নেত্রকোণার মদনে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে বাবুল চন্দ্র দাস নামের এক মুদি দোকানদার নিহত হয়েছেন।
মদন বাজারের হরি মন্দিরের পাশে রোববার রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
৪০ বছর বয়সী বাবুল মদন গ্রামের হেম চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি মদন বাজারে মুদি দোকান চালাতেন।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তাওহীদুর রহমান বলেন, ‘বাবুল দাস প্রতিদিনের মতো রাত ১০টার দিকে দোকান বন্ধ করে টাকার ব্যাগ নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছিলেন।
‘বাড়ির কাছাকাছি মদন হরি মন্দিরের সামনে যেতেই একদল দুর্বৃত্ত তাকে ছুরিকাঘাত করে টাকার ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়। মন্দিরে থাকা লোকজন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে জানান।
‘ঘটনাস্থলের খুব কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া ব্যাগটি পাওয়া গেছে। তাতে কিছু কাপড়চোপড় থাকলেও টাকা পাওয়া যায়নি।’
ওসি তাওহীদুর বলেন, ‘নিহতের মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অপরাধীদের শনাক্ত করা যায়নি।’
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ৫২ জন বিশিষ্ট নাগরিক। এই হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে তাদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো নাগরিক সমাজের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অধিকারভিত্তিক সংগঠনের ওপর এ ধরনের ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা উদ্বেগজনক। আমরা এর তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানাচ্ছি। রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে নাগরিকদের চলাফেরা ও নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। রাষ্ট্রকে সব নাগরিকের এই অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
২৬ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরীর আকবরশাহ এলাকায় রিজওয়ানা হাসানের গাড়ি লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়া হয়। এ সময় তার সফরসঙ্গী বেলার কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, আকবরশাহ থানাধীন লেকসিটি আবাসিক এলাকায় পাহাড় কেটে ভরাট করা ছড়া পরিদর্শনের সময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহুরুল আলম ওরফে জসিমের নেতৃত্বে তার অনুসারী দুর্বৃত্তরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
ভবিষ্যতে কোনো দখলদার, পাহাড়খেকো, নদীখেকো ও ভূমিদস্যু যেন এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর সাহস না দেখায়, সে বিষয়ে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতেও বিবৃতিতে দাবি জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে সই করেছেন- মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন সুলতানা কামাল, অর্থনীতিবিদ ওয়াহেদউদ্দিন মাহমুদ, পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, মানবাধিকার কর্মী ড. হামিদা হোসেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সভাপতি জেড আই খান পান্না, অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্যপরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাণা দাশগুপ্ত, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, নারীপক্ষ’র সদস্য শিরিন হক, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, আইনজীবী শাহদীন মালিক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত, লেখক রাহনুমা আহমেদ, ব্লাস্ট-এর অনারারি নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, অধ্যাপক আসিফ নজরুল প্রমুখ।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যথেষ্ট প্রয়োজনীয়তা রয়েছে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, প্রকৃত অপরাধী থেকে পুলিশ ও আইনপ্রণেতাদের দুই ধাপ এগিয়ে থাকতে হবে। কারণ আইনকে পাশ কাটিয়ে কিভাবে অপরাধ করা যায় তারা সেই চেষ্টায় থাকে।
শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ আয়োজিত ‘নিরাপদ ডিজিটাল সমাজ: রাষ্ট্রের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী বলেন, বর্তমান বাস্তবতায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যথেষ্ট প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। যে কারণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে তা কেউ বলে না। শুধু বলা হয় বাক-স্বাধীনতা ও সংবাদ ক্ষেত্রের স্বাধীনতা হরণ করার জন্য এই আইন করা হয়েছে, যা মোটেও সঠিক নয়।
মন্ত্রী বলেন, আইন হলে তার কিছু অপব্যবহার হয়, এটা স্বাভাবিক। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে পাশ কাটিয়ে কিভাবে অপরাধ করা যায় সে ব্যাপারেও চেষ্টা হবে। কারণ অপরাধীরা সব সময় একধাপ এগিয়ে থাকার চেষ্টা করে । পুলিশ ও আইন প্রণেতাদের এখন প্রকৃত অপরাধীদের থেকে দুই ধাপ এগিয়ে থাকার চেষ্টা করতে হবে।
ডাটা সুরক্ষা আইন প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, আগে আইন প্রণয়ন করার আগে অংশীজনদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ করা হতো না। এখন অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে আইন তৈরি করা হয়। অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ও পরামর্শ করেই ডাটা সুরক্ষা আইন করা হবে। এ নিয়ে বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ নেই।
