বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে ডাকাত দলের সদস্যদের সহযোগিতার অভিযোগে পাঁচ নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করেছে আওয়ামী লীগ।
গ্রেপ্তার একটি ডাকাত দলের প্রধান নাঈম দেওয়ান জিজ্ঞাসাবাদে ওই পাঁচজনকে নিয়ে পুলিশের কাছে তথ্য দেন। এর পরই তাদের নিয়ে দলের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন খান।
তিনি বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগের জরুরি সভায় পাঁচ নেতা-কর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য দড়িরচর খাজুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সালাম দেওয়ান, ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদ দেওয়ান, ইউনিয়ন যুবলীগ আহ্বায়ক মোশারেফ আকন, দলীয় কর্মী বাচ্চু ও কাশেম দেওয়ানকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।’
পুলিশ জানায়, মেহেন্দিগঞ্জে মেঘনা নদী এলাকায় ডাকাত দলের প্রধান নাঈম দেওয়ান গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাদের গডফাদার ও সহযোগী হিসেবে ৫ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতার নাম প্রকাশ করেন নাঈম।
এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরই দলের ওই পাঁচ নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় উপজেলা আওয়ামী লীগ।
মেহেন্দিগঞ্জে পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর সহযোগী হিসেবে সুনির্দিষ্টভাবে আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতাকর্মীর নাম বলেছেন আন্তজেলা ডাকাত দলের প্রধান নাঈম দেওয়ান।
নাঈমের অভিযোগ, ডাকাতির ভাগ দিতে হয় ক্ষমতাসীন দলের ওই নেতাদের, যাদের মধ্যে দুজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিও রয়েছেন।
যে নেতাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হয়েছে, তারা সেটি অস্বীকার করে দাবি করেছেন, মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসি সঙ্গে বিরোধ আর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রের কারণে এসব মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।
থানায় সাংবাদিকদের সামনে পুলিশের কাছে দেয়া নাঈম দেওয়ানের বক্তব্যের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যা নিয়ে বরিশালে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
কী আছে ভিডিওতে
বরিশালের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মেহেন্দিগঞ্জ ও হিজলা উপজেলায় বছরজুড়েই হয় ডাকাতি। সম্প্রতি ডাকাতদের ধরতে বিশেষ অভিযানে নামে পুলিশ।
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে গ্রেপ্তার হন আন্তজেলা ডাকাত দলের ছয় সদস্য। এদের দেয়া তথ্যে ৭ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার হন ওই দলের প্রধান নাঈম দেওয়ান।
পুলিশ জানিয়েছে, মেহেন্দিগঞ্জের দড়িরচর খাজুরিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা নাঈমের নামে বরিশালের বিভিন্ন থানায় হত্যা ও ডাকাতির ১৪টি মামলা আছে।
নাঈমকে আটকের পর মেহেন্দিগঞ্জে যান বরিশালের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন। তার উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের সামনে আনা হয় নাঈমকে।
সে সময় নানা প্রশ্নের উত্তরে ডাকাতির সহযোগী হিসেবে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের পাঁচজন নেতার নাম বলেন নাঈম।
ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশকে নাঈম বলছেন, এসব নেতাকে নিয়মিত ডাকাতির ভাগ দেয়ার পাশাপাশি প্রতি মাসে টাকা দিতে হয়।
অভিযোগের বিষয়ে কী বলছেন আওয়ামী লীগ নেতারা
ডাকাতির সঙ্গে যুক্ত বলে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, তাদের তিনজন হলেন দড়িরচর-খাজুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) পঙ্কজ দেবনাথের অনুসারী সালাম দেওয়ান, ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য শহীদ দেওয়ান এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য, ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক ও জেলা আওয়ামী লীগের আরেক পক্ষের সমর্থক মোশাররফ আকন।
নাঈমের দেয়া স্বীকারোক্তিতে বাচ্চু ও কাশেম দেওয়ান নামে আরও দুজনের নাম এসেছে, যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হলেও কোনো পদে নেই।
ডাকাত দলপ্রধানের অভিযোগের বিষয়ে সকালে সালাম দেওয়ান বলেন, ‘আমি এমপির গ্রুপের লোক বলে আমার বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে। তা ছাড়া থানার ওসির সঙ্গে আমার বিরোধ রয়েছে। আমি তার বিরুদ্ধে একবার সাক্ষী দিয়েছিলাম। এর প্রতিশোধ হিসেবে গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত দিয়ে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
