৫১তম বিজয় দিবস সামনে রেখে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের বাজারে জ্বালানি ও পণ্যমূল্য কমলে দেশেও সমন্বয়ের অঙ্গীকার করেছেন। সেই সঙ্গে এটাও জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য কমে আসছে।
আগে থেকে ধারণ করা ভাষণটি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রচার হয় দেশের সব সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন ও রেডিও চ্যানেলে।
জনগণকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করা এই ভাষণে গুরুত্ব পায় ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব পরিস্থিতি। উঠে আসে বিশ্ববাজারে পণ্যমূল বৃদ্ধি, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, রিজার্ভ, ব্যাংক নিয়ে প্রচারে টাকা তুলে নেয়া ইত্যাদি পরিস্থিতি।
সেই সঙ্গে তার সরকারের আমলের উন্নয়নের বর্ণনা, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আন্দোলনে সহিংসতা, সেই সরকারের আমলের পরিস্থিতিও তুলে ধরেন সরকারপ্রধান। জনগণকে প্রশ্ন রাখেন তারা উন্নত মর্যাদাশীল জীবনের ধারাবাহিকতা চায় নাকি দুর্বৃত্তায়নের দুর্বিসহ জীবনে ফিরতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বৈশ্বিক কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পেয়েছিল। তা এখন অনেকটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। মূল্যস্ফীতিও হ্রাস পাচ্ছে। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলসহ কোনো জিনিসের দাম কমার সঙ্গে সঙ্গে আমরা তা সমন্বয় করব।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের সরকার। মানুষের কল্যাণের জন্যই কাজ করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। মানুষের ভোগান্তি হোক, কষ্ট হোক- তা আমরা কখনোই চাই না।’
কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদও দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘মাটিতে বীজ ফেললেই যেখানে গাছ জন্মে, ফল হয়, সেখানে বাইরে থেকে কৃষিপণ্য আমদানি করতে হবে কেন? আমি আপনাদের অনুরোধ করছি, এক ইঞ্চি জমিও পতিত রাখবেন না।’
পণ্যমূল্য কেন বেড়েছে
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ এবং পশ্চিমাদের অর্থনৈতিক অবরোধ এবং পাল্টা অবরোধের কারণে আমাদের মতো উন্নয়নশীল ও আমদানিনির্ভর দেশগুলো সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল, গম, চিনি, ভুট্টা, ডাল, রাসায়নিক সারসহ প্রায় সকল ভোগ্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।’
বিশ্ববাজারের পরিস্থিতির পাশাপাশি পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধিও পণ্যমূল্য বৃদ্ধির একটি কারণ বলে জানান তিনি। বলেন, ‘সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। পরিবহন খরচ বহু গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যে জাহাজ ভাড়া ছিল ৮০০ ডলার, তার ভাড়া এখন ৩ হাজার ৮০০ ডলার; যে গম টনপ্রতি ২০০ ডলারে পাওয়া যেত, তা ৬০০ ডলারে কিনতে হচ্ছে। আবার নিজস্ব চাহিদা মেটানোর জন্য কোনো কোনো দেশ বিনা নোটিশে পণ্য রপ্তানি বন্ধ করে দিচ্ছে।’
সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে পৃথিবীর যেখানেই চাহিদার পণ্য পাওয়া যাচ্ছে এবং যত দামই হোক, সেখান থেকেই সরকার তা সংগ্রহ করছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।
পণ্যমূল বাড়ার কারণে গরিবের কষ্ট কমাতে সরকারের কী পদক্ষেপ সেটিও উঠে আসে ভাষণে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এক কোটি পরিবারকে টিসিবির ফেয়ার প্রাইজ কার্ড দিয়েছি। এই কার্ডের মাধ্যমে পরিবারগুলো ৩০ টাকা কেজি দরে চাল ও সাশ্রয়ীমূল্যে ভোজ্য তেল, ডাল ও চিনি সংগ্রহ করতে পারছেন।
