বগুড়া সকাল থেকে ঘন কুয়াশায় ঢাকা। দুপুর ১২টা পেরোলেও সূর্যের দেখা মেলেনি। শহরের মফিজ পাগলার মোড়ের সামনে দিয়ে কাঁধে ভার নিয়ে যাচ্ছিলেন ভাঙারি ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ। সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে একটু অবাক হন।
বললেন, ‘এখন আবার কিসের ভোট?’
শহরের নামাজগড় নূরানি মোড় এলাকার বাসিন্দা ৮০ বছরের এই আব্দুর রশিদ।
হাসিমুখে বলেন, ‘নির্বাচনের কিছু তো শুনিনি বাবা। সকাল ৯টায় বের হই। সারা দিন ভাঙারির মাল নিয়ে মহাজনকে দিয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি যাই। ভোটের কিছু জানি না।’
বিএনপির সাত এমপির পদত্যাগের কারণে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি বগুড়া ৪ ও ৬ আসনে উপনির্বাচনে ভোট হতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে অনেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শুরু করেছেন।
বিএনপির দুর্গখ্যাত আসন দুটির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে নির্বাচনের কোনো আমেজ দেখা যায়নি। শুধু অল্প কিছু পোস্টার, ব্যানার সাঁটানো আছে। সেগুলোও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের। বরং আসন দুটির অনেক ভোটার নতুন করে উপনির্বাচনের বিষয়টি জানেনই না।
প্রার্থীরা বলছেন, তারা ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। প্রতীক পেয়েই পুরোদমে মাঠে নামবেন প্রার্থীরা। আইন অনুযায়ী প্রতীক বরাদ্দের আগে প্রচারে নামা সম্ভব নয়। তবে সামাজিক মাধ্যমের বিকাশের যুগে আনুষ্ঠানিকভাবে না নামলেও আলোচনা শুরু হয়ে যায় আগেই। কিন্তু বগুড়ায় নাই সেটিও।
বগুড়া-৬ আসনে মোট মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ৯ জন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হলেন রাগেবুল আহসান রিপু, জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম ওমর, জাসদের (ইনু) ইমদাদুল হক ইমদাদ ও গণফ্রন্টের আফজাল হোসেন।
বাকি ৫ জন স্বতন্ত্র। তারা হলেন আব্দুল মান্নান, সৈয়দ কবির আহম্মেদ মিঠু, মাছুদার রহমান হেলাল, আশরাফুল হোসেন আলম ও রাকিব হোসেন।
বগুড়া-৬ আসনটি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়া পরিবারের ঘরের আসন। ১৯৭৯ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত যেসব নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, তার প্রতিটিতেই জিতেছে বিএনপি। এর মধ্যে ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত চারবার সংসদ সদস্য হন বেগম খালেদা জিয়া।
যেহেতু নির্বাচনে বিএনপি থাকছে না, যে কেউ জিতে যেতে পারেন। তবে প্রচারের দিকে এখন পর্যন্ত এগিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মান্নান আকন্দ। তিনি সদরের বেশ কয়েকটি এলাকায় জনসংযোগ করেছেন। পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও সরব।
সদরের সাবগ্রাম এলাকার ব্যবসায়ী মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ভোটের বিষয়টি এবার ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। কারণ দুটি হতে পারে। হঠাৎ আসন শূন্য হওয়াটা অনেকে জানেন না। আবার বিএনপি না থাকায় নির্বাচনী আমেজ কম রয়েছে।’
গোকুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী রেজা তোতুল বলেন, ‘সত্যি বলতে আমরা এখনও সাংগঠনিকভাবে প্রচার কাজ শুরু করিনি।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ কবির আহম্মেদ মিঠু বগুড়া জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক। তিনি ২০১৯ সালের উপনির্বাচনেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে ভোট পেয়েছিলেন ৬৩০টি।
কবির বলেন, ‘প্রার্থীদের এখনও প্রতীক দেয়া হয়নি। প্রতীক পাওয়ার পরই প্রচারণার মূল কার্যক্রম শুরু হবে। তবে আমার শ্রমিক সংগঠন ও শহরের মানুষদের সঙ্গে নিয়মিত কথা হচ্ছে।’
এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উঠে আসছে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মান্নান আকন্দের নাম। এর আগে বগুড়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং বগুড়া পৌরসভার মেয়র পদে নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হন তিনি। তবে ২০২১ সালের পৌরসভার নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট পান ৫৬ হাজার ৯০টি।
আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আমি কোনো দলের হয়ে নির্বাচন করতে চাই না। আমি এমপি হতে চাই জনগণের। দল থাকবে দলের জায়গায়। এই ধারণা নিয়েই আমি জনসংযোগ করছি।’
এ আসনের নৌকার প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু জানান, ‘প্রচারণা চলছে। মঙ্গলবার জেলায় আওয়ামী লীগের দলীয় সভা রয়েছে। এ জন্য ব্যস্ততা বেশি।’
কাহালু-নন্দীগ্রাম নিয়ে বগুড়ার ৪ আসন। ১৯৮৬ সালে সীমানা পরিবর্তন করে কাহালু ও নন্দীগ্রাম দুই উপজেলা নিয়ে আসনটি গঠন করা হয়। নন্দীগ্রাম উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এবং কাহালু উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা রয়েছে।
