বিরোধী দলের আন্দোলন সরকার ঠান্ডামাথায় পর্যবেক্ষণ করছে উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকারকে হটানোর জন্য অতিবাম, অতিডান মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে।
শনিবার দুপুরে ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পাসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘বিরোধী দলের আন্দোলন সরকার ঠান্ডামাথায় পর্যবেক্ষণ করছে। বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হটানোর জন্য অতিবাম, অতিডান মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। তাদের লক্ষ্য একটাই- হটাও শেখ হাসিনা। তারা এক হয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলেও অতিবাম অতিডান ইজ ইকুয়াল টু শূন্য।’
টানা তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘আন্দোলনের নামে মাঠে সংঘাত করে লাভ নেই। নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সরকার শুধু রুটিন ওয়ার্ক করবে। নির্বাচনে সরকারের কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ থাকবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের উসকানিমূলক অপতৎপরতা, সরকার পতনের দিবাস্বপ্ন সফল হবে না। আমরা বিশ্বাস করি তারা নির্বাচনে আসবে। সব নিবন্ধিত দলকে আমরা স্বাগত জানাই।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনীর জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান হাসান, পুলিশ সুপার জাকির হাসান, ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, ফেনী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীলসহ অনেকে।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওবায়দুল কাদের হেলিকপ্টারযোগে ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজে অবতরণ করে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সংবর্ধনা নিয়ে তার সংসদীয় আসন নোয়াখালীর উদ্দেশে যাত্রা করেন।
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ট্রেনের ধাক্কায় আহত হাতিটি কক্সবাজারের ডুলাহাজারায় ভেটেরিনারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাতিটির মৃত্যু হয়।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি এলাকা থেকে ক্রেনের সাহায্যে আহত হাতিটি উদ্ধার করে একটি রিলিফ ট্রেন। পরে হাতিটিকে ডুলাহাজারায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি হাসপাতালে আনা হয়।
বনবিভাগের এই কর্মকর্তা বলেন, হাতিটির চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ডও গঠন করা হয়। বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের চেষ্টার পরও গুরুতর আহত হাতিটিকে বাঁচানো যায়নি। বিকেল ৪টার দিকে হাতিটি মারা যায়।
এর আগে রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথের চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে এলিফ্যান্ট ওভারপাসে (হাতি পারাপারের পথ) ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয় হাতিটি।
সাফারি পার্কের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনের ধাক্কায় রোববার রাতে বন্যহাতিটি আহত হয়। এরপর বন বিভাগ হাতিটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দেয়।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নির্দেশে মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে চুনতিতে রেলওয়ের একটি রিলিফ ট্রেন আনা হয়। সকালে বন বিভাগ ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ক্রেনের সাহায্যে হাতিটি ট্রেনে তোলা হয়।
এরপর সকাল ৯টার দিকে হাতিটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা শুরু করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে হাতিটি মারা যায়।
এর আগে হাতিটির চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন ও সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক বিবেক চন্দ্র সূত্রকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকার নাইন বলেন, ‘ট্রেনের ধাক্কায় আহত হাতিটির আঘাত ছিল খুবই গুরুতর। হাতিটির পেছনের ডান পা ভেঙে শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। মেরুদণ্ডের স্ট্রাকচার, কোমর ও মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছে। হাতিটির বয়স ৮ থেকে ১০ বছর।’
চকরিয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আরিফ উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে হাতিটির ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, হাতিটি ট্রেনের ধাক্কায় আহত হওয়ার পরপরই আমাদের একটি টিম সেখানে গিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করে। মঙ্গলবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি হাসপাতালে আনা হয়।
