পুঁজিবাজারের চলমান পতনের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ভূমিকার বিষয়টি আবারও সামনে এসেছে। খোদ নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের আক্ষেপ, প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী অন্য দেশে ৯০ শতাংশ, বাংলাদেশে তা ১০।
এ নিয়ে আলোচনা নতুন নয়। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ছে না। তবে তা কি মোট বিনিয়োগকারীর তুলনায় আসলেই ১০ শতাংশ? পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা মানতে নারাজ।
কারা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর মধ্যে রয়েছে, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ওরাই প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, যেটা ক্যাপিটালাইজেশনের প্রায় ৩ থেকে ৪ শতাংশ হবে।
‘এ ছাড়া ব্যাংক, মার্চেন্ট ব্যাংকও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী। ডিএসইর যত ডিলার আছে সবাই এই তালিকার মধ্যে পড়ে। আইসিবিও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী। আরেকটা হলো করপোরেট বিনিয়োগকারী। তারা প্রাতিষ্ঠানিক না হলেও বাজারে তাদের বড় অংশগ্রহণ রয়েছে।’
ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ‘পেনশন ফান্ড, প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী হতে পারে। কোনো গার্মেন্টস মালিক তিনি প্রতিষ্ঠানের নামে শেয়ার কিনলে সেটা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী। আরেকটা আছে- বিএসইসির নিবন্ধিত এলিজিবল ইনভেস্টর, যারা বিডিংয়ে অংশগ্রহণ করতে পারেন, তারা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী।’
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কি কম
লালী বলেন, ‘আমি মনে করি না প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর ঘাটতি আছে দেশে। গত মঙ্গলবার ৩০০ কোটি টাকা এক্সট্রা আসল, সেটা কোত্থেকে আসল? ওই যে নিয়ে বসে ছিল টাকা।’
তিনি বলেন, ‘অন্যরা বলেন ৯০ শতাংশ ক্ষুদ্র বিনিয়োগ, আমি বলি এটা ৮০ শতাংশ। বিষয়টা হচ্ছে যে হাই নেটওয়ার্ক ইনডিভিজুয়ালস যারা আছেন, তারা মোটামুটি ৬ মাস থেকে এক বছরের জন্য বিনিয়োগ করেন। এই বিনিয়োগকারীদের হাতে টাকা আছে, কিন্তু তারা সাইডে বসে আছেন। দুদিন থেকে ভলিউম বেড়েছে, কারণ তাদের অ্যাক্টিভিটি বেড়েছে।’
মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী নেই বা তারা হাত গুটিয়ে বসে থাকেন এই কথাটি সত্য নয়।’
তিনি বলেন, ‘৯০ শতাংশ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী এবং ১০ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর যে কথা বলা হয়, সেটা হবে যদি বলেন ইন টার্মস অব ইনভেস্টরস নাম্বার। কিন্তু ইন টার্মস অফ ইনভেস্টমেন্ট যদি বলেন, তাহলে ৯০ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, আর ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ মাত্র ১০ শতাংশ।’
তিনি বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী নেই, এই কথা বলা বা প্রচার করা বাজারের জন্যও খারাপ। এটা মানসিকভাবে বিনিয়োগকারীদের দুর্বল ও বিনিয়োগ বিমুখ করে তোলে। বাস্তবতা ভিন্ন কথা, কারণ বাজারের ৯০ শতাংশই বিনিয়োগই প্রাতিষ্ঠানিক ও বড় বিনিয়োগকারীদের।
শাকিল রিজভী বলেন, ‘আমার প্রশ্ন হলো- যদি বিনিয়োগকারী না থাকে, অর্থাৎ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীও নাই, ব্যক্তি বিনিয়োগকারীও শেয়ার বিক্রি করে চলে গেছে, তাহলে শেয়ারগুলো কি ডাস্টবিনে পড়ে আছে? যারা কিনেছে তারা কি বিনিয়োগকারী নয়?’
তিনি বলেন, ‘ব্যক্তি বিনিয়োগকারী বেশি হারে কমে গেছে যেটার কারণেই বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশনের ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ব্যক্তি বিনিয়োগকারী হবে।’
ডিএসইর সাবেক সভাপতি বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছেই বেশি শেয়ার আছে। স্পন্সরের কাছেই তো আছেই। স্পন্সররা কেউ ৩০, ৪০, ৫০, ৭০ শতাংশ হোল্ড করে। গ্রামীণফোন, স্কয়ার কত হোল্ড করে?
