প্রার্থনার মধ্য দিয়ে খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বড়দিনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে।
রোববার রাজধানীর কাকরাইলের সেন্ট মেরিস ক্যাথিড্রাল গির্জায় সকাল ৮টায় প্রার্থনার মধ্য দিয়ে উৎসব শুরু হয়।
সকালে গির্জার ফাদার প্যাট্রিক শিমন গমেজ প্রার্থনা করান। এতে খ্রিষ্ট ধর্মালম্বীরা অংশ নেন।
শুরুতে প্রার্থনায় ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ বন্ধসহ করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি কামনা করা হয়েছে।
প্রার্থনায় ফাদার প্যাট্রিক শিমন গমেজ বিশ্বের সব মানুষের শান্তি কামনায় প্রার্থনা করেন। এ সময় খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা প্রার্থনায় অংশ নেন। প্রার্থনায় যিশুর মহিমাকীর্তন এবং শান্তি ও ন্যায়ের কথা বলা হয়।
প্রার্থনা শেষে ফাদার মিল্টন ডেনিস কোড়াইয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘বড়দিন আমাদের সব থেকে বড় উৎসব। দিনটি উপলক্ষে আমরা সবাইকে শুভেচ্ছা জানাই। আনন্দসহকারে দিনটি আমরা উদযাপন করছি। এই দিনে আমাদের প্রার্থনা হলো, সব মানুষ যেন সব মানুষকে ভালোবাসে। পৃথিবীতে যেন শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে যেন শান্তি বর্ষিত হয় সেই প্রার্থনা করি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সকলের শান্তি কামনা করি। যিশুর বাণী অনুসারে সকলে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করুক সেটাই প্রার্থনা করছি।’
খ্রিষ্টান ধর্মের প্রবর্তক যীশুখ্রিষ্টের জন্ম ২৫ ডিসেম্বর। দিনটিকে কেন্দ্র করে খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা পালন করেন বড়দিনের উৎসব।
যীশুখ্রিষ্টের জন্ম বেথেলহেমে। স্রষ্টার মহিমা প্রচার এবং মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করতে তিনি জন্মছিলেন পৃথিবীতে।
বিশ্বের অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে এবং নানা আয়োজনে পালিত হয় বড়দিন। খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা ধর্মীয় আচার, আনন্দ-উৎসব ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করেন।
এ জন্য সংশ্লিষ্ট গির্জা কর্তৃপক্ষ ও আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। উৎসব উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানের গির্জা সাজানো হয়। আলোকসজ্জা করা হয় গির্জার ভেতরে-বাইরে।
রঙিন কাগজ, ফুল ও আলোর বিন্দু দিয়ে সাজানো হয় ক্রিসমাস ট্রি এবং প্রতীকী গোসালা ঘর।
রাজধানীর কাকরাইলের সেন্ট মেরিস ক্যাথিড্রাল, তেজগাঁও, মিরপুর, মোহাম্মাদপুর, কাফরুল, ভাটারায় অবস্থিত গির্জাসহ বিভিন্ন গির্জায় শনিবার রাত থেকে চলছে আয়োজন।
দিনভর রোজা রেখে ইফতারে চাই এমন কিছু যা পুষ্টিতে ভরপুর। পিনাট বাটার স্মুদিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। তাই ইফতারে রাখতে পারেন পিনাট বাটারের মজাদার স্মুদি। এনডিটিভি ফুডের পিনাট বাটার স্মুদির রেসিপি তুলে ধরা হলো নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য।
উপকরণ
১. ১টি কলা
২. ১ কাপ দুধ
৩. ৩ টেবিল চামচ পিনাট বাটার
প্রস্তুত প্রণালি
টুকরো করে রাখা কলা, দুধ, পিনাট বাটার একটি ব্লেন্ডারে দিয়ে মসৃণ না হওয়া পর্যন্ত ব্লেন্ড করুন। তারপর গ্লাসে স্মুদি ঢেলে বরফ কুচি দিয়ে মনমতো সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
আরও পড়ুন:শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ক্যাথলিক চার্চের প্রধান পোপ ফ্রান্সিস। তাকে সেখানে কয়েক দিন থাকতে হবে।