‘ভালো করে ভিডিওটি দেখলে দেখবেন যে, নাঈম একবারও আমার নাম বলেনি। ওসি তার মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে আমার নাম বলেছে।’
মেহেন্দিগঞ্জের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ইউপি সদস্য শহীদ দেওয়ান বলেন, ‘এটা সবার জানা যে, এখানে আওয়ামী লীগে দুই গ্রুপ। স্থানীয় এমপি পঙ্কজ দেবনাথ এবং জেলা। জেলা বলতে জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। আমি এমপি গ্রুপের বলে ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছি।
‘এই উপজেলায় আমি বহু চোর-ডাকাত ধরে থানায় দিয়েছি। আর আজ আমাকে বলা হচ্ছে ডাকাতের গডফাদার। এসবই মিথ্যা; বরং নাঈম জেলা আওয়ামী লীগের যেসব নেতার নাম বলেছে, তারা এসবের সঙ্গে জড়িত।’
৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক মোশাররফ আকন বলেন, ‘গ্রেপ্তার নাঈম দেওয়ান শহীদ দেওয়ানের ভাতিজা। আমার বংশের সবার ব্যাপারে খোঁজ নিন। দেখুন আমার আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে কেউ কোনো অপকর্মের সঙ্গে আছে কি না।
‘এই শহীদ দেওয়ানসহ এমপি গ্রুপের যারা আছে, তাদের অনেকের বিরুদ্ধেই ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে। শহীদ দেওয়ানের পরিবারে এমন অনেকে আছে, যারা ডাকাতিসহ নানা অপরাধে বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়েছে। কিছুদিন আগে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া অহিদ দেওয়ানও এই শহীদ দেওয়ানের ভাই।’
পুলিশের ভাষ্য
মেহেন্দিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ডাকাত নাঈমকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হয়নি। রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে। রিমান্ডে পাওয়া গেলে অভিযোগ সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে।’
বিরোধের কারণে নাম জড়ানোর অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশের আইনকানুন এতটা দুর্বল নয় যে চাইলেই কাউকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো যাবে। যারা এসব বলছেন, তারা না বুঝে বলছেন। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।’
আরও পড়ুন:সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নতুন তিন বিচারক শপথ গ্রহণ করেছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান তাদের শপথ পাঠ করান। খবর বাসসের
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী পরিচালনায় শপথ অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, শপথ পাঠকারী তিন বিচারপতির পরিবারের সদস্য, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হক এবং সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রিার কার্যালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার রাষ্ট্রপতি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫(১)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগের তিন বিচারক ১) বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ২) বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম ৩) বিচারপতি কাশেফা হোসেনকে আপিল বিভাগের বিচারক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন।
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা নদীতে বুধবার রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় দুটি ড্রেজার জব্দ করেছে নৌ-পুলিশ।
মাওয়া নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে উপজেলার মেদিনীমণ্ডল ইউনিয়নের যশিলদিয়ায় বুধবার রাত দেড়টার দিকে পদ্মা নদীতে অভিযান চালানো হয়। ওই সময় নিয়ম অমান্য করে বালু উত্তোলন করায় ওই দুটি ড্রেজার জব্দ করা হয়।
তিনি আরও জানান, ড্রেজার জব্দ করার সময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। জব্দকৃত ড্রেজার দুটির বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে সম্পত্তির লোভে মারধর করে আপন ভাতিজিকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের কুমুদপুর গ্রামে বুধবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নারীসহ তিনজনকে আট করেছে পলাশবাড়ী থানা পুলিশ।
প্রাণ হারানো তরুণীর নাম শারমিন আক্তার (২২), যিনি প্রয়াত শুক্কুর উদ্দিনের মেয়ে। বিয়ে বিচ্ছেদের পর শারমিন বাবার বাড়িতেই থাকতেন।
শারমিনের অভিযুক্ত চাচার নাম আবদুল খালেক।
তরুণীর পরিবার, স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানায়, প্রায় এক বছর আগে পিতৃহারা শারমিনকে কৌশলে বিয়ে দেন তার চাচারা। বিয়ের পর তালাক হলে সমঝোতায় দেনমোহরের টাকা শারমিনকে না দিয়ে আত্মসাৎ করেন তার বড় চাচা আবদুল খালেক। সেই টাকা ও শারমিনের নামে থাকা জমি নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল।
তারা আরও জানান, সম্পত্তি নিয়ে বুধবার বেলা ১১টার দিকে শারমিনের সঙ্গে তার চাচাদের বিরোধ বাধে। ওই সময় অভিযুক্তদের মারধরে গুরুতর আহত হন শারমিন। পরে আহত শারমিনকে অভিযুক্তরাই উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য গাইবান্ধার জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
