নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিরোধী দলগুলোর জোরালো আন্দোলনের হুমকির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগের আন্দোলনে বেপরোয়া পেট্রলবোমা হামলার কথা স্মরণ করলেন। বললেন, আর যেন কেউ সেটি করতে না পারে।
রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর হতে পুলিশ বাহিনীকে নির্দেশ দিয়ে বুধবার এসব কথা বলেন সরকারপ্রধান। পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩-এর দ্বিতীয় দিন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভবিষ্যতে যাতে কেউ আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে না পারে, কেউ যেন আর ঐ অগ্নি সন্ত্রাস করার সাহস না পায়, মানুষের জীবনে শান্তি ও নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত করতে না পারে।
‘হ্যাঁ, আন্দোলন সংগ্রাম করবে, জনগণকে নিয়ে করবে। কিন্তু সেখানে যদি কোনো ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম করে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা সবাইকে নিতে হবে।’
আগের দিন রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধন করেও প্রধানমন্ত্রী এই প্রসঙ্গটি আনেন। সেদিন তিনি ২০১৩-১৪ সালের মতো রাজনৈতিক সহিংসতা যেন দেশে আর তৈরি না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দেন।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে একটি রিট আবেদনের শুনানি শেষে ২০১১ সালের প্রথম প্রান্তিকে উচ্চ আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে অসাংবিধানিক ঘোষণার পর ওই বছর নির্বাচিত সরকারের অধীনে ভোটের ব্যবস্থা ফেরায় আওয়ামী লীগ সরকার।
এর প্রতিবাদে ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। সেই সঙ্গে সেই নির্বাচন বানচালে যায় আন্দোলনে। তবে বিরোধীদের বর্জনের মুখে একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতায় ফেরে আওয়ামী লীগ।
তবে আওয়ামী লীগ সরকার মেয়াদ পূর্তি করে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচন দেয়। সেই নির্বাচনের আগে আবার আন্দোলনের ঘোষণা দিলেও তাতে অংশ নেয় বিএনপি। ২০-দলীয় জোটের পাশাপাশি গড়ে তোলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে আরও একটি জোট।
তবে সেই নির্বাচনে আগের রাতেই ভোট হয়ে যাওয়ার অভিযোগ এনে আবার তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ফিরে গেছে। আর আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধীদের এই দাবি নাকচ করে এমনকি আলোচনায় না বসার কথাও বলছে। তারা বলছে, উচ্চ আদালত এবং জাতীয় সংসদ- দুই জায়গাতেই তত্ত্বাবধায়কের বিষয়টির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। সেটি ফেরার আর সুযোগ নেই।
সরকার এবং বিরোধী পক্ষ যদি এই অবস্থানে থাকে, তাহলে ২০১৩-১৪ এবং ২০১৫ সালের মতো সংঘাতপূর্ণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি আবার ফিরে আসে কি না, সেই আশঙ্কার কথাও বলাবলি হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার কারণে দেশের উন্নতি হয়েছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশে যতটুকু উন্নতি আমরা করেছি, এগুলো এমনি এমনি আসেননি। এর জন্য আমাদের শ্রম দিতে হয়েছে, কষ্ট করতে হয়েছে। আজকের বাংলাদেশে আমরা একটা বিরাট পরিবর্তন আনতে পেরেছি। ... আমরা নিজেরাই শুধু মুখে বলি না। আজকে বিশ্বব্যাপী কিন্তু বাংলাদেশ প্রশংসিত।’
এই অগ্রযাত্রা যেন থেমে না যায়, সেটিই চাইছেন শেখ হাসিনা। বলেন, ‘আমি সবাইকে বলব, এই অগ্রযাত্রা কেউ যেন ব্যাহত করতে না পারে। এইটুকুই আমার আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে। যে যে দল, মত অনেক কিছু থাকতে পারে, কিন্তু দেশের স্বার্থে, মানুষের কল্যাণে, দেশের কল্যাণে, দেশের উন্নয়নে কোন কাজ যেন কেউ ধ্বংস করতে না পারে, কোনো কাজে যেন কেউ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে না পারে, কোনো ক্ষেত্রে যেন আমাদের এই অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করতে না পারে।’
