‘সরকার আসে সরকার যায়, কিন্তু একটি ব্রিজ কেউ করে দিল না। দেশের এত উন্নয়ন, তবু আমাদের এলাকার উন্নতির জন্য একটি ব্রিজের দাবি পূরণ হলো না।’
এভাবে আক্ষেপ প্রকাশ করছিলেন এলাকার মানুষ।
খালের ওপর নির্মাণ করা গ্রামবাসীর তৈরি চারটি বাঁশের সাঁকোই খালের দুই পারের মানুষের একমাত্র ভরসা।
একটি সেতুর অভাবে যুগ যুগ ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে দুই পারের শিক্ষার্থী, কৃষকসহ হাজারও মানুষ। জমিতে উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে গিয়ে একদিকে কৃষকরা যেমন বিড়ম্বনায় পড়ছেন, তেমনি শিক্ষার্থী এবং সাধারণ পথচারীদেরও পড়তে হচ্ছে বিপাকে।
খালের অন্য পাশে কেন্দ্রীয় গোরস্তানে মরদেহ নিয়ে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বছরের পর বছর। তাই দ্রুত একটি সেতু নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের।
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ভোঁপাড়া ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী গ্রামের নাম জামগ্রাম ও তিলাবদুরী। গ্রামের পশ্চিম দিক দিয়ে বয়ে গেছে রতনডারা খাল, যাতে বছরজুড়ে পানি থাকে। সম্প্রতি এলজিইডির আওতায় পুনঃখনন হওয়ায় খালটি অনেক গভীর হয়েছে। খালের পূর্বপাশে শত শত পরিবারের বসবাস। পশ্চিম দিকে রয়েছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। গ্রামের শত শত কৃষক এ মাঠেই বোরো, আমন ধানসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ করে থাকেন।
খালের ওপর সেতু না থাকায় মাঠের ফসল ঘরে তুলতে কৃষকদের দ্বিগুণ অর্থ খরচ করতে হয়।
খালের পশ্চিমে রয়েছে গ্রামবাসীর কবরস্থান। যেখানে মরদেহ বয়ে নিয়ে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
এই খালের তিলাবদুরী নামক স্থানে একটি, জামগ্রাম মাদ্রাসা বাজারসংলগ্ন স্থানে একটি, জামগ্রাম পশ্চিমপাড়াসংলগ্ন স্থানে একটি ও জামগ্রাম ঢাকাপাড়াসংলগ্ন স্থানে একটি বাঁশের তৈরি নড়বড়ে সাঁকো দিয়েই পারাপার হতে হচ্ছে ১০-১২টি গ্রামের হাজার হাজার বাসিন্দাকে।
প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের এসব ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো পাড়ি দিয়ে স্কুলে যেতে হয়। অস্থ রোগীদের ঝুঁকি নিয়ে এই সাঁকো পাড়ি দিয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে হয়।
এলাকাবাসী জানায়, জরুরি স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াত ও কৃষিপণ্য পরিবহনে এখানে একটি সেতু নির্মাণ অতি জরুরি।
স্থানীয় জামগ্রামের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে যাচ্ছে, তবু আমরা আধুনিক সেবা থেকে বঞ্চিত। রাস্তা পারাপারের জন্য নেই ব্রিজ। সরকার আসে সরকার যায়, আমাদের সেতু কেউ করে দেয় না। একটি সেতুর অভাবে কত ভোগান্তি পোহাতে হয়, সেটা কেউ বুঝতে চায় না।’
জনি হোসেন নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘আমাদের জামগ্রামের পাশে তিন কিলোমিটার দূরে ভোঁপাড়া গ্রামে স্কুলে যায় এই গ্রামের শত শত শিক্ষার্থী। যখন সাঁকো ভাঙা থাকে, তখন আরও বিপদ। ১০-১২ কিলোমিটার ঘুরে ৩০ থেকে ৪০ টাকা খরচ করে ঘুরে স্কুলে যেতে হয়।’
তিলাবদুরী গ্রামের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী লামিয়া খাতুন বলে, ‘বাঁশের সাঁকো দিয়ে ভোঁপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে যেতে অনেক সময় ভয় লাগে। একবার সাঁকোতে পা আটকে গিয়েছিল। একটি ব্রিজ আমাদের দরকার।’
আব্দুল মান্নান, মিজানুর রহমান, মোসলেম উদ্দিনসহ স্থানীয় বেশ কয়েকজন জানান, জনপ্রতিনিধিরা কেবল আশার বাণী শুনিয়েছেন, সেতু হয়নি।
যোগাযোগ করা হলে এলজিইডি নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘জামগ্রাম ও তিলাবদুরী গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া খালে চারটি বাঁশের সাঁকো আছে। আমরা পরিদর্শন করে ব্রিজ নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