স্থানীয় সময় বুধবার ভ্যাটিকানের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতির বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ৮৬ বছর বয়সী পোপ কিছুদিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন, তবে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি।
বিবৃতিতে বলা হয়, হাসপাতালে কয়েক দিন তাকে উপযুক্ত মেডিক্যাল থেরাপি নিতে হবে।
এতে উল্লেখ করা হয়, রোগমুক্তি কামনা করে অনেকের বার্তা পেয়েছেন পোপ। তিনি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বিবিসিকে জানায়, ইতালির রোমের গেমেলি হাসপাতালে পোপের সঙ্গে রাত্রিযাপন করার কথা রয়েছে তার ঘনিষ্ঠতম কর্মীদের।
বছরের ব্যস্ততম সময়ে অসুস্থ হয়েছেন পোপ। ইস্টারের ছুটির আগে তাকে বেশ কিছু অনুষ্ঠান ও সার্ভিসে অংশ নিতে হবে।
এ সপ্তাহান্তে পাম সানডে ম্যাস রয়েছে। এ ছাড়া আগামী সপ্তাহে রয়েছে হলি উইক ও ইস্টার উদযাপন।
চলতি বছরের এপ্রিলের শেষের দিকে হাঙ্গেরি সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে পোপ ফ্রান্সিসের।
আরও পড়ুন:সিয়াম সাধনার মাস রমজানে অন্য অনেকের মতো রোজা রাখতে চান গর্ভবতী নারীরা। এ ক্ষেত্রে তাদের করণীয়গুলো এক ভিডিওতে তুলে ধরেছেন গাইনি ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ ডা. কাজী ফয়েজা আক্তার, যেটি তার ভাষায় পাঠকদের সামনে উপস্থাপন করা হলো।
১. এটা অত্যন্ত কমন একটি প্রশ্ন যে, একজন মা যিনি গর্ভবতী বা প্রেগন্যান্ট, সে রমজানে রোজা রাখবে কি না। সবার প্রথমে আমি যে কথাটি বলতে চাই, তা হলো প্রেগন্যান্সি কোনো রোগ না। প্রেগন্যান্সি কোনো অসুস্থতা না। আমি এ কথাটা সবসময় বলি, সবাইকে বলি। একটা মেয়ে যেমন স্বাভাবিকভাবে বড় হবে, তেমনই কিন্তু সে তার লাইফের একটা স্টেজে এসে প্রেগন্যান্ট হবে, এটাই স্বাভাবিক। একজন অসুস্থ ব্যক্তির জন্যই শুধু রোজার মাফ আছে। তাহলে প্রেগন্যান্সিতে রোজা রাখা যাবে। তার মানে যদি অসুস্থতা হতো প্রেগন্যান্সি, তাহলে সে রোজার মাফ পেত। আদারওয়াইজ রোজার মাফ কিন্তু সে পাবে না।
২. এখন এ কথাটা তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যাদের প্রেগন্যান্সি পিরিয়ডটা একদমই স্বাভাবিক কাটছে, কিন্তু কিছু কিছু কন্ডিশনে রোজা রাখাটা বিবেচনা সাপেক্ষ। যেমন: কোনো মায়ের হয়তো বা প্রথম তিন মাসের মধ্যে রমজান মাস এলো। তার প্রচণ্ড বমি পাচ্ছে এবং দিনে সে কয়েকবার বমি করছে। বমি করার কারণে সে পেটে কিছুই রাখতে পারছে না। এমনকি তার ওজন তুলনামূলক কমেও গেছে। তার শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিয়েছে। এ ধরনের কন্ডিশনে তার রোজা রাখা জরুরি নয়।
৩. প্রথম তিন মাসের পর দ্বিতীয় তিন মাস, অর্থাৎ চার থেকে সাত মাস। এই সময়টায় একটা গর্ভের সন্তান আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে। কাজেই এই সময়ে মায়ের পুষ্টি বাচ্চার গ্রোথের জন্য খুবই জরুরি। যদি কোনো মায়ের আল্ট্রাসাউন্ডে দেখা যায়, বাচ্চার গ্রোথ তুলনামূলক কম হচ্ছে কিংবা মায়ের ওজন পরপর দুই মাসের চেকআপে এতটুকু বাড়েনি কিংবা তার খাবারের রুচি একেবারেই নেই, এ ধরনের মায়ের ক্ষেত্রে রোজা রাখাটা জরুরি নয়।
৪. কিছু কিছু কন্ডিশন আছে, যা প্রেগন্যান্সিতে কোনো কোনো মা ডেভেলপ করেন, যেমন: আনকন্ট্রোলড ডায়াবেটিস, আনকন্ট্রোলড হাইপারটেনশন, রক্তশূন্যতা। যদি এমন হয় তার ডায়াবেটিস ইনসুলিন নিয়েও কোনোভাবে কন্ট্রোল করা যাবে না, তার হাই ব্লাড প্রেশার, তিন-চার বেলা করে ওষুধ খেয়েও কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না, তার রক্তশূন্যতা এত বেশি যে, তাকে তিন বেলা আয়রনজাতীয় খাবার বেশি খেতে হচ্ছে, সেই ক্ষেত্রে অবশ্যই রোজা রাখাটা বিবেচনাসাপেক্ষ। এ ধরনের কন্ডিশন যদি কারও থাকে, অবশ্যই তার রেগুলার ডক্টরের সাথে কথা বলে নেবে যে, তার জন্য রোজাটা কতটা জরুরি।
