রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল নিয়ে আসা রাশিয়ার জাহাজ ভিড়তে পারল না বাংলাদেশে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা থাকায় এই ব্যবস্থা নিতে হলো ঢাকাকে। রাশিয়াও মেনে নিয়েছে সে সিদ্ধান্ত। ঠিক হয়েছে প্রতিবেশী ভারতের যে কোনো বন্দরে ভিড়বে নৌযানটি। সেখানে মালামাল খালাস করে অন্য জাহাজে মোংলা হয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সাইটে আসবে পণ্য।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে নৌ পরিবহন ও বিজ্ঞান প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।
গত ২৪ এপ্রিল ইউক্রেনে রুশ সেনা অভিযান শুরুর পর রাশিয়ার ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা জাহাজে করেই তারা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম পাঠায়। এ নিয়ে তৈরি হয় জটিলতা।
রাশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজে ‘উরসা মেজর’ এ করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য আসার কথা ছিল গত ২৪ ডিসেম্বর। সেটি পৌঁছানোর কথা ছিল মোংলা বন্দরে। তবে ২০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে জানায় যে, ওই জাহাজটি আসলে ‘উরসা মেজর’ নয়, তাদের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা ‘স্পার্টা থ্রি’। রং ও নাম পাল্টে পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে আসছে।
জাহাজের অবস্থান শনাক্তসংক্রান্ত ওয়েবসাইট গ্লোবাল শিপ ট্র্যাকিং ইন্টিলিজেন্স মেরিন ট্রাফিক ওয়েবসাইটের থেকে পাওয়া তথ্যমতে, বৃহম্পতিবার রাত ৯টায় দেখা গেছে জাহাজটি বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার মধ্যেই ছিল। তবে এ তথ্যটি ওয়েবসাইটে ১০ ঘণ্টা আগে হালনাগাদ করা হয়েছিল।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, জাহাজটি ইতোমধ্যে ভারতের উদ্দেশে বাংলাদেশের জলসীমা ত্যাগ করেছে। স্থানীয় এজেন্ট ভারত থেকে পণ্য খালাস করে অন্য জাহাজে করে বাংলাদেশে নিয়ে আসবে।
জাহাজটির আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থার (আইএমও) সনদ নম্বর ৯৫৩৮৮৯২, যা প্রকৃত পক্ষে ‘স্পার্টা ৩’-এর সনদ নম্বর। যাচাই করে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে জাহাজটিকে বন্দরে ভিড়তে নিষেধ করে দেয় বাংলাদেশ।
জাহাজটি মোংলা বন্দরের বহির্নোঙ্গরে ছিল। এতে করে জাহাজটিকে বন্দরে পণ্য খালাসের অনুমতি দিতে বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করে রাশিয়া। তবে তাতে রাজি হয়নি পররাষ্ট্র এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা রাশিয়াকে বলেছি যে, এ জাহাজ থেকে মালপত্র গ্রহণ করা সম্ভব নয়। ফলে অন্য কোনো উপায় অবলম্বন করতে হবে। রাশিয়া জাহাজ পরিবর্তন করে পণ্য বাংলাদেশে পৌঁছে দিতে রাজি হয়েছে।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে তথ্য আসার পর বাংলাদেশ জাহাজটিকে ভিড়তে না দেয়ার সিদ্ধান্ত স্থানীয় এজেন্টকে জানিয়ে দেয়। পরে বিষয়টি নিয়ে ২২ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব খুরশেদ আলমের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকার রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিটস্কি। রাষ্ট্রদূতকে জানানো হয়, নিষেধাজ্ঞায় থাকা জাহাজ বাংলাদেশ বন্দরে ভিড়তে দেবে না।
বাংলাদেশ রূপপুরের পণ্য খালাসের জন্য বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সব সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। এ প্রকল্পের চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রকল্প এলাকায় পণ্য পরিবহনের দায়িত্ব স্থানীয় এজেন্টের। তারা কীভাবে পণ্য নিয়ে আসবে এটি তাদের বিষয়। ফলে এ সুনির্দিষ্ট জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের জন্য অন্য ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়।
কিন্তু নিষেধাজ্ঞায় থাকা জাহাজ ভিড়তে দিয়ে ঝুঁকি নেবে না ঢাকা। জানিয়ে দেয়া হয়, নিষেধাজ্ঞা যেহেতু রাশিয়ার ওপর, ফলে বিষয়টি তাদের সমাধান করতে হবে।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র একটি মেগা প্রকল্প। আমরা সেটিকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি। আমেরিকান নিষেধাজ্ঞার আওতায় জাহাজটি আছে- বিষয়টি জানা ছিল না। এখন যেহেতু নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানা হয়েছে, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।’
জাহাজটির বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকার রাশিয়া দূতাবাস জানায়, এ বিষয়ে তাদের কোনো বক্তব্য নেই। তারা পররাষ্ট্র অথবা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, আমেরিকা থেকে জানানো হয়েছে, তাদের নিষেধাজ্ঞায় থাকা কোনো জাহাজকে তৃতীয় দেশ সুযোগ-সুবিধা দিলে সেই দেশও নিষেধাজ্ঞা ঝুঁকিতে পড়বে। আবার রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জাহাজটি খালাস না করলে তা দুই দেশের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। যেহেতু এটির দায়িত্ব স্থানীয় এজেন্টের, তাই জাহাজটি ভিড়তে দেয়া হয়নি।
