মেট্রোরেলের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ী প্রান্তে বুধবার বেলা ১১টা ৪ মিনিটে উদ্বোধনস্থলে তিনি এই ফলক উন্মোচন করেন।
ওই সময় সরকারপ্রধানের সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের পর সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
বক্তব্যের পর কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষে সফরসঙ্গীদের নিয়ে মেট্রো ট্রেনে চড়েন শেখ হাসিনা।
আগারগাঁও স্টেশনে নেমে গাড়িতে নিজ বাসভবন গণভবনের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ট্রেনটি ২টা ১১ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশনে পৌঁছায়।
প্রধানমন্ত্রী ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে সব বগি ঘুরে দেখেন।
ট্রেনে যাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী ১টা ৩৪ মিনিটে টিকিট কাটেন। নিজে অর্থ পরিশোধ করেন। ওই সময় শেখ রেহানাও তার টিকিট কাটেন। ওই সময় তাদের হাতে মেট্রোরেলের কার্ড দেয়া হয়। সেটি তুলে ধরে ছবি তোলেন তারা।
মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্টরা। বৃক্ষরোপণ শেষে মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যরা।
মেট্রো ট্রেনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফর করতে দিয়াবাড়ীর তৃতীয় তলার প্ল্যাটফর্মে সফরসঙ্গীরা এসে উপস্থিত হচ্ছেন একে একে। প্রধানমন্ত্রীর সহযাত্রী হিসেবে থাকবেন মন্ত্রী, এমপি, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন ও মুক্তিযোদ্ধারা।
ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড গঠনের মধ্য দিয়ে ছয়টি মেট্রোরেল নির্মাণের কথা আবারও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘চারটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়নাধীন এবং দুটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের জন্য এর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে।’
দেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা যাতে সহজে মেট্রোরেল ব্যবহার করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘বয়স্ক যাত্রীগণ, তাদের সুবিধার জন্য সংরক্ষিত আসন থাকবে। প্রতিটি মেট্রো ট্রেনে একটি স্বতন্ত্র মহিলা কোচ থাকবে, সেখানে মহিলারা চড়তে পারবে, যেতে পারবে। মহিলা যাত্রীদের জন্য পৃথক ওয়াশরুমের ব্যবস্থা থাকবে। তার সঙ্গে শিশুদের পরিচর্যার স্থান থাকবে।’
মেট্রোরেলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা যেন বিনা খরচে ভ্রমণ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছেও বলেও জানান শেখ হাসিনা।
মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরও চারটি মাইলফলক স্পর্শ করল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। এই প্রথম বাংলাদেশ বৈদ্যুতিক ট্রেনের যুগে প্রবেশ করল। মেট্রোরেল দূর নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। রিমোট কন্ট্রোল দ্বারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে এটা পরিচালিত করা হবে। তার ফলে আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছি, এটি তারই একটি অংশ হিসেবেই কাজ করবে। তার ন্যূনতম মাত্রা সংযোজিত হলো। বাংলাদেশ দ্রুতগতির ট্রেনের যুদে পদার্পণ করল। এই মেট্রোরেলে সর্বোচ্চ গতি হবে (প্রতি ঘণ্টায়) ১১০ কিলোমিটার।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ যখন আমরা শুরু করেছি, তখন এসেছিল আরকেটি আঘাত। হলি আর্টিজানের সেই সন্ত্রাসী আক্রমণ। আর অত্যন্ত দুঃখজনক, সেই আক্রমণে এই মেট্রোরেলের যারা পরামর্শক, জাপানিজ নাগরিক, সেই জাপানিজ পরামর্শক সাতজন হলি আর্টিজানে মৃত্যুবরণ করেন। আমি তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি।
‘তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি সমবেদনা জানাই সবার পরিবারকে। এরপরেও আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই জাপানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী (শিনজো আবে), যিনিও ঘাতকের বুলেটের আঘাতে শাহাদাত বরণ করেছেন মাত্র কিছুদিন আগে। কারণ এই কাজ তিনি বন্ধ করে দেননি। কিছু দিনের জন্য থেমে ছিল, কিন্তু তার নির্দেশে আবার মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের মেট্রোরেলের কয়েকটি স্টেশনে তাদের নামফলক আমরা রাখব। তাদের নামফলক উত্তরার দিয়াবাড়ীর মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্রে স্মৃতিস্মারক আমরা স্থাপন করেছি। তাদের নামটি যেন স্মরণ থাকে, আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় আরেকটি পালক আজ বাংলাদেশ তথা ঢাকায় আমরা দিতে পারলাম তথা সংযোজিত করতে পারলাম। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। কিছুক্ষণ আগে সেটা উদ্বোধন করেছি। সেটা হচ্ছে মেট্রোরেল, যার কেতাবি নাম হচ্ছে এমআরটি-সিক্স।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজধানীবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার স্বপ্নপূরণের দিন। মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সরকারের মুকুটে যুক্ত হলো আরেকটি হীরন্ময় পালক।’
তিনি বলেন, “মেট্রোরেলে করে প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন, ‘ইয়েস, উই ক্যান।’ বিশ্বব্যাংক অপবাদ দিতে পারে। তারা অপবাদ দিয়েছে। আমরা বীরের জাতি। আমরা চোরের জাতি নই। মনে অনেকের জ্বালা। অন্তর জ্বালায় মরে। বড়ই অন্তর জ্বালা।”
কাদের বলেন, ‘শত রাস্তা, শত সড়ক এক দিনে। কোথাও দেখেছেন? ভূগোলেও নেই।’
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোরেল নিয়ে কিছু বলতে পারে না। দুর্নীতি নিয়ে কিছু বলতে পারে না। এখন বলছে ভাড়া বেশি।’
জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইচিগুচি তামোহিদে বক্তব্যের শুরুতে বাংলায় বলেন, ‘আমি এখানে এসে অনেক খুশি হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকার সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের চলাচলে এই সংযোজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি একটি নিরাপদ পরিবহন, বিশেষ করে নারীদের জন্য।’
ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনিরো বাংলায় বলেন, ‘জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এই সম্পর্ককে আমি আরও গভীর করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে আমি কাজ করে যাব। এই দ্রুতগতির নিরাপদ পরিবহন সেবার মধ্য দিয়ে ঢাকার চেহারা বদলে যাবে।’
এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবে। প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে। এটা বৈদ্যুতিক ট্রেন। এখানে কোনো জীবাশ্ম জ্বালানি বা তরল জ্বালানি ব্যবহার করা হবে না।
‘কাজেই এটা পরিবেশে কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না; বরং পরিবেশ উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কারণ মেট্রো চালু হলে অনেক গাড়ি কমে যাবে। তাই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমে যাবে।’
ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, আরও তিনটি মেট্রোরেলে নির্মাণকাজ বাস্তবায়নাধীন। এমআরটি লাইন-১ বাংলাদেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী এ লাইনের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘এমআরটি লাইন ৬-এর মতিঝিল অংশ আগামী ডিসেম্বর ২০২৩-এ উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করার কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ২০২৫ সালের জুনে এই অংশ চালু করা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে সচিব সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘আমরা যে কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) করেছি, সে কর্মপরিকল্পনাটা আপনাদের জানাবো। আমি ঢাকার বাইরে থাকায় একটু পিছিয়ে পড়েছি। এটা আমার টেবিলে এখন আছে। আগামীকাল পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করেন।’
এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব আজ এক বৈঠকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) অনুমোদন করেছে কমিশন।
এখন যেকোনো সময় নির্বাচনের এই রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হতে পারে বলে ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অনুমোদন হয়েছে, এখন শুধু টাইপিং চলছে।’
উল্লেখ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইসির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে দল নিবন্ধন, সীমানা নির্ধারণ, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংস্কার, বিধিমালা ও নীতিমালা জারি, প্রবাসীদের জন্য আইটি সাপোর্টেড নিবন্ধন ও পোষ্টাল ব্যালট পদ্ধতি ও নির্বাচনী সরঞ্জাম কেনাকাটা বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে রোডম্যাপে।
আগারগাঁও স্টেশনে নেমে গাড়িতে নিজ বাসভবন গণভবনের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ট্রেনটি ২টা ১১ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশনে পৌঁছায়।