৫. রোজা রাখার পর যদি কোনো মা এমন বোধ করেন, হঠাৎ তার প্রচণ্ড বমি হচ্ছে, হঠাৎ সে চারদিকে অন্ধকার দেখে বসে পড়ল কিংবা তার ব্লাড সুগার ফল করেছে, এ ধরনের বিভিন্ন কন্ডিশনে তিনি চাইলে রোজা ভেঙেও ফেলতে পারেন।
সারকথা
রোজা একজন মুসলিম নারী রাখবেন কি রাখবেন না, সেটা বলার আমি কেউই না। আমার কাছে অনেকেই জানতে চায় যে, আপনি বলেন রাখব কি রাখব না। সত্যি কথা বলতে তোমাদের রোজা তোমার রাখবে কি রাখবে না, এই ডিসিশনটা দেয়ার আমি কেউই না, তবে এতটুকু আমি বুঝি যে, আল্লাহতায়ালা যারা অসুস্থ, তাদের রোজার ব্যাপারে শিথিলতা দিয়েছেন এবং আল্লাহ আমাদেরকে কখনোই যতটুকু আমরা পারব, তার চেয়ে বেশি লোড দেন না। কাজেই আমরা যতটুকু কাজ করতে পারব বা যতটুকু রোজা রাখলে আমার বা আমার গর্ভের সন্তানের কোনো ক্ষতি হবে না, ততটুকুই আমার জন্য জরুরি।
আরও পড়ুন:‘হে মহাভাগ ব্রহ্মপুত্র, হে লোহিত্য, আমার পাপ হরণ করো’ মন্ত্র পাঠ করে ফুল, বেলপাতা, ধান, দূর্বা, হরীতকী, ডাব, আম্রপল্লব দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বী পুণ্যার্থীরা পাপমুক্তির বাসনায় লাঙ্গলবন্দে স্নানোৎসবে অংশ নিচ্ছেন।
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে শুরু হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মহাতীর্থ অষ্টমী স্নানোৎসব। দুদিনব্যাপী এ উৎসবে নদের ১৮টি ঘাটে ১০ লাখের বেশি পুণ্যার্থীর আগমন ঘটেছে বলে জানিয়েছে উৎসব উদযাপন পরিষদ। এবার বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত ,নেপাল ও ভুটান থেকে পুণ্যার্থীরা স্নানোৎসবে যোগ দিয়েছেন।
শুক্ল তিথি অনুযায়ী মঙ্গলবার রাত ৯টা ১৭ মিনিটে শুরু হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মহা অষ্টমীর স্নানোৎসব। দু’দিনব্যাপী এই উৎসব ঘিরে লাখো পুণ্যার্থীর পদচারণে মুখরিত হয়ে উঠেছে লাঙ্গলবন্দের সাড়ে তিন কিলোমিটার এলাকা।
ভারতের কলকাতা থেকে আগত পুণ্যার্থী জ্যাতি রানী বলেন, ‘তীর্থযাত্রীরা লাঙ্গলবন্দে আসেন পাপ মোচনের জন্য। একই বাসনা নিয়ে বহুদূর থেকে এখানে ছুটে এসেছি। আয়োজনের সব কিছুই সুন্দর। তবে যানজট আর বৃষ্টিতে ভোগান্তি হয়েছে।’
কিশোরগঞ্জের লাল মোহন চন্দ বলেন, ‘যানজট পার করে হলেও পরিবারের সবাই আসতে পেরেছি। তবে বৃষ্টিতে পরিবার নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। এখানে স্নান করার ইচ্ছে ছিলো বহু বছরের। জীবনে যত পাপ আছে তা থেকে মুক্তি পেতে প্রার্থনা জানিয়েছি মহাভাগ ব্রহ্মপুত্রের কাছে।’
নারায়ণগঞ্জের পালপাড়া থেকে আগত প্রাপ্তি সাহা বলেন, ‘পুরো পরিবার নিয়ে স্নান করেছি রাজ ঘাটে। প্রার্থনা করেছি- ভালো থাকুক সবাই। মঙ্গল হোক দেশ ও জাতির।’
মুন্সীগঞ্জ থেকে আসা পূবালী রায় বলেন, ‘একে হলো বৃষ্টি, তার ওপর সড়কে যানজট। তাই ট্রলার পথই আমরা বেছে নিয়েছি। আমাদের গ্রামসহ আশপাশের ৫০টির বেশি নৌযান এসেছে লাঙ্গলবন্দে। প্রতি বছরই আমরা এখানে আসি। তবে গেল কয়েক বছর করোনা মহামারির কারণে বড় পরিসরে উৎসব হয়নি। এবার অনেক মানুষ এসেছে। তাই ট্রলার ঘাটে ভিড়তেও সময় লেগেছে। তবুও ভালো লাগছে স্নান সম্পন্ন করতে পেরে।’