আরও পড়ুন:সারাহ কুক বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের পরবর্তী হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন দপ্তর বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসনের স্থলাভিষিক্ত হবেন সারাহ। এর আগে তিনি ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ডিএফআইডি) কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ছিলেন।
২০২০ সাল পর্যন্ত সারাহ তাঞ্জানিয়ায় ব্রিটিশ হাইকমিশনার ছিলেন। সেই দায়িত্ব শেষে তিনি ব্রিটিশ পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন দপ্তরে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তুরস্ক ও সীমান্তবর্তী দেশ সিরিয়ায় সোমবার ভোররাতের ভূমিকম্পে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনায় রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বুধবার এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানিয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘সরকার এই মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে যে, সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ার নাগরিকদের মৃত্যুতে আগামী ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে ০১ (এক) দিনের শোক পালন করা হবে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘এ উপলক্ষে আগামী ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের সকল সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সকল সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে এবং নিহতদের আত্মার শান্তির জন্য দেশের সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।’
স্মরণকালের অন্যতম ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় এরই মধ্যে প্রায় ৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয়েছে কমপক্ষে ৪০ হাজার মানুষ।
ভূমিকম্পের ৪৮ ঘণ্টা পরও ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিতদের উদ্ধার করা হচ্ছে। কাহরামানমারাসে মঙ্গলবার ১৪ বছর বয়সী এক শিশুকে উদ্ধারের অভিযান সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
ওই ঘটনার মধ্য দিয়ে আরও অনেককে জীবিত উদ্ধারের আশা করা হচ্ছিল, তবে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বেড়েই চলছে মৃতের সংখ্যা।
আরও পড়ুন:এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসে মেয়েরা এগিয়ে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছেলেদের পড়াশোনায় আরও মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চামেলী হলে বুধবার বেলা ১১টা ৪৬ মিনিটে ফল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশের আগে দেয়া বক্তব্যে বিগত বছরগুলোর মতো এবারও এমন পরামর্শ দেন সরকারপ্রধান।
এর আগে বেলা সোয়া ১১টার পর গত বছর অনুষ্ঠিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলের অনুলিপি প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। পরে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি ও মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা ফল হস্তান্তর করেন।
ফল হস্তান্তর শেষে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ও শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বক্তব্য দেন।
দুই মন্ত্রীর পরে দেয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষিত জনগোষ্ঠী ছাড়া কোনো দেশ উন্নত হতে পারে না। এ কারণে জাতির পিতা শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেশে শিক্ষার হার বাড়ানোয় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার শিক্ষাকে বহুমুখী করেছে। প্রতি জেলায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। তা ছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা হয়েছে; শিক্ষাকে যুগোপযোগী করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
ওই সময় তিনি পরীক্ষার ৫৭ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান।
পাসের হার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাসের হারে মেয়েদের সংখ্যাটা বেশি। ছেলেদের পড়াশোনায় আরও মনোযোগী হওয়া দরকার।
তিনি আরও বলেন, মেয়েরা সুযোগ পেলে অসাধ্য সাধন করতে পারে।
আরও পড়ুন:রাষ্ট্রপতি পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোয়ন চূড়ান্ত করতে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায়িত্ব দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সদস্যরা। আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভা থেকে তাকে এই দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সরকারি দলের সভা কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সংসদীয় দলের নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সভা শেষে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানাান।
সভায় ওবায়দুল কাদের রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম প্রস্তাব করেন। এরপর দলের সব সংসদ সদস্য এই প্রস্তাব সমর্থন করেন।