বেশ কয়েকজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র তুললেও ভোটের মাঠ এখনও শীতল। নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকায় অনেক নেতাদের নাম আলোচনায় এসেছিল। সে সময় বেশ কিছু ব্যানার বিভিন্ন স্থানে ঝোলানো হয়। এখনও সেগুলো ঝুলে আছে।
এখানে আসনে পাঁচজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন তুলেছেন। তারা হলেন গোলাম মোস্তফা, ইলিয়াস আলী, আশরাফুল হোসেন আলম, আব্দুস জব্বার প্রাং এবং কামরুল হাসান সিদ্দিকী জুয়েল।
জাসদ নেতা এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন মহাজোটের প্রার্থী। জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন শাহীন মোস্তফা কামাল।
কাহালু পৌর এলাকার চা ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘চা খাওয়ার জন্য নানা ধরনের লোকজন আসে। দেশ-বিদেশ সব জায়গার গল্প হয়, শুনি। কিন্তু আমার বাড়ি সদর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। সেখানে গেলে দেখবেন অনেকে জানেই না জাতীয় ভোট আবার হচ্ছে।’
কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভোটের জমজমাট ভাব আর আগের মতো নেই। শুধু দলীয় লোকজনের মধ্যে আছে। আর এই ভোট তো হঠাৎ করে হচ্ছে।’
নন্দীগ্রামের একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, ‘ভোটের মাঠে এখনও তেমন কিছু দেখছি না। এই ভোট একটু অন্য রকম। তবে আমরা সুন্দর পরিবেশে ভোট দিতে চাই। একজন দক্ষ ব্যক্তিকে প্রতিনিধি হিসেবে দেখতে চাই।’
নন্দীগ্রামের সাবেক পৌর মেয়র কামরুল হাসান সিদ্দিকী জুয়েল স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন তুলেছেন। তিনি পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ছিলেন। কয়েক বছর দল থেকে বহিষ্কৃত হন। জানিয়েছেন, প্রতীক বরাদ্দের পর মাঠে নামবেন।
জাতীয় পার্টির শাহীন মোস্তফা কামাল বলেন, ‘বিগত সময় দেখেছি, মানুষ তো এলাকার এমপিদের কাছেই পায় না। ইনশা আল্লাহ, আমি ভোটে জয় পেলে এলাকার সার্বিক উন্নয়ন বাস্তবায়ন করব।’
দুই আসনে মনোনয়ন তুলে ফের আলোচনা হিরো আলম
মো. আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম এবার দুটি আসন থেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন তুলেছেন।
হিরো আলম বলেন, বগুড়া-৬ আসনে তার বসবাস। এখানকার মানুষের ইচ্ছাকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। আবার বিগত ২০১৮ সালের নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন।
ভোটে বিএনপির তৃণমূলের ভূমিকা কী
উপনির্বাচন নিয়ে বিএনপি কী ভাবছে, সেটি এই প্রশ্নে কিছু বলছেন না নেতা-কর্মীরা। তবে তাদের নিরুত্তাপ ভাব বলছে নির্বাচন নিয়ে মাথাব্যথা কম।
কাহালু থানা বিএনপির সভাপতি ফরিদুর রহমান ফরিদ বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে তো আমাদের কোনো ভাবনার কিছু নেই। কারণ, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা তো নির্বাচন বর্জন করেছি। আমরাও তৃণমূল পর্যায়ে বলে দিয়েছি ভোট দিতে না যাওয়ার জন্য।’
গত বছরের ১০ ডিসেম্বর বিকেলে রাজধানীর গোলাপবাগে ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে বিএনপির দলীয় সাতজন এমপির পদত্যাগ ঘোষণা আসে। পরদিন ১১ বিএনপির ছয়জন সংসদ সদস্য স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। একজন দেশের বাইরে ছিলেন। তিনি পরে জমা দেন পদত্যাগপত্র।
এই সাত সংসদ সদস্যের মধ্যে রুমিন ফারহানা সংরক্ষিত নারী আসনের। বাকি ছয়টি আসনে হচ্ছে উপনির্বাচন।
আরও পড়ুন:পণ্যের ওপর যে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার, সেটিকে ‘হঠকারী সিদ্ধান্ত’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাহারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
দলটির ভাষ্য, এ সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষকে ব্যাপক ভোগান্তিতে ফেলবে। যদিও অন্তবর্তী সরকারের দাবি, ‘এতে ন্যূনতম প্রভাব পড়বে।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের অফিসে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার যে ভ্যাট ও পরোক্ষ কর বাড়িয়েছে, তাতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়বে।’
দেশের চলমান অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও মুদ্রাস্ফীতির কথা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘শতাধিক পণ্যের ওপর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার। কিছু কিছু পণ্যের ওপর থেকে কর অব্যাহতিও প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে খাদ্য, পোশাক, ওষুধ ও মোবাইল ইন্টারনেট সেবাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যও রয়েছে।’
এতে সাধারণ মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে গরিব ও মধ্যবিত্তদের ব্যাপক দুর্ভোগে পড়তে হবে।’