প্রধানমন্ত্রী ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে সব বগি ঘুরে দেখেন।
ট্রেনে যাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী ১টা ৩৪ মিনিটে টিকিট কাটেন। নিজে অর্থ পরিশোধ করেন। ওই সময় শেখ রেহানাও তার টিকিট কাটেন। ওই সময় তাদের হাতে মেট্রোরেলের কার্ড দেয়া হয়। সেটি তুলে ধরে ছবি তোলেন তারা।
মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্টরা। বৃক্ষরোপণ শেষে মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যরা।
মেট্রো ট্রেনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফর করতে দিয়াবাড়ীর তৃতীয় তলার প্ল্যাটফর্মে সফরসঙ্গীরা এসে উপস্থিত হচ্ছেন একে একে। প্রধানমন্ত্রীর সহযাত্রী হিসেবে থাকবেন মন্ত্রী, এমপি, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন ও মুক্তিযোদ্ধারা।
ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড গঠনের মধ্য দিয়ে ছয়টি মেট্রোরেল নির্মাণের কথা আবারও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘চারটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়নাধীন এবং দুটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের জন্য এর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে।’
দেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা যাতে সহজে মেট্রোরেল ব্যবহার করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘বয়স্ক যাত্রীগণ, তাদের সুবিধার জন্য সংরক্ষিত আসন থাকবে। প্রতিটি মেট্রো ট্রেনে একটি স্বতন্ত্র মহিলা কোচ থাকবে, সেখানে মহিলারা চড়তে পারবে, যেতে পারবে। মহিলা যাত্রীদের জন্য পৃথক ওয়াশরুমের ব্যবস্থা থাকবে। তার সঙ্গে শিশুদের পরিচর্যার স্থান থাকবে।’
মেট্রোরেলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা যেন বিনা খরচে ভ্রমণ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছেও বলেও জানান শেখ হাসিনা।
মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরও চারটি মাইলফলক স্পর্শ করল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। এই প্রথম বাংলাদেশ বৈদ্যুতিক ট্রেনের যুগে প্রবেশ করল। মেট্রোরেল দূর নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। রিমোট কন্ট্রোল দ্বারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে এটা পরিচালিত করা হবে। তার ফলে আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছি, এটি তারই একটি অংশ হিসেবেই কাজ করবে। তার ন্যূনতম মাত্রা সংযোজিত হলো। বাংলাদেশ দ্রুতগতির ট্রেনের যুদে পদার্পণ করল। এই মেট্রোরেলে সর্বোচ্চ গতি হবে (প্রতি ঘণ্টায়) ১১০ কিলোমিটার।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ যখন আমরা শুরু করেছি, তখন এসেছিল আরকেটি আঘাত। হলি আর্টিজানের সেই সন্ত্রাসী আক্রমণ। আর অত্যন্ত দুঃখজনক, সেই আক্রমণে এই মেট্রোরেলের যারা পরামর্শক, জাপানিজ নাগরিক, সেই জাপানিজ পরামর্শক সাতজন হলি আর্টিজানে মৃত্যুবরণ করেন। আমি তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি।
‘তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি সমবেদনা জানাই সবার পরিবারকে। এরপরেও আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই জাপানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী (শিনজো আবে), যিনিও ঘাতকের বুলেটের আঘাতে শাহাদাত বরণ করেছেন মাত্র কিছুদিন আগে। কারণ এই কাজ তিনি বন্ধ করে দেননি। কিছু দিনের জন্য থেমে ছিল, কিন্তু তার নির্দেশে আবার মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের মেট্রোরেলের কয়েকটি স্টেশনে তাদের নামফলক আমরা রাখব। তাদের নামফলক উত্তরার দিয়াবাড়ীর মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্রে স্মৃতিস্মারক আমরা স্থাপন করেছি। তাদের নামটি যেন স্মরণ থাকে, আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় আরেকটি পালক আজ বাংলাদেশ তথা ঢাকায় আমরা দিতে পারলাম তথা সংযোজিত করতে পারলাম। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। কিছুক্ষণ আগে সেটা উদ্বোধন করেছি। সেটা হচ্ছে মেট্রোরেল, যার কেতাবি নাম হচ্ছে এমআরটি-সিক্স।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজধানীবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার স্বপ্নপূরণের দিন। মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সরকারের মুকুটে যুক্ত হলো আরেকটি হীরন্ময় পালক।’
তিনি বলেন, “মেট্রোরেলে করে প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন, ‘ইয়েস, উই ক্যান।’ বিশ্বব্যাংক অপবাদ দিতে পারে। তারা অপবাদ দিয়েছে। আমরা বীরের জাতি। আমরা চোরের জাতি নই। মনে অনেকের জ্বালা। অন্তর জ্বালায় মরে। বড়ই অন্তর জ্বালা।”
কাদের বলেন, ‘শত রাস্তা, শত সড়ক এক দিনে। কোথাও দেখেছেন? ভূগোলেও নেই।’
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোরেল নিয়ে কিছু বলতে পারে না। দুর্নীতি নিয়ে কিছু বলতে পারে না। এখন বলছে ভাড়া বেশি।’
জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইচিগুচি তামোহিদে বক্তব্যের শুরুতে বাংলায় বলেন, ‘আমি এখানে এসে অনেক খুশি হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকার সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের চলাচলে এই সংযোজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি একটি নিরাপদ পরিবহন, বিশেষ করে নারীদের জন্য।’
ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনিরো বাংলায় বলেন, ‘জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এই সম্পর্ককে আমি আরও গভীর করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে আমি কাজ করে যাব। এই দ্রুতগতির নিরাপদ পরিবহন সেবার মধ্য দিয়ে ঢাকার চেহারা বদলে যাবে।’
এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবে। প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে। এটা বৈদ্যুতিক ট্রেন। এখানে কোনো জীবাশ্ম জ্বালানি বা তরল জ্বালানি ব্যবহার করা হবে না।
‘কাজেই এটা পরিবেশে কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না; বরং পরিবেশ উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কারণ মেট্রো চালু হলে অনেক গাড়ি কমে যাবে। তাই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমে যাবে।’
ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, আরও তিনটি মেট্রোরেলে নির্মাণকাজ বাস্তবায়নাধীন। এমআরটি লাইন-১ বাংলাদেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী এ লাইনের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘এমআরটি লাইন ৬-এর মতিঝিল অংশ আগামী ডিসেম্বর ২০২৩-এ উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করার কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ২০২৫ সালের জুনে এই অংশ চালু করা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) অনুমোদন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
যে কোনো সময় এই নির্বাচনের রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করতে পারে ইসি।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন, চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব এ নিয়ে বৈঠকও করেছেন।
বৈঠকে কর্মপরিকল্পনার (রোডম্যাপ) অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। এখন, যে কোনো সময় নির্বাচনের এই রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হতে পারে বলে ইসি’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অনুমোদন হয়েছে, এখন শুধু টাইপিং চলছে।’
এদিকে সংসদীয় আসনের পুনঃনির্ধারিত সীমানার বিষয়ে ইসি’র শুনানি আজ বিকেলে শেষ হচ্ছে।
শুনানি শেষে বিকেলে সার্বিক বিষয় নিয়ে ইসি’র সিনিয়র সচিব আকতার আহমেদের ব্রিফিং করার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘আমরা ব্রিফিংয়ে আসব। তখন সীমানার শুনানির বিষয়টির পাশাপাশি এ বিষয়টিও (রোডম্যাপ) দেখা যাবে।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি কর্মকর্তা বৈঠক করেন।
ওই দিন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছিলেন, বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে ইসি সচিব ব্রিফ করবেন।
গত ১৮ আগস্ট ইসি’র সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়ে ছিলেন, ‘একটা কর্মপরিকল্পনার (নির্বাচনী রোডম্যাপ) বিষয়ে বলেছিলাম, আমরা এই সপ্তাহে এটা করবো। কর্মপরিকল্পনার তো আমাদের আন্তঃঅনুবিভাগ সম্পর্কিত এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে। কর্মপরিকল্পনার ড্রাফ্ট করা হয়েছে। ড্রাফ্টটি এখন কমিশনে দিয়ে আমরা অ্যাপ্রুভ করবো।’
আগারগাঁও স্টেশনে নেমে গাড়িতে নিজ বাসভবন গণভবনের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ট্রেনটি ২টা ১১ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশনে পৌঁছায়।
প্রধানমন্ত্রী ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে সব বগি ঘুরে দেখেন।