সবমিলে দেশের নতুন রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন তা জানতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। সেক্ষেত্রে তারিখটি ১৯ ফেব্রুয়ারি হতে পারে। কারণ ওইদিন রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের কয়েক এমপি জানান, বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এরপর তিনি রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নের প্রসঙ্গটি তোলেন। এ বিষয়ে তিনি এমপিদের মতামত চাইলে শুরুতে বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের সভায় বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি পদে কাকে মনোনয়ন দেয়া হবে সে দায়িত্ব আমরা সংসদীয় দলের পক্ষ থেকে আমাদের সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিতে চাই। তিনি যাকে মনোনয়ন দেবেন প্রয়োজন হলে আমরা সবাই তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করব।’
উপস্থিত এমপিরা সবাই সমস্বরে তার বক্তব্য সমর্থন করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেন।
বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচন বেশ কঠিন হবে। ফাঁকা মাঠে গোল দেয়ার সুযোগ নেই। এই নির্বাচনে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র হবে। নানা অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করা হবে। এসব বিষয়ে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে।’ পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সরকারের যেসব উন্নয়ন আছে সেসব নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালানোর নির্দেশনা দেন তিনি।
প্রসঙ্গ, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১২ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। পরদিন মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে কমিশন। আর ১৯ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনে ভোট নেয়া হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি।
জাতীয় সংসদের অধিবেশনে সংসদ সদস্যরা ভোট দিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করবেন। তবে একাধিক প্রার্থী না থাকলে ১৩ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন।
অবশ্য একাধিক প্রার্থী থাকলেও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীই রাষ্ট্রপতি হবেন এটা প্রায় নিশ্চিত। কারণ বর্তমান সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। আর আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দলের প্রার্থী দেয়ার সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ যাকে মনোনয়ন দেবে তিনিই হতে যাচ্ছেন দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি।
আরও পড়ুন:জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নামে নওগাঁ জেলায় হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়’। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে এ সংক্রান্ত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, নওগাঁ বিল-২০২৩’ পাস হয়েছে।
এদিকে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় নওগাঁ’ বিল পাসের খবরে আনন্দে ভাসছে নওগাঁ। এমন বড় উপহার দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে আনন্দ মিছিল বের হয়েছে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার সংসদ অধিবেশনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
সংসদ অধিবেশনে বিলটির উপর জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরা। তবে তাদের সেই প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।
এর আগে গত ১০ জানুয়ারি সংসদে বিলটি উত্থাপনের পর তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। পরে বিলটি পাসের সুপারিশ করে সংসদে প্রতিবেদন জমা দেয় সংসদীয় কমিটি।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রসরমান বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গতি রক্ষা ও সমতা অর্জন এবং জাতীয় পর্যায়ে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা, বিশেষত বিভিন্ন ক্ষেত্রে আধুনিক জ্ঞানচর্চা ও পঠন-পাঠনের সুযোগ সৃষ্টি ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরির শর্তাবলি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বেতনভোগী শিক্ষক ও কর্মচারী সংসদ সদস্য বা স্থানীয় সরকারের কোনো পদে প্রার্থী হতে চাইলে ওই নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে ইস্তফা দেবেন।
আরো বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন আদেশ-১৯৭৩ এর বিধানাবলি পরিপালন করতে হবে। রাষ্ট্রপতি হবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। তিনি নির্ধারিত শর্তে স্বনামধন্য একজন শিক্ষাবিদকে চার বছরের জন্য উপাচার্য পদে নিয়োগ করবেন। নিয়োগ বাতিলের ক্ষমতাও তাঁর হাতে থাকবে।
নওগাঁয় আনন্দ মিছিল
জাতীয় সংসদে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় নওগাঁ’ বিল সর্বসম্মতিক্রমে পাস হওয়ার খবরে আনন্দে ভাসছে নওগাঁ। এমন বড় উপহার দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে আনন্দ মিছিল বের হয়েছে। তাদের এই খুশির স্ট্যাটাস ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলার নিয়ামতপুর, সাপাহার, মহাদেবপুর, বদলগাছী ও পোরশা উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আনন্দ শোভাযাত্রা ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে।