‘বাটা, গ্রামীণফোন, স্কয়ার ফার্মা, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর মতো কোম্পানিগুলোর ব্যালেন্স শিট দেখতে হবে। এসব কোম্পানির শেয়ার কারা হোল্ড করছে? ১০০টা কোম্পানির সব শেয়ার, বাজার মূলধন যা, দেখা যাবে ৫টা কোম্পানির বাজার মূলধন তার সমান। সে জন্য বড় কোম্পানিগুলো কারা হোল্ড করছে? যদি বলা হয়, তারা বিনিয়োগকারী নয়, তাহলে কিছু বলার নাই।’
তিনি বলেন, ‘ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর বিও আছে এক লাখ। তারা কোম্পানিগুলোর কত শতাংশ শেয়ার হোল্ড করে? ধরা যাক, একটা করে ৫০০ জন ৫০০টি শেয়ার হোল্ড করে, আর একটা বিও থেকেই করা হয় পাঁচ লাখ। একটা ব্যাংক হোল্ড করে মনে করুন ৫০০ কোটি, আবার এই ৫০০ কোটি হোল্ড করতে ২০ হাজার বিও লাগবে।’
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কি হাত গুটিয়ে বসে?
শাকিল রিজভী বলেন, ‘এই বাজারে সবাই লাভ করতে আসে। ক্যাপিটাল মার্কেট বা পুঁজিবাজার। সবাই আসে পুঁজি বানাতে। এখন কোনো শেয়ারের ভ্যালু ১০০ টাকা, এটাকে স্পেকুলেশন করে বানানো হয়েছে ৫০০ টাকা। এটার পেছনে খেলা হয়েছে, কারা করেছেন সেটা ভিন্ন বিষয়, কিন্তু এখন যে প্রাইসে আছে সেটা কেনার প্রাইস নয়, তাহলে একজন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী কেন সেটা কিনবেন?
‘কেনার লোক ঠিকই আছে। রিজনেবল প্রাইসে আসুক। বলা হয়, বায়ার নাই, কিন্তু ঠিকই আছে কিন্তু রেট খারাপ। একটা ২০ লাখ টাকার গাড়ি কেউ কিনছে না। ১৫ বা ১৬ লাখ টাকায় দেন সঙ্গে সঙ্গে চলে যাবে। কিন্তু ২০ লাখ টাকার গাড়ি দাম হাঁকছে ৩০ লাখ টাকা ফ্লোর প্রাইস, কেনেন? কেউ কিনবে?’
আহমেদ রশিদ লালী বলেন, ‘এখন প্রাতিষ্ঠানিকরা কিনছে না। কারণ, ডিসেম্বর ক্লোজিং, তাদের অ্যাডজাস্টমেন্ট আছে। ধরা যাক, ইবিএল। তারা তো টাকা নিয়ে এসেছে ব্যাংক থেকে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের অ্যাডজাস্টমেন্ট করে, পেমেন্ট করে নতুন করে শুরু করতে হবে। যার কারণে তাদেরও একটা সমস্যা আছে। অনেকেই গত মাসেই অ্যাডজাস্টমেন্টের হিসাব, টাকা পয়াস যা বের করার তা করে ফেলেছে। এখনও অনেকেই করবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।’
করণীয় কী
আহমেদ রশিদ লালী বলেন, ‘বিনিয়োগকারী ঠিকই আছে, আসলে প্রয়োজন ডিএসইর রিফর্মেশন, মার্জিন রেগুলেশনে, গভর্ন্যান্স সিস্টেমে এবং সেটা কন্টিনিউয়াস হতে হবে। আমরা এখন ফ্রন্টিয়ার মার্কেটে আছি। যখন ইমার্জিং মার্কেটে ট্রান্সফার হতে গেলে দুই থেকে তিনটি জিনিস খুব প্রয়োজন। সেটা হলো- ১. গভর্ন্যান্স সিস্টেম, ২. লিক্যুইডিটি অফ শেয়ারস অ্যান্ড মানি ই দ্য মার্কেট, ৩. পলিসি কনসিস্টেন্সি ও ৪. রিফর্মেশন।’
তিনি বলেন, ‘যখনই ইমার্জিং মার্কেটে যাব, তখন বাজারকে অন্যরূপে দেখতে পাব। এই রিফর্মসগুলো না হলে বাজারের উন্নয়ন আমরা যেভাবে দেখতে চাই। সেভাবে পাব না।’
‘ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের রিফর্ম যদি বলি, ডিএসই মনে হয় বিশ্বে একমাত্র এক্সচেঞ্জ যেখানে নামকাওয়াস্তে রিসার্চ ডিপার্টমেন্ট আছে, তবে ১০ জন অ্যানালিস্ট রেখে যে একটা রিসার্চ ডিপার্টমেন্ট গড়ে উঠবে, তারা রিসার্চ করে পলিসি মেকিং বোর্ডে দেবে, প্রতি ১০ বা ১৫ দিন পরে রিসার্চ পেপার বের করবে এবং মানুষ তা কিনে নেবে, এসব বিষয় নাই। যা খুবই দরকার’-যোগ করেন লালী।
তিনি আরও বলেন, ‘করপোরেট গভর্ন্যান্স ডিপার্টেমেন্ট আছে, কিন্তু তার কাজ কী? এই যে ত্রৈমাসিক রিপোর্ট আসে লিস্টেড কোম্পানির, সেটা করপোরেট গভর্ন্যান্স ডিপার্টমেন্ট দেখবে সেখানে হিডেন কিছু আছে কি না, যদি থাকে বিএসইসিকে জানাবে। বিএসইসি বলবে ব্যাখ্যা চাও, তারা ব্যাখ্যা চাইবে। এ জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। তারা সারা বছর যে রিপোর্ট আসে সেগুলো দেখবে, কোথাও ভুল আছে কি না। কারণ, কোনো পিএসআই আসলে বিনিয়োগকারীরা সরাসরি যুক্ত হয়ে যান।
‘এখন কোনো কোম্পানির ইপিএস দেখাল ২ টাকা, সেটা আসলেই আছে কি না, নাকি তারা লুকিয়ে ভুয়া একটা হিসাব দিয়েছে। এই জিনিসটা যদি করপোরেট গভর্ন্যান্স ডিপার্টমেন্ট যদি দিতে পারে তাহলে বিনিয়োগকারীরা আরও ইনফর্মড হবেন। এগুলো করতে হবে কস্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস দিয়ে। আমি জানি না ডিএসইতে কতজন সিএ আছে। সেজন্য এই ডিপার্টমেন্টকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।’
