দেশে সরিষার আবাদ দেখে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের বিশ্বাস জন্মেছে, এবার ভোজ্যতেলের আমদানিনির্ভরতা কমবে।
সোমবার দুপুরে নওগাঁর সাপাহার উপজেলার বেশ কয়েকটি সরিষাক্ষেত পরিদর্শনের সময় এসব কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘চলতি মৌসুমে নওগাঁ, বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুরসহ সারা দেশেই প্রচুর পরিমাণ জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে আমরা আশা করছি ভোজ্যতেল আমদানিনির্ভরতা কমবে, যা আমাদের সবার জন্য সুখবর।
‘এই সরিষার আবাদের পরই কৃষকরা বোরো আবাদ করতে পারবেন। বোরো আবাদেও ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি।’
ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশকে আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয় মানুষের খাদ্যাভ্যাসের কারণে। একসময় সরিষার তেলে রান্না হলেও এখন মানুষ সয়াবিন তেল পছন্দ করছে আর এই তেলের প্রায় পুরোটাই বিদেশ থেকে কিনতে হয়।
বিশ্ব বাজারে দরের ঊর্ধ্বগতির পাশাপাশি ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতনের কারণে ২০২১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত রান্নার উপকরণটির দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে দেশে উৎপাদন বাড়ানোর পক্ষে সরকার। এ ক্ষেত্রে বিকল্প আছে দুটি। প্রথমত সরিষার তেলের চাহিদা বৃদ্ধি, দ্বিতীয়ত ধানের কুঁড়ার তেলের উৎপাদন বাড়িয়ে মানুষকে অভ্যস্ত করা।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যেদিকে দুচোখ যায় শুধু সরিষার ক্ষেত। এ যেন বাংলার চিরপরিচিত রূপ ধারণ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে প্রচুর আবাদি জমি আছে, তবু প্রতিবছর আমাদের কৃষিজাত নানা পণ্য আমদানি করতে হয়, যা দুঃখজনক।
‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এক টুকরো জমিও যেন পড়ে না থাকে। সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের সবাইকে আবাদি জমি ফেলে না রেখে চাষাবাদ বাড়াতে হবে।’
সাপাহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্ল্যাহ আল মামুন, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল খালেক, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ন কবির এবং খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারাও মন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:দাম বৃদ্ধির রেকর্ড করার পর স্বর্ণের দাম কিছুটা কমেছে। দেশের বাজারে সবচেয়ে ভালো মানের স্বর্ণের ভরি ৯২ হাজার ২৬২ টাকায় নেমে এসেছে, যা ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। সে হিসাবে ভরিতে দাম কমেছে ১ হাজার ১৬৭ টাকা।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি-বাজুস এই নতুন দর নির্ধারণ করে দিয়েছে। রোববার থেকেই সারা দেশে তা কার্যকর হবে। তবে রুপার দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শনিবার স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দেয়া হয়।
তাতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম কমেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে দেশের বাজারে স্বর্ণের এই নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন দর অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৬২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৮৮ হাজার ৬৩ টাকা করা হয়েছে। আর ১৮ ক্যারেটের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৫ হাজার ৪৬৬ টাকা।
এছাড়া সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬২ হাজার ৮৬৯ টাকা। শনিবার পর্যন্ত ভালো মানের স্বর্ণের দাম ছিল ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা। ২১ ক্যারেট প্রতি ভরি বিক্রি হয়েছে ৮৯ হাজার ১৭১ টাকা। ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ বিক্রি হয়েছে ৭৬ হাজার ৪৫৮ টাকা। সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ছিল ৬৩ হাজার ৬৮৫ টাকা।
আরও পড়ুন:টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদী থেকে জেলের জালে ধরা পড়েছে ৫৫ কেজি ওজনের একটি বাগাড় মাছ। পরে স্থানীয় বাজারে মাছটি ৭৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন বাবলু হালদার।
শনিবার দুপুরে উপজেলার গোবিন্দাসী বাজারে বাগাড় মাছটি বিক্রির জন্য আনেন বাবলু হালদার। এদিন সকালে সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি এলাকায় যমুনা নদী থেকে এক জেলের কাছ থেকে মাছটি কেনেন তিনি।