দেশের অগ্রযাত্রায় পুলিশের বিরাট ভূমিকা রয়েছে বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘অনেক দুর্যোগ এসেছে, মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ, সেগুলো আপনারা কঠোর হস্তে দমন করেছেন, জঙ্গিবাদ দমন করেছেন, পাশাপাশি আমাদের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রেখেছেন।
‘একটা দেশের আইনশৃঙ্খলা হচ্ছে সবচেয়ে বড়, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেই আইন-শৃঙ্খলা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা, এ দায়িত্ব কিন্তু পুলিশ বাহিনীকেই করতে হয়। আসলে পুলিশ বাহিনীর ওপর দায়িত্বটা বেশি।’
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খানও বক্তব্য দেন। স্বাগত বক্তব্য দেন পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
আরও পড়ুন:জিততে পারবে না জেনেই আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসা নিয়ে বিএনপি টালবাহানা শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
রাজশাহীতে রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভার আগে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
এতে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিএনপির অনড় অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশ, যেমন: ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কন্টিনেন্টাল ইউরোপের দেশগুলোর মতোই আমাদের দেশে সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে জাতীয় নির্বাচন হবে। জিততে পারবে না জেনেই বিএনপি নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করে।’
আগামী নির্বাচনে বিএনপির জেতার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করেন হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি ডান-বাম-অতি ডান-অতি বাম সব দলকে সঙ্গে নিয়ে ২০০৮ সালের নির্বাচন ও তারপর উপনির্বাচন মিলে ৩০টির মতো আসন পেয়েছিল। ২০১৪ সালে নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে বিএনপি পাঁচ শর বেশি ভোটকেন্দ্র স্কুল ও সেখানকার শিক্ষার্থীদের বই-খাতা পুড়িয়ে দিয়েছে; কয়েকজন নির্বাচন কর্মকর্তাকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও সংশয়ে থেকে শেষ পর্যন্ত সব রকম জোট করে ছয়টি আসন পেয়েছে।
‘সহজেই বোঝা যায়, নির্বাচনে জেতার কোনো আশা তাদের নেই। আর সে কারণেই তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অলীক স্বপ্ন, এত টালবাহানা।’
আরও পড়ুন:পদযাত্রার মধ্য দিয়ে সরকারকে পদত্যাগের বার্তা দেয়া হচ্ছে জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দ্রুত ক্ষমতা থেকে সরে না দাঁড়ালে পালানোর পথ পাবে না ক্ষমতাসীনরা।
রাজধানীর বাড্ডার সুবাস্তু মার্কেটের সামনের সড়ক থেকে শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে দলের পূর্বঘোষিত পদযাত্রা শুরুর আগে দেয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পদযাত্রার মধ্য দিয়ে বিএনপি নতুন ধরনের আন্দোলন শুরু করেছে দাবি করে দলটির মহাসচিব বলেন, ‘এর মাধ্যমে সরকারকে বলে দিতে চাই, অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। অন্যথায় ভারাক্রান্তভাবে চলে যেতে হবে; পালাবার কোনো পথ পাবেন না।’
‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার’ ও ১০ দফা দাবি আদায়ে রাজধানীতে চার দিনের পদযাত্রা কর্মসূচির প্রথম দিনে বাড্ডা থেকে মালিবাগের আবুল হোটেল পর্যন্ত হেঁটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি।
কর্মসূচি শুরু হওয়ার আগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফখরুল আরও বলেন, ‘ঢাকার এই নীরব পদযাত্রার মধ্য দিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই দানবীয় সরকারকে চলে যেতে বাধ্য করব।’
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্ব এবং সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হকের পরিচালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
এতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, মীর সরফত আলী সপু, সাইফুল আলম নীরব, আবদুল মোনায়েম মুন্না, তাবিথ আউয়ালসহ অনেকে।
