ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ পরগনা জেলার বারুইপুর থানার বেগমপুর এলাকার বাসিন্দা পাপ্পু রায়। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়েন সাইকেলকে সঙ্গী করে।
সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দেন দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। তবে এবার দেশের সীমানা পেরিয়ে এসেছেন বাংলাদেশে। বাংলাদেশ-ভারতের ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করার বার্তা নিয়ে এসেছেন তিনি।
গত ২০ ডিসেম্বর ভোর ৪টায় নিজ বাড়ি থেকে সাইকেল ভ্রমণে বের হন পাপ্পু। ওই দিনই বেনাপোল বর্ডার পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন তিনি। তারপর বিভিন্ন জেলা ঘুরে সোমবার ময়মনসিংহে আসেন পাপ্পু।
এদিন বিকেলে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ও শহরের সার্কিট হাউস মাঠে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও টি-শার্ট উপহারের মাধ্যমে স্বাগত জানায় ময়মনসিংহ সিটি সাইক্লিস্ট নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা। পরে তিনি ময়মনসিংহ শহর হয়ে মুক্তাগাছা উপজেলায় যান।
পাপ্পু রায় নিউজবাংলাকে বলেন, স্কুলে শিক্ষকতার পাশাপাশি আমার নেশা সাইক্লিং। তাই সময় পেলেই সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়ি। এবার শীতকালীন অবকাশে সাইকেলে চেপে ছুটে এসেছি বাংলাদেশে। ভারত-বাংলাদেশের ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করার বার্তা নিয়েই ছুটে চলেছি। এজন্য তার এবারের ভ্রমণের মূলমন্ত্র ‘বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সাইকেল অভিযান’।
তিনি বলেন, ‘প্রথম দিনই ১৩০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে বাংলাদেশের যশোর শহরে আসি। তারপর কুষ্টিয়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ হয়ে ময়মনসিংহ শহরে এসে পৌঁছাই। নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার থেকে ঢাকায় গিয়ে জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে দেশে ফিরে যাব। দেশে ফেরা পর্যন্ত সব মিলিয়ে দেড় হাজার কিলোমিটার ভ্রমণ হবে।’
পাপ্পু আরও বলেন, ‘সাইকেল পরিবেশ দূষণ কমায় এবং শরীরকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। সাইকেল খুব আনন্দদায়ক একটি যান। তাই আনন্দ নিয়েই আমি সাইকেল ভ্রমণ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশে এ নিয়ে আমার দ্বিতীয়বার আসা।
আমি একদিকে ভারতবাসীকে বাংলাদেশ সম্পর্কে জানাচ্ছি, তেমনি বাংলাদেশি মানুষদেরও ভারত সম্পর্কে জানাতে এসেছি। দুটি দেশ যদি বন্ধুত্বের সম্পর্ক বজায় রাখে তাহলে অন্য কোনো দেশ আমাদের ওপর চোখ তুলে তাকাতে পারবে না।’
ময়মনসিংহ সিটি সাইক্লিস্ট সংগঠনের সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভারত থেকে বাংলাদেশে মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছেন পাপ্পু। তিনি ময়মনসিংহ আসার পর আমরা তাকে স্বাগত জানিয়েছি। সে যে জেলায় গিয়েছে সবাই তাকে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করেছে। বাংলাদেশি মানুষের সঙ্গে মিশতে পেরে পাপ্পুও মুগ্ধ হয়েছেন।’
আরও পড়ুন:টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদী থেকে জেলের জালে ধরা পড়েছে ৫৫ কেজি ওজনের একটি বাগাড় মাছ। পরে স্থানীয় বাজারে মাছটি ৭৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন বাবলু হালদার।
শনিবার দুপুরে উপজেলার গোবিন্দাসী বাজারে বাগাড় মাছটি বিক্রির জন্য আনেন বাবলু হালদার। এদিন সকালে সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি এলাকায় যমুনা নদী থেকে এক জেলের কাছ থেকে মাছটি কেনেন তিনি।
গোবিন্দাসী মাছ বাজার সমিতির সভাপতি বাবলু হালদার পরে গোবিন্দাসী বাজারে বাগাড় মাছটি ৭৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। মাছটি কিনে নেন মধুপুর উপজেলার গারোবাজারের সুজন নামে এক ব্যক্তি।
ক্রেতা সুজন জানান, বিশাল আকৃতির বাগাড় মাছটি কিনে তারা কয়েকজন মিলে ভাগ করে নিয়েছেন।
বাবলু হালদার বলেন, ‘বেলকুচির যমুনা নদীতে এক জেলের জালে ধরা পড়ে মাছটি। বিক্রির উদ্দেশ্যেই সেখান থেকে মাছটি কিনে আনি আমি। পরে মাছটি ৭৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি।’
চলতি বছরের জানুয়ারিতে সড়ক, রেল ও নৌপথে ৬৫০টি দুর্ঘটনায় ৬৪২ জন প্রাণ হারিয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলেছে, বিগত মাসে যাত্রাপথে সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছেন মোটরসাইকেল বা বাইক আরোহীরা।
