উল্টো পথে চলা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টঙ্গী-গাজীপুর রুটের ‘ক্ষণিকা’ বাসের ধাক্কায় রাজধানীতে এক বেসরকারি চাকরিজীবী নিহত হওয়ার ঘটনায় দায় নিচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, বাসটি বিআরটিসির হওয়ায় তেমন কিছু করণীয় নেই।
দুর্ঘটনার তিন দিন কেটে গেলেও নিহত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো যোগাযোগ করেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস উল্টো পথে চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়নি স্বীকার করে কর্তৃপক্ষ বলছে, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা বন্ধে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হবে।
এয়ারপোর্ট রোডে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে বৃহস্পতিবার বিকেলে ‘ক্ষণিকা’ বাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন ২৪ বছর বয়সী আলামিন টুটুল।
বিআরটিসির দোতলা বাসটি ভাড়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বহন করছিল। পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ওই দিন বিকেল ৪টায় বাসটি কার্জন হল থেকে ছেড়ে আসে। দীর্ঘক্ষণ জ্যামে থাকায় ফার্মগেটের পরে ড্রাইভার উল্টো পথ দিয়ে যেতে শুরু করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনের সড়কে সেটি আলামিন টুটুলকে ধাক্কা দেয়।
পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও টুটুলের সহকর্মীরা তাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। ঢাকা মেডিক্যালে কিছু পরীক্ষার পর টুটুলকে আইসিইউতে ভর্তির পরামর্শ দেন চিকিৎসক। তবে সেখানে আইসিইউ খালি না থাকায় মালিবাগের সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে নেয়া হয় টুটুলকে। সেখানে রাত পৌনে ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
টুটুলের বাড়ি ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায়। ঢাকার রাজাবাজারে ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। বিজয় সরণির আওলাদ হোসেন মার্কেটের সিএসএল নামে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চেইন ম্যানেজমেন্ট অফিসার হিসেবে কাজ করতেন তিনি। সিএসএল বিভিন্ন কোম্পানির ক্লিনিং বিভাগে পণ্য সরবরাহ করে।
মামলার বাদী ও টুটুলের বড় ভাই আরিফুল আলম রোববার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটির বাসের ঢাক্কায় আমায় ছোট ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। এরপর ঢাকা ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে এখনও কেউ আমাদের পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
এ বিষয়ে জানতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানীর ফোনে রোববার কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।
অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন ম্যানেজার কামরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সে সময় (বৃহস্পতিবার বিকেল) শিক্ষার্থীদের ক্লাস বা পরীক্ষার কোনো তাড়া ছিল না। তারপরও ড্রাইভার একক স্বেচ্ছাচারিতায় উল্টো পথে গাড়ি চালিয়েছেন।
‘শিক্ষার্থীরা এ ধরনের কোনো অনুরোধ করেননি। গাড়িগুলো যেহেতু আমাদের নয় তাই আমরা তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। বিষয়টি আমরা বিআরটিসিকে জানিয়েছি।’
নিহত টুটুলের পরিবারের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো যোগাযোগ করেনি স্বীকার করেন তিনি। তবে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘যে ব্যক্তিটি মারা গেছেন তার পরিবারের কাছে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক সমবেদনা জানাব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কোনো সহায়তা দেয়া হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের এখনও কোনো চিন্তা নেই। যেহেতু এটি বিআরটিসির, শুনেছি তারা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সহায়তা দেয়ার বিষয়টি নিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করব।’