বিএনপি নেতারা জানান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি শনিবারের মতো ৩১ জানুয়ারি গাবতলী থেকে মাজার রোড হয়ে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর পর্যন্ত পদযাত্রা করবে। একইভাবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি ৩০ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী থেকে শ্যামপুর পর্যন্ত এবং ১ ফেব্রুয়ারি মুগদা থেকে মালিবাগ পর্যন্ত পদযাত্রা করবে। প্রতিটি পদযাত্রা শুরুর সময় নির্ধারণ করা হয়েছে দুপুর ২টায়।
বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানো, সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকাসহ সব বিভাগীয় সদরে সমাবেশ করবে বিএনপি।
আরও পড়ুন:‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার’ ও ১০ দফা দাবি আদায়ে শনিবার দুপুরে পদযাত্রা করেছে বিএনপি।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি রাজধানীর বাড্ডা থেকে এ পদযাত্রার আয়োজন করে, যাতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খানসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারাও পদযাত্রায় অংশ নেন।
কর্মসূচিতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। পদযাত্রা ঘিরে সতর্ক অবস্থানে ছিলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ‘২৮ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করবে। শনিবার দুপুর ২টায় বাড্ডার হোসেন মার্কেটের কাছ থেকে মালিবাগের আবুল হোটেল পর্যন্ত পদযাত্রা হবে।’
বিএনপি নেতারা জানান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি ৩১ জানুয়ারি গাবতলী থেকে মাজার রোড হয়ে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর পর্যন্ত পদযাত্রা করবে। একইভাবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি ৩০ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী থেকে শ্যামপুর পর্যন্ত এবং ১ ফেব্রুয়ারি মুগদা থেকে মালিবাগ পর্যন্ত পদযাত্রা করবে। প্রতিটি পদযাত্রা দুপুর ২টায় শুরু হবে।
বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানো, সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকাসহ সব বিভাগীয় সদরে সমাবেশ করবে বিএনপি। গত বুধবার নয়াপল্টনের সমাবেশ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন:‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার’ ও ১০ দফা দাবি আদায়ে শনিবার দুপুরে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিকে ‘মরণযাত্রা’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক মৃত্যু হবে সাবেক ক্ষমতাসীন দলটির।
রাজধানীর উত্তরায় একই দিন সকালে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠান ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাদের এ কথা বলেন।
বক্তব্যে বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ‘বিএনপির মরণযাত্রা শুরু হয়ে গেছে। এভাবেই তারা পরাজিত হবে। আন্দোলনে হবে, আগামী নির্বাচনেও তাদের মরণ হবে; রাজনৈতিক মরণ। এত লাফালাফি, এত ছোটাছুটি, এত লোটা-কম্বল, এত কাঁথা-বালিশ!
‘সমাবেশ হলে সাত দিন ধরে সমাবেশস্থলে শুয়ে পড়ে আর পাতিলের পর পাতিল খাবার তৈরি হয়। কোথায় গেল সে দিন? কোথায় গেল লাল কার্ড? কোথায় গেল গণঅভ্যুত্থান? কোথায় গেল গণজোয়ার? গণজোয়ারে এখন ভাটার টান। তাই এটা পদযাত্রা নয়, পেছনযাত্রা। এটা পদযাত্রা নয়, মরণযাত্রা।’
বিএনপি ও জোটসঙ্গীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘৫৪ দলের ৫১ দফা; জগাখিচুড়ির ঐক্যজোট। জগাখিচুড়ি কর্মসূচি এ দেশে কখনও সফল হবে না।’
বিএনপির পদযাত্রার দিনে আওয়ামী লীগের শীতবস্ত্র বিতরণ নিয়ে কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি করছে না। বিএনপি করছে পদযাত্রা, আমরা করছি শীতবস্ত্র বিতরণ।’
আরও পড়ুন:গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং বিএনপি ঘোষিত ১০ দফা দাবি আদায়ে রাজধানীতে পদযাত্রার কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি।
রাজধানীর বাড্ডা এলাকা থেকে মালিবাগ পর্যন্ত শনিবার দুপুর ২টার দিকে এ পদযাত্রা হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ‘২৮ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করবে। শনিবার দুপুর ২টায় বাড্ডার হোসেন মার্কেটের কাছ থেকে মালিবাগের আবুল হোটেল পর্যন্ত পদযাত্রা হবে।’