সংবাদমাধ্যমে শনিবার পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থাটি।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জানুয়ারিতে ৫৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৫ জন নিহত ও ৮৯৯ জন আহত হয়েছে। এ ছাড়া রেলপথে ৪৪টি দুর্ঘটনায় ৪৬ প্রাণহানি ও ৭৮ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। নৌপথে ১৩ দুর্ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যু, একজন আহত ও ছয়জন নিখোঁজ হয়।
সংস্থাটির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন অনুযায়ী, জানুয়ারিতে ২১৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ২০৫ জন। এসব দুর্ঘটনায় আহত জন ১১৪ বাইক আরোহী।
দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক সংবাদপত্র ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
এতে দেখা যায়, ২০২২ সালের জানুয়ারির চেয়ে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে সড়কে দুর্ঘটনা ৫.৩ শতাংশ এবং আহত ১০.০৪ শতাংশ বেড়েছে, তবে প্রাণহানি ৪.৬ শতাংশ কমেছে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, জানুয়ারিতে সংঘটিত দুর্ঘটনার ২৯.৫১ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৩৮.৬১ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে ও ২৪.৪৫ শতাংশ ফিডার রোডে হয়েছে।
সারা দেশে মোট দুর্ঘটনার ৫.২২ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১.১৮ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে এবং ১.০১ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে ঘটেছে।
গত মাসে সড়ক দুর্ঘটনা সবচেয়ে বেশি হয় ১৭ জানুয়ারি। ওই দিনে ৩৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত ও ৩১ জন আহত হয়।
সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে ২ জানুয়ারি, যেদিন ১২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত ও ২১ জন আহত হয়।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে বেপরোয়া গতি, বিপজ্জনক ওভারটেকিং, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের অবাধ চলাচল, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, চালকের বেপরোয়া মনোভাব, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেডফোন ব্যবহার, মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো ইত্যাদি।
আরও পড়ুন:দেশের দুই জেলার ওপর দিয়ে শুক্রবার মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেলেও শনিবার কোথাও এমন পরিস্থিতি দেখা যায়নি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসেও শৈত্যপ্রবাহের কোনো বার্তা দেয়া হয়নি।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি রাতের তাপমাত্রা বাড়ার আভাস দিয়েছে, যার অর্থ হলো দেশজুড়ে কমতে পারে শীতের অনুভূতি।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, উপমহাদেশীয় উচ্চতাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
দিনভর আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে পূর্বাভাসে জানানো হয়, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
কুয়াশা নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থা নিয়ে বলা হয়, এ সময়ের শেষের দিকে রাতের তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ ৩০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল কক্সবাজারের টেকনাফে। শনিবার দেশের সর্বনিম্ন ১০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায়।
আরও পড়ুন:জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত সর্বসম্মতিক্রমে ২০২৩ সালের জন্য জাতিসংঘ শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের (পিবিসি) সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি এর আগে ২০২২ সালে কমিশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কমিশনের সদস্যরা ২০২৩ সালের জন্য ক্রোয়েশিয়াকে সভাপতি এবং বাংলাদেশ ও জার্মানিকে সহ-সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করেন। বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে রাষ্ট্রদূত মুহিত আনুষ্ঠানিকভাবে ক্রোয়েশিয়ার কাছে কমিশনের সভাপতির দায়িত্বভার হস্তান্তর করেন।
