ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের আচরণকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ মন্তব্য করে এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’ ।
শুক্রবার রাতে পরিষদের সদস্যসচিব অধ্যাপক বশির আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ‘এ দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ ও একপাক্ষিক কর্মকাণ্ড অশোভন, গর্হিত ও শিষ্টাচারবহির্ভূত বলে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু আমরা সম্প্রতি লক্ষ করেছি যে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নির্দিষ্ট একটি দলের পক্ষ অবলম্বন করে তার কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন এবং সে লক্ষ্যে নানা সময় বক্তব্য ও বিবৃতি দিচ্ছেন।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত বুধবার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে রাষ্ট্রদূত বিএনপির নিখোঁজ সাবেক এক নেতার বাসায় গিয়ে বিশেষ আলোচনা করেছেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে তিনি মানবাধিকারের দোহাই দিয়ে নিখোঁজ ব্যক্তির পক্ষে অবস্থান নিয়ে আলোচনায় অংশ নিলেও সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সহস্রাধিক গুম হওয়া সরকারি কর্মকর্তার স্বজনদের কথা কর্ণপাত করেননি।
‘এমনকি ওসব স্বজনহারা ব্যক্তিদের উদ্যোগে গঠিত ‘মায়ের কান্না’ নামের সংগঠনের নেতা-কর্মীদের দেওয়া স্মারকলিপিও গ্রহণ করেননি মার্কিন রাষ্ট্রদূত।’
স্মারকলিপি গ্রহণ না করায় পিটার হাসের আচরণকে অদায়িত্বসুলভ, অপেশাদারি এবং অমানবিক বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে উদ্বেগ জানানো হয় বিষয়টি নিয়ে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নির্দিষ্ট একটি গোষ্ঠীর স্বর্থসিদ্ধির জন্য অসৌজন্যমূলক এবং পক্ষপাতমূলক আচরণের মাধ্যমে তার কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি মুখে মানবাধিকারের কথা বললেও আদতে তিনি মানবাধিকার হরণের পন্থায় হাঁটছেন। বাংলাদেশের জনগণ কোনো রাষ্ট্রদূতের কাছে এহেন পাক্ষপাতদুষ্ট আচরণ আশা করে না।
‘এ ছাড়া পশ্চিমা দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতরাও নানা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কথা বলছেন, যা কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত ও স্বাধীন দেশের জনগণের জন্য অসম্মানজনক।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত সব রাষ্ট্রদূতের কাছে থেকে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ আরও দায়িত্বশীল ও নিরপেক্ষ আচরণ কামনা করে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।
আরও পড়ুন:মোটরসাইকেলের ধাক্কায় এক ছাত্র গুরুতর আহত হওয়ার জেরে নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশার গতি নিয়ন্ত্রণসহ চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে এসব কর্মসূচি পালন করেন তারা।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো দুর্ঘটনায় আহত ছাত্রের চিকিৎসা ও শিক্ষার ব্যয়ভার প্রশাসনের বহন, মোটরসাইকেল চালকের শাস্তি, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশার গতি নিয়ন্ত্রণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর সামনে গতি নিরোধক নির্মাণ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হল সংলগ্ন সড়কে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের (৫১ ব্যাচ) ছাত্র জাহিদ হাসান। তাকে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘আমি আহত শিক্ষার্থীকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। তার অবস্থা এখনও শঙ্কামুক্ত নয়। আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় বহন করবে।
‘শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে আমরা সম্পূর্ণ একমত পোষণ করছি। আশা করছি সবাই মিলে একটি সুষ্ঠু সমাধানে পৌঁছাতে পারব।’
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে উপাচার্য নূরুল আলম বলেন, ‘আহত শিক্ষার্থীর সকল চিকিৎসার দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় গ্রহণ করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান আইনে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে আমরা ঘাতক চালকের বিচার নিশ্চিত করব।
‘বাইক, অটোরিকশার গতি নিয়ন্ত্রণে আমি নিরাপত্তাকর্মীদের নির্দেশ করব। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে স্পিডব্রেকার নির্মাণ করা হবে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সকলের সহযোগিতা কাম্য।’
