পুঁজিবাজারের চলমান পতনের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ভূমিকার বিষয়টি আবারও সামনে এসেছে। খোদ নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের আক্ষেপ, প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী অন্য দেশে ৯০ শতাংশ, বাংলাদেশে তা ১০।
এ নিয়ে আলোচনা নতুন নয়। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ছে না। তবে তা কি মোট বিনিয়োগকারীর তুলনায় আসলেই ১০ শতাংশ? পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা মানতে নারাজ।
কারা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর মধ্যে রয়েছে, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ওরাই প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, যেটা ক্যাপিটালাইজেশনের প্রায় ৩ থেকে ৪ শতাংশ হবে।
‘এ ছাড়া ব্যাংক, মার্চেন্ট ব্যাংকও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী। ডিএসইর যত ডিলার আছে সবাই এই তালিকার মধ্যে পড়ে। আইসিবিও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী। আরেকটা হলো করপোরেট বিনিয়োগকারী। তারা প্রাতিষ্ঠানিক না হলেও বাজারে তাদের বড় অংশগ্রহণ রয়েছে।’
ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ‘পেনশন ফান্ড, প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী হতে পারে। কোনো গার্মেন্টস মালিক তিনি প্রতিষ্ঠানের নামে শেয়ার কিনলে সেটা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী। আরেকটা আছে- বিএসইসির নিবন্ধিত এলিজিবল ইনভেস্টর, যারা বিডিংয়ে অংশগ্রহণ করতে পারেন, তারা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী।’
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কি কম
লালী বলেন, ‘আমি মনে করি না প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর ঘাটতি আছে দেশে। গত মঙ্গলবার ৩০০ কোটি টাকা এক্সট্রা আসল, সেটা কোত্থেকে আসল? ওই যে নিয়ে বসে ছিল টাকা।’
তিনি বলেন, ‘অন্যরা বলেন ৯০ শতাংশ ক্ষুদ্র বিনিয়োগ, আমি বলি এটা ৮০ শতাংশ। বিষয়টা হচ্ছে যে হাই নেটওয়ার্ক ইনডিভিজুয়ালস যারা আছেন, তারা মোটামুটি ৬ মাস থেকে এক বছরের জন্য বিনিয়োগ করেন। এই বিনিয়োগকারীদের হাতে টাকা আছে, কিন্তু তারা সাইডে বসে আছেন। দুদিন থেকে ভলিউম বেড়েছে, কারণ তাদের অ্যাক্টিভিটি বেড়েছে।’
মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী নেই বা তারা হাত গুটিয়ে বসে থাকেন এই কথাটি সত্য নয়।’
তিনি বলেন, ‘৯০ শতাংশ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী এবং ১০ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর যে কথা বলা হয়, সেটা হবে যদি বলেন ইন টার্মস অব ইনভেস্টরস নাম্বার। কিন্তু ইন টার্মস অফ ইনভেস্টমেন্ট যদি বলেন, তাহলে ৯০ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, আর ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ মাত্র ১০ শতাংশ।’
তিনি বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী নেই, এই কথা বলা বা প্রচার করা বাজারের জন্যও খারাপ। এটা মানসিকভাবে বিনিয়োগকারীদের দুর্বল ও বিনিয়োগ বিমুখ করে তোলে। বাস্তবতা ভিন্ন কথা, কারণ বাজারের ৯০ শতাংশই বিনিয়োগই প্রাতিষ্ঠানিক ও বড় বিনিয়োগকারীদের।
শাকিল রিজভী বলেন, ‘আমার প্রশ্ন হলো- যদি বিনিয়োগকারী না থাকে, অর্থাৎ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীও নাই, ব্যক্তি বিনিয়োগকারীও শেয়ার বিক্রি করে চলে গেছে, তাহলে শেয়ারগুলো কি ডাস্টবিনে পড়ে আছে? যারা কিনেছে তারা কি বিনিয়োগকারী নয়?’
তিনি বলেন, ‘ব্যক্তি বিনিয়োগকারী বেশি হারে কমে গেছে যেটার কারণেই বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশনের ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ব্যক্তি বিনিয়োগকারী হবে।’
ডিএসইর সাবেক সভাপতি বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছেই বেশি শেয়ার আছে। স্পন্সরের কাছেই তো আছেই। স্পন্সররা কেউ ৩০, ৪০, ৫০, ৭০ শতাংশ হোল্ড করে। গ্রামীণফোন, স্কয়ার কত হোল্ড করে?