শুক্রবার ঢাকায় প্রাপ্ত এক সরকারি তথ্য বিবরণীতে এ সংবাদ জানানো হয়। এতে বলা হয়, অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত কমিশনে সভাপতির দায়িত্ব পালনের সময় বাংলাদেশের প্রতি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকে ক্রমান্বয়ে বাংলাদেশ জাতিসংঘের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
বিশ্বের সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বশান্তি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। মুহিত আগামীতে কমিশনের কাজে বাংলাদেশের পূর্ণ সমর্থন অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
দেশজুড়ে জানুয়ারিতে অনেকটা কমে আসা শীতের অনুভূতি ফের তীব্র হয়েছে কয়েকটি জেলায়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে দেশের সীমান্তবর্তী দুই জেলা কুড়িগ্রাম ও মৌলভীবাজারে।
কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেখানে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে বলে জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, শ্রীলঙ্কা ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে প্রথমে সুস্পষ্ট লঘুচাপ এবং পরবর্তী সময়ে লঘুচাপে পরিণত হয়ে গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে। উপমহাদেশীয় উচ্চতাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
দিনভর আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে পূর্বাভাসে জানানো হয়, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
কুয়াশা নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং অন্য কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে বলা হয়, কুড়িগ্রাম ও মৌলভীবাজার জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
তাপমাত্রার বিষয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থা নিয়ে অধিদপ্তর জানায়, তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি আরও জানায়, বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ ৩১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল রাঙ্গামাটিতে। শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন ৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে।
আরও পড়ুন:কৃচ্ছ্র সাধনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিদ্যুৎ ও আপ্যায়ন খাতে খরচ প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছে। জ্বালানি তেলে খরচ কমানো হয়েছে প্রায় ৪ ভাগের এক ভাগ। পাশাপাশি অন্যান্য খাতেও ব্যয় কমানো হয়েছে।
ব্যয় সংকোচনে এসব পদক্ষেপের সুবাদে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেট বরাদ্দ থেকে ২৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
গত বছরের জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ব্যয়ের হিসাব থেকে দেখা যায়, বিদ্যুৎ বিল কমেছে ৪৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ, অকটেন ও ডিজেলের ব্যবহার কমানো হয়েছে ২৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং আপ্যায়ন খাতের ব্যয় কমানো হয়েছে ৪৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মানুষকে করোনা ভ্যাকসিন দেয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছিলেন কিছু খাতে ব্যয় সংকোচন করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বরাদ্দের কিছু টাকা বাঁচিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে দেয়া যায় কি না। ২০২০ সাল থেকে শুরু করেছি। প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবেই ব্যয় কমানো শুরু হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক সংকট শুরু হলো এবং ঢেউটা বাংলাদেশ পর্যন্ত আসল। তখন আমরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ব্যয় আরও কমানোর কাজ শুরু করলাম।
‘প্রথমত আমরা বিদ্যুতে হাত দিলাম। তারপরে পেট্রল এবং লুব্রিকেন্টের খাতে খুবই বৈজ্ঞানিক উপায়ে গাড়িগুলোকে একটু রেশনিং করে আমরা সেটাও কমিয়ে এনেছি। একইভাবে আপ্যায়ন খাতেও আমরা ব্যয় কমিয়ে নিয়ে এসেছি। আমরা যে আপ্যায়নের মেন্যুটি করেছি, সেটি খুবই সাদামাটা।’
বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ কমিয়ে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেট বরাদ্দ থেকে ২৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ফেরত দেয়ার কথা জানিয়ে আহসান কিবরিয়া বলেন, ‘আমরা ২৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা সংসদীয় বাজেট থেকে অর্থ বিভাগের কাছে সমর্পণ করেছি। এ টাকা সরকারের কোষাগারে জমা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রীর অফিসের ব্যয় আরও কমে আসবে।’