ট্রেনে যাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী ১টা ৩৪ মিনিটে টিকিট কাটেন। নিজে অর্থ পরিশোধ করেন। ওই সময় শেখ রেহানাও তার টিকিট কাটেন। ওই সময় তাদের হাতে মেট্রোরেলের কার্ড দেয়া হয়। সেটি তুলে ধরে ছবি তোলেন তারা।
মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্টরা। বৃক্ষরোপণ শেষে মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যরা।
মেট্রো ট্রেনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফর করতে দিয়াবাড়ীর তৃতীয় তলার প্ল্যাটফর্মে সফরসঙ্গীরা এসে উপস্থিত হচ্ছেন একে একে। প্রধানমন্ত্রীর সহযাত্রী হিসেবে থাকবেন মন্ত্রী, এমপি, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন ও মুক্তিযোদ্ধারা।
ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড গঠনের মধ্য দিয়ে ছয়টি মেট্রোরেল নির্মাণের কথা আবারও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘চারটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়নাধীন এবং দুটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের জন্য এর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে।’
দেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা যাতে সহজে মেট্রোরেল ব্যবহার করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘বয়স্ক যাত্রীগণ, তাদের সুবিধার জন্য সংরক্ষিত আসন থাকবে। প্রতিটি মেট্রো ট্রেনে একটি স্বতন্ত্র মহিলা কোচ থাকবে, সেখানে মহিলারা চড়তে পারবে, যেতে পারবে। মহিলা যাত্রীদের জন্য পৃথক ওয়াশরুমের ব্যবস্থা থাকবে। তার সঙ্গে শিশুদের পরিচর্যার স্থান থাকবে।’
মেট্রোরেলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা যেন বিনা খরচে ভ্রমণ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছেও বলেও জানান শেখ হাসিনা।
মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরও চারটি মাইলফলক স্পর্শ করল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। এই প্রথম বাংলাদেশ বৈদ্যুতিক ট্রেনের যুগে প্রবেশ করল। মেট্রোরেল দূর নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। রিমোট কন্ট্রোল দ্বারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে এটা পরিচালিত করা হবে। তার ফলে আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছি, এটি তারই একটি অংশ হিসেবেই কাজ করবে। তার ন্যূনতম মাত্রা সংযোজিত হলো। বাংলাদেশ দ্রুতগতির ট্রেনের যুদে পদার্পণ করল। এই মেট্রোরেলে সর্বোচ্চ গতি হবে (প্রতি ঘণ্টায়) ১১০ কিলোমিটার।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ যখন আমরা শুরু করেছি, তখন এসেছিল আরকেটি আঘাত। হলি আর্টিজানের সেই সন্ত্রাসী আক্রমণ। আর অত্যন্ত দুঃখজনক, সেই আক্রমণে এই মেট্রোরেলের যারা পরামর্শক, জাপানিজ নাগরিক, সেই জাপানিজ পরামর্শক সাতজন হলি আর্টিজানে মৃত্যুবরণ করেন। আমি তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি।
‘তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি সমবেদনা জানাই সবার পরিবারকে। এরপরেও আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই জাপানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী (শিনজো আবে), যিনিও ঘাতকের বুলেটের আঘাতে শাহাদাত বরণ করেছেন মাত্র কিছুদিন আগে। কারণ এই কাজ তিনি বন্ধ করে দেননি। কিছু দিনের জন্য থেমে ছিল, কিন্তু তার নির্দেশে আবার মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের মেট্রোরেলের কয়েকটি স্টেশনে তাদের নামফলক আমরা রাখব। তাদের নামফলক উত্তরার দিয়াবাড়ীর মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্রে স্মৃতিস্মারক আমরা স্থাপন করেছি। তাদের নামটি যেন স্মরণ থাকে, আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় আরেকটি পালক আজ বাংলাদেশ তথা ঢাকায় আমরা দিতে পারলাম তথা সংযোজিত করতে পারলাম। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। কিছুক্ষণ আগে সেটা উদ্বোধন করেছি। সেটা হচ্ছে মেট্রোরেল, যার কেতাবি নাম হচ্ছে এমআরটি-সিক্স।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজধানীবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার স্বপ্নপূরণের দিন। মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সরকারের মুকুটে যুক্ত হলো আরেকটি হীরন্ময় পালক।’
তিনি বলেন, “মেট্রোরেলে করে প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন, ‘ইয়েস, উই ক্যান।’ বিশ্বব্যাংক অপবাদ দিতে পারে। তারা অপবাদ দিয়েছে। আমরা বীরের জাতি। আমরা চোরের জাতি নই। মনে অনেকের জ্বালা। অন্তর জ্বালায় মরে। বড়ই অন্তর জ্বালা।”
কাদের বলেন, ‘শত রাস্তা, শত সড়ক এক দিনে। কোথাও দেখেছেন? ভূগোলেও নেই।’
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোরেল নিয়ে কিছু বলতে পারে না। দুর্নীতি নিয়ে কিছু বলতে পারে না। এখন বলছে ভাড়া বেশি।’
জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইচিগুচি তামোহিদে বক্তব্যের শুরুতে বাংলায় বলেন, ‘আমি এখানে এসে অনেক খুশি হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকার সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের চলাচলে এই সংযোজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি একটি নিরাপদ পরিবহন, বিশেষ করে নারীদের জন্য।’
ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনিরো বাংলায় বলেন, ‘জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এই সম্পর্ককে আমি আরও গভীর করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে আমি কাজ করে যাব। এই দ্রুতগতির নিরাপদ পরিবহন সেবার মধ্য দিয়ে ঢাকার চেহারা বদলে যাবে।’
এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবে। প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে। এটা বৈদ্যুতিক ট্রেন। এখানে কোনো জীবাশ্ম জ্বালানি বা তরল জ্বালানি ব্যবহার করা হবে না।
‘কাজেই এটা পরিবেশে কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না; বরং পরিবেশ উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কারণ মেট্রো চালু হলে অনেক গাড়ি কমে যাবে। তাই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমে যাবে।’
ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, আরও তিনটি মেট্রোরেলে নির্মাণকাজ বাস্তবায়নাধীন। এমআরটি লাইন-১ বাংলাদেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী এ লাইনের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘এমআরটি লাইন ৬-এর মতিঝিল অংশ আগামী ডিসেম্বর ২০২৩-এ উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করার কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ২০২৫ সালের জুনে এই অংশ চালু করা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
শ্রম আইন, ২০০৬ সংশোধনের লক্ষ্যে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ (টিসিসি)-এর ৮৯তম সভায় শ্রমিক, মালিক ও সরকারের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গত এক বছরের পর্যালোচনা ও সকল পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে শ্রম আইন ২০০৬ সংশোধনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার এক হোটেলে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, "শ্রমিক ও মালিক পক্ষের পরামর্শের ভিত্তিতে শ্রম আইন যুগোপযোগী করা হবে। এটি বাংলাদেশের শ্রমখাতের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হবে এবং আন্তর্জাতিক মানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হবে।’
সভায় শ্রমিক ও মালিক পক্ষের প্রতিনিধিরা তাদের মতামত তুলে ধরেন। একটি সুসমন্বিত ও আন্তর্জাতিক মানের শ্রম আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা উপস্থিত সকলেই করেন। অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত এ সভায় সংশোধিত শ্রম আইন দ্রুত সম্পন্ন করার তাগিদ দেওয়া হয়।
সভায় বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন দূতাবাস, কানাডা হাই কমিশন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর প্রতিনিধিরা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত জনাব লুৎফে সিদ্দিকী।
এছাড়াও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) এর নির্বাহী পরিচালক এবং শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন (বিইএফ)-এর সভাপতি, টিসিসি সদস্যবৃন্দের মধ্যে তাসলিমা আক্তার, কোহিনুর মাহমুদ, বাবুল আকতার , নাজমা আক্তার, রাজেকুজ্জামান রতন, এডভোকেট আতিকুর রহমান, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সংশোধনী বাংলাদেশের শ্রমবাজারকে আরও গতিশীল ও আন্তর্জাতিক মানসম্মত করবে এবং শ্রমিক-মালিক সম্পর্কের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আগারগাঁও স্টেশনে নেমে গাড়িতে নিজ বাসভবন গণভবনের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ট্রেনটি ২টা ১১ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশনে পৌঁছায়।
প্রধানমন্ত্রী ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে সব বগি ঘুরে দেখেন।