ডিবিএর প্রাক্তন এই সভাপতি বলেন, ‘ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের ৯ বছর হয়েছে। আমি চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, এই সময়ে ডিএসই কয়টা পলিসি সাজেশন দিয়েছে? বিএসইসি চেয়ারম্যান বললেন, একটাও না।
‘ডিএসই হলো মার্কেট এবং রেগুলেটরের মাঝখানে ব্রিজ। ডিএসই প্রাইমারি রেগুলেটর। সেকেন্ডারি রেগুলেটর বিএসইসি। এই ব্রিজের কাজ যদি ডিএসই করতে না পারে তাহলে ডিএসইকে তো এমডি নিয়োগ দিতে হবে। ডিএসইকে প্রফেশনাল অর্গানাইজেশন করতে হবে। যতক্ষণ না করা যায় ততক্ষণ পর্যন্ত কিছুই আশা করা যায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশন ১৪ দফা দাবি দিল, বাজার ডাউন, ভালো করার জন্য তা মেনে নিতে হচ্ছে। কেন? কেন ডিএসই সেই কাজগুলো করতে পারছে না? কেন ডিএসই বড় বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বসতে পারছে না। বলছে না যে, আপনারা কেন টাকা নিয়ে বসে আছেন? এটা কি বিএসইসির কাজ? বিএসইসি বড় বিনিয়োগকারীরা সঙ্গে বসছে?
‘বিএসইসির কাজ কি সেটা? বিএসইসির কাজ হলো রেগুলেট করা। ডিএসইর থেকে প্রস্তাব যাবে। বিএসইসি যেটা মানার মানবে, যেটা অ্যাড করার দরকার করবে, আর যেটা মাইনাস করার সেটা করবে।’
আরও পড়ুন:শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রধান সূচকের উত্থান হলেও সার্বিক সূচক কমেছে চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১ ও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১, কমেছে ৬৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১৩ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ৭০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০, কমেছে ১৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৭৩ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:টানা দুই দিন উত্থানের পর তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও ঢাকার পুঁজিবাজারে বইছে সুবাতাস।
সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৭ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট করে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগেরই দাম বেড়েছে। ১০৯ কোম্পানির দরপতন এবং ৫৩ কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৩০ কোম্পানির।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও বইছে চনমনে হাওয়া। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১০২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৭ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭, কমেছে ৫১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে সিএসইতে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবারের লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে; বেড়েছে সবকটি সূচক।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে পতন দিয়ে শুরু হয়েছে লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে এবং বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় দাম বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের। দরবৃদ্ধির ২৪৫ কোম্পানির বিপরীতে দর কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দিনের শুরুতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৯০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট। সূচক কমলেও বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ১০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৫, কমেছে ২৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম দুই ঘণ্টায় লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গত সপ্তাহের উত্থানের ধারা ধরে রেখে এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে থাকলেও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৯, কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর ৩০ মিনিটে ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি টাকা। ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২২, কমেছে ৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম আধা ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৩০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য