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের জুনে বিদ্যুৎ খাতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ব্যয় ছিল ২৩ লাখ ৮ হাজার ৮৩৮ টাকা। জুন থেকে ৭ দশমিক ৩০ শতাংশ কমিয়ে জুলাইয়ে খরচ হয় ২১ লাখ ৩৮ হাজার ৬২৫ টাকা। জুন থেকে খরচ ৩১ দশমিক ৮৪ শতাংশ কমিয়ে আগস্টের ব্যয় হয় ১৫ লাখ ৭৩ হাজার ৮১৩ টাকা। জুন থেকে খরচ ৪৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ (প্রায় অর্ধেক) কমিয়ে সেপ্টেম্বরে বিদ্যুৎ খাতের ব্যয় দাঁড়ায় ১২ লাখ ২৭ হাজার ৩৫৩ টাকা।
২০২২ সালের জুনে পরিবহনের জন্য জ্বালানি খাতে অকটেন ও ডিজেলের ব্যবহার ছিল ৪১ হাজার ৪০২ লিটার। জুন থেকে ৪ হাজার ৪০০ লিটার (১০ দশমিক ৬৩ শতাংশ) কমিয়ে জুলাইয়ে জ্বালানি তেলের ব্যবহার হয় ৩৭ হাজার ২ লিটার। জুন থেকে ১৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ কমিয়ে আগস্টে জ্বালানি তেলের ব্যবহার হয় ৩৪ হাজার ৮৪১ লিটার। আর জুন থেকে ৯ হাজার ৬৬৬ লিটার তেল (২৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ) কমিয়ে সেপ্টেম্বরে তেলের ব্যবহার ৩১ হাজার ৭৩৬ লিটারে নামিয়ে আনা হয়।
জুনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আপ্যায়ন ব্যয় ছিল ৩ লাখ ২১ হাজার ৬৬৫ টাকা। ওই মাস থেকে ১৬ দশমিক ৮১ শতাংশ খরচ কমিয়ে জুলাইয়ের আপ্যায়ন ব্যয় ২ লাখ ৬৭ হাজার ৫৭০ টাকায় নামিয়ে আনা হয়।
জুন থেকে ৩২ দশমিক ১০ শতাংশ কমিয়ে আগস্টের আপ্যায়ন ব্যয় ২ লাখ ১৮ হাজার ৪১০ টাকায় নামিয়ে আনা হয়। ওই মাস থেকে ৪৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ খরচ কমিয়ে সেপ্টেম্বর আপ্যায়ন ব্যয় হয় ১ লাখ ৭৪ হাজার ১২০ টাকা।
আরও পড়ুন:মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয় পাচ্ছে মেহেরপুর জেলা। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে এ লক্ষ্যে একটি বিল পাস হয়েছে।
অধিবেশনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ‘মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয়, মেহেরপুর বিল-২০২৩’ উত্থাপন করলে কণ্ঠভোটে তা পাস হয়।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে বিলটি পাসের আগে জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন বিরোধী দলীয় সদস্যরা। তাদের প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। এরপর বিলের ওপর আনীত সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করেন স্পিকার।
১০ জানুয়ারি সংসদে বিলটি উত্থাপনের পর তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। বিলে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন আদেশ-১৯৭৩ এর বিধানাবঈ পরিপালন করতে হবে। রাষ্ট্রপতি হবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য।
আচার্য নির্ধারিত শর্তে স্বনামধন্য একজন শিক্ষাবিদকে চার বছরের জন্য উপাচার্য পদে নিয়োগ দেবেন। কোনো ব্যক্তি একাদিক্রমে বা অন্য কোনোভাবে উপাচার্য হিসেবে দুই মেয়াদের বেশি নিয়োগ লাভের যোগ্য হবেন না। আচার্য যেকোনো সময় উপাচার্যের নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।
বিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কর্মচারীদের চাকরির শর্তাবলী নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বেতনভোগী শিক্ষক ও কর্মচারী, সংসদ সদস্য বা স্থানীয় সরকারের কোনো পদে নির্বাচিত হতে প্রার্থী হতে চাইলে ওই নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে ইস্তফা দেবেন।
বিলে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজনে আচার্যের অনুমোদন নিয়ে ‘বিজনেস ইনকিউবেটর’ প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। বিজনেস ইনকিউবেটর হলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক স্থাপিত বা পরিচালিত কোনো বিজনেস ইনকিউবেটর, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে সব সহযোগিতা দেয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা শিক্ষার্থী কর্তৃক কোনো উদ্ভাবন, মেধাস্বত্ব, আবিষ্কার বা প্রক্রিয়া, বাজারজাত এবং বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের জন্য সহযোগিতা প্রদান।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য