বিএনপি নেতারা জানান, শনিবার মহানগর উত্তর বিএনপি ঢাকার বাড্ডা এলাকা থেকে মালিবাগের আবুল হোটেল পর্যন্ত এবং ৩১ জানুয়ারি গাবতলী থেকে মাজার রোড হয়ে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর পর্যন্ত পদযাত্রা করবে। একইভাবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি ৩০ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী থেকে শ্যামপুর পর্যন্ত এবং ১ ফেব্রুয়ারি মুগদা থেকে মালিবাগ পর্যন্ত পদযাত্রা করবে। প্রতিটি পদযাত্রা দুপুর ২টায় শুরু হবে।
এ দিকে বিদ্যুৎ,গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানো, সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকাসহ সব বিভাগীয় সদরে সমাবেশ করবে বিএনপি। গত বুধবার নয়াপল্টনের সমাবেশ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন:বিএনপির আন্দোলনকে পুরোনো গাড়ির স্টার্ট নেয়ার সঙ্গে তুলনা করলেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, আন্দোলন নিয়ে দম ফুরিয়ে বিএনপি নীরব পদযাত্রার কর্মসূচি দিয়েছে।
রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের সভাস্থল পরিদর্শন শেষে শুক্রবার বিকেলে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখন বিএনপিকে শীতের পাখির মতো দেখা যাচ্ছে। কয়েকদিন বিরতি দিয়ে দিয়ে একটি প্রোগ্রাম করে। গাড়ি যখন পুরোনো হয়ে যায় তখন তা চলে না। তখন কয়দিন পর পর ওই গাড়িকে স্টার্ট দিতে হয়। বিএনপি আন্দোলনও তেমন। পুরোনো গাড়ির গাড়ির যেমন দম ফুরিয়ে যায়, বিএনপিরও তেমন দম ফুরিয়ে গেছে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এটা নির্বাচনের বছর। এক বছরেরও কম সময়ে মধ্যে দেশে সাধারণ নির্বাচন। প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে বিভিন্ন জনসভায় এরই মধ্যে ভোট চাওয়া শুরু করেছেন। আমরাও দলের কর্মী হিসেবে ভোট চাইছি। আমরা সারা বছর মানুষের কাছে থাকি। মানুষের খোঁজ খবর রেখেছি। মানুষের সুখে দুঃখে শুধু আওয়ামী লীগকেই পাওয়া গেছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী রাজশাহীর জনসভায় বেশ কিছু উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের উদ্বোধন করবেন। এরই মধ্যে জনসভার সকল প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে।’
এসময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দলু ওয়াদুদ দারাসহ দলটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।
আগামী ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীর মাদরাসা ময়দানে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা হওয়ার হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন:নরসিংদীতে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকনের বাড়িতে আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠেছে।
সদর উপজেলার চিনিসপুরে এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিভিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, জেলা ছাত্রদলের নবগটিত কমিটি খোকনের বাড়িতে আগুন লাগিয়েছে।
বাড়ির কেয়ারটেকার কাজল জানান, অপরিচিত ১৫ থেকে ২০ জন লোক মশাল নিয়ে এসে বাড়িতে ভাঙচুর চালান। এসময় তারা বাড়ির ফটকে আগুন লাগিয়ে চলে যান। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আগুন নিভিয়েছে।
নরসিংদী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার মো. রায়হান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাত ৯টা ১৩ মিনিটে আগুন লাগার খবর পাই। পরে দ্রুত আমাদের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিভেয়ে ফেলে।’
এ ঘটনায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব মনজুর এলাহী বলেন, ‘আগুন কে বা কারা লাগিয়েছে তা কেউ দেখেনি, তবে সন্দেহের তীর ছাত্রদলের নবগটিত কমিটির দিকে। আমরা তদন্ত করছি। দুর্বৃত্তদের দ্রুত শনাক্ত করা হবে।’
বাড়িতে অগ্নিকাণ্ড নিয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল কবীর খোকনের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য