আরও পড়ুন:শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যেই সংস্কারের কাজের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউট এক মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলো। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার রাত ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ও ছাত্রা বাস ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এদিন দুপুর ৩টায় জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয় সর্বোচ্চনীতি নির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেট।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, 'সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একমাস বন্ধ থাকবে ইনস্টিটিউট। এ সময় অনলাইনে ক্লাস নেবেন শিক্ষকরা। পাশাপাশি আজ রাত ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের চারুকলা ক্যাম্পাস ত্যাগের নির্দেশনাও দিয়েছে সিন্ডিকেট।'
এর আগে গত বছরের ২ নভেম্বর থেকে ২২ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি ও ক্লাসবর্জন শুরু করেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন দাবি মানতে ইতিবাচক সাড়া দিলেও পরে ২২ দফা দাবি হঠাৎই মূল ক্যাম্পাসে ফেরার এক দাবিতে রূপ নেয়। শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, মূল ক্যাম্পাস ছাড়া তাদের এই ২২ দফা দাবির সবগুলো পূরণ করা সম্ভব নয়। আন্দোলন নিয়ে গত ২১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। পরদিন অর্থাৎ ২২ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক ও মহানগর আওয়ামী এর সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম নাছির উদ্দিনের সঙ্গে আলোচনার পর আন্দোলন স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে ক্লাসে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা। তবে শর্তপূরণ না হওয়ায় গত মঙ্গলবার থেকে ফের আন্দোলনে নামেন তারা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মূল ক্যাম্পাস শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে হাটহাজারীতে অবস্থিত। ২০১০ সালে চবি চারুকলা বিভাগ এবং চট্টগ্রাম সরকারি চারুকলা কলেজকে একীভূত করার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি চারুকলা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ২০১১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি নগরীর বাদশাহ মিয়া চৌধুরী সড়কে বর্তমান চারুকলা ইনস্টিটিউটের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।
মধ্যরাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিল্পী রশিদ চৌধুরী হোস্টেলে (ছাত্রাবাস) তল্লাশি চালিয়েছে প্রক্টরিয়াল বডি।
প্রক্টরিয়াল টিম পুলিশের উপস্থিতিতে বুধবার রাত ১টার দিকে এ অভিযান চালায়।
তল্লাশির সময় ওই ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে এক ছাত্রীর উপস্থিতি পাওয়া যায়। অনুমতি ছাড়া ছাত্রহলে ঢোকায় তাকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আরেকটি কক্ষ থেকে উদ্ধার হয়ছে কিছু পরিমাণ গাঁজা।
চারুকলার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের আন্দোলনকে বাধাগ্রস্থ ও প্রশ্নবিদ্ধ করতে এই তল্লাশি চালানো হয়েছে। তল্লাশি ছাড়াও শিক্ষক ক্লাবের তালা এবং তাদের ব্যানার-ক্যানভাস ভেঙে ফেলা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া বলেন, ‘চারুকলার ক্লাস নেয়ার পক্ষে ও বিপক্ষে অনেকেই আন্দোলন করছেন। এখন সেখানে বহিরাগত কেউ হোস্টেলে আছে কি না, মাদক আছে কি না সেগুলো তল্লাশিতে অভিযান চালানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অভিযানে আমরা এক ছাত্রীকে ১২টা ৪০ এর সময় ছাত্র হোস্টেলের একটি কক্ষে পেয়েছি। পাশে আরেকটি কক্ষে কিছু পরিমাণ গাঁজা পাওয়া গেছে। ছাত্রীর মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।’
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে প্রক্টর বলেন, ‘এখানে তল্লাশির বাইরে আর কিছুই হয়নি।’
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই ছাত্রী অনুমতি ছাড়াই ছাত্র হোস্টেলে অবস্থান করছিলেন। নিয়মানুযায়ী হোস্টেল ওয়ার্ডেনের অনুমতি ছাড়া রাতে কিংবা দিনে কোনো সময়ই ছাত্রীরা ছাত্রদের হোস্টেলে প্রবেশ করতে পারবেন না।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মো. শহীদ বলেন, ‘রাতে চারুকলার দুই গেইট দিয়েই পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডি আসে। একজন ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসছিল। যার বাসায় যাবে সে চারুকলায় অপেক্ষা করছিল। প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ এসে সবাইকে রুমে যেতে বলে, ওই সময় ওই ছাত্রী রুমে গিয়ে বসে যায়। এরপরই যার জন্য অপেক্ষা করছিল, সে আসে। পরে সে বিষয়টা বিস্তারিত খুলে বললে তাকে ছেড়ে দেয়। তবে মুচলেকার বিষয়টা একটু বাড়াবাড়ি হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা হলে তল্লাশি করে ঠিক আছে। কিন্তু শিক্ষক ক্লাবের তালা ভেঙে ফেলা ও আমাদের ব্যানার-ক্যানভাস ছিড়ে দিল কেন সেটা আমরা বুঝতেছি না। তবে মাদকের বিষয়টা তারা প্রমাণ দিক ৷ তারা তো সব তন্নতন্ন করে খুঁজেছে। আমি ভিডিও করার সময় আমার মোবাইলও কেড়ে নেয়া হয়।’
আরেক শিক্ষার্থী জহির রায়হান অভি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্যই প্রশাসন এটি করছে।’
