ঢাকা লিমিটেড এক্সপ্রেসওয়ে এদিক দিয়ে নওয়ার একটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ফলে এই পার্কের উন্নয়ন কাজটা বন্ধ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে তাদের সঙ্গে বিভিন্নভাবে আলোচনা করেছি, দেন-দরবার করেছি। এর ফলশ্রুতিতে তারা সুনির্দিষ্ট জায়গায় কাজ করবে। বাকি জায়গা আমাদেরকে ছেড়ে দিয়েছে। সেই জায়গায় আমরাই কাজ শুরু করেছি। বর্তমানে এটার অবকাঠামো উন্নয়ন চলছে।
মেয়র আরও বলেন, আমরা ঢাকাবাসীকে একটি নান্দনিক উদ্যান উপহার দিতে চাই। যদিও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজের কারণে উদ্যানের বড় একটা অংশ তাদের কাছে চলে যাবে। তারপরও যতটুকু রক্ষা করতে পেরেছি তা ঢাকাবাসীর জন্য অচিরেই উন্মুক্ত করে দিতে পারব। পার্কের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। জুলাইয়ের আগে পান্থকুঞ্জকে একটি নান্দনিক উদ্যানে পরিণত করা হবে।
নিউমার্কেট এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মেয়র তাপস বলেন, গত বছর কয়েকটি জায়গায় জলাবদ্ধতা হয়েছে বিশেষ করে নিউমার্কেটের সামনে ও শান্তিনগরে। যেসব কারণে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল আমরা সেগুলো পরিষ্কার করেছি। আশা করি এবার আর জলাবদ্ধ থাকবে না। নিউমার্কেট এলাকার জন্য নতুন প্রকল্প নিয়েছি।
তিনি বলেন, এর মূল কারণ হচ্ছে পিলখানা ভেতর দিয়ে আগে যে পানি প্রবাহ প্রবাহের নর্দমা ছিল সেগুলো ২০০৯ সালে বন্ধ হয়ে যায়। এজন্য গত বছর সেখানে বড় ধরনের জলবদ্ধতা হয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে আলাপ করেছি এবং সম্মতি পেয়েছি। আমরা পিলখানার ভেতর দিয়ে পানি প্রবাহের বড় নর্দমা করছি। এটা করতে পারলে ওই এলাকায় আর জলাবদ্ধতা থাকবে না। এভাবে প্রত্যেকটা এলাকায় বিচার-বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ঢাকায় বিচ্ছিন্ন কয়েকটি জায়গা ছাড়া তেমন কোন জায়গায় এখন দীর্ঘ সময় জলবদ্ধতা থাকে না উল্লেখ করে মেয়র বলেন, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমের আগে সূচি অনুযায়ী বক্স কালভার্ট, খাল ও নর্দমাগুলো পরিষ্কার করে থাকি। কারণ যাতে করে বর্ষার সময় পানি প্রবাহ স্বাভাবিক থাকে। এছাড়া ঢাকা শহরে আমরা ব্যাপকভাবে নর্দমা অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলমান রেখেছি।
পরে মেয়র সায়েদাবাদ টার্মিনাল সংলগ্ন সায়েদাবাদ সুপার মার্কেট, গেন্ডারিয়ার জহির রায়হান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র পাঠাগার ও ওয়ারীর তাজউদ্দীন স্মৃতি পাঠাগার পরিদর্শন করেন।
রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে।
বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জামালপুর থেকে ঢাকায় আসার পথে এ দুর্ঘটনায় পড়ে ট্রেনটি।
কমলাপুর রেলওয়ে থানার পরিদর্শক ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন।
দুর্ঘটনার পর ঢাকাগামী ট্রেন আটকে যায়। এ ছাড়া কারওয়ান বাজার রেলক্রসিং এবং মগবাজারে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
ফেরদৌস আহমেদ জানান, দ্রুতই উদ্ধারকাজ শুরু হয়। সকাল ১০টার দিকে লাইনচ্যুত বগি ছাড়াই ট্রেনটি গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করে।
মন্তব্য