× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
The appeal hearing of the August 21 case was adjourned till January 25
google_news print-icon

২১ আগস্ট মামলার আপিল শুনানি ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি

২১-আগস্ট-মামলার-আপিল-শুনানি-২৫-জানুয়ারি-পর্যন্ত-মুলতবি
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে জনসভায় গ্রেনেড হামলা করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
গত ৫ ডিসেম্বর থেকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়। শুরুতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে মামলায় বিচারিক আদালতের রায়, সাক্ষীদের বক্তব্য পাঠ করে।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্সসহ আসামিদের করা আপিলের শুনানি আগামী ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করেছে হাইকোর্ট।

গত ৫ ডিসেম্বর থেকে এ মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়। শুরুতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে মামলায় বিচারিক আদালতের রায়, সাক্ষীদের বক্তব্য পাঠ করে।

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৩৫ সাক্ষীর মধ্যে ৬৬ জনের জবানবন্দি পড়া শেষ হয়েছে। পরে আদালত আগামী ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত মামলাটির শুনানি মুলতবি করে।

বিচারপতি শহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মুস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ দিন ঠিক করে দেয়।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহেমদ। আসামিপক্ষে ছিলেন মো. আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলীসহ একাধিক আইনজীবী।

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহেমদ নিউজবাংলাকে বলেন, আজ পর্যন্ত ৬৬ জন সাক্ষীর জবানবন্দি পড়া শেষ হয়েছে। ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেছে আদালত।

আলোচিত এ মামলাটির আপিল শুনানি আগামী বছরের প্রথম দিকেই শেষ হবে বলে প্রত্যাশা অ্যাটর্নি জেনারেলের।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, 'মামলার শুনানিতে সব আসামির ব্যাপারেই বক্তব্য থাকবে। তবে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে কোনো আপিল নেই, সুতরাং ওনার বিষয়টি আসবে না।'

২১ আগস্ট হামলার ১৪ বছর পর ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় দেয় বিচারিক আদালত। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। একই সঙ্গে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়।

ওই বছরের ২৭ নভেম্বর দুই মামলার রায়সহ প্রায় ৩৭ হাজার ৩৮৫ পৃষ্ঠার নথি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসে পৌঁছায়। পরে ২০১৯ সালের ১৩ জানুয়ারি মামলায় আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য গ্রহণ করে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। সে সময়ে দ্রুত পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দেয়।

পরে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নির্দেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মামলার পেপারবুক তৈরি হয়। এরপর গত ৫ ডিসেম্বর থেকে মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়।

ঘটনার বিবরণ
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। অল্পের জন্য ওই হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি, তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা।

এই ঘটনায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক, সাবেক রাষ্ট্রপতি (প্রয়াত) জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতা-কর্মী।

ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ মামলা করেন। সে সময়ের ক্ষমতাসীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার প্রকৃত আসামিদের বাঁচিয়ে নির্দোষ ব্যক্তিদের ফাঁসানোর চেষ্টা করে।

২০০৭ সালে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এলে পুরো দৃশ্যপট পাল্টে যায়। ২০০৮ সালের ১১ জুন দেয়া অভিযোগপত্রে বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টু, তার ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন ও হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ ২২ জনকে আসামি করা হয়।

তখন জানা যায়, শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে হামলার ছক করা হয়েছিল। পাকিস্তান থেকে এসেছিল হামলায় ব্যবহৃত আর্জেস গ্রেনেড।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পর অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। দুই বছর তদন্তের পর আরও ৩০ জনকে আসামি করে ২০১১ সালের ৩ জুলাই সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এর ফলে এ মামলায় মোট আসামির সংখ্যা দাড়ায় ৫২।

মৃত্যুদণ্ড যাদের
যারা সর্বোচ্চ সাজা পেয়েছেন, তাদের মধ্যে আছেন বিএনপি নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর, আবদুস সালাম পিন্টু, তার ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন, হরকাতুল জিহাদের সাবেক আমির শেখ আবদুস সালাম, কাশ্মীরি জঙ্গি আব্দুল মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক ওরফে গোলাম মোস্তফা, মাওলানা শওকত ওসমান, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল।

জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, হোসাইন আহম্মেদ তামিম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. উজ্জল, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, হানিফ পরিবহনের মালিক বিএনপি নেতা মোহাম্মদ হানিফকেও প্রাণদণ্ড দেয়া হয়েছে।

পরিকল্পনা ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যা করার অভিযোগে দণ্ডবিধির ৩০২/১২০খ/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করে আদালত।

তারেক রহমান ছাড়াও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পেয়েছেন খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তার রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরী, বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ, হরকাতুল জিহাদের সদস্য হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, আরিফ হাসান ওরফে সুমন, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম মাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম, মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন, আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন, মো. খলিল ওরফে খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মো. ইকবাল ওরফে ইকবাল হোসেন, লিটন ওরফে মাওলানা লিটন, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই, রাতুল আহমেদ ওরফে রাতুল বাবু।

তাদের দণ্ডবিধির ৩০২/১২০খ/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এ ছাড়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) মো. আশরাফুল হুদা ও শহুদুল হক, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাগনে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, ডিজিএফআইয়ের মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, ডিএমপির সাবেক উপকমিশনার (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, আরেক সাবেক উপকমিশনার (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খোদা বক্স চৌধুরী, সিআইডির সাবেক বিশেষ সুপার মো. রুহুল আমিন, সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ, সাবেক এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমানকে দুই বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আরেকটি ধারায় খোদা বক্স চৌধুরী, রুহুল আমিন, আবদুর রশিদ ও মুন্সি আতিকুর রহমানকে তিন বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেয় আদালত।

এ মামলার আসামিদের মধ্যে ভিন্ন মামলায় মুফতি হান্নানসহ ৩ জনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে অন্য মামলায়। তারেক রহমানসহ পলাতক আছেন ১৬ আসামি।

আরও পড়ুন:
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচার শেষের পথে: কাদের
তারেকের ফাঁসির রায় না হওয়ায় জাতি অসন্তুষ্ট: নাছির
খালেদার সমর্থনে গ্রেনেড হামলায় মুখ্য ভূমিকায় তারেক
গ্রেনেড হামলার স্থানে জবির শ্রদ্ধাঞ্জলি
‘কেয়ামত নেমে এসেছিল সেদিন’

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Allegations of trying to rehabilitate the absconding chairman of Awami League

আওয়ামী লীগের পলাতক চেয়ারম্যানকে পুনর্বাসনের চেষ্টার অভিযোগ

আওয়ামী লীগের পলাতক চেয়ারম্যানকে পুনর্বাসনের চেষ্টার অভিযোগ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার শুকানপুকুরী ইউনিয়ন পরিষদের গেট। ছবি: নিউজবাংলা
ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, ‌‘আবেদনসহ অন্যান্য কাগজ আমি পেয়েছি। উভয় পক্ষকে ডেকে শুনানি করা হবে এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনো কৌশলগত বিষয় আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হবে। তবে নিয়ম-বহির্ভূত কাউকে পুনর্বাসন করার সুযোগ নেই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার শুকানপুকুরী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) আওয়ামী লীগের পলাতক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমানকে কৌশলে পুনর্বাসনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্যানেল চেয়ারম্যান-২ এরশাদ আলীসহ স্থানীয় একাধিক রাজনীতিক ও কিছু ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।

গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন ৫ আগস্ট এ ইউপি চেয়ারম্যান পরিষদ ছেড়ে পালিয়ে যায়।

জনসেবা অব্যাহত রাখতে নিয়ম অনুসারে ইউপি সদস্য সুমন রানাকে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ করে বাকি প্যানেল গঠন করা হয়।

বর্তমানে ইউপিতে নাগরিক সেবা অব্যাহত থাকলেও প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কৌশলে অনাস্থা এনে এরশাদ আলীসহ অন্যরা পলাতক চেয়ারম্যানকে পুনর্বাসনের চেষ্টায় আছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

তাদের ভাষ্য, সম্প্রতি কৌশল জানাজানি হলে ইউনিয়নবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এমন বাস্তবতায় যেকোনো সময় ওই ইউনিয়নে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।

