বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে ডাকাত দলের সদস্যদের সহযোগিতার অভিযোগে পাঁচ নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করেছে আওয়ামী লীগ।
গ্রেপ্তার একটি ডাকাত দলের প্রধান নাঈম দেওয়ান জিজ্ঞাসাবাদে ওই পাঁচজনকে নিয়ে পুলিশের কাছে তথ্য দেন। এর পরই তাদের নিয়ে দলের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন খান।
তিনি বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগের জরুরি সভায় পাঁচ নেতা-কর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য দড়িরচর খাজুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সালাম দেওয়ান, ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদ দেওয়ান, ইউনিয়ন যুবলীগ আহ্বায়ক মোশারেফ আকন, দলীয় কর্মী বাচ্চু ও কাশেম দেওয়ানকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।’
পুলিশ জানায়, মেহেন্দিগঞ্জে মেঘনা নদী এলাকায় ডাকাত দলের প্রধান নাঈম দেওয়ান গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাদের গডফাদার ও সহযোগী হিসেবে ৫ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতার নাম প্রকাশ করেন নাঈম।
এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরই দলের ওই পাঁচ নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় উপজেলা আওয়ামী লীগ।
মেহেন্দিগঞ্জে পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর সহযোগী হিসেবে সুনির্দিষ্টভাবে আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতাকর্মীর নাম বলেছেন আন্তজেলা ডাকাত দলের প্রধান নাঈম দেওয়ান।
নাঈমের অভিযোগ, ডাকাতির ভাগ দিতে হয় ক্ষমতাসীন দলের ওই নেতাদের, যাদের মধ্যে দুজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিও রয়েছেন।
যে নেতাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হয়েছে, তারা সেটি অস্বীকার করে দাবি করেছেন, মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসি সঙ্গে বিরোধ আর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রের কারণে এসব মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।
থানায় সাংবাদিকদের সামনে পুলিশের কাছে দেয়া নাঈম দেওয়ানের বক্তব্যের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যা নিয়ে বরিশালে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
কী আছে ভিডিওতে
বরিশালের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মেহেন্দিগঞ্জ ও হিজলা উপজেলায় বছরজুড়েই হয় ডাকাতি। সম্প্রতি ডাকাতদের ধরতে বিশেষ অভিযানে নামে পুলিশ।
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে গ্রেপ্তার হন আন্তজেলা ডাকাত দলের ছয় সদস্য। এদের দেয়া তথ্যে ৭ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার হন ওই দলের প্রধান নাঈম দেওয়ান।
পুলিশ জানিয়েছে, মেহেন্দিগঞ্জের দড়িরচর খাজুরিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা নাঈমের নামে বরিশালের বিভিন্ন থানায় হত্যা ও ডাকাতির ১৪টি মামলা আছে।
নাঈমকে আটকের পর মেহেন্দিগঞ্জে যান বরিশালের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন। তার উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের সামনে আনা হয় নাঈমকে।
সে সময় নানা প্রশ্নের উত্তরে ডাকাতির সহযোগী হিসেবে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের পাঁচজন নেতার নাম বলেন নাঈম।
ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশকে নাঈম বলছেন, এসব নেতাকে নিয়মিত ডাকাতির ভাগ দেয়ার পাশাপাশি প্রতি মাসে টাকা দিতে হয়।
অভিযোগের বিষয়ে কী বলছেন আওয়ামী লীগ নেতারা
ডাকাতির সঙ্গে যুক্ত বলে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, তাদের তিনজন হলেন দড়িরচর-খাজুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) পঙ্কজ দেবনাথের অনুসারী সালাম দেওয়ান, ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য শহীদ দেওয়ান এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য, ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক ও জেলা আওয়ামী লীগের আরেক পক্ষের সমর্থক মোশাররফ আকন।