‘৫০ লাখ পরিবার ১৫ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি চাল কিনতে পারছে। অসহায় মানুষদের ভিজিডি ও ভিজিএফ-এর মাধ্যমে ৩০ কেজি করে চাল প্রতি মাসে বিনা মূল্যে দেওয়া হচ্ছে।’
‘রিজার্ভ প্রয়োজনের চেয়ে বেশি’
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে অনেকেই নানা মনগড়া মন্তব্য করছেন বলেও অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘তিন মাসের আমদানি খরচ মেটানোর মতো রিজার্ভ থাকলেই চলে। বর্তমানে আমাদের পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো বৈদেশিক মুদ্রা মজুত আছে।’
রিজার্ভ কেন বেড়েছিল এবং পরে তা কমে, তারও ব্যাখ্যা দেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের মহামারির সময় সব ধরনের ভারী যন্ত্রপাতি আমদানি, বিদেশ ভ্রমণ এবং অন্যান্য পণ্য আমদানি অনেকটা বন্ধ ছিল। সে সময় আমাদের রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়ে ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়।
‘এই বিপুল পরিমাণ অর্থ অলস অবস্থায় না রেখে সেখান থেকে কিছু পরিমাণ অর্থ দিয়ে আমরা একটা বিশেষ তহবিল গঠন করেছি। সেই তহবিলের অর্থ দ্বারা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
‘সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে এই ঋণ দেয়া হচ্ছে ২ শতাংশ হার সুদে। ঘরের টাকা সুদসহ ঘরেই ফেরত আসছে। এ অর্থ যদি বিদেশি ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে নেয়া হতো তাহলে ৪/৫ শতাংশ হারে সুদসহ ফেরত দিতে হতো। আর তা পরিশোধ করতে হতো রিজার্ভ থেকেই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস পাওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমরা বেশি দামে জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল, গম, ডাল, ভুট্টাসহ অন্যান্য পণ্য ক্রয় করে স্বল্পমূল্যে সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করছি।’
‘ব্যাংকের টাকা ঘরে এনে বিপদ বাড়াবেন না’
ব্যাংকে টাকা নেই বলে গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। অযথা গুজবে কান না দেয়ার পরামর্শও দেন তিনি। বলেন, ‘বাংকে টাকার কোনো ঘাটতি নেই। উপার্জিত টাকা ঘরে রেখে নিজের বিপদ ডেকে আনবেন না।’
দেশে বিনিয়োগ, রেমিট্যান্সপ্রবাহ এবং আমদানি-রপ্তানি পরিস্থিতি সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।
করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সারা বিশ্বে ‘ভয়ংকর অর্থনৈতিক যুদ্ধ’ শুরু হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘অর্থনৈতিক যুদ্ধের প্রভাব কোনো একক দেশের গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বব্যাপী। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ-পরবর্তী অর্থনৈতিক অবরোধ-পাল্টা অবরোধ বিশ্ব অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে।’
সংকটে ভয় না পাওয়ার পরামর্শও দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘জনগণের সহায়তায় আমরা করোনাভাইরাস মহামারি সফলভাবে মোকাবিলা করেছি। বর্তমান বৈশ্বিক মন্দাও আমরা মোকাবিলা করব, ইনশা আল্লাহ। এ জন্য আপনাদের সহযোগিতা চাই।’
উন্নয়নের নতুন উচ্চতায় দেশ
২০০৯ সালের শুরুতে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর দেশ আর্থসামাজিক উন্নয়নের এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে বলেও মনে করে প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হতে পেরেছে। দেশ আজ খাদ্যশস্য-উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