আনিসুল হক বলেন, ‘এখন আমরা গ্লোবাল সিটিজেন হয়েছি। আবার বর্তমানের অনেক অপরাধ ট্রান্স বর্ডার হয়েছে। এসব অপরাধকে মোকাবিলা করার জন্য মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসটেন্স অ্যাক্ট প্রণয়ন করা হয়েছে। পৃথিবীর প্রায় সব দেশ এই আইন প্রণয়ন করেছে।
এপিনিকের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল মেম্বার সুমন আহমেদ সাব্বিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিজিডি ই-গভ সিআইআরটি’র প্রকল্প পরিচালক তারেক এম বরকত উল্লাহ।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান, বিটিআরসির কমিশনার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন, ডিএমপির এডিসি মো. নাজমুল ইসলাম, আইসিটি বিষয়ক সাংবাদিক রাশেদ মেহেদী প্রমুখ।
আরও পড়ুন:দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার চুনিয়াপাড়ায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে জোড়া খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে মামলা হয়েছে।
অজ্ঞাতনামা এক হাজার ২০০ জনকে আসামি করে শুক্রবার রাতে মামলাটি করেন উপজেলার ঘোড়াঘাট ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ সুনীল চন্দ্র দাস।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসান কবির মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় স্থানীয় এক গ্রাম পুলিশ অজ্ঞাতনামা এক হাজার ২০০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন। আসামিদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। আর হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
খোদাদাতপুর গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধে বুধবার সকালে প্রতিপক্ষের হামলায় মনোয়ার হোসেন (২৪) ও রাকিব হোসেন (২৫) নামের দুজন নিহত হন। পরদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দুপুরে দুজনের জানাজা চলছিল। এ সময় নিহত ব্যক্তিদের পক্ষের লোকজন চুনিয়াপাড়ায় বাড়ি বাড়ি ঢুকে অগ্নিসংযোগ করেন বলে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির লোকজন অভিযোগ করেছেন। অগ্নিসংযোগকালে লোকজন লাঠিসোঁটা, দা ও কোদাল নিয়ে প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালান। এ সময় প্রাণ বাঁচাতে নারী, শিশু ও পুরুষেরা বাড়িঘর ছেড়ে দৌড়ে পালান।
মামলার এজাহারে বাদী সুনীল চন্দ্র দাস উল্লেখ করেছেন, নিহত দুজনের জানাজা ও দাফনকাজে উপস্থিত খোদাদাতপুর ও পাশের গ্রামের লোকজন লাঠিসোঁটা, দা ও কোদাল নিয়ে চুনিয়াপাড়ায় প্রতিপক্ষের বাড়িসহ আশপাশের বাড়িঘরে হামলা চালান। এ সময় সেখানে উপস্থিত থানা-পুলিশসহ গ্রাম পুলিশের সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রাণপণ চেষ্টা করেন। পরে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টাকালে হামলাকারীরা চুনিয়াপাড়ার আবদুস সালাম, তোতা মিয়া, নুরুল ইসলাম, হাফিজুর রহমানের বাড়িসহ আশপাশের কিছু টিনের বসতবাড়ি এবং বাড়ির সামনে খড়ের গাদায় আগুন লাগিয়ে দেন। এ ছাড়া নজরুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলী, আবদুল ওহাব, মোগেন ওরফে মকবুল হোসেনের বাড়িসহ ২০ থেকে ২৫টি বাড়ি ভাঙচুর করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, বাড়িঘরে আগুন লাগানো, ভাঙচুর, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র লুট এবং গরু-ছাগল চুরির ঘটনায় প্রায় সাড়ে ১৬ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে। পরে পার্শ্ববর্তী থানাগুলো থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আরও পড়ুন:এক বছরের বেশি সময় আগে আশুলিয়ার জিরাবো এলাকায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে এক প্রবাসীর মালামাল ও তার ভাড়া করা প্রাইভেটকারটি ছিনতাই হয়।
এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের বিশেষায়িত তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের(পিবিআই)। সেই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে লুট করা মালামাল ও প্রাইভেটকারটি।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন- গোপালগজ্ঞ মোকসুদপুরের মো. সোহাগ ও ধামরাইয়ের শরিফুল ইসলাম। শরিফুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মীর মো. শাফিন মাহমুদ এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘২০২১ সালের ২৫ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১২টার দিকে ডিবি পরিচয়ে আসা একদল ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন সৌদি আরব প্রবাসী মো. আমিনুল ইসালামসহ একটি প্রাইভেটকারে থাকা তিনজন। ওই সময় তাদের কাছে থাকা মালামাল, নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও প্রাইভেটকারটি ছিনিয়ে নেয়া হয়। আমরা এই মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করি। এ চক্রের আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
এ ছিনতাইয়ের পর প্রাইভেটকারটির মালিক রেন্ট-এ কার ব্যবসায়ী মো. আব্দুল মালেক বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মামলা করেন। প্রথমে থানা পুলিশ দীর্ঘ দিন মামলাটি তদন্ত করলেও ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেয়।