নাঈমের দেয়া স্বীকারোক্তিতে বাচ্চু ও কাশেম দেওয়ান নামে আরও দুজনের নাম এসেছে, যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হলেও কোনো পদে নেই।
ডাকাত দলপ্রধানের অভিযোগের বিষয়ে সকালে সালাম দেওয়ান বলেন, ‘আমি এমপির গ্রুপের লোক বলে আমার বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে। তা ছাড়া থানার ওসির সঙ্গে আমার বিরোধ রয়েছে। আমি তার বিরুদ্ধে একবার সাক্ষী দিয়েছিলাম। এর প্রতিশোধ হিসেবে গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত দিয়ে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
‘ভালো করে ভিডিওটি দেখলে দেখবেন যে, নাঈম একবারও আমার নাম বলেনি। ওসি তার মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে আমার নাম বলেছে।’
মেহেন্দিগঞ্জের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ইউপি সদস্য শহীদ দেওয়ান বলেন, ‘এটা সবার জানা যে, এখানে আওয়ামী লীগে দুই গ্রুপ। স্থানীয় এমপি পঙ্কজ দেবনাথ এবং জেলা। জেলা বলতে জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। আমি এমপি গ্রুপের বলে ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছি।
‘এই উপজেলায় আমি বহু চোর-ডাকাত ধরে থানায় দিয়েছি। আর আজ আমাকে বলা হচ্ছে ডাকাতের গডফাদার। এসবই মিথ্যা; বরং নাঈম জেলা আওয়ামী লীগের যেসব নেতার নাম বলেছে, তারা এসবের সঙ্গে জড়িত।’
৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক মোশাররফ আকন বলেন, ‘গ্রেপ্তার নাঈম দেওয়ান শহীদ দেওয়ানের ভাতিজা। আমার বংশের সবার ব্যাপারে খোঁজ নিন। দেখুন আমার আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে কেউ কোনো অপকর্মের সঙ্গে আছে কি না।
‘এই শহীদ দেওয়ানসহ এমপি গ্রুপের যারা আছে, তাদের অনেকের বিরুদ্ধেই ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে। শহীদ দেওয়ানের পরিবারে এমন অনেকে আছে, যারা ডাকাতিসহ নানা অপরাধে বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়েছে। কিছুদিন আগে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া অহিদ দেওয়ানও এই শহীদ দেওয়ানের ভাই।’
পুলিশের ভাষ্য
মেহেন্দিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ডাকাত নাঈমকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হয়নি। রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে। রিমান্ডে পাওয়া গেলে অভিযোগ সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে।’
বিরোধের কারণে নাম জড়ানোর অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশের আইনকানুন এতটা দুর্বল নয় যে চাইলেই কাউকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো যাবে। যারা এসব বলছেন, তারা না বুঝে বলছেন। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীতে চলাচল করা এক গণপরিবহনের হেলপারের বিরুদ্ধে যাত্রীকে মারধর ও ছুরি হাতে তাড়া করার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দুপুরে রাজধানীর ইসিবি চত্বর থেকে কারওয়ানবাজারের দিকে আসার পথে এ ঘটনা ঘটে।
আক্রান্ত বাসযাত্রী নুরুন্নবী দৈনিক পত্রিকায় সহ-সম্পাদক হিসেবে কর্মরত। তিনি বলেন, ‘ইসিবি চত্বর থেকে কারওয়ান বাজারে আসার জন্য ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের একটি বাসে উঠি। হেলপার ভাড়া চাইলে এই পথের জন্য ২৫ টাকা দেই। কিন্তু সহকারী আরও ৫ টাকা দাবি করেন।
‘ভাড়া নিয়ে বচসার এক পর্যায়ে বাসের সহকারী আমাকে মারধর শুরু করলে অন্য যাত্রীরা তাকে থামান। ইতোমধ্যে বাসের হেলপার আমার জামা ছিঁড়ে ফেলেন। পরে ফার্মগেট পার হয়ে তেজতুরি বাজার ফুটওভার ব্রিজের কাছে আমি নেমে যাই। সেখানে ছেঁড়া জামা খুলে ফুটপাত থেকে একটি গেঞ্জি কিনে পরে নেই।’
