দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে গত কয়েক দিন থেকে বেড়েই চলছে শীতের তীব্রতা। উত্তর দিক থেকে আসা হিমালয়ের হিম বাতাস আর ঘন কুয়াশার কারণে এখানে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। তাপমাত্রার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। আবহাওয়া দপ্তর বলছে, জানুয়ারি মাসজুড়ে তাপমাত্রা ১০-এর নিচে থাকবে। আসবে একাধিক শৈত্যপ্রবাহ।
রোববার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বলে নিশ্চিত করেছেন তেঁতুলিয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রোকনুজ্জামান রোকন।
তিনি বলেন, উত্তরের হিমেল বাতাসে তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। আজকে সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া ও শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ৮.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উত্তরের হিমেল হওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। শীতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রিকশা-ভ্যানচালকসহ শ্রমজীবীরা। দৈনন্দিন আয় কমে গেছে দিনমজুরসহ খেটে খাওয়া মানুষের। পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা কষ্টে দিনযাপন করছে। বিভিন্ন এলাকায় খড়কুটো জ্বালিয়ে বাড়ির আশপাশে এবং পথঘাটে শীতার্তদের শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে।
এ পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রায় ৩০ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে।
জামালপুরের মেলান্দহে এক বৃদ্ধ নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উপজেলার ঝাউগড়া ইউনিয়নের টগারচর এলাকায় সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
৫৫ বছর বয়সী সুরাইয়া বেগম ওই এলাকার আজিজুল হকের স্ত্রী।
মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানান।
নিহতের স্বজনেরা জানান, বুধবার ভোর সকালে গোয়ালঘর থেকে গরু বের করতে যান নিহত সুরাইয়া বেগম। তার স্বামী আজিজুল হক মসজিদে ফজরের নামাজ পড়ে গোয়াল ঘরে গিয়ে দেখেন স্ত্রীর গলাকাটা লাশ। পরে ডাক চিৎকারে লোকজন আসেন। পুলিশ খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
ওসি দেলোয়ার বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।’
আরও পড়ুন:দিনাজপুরে গত বছর অকৃতকার্য কলেজের সংখ্যা ছিল দুটি, তবে এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩টিতে। এই ১৩টি কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল মাত্র ৬৫ জন।
জেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষার পাসের হার গত বছরের তুলনায় কমেছে। এ বছর এ বোর্ডে পাস দাঁড়িয়েছে ৭৯ দশমিক ৮ শতাংশ। একই সঙ্গে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী, জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। তবে সে তুলনায় গত বছরের তুলনায় অকৃতকার্য কলেজের সংখ্যা বেড়েছে।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তোফাজ্জুর রহমানের সই করা এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বুধবার দুপুরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চলতি বছর এসএসসি পাসের হার ৭৯ দশমিক ৮ শতাংশ। গত বছর এই বোর্ডে পাশের হার ছিল ৯২ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এই বোর্ডের অধীনে রংপুর বিভাগের ৮ জেলার ৬৭১টি কলেজ থেকে এক লাখ ২৯৩ জন পরীক্ষার্থী রেজিষ্ট্রেশন করে। কিন্তু পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ৯৯ হাজার ৭০৫ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ৭৮ হাজার ৮৪৯ জন উত্তীর্ণ হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিসূত্রে জানা গেছে, উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ১১ হাজার ৮৩০ জন। এর মধ্যে ৬ হাজার ২৫৫ জন ছাত্রী ও ৫ হাজার ৫৭৫ জন ছাত্র। গত বছর এই বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১৫ হাজার ৩৪৯ জন শিক্ষার্থী। সে তুলনায় চলতি বছর জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যা কমেছে তিন হাজার ৫১৯ জন।