আরও পড়ুন:বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার মোশতাক আহমদের প্রতি ‘শ্রদ্ধা’ জানিয়ে বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও আইন অনুষদের অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতির সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. বোরহান উদ্দিনসহ পাঁচ বিচারকের আপিল বেঞ্চের এ আদেশের ফলে তার একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চালাতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম, তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন।
আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন বলেন, হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে দ্রুত এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। এ আদেশের ফলে ঢাবি শিক্ষক রহমত উল্লাহর একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চালাতে বাধা নেই।
গত বছরের ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাবি প্রশাসন। সেখানে অধ্যাপক রহমত উল্লাহ মুজিবনগর সরকারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে খন্দকার মোশতাকের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান।শ্রদ্ধা জানানোর পর খন্দকার মোশতাকের প্রতি ঘৃণা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেও বক্তব্য দেন তিনি।
এ ঘটনায় ওই বছরের ২০ এপ্রিল রহমত উল্লাহকে সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতির সিদ্ধান্ত দেয় বিশ্ববিদ্যালয়।
পরে এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে তিনি হাইকোর্টে আবেদন করলে গত বছরের ৮ জুন তা স্থগিত করে বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিলে যায় ঢাবি কর্তৃপক্ষ। ঢাবি কর্তৃপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশটি বহাল রাখে।
আরও পড়ুন:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) ও বিবিএ প্রথম বর্ষে তিন ইউনিটে ১৫৪টি আসন ফাঁকা রয়েছে। নবম মেধা তালিকা থেকে ভর্তির পরও আসন ফাঁকা থাকায় এসব আসন পূরণে তাৎক্ষণিক সাক্ষাৎকারে ভর্তি বা স্পট অ্যাডমিশন নিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার দিনব্যাপী এ তাৎক্ষণিক সাক্ষাৎকারে ভর্তি কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান ও একাধিক অনুষদের ডিন।
রেজিস্ট্রার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) ও বিবিএ প্রথম বর্ষে এ, বি ও সি ইউনিটে নবম মেধাতালিকা থেকে ভর্তির পর বিভিন্ন ইনস্টিটিউট ও বিভাগে বিদ্যমান শূন্য আসনে মেধাক্রমের ভিত্তিতে তাৎক্ষনিক ভর্তি বা স্পট অ্যাডমিশন নেয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা আসছে এবং তাদের ভর্তি নেয়া হচ্ছে। পরে আমরা বিষয়সহ মেধাতালিকা প্রকাশ করব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটি জানায়, ‘এ’ ইউনিটের শিক্ষার্থীদের মেধাক্রম ৫৪৬৬ থেকে ১০০০০ পর্যন্ত সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে সাক্ষাৎকার ও ভর্তি চলবে। একই সময়ে ‘বি’ ইউনিটের মেধাক্রম ২০৪৪ থেকে ৩০০০ পর্যন্ত ভর্তি চলবে কলা অনুষদ অফিসে। আর ‘সি’ ইউনিটের ৯০৩ থেকে ১১০০ পর্যন্ত ভর্তি চলবে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ অফিসে। আসন শূন্য থাকা সাপেক্ষে বিষয় বরাদ্দ দেয়া হবে।
কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটি আরও জানায়, মঙ্গলবার দুপুর ২টায় বিষয় বরাদ্দ তালিকা প্রকাশ করা হবে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনলাইনে মোট ভর্তি ফি জমা দিয়ে সরাসরি সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও ডিন অফিসে সনদপত্রাদি জমা দিয়ে এবং যারা ইতোমধ্যে জিএসটি গুচ্ছের অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আছে, তারা অনলাইনে অবশিষ্ট ভর্তি ফি জমা দিয়ে পূর্বে জমাকৃত ভর্তি ফিসের স্লিপ সরাসরি সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবং ডিন অফিসে জমা দিয়ে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে।
‘এ’ ইউনিটের বাংলা, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, ইসলামিক স্টাডিজ, দর্শন, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, সমাজবিজ্ঞান, নৃবিজ্ঞান, ভূগোল ও পরিবেশ, মনোবিজ্ঞান, এডুকেশন (আইইআর) ও ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ (আইএমএল) বিভাগের আসন ফাঁকা রয়েছে।
এ ছাড়া ‘বি’ ইউনিটে ইসলামিক স্টাডিজ ও ‘সি’ ইউনিটে ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ (আইএমএল) বিষয়ে ভর্তি নেয়া হবে। ভর্তির জন্য মনোনীত শিক্ষার্থীকে নগদ, বিকাশ, রকেট বা শিওর ক্যাশ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ভর্তি ফি জমা দিতে হবে।