‘চলতি বছর ৪ কোটি ৪ লাখ মেট্রিক টন চালসহ ৪ কোটি ৭২ লাখ মেট্রিক টন দানাদার শস্য উৎপাদিত হয়েছে। মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, সবজি, ফলসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য উৎপাদন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
‘দারিদ্র্যের হার ৪০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। মাথাপিছু আয় ৫৪৩ ডলার থেকে ২,৮২৪ ডলারে উন্নীত হয়েছে। সাক্ষরতার হার ৪৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭৫.২ শতাংশ।
‘মাতৃমৃত্যু এবং শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ধারাবাহিকভাবে সরকার পরিচালনায় আছে বলেই এসব অর্জন সম্ভব হয়েছে।’
গত জুনে পদ্মা সেতু এবং অক্টোবরে পায়রা সেতু, নভেম্বরে ২৫টি জেলায় একই দিনে ১০০টি সেতু উদ্বোধন, অনেকগুলো মহাসড়ক চার বা তার চেয়ে বেশি লেনে উন্নীত করার কথাও উঠে আসে ভাষণে।
চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল, ঢাকায় মেট্রোরেল এবং বিমানবন্দর-কুতুবখালী এক্সপ্রেসওয়ের একাংশ শিগগির খুলে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
বলেন, ‘আমরা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছি এবং স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করেছি।’
২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত-স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকারও করেন সরকারপ্রধান।
১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে বয়স্কসহ প্রান্তিক মানুষের জন্য বিভিন্ন ভাতা চালু, দ্বিতীয়বার এসে ভাতাভোগীর সংখ্যা এবং টাকার বাড়ানো, অন্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষাভাতা ও অন্যান্য সহায়তা দেয়ার কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। জানান, বিভিন্ন কর্মসূচিতে উপকৃত হচ্ছেন প্রায় সাড়ে চার কোটি মানুষ।
ভাষণে বিশেষভাবে উঠে এসে ভূমিহীন দেরকে বিনা মূল্যে ঘর প্রদানের কথা। বলেন, ‘মুজিববর্ষে আমরা ঘোষণা করেছি কোনো মানুষই আশ্রয়হীন থাকবে না।’
এ পর্যন্ত ৩৫ লাখ মানুষকে বিনা মূল্যে ঘর দিয়ে পুনর্বাসন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
২ কোটি ৫৩ লাখ ছাত্র-ছাত্রীকে বৃত্তি ও উপবৃত্তি, মাধ্যমিক পর্যন্ত প্রতিবছর বিনা মূল্যে বই দেয়া, শতভাগ বিদ্যুতায়ন, সুপেয় পানি, স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, গ্রামে গ্রামে ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে দেয়ার কথাও বলেন শেখ হাসিনা। করোনা মহামারির সময় সময়োচিত পদক্ষেপে মানুষের জীবনের সঙ্গে অর্থনীতিকেও সচল রাখার সাফল্যও দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। জানান, আক্রান্তদের চিকিৎসায় বিভিন্ন হাসপাতালে বাড়ানো হয় ১৫ হাজার শয্যাসহ চিকিৎসা সুবিধা।
বিনা মূল্যে প্রায় ৩৪ কোটি টিকা দেয়া, এক যুগে ২২ হাজার ডাক্তার এবং ৪০ হাজার নার্স নিয়োগ, শিল্প উৎপাদন অব্যাহত রাখতে ২৮টি প্যাকেজের আওতায় ১ লাখ ৮৭ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকার প্রণোদনা দিয়ে শ্রমিকদের বেতনভাতা নিশ্চিত করা, ৫০ লাখ প্রান্তিক মানুষকে দুই দফায় আড়াই হাজার টাকা করে নগদ সহায়তা বিতরণ, গরিবদের ঘরে বিনা মূল্যে খাদ্য পৌঁছে দেয়ার পদক্ষেপও উঠে আসে এই ভাষণে।
‘সাধারণ জনগণ কেন তাদের ভোট দিতে যাবেন?’
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির কথাও উঠে আসে। তিনি বলেন, ‘বিএনপির শীর্ষ নেত্রী এতিমখানার অর্থ আত্মসাৎ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত। আরেক শীর্ষ পলাতক নেতা অর্থ পাচার, দশ-ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান ও একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। সাধারণ জনগণ কেন তাদের ভোট দিতে যাবেন?