এ বোর্ডে অকৃতকার্য ১৩টি কলেজগুলো হলো- ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলার গড় কলেজ (১৩ জন পরীক্ষার্থী), ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর মহিলা কলেজ (১১ জন পরীক্ষার্থী), কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাটে সিংগার ডাবরিরহাট বিএল হাই স্কুল এন্ড কলেজ (৭ জন পরীক্ষার্থী), পঞ্চগড় জেলার তেতুলিয়া উপজেলার আলহাজ্ব তমিজ উদ্দীন কলেজ (৭জন পরীক্ষার্থী), পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার মারেয়া মডেল হাই স্কুল এন্ড কলেজ (৭জন পরীক্ষার্থী), লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার নাসির উদ্দীন কলেজ (৬জন পরীক্ষার্থী), একই জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার দুহুলা এসসি হাই স্কুল এন্ড কলেজ (৪জন পরীক্ষার্থী), নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার চৌধুরীরানী হাই স্কুল এন্ড কলেজ (৩জন পরীক্ষার্থী), দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার সনকা আদর্শ কলেজ (৩জন পরীক্ষার্থী), গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা মহিলা কলেজ (একজন পরীক্ষার্থী), লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দইখাওয়া মহিলা কলেজ (একজন পরীক্ষার্থী), দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার উত্তর লক্ষিপুর হাই স্কুল এন্ড কলেজ (একজন পরীক্ষার্থী) ও ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার পীরগঞ্জ কলেজিয়েট স্কুল এন্ড কলেজ (একজন পরীক্ষার্থী)।
আরও পড়ুন:ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার শ্যামকুড় সীমান্তে বিএসএফের এক গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন।
ভারতের পাকুড়া সীমান্তে বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ৩০ বছর বয়সী আরিফুল ইসলাম শ্যামকুড় পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা।
স্থানীয় সংবাদকর্মী মশিউর রহমান টিংকু জানান, আরিফুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন সীমান্তের ওপারে গরু আনতে যায়। ভোররাতে ফেরার পথে ভারতের পাখিউড়া ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যসের সামনে পড়ে। সেসময় বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে অন্যরা পালিয়ে গেলেও গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় আরিফুল ইসলাম।
শ্যামকুড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামিরুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘মরদেহ ভারতে রয়েছে। আমরা মরদেহ দেশে ফেরত আনার জন্য বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।’
বরিশালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবারে কোনো কলেজেই শূন্য পাস নেই, তবে শতভাগ পাস রয়েছে ৩৪টি কলেজে।
বরিশাল বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুন কুমার গাইন বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ ফলাফল প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘এবারে কোনো কলেজেই শূন্য পাস নেই। তবে শতভাগ পাস রয়েছে ৩৪টি কলেজে। এবারে ইংরেজি সাবজেক্টে তুলনামূলক ফলাফল খারাপ হয়েছে পরীক্ষার্থীদের।’