শারমিনের দুলাভাই রুহুল আমিন বলেন, ‘শারমিন ও শাম্মী আপন দুই বোন। আমার শ্বশুর (শারমিনের বাবা) মারা গেছেন। বাবা মারা যাওয়ার পর শারমিন আমার বাড়িতেই থাকত। পরে শারমিনের বাবলু নামের এক ফুফা ও তার জ্যাঠারা মিলে কৌশলে শারমিনকে আমার বাড়ি থেকে নিয়ে এসে বিয়ে দেন।
‘বিয়ের তিন-চার মাস পরই তালাক হয় শারমিনের। তখন থেকেই শারমিন আমার শাশুড়ির সাথে তার বাবার বাড়িতেই থাকত।’
শারমিনের মা এবং এ তরুণীর দুলাভাই রুহুল আমিনের অভিযোগ, শাম্মী ও শারমিনের নামে ৩২ শতাংশ জমি আছে। সেই জমি নেয়ার লোভে ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন সময়ে ঝগড়া-বিবাদ, গালিগালাজসহ শারমিনকে মারধর করতেন তার চাচা আবদুল খালেক। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার শারমিনের কাছে জমি চেয়ে মারধর শুরু করেন তিনি। পরে আবদুল খালেকের ভাই আবদুল বারী, ভাতিজা রহমান ও ছকু নামের একজন মারধর করতে থাকেন। ওই সময় তাদের মারধরে শারমিন ঘটনাস্থলেই মারা যান।
মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পলাশবাড়ী থানার ওসি কেএম আজমিরুজ্জামান বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় নারীসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
‘নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মামলা হলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ওই সময় এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ‘প্রাথমিক সুরতহালে নিহতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া গলাতে কোনো দাগ চোখে পড়েনি, তবে শ্বাসরোধের বিষয়টি ক্লিনিক্যালি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না।’
আরও পড়ুন:নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার উত্তর পাকুরীয়া গ্রামের এক নাবালিকা ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা মামলায় এক মাদ্রাসা শিক্ষককে দশ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড হয়েছে।
নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মেহেদী হাসান তালুকদার বুধবার এ রায় দেন। জরিমানার অর্থ ভুক্তভোগী ছাত্রীকে প্রদানের নির্দেশ দেন বিচারক।
দণ্ডাদেশ পাওয়া ওই শিক্ষকের নাম আবুল হাসান। ২৫ বছর বয়সী আবুল হাসান বদলগাছী উপজেলার উত্তর পাকুরীয়া গ্রামের বাসিন্দা ও একটি মাদ্রাসার আরবি বিষয়ের শিক্ষক।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ২৯ মে সকাল ছয়টার সময় নয় বছর বয়সী ওই মেয়েটি একই গ্রামের আরবি শিক্ষক আবুল হাসানের বাড়িতে আরবি পড়তে যায়। সে সময় অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীরা না আসায় তাকে একা পেয়ে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন তিনি। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীর মা বদলগাছী থানায় অভিযোগ করলে তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা মেলায় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। আদালত আট জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বুধবার রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন।
এদিন আসামির উপস্থিতিতে তাকে দেয়া সাজার রায় পড়ে শোনানো হয় এবং শেষে তাকে জেলা কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন বিচারক।
রাষ্ট্রপক্ষে বিশেষ কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট আজিজুল হক ও আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ মামলা পরিচালনা করেন। রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করে এবং আসামিপক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানায়।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরীর নেতৃত্বে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন সাংবাদিকরা।
টেলিভিশন ক্যামেরাম্যান জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের (টিসিএ) উদ্যোগে বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুক, মহাসচিব দীপ আজাদ, ডিইউজে সভাপতি সাজ্জাদ আলম তপু ও সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মুজতবা ধ্রুব, বাচসাস সভাপতি রাজু আলীম, সাধারণ সম্পাদক রিমন মাহফুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবু প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সাংবাদিকরা নানা ক্ষেত্রে আজ নির্যাতিত। তারা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নানাভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেন তাদেরকে আমরা মননশীল মনে করি। কিন্তু তারা যখন মাস্তানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন, তখন তারা সমাজে কী বার্তা দেন?
