সিলেট কোতোয়ালি থানা কম্পাউন্ডে ধুলার স্তরে ঢাকা পড়ে আছে বিলাসবহুল দুটি গাড়ি। মিতসুবিসি কোম্পানির এই পাজেরো জিপ দুটি থানা প্রাঙ্গণে খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে ৯ বছরের বেশি সময় ধরে।
শুল্ক ফাঁকি দিতে ভারত হয়ে চোরাই পথে দেশে আনা গাড়ি দুটি ধরা পড়ার পর থেকে এভাবে অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে। গাড়ি দুটির একেকটির দাম চার থেকে পাঁচ কোটি টাকা।
তথ্য রয়েছে, সিলেটে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা বিদেশি শতাধিক বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে। বিশেষত যুক্তরাজ্যপ্রবাসীরা কারনেট সুবিধার আওতায় এসব গাড়ি ভ্রমণের সময়ে ব্যবহারের কথা বলে দেশে নিয়ে এসেছেন। আর বিআরটিএর কিছু কর্মকর্তা আর্থিক সুবিধা নিয়ে এগুলোর রেজিস্ট্রেশন দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর সকালে সিলেটের বিয়ানীবাজারের শেওলা শুল্ক স্টেশন দিয়ে বিজিবির বাধা উপেক্ষা করে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে এই দুটি জিপ গাড়ি। বিজিবির টহল চৌকি ভেঙে জিপ দুটি দেশে প্রবেশের খবর ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় তোলপাড়।
এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীও ফোনে কথা বলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে নড়েচড়ে ওঠে সিলেটের প্রশাসন। বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৩১ অক্টোবর রাতেই গাড়ি দুটি উদ্ধার করা হয়।
গাড়ি উদ্ধার হলেও এগুলো যারা নিয়ে এসেছিলেন তাদের সন্ধান তখনও পায়নি পুলিশ। ভারতীয় ইমিগ্রেশনের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পারে, সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বাসিন্দা ব্রিটিশ নাগরিক কাবুল মিয়া, আসকির আলী ও অন্তর আলী শুল্ক ফাঁকি দিয়ে গাড়িগুলো দেশে নিয়ে আসেন। তাদের মধ্যে কাবুলের পাসপোর্ট নম্বর ৪৫৪৭৯৩৩৫৬, আসকির আলীর পাসপোর্ট নম্বর ৫০৮৮৯৮৫৫৮ ও অন্তর আলীর পাসপোর্ট নম্বর ৬৫২৪৯১৪৮৭। গাড়ি উদ্ধারের দিনই তারা দেশ ছেড়ে চলে যান বলে জানায় পুলিশ।
এ ঘটনায় সিলেট কোতোয়ালি থানা পুলিশ ও শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর দুটি মামলা করে।
পুলিশের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন কোতোয়ালি থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন। তিনি বর্তমানে সিলেটের জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দায়িত্বে আছেন।
মোশাররফ হোসেন সোমবার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গাড়ি দুটি যুক্তরাজ্য থেকে আনা হয়েছিল। সে সময় ইন্টারপোলের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের কারনেট কোম্পানির কাছে গাড়ি দুটির ব্যাপারে তথ্য চাওয়া হয়। কিন্তু তারা কোনো তথ্য দেয়নি। আসামি ও সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া না যাওয়ায় ২০১৭ সালে আদালতে এই মামলার ফাইনাল রিপোর্ট দেয়া হয়।
বিআরটিএ-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিলেটে বিভিন্ন দেশ থেকে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা শতাধিক বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে। প্রবাসীরা নিজে ব্যবহারের কথা বলে ও কারনেট সুবিধা নিয়ে গাড়িগুলো দেশে নিয়ে আসেন। পরে চুরি হয়ে গেছে বা দুর্ঘটনায় নষ্ট হয়ে পড়েছে অজুহাত দিয়ে এগুলো আর ফিরিয়ে নেয়া হয় না। এভাবেই ২০১৩ সালে শেওলা শুল্ক স্টেশন দিয়ে আনা হয়েছিল গাড়ি দুটি।
মিতসুবিসি কোম্পানির বিলাসবহুল পাজেরো জিপ দুটির একেকটির দাম চার থেকে পাঁচ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের সিলেট কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, আটককালে গাড়ি দুটি নতুন ছিল। নতুন গাড়ি আনতে গেলে আমাদের এখানে ৩০০ শতাংশ ট্যাক্স দিতে হয়। সেটা ফাঁকি দিতেই এভাবে নিয়ম ভেঙে ইমিগ্রেশন ফাঁকি দিয়ে গাড়ি নিয়ে আসা হয়েছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) সুদীপ দাস বলেন, ‘গাড়িগুলো নিলামে তোলার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু আদালত থেকে এখনও অনুমোদন মেলেনি। আবেদনটি সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিবেচনাধীন। আদালতের নির্দেশ ছাড়া এগুলো সরানোর এখতিয়ার নেই।’