পাবলিক এই বিশ্ববিদ্যালয় বিল পাস হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে নওগাঁবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন নওগাঁ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয় শুধু নওগাঁ কিংবা উত্তারাঞ্চল নয়, পুরো দেশের জন্যই শিক্ষার নতুন দার উন্মোচন করবে। সরকারি সফরে জাপানে থাকায় মোবাইল ফোনে গণমাধ্যমকে এই অভিব্যক্তি জানান তিনি।
নওগাঁ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ছলিম উদ্দিন তরফদার বলেন, এটি নওগাঁবাসীর জন্য আশীর্বাদ।
সদর আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মধ্যদিয়ে শিক্ষা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে কয়েক ধাপ এগিয়ে গেল দেশ। আমার পিতা প্রয়াত নেতা আব্দুল জলিলেরও স্বপ্ন ছিলো এমন একটি বিদ্যাপিঠ প্রতিষ্ঠার। দীর্ঘদিন পর হলেও এমন একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর উদ্ধার কাজের জন্য একটি দল পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ। ১০ সদস্যের এই উদ্ধারকারী দলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের পাঁচজন করে সদস্য থাকবেন। একইসঙ্গে জরুরি চিকিৎসা সেবা দিতে আরেকটি মেডিক্যাল টিম যাচ্ছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ও জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক সেহেলী সাবরীন মঙ্গলবার নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানান।
দলে ফায়ার সার্ভিসের ১২ সদস্য থাকছেন
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ থেকে পাঠানো সম্মিলিত সাহায্যকারী দলের সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের ১২ সদস্যের একটি উদ্ধারকারী দল প্রস্তুত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স থেকে উদ্ধারকারী দলের সদস্য হিসেবে যারা যাচ্ছেন তারা ইন্টারন্যাশনাল সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ অ্যাডভাইজারি গ্রুপ-এর স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী বিধ্বস্ত ভবনে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজ পরিচালনা বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্ধার কাজ পরিচালনার জন্য এটি ফায়ার সার্ভিসের প্রথম বিদেশ গমন। বর্তমান সরকারের সময়ে ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বৃদ্ধির এটি একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। এটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের জন্য একটি অভাবনীয় স্বীকৃতি। আমি বিশ্বাস করি, ফায়ার সার্ভিসের সব সদস্য নিজের সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আস্থার প্রতিদান দেবেন।’
ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান এক বার্তায় জানান, বাংলাদেশ সরকার তুরস্ককে এই দুর্যোগে সহায়তা দিতে চেয়েছে। তারা আজ অথবা আগামীকাল উদ্ধারকারী দল পাঠাতে পারে।
সোমবার তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে। ভূপৃষ্ঠের ১৭ দশমিক ৭ কিলোমিটার গভীরে ছিল এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল। ভূমিকম্পের কারণে তুরস্ক ও সিরিয়ায় মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে। দুই দেশে মৃত্যুর সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। সংখ্যাটি আরও অনেক বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভূমিকম্পের পরপরই বিভিন্ন দেশ এবং সংস্থা তুরস্ক ও সিরিয়ায় সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছে।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তুরস্কের প্রেসিডেন্টের কাছে শোকবার্তা পাঠিয়েছেন।
সূত্র বলছে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকেই তুরস্ককে উদ্ধারকারী দল পাঠানোর বিষয়ে প্রস্তাব দেয়া হয়। তুরস্ক দ্রুত এ বিষয়ে তাদের আগ্রহের কথা জানায়।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্যতম উপ-প্রেস সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন তথ্য ক্যাডারের কর্মকর্তা নূর এলাহি মিনা।
মঙ্গলবার তাকে স্ববেতনে প্রেষণে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
নূর এলাহি মিনা বাংলাদেশ বেতারে উপপরিচালক হিসেবে কাজ করছিলেন। এর আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে প্রথম সচিব (প্রেস) হিসেবে সাড়ে ছয় বছর দায়িত্ব পালন করেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের দুই মেয়াদে মিনা প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব হিসেবে কাজ করেন। প্রথম দফায় ২০১০ থেকে ২০১৪ এবং ২০১৪ থেকে ২০১৬ মাঝামাঝি পর্যন্ত তিনি প্রায় সাড়ে ছয় বছর এ দায়িত্ব পালন করেন। তার এ দায়িত্ব সফলতার সঙ্গে পালন করায় সরকার তাকে জাতিসংঘের স্থায়ী মিশনে নিয়োগ দেয়।
সেখানে দায়িত্ব পালন শেষে প্রায় ১৫ দিন আগে তিনি দেশে ফিরে তার মূল কর্মস্থল বাংলাদেশ বেতারে যোগ দেন। এরপর তাকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উপ-প্রেস সচিব হিসেবে নিয়োগ দেয়া হল।
মন্তব্য