সীতাকুণ্ড থেকে আগত পুরোহিত কৃষ্ণ কুমার সাহা জানান, হিন্দু ধর্মের শাস্ত্রীয় পুরানমতে, হিন্দু দেবতা পরশুরাম হিমালয়ের মানস সরোবরে গোসল করে পাপমুক্ত হন। লাঙ্গল দিয়ে চষে হিমালয় থেকে এ পানিকে বহ্মপুত্র নদরূপে নামিয়ে আনেন সমভূমিতে। পৌরাণিক এ কাহিনীকে স্মরণ করে প্রতি বছর চৈত্র মাসে মহাতীর্থ অষ্টমীতে লাঙ্গলবন্দের ব্রহ্মপুত্র নদে তীর্থযাত্রীরা পুণ্য লাভের আশায় জড়ো হন।
দু’দিনব্যাপী স্নান উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে সব ধরনের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান লাঙ্গলবন্দ স্নান উদযাপন পরিষদের নির্বাহী সদস্য শিখন চন্দ সরকার। তিনি বলেন, ‘এ বছর দশ লাখের বেশি পুণ্যার্থীর আগমন ঘটেছে লাঙ্গলবন্দে। সব রকম আয়োজন সফল হওয়ায় খুশি সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।’
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান জানান, পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়৷ পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ, র্যাব ও আনসার সমন্বয়ে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
তীর্থস্থানের তিন কিলোমিটার এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। কোনো ধরনেন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই এবার শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হচ্ছে উৎসব। তবে পুণ্যার্থী বেশি হওয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট লেগে যায়। মহাসড়কের যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছে।
আরও পড়ুন:সিয়াম সাধনার মাস রমজানে ভোররাত থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাবারের পাশাপাশি পানি পান থেকে বিরত থাকেন মুসলিমরা। রোজা শীতকালে হলে তৃষ্ণার অনভূতি কম হয়, তবে গ্রীষ্মকালে রোজায় দেহে পানিশূন্যতার ঝুঁকি তৈরি হয়, যা থেকে হতে পারে অবসাদ ও বমি বমি ভাব।
কাতারের প্রধান অলাভজনক স্বাস্থ্যসেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হামাদ মেডিক্যাল করপোরেশন জানিয়েছে, সাধারণত শিশু, প্রাপ্তবয়স্ক, ডায়াবেটিস, কিডনি বা অন্যান্য দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত কিংবা সূর্যের নিচে শারীরিক ব্যায়াম করা লোকজন পানিশূন্যতার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকেন।
রোজায় পানিশূন্যতা এড়াতে করণীয়
হামাদ মেডিক্যাল করপোরেশন পানিশূন্যতা এড়াতে সাতটি পরামর্শ দিয়েছে।
১. ইফতার ও সেহরির মধ্যবর্তী সময়ে আট থেকে ১২ কাপ পানি পান করুন। ঠান্ডা পানির তুলনায় দ্রুত শোষণ হয় বলে কুসুম গরম পানি পান করা যেতে পারে।
২. রোজায় পানিশূন্যতা এড়াতে প্রতিদিন স্যুপ খেতে পারেন। শরীরে তরলের চাহিদা পূরণের ভালো উৎস হতে পারে খাবারটি।
৩. তরমুজ, টমেটো, শসা, আঙুরের মতো ফল ও সবজিতে অনেক পানি থাকে, যা তৃষ্ণা কমাতে সাহায্য করে।
৪. ইফতারে উচ্চ মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এ ধরনের খাবার শরীরে পানির চাহিদা বাড়ায়। এ ছাড়া সালাদ ও তরকারিতে লবণ কম দেয়া উচিত। বেশি পরিমাণে লবণ খেলে বাড়তে পারে তৃষ্ণা।
৫. গবেষণায় দেখা যায়, প্রচুর চিনি থাকায় মিষ্টিজাতীয় খাবার খেলে তৃষ্ণা বাড়ে। এর পরিবর্তে ফল খেতে পারেন, যা দেহে তরলের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি তৃষ্ণাও মেটায়।
৬. ক্যাফেইন শরীরের তরল শুষে নিয়ে তৃষ্ণা বাড়ায়। এ কারণে রমজানে ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলা উচিত। এ ধরনের পানীয়র মধ্যে এনার্জি ও কার্বনযুক্ত পানীয়, চা ও কফি রয়েছে। ধূমপান মুখকে শুষ্ক করে তৃষ্ণা বাড়ায়। এ কারণে ধূমপানও এড়িয়ে চলুন।