গোবিন্দাসী মাছ বাজার সমিতির সভাপতি বাবলু হালদার পরে গোবিন্দাসী বাজারে বাগাড় মাছটি ৭৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। মাছটি কিনে নেন মধুপুর উপজেলার গারোবাজারের সুজন নামে এক ব্যক্তি।
ক্রেতা সুজন জানান, বিশাল আকৃতির বাগাড় মাছটি কিনে তারা কয়েকজন মিলে ভাগ করে নিয়েছেন।
বাবলু হালদার বলেন, ‘বেলকুচির যমুনা নদীতে এক জেলের জালে ধরা পড়ে মাছটি। বিক্রির উদ্দেশ্যেই সেখান থেকে মাছটি কিনে আনি আমি। পরে মাছটি ৭৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি।’
আদানি গ্রুপের সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ কেনার চুক্তিকে অদ্ভুত বলে উল্লেখ করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান। এই বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ একইসঙ্গে বলেছেন, চুক্তিটি পর্যালোচনা করা দরকার।
শনিবার বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকনোমিক মডেলিংয়ের (সানেম) সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেছেন।
রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক ইন সেন্টারে শুরু হওয়া দুদিনব্যাপী এই সম্মেলন শেষ হবে রোববার।
সম্মেলন অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান বলেন, ‘আদানির বিষয়টি আমি পত্রিকায় দেখেছি। যতটুকু মনে পড়ে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র করার কথা ছিল আদানির। আর সেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা আসার কথা ছিল ভারত থেকে।
‘ভারতে শিল্প গ্রুপটি পরে অস্ট্রেলিয়ায় কয়লার খনিতে বিনিয়োগ করে। কিন্তু সেটা ভাল বিনিয়োগ ছিল না। সেখানে তারা খারাপ করছিল। এখন অস্ট্রেলিয়ার সেই খনি থেকে কয়লা ভারতে আসবে। এখানে বাংলাদেশকে অস্ট্রেলিয়ার খনি থেকে উত্তোলিত কয়লা বহনের দাম দিতে হচ্ছে। এটি একটি অদ্ভুত চুক্তি। আদানির বিদ্যুৎ আমদানিতে এই বাড়তি খরচ হচ্ছে কয়লার উৎসের কারণে। আমাদের চুক্তিটি নিয়ে আবার আলোচনা করা উচিত।’
ভারতের ঝাড়খন্ডের গোড্ডায় আদানি গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে বাণিজ্যিকভাবে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আসার কথা আগামী ২৬ মার্চ থেকে। কিন্তু আদানি গ্রুপ গোড্ডা কেন্দ্রের কয়লার দাম নিয়ে কারসাজি করেছে।
জাহাজ ভাড়াসহ গোড্ডায় ব্যবহৃত কয়লার দাম হওয়ার কথা আন্তর্জাতিক বাজারে ২০০ ডলার। অথচ তারা বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছে ৪০০ ডলারে বিক্রির জন্য চিঠি দিয়েছে। প্রকৃত দাম থেকে কারসাজি করে টনপ্রতি ২০০ ডলার বাড়তি নিতে চাইছে আদানি গ্রুপ।
কয়লার দাম বেশি কেন চাওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে পিডিবি আদানিকে চিঠি দিয়েছে। একইসঙ্গে পিডিবি আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) সংশোধন চেয়েছে।
এমন বাস্তবতায় শনিবার বাংলাদেশের এই বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ আদানির সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ চুক্তি নিয়ে কথা বললেন।
সানেমের দু’দিনব্যাপী এই সম্মেলন শনিবার সকাল ৯টায় শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলে। প্রথম দিন ১০টি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে দ্বিতীয় বৈঠকটি ছিল ‘রোইং এগেইনস্ট দ্য টাইড’।
এই বৈঠকে মূল আলোচক ছিলেন অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান ও অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
রিজার্ভ কমা বড় সমস্যা নয়, প্রবণতাটাই বড় কথা: ওয়াহিদউদ্দিন
অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ তার বক্তব্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘রিজার্ভ নিচের দিকে নামতে থাকলে তা ঠেকানো কঠিন। দেশের রিজার্ভ একসময় ৩০০ কোটি ডলারও ছিল। তাই বলছি, পরিমাণ অনেক সময় বড় সমস্যা নয়, প্রবণতাটাই বড় কথা।’
সম্মেলনে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘ঋণ দিতে এবার আইএমএফ বেশি শর্ত দেয়নি।’
তার এই বক্তব্য উদ্ধৃত করে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘অনেক দশক ধরে দেখেছি, কাগজে সই করলেই কি খেলাপি ঋণ কমে যাবে? এটা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক ব্যাপার।’
‘খেলাপি ঋণ কমানোর শর্ত দেয়ার মাধ্যমে আইএমএফের আমলাতন্ত্র খুশি, আমরাও খুশি।’
সম্মেলনের শেষ দিন রোববার অনুষ্ঠিত হবে ১৩টি বৈঠক। সম্মেলনে দেশ-বিদেশের অর্থনীতিবিদরা অর্থনীতি ও বাণিজ্য নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করছেন।