দেশের মানুষের ওপর আস্থা হারিয়ে বিএনপি-জামায়াত এখন বিদেশিদের কাছে দেশের বদনাম করার জন্য কিছু ভাড়াটিয়া লোক নিয়োগ করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, ‘পাচারকৃত অর্থ ব্যবহার করছে আর দেশের বদনাম করে বেড়াচ্ছে।’
বিএনপি ২০০৬ সালে ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটারসহ তালিকা করে নির্বাচনের চেষ্টা করে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপির দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও দুঃশাসনের কারণে দেশে ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারি হয় এবং নির্বাচন বাতিল হয়ে যায়।’
২০০৮ সালের নির্বাচনে তিন শ আসনের মধ্যে বিএনপির ৩০টি আসন পাওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘একইভাবে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনেও জনগণ বিএনপি-জামায়াত জোটকে ভোট দেয়নি। জনগণের দ্বারা প্রত্যাখাত হয়ে তারা এখন অগণতান্ত্রিক পথে ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।’
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সপরিবার হত্যা, জিয়াউর রহমানের ক্ষমতায় এসে স্বাধীনতাবিরোধীদের রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ দেয়ার প্রসঙ্গও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘পুনর্বাসিত হয়ে এরা আবার হত্যা ও সন্ত্রাসের রাজনীতি শুরু করে।’
বিএনপির মদতে দেশে জঙ্গি সংগঠন গড়ে উঠে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে গ্রেনেড হামলা করে আমাকে এবং আমার দলের শীর্ষ নেতাদের হত্যা করতে চেয়েছিল।’
২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোটের আন্দোলনের কথু তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের পেট্রোল বোমা হামলায় ৫০০ জন নিরীহ মানুষ নিহত হয় এবং ৩ হাজার ১৮০ জন দগ্ধ হয়। দগ্ধ শরীরের যন্ত্রণা আজও অনেকেই বয়ে বেড়াচ্ছেন।’
‘উন্নত জীবনের ধারাবাহিকতা না দুর্বিসহ জীবন?’
জনগণকে এই দুটির মধ্যে একটি বেছে নিতে হবে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত রয়েছে। সে কারণেই আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকলে কোনোদিনই বাংলাদেশ এত উন্নতি করতে পারত না। উন্নয়নশীল দেশ হতে পারত না।
‘এখন দেশবাসী আপনাদেরই বেছে নিতে হবে আপনারা কী চান - উন্নত মর্যাদাশীল জীবনের ধারাবাহিকতা না বিএনপি-জামায়াত জোটের দুর্বৃত্তায়নের দুর্বিসহ জীবন?’
আরও পড়ুন:২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল আগামী রোববার শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে।
আসামি পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, আজ জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানির জন্য আপিলটি ছিলো। কিন্তু এই মামলায় হাইকোর্টের অথর জাজ বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান আজ আপিল বিভাগের বেঞ্চে ছিলেন।
নিয়ম অনুযায়ী হাইকোর্টে রায় দানকারী বিচারপতি একই মামলা আপিল বেঞ্চে শুনানি গ্রহণ করতে পারেন না।
এজন্য আগামী রোববার পুনর্গঠিত বেঞ্চে আপিলটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে। আদালত বিষয়টিতে আজ নট টুডে আদেশ দিয়েছেন।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হন। ওই গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সিআইডি এই মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দিলে শুরু হয় বিচার।
তবে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই মামলায় অধিকতর তদন্তে আসামির তালিকায় যুক্ত করা হয় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩০ জনকে।
দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন আলোচিত মামলার রায় দেন।
আলোচিত ওই রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন- আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন, হুজি’র সাবেক আমির ও ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, কাশ্মীরি জঙ্গি আব্দুল মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক ওরফে গোলাম মোস্তফা, মাওলানা শওকত ওসমান, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, হোসাইন আহম্মেদ তামিম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. উজ্জল, এনএসআই-এর সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম ও হানিফ পরিবহনের মালিক মোহাম্মদ হানিফ।
বিচারিক আদালতের রায়ে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন ও ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। সে রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামীরা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপি’র সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, হুজি সদস্য হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, আরিফ হাসান ওরফে সুমন, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম মাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম, মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন, আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন, মো. খলিল ওরফে খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মো. ইকবাল ওরফে ইকবাল হোসেন, লিটন ওরফে মাওলানা লিটন, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই ও রাতুল আহমেদ ওরফে রাতুল বাবু।