পলাতক চেয়ারম্যানকে পুনর্বাসনের ‘কৌশল’

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, প্রথমে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক বরাবর শুকানপুকুরী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-১ সুমন রানার বিরুদ্ধে অনাস্থার প্রস্তাব এনে একটি আবেদন জমা দেওয়া হয়। সেখানে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ সুমন রানার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ উল্লেখ করা হয়। এতে স্বাক্ষর করেন ৯ জন ইউপি সদস্য।

পরে সেই আবেদনের জের ধরে ১৩ জানুয়ারি ইউনিয়ন পরিষদের প্যাডের পাতায় প্যানেল চেয়ারম্যান-২ মো. এরশাদ আলী স্বাক্ষরিত এক পাতার একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণের রেজুলেশন ও অপর একটি পাতায় আটজন ইউপি সদস্যের স্বাক্ষর সংবলিত পাতা সংযুক্ত করা হয়। এ পাতায় সভার স্থান দেখানো হয় ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে।

ওই রেজুলেশনে বলা হয়, ‘অদ্যকার অত্র আলোচনায় শুকানপুকুরী ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমানের (পলাতক) মাধ্যমে ইউপির সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা ও সভায় বিস্তর আলোচনা করা হয়। এরপর সভার সভাপতি প্যানেল চেয়ারম্যান-২ এরশাদ আলীর উপস্থিতিতে সদস্যদের জানান, প্যানেল চেয়ারম্যান-১ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে স্বেচ্ছাচারিতা করে আসছেন, যা জেলা প্রশাসকের বরাবরে অনাস্থার প্রস্তাব আনয়ন করি।

‘তাই ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান আনিছুর রহমানের (পলাতক) মাধ্যমে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা তথা জনসেবা অব্যাহত রাখা একান্ত জরুরি মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন।’

রেজুলুশনে উল্লেখ করা হয়, সর্বসম্মতিক্রমে পলাতক চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পরিষদের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা তথা জনসেবা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় এবং জেলা প্রশাসক ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়।

প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা নিয়ে দুই ইউপি সদস্যের ভাষ্য

কারণ জানতে এ প্রতিবেদক যোগাযোগ করেন অনাস্থা কাগজে স্বাক্ষর করা দুজন ইউপি সদস্যের সঙ্গে। তারা হলেন মো. আমজাদ ও ধর্ম নারায়ণ রায়।

ইউপি সদস্য আমজাদ বলেন, ‘৪ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে আমার বাড়ির সামনে স্থানীয় সাবেক দুজন সদস্য মোটরসাইকেল নিয়ে আসেন। তারা আমাকে কৌশলে ইউনিয়ন বিএনপির নেতা তরিকুল ইসলামের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে দেখি অন্যান্য ইউপি সদস্যরাসহ বিএনপির ইউনিয়ন পর্যায়ের শীর্ষ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত। রাতের খাবারের বিশাল আয়োজনও করা হয়েছে। আমি কোন কিছু বুঝে উঠতে পারছিলাম না।

‘পরে জানানো হলো, আমাকে বর্তমান প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে স্বাক্ষর করতে হবে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো আনা হয়েছে, তা মিথ্যা। তিনি খুব ভালোভাবে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। এসবই আলোচনা হচ্ছে। এরপর এক প্রকার জোর করেই আমাকে রাতের খাবার খাওয়ানো হলো এবং পরিস্থিতির কারণে বাধ্য হয়ে স্বাক্ষর করতে হলো। কিন্তু আমি সিলমোহর দিইনি।’

ইউপি সদস্য ধর্ম নারায়ণ রায় বলেন, ‘একই তারিখে স্থানীয় বাসিন্দা তোষর এবং রফিকুল আমাকে একটা জায়গায় সমস্যার কথা বলে কৌশলে ইউনিয়ন বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলামের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে দেখি বিএনপির অন্যান্য রাজনীতিক নেতাসহ অন্যান্য ইউপি সদস্যরা রয়েছেন। আমাকে রাতের খাবারের জন্য বারবার বলা হচ্ছে। কিন্তু কী কারণে এত আদর-আপ্যায়ন, বুঝতে পারছিনা। জিজ্ঞাসা করলেও কোনো উত্তর পাই না।