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সূত্রে জানা যায়, সিলেটে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা শতাধিক বিদেশি বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে। বিআরটিএর কিছু কর্মকর্তা আর্থিক সুবিধা নিয়ে এ রকম অনেক গাড়ির রেজিস্ট্রেশন দিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এমন অভিযোগের প্রমাণ পেয়ে বিআরটিএ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদকা। তাতে অভিযোগ করা হয়, কারনেট সুবিধায় যুক্তরাজ্য থেকে কর ফাঁকি দিয়ে দেশে আনা একটি লেক্সাস গাড়ি ১৭ লাখ টাকার বিনিময়ে জাল কাগজ দিয়ে রেজিস্ট্রেশন দেন বিআরটিএ কর্মকর্তারা। এতে দুই কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ এনে সিলেট বিআরটিএর সহকারী পরিচালক এনায়েত হোসেন মন্টুসহ সাতজনের বিরুদ্ধে সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন দুদক প্রধান কার্যালয়ের সহকারী উপপরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত) ফরিদুর রহমান।
তবে এখন এমন অনিয়ম হয় না বলে দাবি করেন বিআরটিএ সিলেট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজুল ইসলাম। তিনি বলেন, শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা গাড়িগুলো ধরতে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর নিয়মিত অভিযান চালায়। আমরাও তাদের তথ্য দিয়ে সহায়তা করি। এসব গাড়িকে রেজিস্ট্রেশন দেয়ার সুযোগ নেই।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাজ্যে কারনেট নামে একটি আন্তর্জাতিক অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশন রয়েছে। যুক্তরাজ্যের কোনো নাগরিক পর্যটক হিসেবে তার গাড়ি নিয়ে অন্য কোনো দেশে যেতে চাইলে ব্যবস্থা করে দেয় ওই অ্যাসোসিয়েশন।
কারনেটের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি পাসপোর্টের বিপরীতে একটি গাড়ি দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। তবে তা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। বিদেশ থেকে বাংলাদেশে গাড়ি প্রবেশে তিন শ ভাগ সরকারি শুল্ক নির্ধারণ রয়েছে। তবে কারনেটের গাড়ি প্রবেশে পোর্ট ফি ছাড়া কোনো সরকারি শুল্ক দিতে হয় না। এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত অনেক সিলেটি দেশে নিয়ে আসেন এসব দামি গাড়ি।
কারনেটের নিয়ম অনুযায়ী পর্যটক হিসেবে আনা এসব গাড়ি ২৪ মাসের মধ্যে নিজ দেশে ফেরত নেয়ার কথা। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় চলে গেলেও এসব গাড়ি থেকে যাচ্ছে বাংলাদেশে।
আরও পড়ুন:টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে যৌথবাহিনীর অভিযানে একজনকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলাঝাড়ি বাজারের করতোয়া নদীসংলগ্ন এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়।
দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর জুবায়ের হোসেন সিয়ামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক্টরসহ চালক রাজু ইসলাম ও শান্ত আহমেদকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
আদালতের রায়ে রাজু ইসলামকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন করায় দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। তবে রাজু ইসলাম অর্থদণ্ডের অর্থ পরিশোধ করায় ট্রাক্টর দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় মাত্র এক মাসের ব্যবধানে একই ক্লিনিকে সিজারিয়ান ডেলিভারির সময় দুই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ সোমবার (৭ জুলাই) রাতে মুন্নি খাতুন (২৫) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী সিজারিয়ান অপারেশনের সময় মারা যান। এর আগে ৮ জুন ওই ক্লিনিকেই আখি খাতুন (২২) নামের আরেক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। পরপর এমন দু’টি মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্লিনিক মালিকের ছেলে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেস্টা করছে বলে জানাগেছে।
সোমবার রাতে মুন্নির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্লিনিক মালিক আবুল হোসেনের ব্রাকপাড়া এলাকার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। পরে তারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহত মুন্নি খাতুন উপজেলার তারাগুনিয়া ব্রাকপাড়া এলাকার মঞ্জু হোসেনের মেয়ে। আর নিহত আখি খাতুন পূর্ব কবিরাজপাড়া গ্রামের ইমনের স্ত্রী।