তিনি জানান, ডুলাহাজারায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কের অভ্যন্তরে হাতিটি মাটিচাপা দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ১০৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুসারে, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬১৯ জন। আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ৪৮৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মোট ২২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ ও ৫১ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য বলছে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৪৪ হাজার ৭৬৪ জন। তাদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ নারী।
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে বসতঘরে আটকে রেখে এক যুবতীকে জোরপূর্বক গর্ভপাত করানোর চেষ্টা এবং মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালানোর ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ঢাকা থেকে গর্ভপাত করতে আসা টিমের এক নারী সদস্যকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে শ্রীনগর উপজেলার পশ্চিম সিংপাড়া গ্রামের ইদ্রিস আলীর বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার পশ্চিম সিংপাড়া গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে রিপন শেখ চারদিন আগে ঢাকার মিরপুর থেকে এক যুবতীকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন। ওই যুবতীকে রিপন নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেয়া হয়।
বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের জের ধরে তাদের শারীরিক সম্পর্ক এবং এক পর্যায়ে ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। এরপর বিয়ের জন্য চাপ দেয়ায় চারদিন আগে ওই নারীকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন রিপন।
তারা জানান, দু’মাসের অন্তঃসত্ত্বা ওই নারীকে মঙ্গলবার দুপুরে জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটাতে ঢাকা থেকে একটি টিম নিয়ে আসেন রিপন। এ সময় তিনি গর্ভপাতে রাজি না হওয়ায় হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে তার হাত-পা ভেঙে জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটানোর চেষ্টা করা হয়।
এসময় ওই যুবতীর আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। পরে যুবতীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এছাড়া ওই সময় গর্ভপাত ঘটানোর টিমের আম্বিয়া নামে এক নারীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে রিপন শেখ পালিয়ে যান।
রিপনের প্রথম স্ত্রী তানিয়া বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী রিপন ওই নারীকে ঘরে আটকে রেখে অজ্ঞাত দুই নারীর সহায়তায় জোরপূর্বক গর্ভপাত করানোর চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তাকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয়।’
প্রতিবেশী মো. মামুন জানান, রিপন স্ত্রী পরিচয়ে যে নারীকে বাড়িতে নিয়ে আসেন তিনি দুই মাসের গর্ভবতী। রিপন লোকজন নিয়ে জোরপূর্বক গর্ভপাতের চেষ্টার পাশাপাশি ওই নারীকে অমানবিক নির্যাতন করেছে।’
তন্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আকবর বলেন, ‘রিপন ওই যুবতীকে হাতুড়িপেটা করেছে। পরে যুবতীকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মো. কাশফি জানান, নির্যাতনের কারণে ওই নারী স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে পারছেন না। তার হাত ও পায়ের হাড় ভাঙা। তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন।
শ্রীনগর থানার ওসি মো. ইয়াসিন মুন্সী বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এক নারীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশি ১৬ জেলেকে ফেরত দিয়েছে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মি। এনেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। আরাকান আর্মি বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে ওপারের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর এমন ঘটনা দ্বিতীয়বার ঘটলো।
মঙ্গলবার দুপুরে ১৬ বাংলাদেশিকে মিয়ানমার থেকে ফেরত আনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদ।