পিবিআইর তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এই ছিনতাইকারী চক্রটি বিমানবন্দর থেকে প্রবাসীকে বহন করা গাড়িটি অনুসরণ করে আসছিল। সুযোগ বুঝে ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে তারা ছিনতাই করে। এভাবে ২০২১ সালে আরও অন্তত ১০টি ছিনতাই ঘটিয়েছে চক্রটি।’
তাদের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারে পিবিআই ঢাকা জেলা কাজ করছে বলেও জানিয়েছেন মো. শহিদুল ইসলাম।
আরও পড়ুন:মাদক মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আব্দুল আহাদ ওরফে লিমন ওরফে ভিপি লিমনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিকেলে র্যাব-২ এর জ্যৈষ্ঠ সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) মো. ফজলুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ফজলুল হক জানান, গ্রেপ্তার আব্দুর আহাদ ওরফে ভিপি লিমন একজন পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। ২০১৪ সালে একটি মাদক মামলায় দু বছর জেলে থেকে জামিনে বের হয়ে তিনি আত্মগোপন করেন। বিভিন্ন পরিচয়ে আত্মগোপনে থেকে তিনি আবারও মাদক ব্যবসা চালিয়ে যান।
তিনি জানান, এরমধ্যে বিচার শেষে আদালত তাকে যাবজ্জীবন সাজা দেয়। পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ৭ বছর পলাতক থাকার পর গোয়েন্দা তথ্যে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ভিপি লিমন মাদক মামলায় সাজা হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে জানান র্যাব কর্মকর্তা ফজলুল হক। তিনি জানান, লিমন জানিয়েছন, আত্মগোপনে থাকার সময় কখনও রাজমিস্ত্রি আবার কখনও অটোরিকশা চালাতেন। এসব কাজের আড়ালে মাদক পরিবহন ও বিক্রির কাজ করতেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় তিনটি মাদক মামলা রয়েছে বলেও স্বীকার করেন।
র্যাব কর্মকর্তা জানান, এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য গ্রেপ্তার আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:সমুদ্রপথে চট্টগ্রামে প্রবেশের সময় একটি ফিশিং বোট থেকে ২ লাখ পিস ইয়াবাসহ ৫ মাদক কারবারিকে আটক করেছে র্যাব। তাদের মধ্যে একজন রোহিঙ্গা সদস্যও রয়েছে। জব্দ ইয়াবার বাজার মূল্য প্রায় ৬ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা লঞ্চঘাট থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটক ৫ জন হলেন- নুরুল আবছার, মেহের আলী, আব্দুল হামিদ, কালু ও নুরু হাসান। তাদের মধ্যে নুরু হাসান রোহিঙ্গা। বাকি চারজন কুতুবদিয়া এলাকার বাসিন্দা।
র্যাব-৭ এর কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মেহেদী হাসান বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি যে টেকনাফের শাপলাপুর থেকে ফিশিং বোটে ইয়াবার বড় একটি চালান চট্টগ্রামে প্রবেশের চেষ্টা করছে। এজন্য আমরা বিভিন্ন ঘাট ও সমুদ্রে নজরদারি বৃদ্ধি করি।
‘এক পর্যায়ে বোটটি বাঁশখালী ও আনোয়ারার দিকে প্রেবেশের চেষ্টা করে। পরে বোটটি শনাক্ত করে ধাওয়া করলে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা লঞ্চঘাটে থামে। এ সময় ৫ মাদক কারবারিসহ বোটটি আটক করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘মাদক কারবারিদের আটকের পর তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ওই ফিশিং বোটের মাছের ড্রাম থেকে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় ২০টি প্যাকেটে ২ লাখ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। জব্দ এসব ইয়াবার মূল্য প্রায় ৬ কোটি টাকা। তারা টেকনাফের সীমান্ত এলাকা থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইয়াবা সরবরাহ করে আসছিল।’
আরও পড়ুন:গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নজরুল ইসলাম নামে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত এক কয়েদি আত্মহত্যা করেছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে হাই সিকিউরিটি কারাগারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার দায়ে এক কারারক্ষীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কারাগারের ভেতরে আত্নহত্যার চেষ্টা করেন ওই কয়েদি। পরে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হলে মারা যান তিনি।
কয়েদি নজরুল ইসলামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া পাবদা গ্রামে। স্ত্রী ও সন্তান হত্যার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে পাকুন্দিয়া থানায় ২০১৭ সালে মামলা হয়। ওই মামলায় ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নজরুলকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের সিনিয়র সুপার সুব্রত কুমার বালা জানান, নজরুল মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। কারাগারে তার চিকিৎসা চলছিল। বৃহস্পতিবার সকালে কারাগারের ভেতরে ফ্যানের সঙ্গে রশি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। কারা কর্তৃপক্ষ তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কারা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় রফিকুল ইসলাম নামে এক কারারক্ষীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আরও দুই কারারক্ষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার প্রস্তুতি চলছে। তবে ওই দুই কারারক্ষীর নাম জানাননি তিনি।
মন্তব্য