রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন উদ্বোধন করেছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন তিনি।
১০টা ২৮ মিনিটে সম্মেলনস্থলে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। ওই সময় কাউন্সিলর ও প্রতিনিধিরা দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন করেন দলের সভাপতিকে।
পরে জাতীয় সংগীতের মূর্ছনায় দেশের পতাকা উত্তোলন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। আর দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তারপরই পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। ওই সময়ও পাশে ছিলেন ওবায়দুল কাদের।
সম্মেলনের উদ্বোধন শেষে সভামঞ্চের দিকে এগিয়ে যান শেখ হাসিনা। পরবর্তী সময়ে চিত্রনায়ক ফেরদৌসের উপস্থাপনায় শুরু হয় আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক উপকমিটি আয়োজিত সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
মঞ্চে চার সারিতে রাখা হয়েছে ১২০টি চেয়ার। প্রথম সারিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বসেছেন।
দ্বিতীয় সারিতে বসেছেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, জ্যেষ্ঠ নেতা ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা। বাকি দুই সারিতে বসবেন অন্য নেতারা।
সাংস্কৃতিক পরিবেশনা শেষে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করবেন দলের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া। সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন ওবায়দুল কাদের।
সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেবেন অভ্যর্থনা কমিটির আহ্বায়ক শেখ ফজলুল করিম সেলিম। সভাপতি শেখ হাসিনার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষ হবে।
পরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শুরু হবে কাউন্সিল অধিবেশন। সেখানেই দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন হবে।
নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনের নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন। এ কমিশন শীর্ষ নেতৃত্ব নির্বাচনের পর কাউন্সিলরদের মতামতের আলোকে হবে ৮১ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি।
এবারের জাতীয় সম্মেলনে সারা দেশ থেকে প্রায় ৭ হাজার কাউন্সিলর অংশ নেন। সম্মেলনকে ঘিরে প্রায় এক লাখ নেতা-কর্মী সম্মেলনস্থল ও আশপাশে সমবেত হবে বলে আশাবাদী ক্ষমতাসীন দল।
আরও পড়ুন:আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল প্রত্যাখ্যান করে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বিএনপি ও দলটির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলো।
রাজধানীর তোপখানা মোড়ের শিশুকল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার বিকেলে দলগুলোর যৌথসভায় এমন দাবি জানানো হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিএনপি মিডিয়া সেলের পক্ষে শাকিব আনোয়ারের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমরা রাজপথে সক্রিয় বিরোধী রাজনৈতিক দলসমূহ দীর্ঘদিন ধরে দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করে আসছি। এ জন্য আমরা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, জাতীয় সংসদের বিলুপ্তি, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ হয়রানিমূলক রাজনৈতিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ও গ্রেপ্তারকৃত সকল রাজবন্দির মুক্তি এবং বিদ্যমান অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, সরকার ব্যবস্থা ও সংবিধান সংস্কারের দাবিতে যুগপৎ ধারায় এক আন্দোলনে আছি।
‘এই দাবিগুলো ইতিমধ্যে গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। গণদাবির এই আন্দোলনে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পরিকল্পিত সহিংসতা ও নাশকতা ঘটনা ঘটিয়ে সরকার ও সরকারি দল গত ২৮ অক্টোবর, ২০২৩ বিএনপিসহ বিরোধী দলসমূহের মহাসমাবেশ পণ্ড করে দেয়। বিএনপিসহ বিরোধীদের ওপর এই দায় চাপিয়ে গত এক মাস দমন-নিপীড়ন ও গ্রেপ্তারের পথে দেশব্যাপী তারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। সরকার ও সরকারি দলের এইসব নৃশংসতায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের জন্য আমরা গভীর শোক প্রকাশ করি। নিহত, আহত ও কারাবন্দিদের পরিবারের প্রতি আমরা সহমর্মিতা প্রকাশ করছি।’