এছাড়া, বিচারিক আদালতের রায়ে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) মো. আশরাফুল হুদা ও শহিদুল হক, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, ডিজিএফআই-এর মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, ডিএমপি’র সাবেক উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, আরেক সাবেক উপ-কমিশনার (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খোদা বক্স চৌধুরী, সিআইডি’র সাবেক বিশেষ সুপার মো. রুহুল আমিন, সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ ও সাবেক এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমানকে দুই বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এই মামলার আরেকটি ধারায় খোদা বক্স চৌধুরী, রুহুল আমিন, আবদুর রশিদ ও মুন্সি আতিকুর রহমানকে তিন বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন আদালত।
বিচারিক আদালতে এই রায়ের দেড় মাসের মাথায় ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্সসহ মামলার নথি হাইকোর্টে আসে। ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিল ও জেল আপিল শুনানি শুরু হয়। বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি চলছিল।
তবে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর হাইকোর্ট বেঞ্চ পুনর্গঠন হলে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি হয়। শুনানি শেষে গত ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এই মামলার সব আসামীকে খালাস দিয়ে রায় দেন। সে রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
ভূমিকম্পটি শুক্রবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে অনুভূত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের ডেটা অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের সাগাইংয়ের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে।
এ ভূমিকম্পে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত বৃহত্তম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের সাহায্য কমে যাওয়ার ফলে সংকট আরও গভীর হওয়ার উদ্বেগের মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন (সাত কোটি ৩০ লাখ) ডলার নতুন আর্থিক সহায়তা দেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক্সে একটি পোস্টে বলেন, ‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিওইএফ) মাধ্যমে এ খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা ১০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান করবে।
‘এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদাররা এ ধরনের জীবন রক্ষাকারী সহায়তার মাধ্যমে বোঝা ভাগ করে নেওয়ার সঙ্গে যুক্ত।’
সিনহুয়া জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার প্রশাসন ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এজেন্ডার অংশ হিসেবে বিদেশি সহায়তায় ব্যাপক কাটছাঁট এবং ফেডারেল ব্যয় ব্যাপকভাবে হ্রাস এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কিছু অংশ ভেঙে ফেলার বিস্তৃত প্রচেষ্টার মধ্যেই এ অনুদান দেওয়া হলো।
জাতিসংঘের দুটি সংস্থা সতর্ক করে দিয়েছিল যে, তহবিলের ঘাটতি গত আট বছর ধরে প্রতিবেশী মিয়ানমারে সহিংসতার কারণে পালিয়ে আসা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য রেশনের পরিমাণ কমিয়ে দেবে।
রোহিঙ্গারা আশঙ্কা করছেন, তহবিল হ্রাসের ফলে ক্ষুধা পরিস্থিতির অবনতি হবে। গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা এবং জ্বালানি হ্রাস পাবে।
পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সবচেয়ে বড় সহায়তা প্রদানকারী দেশ ছিল। প্রায় ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়ে আসছে দেশটি। কিন্তু জানুয়ারিতে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর সাম্প্রতিক তহবিল স্থগিত করার ফলে কমপক্ষে পাঁচটি হাসপাতাল তাদের সেবা কমিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছে।
ট্রাম্প ও বিলিয়নেয়ার মিত্র ইলন মাস্ক প্রধান মার্কিন বৈদেশিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডি বন্ধ করে দিয়েছেন এবং এর অবশিষ্টাংশগুলোকে পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে একীভূত করেছেন। শত শত কর্মী এবং ঠিকাদারকে বরখাস্ত করেছেন এবং কোটি কোটি ডলারের পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছেন, যার ওপর বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ নির্ভরশীল।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফেব্রুয়ারিতে সমস্ত জীবন রক্ষাকারী সহায়তা এবং এ ধরনের সহায়তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় যুক্তিসঙ্গত প্রশাসনিক খরচ মওকুফ করেছিলেন।