শুধুমাত্র নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য মনোনয়নপ্রাপ্ত বিভাগে সনদপত্র ও কাগজপত্রাদি জমা দিতে হবে। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার কক্ষ পরিদর্শক কর্তৃক স্বাক্ষরিত এডমিট কার্ড, অনলাইন হতে প্রিন্টকৃত ভর্তি ফরম ও ৪ কপি সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি, এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার মূল সনদপত্র ও নম্বরপত্র এবং প্রতিটির একটি করে সত্যায়িত ফটোকপি, এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষার মূল নম্বরপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড এবং প্রতিটির একটি করে সত্যায়িত ফটোকপি।
ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও বিভাগীয় চেয়ারম্যানবৃন্দ শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি বিভাগীয় শিক্ষকদের সহযোগিতায় যাচাই-বাছাই পূর্বক ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। সব অনুষদ, ইনস্টিটিউট ও বিভাগীয় দপ্তরে শেয়ারকৃত অনলাইন প্যানেলে ভর্তিকৃত বা বাতিলকৃত শিক্ষার্থীদের তথ্যাদি যথাসময়ে ও সতর্কতার সঙ্গে ইনপুট দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হলো।
আরও পড়ুন:প্রতিষ্ঠার মাত্র ৭ বছরেই সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছে দেশের স্বনামধন্য বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ (সিইউবি)। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আজ মঙ্গলবার এই সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে থাকবেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ও ভারতের শিশু অধিকারকর্মী কৈলাস সত্যার্থী।
সমাবর্তন কেন্দ্র করে রাজধানীর প্রগতি সরণিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসটি সাজানো হয়েছে নয়নাভিরাম সাজে। আর রাজধানীর পূর্বাচলে নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাসে আয়োজন করা হবে সমাবর্তন-পরবর্তী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
প্রথমবারের মতো এই সমাবর্তনে অংশ নিচ্ছেন প্রায় পাঁচশ’ গ্র্যাজুয়েট। প্রথম সমাবর্তন হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাই উদ্বেলিত। রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে ডিগ্রি নেয়ার অপেক্ষায় আছেন গ্র্যাজুয়েটরা।
কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা এবং বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত এ বিষয়ে বলেন, ‘সমাবর্তনের দিনটি আমাদের জন্য এক বিশেষ মাইলফলক। কারণ এই অল্প সময়ের মধ্যে আমরা শিক্ষার্থীদের হাতে সমাবর্তনের মাধ্যমে সার্টিফিকেট তুলে দিতে পারছি। এর জন্য আমি আমাদের ফ্যাকাল্টি, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী, অ্যালামনাইসহ সিইউবি-সংশ্লিষ্ট সবার কাছে কৃতজ্ঞ।’
তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসটি হবে পরিবেশবান্ধব। এখানে আধুনিক ভবন, দৃষ্টিনন্দন লেক ও বিশাল খেলার মাঠ থাকবে। সর্বাধুনিক ল্যাব, স্টুডিও, লাইব্রেরি, থিয়েটার, স্টাডি জোনের সঙ্গে থাকছে শিক্ষার্থী লাউঞ্জ, অবসর কাটানোর জায়গা, জিম, ফুড লাউঞ্জসহ বিভিন্ন সুবিধা। বিশ্বমানের স্থাপত্য নকশায় গড়ে তোলা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টির নান্দনিক স্থায়ী ক্যাম্পাস।
সিইউবিতে রয়েছে আধুনিক সময়ের উপযোগী বিভিন্ন বিভাগ যেমন- শিপিং ও মেরিটাইম সায়েন্স, বিবিএ, এমবিএ ও ইএমবিএ, সিএসই, ইইই, এলএলবি, ইংলিশ, মিডিয়া কমিউনিকেশন ও জার্নালিজম, মাস্টার্স ইন মেরিটাইম ট্রান্সপোর্টেশন ও লজিস্টিকস। শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিতে রয়েছে বৃত্তির সুযোগ।
বিভিন্ন ব্যবসায়িক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। এ ছাড়া কানাডাসহ বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ আছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংগতি রেখে সাজানো হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের পাঠক্রম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন, অসদাচরণ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী বিভিন্ন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়টির চার শিক্ষার্থীকে স্থায়ী ও ১০৯ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে।
শৃঙ্খলা পরিষদের সভার সুপারিশ অনুযায়ী সোমবার অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের এক সভায় বহিস্কারের এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সভায় সভাপতিত্ব করেন। সিন্ডিকেট সভায় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালসহ সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও এর অধিভুক্ত কলেজের ১১৪ শিক্ষার্থীকে স্থায়ী, সাময়িক ও বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কারের সুপারিশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটি। এর মধ্যে পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন ও পরীক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণের দায়ে ১০৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়।
মন্তব্য