মেট্রোরেলের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ী প্রান্তে বুধবার বেলা ১১টা ৪ মিনিটে উদ্বোধনস্থলে তিনি এই ফলক উন্মোচন করেন।
ওই সময় সরকারপ্রধানের সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের পর সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
বক্তব্যের পর কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষে সফরসঙ্গীদের নিয়ে মেট্রো ট্রেনে চড়েন শেখ হাসিনা।
আগারগাঁও স্টেশনে নেমে গাড়িতে নিজ বাসভবন গণভবনের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ট্রেনটি ২টা ১১ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশনে পৌঁছায়।
প্রধানমন্ত্রী ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে সব বগি ঘুরে দেখেন।
ট্রেনে যাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী ১টা ৩৪ মিনিটে টিকিট কাটেন। নিজে অর্থ পরিশোধ করেন। ওই সময় শেখ রেহানাও তার টিকিট কাটেন। ওই সময় তাদের হাতে মেট্রোরেলের কার্ড দেয়া হয়। সেটি তুলে ধরে ছবি তোলেন তারা।
মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্টরা। বৃক্ষরোপণ শেষে মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যরা।
মেট্রো ট্রেনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফর করতে দিয়াবাড়ীর তৃতীয় তলার প্ল্যাটফর্মে সফরসঙ্গীরা এসে উপস্থিত হচ্ছেন একে একে। প্রধানমন্ত্রীর সহযাত্রী হিসেবে থাকবেন মন্ত্রী, এমপি, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন ও মুক্তিযোদ্ধারা।
ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড গঠনের মধ্য দিয়ে ছয়টি মেট্রোরেল নির্মাণের কথা আবারও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘চারটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়নাধীন এবং দুটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের জন্য এর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে।’
দেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা যাতে সহজে মেট্রোরেল ব্যবহার করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘বয়স্ক যাত্রীগণ, তাদের সুবিধার জন্য সংরক্ষিত আসন থাকবে। প্রতিটি মেট্রো ট্রেনে একটি স্বতন্ত্র মহিলা কোচ থাকবে, সেখানে মহিলারা চড়তে পারবে, যেতে পারবে। মহিলা যাত্রীদের জন্য পৃথক ওয়াশরুমের ব্যবস্থা থাকবে। তার সঙ্গে শিশুদের পরিচর্যার স্থান থাকবে।’
মেট্রোরেলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা যেন বিনা খরচে ভ্রমণ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছেও বলেও জানান শেখ হাসিনা।
মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরও চারটি মাইলফলক স্পর্শ করল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। এই প্রথম বাংলাদেশ বৈদ্যুতিক ট্রেনের যুগে প্রবেশ করল। মেট্রোরেল দূর নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। রিমোট কন্ট্রোল দ্বারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে এটা পরিচালিত করা হবে। তার ফলে আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছি, এটি তারই একটি অংশ হিসেবেই কাজ করবে। তার ন্যূনতম মাত্রা সংযোজিত হলো। বাংলাদেশ দ্রুতগতির ট্রেনের যুদে পদার্পণ করল। এই মেট্রোরেলে সর্বোচ্চ গতি হবে (প্রতি ঘণ্টায়) ১১০ কিলোমিটার।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ যখন আমরা শুরু করেছি, তখন এসেছিল আরকেটি আঘাত। হলি আর্টিজানের সেই সন্ত্রাসী আক্রমণ। আর অত্যন্ত দুঃখজনক, সেই আক্রমণে এই মেট্রোরেলের যারা পরামর্শক, জাপানিজ নাগরিক, সেই জাপানিজ পরামর্শক সাতজন হলি আর্টিজানে মৃত্যুবরণ করেন। আমি তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি।
‘তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি সমবেদনা জানাই সবার পরিবারকে। এরপরেও আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই জাপানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী (শিনজো আবে), যিনিও ঘাতকের বুলেটের আঘাতে শাহাদাত বরণ করেছেন মাত্র কিছুদিন আগে। কারণ এই কাজ তিনি বন্ধ করে দেননি। কিছু দিনের জন্য থেমে ছিল, কিন্তু তার নির্দেশে আবার মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের মেট্রোরেলের কয়েকটি স্টেশনে তাদের নামফলক আমরা রাখব। তাদের নামফলক উত্তরার দিয়াবাড়ীর মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্রে স্মৃতিস্মারক আমরা স্থাপন করেছি। তাদের নামটি যেন স্মরণ থাকে, আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় আরেকটি পালক আজ বাংলাদেশ তথা ঢাকায় আমরা দিতে পারলাম তথা সংযোজিত করতে পারলাম। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। কিছুক্ষণ আগে সেটা উদ্বোধন করেছি। সেটা হচ্ছে মেট্রোরেল, যার কেতাবি নাম হচ্ছে এমআরটি-সিক্স।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজধানীবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার স্বপ্নপূরণের দিন। মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সরকারের মুকুটে যুক্ত হলো আরেকটি হীরন্ময় পালক।’
তিনি বলেন, “মেট্রোরেলে করে প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন, ‘ইয়েস, উই ক্যান।’ বিশ্বব্যাংক অপবাদ দিতে পারে। তারা অপবাদ দিয়েছে। আমরা বীরের জাতি। আমরা চোরের জাতি নই। মনে অনেকের জ্বালা। অন্তর জ্বালায় মরে। বড়ই অন্তর জ্বালা।”
কাদের বলেন, ‘শত রাস্তা, শত সড়ক এক দিনে। কোথাও দেখেছেন? ভূগোলেও নেই।’
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোরেল নিয়ে কিছু বলতে পারে না। দুর্নীতি নিয়ে কিছু বলতে পারে না। এখন বলছে ভাড়া বেশি।’
জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইচিগুচি তামোহিদে বক্তব্যের শুরুতে বাংলায় বলেন, ‘আমি এখানে এসে অনেক খুশি হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকার সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের চলাচলে এই সংযোজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি একটি নিরাপদ পরিবহন, বিশেষ করে নারীদের জন্য।’
ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনিরো বাংলায় বলেন, ‘জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এই সম্পর্ককে আমি আরও গভীর করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে আমি কাজ করে যাব। এই দ্রুতগতির নিরাপদ পরিবহন সেবার মধ্য দিয়ে ঢাকার চেহারা বদলে যাবে।’
এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবে। প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে। এটা বৈদ্যুতিক ট্রেন। এখানে কোনো জীবাশ্ম জ্বালানি বা তরল জ্বালানি ব্যবহার করা হবে না।
‘কাজেই এটা পরিবেশে কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না; বরং পরিবেশ উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কারণ মেট্রো চালু হলে অনেক গাড়ি কমে যাবে। তাই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমে যাবে।’
ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, আরও তিনটি মেট্রোরেলে নির্মাণকাজ বাস্তবায়নাধীন। এমআরটি লাইন-১ বাংলাদেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী এ লাইনের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘এমআরটি লাইন ৬-এর মতিঝিল অংশ আগামী ডিসেম্বর ২০২৩-এ উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করার কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ২০২৫ সালের জুনে এই অংশ চালু করা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
কর্মশালার বিষয়ের বাইরে গিয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকদের ওপর চটেছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান।
সচিবালয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বুধবার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের করণীয়বিষয়ক কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এমন ঘটনা ঘটে।
ওই কর্মশালার বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে ২৮ মিনিট কথা বলেন ইয়াফেস ওসমান। এরপর অনুমতি নিয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করতে চাইলে ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘বলো ভাই, তোমাদের তো আবার সময়ের দাম আছে। তো এতগুলো কথা বললাম, এগুলো কি একটাও কাজের কথা হয় নাই? আচ্ছা বলো।’
এরপর ওই সাংবাদিক বলেন, ‘রাশিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল সরবরাহে কত দেরি হতে পারে?’
জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ওই ব্যাপারে এখন কিছু বলব না। এত কথার মধ্যে তোমরা চলে গেলে রূপপুরে।’
ওই সময় মন্ত্রীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব জিয়াউল হাসান বলেন, ‘আজকের ওয়ার্কশপের সঙ্গে এই প্রশ্ন সঙ্গতিপূর্ণ নয়।’
পরে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বুঝি না, তোমরা প্রফেশনাল না? আর ইউ প্রফেশনাল? লেট মি দিস অ্যান্সার? ইউ আর প্রফেশনাল, লাইক মি আর্কিটেকচার। তোমরা তো প্রফেশনাল। তোমাদের রেগুলার প্রফেশনাল স্টাডির কোনো ব্যবস্থা আছে? নাই।’
ওই সময় কয়েকজন সাংবাদিক মন্ত্রীকে জানান, সাংবাদিকদের জন্যও সেই ব্যবস্থা রয়েছে।
তখন মন্ত্রী বলেন, ‘ঘোড়ার ডিম আছে তোমাদের। আমাদের একটা ইনস্টিটিউট আছে। ওখান থেকে যদি সার্টিফিকেট না পাও, ইউ ক্যান নট প্রাকটিস। কারণ হলো, ওটার (ইনস্টিটিউট) শুরুটা হয় আমার হাত দিয়ে। ওইগুলো করো আগে। বিকজ বাংলাদেশকে আমরা ওই জায়গায় নিতে চাই।’
এরপর একজন সাংবাদিক বলেন, ‘সনদ ছাড়া সাংবাদিকতা করা যাবে না সেই বাধ্যবাধকতা নেই।’
এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, ‘ওইটাই তো প্রবেলম। তোমার যদি একটা ব্যাকগ্রাউন্ড না থাকে, কালকে বলে দিলা তুমি সাংবাদিক। তুমি তো প্রফেশনালিজমের কিছু বোঝোই না। একটা প্রফেশন মাস্ট নো দ্যাট সাবজেক্ট। তার একটা ব্যাকগ্রাউন্ড থাকতে হবে। একটা কথা বলে দিলা যেকোনো জায়গা থেকে চলে আসলে। তার মানে তোমাদের কোনো স্ট্যান্ডার্ড নাই।
‘তোমার প্রফেশনালি যদি জ্ঞান-গরিমা থাকে, নেচারালি তখন তুমি একভাবে বলবা, আর যদি না থাকে আরেকভাবে বলবা। তারপরও তুমি বলছো আমরা আসতে পারি যেকোনো জায়গা থেকে? এনিওয়ে ভাই, আমি তোমার এই কথায় যেতে চাই না। একদিন আইসো, তোমাদের বসদের সাথে কথা হয় তো, ওদের সাথেই কথা বলব। তোমাদের সাথে বলে আর লাভ নাই।’
সাংবাদিকরাও এসব বিষয়ে কথা বলতে শুরু করলে মন্ত্রী বলেন, ‘আচ্ছা এই সাবজেক্ট বাদ দিয়ে দাও। আমি ওই জন্য বলছি তোমরা এই সাবজেক্টের ওপর ধরো না কেন? এটা বাদ দিয়ে তুমি চলে গেলে অন্য জায়গায়। এটা নিয়ে আর কোনো কথাই হবে না।
‘তুমি এখানে আসছো কী জন্য? তুমি রূপপুরের ব্যাপারে কথা বলতে আসছো? এখান থেকে তোমার প্রশ্ন বের করতে হবে, উত্তর নিতে হবে। সেটা হলে তুমি প্রোপার জিনিসটা করলা।’
ওই সময় একজন সাংবাদিক মন্ত্রীকে বলেন, ‘আমরা যারা সাংবাদিকতা করি তাদের সাবজেক্টের বাইরেও প্রশ্ন করতে হয়। আপনাকে আমরা পাই না, গত ৮-৯ মাসে আপনার প্রোগ্রামে আসিনি, এই প্রথম আসলাম। তাও আবার জরুরি ভিত্তিতে আসতে বলেছেন। ১১টার প্রোগ্রাম, ১১টা ১০ মিনিটে আমাদেরকে জানিয়েছেন। আমরা গুরুত্বপূর্ণ মনে করে চলে এসেছি।
‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে জনগণের জানার আগ্রহ আছে। জনসাধারণের ভিউ থেকে আমাদেরও অনেক কিছু জানতে হয়।’
তখন মন্ত্রী ক্ষেপে গিয়ে ধমকের সুরে বলেন, ‘আমি একটা কথা পরিষ্কার বলে যাই। ইউ লিসেন টু মি। আপনারা যদি না আসতে চান, চলে যান। গেট গোয়িং।’
এরপর সেখানে উপস্থিত থাকা সাংবাদিকরাও প্রতিক্রিয়া জানিয়ে অনুষ্ঠানস্থল ছাড়তে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘ইউ শুড গো। আমি বললাম প্রশ্নটা ওটার ওপর না করে এটার ওপরে করেন। এটা বলতে পারব না আমি?’
আগারগাঁও স্টেশনে নেমে গাড়িতে নিজ বাসভবন গণভবনের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ট্রেনটি ২টা ১১ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশনে পৌঁছায়।
প্রধানমন্ত্রী ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে সব বগি ঘুরে দেখেন।
ট্রেনে যাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী ১টা ৩৪ মিনিটে টিকিট কাটেন। নিজে অর্থ পরিশোধ করেন। ওই সময় শেখ রেহানাও তার টিকিট কাটেন। ওই সময় তাদের হাতে মেট্রোরেলের কার্ড দেয়া হয়। সেটি তুলে ধরে ছবি তোলেন তারা।
মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্টরা। বৃক্ষরোপণ শেষে মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যরা।
মেট্রো ট্রেনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফর করতে দিয়াবাড়ীর তৃতীয় তলার প্ল্যাটফর্মে সফরসঙ্গীরা এসে উপস্থিত হচ্ছেন একে একে। প্রধানমন্ত্রীর সহযাত্রী হিসেবে থাকবেন মন্ত্রী, এমপি, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন ও মুক্তিযোদ্ধারা।
ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড গঠনের মধ্য দিয়ে ছয়টি মেট্রোরেল নির্মাণের কথা আবারও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘চারটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়নাধীন এবং দুটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের জন্য এর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে।’
দেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা যাতে সহজে মেট্রোরেল ব্যবহার করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘বয়স্ক যাত্রীগণ, তাদের সুবিধার জন্য সংরক্ষিত আসন থাকবে। প্রতিটি মেট্রো ট্রেনে একটি স্বতন্ত্র মহিলা কোচ থাকবে, সেখানে মহিলারা চড়তে পারবে, যেতে পারবে। মহিলা যাত্রীদের জন্য পৃথক ওয়াশরুমের ব্যবস্থা থাকবে। তার সঙ্গে শিশুদের পরিচর্যার স্থান থাকবে।’
মেট্রোরেলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা যেন বিনা খরচে ভ্রমণ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছেও বলেও জানান শেখ হাসিনা।
মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরও চারটি মাইলফলক স্পর্শ করল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। এই প্রথম বাংলাদেশ বৈদ্যুতিক ট্রেনের যুগে প্রবেশ করল। মেট্রোরেল দূর নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। রিমোট কন্ট্রোল দ্বারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে এটা পরিচালিত করা হবে। তার ফলে আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছি, এটি তারই একটি অংশ হিসেবেই কাজ করবে। তার ন্যূনতম মাত্রা সংযোজিত হলো। বাংলাদেশ দ্রুতগতির ট্রেনের যুদে পদার্পণ করল। এই মেট্রোরেলে সর্বোচ্চ গতি হবে (প্রতি ঘণ্টায়) ১১০ কিলোমিটার।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ যখন আমরা শুরু করেছি, তখন এসেছিল আরকেটি আঘাত। হলি আর্টিজানের সেই সন্ত্রাসী আক্রমণ। আর অত্যন্ত দুঃখজনক, সেই আক্রমণে এই মেট্রোরেলের যারা পরামর্শক, জাপানিজ নাগরিক, সেই জাপানিজ পরামর্শক সাতজন হলি আর্টিজানে মৃত্যুবরণ করেন। আমি তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি।
‘তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি সমবেদনা জানাই সবার পরিবারকে। এরপরেও আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই জাপানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী (শিনজো আবে), যিনিও ঘাতকের বুলেটের আঘাতে শাহাদাত বরণ করেছেন মাত্র কিছুদিন আগে। কারণ এই কাজ তিনি বন্ধ করে দেননি। কিছু দিনের জন্য থেমে ছিল, কিন্তু তার নির্দেশে আবার মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের মেট্রোরেলের কয়েকটি স্টেশনে তাদের নামফলক আমরা রাখব। তাদের নামফলক উত্তরার দিয়াবাড়ীর মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্রে স্মৃতিস্মারক আমরা স্থাপন করেছি। তাদের নামটি যেন স্মরণ থাকে, আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় আরেকটি পালক আজ বাংলাদেশ তথা ঢাকায় আমরা দিতে পারলাম তথা সংযোজিত করতে পারলাম। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। কিছুক্ষণ আগে সেটা উদ্বোধন করেছি। সেটা হচ্ছে মেট্রোরেল, যার কেতাবি নাম হচ্ছে এমআরটি-সিক্স।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজধানীবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার স্বপ্নপূরণের দিন। মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সরকারের মুকুটে যুক্ত হলো আরেকটি হীরন্ময় পালক।’
তিনি বলেন, “মেট্রোরেলে করে প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন, ‘ইয়েস, উই ক্যান।’ বিশ্বব্যাংক অপবাদ দিতে পারে। তারা অপবাদ দিয়েছে। আমরা বীরের জাতি। আমরা চোরের জাতি নই। মনে অনেকের জ্বালা। অন্তর জ্বালায় মরে। বড়ই অন্তর জ্বালা।”
কাদের বলেন, ‘শত রাস্তা, শত সড়ক এক দিনে। কোথাও দেখেছেন? ভূগোলেও নেই।’
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোরেল নিয়ে কিছু বলতে পারে না। দুর্নীতি নিয়ে কিছু বলতে পারে না। এখন বলছে ভাড়া বেশি।’
জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইচিগুচি তামোহিদে বক্তব্যের শুরুতে বাংলায় বলেন, ‘আমি এখানে এসে অনেক খুশি হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকার সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের চলাচলে এই সংযোজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি একটি নিরাপদ পরিবহন, বিশেষ করে নারীদের জন্য।’
ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনিরো বাংলায় বলেন, ‘জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এই সম্পর্ককে আমি আরও গভীর করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে আমি কাজ করে যাব। এই দ্রুতগতির নিরাপদ পরিবহন সেবার মধ্য দিয়ে ঢাকার চেহারা বদলে যাবে।’
এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবে। প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে। এটা বৈদ্যুতিক ট্রেন। এখানে কোনো জীবাশ্ম জ্বালানি বা তরল জ্বালানি ব্যবহার করা হবে না।
‘কাজেই এটা পরিবেশে কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না; বরং পরিবেশ উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কারণ মেট্রো চালু হলে অনেক গাড়ি কমে যাবে। তাই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমে যাবে।’
ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, আরও তিনটি মেট্রোরেলে নির্মাণকাজ বাস্তবায়নাধীন। এমআরটি লাইন-১ বাংলাদেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী এ লাইনের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘এমআরটি লাইন ৬-এর মতিঝিল অংশ আগামী ডিসেম্বর ২০২৩-এ উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করার কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ২০২৫ সালের জুনে এই অংশ চালু করা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
অমর একুশে বইমেলা উদ্বোধন করতে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার বিকেলে তার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে মেলার এবার আসর।
উদ্বোধনের পর সংক্ষিপ্ত ভাষণ শেষে বইমেলা ঘুরে দেখার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।
তিন বছর পর সশরীরে হাজির হয়ে বাঙালির বই উৎসব উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। করোনাভাইরাস মহামারির আগে প্রতি বছরই তিনি সশরীরে হাজির হয়ে বইমেলা উদ্বোধন করতেন। তিনি মেলায় ঘুরে বইও কিনতেন।
গত তিন বছর মহামারির কারণে প্রধানমন্ত্রী মেলায় উপস্থিত হতে পারেননি। তিনি বইমেলা উদ্বোধন করেছেন ডিজিটালি সংযুক্ত হয়ে। এবার তার উপস্থিতি বইমেলায় ভিন্ন মাত্রা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আগারগাঁও স্টেশনে নেমে গাড়িতে নিজ বাসভবন গণভবনের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ট্রেনটি ২টা ১১ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশনে পৌঁছায়।
প্রধানমন্ত্রী ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে সব বগি ঘুরে দেখেন।
ট্রেনে যাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী ১টা ৩৪ মিনিটে টিকিট কাটেন। নিজে অর্থ পরিশোধ করেন। ওই সময় শেখ রেহানাও তার টিকিট কাটেন। ওই সময় তাদের হাতে মেট্রোরেলের কার্ড দেয়া হয়। সেটি তুলে ধরে ছবি তোলেন তারা।
মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্টরা। বৃক্ষরোপণ শেষে মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যরা।
মেট্রো ট্রেনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফর করতে দিয়াবাড়ীর তৃতীয় তলার প্ল্যাটফর্মে সফরসঙ্গীরা এসে উপস্থিত হচ্ছেন একে একে। প্রধানমন্ত্রীর সহযাত্রী হিসেবে থাকবেন মন্ত্রী, এমপি, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন ও মুক্তিযোদ্ধারা।
ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড গঠনের মধ্য দিয়ে ছয়টি মেট্রোরেল নির্মাণের কথা আবারও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘চারটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়নাধীন এবং দুটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের জন্য এর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে।’
দেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা যাতে সহজে মেট্রোরেল ব্যবহার করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘বয়স্ক যাত্রীগণ, তাদের সুবিধার জন্য সংরক্ষিত আসন থাকবে। প্রতিটি মেট্রো ট্রেনে একটি স্বতন্ত্র মহিলা কোচ থাকবে, সেখানে মহিলারা চড়তে পারবে, যেতে পারবে। মহিলা যাত্রীদের জন্য পৃথক ওয়াশরুমের ব্যবস্থা থাকবে। তার সঙ্গে শিশুদের পরিচর্যার স্থান থাকবে।’
মেট্রোরেলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা যেন বিনা খরচে ভ্রমণ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছেও বলেও জানান শেখ হাসিনা।
মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরও চারটি মাইলফলক স্পর্শ করল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। এই প্রথম বাংলাদেশ বৈদ্যুতিক ট্রেনের যুগে প্রবেশ করল। মেট্রোরেল দূর নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। রিমোট কন্ট্রোল দ্বারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে এটা পরিচালিত করা হবে। তার ফলে আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছি, এটি তারই একটি অংশ হিসেবেই কাজ করবে। তার ন্যূনতম মাত্রা সংযোজিত হলো। বাংলাদেশ দ্রুতগতির ট্রেনের যুদে পদার্পণ করল। এই মেট্রোরেলে সর্বোচ্চ গতি হবে (প্রতি ঘণ্টায়) ১১০ কিলোমিটার।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ যখন আমরা শুরু করেছি, তখন এসেছিল আরকেটি আঘাত। হলি আর্টিজানের সেই সন্ত্রাসী আক্রমণ। আর অত্যন্ত দুঃখজনক, সেই আক্রমণে এই মেট্রোরেলের যারা পরামর্শক, জাপানিজ নাগরিক, সেই জাপানিজ পরামর্শক সাতজন হলি আর্টিজানে মৃত্যুবরণ করেন। আমি তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি।
‘তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি সমবেদনা জানাই সবার পরিবারকে। এরপরেও আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই জাপানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী (শিনজো আবে), যিনিও ঘাতকের বুলেটের আঘাতে শাহাদাত বরণ করেছেন মাত্র কিছুদিন আগে। কারণ এই কাজ তিনি বন্ধ করে দেননি। কিছু দিনের জন্য থেমে ছিল, কিন্তু তার নির্দেশে আবার মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের মেট্রোরেলের কয়েকটি স্টেশনে তাদের নামফলক আমরা রাখব। তাদের নামফলক উত্তরার দিয়াবাড়ীর মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্রে স্মৃতিস্মারক আমরা স্থাপন করেছি। তাদের নামটি যেন স্মরণ থাকে, আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় আরেকটি পালক আজ বাংলাদেশ তথা ঢাকায় আমরা দিতে পারলাম তথা সংযোজিত করতে পারলাম। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। কিছুক্ষণ আগে সেটা উদ্বোধন করেছি। সেটা হচ্ছে মেট্রোরেল, যার কেতাবি নাম হচ্ছে এমআরটি-সিক্স।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজধানীবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার স্বপ্নপূরণের দিন। মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সরকারের মুকুটে যুক্ত হলো আরেকটি হীরন্ময় পালক।’
তিনি বলেন, “মেট্রোরেলে করে প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন, ‘ইয়েস, উই ক্যান।’ বিশ্বব্যাংক অপবাদ দিতে পারে। তারা অপবাদ দিয়েছে। আমরা বীরের জাতি। আমরা চোরের জাতি নই। মনে অনেকের জ্বালা। অন্তর জ্বালায় মরে। বড়ই অন্তর জ্বালা।”
কাদের বলেন, ‘শত রাস্তা, শত সড়ক এক দিনে। কোথাও দেখেছেন? ভূগোলেও নেই।’
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোরেল নিয়ে কিছু বলতে পারে না। দুর্নীতি নিয়ে কিছু বলতে পারে না। এখন বলছে ভাড়া বেশি।’
জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইচিগুচি তামোহিদে বক্তব্যের শুরুতে বাংলায় বলেন, ‘আমি এখানে এসে অনেক খুশি হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকার সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের চলাচলে এই সংযোজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি একটি নিরাপদ পরিবহন, বিশেষ করে নারীদের জন্য।’
ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনিরো বাংলায় বলেন, ‘জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এই সম্পর্ককে আমি আরও গভীর করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে আমি কাজ করে যাব। এই দ্রুতগতির নিরাপদ পরিবহন সেবার মধ্য দিয়ে ঢাকার চেহারা বদলে যাবে।’
এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবে। প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে। এটা বৈদ্যুতিক ট্রেন। এখানে কোনো জীবাশ্ম জ্বালানি বা তরল জ্বালানি ব্যবহার করা হবে না।
‘কাজেই এটা পরিবেশে কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না; বরং পরিবেশ উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কারণ মেট্রো চালু হলে অনেক গাড়ি কমে যাবে। তাই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমে যাবে।’
ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, আরও তিনটি মেট্রোরেলে নির্মাণকাজ বাস্তবায়নাধীন। এমআরটি লাইন-১ বাংলাদেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী এ লাইনের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘এমআরটি লাইন ৬-এর মতিঝিল অংশ আগামী ডিসেম্বর ২০২৩-এ উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করার কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ২০২৫ সালের জুনে এই অংশ চালু করা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
রানওয়ের লাইটিং ব্যবস্থা সংস্কারকাজের অংশ হিসেবে আগামী দুই মাস ৫ ঘণ্টা করে উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।
বৃহস্পতিবার রাত ২টা থেকে শুরু হবে এ সংস্কারকাজ।
শাহজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, রানওয়ের সেন্ট্রাল লাইন লাইট স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে ফ্লাইট ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা বাড়বে। এর অংশ হিসেবে ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ এপ্রিল বিমানবন্দরের রানওয়ে রাত ২টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এ সময়ের মধ্যে সংস্কারকাজ চলবে, যে কারণে এ ৫ ঘণ্টায় বন্ধ থাকবে উড়োজাহাজ ওঠানামা।
এই সময়ে যেসব ফ্লাইটের শিডিউল থাকবে, সেগুলো দিনের অন্য সময়ে চলবে। ফ্লাইট চলাচলের সূচি পুর্নবিন্যাস করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট (এটিএম) বিভাগ থেকে নোটিশ জারি করা হয়েছে।
ফ্লাইট পুর্নবিন্যাসের ফলে সকাল ৭টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা এবং রাত ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত বিমানবন্দরে ফ্লাইটের চাপ হতে পারে। এ চাপ সামলাতে মনিটরিং টিম গঠন করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। সাধারণত রাত ২টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত শাহজালাল বিমানবন্দরে সাত থেকে আটটি ফ্লাইট চলাচল করে।
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বিমানবন্দরের রানওয়ের লাইটিং ব্যবস্থার সংস্কারকাজ শুরু হবে। এ জন্য ২ ফেব্রুয়ারি থেকে দুই মাস রাত ২টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে।
‘বছরের এ সময়ে কুয়াশা থাকায় ফ্লাইট চলাচলে বিঘ্ন ঘটে, যে কারণে লাইটিং ব্যবস্থা সংস্কারকাজ করতে এ সময়কে বেছে নেয়া হয়েছে।’
আগারগাঁও স্টেশনে নেমে গাড়িতে নিজ বাসভবন গণভবনের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ট্রেনটি ২টা ১১ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশনে পৌঁছায়।
প্রধানমন্ত্রী ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে সব বগি ঘুরে দেখেন।
ট্রেনে যাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী ১টা ৩৪ মিনিটে টিকিট কাটেন। নিজে অর্থ পরিশোধ করেন। ওই সময় শেখ রেহানাও তার টিকিট কাটেন। ওই সময় তাদের হাতে মেট্রোরেলের কার্ড দেয়া হয়। সেটি তুলে ধরে ছবি তোলেন তারা।
মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্টরা। বৃক্ষরোপণ শেষে মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যরা।
মেট্রো ট্রেনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফর করতে দিয়াবাড়ীর তৃতীয় তলার প্ল্যাটফর্মে সফরসঙ্গীরা এসে উপস্থিত হচ্ছেন একে একে। প্রধানমন্ত্রীর সহযাত্রী হিসেবে থাকবেন মন্ত্রী, এমপি, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন ও মুক্তিযোদ্ধারা।
ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড গঠনের মধ্য দিয়ে ছয়টি মেট্রোরেল নির্মাণের কথা আবারও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘চারটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়নাধীন এবং দুটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের জন্য এর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে।’
দেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা যাতে সহজে মেট্রোরেল ব্যবহার করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘বয়স্ক যাত্রীগণ, তাদের সুবিধার জন্য সংরক্ষিত আসন থাকবে। প্রতিটি মেট্রো ট্রেনে একটি স্বতন্ত্র মহিলা কোচ থাকবে, সেখানে মহিলারা চড়তে পারবে, যেতে পারবে। মহিলা যাত্রীদের জন্য পৃথক ওয়াশরুমের ব্যবস্থা থাকবে। তার সঙ্গে শিশুদের পরিচর্যার স্থান থাকবে।’
মেট্রোরেলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা যেন বিনা খরচে ভ্রমণ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছেও বলেও জানান শেখ হাসিনা।
মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরও চারটি মাইলফলক স্পর্শ করল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। এই প্রথম বাংলাদেশ বৈদ্যুতিক ট্রেনের যুগে প্রবেশ করল। মেট্রোরেল দূর নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। রিমোট কন্ট্রোল দ্বারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে এটা পরিচালিত করা হবে। তার ফলে আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছি, এটি তারই একটি অংশ হিসেবেই কাজ করবে। তার ন্যূনতম মাত্রা সংযোজিত হলো। বাংলাদেশ দ্রুতগতির ট্রেনের যুদে পদার্পণ করল। এই মেট্রোরেলে সর্বোচ্চ গতি হবে (প্রতি ঘণ্টায়) ১১০ কিলোমিটার।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ যখন আমরা শুরু করেছি, তখন এসেছিল আরকেটি আঘাত। হলি আর্টিজানের সেই সন্ত্রাসী আক্রমণ। আর অত্যন্ত দুঃখজনক, সেই আক্রমণে এই মেট্রোরেলের যারা পরামর্শক, জাপানিজ নাগরিক, সেই জাপানিজ পরামর্শক সাতজন হলি আর্টিজানে মৃত্যুবরণ করেন। আমি তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি।
‘তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি সমবেদনা জানাই সবার পরিবারকে। এরপরেও আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই জাপানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী (শিনজো আবে), যিনিও ঘাতকের বুলেটের আঘাতে শাহাদাত বরণ করেছেন মাত্র কিছুদিন আগে। কারণ এই কাজ তিনি বন্ধ করে দেননি। কিছু দিনের জন্য থেমে ছিল, কিন্তু তার নির্দেশে আবার মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের মেট্রোরেলের কয়েকটি স্টেশনে তাদের নামফলক আমরা রাখব। তাদের নামফলক উত্তরার দিয়াবাড়ীর মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্রে স্মৃতিস্মারক আমরা স্থাপন করেছি। তাদের নামটি যেন স্মরণ থাকে, আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় আরেকটি পালক আজ বাংলাদেশ তথা ঢাকায় আমরা দিতে পারলাম তথা সংযোজিত করতে পারলাম। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। কিছুক্ষণ আগে সেটা উদ্বোধন করেছি। সেটা হচ্ছে মেট্রোরেল, যার কেতাবি নাম হচ্ছে এমআরটি-সিক্স।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজধানীবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার স্বপ্নপূরণের দিন। মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সরকারের মুকুটে যুক্ত হলো আরেকটি হীরন্ময় পালক।’
তিনি বলেন, “মেট্রোরেলে করে প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন, ‘ইয়েস, উই ক্যান।’ বিশ্বব্যাংক অপবাদ দিতে পারে। তারা অপবাদ দিয়েছে। আমরা বীরের জাতি। আমরা চোরের জাতি নই। মনে অনেকের জ্বালা। অন্তর জ্বালায় মরে। বড়ই অন্তর জ্বালা।”
কাদের বলেন, ‘শত রাস্তা, শত সড়ক এক দিনে। কোথাও দেখেছেন? ভূগোলেও নেই।’
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোরেল নিয়ে কিছু বলতে পারে না। দুর্নীতি নিয়ে কিছু বলতে পারে না। এখন বলছে ভাড়া বেশি।’
জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইচিগুচি তামোহিদে বক্তব্যের শুরুতে বাংলায় বলেন, ‘আমি এখানে এসে অনেক খুশি হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকার সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের চলাচলে এই সংযোজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি একটি নিরাপদ পরিবহন, বিশেষ করে নারীদের জন্য।’
ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনিরো বাংলায় বলেন, ‘জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এই সম্পর্ককে আমি আরও গভীর করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে আমি কাজ করে যাব। এই দ্রুতগতির নিরাপদ পরিবহন সেবার মধ্য দিয়ে ঢাকার চেহারা বদলে যাবে।’
এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবে। প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে। এটা বৈদ্যুতিক ট্রেন। এখানে কোনো জীবাশ্ম জ্বালানি বা তরল জ্বালানি ব্যবহার করা হবে না।
‘কাজেই এটা পরিবেশে কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না; বরং পরিবেশ উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কারণ মেট্রো চালু হলে অনেক গাড়ি কমে যাবে। তাই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমে যাবে।’
ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, আরও তিনটি মেট্রোরেলে নির্মাণকাজ বাস্তবায়নাধীন। এমআরটি লাইন-১ বাংলাদেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী এ লাইনের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘এমআরটি লাইন ৬-এর মতিঝিল অংশ আগামী ডিসেম্বর ২০২৩-এ উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করার কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ২০২৫ সালের জুনে এই অংশ চালু করা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার খরচ পড়বে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে বুধবার সচিবালয়ে হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
সভা শেষে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বেসরকারি হজ প্যাকেজ কত টাকার মধ্যে নির্ধারণ করতে হবে, সে বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এর ভিত্তিতে বেসরকারিভাবে হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে।’
তিনি আরও জানান, সরকারি হজ প্যাকেজের মধ্যে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা লাগবে বিমান ভাড়া বাবদ। রিয়ালের মূল্য ২১ টাকা থেকে বেড়ে ৩০ টাকা হওয়ায় হজে যাওয়ার খরচ বেড়েছে।
বাংলাদেশ থেকে এবার ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ১ লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন।
বেসরকারি হজ প্যাকেজ বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন হাব নেতারা।
আগারগাঁও স্টেশনে নেমে গাড়িতে নিজ বাসভবন গণভবনের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ট্রেনটি ২টা ১১ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশনে পৌঁছায়।
প্রধানমন্ত্রী ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে সব বগি ঘুরে দেখেন।
ট্রেনে যাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী ১টা ৩৪ মিনিটে টিকিট কাটেন। নিজে অর্থ পরিশোধ করেন। ওই সময় শেখ রেহানাও তার টিকিট কাটেন। ওই সময় তাদের হাতে মেট্রোরেলের কার্ড দেয়া হয়। সেটি তুলে ধরে ছবি তোলেন তারা।
মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্টরা। বৃক্ষরোপণ শেষে মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যরা।
মেট্রো ট্রেনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফর করতে দিয়াবাড়ীর তৃতীয় তলার প্ল্যাটফর্মে সফরসঙ্গীরা এসে উপস্থিত হচ্ছেন একে একে। প্রধানমন্ত্রীর সহযাত্রী হিসেবে থাকবেন মন্ত্রী, এমপি, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন ও মুক্তিযোদ্ধারা।
ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড গঠনের মধ্য দিয়ে ছয়টি মেট্রোরেল নির্মাণের কথা আবারও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘চারটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়নাধীন এবং দুটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের জন্য এর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে।’
দেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা যাতে সহজে মেট্রোরেল ব্যবহার করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘বয়স্ক যাত্রীগণ, তাদের সুবিধার জন্য সংরক্ষিত আসন থাকবে। প্রতিটি মেট্রো ট্রেনে একটি স্বতন্ত্র মহিলা কোচ থাকবে, সেখানে মহিলারা চড়তে পারবে, যেতে পারবে। মহিলা যাত্রীদের জন্য পৃথক ওয়াশরুমের ব্যবস্থা থাকবে। তার সঙ্গে শিশুদের পরিচর্যার স্থান থাকবে।’
মেট্রোরেলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা যেন বিনা খরচে ভ্রমণ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছেও বলেও জানান শেখ হাসিনা।
মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরও চারটি মাইলফলক স্পর্শ করল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। এই প্রথম বাংলাদেশ বৈদ্যুতিক ট্রেনের যুগে প্রবেশ করল। মেট্রোরেল দূর নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। রিমোট কন্ট্রোল দ্বারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে এটা পরিচালিত করা হবে। তার ফলে আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছি, এটি তারই একটি অংশ হিসেবেই কাজ করবে। তার ন্যূনতম মাত্রা সংযোজিত হলো। বাংলাদেশ দ্রুতগতির ট্রেনের যুদে পদার্পণ করল। এই মেট্রোরেলে সর্বোচ্চ গতি হবে (প্রতি ঘণ্টায়) ১১০ কিলোমিটার।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ যখন আমরা শুরু করেছি, তখন এসেছিল আরকেটি আঘাত। হলি আর্টিজানের সেই সন্ত্রাসী আক্রমণ। আর অত্যন্ত দুঃখজনক, সেই আক্রমণে এই মেট্রোরেলের যারা পরামর্শক, জাপানিজ নাগরিক, সেই জাপানিজ পরামর্শক সাতজন হলি আর্টিজানে মৃত্যুবরণ করেন। আমি তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি।
‘তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি সমবেদনা জানাই সবার পরিবারকে। এরপরেও আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই জাপানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী (শিনজো আবে), যিনিও ঘাতকের বুলেটের আঘাতে শাহাদাত বরণ করেছেন মাত্র কিছুদিন আগে। কারণ এই কাজ তিনি বন্ধ করে দেননি। কিছু দিনের জন্য থেমে ছিল, কিন্তু তার নির্দেশে আবার মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের মেট্রোরেলের কয়েকটি স্টেশনে তাদের নামফলক আমরা রাখব। তাদের নামফলক উত্তরার দিয়াবাড়ীর মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্রে স্মৃতিস্মারক আমরা স্থাপন করেছি। তাদের নামটি যেন স্মরণ থাকে, আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় আরেকটি পালক আজ বাংলাদেশ তথা ঢাকায় আমরা দিতে পারলাম তথা সংযোজিত করতে পারলাম। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। কিছুক্ষণ আগে সেটা উদ্বোধন করেছি। সেটা হচ্ছে মেট্রোরেল, যার কেতাবি নাম হচ্ছে এমআরটি-সিক্স।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজধানীবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার স্বপ্নপূরণের দিন। মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সরকারের মুকুটে যুক্ত হলো আরেকটি হীরন্ময় পালক।’
তিনি বলেন, “মেট্রোরেলে করে প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন, ‘ইয়েস, উই ক্যান।’ বিশ্বব্যাংক অপবাদ দিতে পারে। তারা অপবাদ দিয়েছে। আমরা বীরের জাতি। আমরা চোরের জাতি নই। মনে অনেকের জ্বালা। অন্তর জ্বালায় মরে। বড়ই অন্তর জ্বালা।”
কাদের বলেন, ‘শত রাস্তা, শত সড়ক এক দিনে। কোথাও দেখেছেন? ভূগোলেও নেই।’
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোরেল নিয়ে কিছু বলতে পারে না। দুর্নীতি নিয়ে কিছু বলতে পারে না। এখন বলছে ভাড়া বেশি।’
জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইচিগুচি তামোহিদে বক্তব্যের শুরুতে বাংলায় বলেন, ‘আমি এখানে এসে অনেক খুশি হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকার সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের চলাচলে এই সংযোজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি একটি নিরাপদ পরিবহন, বিশেষ করে নারীদের জন্য।’
ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনিরো বাংলায় বলেন, ‘জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এই সম্পর্ককে আমি আরও গভীর করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে আমি কাজ করে যাব। এই দ্রুতগতির নিরাপদ পরিবহন সেবার মধ্য দিয়ে ঢাকার চেহারা বদলে যাবে।’
এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবে। প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে। এটা বৈদ্যুতিক ট্রেন। এখানে কোনো জীবাশ্ম জ্বালানি বা তরল জ্বালানি ব্যবহার করা হবে না।
‘কাজেই এটা পরিবেশে কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না; বরং পরিবেশ উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কারণ মেট্রো চালু হলে অনেক গাড়ি কমে যাবে। তাই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমে যাবে।’
ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, আরও তিনটি মেট্রোরেলে নির্মাণকাজ বাস্তবায়নাধীন। এমআরটি লাইন-১ বাংলাদেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী এ লাইনের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘এমআরটি লাইন ৬-এর মতিঝিল অংশ আগামী ডিসেম্বর ২০২৩-এ উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করার কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ২০২৫ সালের জুনে এই অংশ চালু করা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা কমতে পারে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, শীতের অনুভূতি বাড়তে পারে বৃহস্পতিবার থেকে।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক নিউজবাংলাকে জানান, বৃহস্পতিবার থেকে তাপমাত্রা কমে একই রকম থাকতে পারে চার থেকে পাঁচ দিন।