নুরুন্নবী জানান, ওই বাসটি কারওয়ান বাজার ঘুরে আবার ফার্মগেটের দিকে আসতে থাকে। তখন তিনি আবার সেই হেলপারকে তার দিকে আসতে দেখে ভয়ে একটি মিষ্টির দোকানে ঢুকে পড়েন। এ সময় হেলপার ওই দোকান থেকে একটি ছুরি নিয়ে তাড়া করলে আশপাশের লোকজন তাকে থামান। এ সময় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে সাহায্য চান নুরুন্নবী।
বেলা ২টার পর একজন পুলিশ সদস্য ফার্মগেটে এসে নুরুন্নবীকে সঙ্গে নিয়ে ফার্মগেটে ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্টের কাউন্টারে যান। সেখানে দায়িত্বরত ব্যক্তিকে বিষয়টি খুলে বললে অভিযুক্তকে খুঁজে বের করার তোড়জোড় চলে।
এ ব্যাপারে ট্রাস্ট পরিবহনের চিফ সুপারভাইজার তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের পরিবহনের সুনাম ক্ষুণ্ন করবে। আমরা চেষ্টা করছি হেলপারকে চিহ্নিত করতে। অনেক চালক ও হেলপারকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আমরা দ্রুতই দোষীকে শনাক্ত করব।’
তেজগাঁও থানা পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশ ও বাস মালিক পক্ষ দোষীকে শনাক্ত করার চেষ্টা করছে। দোষী হেলপারকে চিহ্নিত করার পর তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
র্যাব সদস্যদের শাসক না হয়ে জনগণের সেবক হতে বলেছেন বাহিনীটির মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন। ক্যাম্প ইনচার্জরা সাধারণ মানুষের কথা শোনেন না- এমন অভিযোগ যেন আর শুনতে না হয় সে বিষয়েও ব্যাটালিয়নগুলোর অধিনায়ক ও সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করেছেন তিনি।
র্যাবের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও র্যাব মেমোরিয়াল ডে-২০২৩ উপলক্ষে সোমবার র্যাব মহাপরিচালকের দরবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। র্যাব সদর দপ্তরের শহীদ লে. কর্নেল আজাদ মেমোরিয়াল হলে এই আয়োজন করা হয়।
দরবারে বিভিন্ন ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক, ক্যাম্প কমান্ডারসহ উপস্থিত কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেয়া বক্তব্যে এম খুরশীদ হোসেন বলেন, ‘আমরা শাসক না, সেবক হতে চাই। আমরা চাই নিরীহ, অসহায়, বিপদগ্রস্ত মানুষকে আন্তরিকতা দিয়ে সহযোগিতা করতে। দেখবেন দিন শেষে, চাকরি জীবন থেকে অবসরে গিয়ে আত্মতৃপ্তি পাবেন। আর যদি উল্টোটা করেন তাহলে আপনার বিবেক আপনাকে কষ্ট দেবে।’
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘আজ আমরা শহীদ পরিবারের কথা শুনেছি। আমরা হয়তো তাদেরকে কিছু আর্থিক সহায়তা ও উপহার দেই। কিন্তু যে সন্তান পিতাহারা, যে স্ত্রী স্বামীহারা হয়েছেন তাদের শূন্যতা আমরা পূরণ করতে পারব না। আমাদের দায়িত্ব হবে শহীদ পরিবারের পাশে থাকা, সব ধরনের সহযোগিতা করা।’
তিনি বলেন, ‘আমি বেশ কয়েকটি ক্যাম্পের খবর পেয়েছি। সিও’দের কাছে গেলে কথা শোনে, কথা বলে; কিন্তু ক্যাম্প ইনচার্জরা তা শোনে না, যা মার্ক করা হয়েছে। যেকোনো প্রান্তের মানুষ যখনই কোনো ক্যাম্পে যাবে তাকে অবশ্যই অ্যাটেন্ড করতে হবে।
‘ক্যাম্প কমান্ডারদের বলবো, পরবর্তীতে আমি আর এ ধরনের অভিযোগ শুনতে রাজি নই। আপনি জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চলেন। অবশ্যই আপনাকে মানুষকে পাবলিক হিয়ারিং দিতে হবে। প্রয়োজনে পাবলিক হেয়ারিং টাইম সকাল ১১টা থেকে ২টা করেন। কিন্তু এটা আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে। সিওকে জানাবেন। আপনাকে অফিসে থাকতে হবে।’
র্যাব প্রধান আরও বলেন, র্যাব তার কার্য সম্পাদনার ক্ষেত্রে সচেতন কর্মদক্ষতা, সততা, নিষ্ঠা, সাহসিকতা ও পেশাদারত্বের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সুমহান চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশপ্রেম, সততা, কর্তব্যনিষ্ঠা ও পেশাদারত্ব বজায় রেখে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দেশের আইন-শৃঙ্খলা ও অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষার ক্ষেত্রে স্বল্প সময়ে র্যাব ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। র্যাবের এ সাফল্য রাষ্ট্র ও সমাজে স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।’