ট্রেনে যাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী ১টা ৩৪ মিনিটে টিকিট কাটেন। নিজে অর্থ পরিশোধ করেন। ওই সময় শেখ রেহানাও তার টিকিট কাটেন। ওই সময় তাদের হাতে মেট্রোরেলের কার্ড দেয়া হয়। সেটি তুলে ধরে ছবি তোলেন তারা।
মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্টরা। বৃক্ষরোপণ শেষে মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যরা।
মেট্রো ট্রেনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফর করতে দিয়াবাড়ীর তৃতীয় তলার প্ল্যাটফর্মে সফরসঙ্গীরা এসে উপস্থিত হচ্ছেন একে একে। প্রধানমন্ত্রীর সহযাত্রী হিসেবে থাকবেন মন্ত্রী, এমপি, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন ও মুক্তিযোদ্ধারা।
ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড গঠনের মধ্য দিয়ে ছয়টি মেট্রোরেল নির্মাণের কথা আবারও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘চারটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়নাধীন এবং দুটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের জন্য এর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে।’
দেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা যাতে সহজে মেট্রোরেল ব্যবহার করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘বয়স্ক যাত্রীগণ, তাদের সুবিধার জন্য সংরক্ষিত আসন থাকবে। প্রতিটি মেট্রো ট্রেনে একটি স্বতন্ত্র মহিলা কোচ থাকবে, সেখানে মহিলারা চড়তে পারবে, যেতে পারবে। মহিলা যাত্রীদের জন্য পৃথক ওয়াশরুমের ব্যবস্থা থাকবে। তার সঙ্গে শিশুদের পরিচর্যার স্থান থাকবে।’
মেট্রোরেলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা যেন বিনা খরচে ভ্রমণ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছেও বলেও জানান শেখ হাসিনা।
মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরও চারটি মাইলফলক স্পর্শ করল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। এই প্রথম বাংলাদেশ বৈদ্যুতিক ট্রেনের যুগে প্রবেশ করল। মেট্রোরেল দূর নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। রিমোট কন্ট্রোল দ্বারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে এটা পরিচালিত করা হবে। তার ফলে আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছি, এটি তারই একটি অংশ হিসেবেই কাজ করবে। তার ন্যূনতম মাত্রা সংযোজিত হলো। বাংলাদেশ দ্রুতগতির ট্রেনের যুদে পদার্পণ করল। এই মেট্রোরেলে সর্বোচ্চ গতি হবে (প্রতি ঘণ্টায়) ১১০ কিলোমিটার।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ যখন আমরা শুরু করেছি, তখন এসেছিল আরকেটি আঘাত। হলি আর্টিজানের সেই সন্ত্রাসী আক্রমণ। আর অত্যন্ত দুঃখজনক, সেই আক্রমণে এই মেট্রোরেলের যারা পরামর্শক, জাপানিজ নাগরিক, সেই জাপানিজ পরামর্শক সাতজন হলি আর্টিজানে মৃত্যুবরণ করেন। আমি তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি।
‘তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি সমবেদনা জানাই সবার পরিবারকে। এরপরেও আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই জাপানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী (শিনজো আবে), যিনিও ঘাতকের বুলেটের আঘাতে শাহাদাত বরণ করেছেন মাত্র কিছুদিন আগে। কারণ এই কাজ তিনি বন্ধ করে দেননি। কিছু দিনের জন্য থেমে ছিল, কিন্তু তার নির্দেশে আবার মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের মেট্রোরেলের কয়েকটি স্টেশনে তাদের নামফলক আমরা রাখব। তাদের নামফলক উত্তরার দিয়াবাড়ীর মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্রে স্মৃতিস্মারক আমরা স্থাপন করেছি। তাদের নামটি যেন স্মরণ থাকে, আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় আরেকটি পালক আজ বাংলাদেশ তথা ঢাকায় আমরা দিতে পারলাম তথা সংযোজিত করতে পারলাম। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। কিছুক্ষণ আগে সেটা উদ্বোধন করেছি। সেটা হচ্ছে মেট্রোরেল, যার কেতাবি নাম হচ্ছে এমআরটি-সিক্স।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজধানীবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার স্বপ্নপূরণের দিন। মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সরকারের মুকুটে যুক্ত হলো আরেকটি হীরন্ময় পালক।’
তিনি বলেন, “মেট্রোরেলে করে প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন, ‘ইয়েস, উই ক্যান।’ বিশ্বব্যাংক অপবাদ দিতে পারে। তারা অপবাদ দিয়েছে। আমরা বীরের জাতি। আমরা চোরের জাতি নই। মনে অনেকের জ্বালা। অন্তর জ্বালায় মরে। বড়ই অন্তর জ্বালা।”
কাদের বলেন, ‘শত রাস্তা, শত সড়ক এক দিনে। কোথাও দেখেছেন? ভূগোলেও নেই।’
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোরেল নিয়ে কিছু বলতে পারে না। দুর্নীতি নিয়ে কিছু বলতে পারে না। এখন বলছে ভাড়া বেশি।’
জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইচিগুচি তামোহিদে বক্তব্যের শুরুতে বাংলায় বলেন, ‘আমি এখানে এসে অনেক খুশি হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকার সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের চলাচলে এই সংযোজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি একটি নিরাপদ পরিবহন, বিশেষ করে নারীদের জন্য।’
ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনিরো বাংলায় বলেন, ‘জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এই সম্পর্ককে আমি আরও গভীর করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে আমি কাজ করে যাব। এই দ্রুতগতির নিরাপদ পরিবহন সেবার মধ্য দিয়ে ঢাকার চেহারা বদলে যাবে।’
এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবে। প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে। এটা বৈদ্যুতিক ট্রেন। এখানে কোনো জীবাশ্ম জ্বালানি বা তরল জ্বালানি ব্যবহার করা হবে না।
‘কাজেই এটা পরিবেশে কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না; বরং পরিবেশ উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কারণ মেট্রো চালু হলে অনেক গাড়ি কমে যাবে। তাই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমে যাবে।’
ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, আরও তিনটি মেট্রোরেলে নির্মাণকাজ বাস্তবায়নাধীন। এমআরটি লাইন-১ বাংলাদেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী এ লাইনের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘এমআরটি লাইন ৬-এর মতিঝিল অংশ আগামী ডিসেম্বর ২০২৩-এ উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করার কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ২০২৫ সালের জুনে এই অংশ চালু করা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সারাদেশে কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থা আয়োজিত প্রযুক্তি সুবিধাপ্রাপ্ত লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা মোকাবেলায় নীতিগত সুপারিশ শীর্ষক জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা একথা বলেন।
সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, সারাদেশে প্রযুক্তিগত সুবিধা নিয়ে বিভিন্ন স্থানে নারীদের সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। এ সকল অপকর্ম প্রতিরোধে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরিচালিত কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাল্য বিয়ের সংজ্ঞা পাল্টে গেছে। এর মূল কারণ হচ্ছে মোবাইল নামক যন্ত্রটি। মোবাইল প্রযুক্তির অপব্যবহারের ফলে ছোট ছোট মেয়েরা প্রেমের ফাঁদে পড়ে নারী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
মেয়েরা অবুঝ এজন্য অভিভাবকদেরকে এ বিষয়ে আরো সচেতন হতে হবে। যাতে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েরা প্রেমের ফাঁদে পড়ে নারী সহিংসতা শিকার না হয়।
উপদেষ্টা বলেন, জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থা, নারী পক্ষ, হিউম্যান রাইটস বাংলাদেশ, সাইবার টিনস ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), ব্র্যাকসহ বাইশটি সংগঠন আজ নারী নির্যাতন প্রতিরোধে একযোগে কাজ করছে। তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
উপদেষ্টা বলেন এই ২২ টি সংগঠনের প্ল্যাটফর্মে যে সমস্ত শিক্ষিত তরুন যুবক যুবতীরা আছেন তাদেরকে টেকনোলজির মাধ্যমে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন ব্যক্তিগত এবং সামাজিক ও পরিবারের সচেতনতাই পারে একটি মেয়েকে নির্যাতন থেকে রক্ষা করতে। এজন্য সবাইকে আরো সচেতন হতে হবে।
আগারগাঁও স্টেশনে নেমে গাড়িতে নিজ বাসভবন গণভবনের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ট্রেনটি ২টা ১১ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশনে পৌঁছায়।
প্রধানমন্ত্রী ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে সব বগি ঘুরে দেখেন।