সরকার একতরফা নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করছি সরকারের পদত্যাগের গণদাবিকে উপেক্ষা করে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো আরেকটি একতরফা নীলনকশার নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে। সরকারের এই রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে সরকারের সহযোগী হিসেবে নির্বাচন কমিশন আগামী ৭ জানুয়ারি, ২০২৪ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। পাতানো এই নির্বাচনের অংশ হিসেবে আজ ৩০ নভেম্বর কথিত নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখও নির্ধারণ করেছে।
‘জনগণের ভোটের গণতান্ত্রিক অধিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া সমগ্র এই নির্বাচনের তফসিলকে আমরা প্রত্যাখান করছি। আমরা অনতিবিলম্বে ৭ জানুয়ারি ঘোষিত নির্বাচনি তফসিল বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে আমরা অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অনতিবিলম্বে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠায় কার্যকরী রাজনৈতিক উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানাই।
‘আমরা পরিষ্কার করে উল্লেখ করতে চাই যে, সরকার যদি জেদ, অহমিকা নিয়ে জবরদস্তি করে নির্বাচনের নামে আরেকটি তামাশা মঞ্চস্থ করতে চায়, তাহলে সরকারের এই অশুভ তৎপরতা প্রতিরোধ করা ছাড়া দেশবাসীর সামনে অন্য কোনো পথ থাকবে না। আমরা সরকার ও সরকারি দলের সকল ধরনের উসকানি, সহিংসতা ও পরিকল্পিত নাশকতা এড়িয়ে শান্তিপূর্ণভাবে চলমান গণআন্দোলন, গণসংগ্রামকে বিজয়ের পথে এগিয়ে নেয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাই। এই আন্দোলনে সকল বিরোধী রাজনৈতিক দল, শ্রেণি-পেশা ও সামাজিক সংগঠনকে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানাই।’
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে এই সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণদলের চেয়ারম্যান এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী, জাগপা সভাপতি খন্দকার লুতফর রহমান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মুফতি মুহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদেকীসহ অনেকে।
আরও পড়ুন:আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়ার সম্ভাবনা নেই উল্লেখ করে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
গণতন্ত্র, সুশাসন ও শুদ্ধাচার চর্চার রাজনৈতিক অঙ্গীকার বিষয়ে সুপারিশমালা উপস্থাপন উপলক্ষে রাজধানীতে বৃহস্পতিবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই উদ্বেগ প্রকাশ করে টিআইবি। সূত্র: ইউএনবি
গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও চর্চার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ নিশ্চিতের লক্ষ্যে কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠা, রাজনৈতিক দলের কার্যক্রমে গণতন্ত্র, সুশাসন ও শুদ্ধাচার নিশ্চিতে ৭৬টি সুপারিশ করেছে টিআইবি।
সংবাদ সম্মেলনে সুপারিশটি তুলে ধরেন টিআইবির গবেষণা সহযোগী কাওসার আহমেদ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপদেষ্টা নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলম এবং গবেষণা ও নীতিমালা বিভাগের পরিচালক মুহাম্মদ বদিউজ্জামান।
সংবাদ সম্মেলনে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে ও পরবর্তী সময় পর্যালোচনার ভিত্তিতে আমাদের ধারণা হয়েছে- অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলতে আমরা যা বুঝি, তা এবারও পাওয়া যাচ্ছে না। এটি অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। ভোটের অধিকারভিত্তিক নির্বাচন প্রতিষ্ঠা করা এবং এই নির্বাচনের ওপর জনআস্থা নিশ্চিত করাও অসম্ভব বলে আমরা মনে করি।’
