হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ সংগঠনটির আটক সব নেতা-কর্মীর মুক্তি দাবি করা হয়েছে। শনিবার ধর্মভিত্তিক সংগঠনটির জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলন থেকে এই দাবি জানানো হয়েছে।
রাজধানীর গুলিস্তানে কাজী বশীর মিলনায়তনে হেফাজতে ইসলামের জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় শনিবার। হেফাজতের প্রয়াত আমির শাহ আহমদ শফী ঘোষিত সংগঠনটির ১৩ দফা বাস্তবায়ন, নেতা-কর্মীদের নামে দায়ের হওয়া সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, কারাবন্দি হেফাজতের সব নেতা-কর্মীর দ্রুত মুক্তির দাবি ও জাতীয় শিক্ষানীতিতে ধর্মীয় শিক্ষা সংকোচনের প্রতিবাদে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সম্মেলনে বন্দি নেতাদের মুক্তি ছাড়াও শিক্ষা কমিশনে আলেমদের প্রতিনিধি রাখার দাবি জানান বক্তারা। সম্মেলন থেকে সরকারের কাছে সাতটি দাবি তুলে ধরা হয়।
হেফাজতে ইসলামের নেতা ও মামুনুল হকের ভাই মাহফুজুল হক বলেন, ‘কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তির জন্য আমাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখতে হবে। জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় ধর্মীয় শিক্ষাকে সংকুচিত করা যাবে না। আগামীতে এ ধরনের অপপ্রয়াস চালানো হলে তা প্রতিহত করা হবে।’
হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মহিউদ্দিন রাব্বানী বলেন, ‘আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মামুনুল হক, সাখাওয়াত হোসেন রাজীসহ যেসব নেতা কারাগারে রয়েছেন তাদের এই বছরের মধ্যে মুক্তি দিতে হবে।’
সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে হেফাজতের আমীর শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, ‘শাহ আহমদ শফী ঘোষিত হেফাজতের ১৩ দফা আন্দোলনে ক্ষমতাকেন্দ্রিক কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা নেই। একজন মুমিনের কাছে তার জানের চেয়েও ঈমান প্রিয়।
‘অতএব দেশের প্রতিটি মুসলমানই হেফাজতের নেতাকর্মী বা সমর্থক। তাই যখনই মুসলমানের স্বার্থ সংরক্ষণের ডাক আসবে তখন দল-মত নির্বিশেষে নিজেদের রাজনৈতিক পরিচয় ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’
সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘ওলামায়ে কেরাম নবী-রাসূলের উত্তরসূরী। তাদের বন্দি রেখে দেশে শান্তি এবং স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। দেশের এই ক্রান্তিকালে অশান্তি ও দুরবস্থা থেকে মুক্তি এবং সমস্যা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে প্রথমত হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন। তাদেরকে দ্রুত মুক্তি দিয়ে মজলুমদের কান্না বন্ধ করুন।’
সম্মেলনের প্রধান আলোচক সংগঠনটির মহাসচিব সাজিদুর রহমান বলেন, ‘হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ দেশের সর্ববৃহৎ অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন। হেফাজত ১৩ দফা বাস্তবায়নের পক্ষে আগের মতোই নিজেদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘২০১১ ও ২০১৬ সালে শিক্ষানীতি নিয়ে ষড়যন্ত্র হলে আল্লামা শাহ আহমদ শফির বাধার মুখে সেই ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়ে যায়। আমরা জানতে পেরেছি সেই ষড়যন্ত্র আবারো শুরু হয়েছে। এবার তারা ধর্মীয় শিক্ষার পরীক্ষাই বাতিল করে দিচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না।
‘অবিলম্বে জাতীয় শিক্ষানীতি থেকে ইসলামবিদ্বেষী লেখাগুলো বাদ দিতে হবে। সব শ্রেণিতে ধর্মীয় শিক্ষার ওপর ১০০ নম্বরের পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।’
বিশ্ব ইজতেমায় মাওলানা সা’দ আসার বিপক্ষে হেফাজত
সম্মেলনে হেফাজত মহাসচিব বলেন, “দিল্লির মাওলানা সা’দ সাহেবের বাংলাদেশে আসাকে কেন্দ্র করে ২০১৯ সালে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। বাংলাদেশের দাওয়াতে তাবলীগের মধ্যে নজিরবিহীন বিভেদ তৈরি হয়েছে।
“আমরা জানতে পেরেছি এবারও ইজতেমা উপলক্ষে তিনি বাংলাদেশে আসতে চাচ্ছেন। তিনি বাংলাদেশে এলে একটি বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি হবে। তাই আমাদের দাবি, মাওলানা সা’দ সাহেবকে কোনোভাবেই যেন বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়া না হয়।”
নায়েবে আমীর আতাউল্লাহ হাফেজ্জী বলেন, ‘আমরা মাঠে নামব। অনেক সময় বলা হয় হেফাজত অরাজনৈতিক দল, তারা মাঠে কেন নামবে। আমি বলি শিক্ষার্থী বা অনেকে তাদের দাবির জন্য মাঠে নামে। সেটা কি রাজনৈতিক আন্দোলন হয়ে যায়?’