মুন্নির পরিবারের সদস্যরা জানান, গর্ভাবস্থায় জটিলতা দেখা দিলে সোমবার তাকে উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা ঝুঁকির কথা বলে কুষ্টিয়া বা রাজশাহীতে রেফার করার পরামর্শ দেন। সন্ধ্যায় তাকে তারাগুনিয়া থানার মোড় বাজারের আবুল হোসেনের মালিকানাধীন তারাগুনিয়া ক্লিনিক নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তৃপক্ষ সিজারিয়ানে সম্মত হয়। কিন্তু রাত ৯টার দিকে অপারেশনের সময়ই মুন্নির মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে তারাগুনিয়া ক্লিনিকের মালিক আবুল হোসেন বলেন, “রোগী কীভাবে মারা গেছে সেটা ডাক্তাররাই ভালো বলতে পারবেন। আমি নিজে অপারেশনে ছিলাম না, তাই কিছু জানি না। টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”
অপারেশনকারী চিকিৎসক ডা. সফর আলী বলেন, “রোগীকে ওটিতে আনার আগে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ওষুধ প্রয়োগ করেন। আমরা ওটিতে ঢুকেই দেখি রোগী স্ট্রোক করেছে। এরপর দ্রুত নবজাতকের প্রাণ রক্ষায় সিজারিয়ান সম্পন্ন করি।”
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, “একই প্রতিষ্ঠানে পরপর দুই প্রসূতির মৃত্যু অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি। আজই ক্লিনিকটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, “গতকাল রাতে তারাগুনিয়া এলাকার একটি ক্লিনিকে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ক্লিনিক এলাকায় উত্তেজনা ও হট্টগোলের আশঙ্কায় আমি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পাঠাই। পরে জানতে পারি, নিহত নারীর এলাকা থেকে কিছু লোকজন ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে হামলা চালায়। আমরা দ্রুত সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। শুনেছি দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করে নিয়েছে।”
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল হাই সিদ্দিকী বলেন, এক মাসের মধ্যে দুইজন রোগীর মৃত্যু অত্যান্ত দুঃখজনক। ঘটনায় কর্তৃপক্ষকে বলবো তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।
একই ক্লিনিকে এক মাসের ব্যবধানে দুই প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ভোলা-২ (বোরহানউদ্দিন-দৌলতখানের) সাবেক সংসদ সদস্য মো: হাফিজ ইব্রাহিমের নামে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে সেলিম নামে এক ব্যক্তির দেওয়া অভিযোগটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করা হয়েছে।
রোববার বিকেলে বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড়মানিকায় শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের আয়োজনে বৃক্ষরোপন কর্মসূচিতে গণমাধ্যমকর্মীদের দেয়া স্বাক্ষাতকারে এ দাবি করেন হাফিজ ইব্রাহিম।
এর আগে দৈনিক ইত্তেফাক, সমকাল, যায়যায়দিন সহ বেশ কয়েকটি পত্রিকার ডিজিটাল প্লাট ফরমে একটি সংবাদে দেখা যায়, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে হাফিজ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ তুলে সেলিম নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের হাফিজ ইব্রাহিম বলেন, সংবাদটি ডিজিটাল প্লাট ফরমে প্রকাশ হওয়ার পর আমার নজরে আসে। আমি মনোযোগ দিয়ে তার অভিযোগ শুনি। যে ব্যক্তি আমার নামে জমি দখলের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি আমার নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা না। আমি খবর নিয়ে জেনেছি, তিনি ভোলা-১ সদর আসনের বাসিন্দা ভোলা সদর আসনের সাবেক এমপি ও মন্ত্রী মরহুম মোশারেফ হোসেন শাহজাহানের বাড়ির পাশে তার বাড়ি। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সেলিম নামে ওই ব্যক্তির সাথে তার আপন ভাতিজি জামাইয়ের দীর্ঘদিন ধরে জমি-জমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে তার ভাতিজি জামাই তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে থাকতে পারে এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। এমনকি ওই বিষয়ে ভোলা সদর থানায় মামলা রয়েছে।
হাফিজ ইব্রাহিম আরও বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। পতিত সরকারের পলাতক একটি কুচক্রী মহল বিএনপির নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে ও দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা এই ঘটনার পেছনে যে আসল সত্য রয়েছে তা উদঘাটন করুন।