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৮৬ দশমিক ৯৫ ভাগ। গত বছর পাসের হার ছিল ৯৫ দশমিক ৭৬। তবে গত বছরের তুলনায় পাসের হার কম হলেও ফলাফলে সবাই সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ। এদিকে এবারে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৭৩৮৬ জন, যা গত বছরের তুলনায় ২৫৮৫ জন কম।
অরুন কুমার বলেন, ‘৬১ হাজার ৮৮৫ পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৫৩ হাজার ৮০৭ জন। এর মধ্যে ছেলে ২৫ হাজার ৫৮৮ ও মেয়ে ২৮ হাজার ২১৯ জন। ৭ হাজার ৩৮৬ জন জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের মধ্যে ছেলে দুই হাজার ৫৮০ ও মেয়ে ৫ হাজার ৮০৬ জন।’
৩৩১ কলেজের পরীক্ষার্থীরা ১২৫ কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেয় এবং পুরো পরীক্ষায় বহিষ্কার হয়েছেন ২০ জন পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ৭ জন বিজ্ঞান বিভাগের, ১২ জন মানবিক ও একজন ব্যবসায় শিক্ষার।
বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষার্থী ছিল ১২ হাজার ৭২ জন, পাশ করেছে ১০ হাজার ৮৬১ জন, মানবিক বিভাগে পরীক্ষার্থী ছিল ৪০ হাজার ৩১১ জন ও পাস করেছেন ৩৪ হাজার ৬৭৩ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পরীক্ষার্থী সংখ্যা ৯ হাজার ৫০২ জন ও পাস করেছে ৮ হাজার ২৭৩ জন।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, বরিশাল বিভাগে এবারে পাসের হারে এগিয়ে রয়েছে ভোলা জেলা। এই জেলায় পাসের হার ৯২ দশমিক ৯। এরপরে ৯১ দশমিক ১২ ভাগ নিয়ে এগিয়ে আছে বরিশাল। ঝালকাঠিতে পাসের হার ৮৮ দশমিক ২৫, পিরোজপুরে ৮৮ দশমিক ১৮, বরগুনায় ৮৭ দশমিক ৮৩ ও পটুয়াখালীতে পাসের হার ৭৩ দশমিক ৭৫ ভাগ।
ভোলা পাসের হারে এগিয়ে থাকলেও দুই হাজার ২৯৭টি জিপিএ-৫ এ পেয়ে এগিয়ে বরিশাল জেলা। এ ছাড়া ভোলায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৫৩ জন, ঝালকাঠিতে ২৯৮ জন, পিরোজপুরে ৫৪৭ জন, বরগুনায় ৫২৭ জন ও পটুয়াখালীতে ৪৮৪ জন।
এদিকে ফলাফলে খুশি হয়ে বরিশালে কলেজে কলেজে উচ্ছ্বাস করেছে শিক্ষার্থীরা। কাঙ্খিত ফলাফল পেয়ে খুশি তারা।
আরও পড়ুন:রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে ছাত্রদের চেয়ে এগিয়ে ছাত্রীরা।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরিফুল ইসলাম বুধবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরিফুল ইসলাম বলেন, ছাত্রীদের পাসের হার ৮৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ। আর ছাত্রদের পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৭ ভাগ। জিপিএ-৫ প্রাপ্তি ছাত্রীর সংখ্যা ১১ হাজার ৯৫৭ জন। আর জিপিএ ৫ পাওয়া ছাত্রের সংখ্যা ৯ হাজার ৮৯৮ জন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এবার পাস করেছে এক লাখ ৩ হাজার ৩৮৫ জন। পাসের হার ৮১ দশমিক ৬০। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২১ হাজার ৮৫৫ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির দিক দিয়ে গতবারের চেয়ে কমেছে। গত বছর এ বোর্ডে পাসের হার ছিল ৯৭ দশমিক ২৯ শতাংশ।’
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, ‘এ বছর শতভাগ পাশ করেছে ৩১ টি কলেজের শিক্ষার্থীরা। শতভাগ ফেল করেছে এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৯টি।’