সংগঠনটির নায়েবে আমীর আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে হেফাজতের নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। নয়তো এদেশে হেফাজত নেতা-কর্মীদের নিয়ে এমন আন্দোলন করা হবে যে সরকার থামাতে পারবে না।’
এছাড়া সম্মেলনে দলটির পক্ষ থেকে তিনটি কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে- স্বল্পতম সময়ের মধ্যে জেলা-উপজেলা কমিটি গঠন; দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে শানে রেসালত সম্মেলন এবং রাজধানীতে জাতীয় শানে রেসালাত সম্মেলন।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র নায়েবে আমির ইয়াহিয়া, মুহিব্বুল হক গাছবাড়ী, ফুরকানউল্লাহ খলিল, যুগ্ম মহাসচিব মুহিউদ্দীন রাব্বানী, হেফাজতের ঢাকা মহানগর সভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আবদুল কাইয়্যুম সুবহানী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইদরীস।
হেফাজতের ৭ দফা
সম্মেলনে হেফাজতের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট সাত দফা দাবি তুলে ধরা হয়। তা হলো-
১. অবিলম্বে হেফাজত নেতাকর্মী ও আলেম-উলামাদের মুক্তি দিতে হবে।
২. হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
৩. ইসলাম ও মহানবী (সা.) সম্পর্কে কটূক্তিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস করতে হবে।
৪. কাদিয়ানি সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে।
৫. শিক্ষা কারিকুলামে ধর্ম শিক্ষার পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
৬. জাতীয় শিক্ষা কমিশনে হাইয়াতুল উলাইয়ার প্রতিনিধি থাকা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
৭. বিশ্ব ইজতেমায় বিতর্কিত মাওলানা সা’দ সাহেবকে আসার অনুমতি দেয়া যাবে না।
আরও পড়ুন:সুইডেনের পর এবার ডেনমার্কে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। দেশটির রাজধানী কোপেনহেগেনে শুক্রবার তুরস্কের দূতাবাসের কাছে অবস্থিত একটি মসজিদ ও তুরস্কের দূতাবাসের কাছে এ ঘটনা ঘটে।এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, মুসলমানদের পবিত্র মূল্যবোধ ও ধর্মীয় নিদর্শন অবমাননার এ ধরনের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশ আবারও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ডেনমার্কের উগ্র ডানপন্থি রাজনৈতিক কর্মী রাসমুস পালুদান ও তার দল হার্ড লাইনের অনুসারীরা এ ঘটনার সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভে পালুদান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক জোট ন্যাটোতে যতদিন সুইডেনকে অন্তর্ভুক্ত করা না হবে ততদিন এই কর্মসূচি অব্যহত রাখবেন তিনি ও তার অনুসারীরা।
সুইডেন ও ডেনমার্কের দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে পালুদানের। গত ২১ জানুয়ারি স্টকহোমে তুরস্কের দূতাবাসের সামনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনাতেও সংশ্লিষ্টতা আছে তার। সেদিন সুইডিশ অনুসারীরাই সেদিন এ ঘটনা ঘটিয়েছিল।
দেশের অন্যান্য অঞ্চলে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত উত্তরের জেলাগুলোতে সেটি সামান্য কমতে পারে।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এমন আভাস দেয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, উপমহাদেশীয় উচ্চতাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপটি বিরাজ করছে। এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
সারা দেশের আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে পূর্বাভাসে জানানো হয়, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। দেশের উত্তরাঞ্চলে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেরে এবং অন্য অঞ্চলে তা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, তাপমাত্রা সামান্য পরিবর্তন হতে পারে, তবে কোন ধরনের পরিবর্তন, সেটি স্পষ্ট করা হয়নি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ও কক্সবাজারের টেকনাফে। শনিবার দেশের সর্বনিম্ন ১২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়।