টিআইবির সুপারিশামালায়ও বিষয়টির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
ড. জামান বলেন, ‘অর্ধশতাব্দী ধরে আমরা আসনভিত্তিক সংসদীয় ব্যবস্থার চর্চা করছি। এখন আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক সংসদীয় ব্যবস্থার চর্চা করার সময় এসেছে। সংসদীয় ব্যবস্থাকে কার্যকর করতে প্রয়োজন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা। এজন্য নির্বাচনকালীন সরকার এবং অন্যান্য সব অংশীজন বিশেষ করে প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার স্বার্থের দ্বন্দ্বমুক্ত ও দলীয় প্রভাবমুক্ত ভূমিকা প্রয়োজন, যা নিশ্চিত করতে আইনি সংস্কার জরুরি।’
স্বাধীন, শক্তিশালী ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) সব কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে আইনে অন্তর্ভুক্ত যোগ্যতা ও অযোগ্যতার শর্তাবলি যথাযথভাবে অনুসরণ করা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিতে অনুসন্ধান কমিটি কর্তৃক গণশুনানি; গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধনী) ২০২৩-এর ৯১ (এ) সংশোধনের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট সংসদীয় আসনের পূর্ণাঙ্গ ফলাফল বাতিল করার ক্ষমতা রহিত করার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা সংকুচিত করার এই ধারা পরিবর্তন, প্রতিযোগিতার সমান ক্ষেত্র (লেভেল প্লেইং ফিল্ড) নিশ্চিতে নির্বাচন-পূর্ব সময়ে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের নির্বাচনকেন্দ্রিক আচরণ বিধি সুস্পষ্ট করা এবং সব দল ও প্রার্থীর প্রচারণার সমান সুযোগ নিশ্চিত করা; জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের সব নির্বাচনে ‘না’ ভোটের পুনঃপ্রচলনের সুপারিশ করেছে টিআইবি।
রাজনৈতিক দলের কার্যক্রমে গণতন্ত্র, সুশাসন ও শুদ্ধাচার চর্চা রাজনৈতিক দলের সব প্রকার গৃহীত অনুদান, আয়-ব্যয়, বিশেষ কার্যক্রমভিত্তিক সংগৃহীত অর্থ ও ব্যয়, প্রচারণাসহ নির্বাচনী ব্যয়, মনোনয়ন কেন্দ্রিক আর্থিক লেনদেন প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসতে প্রয়োজনীয় আইনি সংস্কার; রাজনৈতিক দলসমূহের আয়-ব্যয়ের নিরীক্ষা প্রতিবেদন ইসির কাছে জমা দেয়া ও নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা; রাজনৈতিক দলসমূহের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে দলের কেন্দ্রীয়/নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সম্পদের হিসাব জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা; সব রাজনৈতিক দলের কমিটিতে অন্তত এক-তৃতীয়াংশ নারী সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা, নির্বাচনে ন্যূনতম এক-তৃতীয়াংশ নারী সদস্যকে মনোনয়ন দেয়া এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠী থেকে প্রার্থী মনোনয়ন বৃদ্ধিরও সুপারিশ করেছে টিআইবি।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব ও প্রতিনিধিত্বের ক্ষেত্রে জেন্ডার, ধর্মীয়, নৃতাত্ত্বিক, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা এবং অন্যান্য মাপকাঠিতে প্রান্তিকতার শিকার নাগরিকদের যথাযথ রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব থাকতে হবে।’
টিআইবির সুপারিশমালায় বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা, প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বাধীনভাবে পরিচালনার জন্য বিচার বিভাগের নিজস্ব সচিবালয় স্থাপন, অধস্তন আদালতের নিয়োগ, পদোন্নতি ও বদলিসহ সার্বিক নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধানে এককভাবে সুপ্রিম কোর্টের সচিবালয়ের ওপর ন্যস্ত করার কথা বলা হয়েছে।
সুপারিমালায় নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, তথ্য অধিকার, তথ্য ও উপাত্ত সুরক্ষা নিশ্চিত করা ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করার জন্য প্রয়োজনীয় আইনি সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