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরও বলেন, ‘গত বছরের ৬ নভেম্বর থেকে শুরু হয় এইচএসসি পরীক্ষা। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের আওতায় বিভাগের আট জেলায় এবার পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ২৯ হাজার ৪২৩ জন। এর মধ্যে পরীক্ষা দেয় ১ লাখ ২৬ হাজার ৭০০ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৬৬ হাজার ৯৪৩ জন আর ছাত্রী ৫৯ হাজার ৭৫৭ জন। বিভাগের আট জেলার ৭৫১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এসব শিক্ষার্থী ২০১টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।’
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তিন উপগ্রুপের মধ্যে দ্বিমুখী সংঘর্ষ হয়েছে। এতে তিন গ্রুপের ৭ কর্মী আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিক্সটি নাইন গ্রুপের সঙ্গে সিএফসি ও বিজয় গ্রুপের কর্মীদের যৌথভাবে সংঘর্ষ শুরু হয়।
বিবাদমান গ্রুপগুলো হলো শাটল ট্রেনের বগি ভিত্তিক উপগ্রুপ সিক্সটি নাইন, সিএফসি ও বিজয়। সিক্সটি নাইন গ্রুপ সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিতি। সিএফসি ও বিজয় গ্রুপ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
সংঘর্ষের সময় সিক্সটি নাইনের কর্মীরা শাহ জালাল হলের সামনে ও ভিতরে, সিএফসি কর্মীরা শাহ আমনের ভেতরে এবং বিজয়ের কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী মোড়ে অবস্থান নেয়। সিক্সটি নাইন ও বাকি দুই গ্রুপের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। এ সময় দেশীয় অস্ত্র হাতে মহড়া দিতে দেখা যায় গ্রুপগুলোর নেতা-কর্মীদের।
পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল টিম রাত পৌনে ১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। তবে রাত সাড়ে চারটার দিকে ফের সংঘর্ষে জড়ায় তিন পক্ষ। সোয়া পাঁচটায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী সূত্রে জানা যায়, রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলস্টেশনের একটি চায়ের দোকানে বসে ধূমপান করছিলেন সিক্সটি নাইন গ্রুপের দ্বিতীয় বর্ষের এক কর্মী ৷ তখন সেখানে পাশের একটি টেবিলে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন বিজয় ও সিএফসির তৃতীয় বর্ষের কয়েকজন কর্মী ৷
একপর্যায়ে ধূমপানের ধোঁয়া ছড়ালে সিএফসির এক কর্মী প্রতিবাদ করেন ৷ তিনি ধূমপানকারীর শিক্ষাবর্ষ জানতে চান। পরে সিক্সটি নাইনের ওই কর্মী নিজেকে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী পরিচয় দিলে সিএফসির কর্মী তার ওপর চড়াও হন ৷ জুনিয়র হয়ে কেন এভাবে প্রকাশ্যে ধূমপান করছেন এসব নিয়ে তর্কাতর্কিতে জড়ান ৷
একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে এটি সংঘর্ষে রূপ নেয়। পরবর্তীতে প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যালের প্রধান কর্মকর্তা ডা. মো. আবু তৈয়ব জানান, সংঘর্ষে সাতজন মেডিক্যালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, ‘জুনিয়রদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে বলে শুনেছি। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’
সিএফসি গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাদাফ খান বলেন, ‘রাত ১০টার দিকে স্টেশন তলায় (চায়ের দোকান) আমাদের এক কর্মীকে সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীরা মারধর করে ৷ পরবর্তীতে সিক্সটি নাইনের কর্মীদের বিজয় গ্রুপের সঙ্গেও সংঘর্ষ হয়। আমরা আমাদের ছেলেদের হলে ঢুকিয়ে দিই। কিন্তু ভোররাতে সিক্সটি নাইনের কর্মীরা আমাদের কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা করে।’