ওই এলাকার মানুষের প্রাণের দাবি খালের ওপর একটি পাকা সেতু। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে জানিয়ে নওগাঁ-৬ আসনের (আত্রাই-রাণীনগর) সংসদ সদস্য আলহাজ মো. আনোয়ার হোসেন হেলাল বলেন, ‘ফসল আনা-নেওয়া, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের যাতায়াতের জন্য একটি ব্রিজ খুবই জরুরি। আমি এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্রিজ নির্মাণের জন্য যা যা করা দরকার, সেটা করব। আশা করছি, এ ভোগান্তি আর বেশি দিন পোহাতে হবে না।’
আরও পড়ুন:ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার শ্যামকুড় সীমান্তে বিএসএফের এক গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন।
ভারতের পাকুড়া সীমান্তে বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ৩০ বছর বয়সী আরিফুল ইসলাম শ্যামকুড় পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা।
স্থানীয় সংবাদকর্মী মশিউর রহমান টিংকু জানান, আরিফুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন সীমান্তের ওপারে গরু আনতে যায়। ভোররাতে ফেরার পথে ভারতের পাখিউড়া ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যসের সামনে পড়ে। সেসময় বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে অন্যরা পালিয়ে গেলেও গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় আরিফুল ইসলাম।
শ্যামকুড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামিরুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘মরদেহ ভারতে রয়েছে। আমরা মরদেহ দেশে ফেরত আনার জন্য বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।’
বরিশালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবারে কোনো কলেজেই শূন্য পাস নেই, তবে শতভাগ পাস রয়েছে ৩৪টি কলেজে।
বরিশাল বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুন কুমার গাইন বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ ফলাফল প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘এবারে কোনো কলেজেই শূন্য পাস নেই। তবে শতভাগ পাস রয়েছে ৩৪টি কলেজে। এবারে ইংরেজি সাবজেক্টে তুলনামূলক ফলাফল খারাপ হয়েছে পরীক্ষার্থীদের।’
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৮৬ দশমিক ৯৫ ভাগ। গত বছর পাসের হার ছিল ৯৫ দশমিক ৭৬। তবে গত বছরের তুলনায় পাসের হার কম হলেও ফলাফলে সবাই সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ। এদিকে এবারে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৭৩৮৬ জন, যা গত বছরের তুলনায় ২৫৮৫ জন কম।
অরুন কুমার বলেন, ‘৬১ হাজার ৮৮৫ পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৫৩ হাজার ৮০৭ জন। এর মধ্যে ছেলে ২৫ হাজার ৫৮৮ ও মেয়ে ২৮ হাজার ২১৯ জন। ৭ হাজার ৩৮৬ জন জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের মধ্যে ছেলে দুই হাজার ৫৮০ ও মেয়ে ৫ হাজার ৮০৬ জন।’
৩৩১ কলেজের পরীক্ষার্থীরা ১২৫ কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেয় এবং পুরো পরীক্ষায় বহিষ্কার হয়েছেন ২০ জন পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ৭ জন বিজ্ঞান বিভাগের, ১২ জন মানবিক ও একজন ব্যবসায় শিক্ষার।
বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষার্থী ছিল ১২ হাজার ৭২ জন, পাশ করেছে ১০ হাজার ৮৬১ জন, মানবিক বিভাগে পরীক্ষার্থী ছিল ৪০ হাজার ৩১১ জন ও পাস করেছেন ৩৪ হাজার ৬৭৩ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পরীক্ষার্থী সংখ্যা ৯ হাজার ৫০২ জন ও পাস করেছে ৮ হাজার ২৭৩ জন।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, বরিশাল বিভাগে এবারে পাসের হারে এগিয়ে রয়েছে ভোলা জেলা। এই জেলায় পাসের হার ৯২ দশমিক ৯। এরপরে ৯১ দশমিক ১২ ভাগ নিয়ে এগিয়ে আছে বরিশাল। ঝালকাঠিতে পাসের হার ৮৮ দশমিক ২৫, পিরোজপুরে ৮৮ দশমিক ১৮, বরগুনায় ৮৭ দশমিক ৮৩ ও পটুয়াখালীতে পাসের হার ৭৩ দশমিক ৭৫ ভাগ।