এছাড়া আর্থিক খাত ও সরকারি ব্যয়ে সুশাসন, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত, পরিবেশ সংরক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন রোধে সুস্পষ্ট সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। গণমাধ্যম, মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা, চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা নিশ্চিতে এদের পরিপন্থী আইন সংস্কার এবং নজরদারিমূলক সমাজ ব্যবস্থা থেকে সরে এসে সরকারকে গণমাধ্যম ও নাগরিকদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতেরও আহ্বান জানানো হয়েছে টিআইবির পক্ষ থেকে।
আরও পড়ুন:আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ইউটিসি ভবনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
আগামী নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে আলাপের শুরুতে নিজের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বিএনপির বর্ষীয়ান এ নেতা বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, আমি ১৯৭৮ সাল হতে বিএনপির পলিটিকসে যোগদান করি এবং ৩১ বছর বয়সে ১৯৭৯ সালে আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হই। এরপরে বিরানব্বইতে, ছিয়ান্নব্বইতে, ২০০১-এও হই। ২০০৮-এ আমি করতে পারি নাই। তখন আমার পলিটিক্যাল মামলা-টামলা ছিল। মইন ইউ আহমেদ মামলা দিয়েছে।
‘চৌদ্দতে আমরা নির্বাচনে গেলাম না। আঠারোতে নির্বাচনে গেলাম…ইউ নো বেটার। নির্বাচন করেছি। জিয়াউর রহমান আমার টিচার ছিলেন পাকিস্তান মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে। আমাকে স্নেহ করতেন। উনার ডাকে আমি সাড়া দিয়েছি। বেগম জিয়াও আমাকে অত্যন্ত স্নেহ করেন। খুব ভালো জানেন। তো বেগম জিয়াকে তো আমি এখন তো আমি পলিটিক্যাল হেলম অফ অ্যাফেয়ার্সে (রাজনৈতিক বিষয়ে যুক্ত থাকতে) দেখি না।’
বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা নিয়ে শাহজাহান ওমর বলেন, “যারা আছে, আমার তো একটা ফ্রিডম ফাইটার হিসেবে আমার একটা প্রাইড আছে, একটা অহংকার আছে। এর সঙ্গে বর্তমান রাজনীতি টালি করে না। রেজাল্টিংয়ে আমি কয়েকবার বলেছি, আমি রাজনীতি করব না। রিজাইন দেব, এটা করব, সেটা করব। মহাসচিব বারবার আমাকে কোলাকুলি করে, ‘ভাই, করবেন না। আমাদেরকে (ছেড়ে) যাবেন না।”
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন আবার আসছে। এখন দেখেন আমার বয়স সেভেন্টি সেভেন। বিএনপি এবার নির্বাচনে যাচ্ছে না। যে টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন তারা ইম্পোজ করে, এটা তো কারও পক্ষে হান্ড্রেড পারসেন্ট মানা সম্ভব না। তারপরও আমি ভাবছিলাম যে, মিনিমাম বেগম জিয়াকে মুক্তি দেবে এবং ২৮ তারিখের ঘটনার পরে যে পলিটিক্যাল মামলা সবাইকে দায়ের করেছে…ফুটেজে তো দেখাই যায় কে কী করেছে।
‘আমরা যারা স্টেজে ছিলাম, তারা তো কোনো অপরাধ করিনি বা করতে পারিও না। আপনি এদেরকে কমসে কম মামলা থেকে বাদ দেবেন। তারপরে পুলিশ মার্ডার কেসটেস। একটা স্বাধীন দেশের লোক হয়ে এগুলো তো অপছন্দনীয়। তো কারা করল ব্যাপারটা। এইটাও আমি খুঁজে পাই না।’
বিএনপির রাজনীতি নিয়ে এ নেতা বলেন, ‘বিএনপির রাজনীতি কি এ দেশে ইয়াং ছেলেপেলে কন্ট্রোল করবে না অভিজ্ঞ, মেধা, রাজনৈতিক সচেতন এরা রাজনীতি করবে? এইখানেই আমার ক্ল্যাশ। আমি দেখি, রাজনীতি যারা সচেতন, অভিজ্ঞ, রাজনীতি চর্চা করে, রাজনৈতিক ভাষা জানে, তারা রাজনীতিতে নাই। রাজনীতিতে আছে কী বলে, কচিকাঁচার দল। এটা আমি অ্যাড্রেস করতে পারি না। ৭৭ বছর বয়স হইছে। এবার নির্বাচনে গেল না। আর কবে নির্বাচনে যাবে, গড নোজ।
‘ইন দ্য মিনটাইম, আমাকে অফার দেয়া হলো…আপনি ইলেকশন করেন। আমি বললাম যে, কীভাবে ইলেকশন করব? আমার দল তো করে না। বলে যে, আপনি নিরপেক্ষ নির্বাচন করেন। নিরপেক্ষ নির্বাচন কী? এটা তো কোনো পক্ষই না। আমার কনস্টিটিউয়েন্সিতে (আসন) সিক্সটি পারসেন্ট বিএনপি। ফোরটি পারসেন্ট আওয়ামী লীগ। তো আমি যদি নিরপেক্ষ যাই, ফোরটি পারসেন্ট আওয়ামী লীগ তো একটা ভোটও দেবে না। আর আমার যে সিক্সটি পারসেন্ট আছে, তারাও তো বলবে যে, এই লোক দলছাড়া নিরপেক্ষভাবে আসছে। তারাও ডেজার্ট (পক্ষত্যাগ) করবে আমাকে। আই উইল লেফট উইথ ২৫ পারসেন্ট, ৩০ পারসেন্ট।’
তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের রাজনীতি করেছি। হি ওয়াজ অ্যা ভেরি গুড ম্যান। ফ্রিডম ফাইটার; বীরোত্তম। তার রাজনীতি করা, সে আমার টিচার ছিল, সাজে। বেগম জিয়ারও রাজনীতি করা সাজে। এরপরে কতগুলি সাজে…আপনারা তো দেশের সুনাগরিক, আপনারা ভালো বোঝেন। তো জিয়ার রাজনীতি ছেড়ে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতিতে আসা, আমি তো মনে করি, ইট’স আ প্রমোশন। জিয়াউর রহমানের রাজনীতি থেকে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি ইজ বেটার।
‘এখন তো আমার যে কনস্টিটিউয়েন্সি আছে, আমার বন্ধুবান্ধব, শিষ্য, সাগরেদ লোকজন তো অনেক আছে। তাদেরকে ২০০৬ থেকে ২০২৩, ১৭ বছরে আই কুডন্ট ডো এনিথিং। এরা বিভিন্ন মামলা, হামলা, এটা সেটা, বিভিন্নভাবে ডিপ্রাইভ (বঞ্চিত)। তারা তো ডিপ্রাইভ হয়েছে আমার কারণে। বিকজ আমি তাদেরকে ধরে রাখছি। এদেরকে আমি কী বুঝ দেব? তো ভাবলাম যে, অন্তত কনস্টিটিউয়েন্সির স্বার্থে, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে, বিশেষ করে জাতির সার্বভৌমত্বের স্বার্থে আই শুড ডু ইলেকশন। কী করব? যদি মাননীয় নেত্রী আমাকে নৌকা প্রতীক দেন, আই উইল গো ফর দ্যাট। আই হ্যাভ ডিসাইডেড যে, আই সিক ইলেকশন (আমি নির্বাচন করব)। বোট মার্কা।’
ঝালকাঠি-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানান শাহজাহান ওমর।
তার উদ্দেশে এক সাংবাদিক বলেন, প্রতীক বরাদ্দ হচ্ছে ১৮ ডিসেম্বর। শেষ পর্যন্ত নৌকা না দিলে তিনি নির্বাচনে থাকবেন কি না।
জবাবে শাহজাহান ওমর বলেন, ‘তাইলে থাকি কেমন করে? আমি নৌকায় নির্বাচন করতে চাই। নৌকায় আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। হিয়ার ইজ অ্যা লেটার (এই যে দেখেন পত্র)।’
আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আই অ্যাম নট অর্ডিনারি ক্যান্ডিডেট (আমি সাধারণ প্রার্থী নই)। এটা (দলে যোগদান) অর্ডিনারি ক্যান্ডিডেটের ব্যাপারে প্রযোজ্য।’
আরও পড়ুন:শ্রমিক ও তাদের অধিকার বিষয়ে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের জারি করা স্মারকলিপিটি নিয়ে খুব বেশি উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশি পণ্যগুলো তার গুণমান, প্রতিযোগিতামূলক মূল্য ও সময়মতো পৌঁছে দেয়ার কারণে মার্কিন বাজারে প্রবেশাধিকার পায়। বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা খুবই স্মার্ট ও সক্রিয়। আমাদের গতিশীল বেসরকারি খাতের ওপর আমার আস্থা আছে। এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির একটি প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্র। আমাদের বেসরকারি খাত তৈরি পোশাক রপ্তানি করে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি খাত বাংলাদেশি পণ্য কেনে।’
এ সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এমনকি আপনি যুক্তরাষ্ট্রের স্টোরগুলোতে অনেক চীনা পণ্যও পাবেন।
‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেমোরেন্ডাম অন অ্যাডভান্সিং ওয়ার্কার এমপাওয়ারমেন্ট, রাইটস অ্যান্ড হাই লেবার স্ট্যান্ডার্ডস গ্লোবালি’ শিরোনামে ১৬ নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের এক স্মারকলিপি জারি করা হয়।
এতে বলা হয়, ‘যারা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাদের, শ্রম অধিকার রক্ষাকারী ও শ্রমিক সংগঠনগুলোকে হুমকি দেয়, ভয় দেখায় এবং হামলা করে তাদের জবাবদিহি করা হবে। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্য জরিমানা ও ভিসা বিধিনিষেধের মতো পদক্ষেপগুলো কার্যকর করতে তারা কাজ করবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন না হওয়ার কথা বললেও ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস বলছে ভিন্ন কথা।
স্মারকলিপিটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগ পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে বাংলাদেশের ‘শঙ্কিত হওয়ার’ অনেক কারণ আছে জানিয়ে ওয়াশিংটন দূতাবাস বাণিজ্য মন্ত্রনালয়কে এক চিঠিতে জানায়, স্মারকলিপিতে শ্রম অধিকার সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তার পেছনে রাজনীতি রয়েছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন উপায়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের চেষ্টা করবে।
ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাসের চিঠিতে বলা হয়, ‘স্মারকলিপিটি বাংলাদেশের জন্য একটি সংকেত। কারণ শ্রম সমস্যার অজুহাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এতে বর্ণিত যেকোনো ব্যবস্থা নিতে পারে। স্মারকলিপিটি বাংলাদেশের পোশাক খাতেও প্রভাব ফেলতে পারে এবং এটি সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিবেচনা করা উচিত।’
যদিও পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের চিঠির বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে সাংবাদিকদের জানান।
এ সময় যুক্তরাষ্ট্র পুরো শ্রম খাতের জন্য উদ্যোগ নিলে বাংলাদেশ অবশ্যই স্বাগত জানাবে উল্লেখ করে মোমেন বলেন, ‘তারা যদি একটি ভালো নীতি গ্রহণ করে তাহলে সেটা হবে একটি মহৎ উদ্যোগ। আমি আশা করি যুক্তরাষ্ট্র ধনী দেশ হওয়ায় জলবায়ু ও অভিবাসন বিষয়ে ভালো উদ্যোগ নেবে।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি ইতিবাচক কর্মসূচি নিয়ে আসে, আমরা অবশ্যই এটাকে স্বাগত জানাব। বাংলাদেশ দেখতে চায় সব শ্রমিক ভালোভাবে জীবনযাপন করছে।’
কিছু লোকের মধ্যে দেশপ্রেমের অভাব আছে বলেও মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করে এমন কোনো প্রচেষ্টা বাংলাদেশ দেখতে চায় না।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ছুটি থেকে ফেরার পর এটি রুটিন বৈঠক। আমরা খুশি যে তিনি ফিরে এসেছেন। নতুন কিছু নয়, শুধু রুটিন মিটিং।’
জাপানে পাঠানোর নামে প্রতারণার অভিযোগে মো. সাইদুল ইসলাম নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার সাইদুল মেহেরুন্নেছা গার্লস হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক ছিলেন। অধ্যাপনা করেছেন ঢাকা মডেল ডিগ্রি কলেজেও।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, জাপানে পাঠানোর নামে ৫০ জনের কাছ থেকে ৭৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন সাইদুল।
মিরপুর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গ্রেপ্তার সাইদুল বর্তমানে ওয়েসিস নেটলিংক লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। প্রতিষ্ঠানটি থেকে এসএসডাব্লিউ এবং টিআইটিপি ক্যাটাগরিতে ওয়ার্কিং ভিসায় জাপানে লোক পাঠানো হয় বলে বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। অথচ তার প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র জাপানি ভাষা শিক্ষা দেয়ার জন্যই লাইসেন্সপ্রাপ্ত। জাপানে পাঠানোর জন্য রেজিস্ট্রেশন, ভিসা প্রসেসিং ফি, মেডিক্যাল ফি সহ অন্যান্য খরচ বাবদ প্রতিজনের কাছ থেকে ১ থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়। এভাবে ৫০ জনের কাছ থেকে ৭৫ লাখ টাকা নিয়েছেন বলে ভূক্তভোগীদের দাবি।’
তিনি আরও বলেন, ‘টাকা পাওয়ার দুই মাসের মধ্যেই তাদের জাপান পাঠানোর কথা। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলে তারা নানারকম তালবাহানা শুরু করে। অবশেষে বুধবার ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ করলে গ্রেপ্তার করা হয় সাইদুলকে।’
ওসি মহসীন বলেন, সাইদুল এক সময় শিক্ষকতা করতেন। তিনি ২০০৫ সালে মেহেরুন্নেছা মহিলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রভাষক ছিলেন। এরপর তিনি যোগ দেন ঢাকা মডেল ডিগ্রি কলেজে। সেখানে তিনি সহযোগী অধ্যাপক ও রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালে তিনি ব্যবসায় নামেন। কয়েকটি ব্যবসায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর তিনি এই পথ বেছে নেন।
সাইদুলের বিরুদ্ধে এর আগেও ৩টি মামলা রয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো থ্রেট দেখছেন না বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
বৃহস্পতিবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) অন্যান্য কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