এসব ভোগান্তি থেকে সাধারণ মানুষকে রেহাই দিতে বিকল্প পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ওপর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর পরিবর্তে সরকার যাতে অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন খরচ কমিয়ে দেয়, অন্তবর্তী সরকারকে সেই পরামর্শও দিয়েছে বিএনপি।
বিএনপির বর্ষীয়ান এ রাজনীতিক বলেন, ‘জবাবদিহিতাপূর্ণ একটি প্রশাসনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত একটি জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করা।’
এর আগে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাঝপথে এসে শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ায় সরকার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এতে দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ আরেক দফা বেড়ে যেতে পারে সাধারণ মানুষের। উদাহরণ হিসেবে তারা বলেছেন, মুঠোফোন সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির ফলে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ বাড়বে। আবার পোশাক–আশাকের দামও বাড়তে পারে ভ্যাট বৃদ্ধির কারণে।
এ ছাড়া মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে মিষ্টি, ওষুধ, এলপি গ্যাস, ফলের রস, ড্রিংক, বিস্কুট, চশমার ফ্রেম, সিগারেটসহ নানা পণ্যের।
গেল ৯ জানুয়ারি রাতে এ–সংক্রান্ত দুটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। অধ্যাদেশ দুটি হলো মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ এবং দি এক্সাইজ অ্যান্ড সল্ট (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫।
এ ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের ওপর তেমন কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন:‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
শেখ হাসিনার শাসনামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বর্তমানে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের ‘সন্ত্রাসী’ কর্মকাণ্ডের যথাযথ বিচার ও সন্ত্রাসীদের সাজা নিশ্চিত করার দাবিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
আগামীকাল বেলা দুইটায় এ কর্মসূচি পালন করবে সংগঠনটি।
ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক (সহসভাপতি পদমর্যাদা) মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শুক্রবার এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “আগামীকাল ১৮ জানুয়ারি, শনিবার দুপুর দুইটায় ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ কর্তৃক সংঘটিত সকল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের যথাযথ বিচার ও সন্ত্রাসীদের সাজা নিশ্চিত করার দাবিতে এবং জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দোসর হিসেবে ভূমিকা পালনকারী শিক্ষকদের বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার অভিমুখে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালন করবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।”
ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
নেতারা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সকল নেতা-কর্মীসহ আপামর ছাত্রসমাজকে মিছিলে অংশগ্রহণ করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
গত বছরের ৩১ জুলাই দেশের সব আদালত, ক্যাম্পাস ও রাজপথে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালন করেছিল কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য পুলিশ লাঠিপেটা, সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। আটক করা হয় অনেককে।
সারা দেশে ‘ছাত্র-জনতা হত্যা, গণগ্রেপ্তার, হামলা, মামলার’ প্রতিবাদে ও জাতিসংঘের অধীনে ঘটনার তদন্ত করে বিচার এবং ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ওই কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল আন্দোলনকারীরা।
আরও পড়ুন:জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বৃহস্পতিবারের সংলাপে অংশ নেবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
বিএনপি এ বিষয়ে আলোচনার জন্য যথেষ্ট সময় পায়নি উল্লেখ কর দলটির মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান বৃহস্পতিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
শায়রুল বলেন, আজ বিকাল ৪টা থেকে ৭টা পর্যন্ত ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।
‘জাতীয় ঐকমত্যের’ ভিত্তিতে ‘জুলাই ঘোষণা’ চূড়ান্ত করা হবে।
এর আগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের বিষয়ে একটি ঘোষণাপত্র তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করে।
প্রধান উপদেষ্টার (সিএ) প্রেস উইং জানায়, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গড়ে ওঠা জনগণের ঐক্যকে সুদৃঢ় করার জন্য এ ঘোষণাপত্র গৃহীত হবে। এটি তার ফ্যাসিবাদবিরোধী চেতনা ও রাষ্ট্রীয় সংস্কারের দাবিকে তুলে ধরবে।