র্যাবের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ২০২২ সালে প্রশাসনিক (সেবামূলক/প্রশংসনীয়) কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ ৩৫ জন ও অপারেশনাল (সাহসিকতা/বীরত্বপূর্ণ) কাজের জন্য ৫০ জন র্যাব সদস্যকে র্যাব মহাপরিচালক পদকে ভূষিত করা হয়।
আরও পড়ুন:১১ কোটি টাকা পাচারের মামলায় রিজেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত করেছে চেম্বার আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের দায়ের করা আপিল শুনানি নিয়ে সোমবার আপিল বিভাগের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের চেম্বার আদালত এ আদেশ দেয়। আদালত ৮ সপ্তাহের হাইকোর্টের জামিন আদেশ স্থগিত করেছে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ১৫ মার্চ মাসুদ পারভেজকে জামিন দিয়েছিল। সেই জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এ আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার আদালত তার জামিন স্থগিত করে দেয়।
মামলা থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৫ আগস্ট প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে রিজেন্টের সাহেদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে একটি মামলা করেন সিআইডির উপ-পরিদর্শক ইব্রাহীম হোসেন। প্রায় দেড় বছর তদন্ত শেষে সেই মামলার চার্জশিট আদালতে জমা দেয়া হয়। চার্জশিটে সাহেদ ও রিজেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজসহ সহযোগীদের বিরুদ্ধে সর্বমোট ১১ কোটি ২ লাখ ২৭ হাজার ৮৯৭ টাকা পাচারের অভিযোগ আনা হয়।
তদন্ত শেষে কোভিড মহামারি শুরু হলে সাহেদ তার প্রধান সহযোগী মাসুদ পারভেজের মাধ্যমে রিজেন্ট ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেল লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালু করেন। ওই প্রতিষ্ঠানের নামে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে একটি হিসাবও খোলা হয়। ওই হিসাবটি পরিচালনা করেন মাসুদ পারভেজ ও তার বাবা সিরাজুল করিম। ২০২০ সালের ১ মার্চ থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত ওই হিসাবটিতে সর্বমোট ৩ কোটি ১১ লাখ ৯০ হাজার ২২৭ টাকা জমা হয়।
সিআইডির তদন্তে প্রতীয়মান হয়েছে, সাহেদ জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া কোভিড সার্টিফিকেট দেয়ার নামে জনপ্রতি যে ৩ হাজার ৫০০ টাকা করে নিতেন, সেসব অর্থ এই হিসাবে জমা হতো। জালিয়াতির অর্থ ও প্রতারণার অর্থে তিনি তার নিজের ও সহযোগীদের নামে ছাড়াও রিজেন্ট হাসপাতাল এবং অস্তিত্বহীন ১২টি প্রতিষ্ঠানের নামে মোট ৪৩টি হিসাব পরিচালনা করতেন।
এসব হিসাবে মোট ৯১ কোটি ৭০ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪৭ টাকা জমা হয়। এর মধ্যে ৯০ কোটি ৪৭ লাখ ৯১ হাজার ৫২৪ টাকা তোলা হয়। বর্তমানে এসব হিসাবে ২ কোটি ৪ লাখ ৩৯ হাজার ১১ টাকা স্থিতাবস্থায় রয়েছে।
পুলিশের দেয়া চার্জশিটে বলা হয়েছে, সাহেদ ও মাসুদ পারভেজসহ সহযোগীরা প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে অর্জিত ১১ কোটি ২ লাখ ২৭ হাজার ৮৯৭ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলনের মাধ্যমে স্থানান্তর-রূপান্তর-হস্তান্তর করে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর বিভিন্ন ধারায় অপরাধ করেছেন।
আরও পড়ুন:প্রতারণা ও চাঁদাবাজির মামলায় আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী ও জয়যাত্রা টিভির চেয়ারম্যান হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ পাঁচজনকে দুই বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন সোমবার এ রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে আসামিদের দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তাদের আরও দুই মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
গত ১৪ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের জন্য সোমবার দিন ঠিক করে।