ভোটের দিনের কোনো থ্রেট আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশপ্রধান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা কোনো থ্রেট দেখছি না। এরপরও গোয়েন্দা সংস্থা আমাদের সব জায়গায় ফিট করা আছে। তারা যে তথ্য দেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেই আলোকে ব্যবস্থা নেবে। সকল প্রস্তুতি নিতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ও প্রস্তুত আছি।’
আইজিপি বলেন, ‘আমরা সিইসি মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। যখনই নির্বাচন আসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সবাই নির্বাচন কমিশনের অধীনে চলে আসি। ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করি। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠভাবে করার জন্য আইন অনুযায়ী যে কাজ করার দরকার তাই করে থাকি।
‘আমরা নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আমরা আশা করছি, ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী একটা অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন দেশবাসীকে উপহার দিতে পারব।’
আইনশৃঙ্খলা পরিবেশ কেমন? এখন পর্যন্ত আশঙ্কাজনক কোনো খবর আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আশঙ্কাজনক কোনো খবর নেই, বা বোধও করছি না।’
সহিংসতা প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, ‘সহিংসতা যারা করছে তারা বাসে আগুন দিচ্ছে, গাড়িতে আগুন দিচ্ছে, ট্রেনে আগুন দিচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকে অ্যারেস্ট হচ্ছে। তবে আমরা তৎপর আছি। আমাদের তৎপর থাকার কারণে রাস্তাঘাটে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি বেড়েছে। বর্তমানে ৮০ শতাংশ গাড়ি রাস্তায় চলাচল করছে। প্রায় সবকিছুই স্বাভাবিক হচ্ছে। যারা চোরাগুপ্তা হামলা চালাচ্ছে, দেশের আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেব।’
আরও পড়ুন:দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার বিষয়টি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদের অবহিত করেছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
নির্বাচন ভবনে বুধবার বিকেলে ইইউর পাশাপাশি ইউরোপের বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
বৈঠকে ইইউর প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপের বিষয়ে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকে আমরা ইইউ ডেলিগেশনের (প্রতিনিধিদল) সাথে বসেছিলাম। তারা এর আগেও একাধিকবার এসেছেন। সহসাই তাদের একটা এক্সপার্ট টিম নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আমাদের এখানে আসবেন বলে তারা জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে চারজন এসে পৌঁছেছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি অনেক দূর এগিয়ে গেছে, এটা তারা জানতেন না। এটা আমরা তাদের জানিয়েছি। আমরা তাদের জানিয়েছি নির্বাচন ফ্রি, ফেয়ার, পিসফুল অ্যান্ড ক্রেডিবল করতে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, এটা আমরা জানিয়েছি।
‘আমরা আরও জানিয়েছি, আমাদের কমিশনাররা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে তারা জনগণকে এবং প্রশাসনকে এসব বিষয় অবহিত করছেন, যাতে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত হয়। আমরা যতদূর বুঝেছি তারা আমাদের কথায় সন্তুষ্ট হয়েছেন।’
নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতার বিষয়ে ইইউকে অবহিত করা হয়েছে জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘একটা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে যে আমরা আইনত এবং সাংবিধানিকভাবে বাধ্য, সেটা আমরা স্পষ্ট করে তাদেরকে বুঝিয়েছি। এটা আমরা আগেও তাদেরকে বুঝিযেছিলাম। আমাদের যে সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা, আমার বিশ্বাস, এটা তারা বুঝতে পেরেছেন।
‘আর পলিটিক্যাল বিষয়টা আমরা তাদের বলেছি, যদি কোনো মতবিরোধ থাকে, আমরা সেখানে হস্তক্ষেপ করতে পারি না। আমরা শুধু সেখানে এনগেজ থাকতে পারি।’
এর আগে ইইউর দূত চার্লস হোয়াটলি সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পন্থায় শান্তিপূর্ণ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আশা করে জোটটি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য