আরও পড়ুন:বায়ুদূষণে নিয়মিত সামনের সারিতে থাকা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বাতাস আগের দিনের মতো শনিবারও সবচেয়ে দূষিত বলে জানিয়েছে আইকিউএয়ার।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানিটির র্যাঙ্কিংয়ে আজ সকাল ১০টা ১০ মিনিটের দূষিত বাতাসে ১০০ শহরের মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে ছিল বাংলাদেশের সবচেয়ে জনবহুল নগর।
গতকালের মতো আজও দূষিত বাতাসের দিক থেকে ঢাকার পরের অবস্থানে ছিল পাকিস্তানের লাহোর।
নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর, তা জানায় আইকিউএয়ার।
কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।
৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।
আইকিউএয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।
১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।
র্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়। তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।
সকালের নির্দিষ্ট ওই সময়ে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ২২১। এর মানে হলো খুবই অস্বাস্থ্যকর বাতাসের মধ্যে বসবাস করতে হয়েছে রাজধানীবাসীকে।
আইকিউএয়ার জানায়, ঢাকার বাতাসে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ২৯ দশমিক ২ গুণ বেশি।
আরও পড়ুন:রাজশাহীতে প্রায় ১ হাজার ৩১৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকার ২৫টি প্রকল্প উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আগামী রোববার দিনব্যাপী সফরে এসব প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন তিনি। ওইদিন এছাড়া প্রধানমন্ত্রী আনুমানিক ৩৭৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে আরও ছয়টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করবেন।
সরকারি সূত্রের বরাতে বাসস জানায়, বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলো হলো- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল। রাজশাহী সিটি করপোরেশন প্রায় ৫ কোটি ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নগরীর সিএন্ডবি ক্রসিংয়ে ম্যুরালটি নির্মাণ করেছে।
এ ছাড়া সিটি করপোরেশন আরও যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে সেগুলো হচ্ছে- শেখ রাসেল শিশু পার্ক, মোহনপুর রেল ক্রসিংয়ের ওপর ফ্লাইওভার, চার লেনের সড়ক এবং ভাদ্রা রেল ক্রসিং থেকে নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল পর্যন্ত ধীরগতির যানবাহনের জন্য একটি পৃথক লেনসহ রোড ডিভাইডার, চার লেনের সড়ক এবং রোড ডিভাইডার।
বিলসিমলা রেলক্রসিং থেকে সিটির হাট পর্যন্ত ধীরগতির যানবাহনের জন্য আলাদা লেন এবং সড়ক প্রশস্তকরণ, কল্পনা সিনেমা হল থেকে তালাইমারী ক্রসিং এবং কার্পেটিং সড়কের উন্নয়ন, হাই-টেক পার্ক হয়ে রেন্টুর খারির আড়ত থেকে ধলুর মোড় পর্যন্ত নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ এবং কার্পেটিং। কোর্ট থেকে শাহারতলী ক্লাব পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ।
রাজশাহী নগরীর সিএন্ডবি ক্রসিং সংলগ্ন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সবচেয়ে বড় ম্যুরাল নির্মাণ করা হয়েছে। আরসিসি ‘রাজশাহী সিটিতে সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক’ ২ হাজার ৯৯৩ কোটি টাকার প্রকল্পের অংশ হিসেবে প্রায় ৫ কোটি ২ লাখ টাকা ব্যয়ে দেশের বৃহত্তম ম্যুরাল নির্মাণ করেছে।
ম্যুরালটির উচ্চতা ৫৮ফুট এবং ম্যুরালের মূল অংশে ৫০ফুট উচ্চতা এবং ৪০ফুট চওড়া বঙ্গবন্ধুর ছবি রয়েছে। সীমানা প্রাচীরের উভয় পাশে ৭০০ ফুট জায়গায় টেরাকোটার কাজ করা হয়েছিল। গ্যালারি এবং ল্যান্ডস্কেপিং সুপার গ্রানাইট দিয়ে সুসজ্জিত। ম্যুরালে নাইট ভিশনসহ সুসজ্জিত বৈদ্যুতিক বাতি রয়েছে।
রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ম্যুরালটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ তার জীবন, কর্ম এবং দেশের স্বাধীনতায় প্রশংসনীয় অবদান ও ত্যাগ সম্পর্কে জানতে অনুপ্রাণিত করে।
মানুষের বিশেষ করে শিশুদের বিনোদনের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের লক্ষে রাজশাহী নগরীতে শেখ রাসেল শিশু পার্কের নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে।