ট্রেনে যাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী ১টা ৩৪ মিনিটে টিকিট কাটেন। নিজে অর্থ পরিশোধ করেন। ওই সময় শেখ রেহানাও তার টিকিট কাটেন। ওই সময় তাদের হাতে মেট্রোরেলের কার্ড দেয়া হয়। সেটি তুলে ধরে ছবি তোলেন তারা।
মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্টরা। বৃক্ষরোপণ শেষে মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যরা।
মেট্রো ট্রেনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফর করতে দিয়াবাড়ীর তৃতীয় তলার প্ল্যাটফর্মে সফরসঙ্গীরা এসে উপস্থিত হচ্ছেন একে একে। প্রধানমন্ত্রীর সহযাত্রী হিসেবে থাকবেন মন্ত্রী, এমপি, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন ও মুক্তিযোদ্ধারা।
ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড গঠনের মধ্য দিয়ে ছয়টি মেট্রোরেল নির্মাণের কথা আবারও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘চারটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়নাধীন এবং দুটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের জন্য এর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে।’
দেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা যাতে সহজে মেট্রোরেল ব্যবহার করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘বয়স্ক যাত্রীগণ, তাদের সুবিধার জন্য সংরক্ষিত আসন থাকবে। প্রতিটি মেট্রো ট্রেনে একটি স্বতন্ত্র মহিলা কোচ থাকবে, সেখানে মহিলারা চড়তে পারবে, যেতে পারবে। মহিলা যাত্রীদের জন্য পৃথক ওয়াশরুমের ব্যবস্থা থাকবে। তার সঙ্গে শিশুদের পরিচর্যার স্থান থাকবে।’
মেট্রোরেলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা যেন বিনা খরচে ভ্রমণ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছেও বলেও জানান শেখ হাসিনা।
মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরও চারটি মাইলফলক স্পর্শ করল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। এই প্রথম বাংলাদেশ বৈদ্যুতিক ট্রেনের যুগে প্রবেশ করল। মেট্রোরেল দূর নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। রিমোট কন্ট্রোল দ্বারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে এটা পরিচালিত করা হবে। তার ফলে আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছি, এটি তারই একটি অংশ হিসেবেই কাজ করবে। তার ন্যূনতম মাত্রা সংযোজিত হলো। বাংলাদেশ দ্রুতগতির ট্রেনের যুদে পদার্পণ করল। এই মেট্রোরেলে সর্বোচ্চ গতি হবে (প্রতি ঘণ্টায়) ১১০ কিলোমিটার।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ যখন আমরা শুরু করেছি, তখন এসেছিল আরকেটি আঘাত। হলি আর্টিজানের সেই সন্ত্রাসী আক্রমণ। আর অত্যন্ত দুঃখজনক, সেই আক্রমণে এই মেট্রোরেলের যারা পরামর্শক, জাপানিজ নাগরিক, সেই জাপানিজ পরামর্শক সাতজন হলি আর্টিজানে মৃত্যুবরণ করেন। আমি তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি।
‘তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি সমবেদনা জানাই সবার পরিবারকে। এরপরেও আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই জাপানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী (শিনজো আবে), যিনিও ঘাতকের বুলেটের আঘাতে শাহাদাত বরণ করেছেন মাত্র কিছুদিন আগে। কারণ এই কাজ তিনি বন্ধ করে দেননি। কিছু দিনের জন্য থেমে ছিল, কিন্তু তার নির্দেশে আবার মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের মেট্রোরেলের কয়েকটি স্টেশনে তাদের নামফলক আমরা রাখব। তাদের নামফলক উত্তরার দিয়াবাড়ীর মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্রে স্মৃতিস্মারক আমরা স্থাপন করেছি। তাদের নামটি যেন স্মরণ থাকে, আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় আরেকটি পালক আজ বাংলাদেশ তথা ঢাকায় আমরা দিতে পারলাম তথা সংযোজিত করতে পারলাম। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। কিছুক্ষণ আগে সেটা উদ্বোধন করেছি। সেটা হচ্ছে মেট্রোরেল, যার কেতাবি নাম হচ্ছে এমআরটি-সিক্স।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজধানীবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার স্বপ্নপূরণের দিন। মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সরকারের মুকুটে যুক্ত হলো আরেকটি হীরন্ময় পালক।’
তিনি বলেন, “মেট্রোরেলে করে প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন, ‘ইয়েস, উই ক্যান।’ বিশ্বব্যাংক অপবাদ দিতে পারে। তারা অপবাদ দিয়েছে। আমরা বীরের জাতি। আমরা চোরের জাতি নই। মনে অনেকের জ্বালা। অন্তর জ্বালায় মরে। বড়ই অন্তর জ্বালা।”
কাদের বলেন, ‘শত রাস্তা, শত সড়ক এক দিনে। কোথাও দেখেছেন? ভূগোলেও নেই।’
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোরেল নিয়ে কিছু বলতে পারে না। দুর্নীতি নিয়ে কিছু বলতে পারে না। এখন বলছে ভাড়া বেশি।’
জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইচিগুচি তামোহিদে বক্তব্যের শুরুতে বাংলায় বলেন, ‘আমি এখানে এসে অনেক খুশি হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকার সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের চলাচলে এই সংযোজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি একটি নিরাপদ পরিবহন, বিশেষ করে নারীদের জন্য।’
ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনিরো বাংলায় বলেন, ‘জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এই সম্পর্ককে আমি আরও গভীর করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে আমি কাজ করে যাব। এই দ্রুতগতির নিরাপদ পরিবহন সেবার মধ্য দিয়ে ঢাকার চেহারা বদলে যাবে।’
এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবে। প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে। এটা বৈদ্যুতিক ট্রেন। এখানে কোনো জীবাশ্ম জ্বালানি বা তরল জ্বালানি ব্যবহার করা হবে না।
‘কাজেই এটা পরিবেশে কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না; বরং পরিবেশ উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কারণ মেট্রো চালু হলে অনেক গাড়ি কমে যাবে। তাই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমে যাবে।’
ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, আরও তিনটি মেট্রোরেলে নির্মাণকাজ বাস্তবায়নাধীন। এমআরটি লাইন-১ বাংলাদেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী এ লাইনের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘এমআরটি লাইন ৬-এর মতিঝিল অংশ আগামী ডিসেম্বর ২০২৩-এ উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করার কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ২০২৫ সালের জুনে এই অংশ চালু করা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
ইলিশের উৎপাদন একদিকে কমছে, এতে প্রাকৃতিক কারণও রয়েছে। নদীর নাব্যতা কমে যাচ্ছে, মেঘনা নদীর অববাহিকায় দূষণের মাত্রা বেড়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে বৃষ্টি না হলে ইলিশ মাছ ডিম পাড়তে পারে না। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকৃতিক কারণ ও তথাকথিত উন্নয়নের কারণে নদী ভরাট ও দখল হয়ে যাচ্ছে। এমন মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার। বরিশাল ক্লাব প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত উপকূলীয় এলাকার মহিষের চারণভূমি ও উন্নয়নের সমস্যা এবং সাধন শীর্ষক জাতীয় কর্মশালা-২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ইলিশ একটি মাইগ্রেটরি মাছ এটি সমুদ্র থেকে নদীতে আসে এবং আবার ফিরে যেতে হয়। কিন্তু বর্তমানে তা হচ্ছে না। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ঝাটকা নিধন। কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী অভিযান চালালেও এটি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা যায়নি। এছাড়া অবৈধ জালের ব্যবহার ইলিশের প্রাপ্যতা কমাচ্ছে। তবে এসবের বিরুদ্ধে আমরা কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই ইলিশের দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।
তিনি জানান,খুব শীঘ্রই ঢাকায় একটি মিটিং অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে নদী থেকে মাছ ধরে হাত বদলের সিন্ডিকেট বন্ধ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। এ উদ্যোগের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ সরাসরি বাজারে মাছ পাবে এবং সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে আসবে।
ফরিদা আক্তার বলেন, উপকূল এলাকায় মহিষের চারণভূমি সংকুচিত হয়ে গেছে। আমরা গবেষণায় দেখেছি এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে। বাড়িঘর তৈরি হচ্ছে, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও নির্মিত হচ্ছে। আমাদের দেশে গরু, ছাগল ও মহিষ পালন অন্তত মানুষের খাদ্য ও জীবন রক্ষার জন্য জরুরি। চারণভূমি বিষয়ে আমরা দেখছি যে অনেক কিছু পরিকল্পনা বিহীনভাবে তৈরি হচ্ছে। এতে মহিষের মতো গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তবে সঠিক নীতি ও ব্যবস্থা নিলে এটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন,পিকেএসএফ উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি সাদেক আহমেদ, বরিশাল বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, জিজেইউএস নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন। সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর ড. ওমর ফারুক, প্রেসিডেন্ট।