‘বাটা, গ্রামীণফোন, স্কয়ার ফার্মা, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর মতো কোম্পানিগুলোর ব্যালেন্স শিট দেখতে হবে। এসব কোম্পানির শেয়ার কারা হোল্ড করছে? ১০০টা কোম্পানির সব শেয়ার, বাজার মূলধন যা, দেখা যাবে ৫টা কোম্পানির বাজার মূলধন তার সমান। সে জন্য বড় কোম্পানিগুলো কারা হোল্ড করছে? যদি বলা হয়, তারা বিনিয়োগকারী নয়, তাহলে কিছু বলার নাই।’
তিনি বলেন, ‘ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর বিও আছে এক লাখ। তারা কোম্পানিগুলোর কত শতাংশ শেয়ার হোল্ড করে? ধরা যাক, একটা করে ৫০০ জন ৫০০টি শেয়ার হোল্ড করে, আর একটা বিও থেকেই করা হয় পাঁচ লাখ। একটা ব্যাংক হোল্ড করে মনে করুন ৫০০ কোটি, আবার এই ৫০০ কোটি হোল্ড করতে ২০ হাজার বিও লাগবে।’
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কি হাত গুটিয়ে বসে?
শাকিল রিজভী বলেন, ‘এই বাজারে সবাই লাভ করতে আসে। ক্যাপিটাল মার্কেট বা পুঁজিবাজার। সবাই আসে পুঁজি বানাতে। এখন কোনো শেয়ারের ভ্যালু ১০০ টাকা, এটাকে স্পেকুলেশন করে বানানো হয়েছে ৫০০ টাকা। এটার পেছনে খেলা হয়েছে, কারা করেছেন সেটা ভিন্ন বিষয়, কিন্তু এখন যে প্রাইসে আছে সেটা কেনার প্রাইস নয়, তাহলে একজন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী কেন সেটা কিনবেন?
‘কেনার লোক ঠিকই আছে। রিজনেবল প্রাইসে আসুক। বলা হয়, বায়ার নাই, কিন্তু ঠিকই আছে কিন্তু রেট খারাপ। একটা ২০ লাখ টাকার গাড়ি কেউ কিনছে না। ১৫ বা ১৬ লাখ টাকায় দেন সঙ্গে সঙ্গে চলে যাবে। কিন্তু ২০ লাখ টাকার গাড়ি দাম হাঁকছে ৩০ লাখ টাকা ফ্লোর প্রাইস, কেনেন? কেউ কিনবে?’
আহমেদ রশিদ লালী বলেন, ‘এখন প্রাতিষ্ঠানিকরা কিনছে না। কারণ, ডিসেম্বর ক্লোজিং, তাদের অ্যাডজাস্টমেন্ট আছে। ধরা যাক, ইবিএল। তারা তো টাকা নিয়ে এসেছে ব্যাংক থেকে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের অ্যাডজাস্টমেন্ট করে, পেমেন্ট করে নতুন করে শুরু করতে হবে। যার কারণে তাদেরও একটা সমস্যা আছে। অনেকেই গত মাসেই অ্যাডজাস্টমেন্টের হিসাব, টাকা পয়াস যা বের করার তা করে ফেলেছে। এখনও অনেকেই করবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।’
করণীয় কী
আহমেদ রশিদ লালী বলেন, ‘বিনিয়োগকারী ঠিকই আছে, আসলে প্রয়োজন ডিএসইর রিফর্মেশন, মার্জিন রেগুলেশনে, গভর্ন্যান্স সিস্টেমে এবং সেটা কন্টিনিউয়াস হতে হবে। আমরা এখন ফ্রন্টিয়ার মার্কেটে আছি। যখন ইমার্জিং মার্কেটে ট্রান্সফার হতে গেলে দুই থেকে তিনটি জিনিস খুব প্রয়োজন। সেটা হলো- ১. গভর্ন্যান্স সিস্টেম, ২. লিক্যুইডিটি অফ শেয়ারস অ্যান্ড মানি ই দ্য মার্কেট, ৩. পলিসি কনসিস্টেন্সি ও ৪. রিফর্মেশন।’
তিনি বলেন, ‘যখনই ইমার্জিং মার্কেটে যাব, তখন বাজারকে অন্যরূপে দেখতে পাব। এই রিফর্মসগুলো না হলে বাজারের উন্নয়ন আমরা যেভাবে দেখতে চাই। সেভাবে পাব না।’