আরসিসির উদ্যোগে ছোট বনগ্রাম এলাকায় ২.১৪ একর জমির উপর পার্কটি নির্মাণ করা হয়, যার আনুমানিক ব্যয় প্রায় ৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ প্রায় ১১৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে পুঠিয়া থেকে বাগমারা পর্যন্ত একটি মহাসড়ক নির্মাণ করেছে।
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) প্রায় ১০ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রধান কার্যালয়ের ষষ্ঠ তলা থেকে দশম তলা পর্যন্ত সম্প্রসারণ করেছে।
প্রায় ২০ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) সদর দপ্তর ভবন নির্মাণ করেছে।
লক্ষ্মীপুর এলাকায় প্রায় ১৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজশাহী ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। মোহনপুর উপজেলায় ২২ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে।
প্রায় ২২ কোটি ৯০ লাখ টাকায় রাজশাহী শিশু হাসপাতালও নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ১২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজশাহীতে একটি বহুতল সমাজসেবা ভবন নির্মিত হয়েছে।
রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজে প্রায় ৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ছয় তলার ওপর দুই তলা বিশিষ্ট মহিলা হোস্টেল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।চারঘাট উপজেলায় ১৭ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাঁচতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। রাজশাহী সিভিল সার্জনের অফিস নির্মাণ করা হয়েছে ৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় পদ্মার ভাঙ্গন থেকে বাম তীর রক্ষায় ৬৯৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) গ্রামীণ সংযোগ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৪৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে দুটি সড়ক নির্মাণ করছে।
রাজশাহী পিটিআইতে প্রায় ৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি অডিটোরিয়াম নির্মাণ করা হয়েছে। রাজশাহী মহানগরীতে প্রায় ২ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন।
অন্যদিকে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ২৪ কোটি টাকায় তথ্য কমপ্লেক্স ভবন, ৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা আঞ্চলিক জন প্রশাসন অফিস ভবন, ৬২ কোটি টাকায় শহীদ জননী জাহানারা ইমাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান বালক উচ্চ বিদ্যালয়। ১৬২ কোটি টাকায় বিকেএসপির আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং ৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজশাহী ওয়াসা ভবন নির্মাণ করা।
আরও পড়ুন:সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা বন্ধের পাশাপাশি মাদকদ্রব্যসহ সব ধরনের পণ্যের চোরাচালান বন্ধের দাবিতে কাঁটাতার মিছিল ও সমাবেশ করেছে নতুনধারা বাংলাদেশ (এনডিবি)।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শুক্রবার সমাবেশ শেষে কাঁটাতার মিছিল নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন দলটির নেতারা। মিছিলটি বিজয়নগরে এনডিবির কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিলপূর্ব সমাবেশে বক্তাদের একজন বলেন, দেশের সীমান্তগুলো দিয়ে প্রতিনিয়ত মাদকসহ বিভিন্ন পণ্য চোরাচালানের মাধ্যমে আসে। এসব চোরাচালান করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত হত্যার শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশিরা। সীমান্তে এসব হত্যা বন্ধ এবং মাদকদ্রব্যসহ অন্যান্য পণ্যের চোরাচালান রোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে দেশের অর্থনীতি ধ্বংসের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সভাপতির বক্তব্যে এনডিবির চেয়ারম্যান মোমিন মেহেদী বলেন, ‘আমাদের বন্ধু দেশের মাদকদ্রব্য অহরহ দেশে আসছে। সেই মাদক সেবন করে দেশের মানুষ অসুস্থ হচ্ছে। আবার সেই অসুস্থতার চিকিৎসার জন্য বন্ধু দেশেই যাচ্ছে। এ কেমন বন্ধুত্ব?’