২০২২ সালের ১৮ এপ্রিল ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে।
এর আগে ২০২১ সালের ২০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম নুরুল হুদা চৌধুরীর আদালতে চার্জশিট জমা দেয় মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
চার্জশিটভুক্ত অন্য চার আসামি হলেন জয়যাত্রা টিভির জেনারেল ম্যানেজার হাজেরা খাতুন ওরফে অনি, প্রধান বার্তা সম্পাদক কামরুজ্জামান আরিফ, কো-অর্ডিনেটর সানাউল্লাহ নূরী ও স্টাফ রিপোর্টার মাহফুজ শাহরিয়ার।
২০২১ সালের ২ আগস্ট রাতে রাজধানীর পল্লবী থানায় সাংবাদিক আব্দুর রহমান তুহিন হেলেনা জাহাঙ্গীর, হাজেরা খাতুন, কামরুজ্জামান আরিফ, সানাউল্লাহ নূরী, মাহফুজ শাহরিয়ারসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
এতে অভিযোগ করা হয়, আসামিরা সরকারের অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও জয়যাত্রা টিভিকে স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল দাবি করে দেশের বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধি নিয়োগ করে মোটা অঙ্কের টাকা জামানত হিসেবে গ্রহণ করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেন। প্রতিনিধিদের কাছ থেকে প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করছিলেন তারা।
ওই বছরের ২৯ জুলাই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও ব্যক্তিদের সম্মানহানি করার অভিযোগে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এরপর তার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা হয়।
প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ২০১৫ সালে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচন করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। কুমিল্লা-৫ আসনের উপনির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে চেয়েও আলোচনায় আসেন তিনি।
হেলেনা জাহাঙ্গীর প্রতিষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামের একটি সংগঠন নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হলে ২০২১ সালের জুলাইয়ে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপ কমিটির সদস্যপদ হারান তিনি।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে থাকা পুলিশ হত্যা মামলার আসামি আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির আবেদন গ্রহণের কথা শুনেছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
চট্টগ্রামের এনায়েত বাজার পুলিশ ফাঁড়ির নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন শেষে সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
পুলিশপ্রধান বলেন, ‘আরাভ খানের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য ইন্টারপোলসহ বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ শুরু করেছি। আমি কিছুক্ষণ আগে জানতে পেরেছি যে, তার যে নামে আমরা চার্জশিট দিয়েছি, ওই নামে রেড নোটিশ জারির একটা বিষয় (আবেদন/অনুরোধ) দিয়েছি। এটা বোধ হয় ইন্টারপোল গ্রহণ করেছে, এ রকম একটা খবর আমি পেয়েছি। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি, কীভাবে কাজ করছি সেটা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাচ্ছি না তদন্তের স্বার্থে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশ থেকে যদি কোনো আসামি পলায়ন করে বিদেশে চলে যায়, যখন আমরা তার সম্পর্কে মোটামুটি কিছু তথ্য পাই, তখন আমরা একটা রেড নোটিশ জারি করি। এটা ইন্টারপোল হেড কোয়ার্টারে যায়। আমি যেটা খবর পেয়েছি যে, এটা তারা অ্যাকসেপ্ট করেছে।’
এর আগে গত শনিবার পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার ফেরারি আসামি আরাব খান ওরফে রবিউল ইসলামকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলকে চিঠি দেয়ার খবর জানায় বাংলাদেশ পুলিশ।