২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, নিম্নচাপটি দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি পশ্চিম-দক্ষিণ পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। এ ছাড়া উপমহাদেশীয় উচ্চতাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
দিনভর আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে পূর্বাভাসে জানানো হয়, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
কুয়াশা নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থা নিয়ে বলা হয়, উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল কক্সবাজারে। বুধবার দেশের সর্বনিম্ন ১৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়।
আগারগাঁও স্টেশনে নেমে গাড়িতে নিজ বাসভবন গণভবনের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ট্রেনটি ২টা ১১ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশনে পৌঁছায়।
প্রধানমন্ত্রী ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে সব বগি ঘুরে দেখেন।
ট্রেনে যাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী ১টা ৩৪ মিনিটে টিকিট কাটেন। নিজে অর্থ পরিশোধ করেন। ওই সময় শেখ রেহানাও তার টিকিট কাটেন। ওই সময় তাদের হাতে মেট্রোরেলের কার্ড দেয়া হয়। সেটি তুলে ধরে ছবি তোলেন তারা।
মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্টরা। বৃক্ষরোপণ শেষে মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যরা।
মেট্রো ট্রেনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফর করতে দিয়াবাড়ীর তৃতীয় তলার প্ল্যাটফর্মে সফরসঙ্গীরা এসে উপস্থিত হচ্ছেন একে একে। প্রধানমন্ত্রীর সহযাত্রী হিসেবে থাকবেন মন্ত্রী, এমপি, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন ও মুক্তিযোদ্ধারা।
ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড গঠনের মধ্য দিয়ে ছয়টি মেট্রোরেল নির্মাণের কথা আবারও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘চারটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়নাধীন এবং দুটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের জন্য এর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে।’
দেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা যাতে সহজে মেট্রোরেল ব্যবহার করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘বয়স্ক যাত্রীগণ, তাদের সুবিধার জন্য সংরক্ষিত আসন থাকবে। প্রতিটি মেট্রো ট্রেনে একটি স্বতন্ত্র মহিলা কোচ থাকবে, সেখানে মহিলারা চড়তে পারবে, যেতে পারবে। মহিলা যাত্রীদের জন্য পৃথক ওয়াশরুমের ব্যবস্থা থাকবে। তার সঙ্গে শিশুদের পরিচর্যার স্থান থাকবে।’
মেট্রোরেলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা যেন বিনা খরচে ভ্রমণ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছেও বলেও জানান শেখ হাসিনা।
মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরও চারটি মাইলফলক স্পর্শ করল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। এই প্রথম বাংলাদেশ বৈদ্যুতিক ট্রেনের যুগে প্রবেশ করল। মেট্রোরেল দূর নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। রিমোট কন্ট্রোল দ্বারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে এটা পরিচালিত করা হবে। তার ফলে আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছি, এটি তারই একটি অংশ হিসেবেই কাজ করবে। তার ন্যূনতম মাত্রা সংযোজিত হলো। বাংলাদেশ দ্রুতগতির ট্রেনের যুদে পদার্পণ করল। এই মেট্রোরেলে সর্বোচ্চ গতি হবে (প্রতি ঘণ্টায়) ১১০ কিলোমিটার।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ যখন আমরা শুরু করেছি, তখন এসেছিল আরকেটি আঘাত। হলি আর্টিজানের সেই সন্ত্রাসী আক্রমণ। আর অত্যন্ত দুঃখজনক, সেই আক্রমণে এই মেট্রোরেলের যারা পরামর্শক, জাপানিজ নাগরিক, সেই জাপানিজ পরামর্শক সাতজন হলি আর্টিজানে মৃত্যুবরণ করেন। আমি তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি।
‘তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি সমবেদনা জানাই সবার পরিবারকে। এরপরেও আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই জাপানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী (শিনজো আবে), যিনিও ঘাতকের বুলেটের আঘাতে শাহাদাত বরণ করেছেন মাত্র কিছুদিন আগে। কারণ এই কাজ তিনি বন্ধ করে দেননি। কিছু দিনের জন্য থেমে ছিল, কিন্তু তার নির্দেশে আবার মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের মেট্রোরেলের কয়েকটি স্টেশনে তাদের নামফলক আমরা রাখব। তাদের নামফলক উত্তরার দিয়াবাড়ীর মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্রে স্মৃতিস্মারক আমরা স্থাপন করেছি। তাদের নামটি যেন স্মরণ থাকে, আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় আরেকটি পালক আজ বাংলাদেশ তথা ঢাকায় আমরা দিতে পারলাম তথা সংযোজিত করতে পারলাম। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। কিছুক্ষণ আগে সেটা উদ্বোধন করেছি। সেটা হচ্ছে মেট্রোরেল, যার কেতাবি নাম হচ্ছে এমআরটি-সিক্স।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজধানীবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার স্বপ্নপূরণের দিন। মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সরকারের মুকুটে যুক্ত হলো আরেকটি হীরন্ময় পালক।’
তিনি বলেন, “মেট্রোরেলে করে প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন, ‘ইয়েস, উই ক্যান।’ বিশ্বব্যাংক অপবাদ দিতে পারে। তারা অপবাদ দিয়েছে। আমরা বীরের জাতি। আমরা চোরের জাতি নই। মনে অনেকের জ্বালা। অন্তর জ্বালায় মরে। বড়ই অন্তর জ্বালা।”
কাদের বলেন, ‘শত রাস্তা, শত সড়ক এক দিনে। কোথাও দেখেছেন? ভূগোলেও নেই।’
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোরেল নিয়ে কিছু বলতে পারে না। দুর্নীতি নিয়ে কিছু বলতে পারে না। এখন বলছে ভাড়া বেশি।’
জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইচিগুচি তামোহিদে বক্তব্যের শুরুতে বাংলায় বলেন, ‘আমি এখানে এসে অনেক খুশি হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকার সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের চলাচলে এই সংযোজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি একটি নিরাপদ পরিবহন, বিশেষ করে নারীদের জন্য।’
ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনিরো বাংলায় বলেন, ‘জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এই সম্পর্ককে আমি আরও গভীর করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে আমি কাজ করে যাব। এই দ্রুতগতির নিরাপদ পরিবহন সেবার মধ্য দিয়ে ঢাকার চেহারা বদলে যাবে।’
এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবে। প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে। এটা বৈদ্যুতিক ট্রেন। এখানে কোনো জীবাশ্ম জ্বালানি বা তরল জ্বালানি ব্যবহার করা হবে না।
‘কাজেই এটা পরিবেশে কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না; বরং পরিবেশ উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কারণ মেট্রো চালু হলে অনেক গাড়ি কমে যাবে। তাই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমে যাবে।’
ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, আরও তিনটি মেট্রোরেলে নির্মাণকাজ বাস্তবায়নাধীন। এমআরটি লাইন-১ বাংলাদেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী এ লাইনের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘এমআরটি লাইন ৬-এর মতিঝিল অংশ আগামী ডিসেম্বর ২০২৩-এ উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করার কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ২০২৫ সালের জুনে এই অংশ চালু করা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
বিএনপির নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের পদত্যাগের কারণে শূন্য হওয়া ছয়টি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে বুধবার ভোট শুরু হয়েছে।
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোট চলবে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।
উপনির্বাচনের ছয়টি আসন হলো ঠাকুরগাঁও-৩, বগুড়া-৪ বগুড়া-৬, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২।
ঢাকার গোলাপবাগে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর বিভাগীয় সমাবেশে বিএনপির সংসদ সদস্যদের একযোগে পদত্যাগের ঘোষণা আসে। পরের দিন পদত্যাগপত্র জমা দিতে পাঁচজন এমপি সংসদ ভবনে যান।
ওই দিন অসুস্থ থাকায় পদত্যাগপত্র জমা দিতে আসতে পারেননি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের এমপি উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। অন্যদিকে বিদেশে থাকায় যেতে পারেননি চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের এমপি হারুনুর রশীদ। তাদের হয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন রুমিন ফারহানা।