জুলাই-আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজশাহী মহানগরীর একটি থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করেছে র্যাব-৫।
রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর টিকাপাড়া এলাকার একটি বালুর স্তূপের আনুমানিক ২ ফুট গভীর থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়।
সোমবার সকালে র্যাব-৫ এর মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
অভিযানে একটি ৭.৬২ মি.মি. বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন এবং এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৫; সিপিএসসি’র একটি আভিযানিক দল জানতে পারে, ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন লুট হওয়া অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি দুষ্কৃতকারীরা বোয়ালিয়া থানাধীন টিকাপাড়া এলাকায় লুকিয়ে রেখেছে। পরে নিরপেক্ষ সাক্ষীদের উপস্থিতিতে অভিযান চালিয়ে বালুর স্তূপের ভেতর থেকে বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করে র্যাবের গোয়েন্দা দল।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাসস’কে জানান, এটি পুলিশের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র। তবে কোন থানার অস্ত্র সেটি নিশ্চিত করা যায়নি। কারণ পিস্তলের গায়ে বাট নম্বর ঘষা-মাজার চিহ্ন স্পষ্ট। উদ্ধারকৃত বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি বোয়ালিয়া থানায় জিডির পর হস্তান্তর করা হয়েছে।
মানিকগঞ্জের শিবালয়ে স্থানীয় মোহামেডান ইয়ুথ ক্লাবের উদ্যোগে শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্ণামেন্ট শুরু হয়েছে । উক্ত খেলা উদ্বোধন করেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ( বিএনপি) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির ১ নং সদস্য , জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবির ।
শনিবার (৫ জুলাই) বিকাল ৪ টায় শিবালয় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্ণামেন্ট উদ্বোধন করা হয় ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, মানিকগঞ্জ জেলা যুবদলের আহবায়ক কাজী মোস্তাক হোসেন দিপু, জেলা বিএনপির সাবেক কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপি'র সহ-সভাপতি এবং জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মো: লোকমান হোসেন, উপজেলা বিএনপি সভাপতি রহমত আলী লাভলু, সম্পাদক মিজানুর রহমান লিটন, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন, জেলা কৃষকদলের সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদ,জেলা বিএনপির সাবেক প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ও দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মো: ফেরদৌস রহমান, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মো: হোসেন আলী, উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মো: শহিদুল ইসলাম ।
এছাড়া উপস্থিত ঘিওর উপজেলা বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক মো: রাজা মিয়া মেম্বার, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আসিফ ইকবাল রনি, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আখতারুজ্জামান আক্তার, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মামিনুল ইসলাম মমিন, জেলা যুবদলের সদস্য মোসলেম উদ্দিন,জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব খান অয়ন, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জিহাদ প্রমূখ । সভাপতিত্ব করেন,মোহামেডান ইয়ুথ ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার মহিদুর রহমান কাজল ।
প্রধান অতিথি এসএ জিন্নাহ কবির বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়া রহমান এবং বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া এদেশে প্রথম ফুটবল খেলাকে আন্তর্জার্তিক পর্যায়ে নিয়ে যান। তাদের চেষ্টায় সার্ফ ফুটবল টুর্ণামেন্ট আয়োজন করার সম্ভব হয়। মাদক মুক্ত সমাজ গড়তে যুব সমাজকে খেলার মাঠে আনতে হবে । মাদক মুক্ত সমাজ গড়তে হলে খেলাধুলার বিকল্প নাই ।
স্থানীয় মোহামেডান ইয়ুথ ক্লাব আয়োজিত টুর্ণামেন্টে নক-আউট পদ্ধতিতে আটটি দল অংশ নিচ্ছে। উদ্বোধনী খেলায় টাইব্রেকারে মানিকগঞ্জ কৈট্রা ফিউচার ফুটবল একাডেমী ৫-৪ গোলে পাবনার নবযুগ মিলন সমিতিকে হারায়। রেফারি ছিলেন আবুল কালাম।
মন্তব্য