টেকনাফ বিজিবির সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ২৮ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার থেকে ১৬ জন মাঝি-মাল্লা ‘এফবি মা-বাবার দোয়া’ নামে একটি ট্রলারযোগে সাগরে মাছ শিকারে বের হয়। ৫ অক্টোবর সাগরে তারা একদল ডাকাতের কবলে পড়ে।
ডাকাত দল সবকিছু ছিনিয়ে নেয়ার পর তাদেরকে মারধর করে ট্রলারে বরফ কল স্টোরে আটকে ট্রলারটি সাগরে ছেড়ে দেয়। এক পর্যায়ে ট্রলারটি ভাসতে ভাসতে মিয়ানমার উপকূলে চলে যায়। পরে আরাকান আর্মি তাদের উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়।’
বিজিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘জেলেদের হেফাজতে নেয়ার পর তাদেরকে ফেরত দিতে আরাকান আর্মির পক্ষ থেকে বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাদের (আরাকান আর্মি) সঙ্গে মোবাইল ফোনে আলোচনা শেষে সোমবার রাতে তাদেরকে ফেরত আনা হয়। তাদের মধ্যে একজন টেকনাফের। বাকিরা কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।’
ফেরত আসা জেলে আব্দুল হাফেজ বলেন, ‘গত সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে আমরা ১৬ জন মাঝিমাল্লা মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে কক্সবাজার থেকে সাগরে যাই। ৪ অক্টোবর কক্সবাজারের পাটোয়ারটেক বরাবর সাগরে ডাকাতদল আমাদের ট্রলারটি লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে ওরা আমাদের আটক করে।’
তিনি বলেন, ‘আটক করার পর ডাকাতরা আমাদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়। আমাকে অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করে এবং মাঝির হাতে গুলি করে। ট্রলারে থাকা জাল ও মাছ লুট করে নিয়ে যায়।
‘ডাকাতরা ট্রলারে মাছ-বরফের কল স্টোরের ভেতরে আমাদের আটকে দিয়ে বাইরে থেকে পেরেক ঠুকে দরোজা আটকে মিয়ানমারের সীমানায় একটি চরে রেখে চলে যায়। পরে আমাদের নিয়ে যায় আরাকান আর্মি। বিজিবির সহায়তায় অবশেষে ১৫ দিন পর দেশে ফেরত আসতে পেরেছি।’
ডাকাতের কবলে পড়া ট্রলারটির মালিক মো. আয়ুব বলেন, ‘আমার ট্রলার নিয়ে ২৮ সেপ্টেম্বর ওরা সাগরে মাছ শিকারে যায়। তাদের সঙ্গে কয়েকদিন যোগাযোগ হয়েছিল। এরপর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে বিভিন্ন ট্রলার থেকে তাদের খোঁজখবর নিয়েছি।
‘অবশেষে গতকাল (সোমবার) বিজিবির পক্ষ থেকে ফোন করে জানানো হয় যে তারা মিয়ানমার থেকে আমার ট্রলারের মাঝিমাল্লাদের ফেরত এনেছে। আর আজ জানলাম তারা ডাকাত দলের কবলে পড়েছিল। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া তারা প্রাণে বেঁচে ফেরত এসেছে। কিন্তু আমার ট্রলার এখনও ফেরত পাইনি।’
এর আগে মাছ ধরতে গিয়ে নাফ নদে অপহৃত বাংলাদেশি পাঁচ জেলেকে ৯ অক্টোবর বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে একটি ট্রাক চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই মা ও তার দুই সন্তান নিহত হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বড়তাকিয়ার খৈয়াছড়া ঝর্না রাস্তা এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
মীরসরাই ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা ইমাম হোসেন পাটোয়ারী জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বড়তাকিয়া এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় একটি অটোরিকশাকে ভুট্টা বোঝাই একটি ট্রাক পেছন থেকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই মা ও দুই সন্তান নিহত হন।
তারা হলেন- সীতাকুণ্ড উপজেলার দক্ষিণ বগা চত্বর এলাকার আবুল কালএমর স্ত্রী নুরজাহান বেগম, তার মেয়ে কাজল রেখা ও ছয় মাস বয়সী ছেলে মোহাম্মদ আনাস।
এ বিষয়ে জোরারগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সোহেল সরকার বলেন, ‘দুর্ঘটনায় নিহতদের মরদেহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (মস্তাননগর হাসপাতালে) নেয়া হয়েছে। তাদের আত্মীয়-স্বজনরা এলে মরদেহ তাদেরকে বুঝিয়ে দেয়া হবে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে গাড়িটি উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নেয়া হয়েছে।
সিলেটে এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে গত বছরের তুলনায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটিই বেড়েছে। এবার সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৮৫ দশমিক ৩৯, যা গত বছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেশি। গত বছর পাসের হার ছিল ৭১ দশমিক ৬২।