আরও পড়ুন:ভারতের শীর্ষস্থানীয় ধনী ব্যবসায়ী গৌতম আদানির বাণিজ্যিক সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ এনে প্রতিবেদন প্রকাশের পর এই ইস্যুতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গন।
বিরোধী রাজনৈতিক দলের এমপিরা এই অভিযোগের ব্যাপারে তদন্তের দাবি জানিয়ে সংসদের অধিবেশন শুক্রবারও দ্বিতীয় দিনের মতো ভণ্ডুল করে দিয়েছেন। সূত্র: বিবিসি বাংলা
অনেকের অভিযোগ, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে গৌতম আদানি দ্রুত সময়ের মধ্যে বিপুল ধন-সম্পদের মালিক হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক হিনডেনবার্গ রিসার্চ নামের গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে গত সপ্তাহে গৌতম আদানির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে কারসাজি ও আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়। এই অভিযোগ ওঠার পর থেকেই আদানি গ্রুপের সব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দরপতন অব্যাহত রয়েছে।
অবশ্য আদানি গ্রুপের পক্ষ থেকে সব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
ভারতীয় সংসদ লোকসভায় শুক্রবার সকালের অধিবেশনে বিরোধী নেতারা অভিযোগের তদন্ত দাবি করলে উভয় কক্ষের অধিবেশন মুলতবি হয়ে যায়।
আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তের জন্য যৌথ সংসদীয় কমিটি অথবা সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে একটি প্যানেল গঠনের দাবি জানায় বিরোধীরা।
আরও পড়ুন:আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বহুল প্রতিক্ষিত ৪৭০ কোটি (৪.৭০ বিলিয়ন) ডলার ঋণের প্রথম কিস্তি ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ।
প্রথম কিস্তির এই অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভে যোগ হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক। এর ফলে রিজার্ভ বেড়ে ৩২ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার হয়েছে বলে জানান তিনি।
মেজবাউল হক বলেন, ‘আমরা আইএমএফ ঋণের প্রথম কিস্তি পেয়েছি। প্রথম বারে আমরা ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার পেয়েছি। এর পরের বাকি ৪২২ কোটি ৪০ লাখ ডলার আমরা সমান ছয়টি কিস্তিতে পাবো। প্রতি কিস্তিতে আসবে ৭০ কোটি ৪০ লাখ ডলার, তবে পরের কিস্তি কবে আসবে এখন সেটা বলা যাচ্ছে না।’
বিশ্ব আর্থিক খাতের অন্যতম প্রধান মোড়ল এই সংস্থার কাছ থেকে বাংলাদেশ যে পরিমাণ ঋণ চেয়েছিল, সবাইকে অবাক করে দিয়ে গত সোমবার সংস্থাটি তার চেয়েও বেশি ঋণ দেওয়ার ঘোষণা দেয় আইএমএফ। প্রথম কিস্তির ঋণ যেকোনো মুহূর্তে ছাড় করা হবে বলে বলে জানিয়েছিল সংস্থাটি। মাত্র দুই দিনের মাথায় সেই ঋণের প্রথম কিস্তি বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডারে জমা হলো, বেড়ে গেলো বর্তমান বিশ্ব পেক্ষাপটে অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর সূচক রিজার্ভ।
দুই বছরের করোনা মহামারি ও এক বছরের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কার বড় চাপ সামাল দিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে বাংলাদেশ গত বছরের জুলাই মাসে ৪৫০ কোটি (৪.৫ বিলিয়ন) ডলার ঋণ চেয়েছিল, আইএমএম তার চেয়েও ২০ কোটি ডলার বেশি অর্থাৎ ৪৭০ কোটি (৪.৭০ বিলিয়ন) ডলার দেয়। গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে আইএমএফের সদর দপ্তরে এই ঋণ অনুমোদন করে সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদ।
গত মঙ্গলবার আইএমএফের ওয়েবসাইটে এই ঋণ অনুমোদনের বিষয়টি নিয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার তাৎক্ষণিকভাবে ছাড় করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে আইএমএফ। ২ দশমিক ২ শতাংশ সুদে নেয়া এই ঋণ আসবে সাত কিস্তিতে। শেষ কিস্তি আসবে ২০২৬ সালে।
৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ পেতে ও চলমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার কয়েক মাস ধরেই সংস্কার কর্মসূচি পরিচালনা করছে। চলতি জানুয়ারিতে যখন আইএমএফের ডিএমডি অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহ বাংলাদেশ সফরে আসেন, তখন এসব সংস্কারে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। মৌলিক এসব সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত রাখার প্রতিও আইএমএফের ডিএমডি গুরুত্বারোপ করেন তখন।