তিনি অনতিবিলম্বে সীমান্ত হত্যা ও চোরাচালান বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা হলেও রোধ করা যায়নি প্রাণহানি।
মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ২০২২ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে ২৩ বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ১৬ জন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২২ সালে দেশের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের হাতে ১৫ জন বাংলাদেশি মারাত্মক শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
আরও পড়ুন:দেশ থেকে শীত চলে যায়নি জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, তাপমাত্রা ওঠানামা করতে পারে দুই থেকে তিন দিন।
শীত চলে যাওয়ার সময় এখনও আসেনি জানিয়ে রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক শুক্রবার নিউজবাংলাকে বলেছেন, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীতের মাস ধরা হয়। এর আগে শীত চলে গেছে বলা যায় না।
দেশের সামগ্রিক আবহাওয়া পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, আগামী দুই থেকে তিন দিন শীত ওঠানামা করতে পারে। অর্থাৎ তাপমাত্রা বাড়া-কমার মধ্যে থাকবে।
২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তরের শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, উপমহাদেশীয় উচ্চতাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত।
এতে বলা হয়, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
কুয়াশা পরিস্থিতি নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
তাপমাত্রা নিয়ে পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে রাতের ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, রাতের তাপমাত্রা কমতে পারে।
আরও পড়ুন:সংবাদকর্মী আহসানুল হক টুটুল মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর। তার মৃত্যুতে সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ী অনেকে শোক প্রকাশ করেছেন।
টুটুলের মরদেহ দিনাজপুরের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নামাজে জানাযা শেষে সেখানেই তাকে দাফন করা হবে।
আহসানুল হক টুটুল দৈনিক কালের কণ্ঠ, আমার দেশ, সকালের খবরসহ বেশকিছু সংবাদ মাধ্যমে কম্পিউটার গ্রাফিকস বিভাগে সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন। কয়েক বছর ধরে তিনি চাকরি ছেড়ে ব্যবসায় নিয়োজিত হয়েছিলেন।
বেশ কয়েক বছর আগে টুটুলের হার্টে ব্লক ধরা পড়ে। জটিল সেই সার্জারি ঢাকায় করা সম্ভব হয়নি। ভারতের চেন্নাইয়ে গিয়ে তিনি হার্টের সার্জারি করান। এরপরও একাধিক বার তিনি চিকিৎসার জন্য চেন্নাইয়ে গেছেন। সেখানকার চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই চলছিলেন তিনি।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দুদিন আগে কল্যাণপুরের পাইকপাড়ার বাসায় হার্ট অ্যাটাক হয় টুটুলের। তাৎক্ষণিক তাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) রেখে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার স্ত্রী সামিনা হক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভির অনলাইন পোর্টালে জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক হিসেবে কর্মরত।
পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে মরহুমের রূহের মাগফিরাত কামনা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য