ভোলা পাসের হারে এগিয়ে থাকলেও দুই হাজার ২৯৭টি জিপিএ-৫ এ পেয়ে এগিয়ে বরিশাল জেলা। এ ছাড়া ভোলায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৫৩ জন, ঝালকাঠিতে ২৯৮ জন, পিরোজপুরে ৫৪৭ জন, বরগুনায় ৫২৭ জন ও পটুয়াখালীতে ৪৮৪ জন।
এদিকে ফলাফলে খুশি হয়ে বরিশালে কলেজে কলেজে উচ্ছ্বাস করেছে শিক্ষার্থীরা। কাঙ্খিত ফলাফল পেয়ে খুশি তারা।
আরও পড়ুন:রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে ছাত্রদের চেয়ে এগিয়ে ছাত্রীরা।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরিফুল ইসলাম বুধবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরিফুল ইসলাম বলেন, ছাত্রীদের পাসের হার ৮৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ। আর ছাত্রদের পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৭ ভাগ। জিপিএ-৫ প্রাপ্তি ছাত্রীর সংখ্যা ১১ হাজার ৯৫৭ জন। আর জিপিএ ৫ পাওয়া ছাত্রের সংখ্যা ৯ হাজার ৮৯৮ জন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এবার পাস করেছে এক লাখ ৩ হাজার ৩৮৫ জন। পাসের হার ৮১ দশমিক ৬০। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২১ হাজার ৮৫৫ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির দিক দিয়ে গতবারের চেয়ে কমেছে। গত বছর এ বোর্ডে পাসের হার ছিল ৯৭ দশমিক ২৯ শতাংশ।’
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, ‘এ বছর শতভাগ পাশ করেছে ৩১ টি কলেজের শিক্ষার্থীরা। শতভাগ ফেল করেছে এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৯টি।’
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরও বলেন, ‘গত বছরের ৬ নভেম্বর থেকে শুরু হয় এইচএসসি পরীক্ষা। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের আওতায় বিভাগের আট জেলায় এবার পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ২৯ হাজার ৪২৩ জন। এর মধ্যে পরীক্ষা দেয় ১ লাখ ২৬ হাজার ৭০০ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৬৬ হাজার ৯৪৩ জন আর ছাত্রী ৫৯ হাজার ৭৫৭ জন। বিভাগের আট জেলার ৭৫১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এসব শিক্ষার্থী ২০১টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।’
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তিন উপগ্রুপের মধ্যে দ্বিমুখী সংঘর্ষ হয়েছে। এতে তিন গ্রুপের ৭ কর্মী আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিক্সটি নাইন গ্রুপের সঙ্গে সিএফসি ও বিজয় গ্রুপের কর্মীদের যৌথভাবে সংঘর্ষ শুরু হয়।
বিবাদমান গ্রুপগুলো হলো শাটল ট্রেনের বগি ভিত্তিক উপগ্রুপ সিক্সটি নাইন, সিএফসি ও বিজয়। সিক্সটি নাইন গ্রুপ সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিতি। সিএফসি ও বিজয় গ্রুপ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
সংঘর্ষের সময় সিক্সটি নাইনের কর্মীরা শাহ জালাল হলের সামনে ও ভিতরে, সিএফসি কর্মীরা শাহ আমনের ভেতরে এবং বিজয়ের কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী মোড়ে অবস্থান নেয়। সিক্সটি নাইন ও বাকি দুই গ্রুপের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। এ সময় দেশীয় অস্ত্র হাতে মহড়া দিতে দেখা যায় গ্রুপগুলোর নেতা-কর্মীদের।
পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল টিম রাত পৌনে ১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। তবে রাত সাড়ে চারটার দিকে ফের সংঘর্ষে জড়ায় তিন পক্ষ। সোয়া পাঁচটায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী সূত্রে জানা যায়, রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলস্টেশনের একটি চায়ের দোকানে বসে ধূমপান করছিলেন সিক্সটি নাইন গ্রুপের দ্বিতীয় বর্ষের এক কর্মী ৷ তখন সেখানে পাশের একটি টেবিলে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন বিজয় ও সিএফসির তৃতীয় বর্ষের কয়েকজন কর্মী ৷
একপর্যায়ে ধূমপানের ধোঁয়া ছড়ালে সিএফসির এক কর্মী প্রতিবাদ করেন ৷ তিনি ধূমপানকারীর শিক্ষাবর্ষ জানতে চান। পরে সিক্সটি নাইনের ওই কর্মী নিজেকে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী পরিচয় দিলে সিএফসির কর্মী তার ওপর চড়াও হন ৷ জুনিয়র হয়ে কেন এভাবে প্রকাশ্যে ধূমপান করছেন এসব নিয়ে তর্কাতর্কিতে জড়ান ৷
একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে এটি সংঘর্ষে রূপ নেয়। পরবর্তীতে প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যালের প্রধান কর্মকর্তা ডা. মো. আবু তৈয়ব জানান, সংঘর্ষে সাতজন মেডিক্যালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, ‘জুনিয়রদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে বলে শুনেছি। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’
সিএফসি গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাদাফ খান বলেন, ‘রাত ১০টার দিকে স্টেশন তলায় (চায়ের দোকান) আমাদের এক কর্মীকে সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীরা মারধর করে ৷ পরবর্তীতে সিক্সটি নাইনের কর্মীদের বিজয় গ্রুপের সঙ্গেও সংঘর্ষ হয়। আমরা আমাদের ছেলেদের হলে ঢুকিয়ে দিই। কিন্তু ভোররাতে সিক্সটি নাইনের কর্মীরা আমাদের কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা করে।’
বিজয় গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম সবুজ বলেন, ‘সেক্রেটারির ছেলেরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের ছেলেদের সঙ্গে ঝামেলা করে ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া বলেন, ‘খবর পেয়ে প্রক্টরিয়াল টিম সেখানে গিয়েছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। এ ধরনের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। জড়িতদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। নিরাপত্তা জোরদার করতে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হবে।’
আরও পড়ুন:প্রজাদের কষ্টে পাশে থাকা মহারাজা বাহুবলি অমর হয়ে আছেন যাকে নিয়ে সিনেমাও তৈরি হয়েছে। নাম অমেরন্দ্র বাহুবলি। সেই বাহুবলির নামের লাল টম্যাটো এবার কৃষকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দির বিস্তৃর্ণ সবুজ মাঠে লাল বাহুবলির রাজত্ব ছড়িয়ে পড়েছে। কাকডাকা ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে টম্যাটো সংগ্রহ। বিকেলের আগে পাইকারদের গাড়িতে করে বাহুবলিরা চলে যায় হাটে। দেখতে বড় স্বাদ ও ঘ্রাণে অসাধারণ। তাই হাট-বাজারে বাহুবলির চাহিদাও অনেক। ফলন ভালো হওয়ায় মুনাফাও পাচ্ছেন চাষিরা।
সরেজমিনে দাউকান্দি উপজেলার আদমপুর, বিটমান ও টামটা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাচায় ঝুলে আছে লাল সবুজ টম্যাটো। দেশি অন্য কোনো জাতের তুলনায় আকারে বড়। মাচা থেকে ঝুলে মাটি স্পর্শ করছে অধিকাংশ টম্যাটো। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সেই টম্যাটো সংগ্রহ করে জমির পাশে স্তুপ করছেন চাষিরা। পাইকাররা আসছেন, দরদাম করে বস্তাবন্দি করে দূরের হাটে নিয়ে যাচ্ছেন বাহুবলিদের।
বিটমান গ্রামের বকুল রাণী দেবনাথ নামের এক কৃষাণী নিজের ছেলে ও কাজের লোক নিয়ে টম্যাটো সংগ্রহ করছেন। তার জমির আইলে দাঁড়িয়ে রয়েছেন পাইকার ও স্থানীয় খুচরা ক্রেতারা। জমির পাশে স্তুপ করা টম্যাটো পাল্লায় মেপে পাইকারদের হাতে তুলে দিচ্ছেন।
বকুল রানী জানান, এ বছর বাহুবলি জাতের টম্যাটো চাষ করেছেন। চারা, মাঁচা ও জমি প্রস্তুতসহ তার খরচ হয়েছে এক লাখ টাকা। দেড়কানি (৩০শতকে কানি) জমিতে বাহুবলি জাতের টম্যাটোর ভালো ফলন হয়েছে। তিনি আশা করছেন সব খরচ বাদ দিয়ে তার লাভ হবে অন্তত দুই লাখ টাকা।
বাহুবলি হাইব্রিড প্রজাতির টম্যাটো। এই বীজের নাম দিয়েছে এ আর মালিক সিড কোম্পানি। তারাই মূলত নাম দিয়েছে বাহুবলি।
ঢাকা থেকে বাহুবলি টম্যাটো কিনতে আসা পাইকার দবির মিয়া জানান, তিনি সারা বছরই কাওরানবাজারে পাইকারি শাকসবজি বিক্রি করেন। তার পছন্দের জায়গা কুমিল্লার দাউদকান্দি। এবার দাউদকান্দিতে বাহুবলি নামের টম্যাটোর ভালো ফলন হয়েছে। আকারে বড় স্বাদও ভালো। আকার-আকৃতি অনুযায়ী পাইকারি প্রতি ১৫-২০ কেজি দরে কেনেন। পরিবহন খরচ এবং নেয়ার সময় কিছু নষ্ট হয়। এসব মিলে প্রতি কেজি টম্যাটো ৩০-৩৫ টাকা দরে বিক্রি করেন।