৭. গরমের দিনে সূর্যতাপে ব্যায়াম করলে প্রচুর পরিমাণে পানি পানের চাহিদা তৈরি হয়। এ কারণে রোজায় ব্যায়ামের সবচেয়ে ভালো সময় হলো ইফতারের পর। কারণ ইফতারের মধ্য দিয়ে শরীর পর্যাপ্ত খাদ্য ও পানীয়র মাধ্যমে শক্তি পায়। রোজা ভেঙে ব্যায়াম করলে শরীর থেকে ঝরে যাওয়া তরলের চাহিদা পূরণের জন্যও পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন:সিয়াম সাধনার মাস রমজানে অন্য অনেকের মতো রোজা রাখেন ডায়াবেটিস রোগীরা। এ ক্ষেত্রে মাসজুড়ে খাবারের পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়ে তাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। সতর্কতার সঙ্গে খাদ্যগ্রহণ কিংবা চলাচল করলে তারা অনেক বিপদের ঝুঁকি কমাতে পারেন।
রোজায় লাচ্ছি খেতে ইচ্ছুক ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কীভাবে পানীয়টি তৈরি করতে হয়, তা তুলে ধরা হয়েছে বিটিভির এক অনুষ্ঠানে। এ প্রক্রিয়ায় খুব সহজেই লাচ্ছি বানানো যাবে।
উপকরণ
তিনটি খেজুর ও দুই টেবিল চামচ টক দই।
প্রস্তুত প্রণালি
খেজুর কুচি ও টক দই একসাথে মিশিয়ে ব্লেন্ডারে নিয়ে তাতে কিছু বরফকুচি ও অল্প পরিমাণ পানি দিন। এবার ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে পরিবেশন করুন।
আরও পড়ুন:সৌদি আরবে পবিত্র ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে বাস উল্টে আগুন ধরে যাওয়ার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ২২ জনে দাঁড়িয়েছে। প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
স্থানীয় সময় সোমবার বিকেলে পবিত্র নগরী মক্কায় যাওয়ার পথে সৌদি আরবের আসির অঞ্চলের আবহা জেলায় ৪৭ জন যাত্রী নিয়ে একটি বাস ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পড়ে। ওইসব যাত্রীর মধ্যে ৩৫ জন বাংলাদেশি রয়েছেন।
জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট জানিয়েছে, দুর্ঘটনাস্থলটি জেদ্দা থেকে আনুমানিক ৬০০ কিলোমিটার দূরে। সবশেষ পাওয়া খবরে এই দুর্ঘটনায় ২২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে ৮ বাংলাদেশি রয়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
কনস্যুলেটের কর্মকর্তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৮ জন বাংলাদেশিকে শনাক্ত করেছেন।
দূতাবাসের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় গভীর সমবেদনা প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দূতাবাস কর্মকর্তারা সার্বিক বিষয় তদারকি করছেন।
এর আগে আরব নিউজ জানায়, সৌদি আরবে বাস উল্টে আগুন ধরে যাওয়ায় অন্তত ২০ ওমরাহ যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২৯জন।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আল-খাবারিয়া জানায়, আসির প্রদেশের আকাবা শার এলাকায় সোমবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪টার দিকে একটি সেতুর ওপর বাসটি উল্টে আগুন ধরে যায়। বাসের যাত্রীরা ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে মক্কা নগরীতে যাচ্ছিলেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রেক কাজ না করায় সেতুর এক পাশে গিয়ে ধাক্কা খায় বাসটি। এতেই হতাহতের ঘটনা ঘটে। মরদেহ ও আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা।
সৌদি প্রেসের তথ্যানুযায়ী, ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ আকাবা শারের সড়কটি প্রায় ৪০ বছর আগে পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়।
মন্তব্য