আইএমএফও তাদের বিবৃতিতে বলেছে, করোনা মহামারির ধাক্কা সামলে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল বাংলাদেশ, কিন্তু যুদ্ধের কারণে তা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তাতে বৈদেশিক বাণিজ্যে চলতি হিসাব ভারসাম্যে বড় ধরনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে, টাকার মান কমে গেছে এবং বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়েছে। সাম্প্রতিক এই অর্থনৈতিক জটিলতাগুলো মোকাবিলায় বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ একগুচ্ছ সমন্বিত পদক্ষেপ নিয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার মনে করে, প্রবৃদ্ধির গতি ত্বরান্বিত করতে, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ আকর্ষণে, উৎপাদনশীলতা বাড়াতে এবং জলবায়ু সহনশীলতা তৈরি করতে হলে তাতৎক্ষণিক এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি কাঠামোগত সমস্যা এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকিগুলোকেও আমলে নিতে হবে।
কক্সবাজারে আনন্দ ভ্রমণ করেছে ইস্টার্ন হাউজিং যুব কল্যাণ সমিতি।
ঢাকা থেকে কক্সবাজারে গিয়ে গত ২৬ থেকে ২৯ জানুয়ারি এ ভ্রমণ করেন সমিতির সদস্যরা।
আনন্দ ভ্রমণের আহ্বায়ক ছিলেন জহির স্টিল অ্যান্ড রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের (জেডএসআরএম) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আলহাজ মো. হুমায়ুন কবির।
আনন্দ ভ্রমণের সদস্য সচিব ছিলেন ইস্টার্ন হাউজিং যুব কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুল সরকার।
রেমিট্যান্সের পালে জোর হাওয়া লেগেছে। চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৫ কোটি ৮৯ লাখ ডলার। এটা এক বছর আগে একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বুধবার প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ বলছে, সব মিলিয়ে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) ১ হাজার ২৪৫ কোটি ২১ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে তা ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি। ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ১৯৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রবাসীরা ১৭০ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন, যা ছিল চার মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৪ কোটি ডলার। অক্টোবর ও নভেম্বরে এসেছিল যথাক্রমে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ও ১৫৯ কোটি ৫২ লাখ ডলার। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাস জুলাই ও আগস্টে অবশ্য ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসে।
জানুয়ারিতে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৪ কোটি ২২ লাখ ডলার। ৪২টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ১৬৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার। আর ৯টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৭০ লাখ ৮০ লাখ ডলার।
ক্যালেন্ডার বছরের হিসাবে ২০২২ সালে ২ হাজার ১২৮ কোটি ৫৪ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স দেশে এসেছিল, যা ছিল আগের বছরের চেয়ে ৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ কম। প্রবাসীরা ২০২১ সালে ২ হাজার ২০৭ কোটি ২৫ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন।
মার্চের শেষ দিকে রমজান মাস শুরু হবে। রোজা ও ঈদ সামনে রেখে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও বাড়বে বলে আশা করছেন জনশক্তি রপ্তানিকারক, ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, ব্যাংকের চেয়ে খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম বেশি হওয়ায় এবং বেশি টাকা পাওয়ায় মাঝে কয়েক মাস প্রবাসীরা অবৈধ হুন্ডির মাধ্যমে দেশে অর্থ পাঠানোয় ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স কমে গিয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক হুন্ডির বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়ায় ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়তে শুরু করেছে।
অর্থনীতিতে চাপ সামাল দিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে বাংলাদেশ ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছিল। অবশ্য আইএমএফ তার চেয়েও ২০ কোটি ডলার বেশি দেবে।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে আইএমএফের সদর দপ্তরে এই ঋণ অনুমোদন করেছে সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদ। প্রথম কিস্তির ঋণ যেকোনো মুহূর্তে জমা হবে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডারে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য