কুমিল্লা রাজগঞ্জ থেকে আসা পাইকার জুয়েল হোসেন বলেন, ‘দাউদকান্দির এসব গ্রামগুলোতে যে টম্যাটো হয় সেগুলো আকারে বড়। দেখতে সুন্দর। কাঁচা পাকা মিলিয়ে আমি ১০ মণ টম্যাটো কিনেছি। পাকাগুলো আজকালই বিক্রি হয়ে যাবে। কাঁচাগুলো দোকানে রেখে দিলে পেকে যাবে। তখন বিক্রি করতে পারব।’
দাউদকান্দির আদমপুর গ্রামের শিক্ষক মতিন সৈকত বলেন, ‘আদমপুর, বিটমান, পুটিয়া ও টামটা গ্রামের মাঠে প্রতি বছরই প্রচুর টমেটোর চাষ হয়। এখানের অধিকাংশ কৃষক প্রাকৃতিক বালাইনাশক ব্যবহার করে ফসল উৎপাদন করে। টম্যাটোর ক্ষেত্রেও তাই।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘কুমিল্লায় এ বছর এক হাজার ৮৪৬ হেক্টর জমিতে টম্যাটোর চাষ হয়। প্রতি হেক্টরে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩০ টন। বাহবলি, মানিক-রতনসহ বিভিন্ন হাইব্রিড জাতের টম্যাটো চাষ করেছেন ১৭ উপজেলার কৃষকরা। তবে ভালো লাভ পাওয়ায় বাহুবলির চাহিদা বেশি।’
আরও পড়ুন:গোপালগঞ্জে সড়ক থেকে এক যুবকের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সদর উপজেলার করপাড়া গ্রামের হাফিজের দোকানের সামনের সড়কের ওপর থেকে বুধবার ভোরে ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
৩৫ বছর বয়সী মেহেদী হাসান সাগর ওই একই এলাকার বাসিন্দা।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলতলী পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান টিটো নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, ভোরে সড়কের ওপর মেহেদী হাসান সাগরের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ দেখতে পায় এলাকাবাসী। পরে ৯৯৯ এ ফোন করলে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
তিনি আরও বলেন, ‘মরদেহের গলা কাটা এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে একাধিক কোপের চিহ্ন রয়েছে। কে বা কারা কী কারণে তাকে হত্যা করেছে সে বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।’
নিহতের স্ত্রী রূপা বেগম জানান, মঙ্গলবার রাতে মেহেদীর মোবাইল ফোনে একটি কল আসে। এরপর সে রাত ১টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি।
আরও পড়ুন:কুষ্টিয়ায় ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।
কুষ্টিয়ার মিরপুর পৌরসভা এলাকার মোশারফপুর মহল্লায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সুলতান খন্দাকার কুষ্টিয়ার মিরপুর পৌরসভা এলাকার মোশারফপুর মহল্লার আব্দুর রশিদ খন্দকারের ছেলে।
নিহতের ভাতিজা নাঈম খন্দকার জানান, শাহিন বিভিন্ন সময় তার চাচা সুলতানের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তার আর ফেরত দিত না। এ নিয়ে শাহিনের সঙ্গে সুলতানের বিরোধ চলছিল। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সুলতান তার প্রাইভেটকার বিক্রি করে সেই টাকা নিয়ে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে ছিলেন। এ সময় হঠাৎ করেই শাহিন ও রাজ্জাকসহ আরও কয়েকজন অতর্কিতভাবে সেখানে হামলা চালায়। এ সময় শাহিন সুলতানের কাছে থাকা সাত লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়।
তিনি আরও জানান, এতে বাধা দিলে ধারালো ছুরি দিয়ে শাহিন সুলতানের পেটে এবং বুকে আঘাত করে। সুলতানের চিৎকারে তার স্বজনরা এগিয়ে আসলে তাদেরকেও পিটিয়ে আহত করে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। গুরুতর আহত সুলতানকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিলে মঙ্গলবার রাত তিনটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় সুলতানের বাবা আব্দুর রশিদ মিরপুর থানায় ৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। পুলিশ জড়িত সন্দেহে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রাকিবুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মূল আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য