এদিকে গত কয়েক বছর সিলেটে জিপিএ-৫ কম থাকলেও এ বছর রেকর্ড ৬ হাজার ৬৯৮ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন এক হাজার ৬৯৯ জন শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সিলেট শিক্ষা বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে ফল প্রকাশ করেন বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. জাকির আহমদ। পরে বিস্তারিত ফলাফল তুলে ধরেন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুণ চন্দ্র পাল।
সিলেট শিক্ষা বোর্ডে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় ৮৩ হাজার ১৫৬ জন অংশ নিয়ে ৭১ হাজার ১২জন উত্তীর্ণ হয়েছেন।
সিলেট বোর্ডের অধীনে এইচএসসির ফলাফলে সব সূচকে এগিয়ে ছাত্রীরা। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা, পাসের হার এবং জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে এগিয়ে রয়েছেন মেয়েরা। এবার ৪৯ হাজার ৩৫৪ ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছেন ৪২ হাজার ৬৬১ জন। পাসের হার ৮৬ দশমিক শূন্য ৪৪। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩ হাজার ৮২৯ জন।
এদিকে ছাত্রদের পাসের হার ৮৩ দশমিক ৮৫। পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ৩৩ হাজার ৮১১ জন ছাত্র। এর মধ্যে পাস করেছেন ২৮ হাজার ৩৫১ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছেন দু’হাজার ৮৬৯ জন।
এবার এইচএসসি ও সমমানের সব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। কিছু পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিছু বিষয়ের পরীক্ষা বাতিল হয়েছে। বাতিল পরীক্ষাগুলোর নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে (বিষয় ম্যাপিং করে)। এ পদ্ধতি অনুসরণ করে ফলাফল প্রকাশ করেছে শিক্ষা বোর্ড।
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভারে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের দিন থেকেই নিখোঁজ কিশোর জিহাদ। পরিবারের পক্ষ থেকে ভেবেই নেয়া হয়েছে, আন্দোলনের সময় কোনোভাবে হয়তো মৃত্যু হয়েছে জিহাদের।
পুলিশের প্রচেষ্টায় দুই মাস পর নিখোঁজ জিহাদের সন্ধান পেয়ে উচ্ছ্বসিত তার পরিবার।
গাজীপুরের টঙ্গী এলাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে সোমবার রাতে জিহাদকে উদ্ধার করে আশুলিয়া থানা পুলিশ।
এর আগে গত ১৮ আগস্ট আশুলিয়ার জিরাবো এলাকার বাসিন্দা বেলাল হোসেন তার ছেলে জিহাদ নিখোঁজের ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
বেলাল হোসেন বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনে সরকার পতনের পর রাতে জিহাদ বাড়ির পাশে থেকে নিখোঁজ হয়। এরপর অনেক জায়গায় মাইকিং করেছি। বিভিন্ন জায়গায় পোস্টারও লাগিয়েও তার সন্ধান পাইনি। পরে গত ১৮ আগস্ট আমরা আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি।
‘একপর্যায়ে কোথাও কোনো সন্ধান না পেয়ে ভেবেছিলাম জিহাদ আর কোনো দিনও ফিরবে না। ও হয়তো মারা গেছে। ছাত্র আন্দোলনের কারণে হাসিনা সরকার পতনের পর হয়তো কোনো বিপদে পড়ে জিহাদ মারা গেছে, এ রকম ধারণা করেছিলাম আমরা, তবে শেষ ইচ্ছা ছিল, কোনোভাবে যাতে ছেলের লাশটা অন্তত পাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবশেষ গতকাল রাতে জিহাদকে টঙ্গী থেকে উদ্ধার করে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেন এসআই অলোক। আমরা তখনও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে, জিহাদকে জীবিত ফিরে পেয়েছি।
‘ওই পুলিশ কর্মকর্তা আমার ছেলেকে উদ্ধারে অনেক কষ্ট করেছেন। এ ঘটনার পর পুলিশের প্রতি আমার ধারণা পাল্টে গেছে। ৫ আগস্টের পর পুলিশের কার্যক্রম যেভাবে চলছে, তাতে পুলিশের ওপর মানুষের ভরসা এক প্রকার উঠেই গিয়েছিল।’
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অলোক কুমার দে বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার নির্দেশে জিহাদ নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি তদন্ত শুরু করি। প্রযুক্তির সহায়তা ও বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে জিহাদকে টঙ্গী এলাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয়।
‘সে ওই আবাসিক হোটেলে তার বাবা-মা নেই, এই পরিচয়ে হোটেল বয়ের চাকরি নিয়েছিল। জিহাদ মূলত এতদিন আত্মগোপনেই ছিল। পরিবারের সাথে অভিমান করেই গত ৫ আগস্ট সে বাড়ি থেকে চলে যায়।’
তিনি বলেন, ‘প্রথম অবস্থায় জিহাদ একটি মোবাইল ব্যবহার করলেও পরে আর সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। সেই মোবাইলের সূত্র ধরেই প্রযুক্তির সহায়তায় জিহাদকে নিখোঁজের ৭০ দিন পর উদ্ধার করতে সক্ষম হই। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে আজ জিহাদকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য