ইন্টারপোল বাংলাদেশ ডেস্কের এক কর্মকর্তা ওই দিন বিকেলে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা এই বিষয়ে (আরাবকে দেশে ফেরানো) ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইন্টারপোলকে মেইল করেছি। তারা আমাদের দেয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।’
একই দিনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের জানান, আরাবকে ফেরাতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার পলাতক আসামি আরাবকে দেশে ফেরানোর উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘ইন্টারপোলের সহায়তায় তাকে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে তাকে ধরতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
‘আমরা অনেক কিছুই শুনেছি, জেনেছি। যেসব তথ্য আমাদের কাছে এসেছে, তা যাচাই-বাচাই করে বাদবাকি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরাবকে নিয়ে আলোচনার শুরু যেখান থেকে
আরাবের এই জুয়েলারি শপের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ পান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এ নিয়ে সাকিব আল হাসানের ভিডিওবার্তার পর বিষয়টি নজরে আসে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি)।
সে সময় ডিবি মতিঝিল বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, ‘পুলিশ পরিদর্শককে হত্যা মামলার চার্জশিট হয়েছে অনেক আগেই। রবিউল চার্জশিটভুক্ত পলাতক আসামি। জুয়েলারি শপ উদ্বোধনের ঘোষণার পর আইডেন্টিফাই করি, যে ব্যক্তি আরাব খান নামে আইডিটি পরিচালনা করছেন, তিনি পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খাঁন হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম। তার ভারতীয় একটি পাসপোর্ট ও বাংলাদেশি পাসপোর্ট আমাদের কাছে রয়েছে।’
রবিউলকে ইন্টারপোলের সহায়তায় দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছিলেন ডিবি মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার রাজিব আল মাসুদ।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেছিলেন, ‘আমরা তাকে অনেক দিন ধরেই খুঁজছিলাম। দুবাইতে তিনি অবস্থান করছেন, এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। ফলে এখন আমরা ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেব।’
ফেরারি আসামি আরাব খানের মালিকানাধীন আরাব জুয়েলার্স উদ্বোধন হয় ১৫ মার্চ রাতে। দুবাইয়ে নিউ গোল্ড সোক হিন্দ প্লাজার ৫ নম্বর ভবনের ১৬ নম্বর দোকানটি আরাবের।
তার ফেসবুক প্রোফাইল ঘেঁটে দেখা যায়, সাকিব আল হাসানের পাশাপাশি পাকিস্তানের ক্রিকেটার মোহাম্মদ আমির, আফগানিস্তানের ক্রিকেটার হযরতউল্লাহ জাজাই, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটার এভিন লুইস, ইংল্যান্ডের বেনি হাওয়েল, শ্রীলঙ্কার ইসুরু উদানা, বাংলাদেশি লেখক সাদাত হোসাইন, অভিনেত্রী দীঘি, আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলম, চলচ্চিত্র পরিচালক দেবাশীষ বিশ্বাস, কণ্ঠশিল্পী নোবেল, বেলাল খানসহ অনেকে জুয়েলারি শপ উদ্বোধন উপলক্ষে শুভেচ্ছাবার্তা দেন। তাদের একটি বড় অংশ দুবাইতে গিয়ে অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
আরও পড়ুন:ব্যাংক নিয়োগের প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক নিখিল রঞ্জন ধরকে।
২০২১ সালের নভেম্বরের ওই মামলায় সোমবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম রেজাউল করিম চৌধুরির আদালতে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল।
এদিন আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন নিখিল রঞ্জন ধর। রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে নিখিল রঞ্জন ধরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একই সঙ্গে মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য ৫ এপ্রিল দিন ঠিক করেন।
এর আগে ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম শহিদুল ইসলাম এ মামলায় অভিযোগপত্র গ্রহণ করে নিখিল রঞ্জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