নিজেদের অধীন প্রথম সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহার করলেও এ ভোটে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন, তবে জাতীয় নির্বাচনে ক্যামেরা ব্যবহারে আগ্রহ রয়েছে তাদের।
প্রচার-প্রচারণা চলাকালীন বড় ধরনের সহিংসতার খবর পাওয়া না গেলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের এক প্রার্থী এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান মনে করছেন, নিখোঁজ স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আত্মগোপনে আছেন।
এ নিয়ে ইসি আনিছ সাংবাদিকদের বলেন, ‘সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এ ভোটে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা নেই। ভোটকেন্দ্রে নিরবচ্ছিন্নভাবে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে।’
নির্বাচনী এলাকায় ভোটের দিন ট্রাক, পিকআপ ও ইঞ্জিনচালিত নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে। মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ থাকবে বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত, তবে ইসির অনুমতি নিয়ে যেকোনো যান চলাচল করতে পারবে।
নির্বাচন কমিশনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এই ছয় আসনের ভোটে সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ থেকে ১৭ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ থেকে ১৮ জন করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে।
আগারগাঁও স্টেশনে নেমে গাড়িতে নিজ বাসভবন গণভবনের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ট্রেনটি ২টা ১১ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশনে পৌঁছায়।
প্রধানমন্ত্রী ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে সব বগি ঘুরে দেখেন।
ট্রেনে যাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী ১টা ৩৪ মিনিটে টিকিট কাটেন। নিজে অর্থ পরিশোধ করেন। ওই সময় শেখ রেহানাও তার টিকিট কাটেন। ওই সময় তাদের হাতে মেট্রোরেলের কার্ড দেয়া হয়। সেটি তুলে ধরে ছবি তোলেন তারা।
মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্টরা। বৃক্ষরোপণ শেষে মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যরা।
মেট্রো ট্রেনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফর করতে দিয়াবাড়ীর তৃতীয় তলার প্ল্যাটফর্মে সফরসঙ্গীরা এসে উপস্থিত হচ্ছেন একে একে। প্রধানমন্ত্রীর সহযাত্রী হিসেবে থাকবেন মন্ত্রী, এমপি, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন ও মুক্তিযোদ্ধারা।
ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড গঠনের মধ্য দিয়ে ছয়টি মেট্রোরেল নির্মাণের কথা আবারও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘চারটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়নাধীন এবং দুটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের জন্য এর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে।’
দেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা যাতে সহজে মেট্রোরেল ব্যবহার করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘বয়স্ক যাত্রীগণ, তাদের সুবিধার জন্য সংরক্ষিত আসন থাকবে। প্রতিটি মেট্রো ট্রেনে একটি স্বতন্ত্র মহিলা কোচ থাকবে, সেখানে মহিলারা চড়তে পারবে, যেতে পারবে। মহিলা যাত্রীদের জন্য পৃথক ওয়াশরুমের ব্যবস্থা থাকবে। তার সঙ্গে শিশুদের পরিচর্যার স্থান থাকবে।’
মেট্রোরেলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা যেন বিনা খরচে ভ্রমণ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছেও বলেও জানান শেখ হাসিনা।
মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরও চারটি মাইলফলক স্পর্শ করল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। এই প্রথম বাংলাদেশ বৈদ্যুতিক ট্রেনের যুগে প্রবেশ করল। মেট্রোরেল দূর নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। রিমোট কন্ট্রোল দ্বারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে এটা পরিচালিত করা হবে। তার ফলে আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছি, এটি তারই একটি অংশ হিসেবেই কাজ করবে। তার ন্যূনতম মাত্রা সংযোজিত হলো। বাংলাদেশ দ্রুতগতির ট্রেনের যুদে পদার্পণ করল। এই মেট্রোরেলে সর্বোচ্চ গতি হবে (প্রতি ঘণ্টায়) ১১০ কিলোমিটার।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ যখন আমরা শুরু করেছি, তখন এসেছিল আরকেটি আঘাত। হলি আর্টিজানের সেই সন্ত্রাসী আক্রমণ। আর অত্যন্ত দুঃখজনক, সেই আক্রমণে এই মেট্রোরেলের যারা পরামর্শক, জাপানিজ নাগরিক, সেই জাপানিজ পরামর্শক সাতজন হলি আর্টিজানে মৃত্যুবরণ করেন। আমি তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি।
‘তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি সমবেদনা জানাই সবার পরিবারকে। এরপরেও আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই জাপানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী (শিনজো আবে), যিনিও ঘাতকের বুলেটের আঘাতে শাহাদাত বরণ করেছেন মাত্র কিছুদিন আগে। কারণ এই কাজ তিনি বন্ধ করে দেননি। কিছু দিনের জন্য থেমে ছিল, কিন্তু তার নির্দেশে আবার মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের মেট্রোরেলের কয়েকটি স্টেশনে তাদের নামফলক আমরা রাখব। তাদের নামফলক উত্তরার দিয়াবাড়ীর মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্রে স্মৃতিস্মারক আমরা স্থাপন করেছি। তাদের নামটি যেন স্মরণ থাকে, আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় আরেকটি পালক আজ বাংলাদেশ তথা ঢাকায় আমরা দিতে পারলাম তথা সংযোজিত করতে পারলাম। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। কিছুক্ষণ আগে সেটা উদ্বোধন করেছি। সেটা হচ্ছে মেট্রোরেল, যার কেতাবি নাম হচ্ছে এমআরটি-সিক্স।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজধানীবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার স্বপ্নপূরণের দিন। মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সরকারের মুকুটে যুক্ত হলো আরেকটি হীরন্ময় পালক।’
তিনি বলেন, “মেট্রোরেলে করে প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন, ‘ইয়েস, উই ক্যান।’ বিশ্বব্যাংক অপবাদ দিতে পারে। তারা অপবাদ দিয়েছে। আমরা বীরের জাতি। আমরা চোরের জাতি নই। মনে অনেকের জ্বালা। অন্তর জ্বালায় মরে। বড়ই অন্তর জ্বালা।”
কাদের বলেন, ‘শত রাস্তা, শত সড়ক এক দিনে। কোথাও দেখেছেন? ভূগোলেও নেই।’
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোরেল নিয়ে কিছু বলতে পারে না। দুর্নীতি নিয়ে কিছু বলতে পারে না। এখন বলছে ভাড়া বেশি।’
জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইচিগুচি তামোহিদে বক্তব্যের শুরুতে বাংলায় বলেন, ‘আমি এখানে এসে অনেক খুশি হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকার সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের চলাচলে এই সংযোজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি একটি নিরাপদ পরিবহন, বিশেষ করে নারীদের জন্য।’
ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনিরো বাংলায় বলেন, ‘জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এই সম্পর্ককে আমি আরও গভীর করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে আমি কাজ করে যাব। এই দ্রুতগতির নিরাপদ পরিবহন সেবার মধ্য দিয়ে ঢাকার চেহারা বদলে যাবে।’
এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবে। প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে। এটা বৈদ্যুতিক ট্রেন। এখানে কোনো জীবাশ্ম জ্বালানি বা তরল জ্বালানি ব্যবহার করা হবে না।
‘কাজেই এটা পরিবেশে কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না; বরং পরিবেশ উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কারণ মেট্রো চালু হলে অনেক গাড়ি কমে যাবে। তাই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমে যাবে।’
ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, আরও তিনটি মেট্রোরেলে নির্মাণকাজ বাস্তবায়নাধীন। এমআরটি লাইন-১ বাংলাদেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী এ লাইনের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘এমআরটি লাইন ৬-এর মতিঝিল অংশ আগামী ডিসেম্বর ২০২৩-এ উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করার কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ২০২৫ সালের জুনে এই অংশ চালু করা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
বিএনপির নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের পদত্যাগের কারণে শূন্য হওয়া ৬টি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন আজ বুধবার। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে একটানা বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে।