ঘোষণার খসড়ায় গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ সব রাজনৈতিক দল ও শিক্ষার্থীদের মতামত অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এ ঘোষণাপত্রে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট, ঐক্যের ভিত্তি ও জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার চিত্র ফুটে উঠবে বলে জানিয়েছে প্রেস উইং।
সরকার আশা করছে যে, ঘোষণাপত্রটি সব অংশীজনের অংশগ্রহণে সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তুত করা হবে এবং তারপর জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে।
আরও পড়ুন:জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র তৈরির বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সর্বদলীয় বৈঠকে অংশ নেবে না লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)।
দলের প্রেসিডেন্ট ডক্টর কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রমের প্রেস সেক্রেটারি সালাহ উদ্দীন রাজ্জাক বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বৃহস্পতিবার বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত এ সর্বদলীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বুধবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বিষয়টি জানানো হয়।
এর আগে গত মঙ্গলবার ব্রিফিংয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম জানিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবারের সর্বদলীয় বৈঠকে ঠিক হবে জুলাই ঘোষণাপত্রে কী থাকবে। কবে ঘোষণাপত্র জারি করা হবে এবং সরকার কীভাবে এতে ভূমিকা রাখবে, সেটিও আজ জানানো হবে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা বাড়িয়ে হাইকোর্টের দেওয়া ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে।
আদালত বুধবার রায় ঘোষণার জন্য দিন ঠিক করেছে।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের বেঞ্চ আজ আপিলের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য দিন ঠিক করে আদেশ দেন।
আদালতে বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। এ ছাড়াও বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে বিপুলসংখ্যক আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ ও অনিক আর হক। আর দুদকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. আসিফ হাসান।
আপিল শুনানিতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা সর্বোচ্চ আদালতকে জানান, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট গঠনের ক্ষেত্রে খালেদা জিয়া সই-স্বাক্ষর করেছেন, এমন কোনো নথি প্রসিকিউশন দেখাতে পারেনি। আর টাকা কোথা থেকে এসেছে, তাও দেখাতে পারেনি। আর যে অর্থ আত্মসাৎ বলা হয়েছে, তা ব্যাংক হিসাবে রক্ষিত আছে এবং সেই টাকা সেখানে অনেক বেড়েছে।
তারা জানান, এ মামলার বিচারে সংবিধান ও আইন অনুসরণ করা হয়নি। মামলাটি আইনগত, মৌখিক, এমনকি শোনা সাক্ষ্য-প্রমাণহীন। সর্বোপরি অনুমাননির্ভর ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ অন্যদের সাজা দেওয়া হয়েছে।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীনসহ শুনানিতে অংশ নেওয়া আইনজীবীরা মামলায় খালেদা জিয়া খালাস পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় বিচারিক আদালতে খালেদা জিয়ার জবানবন্দি সর্বোচ্চ আদালতের শুনানিতে পড়ে শোনাতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
ওই সময় আদালতে পিনপতন নীরবতায় উপস্থিত অনেক আইনজীবীকেও আবেগাপ্লুত হতে দেখা যায়।
এর আগে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে বেগম খালেদা জিয়ার করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে করা আবেদন) গত ১১ নভেম্বর মঞ্জুর করে ১০ বছরের কারাদণ্ড স্থগিতের আদেশ দেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির আপিল বিভাগ।
শুনানিতে দুদকের আইনজীবী মো. আসিফ হাসান আদালতকে বলেছিলেন, ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের টাকা কিন্তু আত্মসাৎ হয়নি। জাস্ট ফান্ডটা মুভ হয়েছে। তবে সুদে আসলে অ্যাকাউন্টেই টাকাটা জমা আছে। কোনো টাকাটা ব্যয় হয়নি।’
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এ মামলায় খালেদা জিয়ার দেওয়া ৩৪২ ধারায় বক্তব্য তুলে ধরে সর্বোচ্চ আদালতকে বলেন, ‘কবি কাজী নজরুল ইসলামের সেই রাজবন্দির জবানবন্দির প্রতিফলন বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যে উঠে এসেছে। আর খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল সংক্রান্ত কোনো অনুদান গ্রহণ বা বিতরণের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলা হয়েছে।’
বিগত শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।