নারকীয় এই হামলায় নেতৃত্ব দেয়া জয় চৌধুরী, শিবা শানু ও আলেকজান্ডার বোসহ হামলায় জড়িত সবাইকে শিল্পী সমিতির সদস্যপদ বাতিলসহ আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।
মানববন্ধনে আরও অংশ নেন বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত বিনোদন বিটের সাংবাদিকরা।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিকেলে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে শিবা শানু, জয় চৌধুরী ও আলেকজান্ডার বোর নেতৃত্বে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করা হয়। এতে প্রায় ২০ জন সাংবাদিক আহত হন। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন চারজন।
তদন্ত কমিটি
এদিকে হামলার ঘটনা তদন্তে ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি ও সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে পাঁচ জন করে রাখা হয়েছে। আর উপদেষ্টা হিসেবে আছেন প্রযোজক আরশাদ আদনান।
দশজনের তদন্ত কমিটিতে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে লিমন আহমেদ, রাহাত সাইফুল, আহমেদ তৌকির, বুলবুল আহমেদ জয় ও আবুল কালাম এবং শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে মিশা সওদাগর, ডি এ তায়েব, নানাশাহ, রুবেল ও রত্না রয়েছেন।
আরও পড়ুন:পঞ্চগড়ের বোদা-দেবীগঞ্জ জাতীয় মহাসড়কে ট্রাক ও ট্রলির (ট্রাক্টর) মুখোমুখি সংঘর্ষে এক পথচারী নারীসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চার জন।
বুধবার সকালে বোদা উপজেলার চন্দনবাড়ি ইউনিয়নের কলাপাড়া নামক স্থানে মহাসড়কে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহতরা হলেন- বোদা পৌরসভার সদ্দারপাড়া গ্রামের সাফিরের স্ত্রী ৬০ বছর বয়সী নুরজাহান ও একই উপজেলার মাজগ্রাম এলাকার মানিক ইসলামের ছেলে ২৫ বছর বয়সী জাহিদ ইসলাম।
বোদা থানার ওসি মোজাম্মেল হক দুজনের নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেবীগঞ্জ থেকে পঞ্চগড়গামী একটি দ্রুতগামী ট্রাক ও বিপরীতমুখী একটি ট্রলির সংঘর্ষ হয়। এ সময় ঘটনাস্থলের পাশে থাকা এক পথচারী নারীকে গাড়িদুটি চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। দুর্ঘটনায় ট্রলির চালক জাহিদও ঘটনাস্থলে নিহত হন। এছাড়া স্থানীয়দের সহায়তায় আহতদের দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। বর্তমানে তারা সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী হোসেনের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। বুধবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে নির্বাচনি প্রচারণার সময় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
হামলায় আহত চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী হোসেনকে প্রথমে জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে আহত আলী হোসেন বলেন, ‘কাপ-পিরিচ প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কিশোর রায় চৌধুরী মনি ও পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনফর আলীর নির্দেশে সাইদুল, মুহিব, সোহেলদের নেতৃত্বে আমার ওপর এই হামলা হয়েছে। এ সময় আমাকে অপহরণেরও চেষ্টা করা হয়।’
ভাইরাল হওয়া অপর এক ভিডিওতে চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী হোসেনকে জোর করে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করার দৃশ্য দেখা যায়।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী হোসেনসহ আরও তিনজন ঘোড়া প্রতীক চেয়েছিলেন। প্রতীক বরাদ্দের দিন বিষয়টি নিয়ে অনেক হট্টগোল হয়। একাধিক প্রার্থী হওয়ায় লটারির মাধ্যমে আলী হোসেন ঘোড়া প্রতীক পান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী কিশোর রায় চৌধুরী মনি ও পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনফর আলীর নির্দেশে এই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলার বিষয়ে বক্তব্য জানতে কাপ-পিরিচ প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কিশোর রায় চৌধুরী মনির মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
জুড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির বলেন, হামলার এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য