বৃহস্পতিবারের দুর্ঘটনার পর উল্টো পথে বাস চালানো বন্ধে নতুন করে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই শিক্ষার্থী এবং ড্রাইভারের সঙ্গে মিটিং করে গাড়ি যেন উল্টো পথে না চালায় সেই নির্দেশনা দেয়া আছে। নির্দেশনাটা অনেকাংশে প্রতিপালিত হচ্ছে। উল্টো পথে গাড়ি চালানোর প্রবণতা আগের চেয়ে অনেক কমে এসেছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. সামাদ রোববার বিকেলে নিউজবাংলার প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে জানান, তিনি ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে সংশ্লিষ্টদের রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন।
অধ্যাপক সামাদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। এটা নিয়ে কিছু করার সময় পাইনি। এখনই আমি এ ঘটনায় বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে বলে দিচ্ছি। রিপোর্ট পাওয়ার পর আমাদের করণীয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’
তিনি বলেন, ‘উল্টো পথে গাড়ি চালানো তো বেআইনি। অপরাধী যে-ই হোক আমরা কোনো ছাড় দেব না। বিশ্ববিদ্যালয় বলে কোনো সহানুভূতি পেতে হবে সেটাও আমরা হতে দেব না। আইন সবার জন্য সমান।’
আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলছেন, বিআরটিসির বাস হওয়ায় তাদের তেমন কিছু করণীয় নেই।
উপাচার্য বলেন, ‘এটি আমাদের গাড়ি নয়। এটি বিআরটিসির গাড়ি, আমরা শুধু ভাড়া নিয়ে চালাই। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কোনো গাড়ি এ রকম উল্টো পথে চালানোর কথাই নয়। যদি কোনো ড্রাইভার এটি করত আমরা সরাসরি তাকে বাদ দিয়ে দিতাম।’
নিহত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে যোগাযোগ বা কোনো সহায়তা দেয়া হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি ‘ঠিক আছে, ভালো থেকো’ বলে ফোন রেখে দেন।
তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহ আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক বাসের চালক বজলুর রহমানকে তেজগাঁও থানা পুলিশ আটক করে। ঘটনার পরদিন সকালে ভুক্তভোগীর পরিবার ২০১৮ সালের সড়ক ও পরিবহন আইনে মামলা করেছে। পরে ওই মামলায় চালককে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কোর্টে পাঠিয়েছি। তিনি এখন জেলহাজতে।
‘দুর্ঘটনা ঘটার পরপরই ট্রাফিক পুলিশ বাসটি আটক করে। পরে ছাত্ররা অন্য চালক এনে বাসটি নিয়ে যান।’
জিজ্ঞাসাবাদে চালকের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘চালক আমাদের বলেছেন যানজটের কারণে ছাত্রদের চাপে পড়ে তিনি রং রুটে গিয়েছিলেন। এ কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটে।’
আরও পড়ুন:তিন দিনের মাথায় অবশেষে মিয়ানমারে আটকে রাখা বাংলাদেশি তিন পণ্যবাহী জাহাজ ছেড়ে দিয়েছে আরাকান আর্মি।
মিয়ানমার থেকে পণ্য নিয়ে টেকনাফ স্থলবন্দরে আসার পথে নাফ নদীর মোহনা থেকে বৃহস্পতিবার তিনটি কার্গো আটক করা হয়েছিল।
টেকনাফ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এতেশামুল হক বাহাদুর সোমবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে আটক কার্গো জাহাজের মধ্যে দুটি বাংলাদেশ-মিয়ানমার নাফ নদের জলসীমা নাইক্ষ্যংদিয়া থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। অন্যটি সেখানে ছিল।
টেকনাফ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এতেশামুল হক বাহাদুর বলেন, পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তারা মিটিংয়ে বসেছেন। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন থেকে পণ্যবাহী চারটি কার্গো জাহাজ কক্সবাজার জেলার টেকনাফ স্থলবন্দরের উদ্দেশে আসার পথে আরাকান আর্মি আটক করে তাদের জিম্মি করে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুটি করে পর্যায়ক্রমে চারটি কার্গো আটক করে এ সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী।
আরাকান আর্মির সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে ছাড়পত্র নিয়ে গত শনিবার একটি কাঠবাহী কার্গো বন্দরে আসে। তিন দিন পর বাকি তিনটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