বক্তারা বলেন, নদী ও সমুদ্রের টেকসই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। মৎস্যজীবী, প্রশাসন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান একত্রিতভাবে কাজ করলে মাছ চাষ ও সংরক্ষণ কার্যকর হবে।
এছাড়া তারা বলেন, উপকূলীয় এলাকায় মহিষ পালনের সম্ভাবনা অনেক, তবে জলবায়ু পরিবর্তন, চারণভূমির অভাব ও বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা খাতটির উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে। গবেষণা ও আধুনিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মহিষ পালনকে লাভজনক ও টেকসই খাতে রূপান্তর করা সম্ভব।
আগারগাঁও স্টেশনে নেমে গাড়িতে নিজ বাসভবন গণভবনের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ট্রেনটি ২টা ১১ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশনে পৌঁছায়।
প্রধানমন্ত্রী ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে সব বগি ঘুরে দেখেন।
ট্রেনে যাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী ১টা ৩৪ মিনিটে টিকিট কাটেন। নিজে অর্থ পরিশোধ করেন। ওই সময় শেখ রেহানাও তার টিকিট কাটেন। ওই সময় তাদের হাতে মেট্রোরেলের কার্ড দেয়া হয়। সেটি তুলে ধরে ছবি তোলেন তারা।
মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্টরা। বৃক্ষরোপণ শেষে মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যরা।
মেট্রো ট্রেনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফর করতে দিয়াবাড়ীর তৃতীয় তলার প্ল্যাটফর্মে সফরসঙ্গীরা এসে উপস্থিত হচ্ছেন একে একে। প্রধানমন্ত্রীর সহযাত্রী হিসেবে থাকবেন মন্ত্রী, এমপি, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন ও মুক্তিযোদ্ধারা।
ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড গঠনের মধ্য দিয়ে ছয়টি মেট্রোরেল নির্মাণের কথা আবারও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘চারটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়নাধীন এবং দুটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের জন্য এর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে।’
দেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা যাতে সহজে মেট্রোরেল ব্যবহার করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘বয়স্ক যাত্রীগণ, তাদের সুবিধার জন্য সংরক্ষিত আসন থাকবে। প্রতিটি মেট্রো ট্রেনে একটি স্বতন্ত্র মহিলা কোচ থাকবে, সেখানে মহিলারা চড়তে পারবে, যেতে পারবে। মহিলা যাত্রীদের জন্য পৃথক ওয়াশরুমের ব্যবস্থা থাকবে। তার সঙ্গে শিশুদের পরিচর্যার স্থান থাকবে।’
মেট্রোরেলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা যেন বিনা খরচে ভ্রমণ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছেও বলেও জানান শেখ হাসিনা।
মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরও চারটি মাইলফলক স্পর্শ করল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। এই প্রথম বাংলাদেশ বৈদ্যুতিক ট্রেনের যুগে প্রবেশ করল। মেট্রোরেল দূর নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। রিমোট কন্ট্রোল দ্বারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে এটা পরিচালিত করা হবে। তার ফলে আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছি, এটি তারই একটি অংশ হিসেবেই কাজ করবে। তার ন্যূনতম মাত্রা সংযোজিত হলো। বাংলাদেশ দ্রুতগতির ট্রেনের যুদে পদার্পণ করল। এই মেট্রোরেলে সর্বোচ্চ গতি হবে (প্রতি ঘণ্টায়) ১১০ কিলোমিটার।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ যখন আমরা শুরু করেছি, তখন এসেছিল আরকেটি আঘাত। হলি আর্টিজানের সেই সন্ত্রাসী আক্রমণ। আর অত্যন্ত দুঃখজনক, সেই আক্রমণে এই মেট্রোরেলের যারা পরামর্শক, জাপানিজ নাগরিক, সেই জাপানিজ পরামর্শক সাতজন হলি আর্টিজানে মৃত্যুবরণ করেন। আমি তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি।
‘তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি সমবেদনা জানাই সবার পরিবারকে। এরপরেও আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই জাপানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী (শিনজো আবে), যিনিও ঘাতকের বুলেটের আঘাতে শাহাদাত বরণ করেছেন মাত্র কিছুদিন আগে। কারণ এই কাজ তিনি বন্ধ করে দেননি। কিছু দিনের জন্য থেমে ছিল, কিন্তু তার নির্দেশে আবার মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের মেট্রোরেলের কয়েকটি স্টেশনে তাদের নামফলক আমরা রাখব। তাদের নামফলক উত্তরার দিয়াবাড়ীর মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্রে স্মৃতিস্মারক আমরা স্থাপন করেছি। তাদের নামটি যেন স্মরণ থাকে, আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় আরেকটি পালক আজ বাংলাদেশ তথা ঢাকায় আমরা দিতে পারলাম তথা সংযোজিত করতে পারলাম। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। কিছুক্ষণ আগে সেটা উদ্বোধন করেছি। সেটা হচ্ছে মেট্রোরেল, যার কেতাবি নাম হচ্ছে এমআরটি-সিক্স।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজধানীবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার স্বপ্নপূরণের দিন। মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সরকারের মুকুটে যুক্ত হলো আরেকটি হীরন্ময় পালক।’
তিনি বলেন, “মেট্রোরেলে করে প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন, ‘ইয়েস, উই ক্যান।’ বিশ্বব্যাংক অপবাদ দিতে পারে। তারা অপবাদ দিয়েছে। আমরা বীরের জাতি। আমরা চোরের জাতি নই। মনে অনেকের জ্বালা। অন্তর জ্বালায় মরে। বড়ই অন্তর জ্বালা।”
কাদের বলেন, ‘শত রাস্তা, শত সড়ক এক দিনে। কোথাও দেখেছেন? ভূগোলেও নেই।’
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোরেল নিয়ে কিছু বলতে পারে না। দুর্নীতি নিয়ে কিছু বলতে পারে না। এখন বলছে ভাড়া বেশি।’
জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইচিগুচি তামোহিদে বক্তব্যের শুরুতে বাংলায় বলেন, ‘আমি এখানে এসে অনেক খুশি হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকার সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের চলাচলে এই সংযোজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি একটি নিরাপদ পরিবহন, বিশেষ করে নারীদের জন্য।’
ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনিরো বাংলায় বলেন, ‘জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এই সম্পর্ককে আমি আরও গভীর করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে আমি কাজ করে যাব। এই দ্রুতগতির নিরাপদ পরিবহন সেবার মধ্য দিয়ে ঢাকার চেহারা বদলে যাবে।’
এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবে। প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে। এটা বৈদ্যুতিক ট্রেন। এখানে কোনো জীবাশ্ম জ্বালানি বা তরল জ্বালানি ব্যবহার করা হবে না।
‘কাজেই এটা পরিবেশে কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না; বরং পরিবেশ উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কারণ মেট্রো চালু হলে অনেক গাড়ি কমে যাবে। তাই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমে যাবে।’
ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, আরও তিনটি মেট্রোরেলে নির্মাণকাজ বাস্তবায়নাধীন। এমআরটি লাইন-১ বাংলাদেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী এ লাইনের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘এমআরটি লাইন ৬-এর মতিঝিল অংশ আগামী ডিসেম্বর ২০২৩-এ উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করার কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ২০২৫ সালের জুনে এই অংশ চালু করা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান এর সভাপতিত্বে আজ রাজধানীর একটি হোটেলে আন্তর্জাতিক শ্রম মান বিষয়ক ত্রিপক্ষীয় কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় শ্রম সচিব বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ৩৬টি কনভেনশন ও একটি প্রটোকল অনুমোদন করেছে। আইএলও সংবিধান অনুযায়ী, অনুমোদিত ও অননুমোদিত উভয় ধরনের সনদের প্রয়োগ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা সকল সদস্য রাষ্ট্রের জন্য বাধ্যতামূলক। এই কমিটি আইএলও কনভেনশন ১৪৪-এর বাধ্যবাধকতার আলোকে বাংলাদেশ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদনে মালিকপক্ষ ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর মতামত, পরামর্শ ও সুপারিশ নিশ্চিত করবে।