ওয়াশিংটন টাইমস জানায়, এ মাসের শুরুতে ইউএসএআইডি ভেঙে দেওয়ার তত্ত্বাবধানকারী ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তা রোহিঙ্গাদের জন্য পর্যায়ক্রমে সাহায্য বন্ধের প্রস্তাব করেছিলেন।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা হ্রাস করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছে।
কক্সবাজার উপকূলের বিভিন্ন শিবিরের বাসিন্দারা এখন জনপ্রতি মাসিক ১২ ডলার করে খাদ্য বরাদ্দ পাবেন, যা আগের ১২ দশমিক ৫০ ডলার থেকে কম।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘ডব্লিউএফপি একটি চিঠিতে এই সিদ্ধান্তের কথা আমাদের জানিয়েছে, যা ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।’
তিনি আরও বলেন, ভাসানচরে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা জনপ্রতি ১৩ ডলার করে পাবে, যা কক্সবাজারের তুলনায় এক ডলার বেশি।
বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা কমানোর পরিকল্পনা ডব্লিউএফপি পূর্বে জানানোর পর এ পরিবর্তন এসেছে।
গত ৫ মার্চ বাংলাদেশের শরণার্থী কমিশন ডব্লিউএফপি থেকে একটি চিঠি পায়, যেখানে বলা হয়, তহবিল সংকটের কারণে এপ্রিল থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য মাসিক খাদ্য বরাদ্দ জনপ্রতি ১২ দশমিক ৫০ ডলার থেকে কমিয়ে ৬ ডলার করা হবে।
চিঠিতে শরণার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
গত ১৪ মার্চ জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন।
তার সফরের সময় তাকে ছয় ডলারে রোহিঙ্গারা কী খাবার পাবে তার বিস্তারিত বিবরণ উপস্থাপন করা হয়েছিল। সে সময় অপর্যাপ্ত পরিমাণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন:গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্পকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতাসহ যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার আন্তরিক ও একমত বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতাদিসহ যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক ও একমত। শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং এ ব্যাপারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে মালিকপক্ষ ও বিজিএমইএকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে এবং তাদের কর্মকাণ্ড মনিটর করা হচ্ছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘অন্যায্য ও অযৌক্তিক দাবির নামে গার্মেন্টস শিল্পে অস্থিরতা সৃষ্টি, অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ, নৈরাজ্য ও সহিংসতা কোনোভাবেই কাম্য নয় এবং তা কখনোই মেনে নেয়া হবে না।
‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় সরকার তা কঠোরভাবে প্রতিহত করবে। গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানায় সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখা এবং দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে সরকার এ বিষয়ে মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষ উভয়ের সহযোগিতা কামনা করছে।’
আরও পড়ুন:পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আন্তসীমান্ত বায়ুদূষণ মোকাবিলায় কার্যকর আঞ্চলিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের বায়ুদূষণের ৩০-৩৫ শতাংশ আসে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে। তাই এ সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক আলোচনার গণ্ডি পেরিয়ে বাস্তব পদক্ষেপ ও আঞ্চলিক সহযোগিতা জরুরি।
তিনি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর কাঠমান্ডু রোডম্যাপ ও অন্যান্য সমঝোতার কথা উল্লেখ করে বলেন, এগুলো যথেষ্ট নয়, আরও জোরালো উদ্যোগ প্রয়োজন।
কলম্বিয়ার কার্টাগেনায় অনুষ্ঠিত ডব্লিউএইচওর দ্বিতীয় বৈশ্বিক সম্মেলনের বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া সাইড ইভেন্টে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে বৃহস্পতিবার ভোরে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
ঢাকাস্থ বাসভবন থেকে সংযুক্ত হয়ে তিনি বাংলাদেশের বায়ুদূষণ সমস্যা, বিশেষ করে ঢাকার ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন।
উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের বহুমাত্রিক বায়ুদূষণ সমস্যা মোকাবিলায় বায়ুমান নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে, যা ডব্লিউএইচওর অন্তর্বর্তীকালীন লক্ষ্যমাত্রার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ আইনি বিধিমালায় দূষণকারী খাতগুলোর জন্য নির্দিষ্ট মানদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের কাঠামো তৈরি করা হয়েছে।