গত ৩১ জানুয়ারি অধ্যাপক নিখিলের নাম আসামির তালিকায় যুক্ত করে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শামীম আহমেদ।
তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে নিখিল ধরকে ‘পলাতক’ দেখিয়ে এবং কোনো আদালত থেকে জামিন না নেয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির জন্য আদালতে আবেদন করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির আওতায় ২০২১ সালের ৬ নভেম্বর ঢাকায় বিভিন্ন কেন্দ্রে রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংকে অফিসার (ক্যাশ) নিয়োগের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয়। এক হাজার ৫১১টি পদের বিপরীতে ওই পরীক্ষায় অংশ নেন এক লাখ ১৬ হাজার ৪২৭ জন।
পরীক্ষা শেষে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ তোলেন পরীক্ষার্থীরা। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্তে নেমে প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রমাণ পাওয়ার কথাও জানায়।
ঢাকাসহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রশ্ন ফাঁস চক্রের বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। পরে প্রশ্ন ফাঁস করে উত্তর বিক্রির অভিযোগে আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক দেলোয়ার হোসেন, পারভেজ মিয়া ও প্রেসকর্মী রবিউল আউয়ালকে জিজ্ঞাসাবাদে ‘চাঞ্চল্যকর’ তথ্য পাওয়ার কথা জানায় ডিবি।
প্রশ্ন ফাঁসের ওই ঘটনায় সেসময় রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার ৩০ বছর বয়সী জানে আলম মিলন, ৩৮ বছর বয়সী পূবালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান মিলন ও ৩৬ বছর বয়সী রাইসুল ইসলাম স্বপন এবং জনতা ব্যাংকের গুলশান শাখার অফিসার ৩৪ বছর বয়সী শামসুল হক শ্যামলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওই তদন্তেই বুয়েটের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান নিখিল রঞ্জন ধরের নাম পাওয়ার কথা জানান ডিবির কর্মকর্তারা। পরে ২০২১ সালের ২১ নভেম্বর ওই বিভাগের প্রধানের পদ থেকে তাকে সরিয়ে দিয়ে ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করে বুয়েট প্রশাসন।
আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিয়ন দেলোয়ার তার স্বীকারোক্তিতে নিখিল রঞ্জনের নাম উল্লেখ করেন।
দেলোয়ার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, ‘প্রশ্নপত্র ছাপার বিভিন্ন কাজে তিনি আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাপাখানায় যেতেন। বুয়েট শিক্ষক নিখিল রঞ্জন ধর নিজেই তার ব্যাগে প্রশ্নপত্র ঢুকিয়ে নিতেন। তিনি নিজেও নিখিল রঞ্জনের ব্যাগে প্রশ্ন ঢুকিয়ে দিতেন।’
আরও পড়ুন:দেশে প্রথমবারের মতো ডগ স্কোয়াডের একটি কুকুর বীরত্বপূর্ণ কাজের জন্য পদক পেতে যাচ্ছে। এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাবের ডগ স্কোয়াডের কুকুর ‘চিতা’ পাচ্ছে এ পদক।
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় উদ্ধার কার্যক্রম অংশগ্রহণ করে দুর্ঘটনায় নিহত তিন ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে র্যাবের ডগ স্কোয়াডের কুকুর চিতা। এরপরই পদকের সিদ্ধান্ত আসে।
র্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সোমবার নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘দেশে প্রথমবারের মতো র্যাব ডগ স্কোয়াডের একটি কুকুর বীরত্বপূর্ণ কাজের জন্য র্যাব মহাপরিচালক পদক পাচ্ছে। র্যাব ফোর্সেসের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও র্যাব মেমোরিয়াল ডে-২০২৩ উপলক্ষে মহাপরিচালকের দরবার অনুষ্ঠানে ডগ স্কোয়াডের কুকুর চিতাকে মহাপরিচালক পদক দেয়া হবে।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন র্যাব মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন, বিশেষ অতিথি থাকবেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল কামরুল হাসান ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ইমতিয়াজ আহমেদ।
মন্তব্য