সচিব আরও উল্লেখ করেন যে, আইএলও এর ১১টি কনভেনশন (C-01, C-14, C-19, C-81, C-89, C-100, C-106, C-111, C-118, C-138, MLC-2006) নিয়ে আলোচনা করা হয়। এগুলোর মধ্যে C-81 (শ্রম পরিদর্শন), C-100 (নারী ও পুরুষের সমান পারিশ্রমিক), C-111 (কর্মসংস্থান ও পেশায় বৈষম্য) এবং C-138 (ন্যূনতম কাজের বয়স) বিষয়ক চূড়ান্ত প্রতিবেদন আইএলও সংবিধানের ২২ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাধ্যতামূলকভাবে খুব দ্রুত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার জেনেভাস্থ প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করা হবে।
সভায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার প্রতিনিধি নিরান রাজমুঠান, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের এবং শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, ইমপ্লোয়ার্স ফেডারেশন এর প্রতিনিধি , ইন্ডাস্ট্রি অল বাংলাদেশ এর প্রতিনিধি , বেপজা প্রতিনিধি , NCCWE এর প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
আগারগাঁও স্টেশনে নেমে গাড়িতে নিজ বাসভবন গণভবনের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ট্রেনটি ২টা ১১ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশনে পৌঁছায়।
প্রধানমন্ত্রী ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে সব বগি ঘুরে দেখেন।
ট্রেনে যাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী ১টা ৩৪ মিনিটে টিকিট কাটেন। নিজে অর্থ পরিশোধ করেন। ওই সময় শেখ রেহানাও তার টিকিট কাটেন। ওই সময় তাদের হাতে মেট্রোরেলের কার্ড দেয়া হয়। সেটি তুলে ধরে ছবি তোলেন তারা।
মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্টরা। বৃক্ষরোপণ শেষে মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যরা।
মেট্রো ট্রেনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফর করতে দিয়াবাড়ীর তৃতীয় তলার প্ল্যাটফর্মে সফরসঙ্গীরা এসে উপস্থিত হচ্ছেন একে একে। প্রধানমন্ত্রীর সহযাত্রী হিসেবে থাকবেন মন্ত্রী, এমপি, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন ও মুক্তিযোদ্ধারা।
ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড গঠনের মধ্য দিয়ে ছয়টি মেট্রোরেল নির্মাণের কথা আবারও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘চারটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়নাধীন এবং দুটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের জন্য এর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে।’
দেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা যাতে সহজে মেট্রোরেল ব্যবহার করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘বয়স্ক যাত্রীগণ, তাদের সুবিধার জন্য সংরক্ষিত আসন থাকবে। প্রতিটি মেট্রো ট্রেনে একটি স্বতন্ত্র মহিলা কোচ থাকবে, সেখানে মহিলারা চড়তে পারবে, যেতে পারবে। মহিলা যাত্রীদের জন্য পৃথক ওয়াশরুমের ব্যবস্থা থাকবে। তার সঙ্গে শিশুদের পরিচর্যার স্থান থাকবে।’
মেট্রোরেলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা যেন বিনা খরচে ভ্রমণ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছেও বলেও জানান শেখ হাসিনা।
মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরও চারটি মাইলফলক স্পর্শ করল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। এই প্রথম বাংলাদেশ বৈদ্যুতিক ট্রেনের যুগে প্রবেশ করল। মেট্রোরেল দূর নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। রিমোট কন্ট্রোল দ্বারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে এটা পরিচালিত করা হবে। তার ফলে আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছি, এটি তারই একটি অংশ হিসেবেই কাজ করবে। তার ন্যূনতম মাত্রা সংযোজিত হলো। বাংলাদেশ দ্রুতগতির ট্রেনের যুদে পদার্পণ করল। এই মেট্রোরেলে সর্বোচ্চ গতি হবে (প্রতি ঘণ্টায়) ১১০ কিলোমিটার।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ যখন আমরা শুরু করেছি, তখন এসেছিল আরকেটি আঘাত। হলি আর্টিজানের সেই সন্ত্রাসী আক্রমণ। আর অত্যন্ত দুঃখজনক, সেই আক্রমণে এই মেট্রোরেলের যারা পরামর্শক, জাপানিজ নাগরিক, সেই জাপানিজ পরামর্শক সাতজন হলি আর্টিজানে মৃত্যুবরণ করেন। আমি তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি।
‘তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি সমবেদনা জানাই সবার পরিবারকে। এরপরেও আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই জাপানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী (শিনজো আবে), যিনিও ঘাতকের বুলেটের আঘাতে শাহাদাত বরণ করেছেন মাত্র কিছুদিন আগে। কারণ এই কাজ তিনি বন্ধ করে দেননি। কিছু দিনের জন্য থেমে ছিল, কিন্তু তার নির্দেশে আবার মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের মেট্রোরেলের কয়েকটি স্টেশনে তাদের নামফলক আমরা রাখব। তাদের নামফলক উত্তরার দিয়াবাড়ীর মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্রে স্মৃতিস্মারক আমরা স্থাপন করেছি। তাদের নামটি যেন স্মরণ থাকে, আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় আরেকটি পালক আজ বাংলাদেশ তথা ঢাকায় আমরা দিতে পারলাম তথা সংযোজিত করতে পারলাম। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। কিছুক্ষণ আগে সেটা উদ্বোধন করেছি। সেটা হচ্ছে মেট্রোরেল, যার কেতাবি নাম হচ্ছে এমআরটি-সিক্স।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজধানীবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার স্বপ্নপূরণের দিন। মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সরকারের মুকুটে যুক্ত হলো আরেকটি হীরন্ময় পালক।’
তিনি বলেন, “মেট্রোরেলে করে প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন, ‘ইয়েস, উই ক্যান।’ বিশ্বব্যাংক অপবাদ দিতে পারে। তারা অপবাদ দিয়েছে। আমরা বীরের জাতি। আমরা চোরের জাতি নই। মনে অনেকের জ্বালা। অন্তর জ্বালায় মরে। বড়ই অন্তর জ্বালা।”
কাদের বলেন, ‘শত রাস্তা, শত সড়ক এক দিনে। কোথাও দেখেছেন? ভূগোলেও নেই।’
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোরেল নিয়ে কিছু বলতে পারে না। দুর্নীতি নিয়ে কিছু বলতে পারে না। এখন বলছে ভাড়া বেশি।’
জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইচিগুচি তামোহিদে বক্তব্যের শুরুতে বাংলায় বলেন, ‘আমি এখানে এসে অনেক খুশি হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকার সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের চলাচলে এই সংযোজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি একটি নিরাপদ পরিবহন, বিশেষ করে নারীদের জন্য।’
ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনিরো বাংলায় বলেন, ‘জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এই সম্পর্ককে আমি আরও গভীর করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে আমি কাজ করে যাব। এই দ্রুতগতির নিরাপদ পরিবহন সেবার মধ্য দিয়ে ঢাকার চেহারা বদলে যাবে।’
এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবে। প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে। এটা বৈদ্যুতিক ট্রেন। এখানে কোনো জীবাশ্ম জ্বালানি বা তরল জ্বালানি ব্যবহার করা হবে না।
‘কাজেই এটা পরিবেশে কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না; বরং পরিবেশ উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কারণ মেট্রো চালু হলে অনেক গাড়ি কমে যাবে। তাই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমে যাবে।’
ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, আরও তিনটি মেট্রোরেলে নির্মাণকাজ বাস্তবায়নাধীন। এমআরটি লাইন-১ বাংলাদেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী এ লাইনের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘এমআরটি লাইন ৬-এর মতিঝিল অংশ আগামী ডিসেম্বর ২০২৩-এ উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করার কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ২০২৫ সালের জুনে এই অংশ চালু করা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, গবাদিপশু পালন প্রোটিন ঘাটতি নিরসন, মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষা এবং জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য। অথচ অপরিকল্পিত উন্নয়নের কারণে চারণভূমির হ্রাস হচ্ছে, ফলে মহিষের মতো মূল্যবান সম্পদ ক্ষতির মুখে পড়ছে।
আজ সকালে বরিশাল ক্লাবে অনুষ্ঠিত “উপকূলীয় এলাকার মহিষের চারণভূমি ও উন্নয়নের সমস্যা এবং সমাধান” শীর্ষক জাতীয় কর্মশালা ২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালার আয়োজন করে বাংলাদেশ বাফেলো এসোসিয়েশন, গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা (জিজিইউএস) এবং কোস্টাল ভেট সোসাইটি।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, সঠিক নীতি নির্ধারণ ও আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের মাধ্যমে এখনো অনেক চরাঞ্চল রক্ষা করা সম্ভব। মহিষ পালন বাড়াতে পারলে জাতীয়ভাবে মাংস ও দুধ উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা যাবে।