মিয়ানমারে সংঘাতের মধ্য দিয়ে আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের বেশির ভাগ এলাকা দখলে নেয়। এ সংঘাতের প্রভাব পড়েছে টেকনাফ স্থলবন্দরের সীমান্ত বাণিজ্যে। বেশ কিছুদিন ধরে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।
বিচ্ছিন্নভাবে যেসব পণ্য আমদানি হয়, তাও ইয়াঙ্গুন শহর থেকে। এ শহর থেকে আসার পথে নাফ নদীতে প্রবেশ করতে রাখাইন রাজ্যের সীমান্ত হয়ে আসতে হয়।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, কার্গো জাহাজগুলোতে ৫০ হাজার বস্তা শুঁটকি, সুপারি, কফিসহ বিভিন্ন পণ্যের আনুমানিক ৫০ কোটি টাকার মালামাল রয়েছে।
আরও পড়ুন:দৈনিক ভোরের কাগজ প্রকাশনা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
পত্রিকাটির মালিকপক্ষ সোমবার একটি নোটিশের মাধ্যমে পত্রিকাটির প্রকাশনা বন্ধের ঘোষণা দেয়।
নোটিশে বলা হয়, শ্রম আইন-২০০৬ এর ১২ ধারা অনুযায়ী মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অভ্যন্তরীণ একটি সূত্র জানায়, গত কয়েক দিন ধরেই ভোরের কাগজে কিছু সংবাদকর্মী অষ্টম ওয়েজ বোর্ড অনুযায়ী বেতন দাবি এবং তাদের নিয়োগের তারিখ থেকে বকেয়া পাওনা পরিশোধের জন্য আন্দোলন করছিলেন। সংবাদকর্মীদের একটি অংশ রোববার সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা এবং বহিরাগতদের নিয়ে ভোরের কাগজের প্রধান কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ ভোরের কাগজের মালিকপক্ষ বন্ধের নোটিশ জারি করে।
সংবাদপত্রটির বার্তা সম্পাদক ইখতিয়ার উদ্দিন নিউজবাংলাকে জানান, অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে মালিকপক্ষ বন্ধের নোটিশ দিয়েছে।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল ছোড়ার অনুমোদন পেয়েছে। এর জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দ্রুত কিনতে পারবে বিজিবি।
আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সোমবার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘দেশের সীমান্তে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং বিশেষ পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বিজিবির সক্ষমতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। তাই বিজিবিকে অত্যাধুনিক সরঞ্জামে সজ্জিত করা হচ্ছে।’
বৈঠকে জানানো হয়, সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান, অনুপ্রবেশ এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা মোকাবিলায় বিজিবির কার্যক্রম আরও জোরদার করতে হবে। এ জন্য সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল ব্যবহার করার মতো সরঞ্জামের প্রয়োজনীয়তা উঠে এসেছে। বিজিবির ব্যবহারের জন্য এসব সরঞ্জাম কেনার অনুমোদন দ্রুত কার্যকর করা হবে।
পুলিশ, র্যাব ও আনসারের জন্য নতুন পোশাক নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুনভাবে পুলিশের জন্য আয়রন রঙের পোশাক, র্যাবের জন্য গ্রিন অলিভ এবং আনসারদের জন্য গোল্ডেন হোয়াইট রঙের পোশাক নির্বাচন করা হয়েছে।
সচিবালয়ে সোমবার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘আমরা পুলিশ, র্যাব ও আনসারদের জন্য তিনটি পোশাক নির্ধারণ করেছি। এসব পোশাক পর্যায়ক্রমে পরিবর্তন করা হবে। যেসব পোশাক রয়েছে, সেসব আস্তে আস্তে বদলে ফেলা হবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘পোশাক পরিবর্তনে বড় ধরনের অর্থ সংকুলানের সমস্যা হবে না।’
দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী তিন বাহিনী পুলিশ, র্যাব ও আনসারের পোশাক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় সোমবার তিনি এ তথ্য জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘পুলিশ, র্যাব, আনসার; তিন বাহিনীর পোশাক পরিবর্তনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। পোশাকের সঙ্গে সঙ্গে তাদের মন-মানসিকতারও পরিবর্তন হবে বলে আশা করি।’
পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘কমিশনের প্রতিবেদন এখনও আমাদের কাছে আসেনি। তারা যে সুপারিশ করেছে, তা ভালো। কিন্তু এগুলো বাস্তবায়ন করতে সময় লাগবে। এর আগে তাদের মন-মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে।’
সীমান্তে উত্তেজনা নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বিজিবির কাছে সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল না থাকায় তা ব্যবহার করা হয়নি। তাদের কাছে আছে মারণাস্ত্র। এখন সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল কেনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কারণ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছে তা আছে।’
অবৈধ বিদেশিদের সংখ্যা দেশে কমে আসছে উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘দেশে অনেকে অবৈধভাবে বসবাস করছে। সংখ্যাটা আগে ছিল ৪৯ হাজার ২২৬ জন। তা এখন কমে দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৬৪৮ জনে।
‘৩১ জানুয়ারির মধ্যে তাদের দেশত্যাগ করতে হবে। না গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে, তাদের বিষয়েও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশের ইউনিফর্ম, লোগো সব পরিবর্তন করা হবে। অনেকের মন ভেঙে গেছে। এই ইউনিফর্ম পরে পুলিশ আর কাজ করতে চাইছে না।
‘খুব দ্রুতই তা পরিবর্তন করা হবে। এসব বিষয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন:ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে বরাদ্দের বিপরীতে রোগীর খাবার পরিবেশনে অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলা থেকে তিন সাংবাদিককে খালাস দিয়েছে আদালত।
রংপুর সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুল মজিদ সোমবার দুপুর একটার দিকে এ আদেশ দেন।
খালাস পাওয়া তিন সাংবাদিক হলেন জাগোনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি তানভীর হাসান তানু, বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিনিধি আবদুল লতিফ লিটু ও প্রতিদিনের বাংলাদেশের প্রতিনিধি রহিম শুভ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন আসামিপক্ষের বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল নোমান ও রংপুর জজ কোর্টের আইনজীবী ফাহিম আহম্মেদ।
আইনজীবী আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিরুদ্ধে কোনো তথ্য ও প্রমাণাদি উপস্থিত না করতে পারায় আসামিদের খালাস দিয়েছে আদালত। আমরা এ রায়ে খুশি।
‘কারণ ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সাংবাদিকরা যেন সত্য তুলে ধরতে না পারে, তাদের কলমকে থামাতে এ আইনের অপব্যবহার করা হয়েছে। আমি এ মামলাটির শুরু থেকে সাংবাদিকদের আইনি সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে আসছি। রায়ে আমিও আনন্দিত।’
এদিকে রায়ের খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানাজানি হওয়ার পর থেকে সাংবাদিকসহ অনেকে মিষ্টি বিতরণ করেছেন।
হাসপাতাল নিয়ে প্রকাশিত সংবাদটি ‘মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট এবং জনরোষ সৃষ্টিকারী ও মানহানিকর’ দাবি করে ২০২১ সালের জুলাইয়ে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ নাদিরুল আজিজ বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫(১)(ক), ২৫(১)(খ), ২৯(১), ৩১(১) ও ৩৫(১) ধারায় মামলাটি করেন।
এ মামলায় তানুকে গ্রেপ্তার করা হলে দেশব্যাপী সাংবাদিকসহ সব মহলে ব্যাপক প্রতিবাদ জানানো হয়। পরে ২০ ঘণ্টার ব্যবধানে সাংবাদিক তানভীর হাসান তানুকে জামিন দেয় আদালত।
এর আগে গত ৫ জুলাই অনলাইন সংবাদমাধ্যম জাগো নিউজে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে রোগীদের খাবার নিয়ে ‘দিনে বরাদ্দ ৩০০ হলেও করোনা রোগীদের খাবার দেয়া হচ্ছে ৭০ টাকার!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।
আরও পড়ুন:ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
ডিএমপির গণমাধ্যম বিভাগের দায়িত্বরত উপকমিশনার (ডিসি-মিডিয়া) তালেবুর রহমান জানান, সোমবার ঢাকার মনসুরাবাদ হাউজিং সোসাইটি থেকে ড. মহিউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি বলেও জানান ডিএমপির এ কর্মকর্তা।
মন্তব্য