বিজয় গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম সবুজ বলেন, ‘সেক্রেটারির ছেলেরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের ছেলেদের সঙ্গে ঝামেলা করে ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া বলেন, ‘খবর পেয়ে প্রক্টরিয়াল টিম সেখানে গিয়েছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। এ ধরনের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। জড়িতদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। নিরাপত্তা জোরদার করতে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হবে।’
আরও পড়ুন:প্রজাদের কষ্টে পাশে থাকা মহারাজা বাহুবলি অমর হয়ে আছেন যাকে নিয়ে সিনেমাও তৈরি হয়েছে। নাম অমেরন্দ্র বাহুবলি। সেই বাহুবলির নামের লাল টম্যাটো এবার কৃষকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দির বিস্তৃর্ণ সবুজ মাঠে লাল বাহুবলির রাজত্ব ছড়িয়ে পড়েছে। কাকডাকা ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে টম্যাটো সংগ্রহ। বিকেলের আগে পাইকারদের গাড়িতে করে বাহুবলিরা চলে যায় হাটে। দেখতে বড় স্বাদ ও ঘ্রাণে অসাধারণ। তাই হাট-বাজারে বাহুবলির চাহিদাও অনেক। ফলন ভালো হওয়ায় মুনাফাও পাচ্ছেন চাষিরা।
সরেজমিনে দাউকান্দি উপজেলার আদমপুর, বিটমান ও টামটা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাচায় ঝুলে আছে লাল সবুজ টম্যাটো। দেশি অন্য কোনো জাতের তুলনায় আকারে বড়। মাচা থেকে ঝুলে মাটি স্পর্শ করছে অধিকাংশ টম্যাটো। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সেই টম্যাটো সংগ্রহ করে জমির পাশে স্তুপ করছেন চাষিরা। পাইকাররা আসছেন, দরদাম করে বস্তাবন্দি করে দূরের হাটে নিয়ে যাচ্ছেন বাহুবলিদের।
বিটমান গ্রামের বকুল রাণী দেবনাথ নামের এক কৃষাণী নিজের ছেলে ও কাজের লোক নিয়ে টম্যাটো সংগ্রহ করছেন। তার জমির আইলে দাঁড়িয়ে রয়েছেন পাইকার ও স্থানীয় খুচরা ক্রেতারা। জমির পাশে স্তুপ করা টম্যাটো পাল্লায় মেপে পাইকারদের হাতে তুলে দিচ্ছেন।
বকুল রানী জানান, এ বছর বাহুবলি জাতের টম্যাটো চাষ করেছেন। চারা, মাঁচা ও জমি প্রস্তুতসহ তার খরচ হয়েছে এক লাখ টাকা। দেড়কানি (৩০শতকে কানি) জমিতে বাহুবলি জাতের টম্যাটোর ভালো ফলন হয়েছে। তিনি আশা করছেন সব খরচ বাদ দিয়ে তার লাভ হবে অন্তত দুই লাখ টাকা।
বাহুবলি হাইব্রিড প্রজাতির টম্যাটো। এই বীজের নাম দিয়েছে এ আর মালিক সিড কোম্পানি। তারাই মূলত নাম দিয়েছে বাহুবলি।
ঢাকা থেকে বাহুবলি টম্যাটো কিনতে আসা পাইকার দবির মিয়া জানান, তিনি সারা বছরই কাওরানবাজারে পাইকারি শাকসবজি বিক্রি করেন। তার পছন্দের জায়গা কুমিল্লার দাউদকান্দি। এবার দাউদকান্দিতে বাহুবলি নামের টম্যাটোর ভালো ফলন হয়েছে। আকারে বড় স্বাদও ভালো। আকার-আকৃতি অনুযায়ী পাইকারি প্রতি ১৫-২০ কেজি দরে কেনেন। পরিবহন খরচ এবং নেয়ার সময় কিছু নষ্ট হয়। এসব মিলে প্রতি কেজি টম্যাটো ৩০-৩৫ টাকা দরে বিক্রি করেন।
কুমিল্লা রাজগঞ্জ থেকে আসা পাইকার জুয়েল হোসেন বলেন, ‘দাউদকান্দির এসব গ্রামগুলোতে যে টম্যাটো হয় সেগুলো আকারে বড়। দেখতে সুন্দর। কাঁচা পাকা মিলিয়ে আমি ১০ মণ টম্যাটো কিনেছি। পাকাগুলো আজকালই বিক্রি হয়ে যাবে। কাঁচাগুলো দোকানে রেখে দিলে পেকে যাবে। তখন বিক্রি করতে পারব।’
দাউদকান্দির আদমপুর গ্রামের শিক্ষক মতিন সৈকত বলেন, ‘আদমপুর, বিটমান, পুটিয়া ও টামটা গ্রামের মাঠে প্রতি বছরই প্রচুর টমেটোর চাষ হয়। এখানের অধিকাংশ কৃষক প্রাকৃতিক বালাইনাশক ব্যবহার করে ফসল উৎপাদন করে। টম্যাটোর ক্ষেত্রেও তাই।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘কুমিল্লায় এ বছর এক হাজার ৮৪৬ হেক্টর জমিতে টম্যাটোর চাষ হয়। প্রতি হেক্টরে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩০ টন। বাহবলি, মানিক-রতনসহ বিভিন্ন হাইব্রিড জাতের টম্যাটো চাষ করেছেন ১৭ উপজেলার কৃষকরা। তবে ভালো লাভ পাওয়ায় বাহুবলির চাহিদা বেশি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য