‘ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের রিফর্ম যদি বলি, ডিএসই মনে হয় বিশ্বে একমাত্র এক্সচেঞ্জ যেখানে নামকাওয়াস্তে রিসার্চ ডিপার্টমেন্ট আছে, তবে ১০ জন অ্যানালিস্ট রেখে যে একটা রিসার্চ ডিপার্টমেন্ট গড়ে উঠবে, তারা রিসার্চ করে পলিসি মেকিং বোর্ডে দেবে, প্রতি ১০ বা ১৫ দিন পরে রিসার্চ পেপার বের করবে এবং মানুষ তা কিনে নেবে, এসব বিষয় নাই। যা খুবই দরকার’-যোগ করেন লালী।
তিনি আরও বলেন, ‘করপোরেট গভর্ন্যান্স ডিপার্টেমেন্ট আছে, কিন্তু তার কাজ কী? এই যে ত্রৈমাসিক রিপোর্ট আসে লিস্টেড কোম্পানির, সেটা করপোরেট গভর্ন্যান্স ডিপার্টমেন্ট দেখবে সেখানে হিডেন কিছু আছে কি না, যদি থাকে বিএসইসিকে জানাবে। বিএসইসি বলবে ব্যাখ্যা চাও, তারা ব্যাখ্যা চাইবে। এ জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। তারা সারা বছর যে রিপোর্ট আসে সেগুলো দেখবে, কোথাও ভুল আছে কি না। কারণ, কোনো পিএসআই আসলে বিনিয়োগকারীরা সরাসরি যুক্ত হয়ে যান।
‘এখন কোনো কোম্পানির ইপিএস দেখাল ২ টাকা, সেটা আসলেই আছে কি না, নাকি তারা লুকিয়ে ভুয়া একটা হিসাব দিয়েছে। এই জিনিসটা যদি করপোরেট গভর্ন্যান্স ডিপার্টমেন্ট যদি দিতে পারে তাহলে বিনিয়োগকারীরা আরও ইনফর্মড হবেন। এগুলো করতে হবে কস্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস দিয়ে। আমি জানি না ডিএসইতে কতজন সিএ আছে। সেজন্য এই ডিপার্টমেন্টকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।’
ডিবিএর প্রাক্তন এই সভাপতি বলেন, ‘ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের ৯ বছর হয়েছে। আমি চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, এই সময়ে ডিএসই কয়টা পলিসি সাজেশন দিয়েছে? বিএসইসি চেয়ারম্যান বললেন, একটাও না।
‘ডিএসই হলো মার্কেট এবং রেগুলেটরের মাঝখানে ব্রিজ। ডিএসই প্রাইমারি রেগুলেটর। সেকেন্ডারি রেগুলেটর বিএসইসি। এই ব্রিজের কাজ যদি ডিএসই করতে না পারে তাহলে ডিএসইকে তো এমডি নিয়োগ দিতে হবে। ডিএসইকে প্রফেশনাল অর্গানাইজেশন করতে হবে। যতক্ষণ না করা যায় ততক্ষণ পর্যন্ত কিছুই আশা করা যায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশন ১৪ দফা দাবি দিল, বাজার ডাউন, ভালো করার জন্য তা মেনে নিতে হচ্ছে। কেন? কেন ডিএসই সেই কাজগুলো করতে পারছে না? কেন ডিএসই বড় বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বসতে পারছে না। বলছে না যে, আপনারা কেন টাকা নিয়ে বসে আছেন? এটা কি বিএসইসির কাজ? বিএসইসি বড় বিনিয়োগকারীরা সঙ্গে বসছে?
‘বিএসইসির কাজ কি সেটা? বিএসইসির কাজ হলো রেগুলেট করা। ডিএসইর থেকে প্রস্তাব যাবে। বিএসইসি যেটা মানার মানবে, যেটা অ্যাড করার দরকার করবে, আর যেটা মাইনাস করার সেটা করবে।’
আরও পড়ুন:পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
মন্তব্য