একই বছরে ২৮ মার্চ খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের করা আবেদনে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এরপর সাজা বৃদ্ধিতে দুদকের আবেদনে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ খালেদা জিয়ার সাজা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেছেন রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতির এ ক্ষমার পরেও মামলা দুটি আইনগতভাবে লড়ার কথা জানিয়ে বিএনপির আইনজীবীরা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। রাষ্ট্রপতি তার সাজা মওকুফ করেছেন। তবে সেখানে ক্ষমার কথা আছে। খালেদা জিয়া ক্ষমার প্রতি বিশ্বাসী নন। তিনি অপরাধ করেননি; তিনি ক্ষমাও চাননি। তাই এটা আইনগতভাবে মোকাবিলা করবেন।
আরও পড়ুন:দেশের বৃহত্তর স্বার্থে চলতি বছরের আগস্টের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা মনে করি এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব।’
দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পরের দিন মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবির কথা জানান।
এর আগে সোমবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অংশ নেন নেতারা।
চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন আয়োজনে পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, নির্বাচন কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, যেহেতু নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং প্রশাসনে আপেক্ষিক স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে, তাই নির্বাচন পেছানোর কোনো কারণ নেই।’
বিএনপির বর্ষীয়ান এ রাজনীতিক বলেন, সরকার গঠিত নির্বাচন সংস্কার কমিশনও বুধবার তাদের প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে।
ফখরুল বলেন, ‘তাই নির্বাচন পেছানোর কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে আমরা মনে করি না। যত বিলম্ব হবে, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট তত গভীর হবে।’
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন যে, নির্বাচিত সরকারের কোনো বিকল্প নেই। কারণ এটি গণতন্ত্রের ভিত্তি।
আরও পড়ুন:বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির নেতারা স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে আলোচনাকে জাতীয় নির্বাচনের সময়ক্ষেপণ মনে করছেন বলে জানিয়েছে বাসস।
বৈঠক সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এ তথ্য জানায় রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থাটি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে সূত্রের বরাত দিয়ে বাসস জানায়, বর্তমানে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের যে আলোচনা বা চিন্তা, সেটি জাতীয় নির্বাচনের সময়ক্ষেপণ বলে বৈঠকে আলোচনায় নেতারা মত প্রকাশ করেন। তাদের মতে, অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনের চিন্তা বাদ দিয়ে জনআকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী চলতি বছরের মাঝামাঝিতেই জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করা এবং এর সকল আয়োজন সম্পন্ন করা।
ওই সূত্র আরও জানায়, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিএনপি নেতারা সভা-সেমিনারের মধ্য দিয়ে নির্বাচনের এ দাবিকে শিগগিরই সামনে নিয়ে আসবেন।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাঝপথে এসে শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার। গত বৃহস্পতিবার রাতে এ সংক্রান্ত দুটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
বৈঠকে এ ভ্যাট এবং ট্যাক্স বৃদ্ধির ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্রটি।
বিএনপি নেতারা মনে করেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় কোনো নির্বাচিত সরকার থাকলে তারা কোনোভাবে জনগণের দুর্ভোগ বাড়ানোর কারণ হয়ে দাঁড়াত না। তারা জনঘনিষ্ঠ এবং দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত পণ্যে এভাবে ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়াত না।
স্থায়ী কমিটির বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুরে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
বৈঠকে যুক্তরাজ্যে চিকিৎসারত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। দলের চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্য ক্রমাগত উন্নতির দিকে থাকায় শুকরিয়া আদায় করেন বিএনপি নেতারা।
নেতাদের একজন বলেন, ‘ধীরে ধীরে ম্যাডামের স্বাস্থ্যের উন্নতি হওয়া আমাদের জন্য সুখবর। ম্যাডাম এখন খুব প্রফুল্ল আছেন। তিনি হাসপাতালে পারিবারিক পরিমণ্ডলে বেশ ভালো সময় কাটাচ্ছেন।’
গত ৮ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের দ্য ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। তিনি অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডির তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন।
বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য