তিনি জানান, ২০২৪ সালে চূড়ান্ত হওয়া জাতীয় বায়ুমান ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার বাস্তবায়ন রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পিছিয়ে ছিল, তবে এখন তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। পরিকল্পনার লক্ষ্য হলো মানুষের দূষণজনিত ঝুঁকি কমানো ও পরিষ্কার বায়ুর দিন বৃদ্ধির মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
পরিবেশ উপদেষ্টা আরও জানান, বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রকল্প চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে, যা সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে শিগগিরই বাস্তবায়ন শুরু হবে। এ প্রকল্প নিয়ন্ত্রক কাঠামো শক্তিশালী করা, আইন প্রয়োগ জোরদার করা, শিল্প কারখানায় দূষণ পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ এবং গণপরিবহন খাত আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্ব দেবে।
তিনি ঢাকার আশেপাশের এলাকাগুলোকে ইটভাটামুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার পরিকল্পনার কথা জানান, যেখানে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ থাকবে।
এ ছাড়া ২০২৫ সালের মে থেকে পুরনো বাস ধাপে ধাপে তুলে দেওয়া হবে, যা পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে।
তিনি বায়ুদূষণের অন্যতম প্রধান কারণ ধুলাবালি দূষণ রোধে ঢাকা শহরের খোলা সড়কগুলোতে সবুজায়নের উদ্যোগ এবং রাস্তা পরিস্কারে আরও শ্রমিক নিয়োগের পরিকল্পনার কথা জানান।
উপদেষ্টা জানান, অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ অভিযানের ফলে এরই মধ্যে বায়ুমানের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এ অগ্রগতি ধরে রাখতে কঠোর নজরদারি ও খাতগুলোর আধুনিকায়ন জরুরি।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ মানুষ বায়ুদূষণের কারণে মারা যায় এবং ঢাকার মতো দূষিত শহরগুলোতে মানুষের গড় আয়ু ৫-৭ বছর কমে যাচ্ছে। এই সংকট আমাদের সবার জন্য, আমাদের শিশু, বাবা-মা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হুমকি। নিষ্ক্রিয়তার মূল্য অনেক বেশি। আমাদের এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি আশাবাদী। কারণ আমি বিশ্বাস করি, এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। প্রযুক্তি ও বিকল্প ব্যবস্থা আমাদের হাতে রয়েছে, শুধু প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবায়ন দরকার।
‘বায়ুদূষণ শুধুই পরিবেশগত ইস্যু নয়, এটি মানবিক সংকট।’
সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি, পরিবেশ ও জ্বালানি খাতের নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক ও উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, গবেষক, স্থানীয় প্রশাসন, পরিবহন ও শিল্প খাতের বিশেষজ্ঞ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
তারা দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণ রোধে যৌথভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন।
আরও পড়ুন:পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদর বৃহস্পতিবার। এর অর্থ ‘অতিশয় সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত’ বা ‘পবিত্র রজনী’।
আজ সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হবে কদরের রজনী।
যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে সারা দেশে রাতটি পালন করা হবে।
মহান আল্লাহ লাইলাতুল কদরের রাতকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও এ রাতের ইবাদত উত্তম।
এ রাতে আল্লাহর অশেষ রহমত ও নিয়ামত বর্ষণ করা হয়। নির্ধারণ করা হয় মানবজাতির ভাগ্য।
৬১০ সালে কদরের রাতেই মক্কার নূর পর্বতের হেরা গুহায় ধ্যানরত মহানবী হযরত মুহাম্মদের (সা.) কাছে সর্বপ্রথম সুরা আলাকের পাঁচ আয়াত নাজিল হয়। এরপর আল্লাহর নির্দেশে ফেরেশতা জিবরাইল (আ.)-এর বহনকৃত ওহির মাধ্যমে পরবর্তী ২৩ বছর ধরে মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে বিভিন্ন প্রয়োজনীয়তা এবং ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নির্দিষ্ট আয়াত আকারে বিভিন্ন সুরা নাজিল করা হয়।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ ঘোষণা করেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তা (কোরআন) অবতীর্ণ করেছি কদরের রাতে। আর কদরের রাত সম্বন্ধে তুমি কি জানো? কদরের রাত হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। সে রাতে ফেরেশতারা ও রুহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে।
‘শান্তিই শান্তি, বিরাজ করে ঊষার আবির্ভাব পর্যন্ত। (সূরা আল- কদর, আয়াত ১-৫)।’
হাদিসে বর্ণিত আছে, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) রমজান মাসের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করতেন এবং বলতেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ ১০ রাতে লাইলাতুল কদর সন্ধান করো (বুখারি ও মুসলিম)।’
মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় পবিত্র রাতটি ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে কাটিয়ে দেন। কামনা করেন মহান রবের অসীম রহমত, নাজাত, বরকত ও মাগফিরাত।
এরই ধারাবাহিকতায় আজ রাত থেকে পরের দিন ভোররাত পর্যন্ত মসজিদসহ বাসা-বাড়িতে এবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আসকার, দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও আখেরি মোনাজাত করবেন তারা।
এই উপলক্ষে শুক্রবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ উপলক্ষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে রাতব্যাপী ওয়াজ মাহফিল, ধর্মীয় বয়ান ও আখেরি মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে।
এ ছাড়া দেশের সব মসজিদেই তারাবির নামাজের পর থেকে ওয়াজ মাহফিল, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন থাকবে।
পবিত্র লাইলাতুল কদর/শবে কদর উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এবং বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি রেডিওগুলো বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে।
এ ছাড়া সংবাদপত্রগুলোতে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করা হবে।
এশীয় দেশগুলোকে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও যৌথ সমৃদ্ধির জন্য সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
চীনের হাইনানে বৃহস্পতিবার বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পরিবর্তনশীল এ বিশ্বে এশীয় দেশগুলোর ভাগ্য পরস্পরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। আমাদের অবশ্যই একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে যা অভিন্ন ভবিষ্যৎ এবং যৌথ সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাবে।’
আর্থিক সহযোগিতা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এশিয়াকে অবশ্যই একটি টেকসই অর্থায়ন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে এবং আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংক (এমডিবি) ও অনুরূপ প্রতিষ্ঠানগুলোর এ প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, ‘আমাদের এমন নির্ভরযোগ্য তহবিল দরকার যা আমাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করবে।’
বাণিজ্য সহযোগিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এশিয়া এখনও বিশ্বের অন্যতম কম সংযুক্ত অঞ্চল।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এ দুর্বল সংযুক্তি বিনিয়োগ ও বাণিজ্যকে বাধাগ্রস্ত করছে। আমাদের অবশ্যই বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য দ্রুত কাজ করতে হবে।’
খাদ্য ও কৃষি সহযোগিতা বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এশীয় দেশগুলোকে অবশ্যই সম্পদ-সাশ্রয়ী কৃষিকে উৎসাহিত এবং খাদ্য নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় উৎপাদন বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের আমদানির ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। স্বনির্ভরতা অর্জন করতে হবে। টেকসই প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষি সমাধান ও জলবায়ুবান্ধব চাষাবাদের ক্ষেত্রে উদ্ভাবন বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এশিয়াকে অবশ্যই একটি শক্তিশালী প্রযুক্তি ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে হবে, যা পুনর্গঠনমূলক, সমবণ্টনমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে।
তিনি বলেন,‘আমাদের জ্ঞান, তথ্য ভাগ করে নিতে হবে এবং প্রযুক্তি ইনকিউবেশন ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগ করতে হবে। ডিজিটাল সমাধানে সহযোগিতা আমাদের অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করবে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পরিশেষে বলব আমাদের সম্মিলিত কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে মেধা সম্পদ ও যুবশক্তিকে রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই একটি নতুন সভ্যতার ভিত্তি স্থাপন করতে হবে—একটি আত্মরক্ষা ও আত্মস্থায়ী সমাজ। আমাদের শূন্য-বর্জ্যের জীবনধারার ওপর ভিত্তি করে একটি পাল্টা সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। ভোগ সীমিত রাখতে হবে মৌলিক প্রয়োজনের মধ্যে।
‘আমাদের অর্থনীতিকে সামাজিক ব্যবসার ওপর ভিত্তি করে গড়ে তুলতে হবে, যা ভবিষ্যতের ব্যবসায়িক কাঠামো হিসেবে উদ্ভাসিত হবে, যেখানে উদ্ভাবন, লক্ষ্য ও দায়িত্ববোধ একীভূত থাকবে।’
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, বোয়াও ফোরাম ও অন্যান্য অনুরূপ উদ্যোগগুলোকে যুবসমাজ ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে হবে, যেন আগামী প্রজন্মের জন্য এশিয়াকে আরও উন্নত করা যায়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য