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মহিষের চারণভূমি দ্রুত কমে যাচ্ছে। অপরিকল্পিত বাড়িঘর নির্মাণ এবং এমনকি সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুর উপজেলায় বৃহৎ গরুর বাথান ভরাট করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিও উঠছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি প্রশ্ন তোলেন, শুধু একটি ডিগ্রি অর্জনের উদ্দেশ্যে গরুর বাথান ধ্বংস করা দেশের সামগ্রিক কল্যাণে কতটা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে? তিনি আরও বলেন, মহিষের স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিষয় বিবেচনায় উপকূলীয় এলাকায় স্পিডবোটভিত্তিক ভেটেরিনারি ক্লিনিক স্থাপন করা প্রয়োজন।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, বর্তমানে গবাদিপশুর চারণভূমি কমে যাওয়া এবং খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মহিষসহ অন্যান্য গবাদিপশুর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্থানীয় পর্যায়ে কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ ও টেকসই চারণভূমি উন্নয়ন অপরিহার্য। পাশাপাশি মহিষের উৎপাদন বৃদ্ধি ও জাতীয়ভাবে মাংস ও দুধ উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানান তারা।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ বাফেলো এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. ওমর ফারুক।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) লুসিকান্ত হাজং, পিকেএসএফ-এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি সাদেক আহমেদ, জিজিইউএস-এর নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন। এছাড়া সরকারি ও বেসরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, স্হানীয় খামারীরা কর্মশালায় অংশ গ্রহণ করেন।
আগারগাঁও স্টেশনে নেমে গাড়িতে নিজ বাসভবন গণভবনের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ট্রেনটি ২টা ১১ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশনে পৌঁছায়।
প্রধানমন্ত্রী ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে সব বগি ঘুরে দেখেন।
ট্রেনে যাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী ১টা ৩৪ মিনিটে টিকিট কাটেন। নিজে অর্থ পরিশোধ করেন। ওই সময় শেখ রেহানাও তার টিকিট কাটেন। ওই সময় তাদের হাতে মেট্রোরেলের কার্ড দেয়া হয়। সেটি তুলে ধরে ছবি তোলেন তারা।
মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্টরা। বৃক্ষরোপণ শেষে মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যরা।
মেট্রো ট্রেনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফর করতে দিয়াবাড়ীর তৃতীয় তলার প্ল্যাটফর্মে সফরসঙ্গীরা এসে উপস্থিত হচ্ছেন একে একে। প্রধানমন্ত্রীর সহযাত্রী হিসেবে থাকবেন মন্ত্রী, এমপি, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন ও মুক্তিযোদ্ধারা।
ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড গঠনের মধ্য দিয়ে ছয়টি মেট্রোরেল নির্মাণের কথা আবারও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘চারটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়নাধীন এবং দুটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের জন্য এর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে।’
দেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা যাতে সহজে মেট্রোরেল ব্যবহার করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘বয়স্ক যাত্রীগণ, তাদের সুবিধার জন্য সংরক্ষিত আসন থাকবে। প্রতিটি মেট্রো ট্রেনে একটি স্বতন্ত্র মহিলা কোচ থাকবে, সেখানে মহিলারা চড়তে পারবে, যেতে পারবে। মহিলা যাত্রীদের জন্য পৃথক ওয়াশরুমের ব্যবস্থা থাকবে। তার সঙ্গে শিশুদের পরিচর্যার স্থান থাকবে।’
মেট্রোরেলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা যেন বিনা খরচে ভ্রমণ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছেও বলেও জানান শেখ হাসিনা।
মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরও চারটি মাইলফলক স্পর্শ করল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। এই প্রথম বাংলাদেশ বৈদ্যুতিক ট্রেনের যুগে প্রবেশ করল। মেট্রোরেল দূর নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। রিমোট কন্ট্রোল দ্বারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে এটা পরিচালিত করা হবে। তার ফলে আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছি, এটি তারই একটি অংশ হিসেবেই কাজ করবে। তার ন্যূনতম মাত্রা সংযোজিত হলো। বাংলাদেশ দ্রুতগতির ট্রেনের যুদে পদার্পণ করল। এই মেট্রোরেলে সর্বোচ্চ গতি হবে (প্রতি ঘণ্টায়) ১১০ কিলোমিটার।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ যখন আমরা শুরু করেছি, তখন এসেছিল আরকেটি আঘাত। হলি আর্টিজানের সেই সন্ত্রাসী আক্রমণ। আর অত্যন্ত দুঃখজনক, সেই আক্রমণে এই মেট্রোরেলের যারা পরামর্শক, জাপানিজ নাগরিক, সেই জাপানিজ পরামর্শক সাতজন হলি আর্টিজানে মৃত্যুবরণ করেন। আমি তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি।
‘তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি সমবেদনা জানাই সবার পরিবারকে। এরপরেও আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই জাপানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী (শিনজো আবে), যিনিও ঘাতকের বুলেটের আঘাতে শাহাদাত বরণ করেছেন মাত্র কিছুদিন আগে। কারণ এই কাজ তিনি বন্ধ করে দেননি। কিছু দিনের জন্য থেমে ছিল, কিন্তু তার নির্দেশে আবার মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের মেট্রোরেলের কয়েকটি স্টেশনে তাদের নামফলক আমরা রাখব। তাদের নামফলক উত্তরার দিয়াবাড়ীর মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্রে স্মৃতিস্মারক আমরা স্থাপন করেছি। তাদের নামটি যেন স্মরণ থাকে, আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় আরেকটি পালক আজ বাংলাদেশ তথা ঢাকায় আমরা দিতে পারলাম তথা সংযোজিত করতে পারলাম। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। কিছুক্ষণ আগে সেটা উদ্বোধন করেছি। সেটা হচ্ছে মেট্রোরেল, যার কেতাবি নাম হচ্ছে এমআরটি-সিক্স।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজধানীবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার স্বপ্নপূরণের দিন। মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সরকারের মুকুটে যুক্ত হলো আরেকটি হীরন্ময় পালক।’
তিনি বলেন, “মেট্রোরেলে করে প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন, ‘ইয়েস, উই ক্যান।’ বিশ্বব্যাংক অপবাদ দিতে পারে। তারা অপবাদ দিয়েছে। আমরা বীরের জাতি। আমরা চোরের জাতি নই। মনে অনেকের জ্বালা। অন্তর জ্বালায় মরে। বড়ই অন্তর জ্বালা।”
কাদের বলেন, ‘শত রাস্তা, শত সড়ক এক দিনে। কোথাও দেখেছেন? ভূগোলেও নেই।’
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোরেল নিয়ে কিছু বলতে পারে না। দুর্নীতি নিয়ে কিছু বলতে পারে না। এখন বলছে ভাড়া বেশি।’
জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইচিগুচি তামোহিদে বক্তব্যের শুরুতে বাংলায় বলেন, ‘আমি এখানে এসে অনেক খুশি হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকার সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের চলাচলে এই সংযোজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি একটি নিরাপদ পরিবহন, বিশেষ করে নারীদের জন্য।’
ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনিরো বাংলায় বলেন, ‘জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এই সম্পর্ককে আমি আরও গভীর করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে আমি কাজ করে যাব। এই দ্রুতগতির নিরাপদ পরিবহন সেবার মধ্য দিয়ে ঢাকার চেহারা বদলে যাবে।’
এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবে। প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে। এটা বৈদ্যুতিক ট্রেন। এখানে কোনো জীবাশ্ম জ্বালানি বা তরল জ্বালানি ব্যবহার করা হবে না।
‘কাজেই এটা পরিবেশে কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না; বরং পরিবেশ উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কারণ মেট্রো চালু হলে অনেক গাড়ি কমে যাবে। তাই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমে যাবে।’
ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, আরও তিনটি মেট্রোরেলে নির্মাণকাজ বাস্তবায়নাধীন। এমআরটি লাইন-১ বাংলাদেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী এ লাইনের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘এমআরটি লাইন ৬-এর মতিঝিল অংশ আগামী ডিসেম্বর ২০২৩-এ উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করার কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ২০২৫ সালের জুনে এই অংশ চালু করা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
মন্তব্য