উপনির্বাচনের ছয়টি আসন হলো- ঠাকুরগাঁও-৩, বগুড়া-৪ বগুড়া-৬, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২।
নিজেদের প্রথম সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহার করলেও এ ভোটে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। তবে জাতীয় নির্বাচনে ক্যামেরা ব্যবহারে আগ্রহ রয়েছে তাদের।
প্রচার-প্রচারণা চলাকালীন বড় ধরনের সহিংসতার খবর পাওয়া না গেলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের এক প্রার্থী এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান মনে করছেন, নিখোঁজ স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আত্মগোপনে আছেন।
এ নিয়ে ইসি আনিছ সাংবাদিকদের বলেন, 'সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এ ভোটে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা নেই। ভোটকেন্দ্রে নিরবচ্ছিন্নভাবে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে।'
ইতোমধ্যে এসব নির্বাচনী এলাকায় সব ধরনের প্রচারণা বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া ওইসব এলাকায় ভোটের দিন ট্রাক, পিকআপ ও ইঞ্জিনচালিত নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে। মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ থাকবে বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত। তবে ইসির অনুমতি নিয়ে যেকোনো যান চলাচল করতে পারবে।
নির্বাচন কমিশনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এই ছয় আসনের ভোটে সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ থেকে ১৭ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ থেকে ১৮ জন করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে।
আগারগাঁও স্টেশনে নেমে গাড়িতে নিজ বাসভবন গণভবনের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ট্রেনটি ২টা ১১ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশনে পৌঁছায়।
প্রধানমন্ত্রী ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে সব বগি ঘুরে দেখেন।
ট্রেনে যাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী ১টা ৩৪ মিনিটে টিকিট কাটেন। নিজে অর্থ পরিশোধ করেন। ওই সময় শেখ রেহানাও তার টিকিট কাটেন। ওই সময় তাদের হাতে মেট্রোরেলের কার্ড দেয়া হয়। সেটি তুলে ধরে ছবি তোলেন তারা।
মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্টরা। বৃক্ষরোপণ শেষে মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যরা।
মেট্রো ট্রেনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফর করতে দিয়াবাড়ীর তৃতীয় তলার প্ল্যাটফর্মে সফরসঙ্গীরা এসে উপস্থিত হচ্ছেন একে একে। প্রধানমন্ত্রীর সহযাত্রী হিসেবে থাকবেন মন্ত্রী, এমপি, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন ও মুক্তিযোদ্ধারা।
ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড গঠনের মধ্য দিয়ে ছয়টি মেট্রোরেল নির্মাণের কথা আবারও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘চারটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়নাধীন এবং দুটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের জন্য এর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে।’
দেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা যাতে সহজে মেট্রোরেল ব্যবহার করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘বয়স্ক যাত্রীগণ, তাদের সুবিধার জন্য সংরক্ষিত আসন থাকবে। প্রতিটি মেট্রো ট্রেনে একটি স্বতন্ত্র মহিলা কোচ থাকবে, সেখানে মহিলারা চড়তে পারবে, যেতে পারবে। মহিলা যাত্রীদের জন্য পৃথক ওয়াশরুমের ব্যবস্থা থাকবে। তার সঙ্গে শিশুদের পরিচর্যার স্থান থাকবে।’
মেট্রোরেলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা যেন বিনা খরচে ভ্রমণ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছেও বলেও জানান শেখ হাসিনা।
মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরও চারটি মাইলফলক স্পর্শ করল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। এই প্রথম বাংলাদেশ বৈদ্যুতিক ট্রেনের যুগে প্রবেশ করল। মেট্রোরেল দূর নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। রিমোট কন্ট্রোল দ্বারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে এটা পরিচালিত করা হবে। তার ফলে আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছি, এটি তারই একটি অংশ হিসেবেই কাজ করবে। তার ন্যূনতম মাত্রা সংযোজিত হলো। বাংলাদেশ দ্রুতগতির ট্রেনের যুদে পদার্পণ করল। এই মেট্রোরেলে সর্বোচ্চ গতি হবে (প্রতি ঘণ্টায়) ১১০ কিলোমিটার।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ যখন আমরা শুরু করেছি, তখন এসেছিল আরকেটি আঘাত। হলি আর্টিজানের সেই সন্ত্রাসী আক্রমণ। আর অত্যন্ত দুঃখজনক, সেই আক্রমণে এই মেট্রোরেলের যারা পরামর্শক, জাপানিজ নাগরিক, সেই জাপানিজ পরামর্শক সাতজন হলি আর্টিজানে মৃত্যুবরণ করেন। আমি তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি।
‘তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি সমবেদনা জানাই সবার পরিবারকে। এরপরেও আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই জাপানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী (শিনজো আবে), যিনিও ঘাতকের বুলেটের আঘাতে শাহাদাত বরণ করেছেন মাত্র কিছুদিন আগে। কারণ এই কাজ তিনি বন্ধ করে দেননি। কিছু দিনের জন্য থেমে ছিল, কিন্তু তার নির্দেশে আবার মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের মেট্রোরেলের কয়েকটি স্টেশনে তাদের নামফলক আমরা রাখব। তাদের নামফলক উত্তরার দিয়াবাড়ীর মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্রে স্মৃতিস্মারক আমরা স্থাপন করেছি। তাদের নামটি যেন স্মরণ থাকে, আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় আরেকটি পালক আজ বাংলাদেশ তথা ঢাকায় আমরা দিতে পারলাম তথা সংযোজিত করতে পারলাম। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। কিছুক্ষণ আগে সেটা উদ্বোধন করেছি। সেটা হচ্ছে মেট্রোরেল, যার কেতাবি নাম হচ্ছে এমআরটি-সিক্স।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজধানীবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার স্বপ্নপূরণের দিন। মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সরকারের মুকুটে যুক্ত হলো আরেকটি হীরন্ময় পালক।’
তিনি বলেন, “মেট্রোরেলে করে প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন, ‘ইয়েস, উই ক্যান।’ বিশ্বব্যাংক অপবাদ দিতে পারে। তারা অপবাদ দিয়েছে। আমরা বীরের জাতি। আমরা চোরের জাতি নই। মনে অনেকের জ্বালা। অন্তর জ্বালায় মরে। বড়ই অন্তর জ্বালা।”
কাদের বলেন, ‘শত রাস্তা, শত সড়ক এক দিনে। কোথাও দেখেছেন? ভূগোলেও নেই।’
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোরেল নিয়ে কিছু বলতে পারে না। দুর্নীতি নিয়ে কিছু বলতে পারে না। এখন বলছে ভাড়া বেশি।’
জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইচিগুচি তামোহিদে বক্তব্যের শুরুতে বাংলায় বলেন, ‘আমি এখানে এসে অনেক খুশি হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকার সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের চলাচলে এই সংযোজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি একটি নিরাপদ পরিবহন, বিশেষ করে নারীদের জন্য।’
ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনিরো বাংলায় বলেন, ‘জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এই সম্পর্ককে আমি আরও গভীর করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে আমি কাজ করে যাব। এই দ্রুতগতির নিরাপদ পরিবহন সেবার মধ্য দিয়ে ঢাকার চেহারা বদলে যাবে।’
এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করতে পারবে। প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে। এটা বৈদ্যুতিক ট্রেন। এখানে কোনো জীবাশ্ম জ্বালানি বা তরল জ্বালানি ব্যবহার করা হবে না।
‘কাজেই এটা পরিবেশে কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না; বরং পরিবেশ উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কারণ মেট্রো চালু হলে অনেক গাড়ি কমে যাবে। তাই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমে যাবে।’
ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, আরও তিনটি মেট্রোরেলে নির্মাণকাজ বাস্তবায়নাধীন। এমআরটি লাইন-১ বাংলাদেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী এ লাইনের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক বলেন, ‘এমআরটি লাইন ৬-এর মতিঝিল অংশ আগামী ডিসেম্বর ২০২৩-এ উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত করার কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ২০২৫ সালের জুনে এই অংশ চালু করা সম্ভব হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
মন্তব্য