‘সমাজ রক্ষার্থে সকলের সাথে রাতের খাবার খেলাম। এরপর আমাকে এক প্রকার চাপ দেওয়া হয় প্যানেল চেয়ারম্যান সুমন রানার বিরুদ্ধে অনাস্থা কাগজে স্বাক্ষর করতে। কিন্তু আমি তার সমর্থক। তিনি ভালো মানুষ।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্বাক্ষর দিতে প্রথমে রাজি না হলেও পরে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ স্বাক্ষর করেছে। আমি কেন করব না, এ কথা তোলে। অনেকক্ষণ তর্ক-বিতর্কের পর সই করে সেখান থেকে আসতে হয়েছে। পরে আমি লিখিত চিঠি দিয়ে বিষয়টি প্যানেল চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি।’

ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ভবেষ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘প্যানেল চেয়ারম্যান-১ সুমন রানার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনে অনাস্থা আনা হয়েছে, তা আমার কাছে ভিত্তিহীন মনে হয়েছে।’

সচিব আরও বলেন, ‘পরিষদে তিনি (সুমন রানা) সবার সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেন এবং নাগরিক সেবা অব্যাহত রেখেছেন। তার বিরুদ্ধে আমাকেও কেউ কোনো দিন কোনো মৌখিক অভিযোগ দেননি।’

সভার বিষয়ে যা বললেন ইউপি সচিব ও সদস্য

ইউনিয়ন পরিষদ সচিব বলেন, ‘৪ জানুয়ারি, ৭ জানুয়ারি ও ১৩ জানুয়ারি কোনো সভা ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমসহ পরিষদের কোনো স্থানে অনুষ্ঠিত হয়নি। যেসব সভার কথা বলা হচ্ছে, তা গোপনে বা প্রকাশ্যে অন্য কোথাও হয়ে থাকতে পারে। তা আমার জানা নাই।’

ইউপি সদস্য ধর্ম নারায়ণ রায় বলেন, ‘১৩ তারিখ সকাল ১১টায় প্যানেল চেয়ারম্যান-২ সভা ডেকেছিল। আমি সময়মতো পরিষদে আসলেও সভা হয়নি।

‘আমি জানতে চাইলে তিনি গোপনে স্থানীয় দুলাল নামের এক লোকের বাসায় মিটিং হবে বলে জানান। কিন্তু আমি সেখানে যাইনি। পরিষদের কাজ শেষে বাড়ি চলে আসি।’

স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিযুক্ত প্যানেল চেয়ারম্যানের ভাষ্য

স্থানীয় বাসিন্দা জিলানি হোসেন বলেন, ‘যে চেয়ারম্যান জনগণের ভোটে নির্বাচিত হননি, তিনি জনগণের কথা ভাববেন না, এটাই স্বাভাবিক। তাই তিনি আমাদের দুর্ভোগে ফেলে আজও পর্যন্ত পলাতক রয়েছেন। আমরা নাগরিকসেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমরা তার পুনর্বাসন চাই না।

‘পরিষদ তাকে ছাড়া বেশ ভালো চলছে। আমরা সুন্দর সেবা পাচ্ছি। শুনছি অনেকে পলাতক চেয়ারম্যানের টাকার কাছে বিক্রি হয়েছে। আমরা নতুন কোনো ষড়যন্ত্র মেনে নেব না।’

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে প্যানেল চেয়ারম্যান-২ এরশাদ আলী ইউনিয়ন পরিষদে সভা না করা এবং কোনো ব্যক্তির বাসায় বসে সভা করার বিষয়টি স্বীকার করেন।

তিনি জানান, নিরাপত্তাজনিত কারণে পরিষদে সভা করতে পারেননি।

তিনি কেন পলাতক ও বিতর্কিত চেয়ারম্যানকেই পুনর্বাসন করতে চান, এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বর্তমান দায়িত্বরত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তোলেন।

অভিযুক্ত প্যানেল চেয়ারম্যান সুমন রানার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং পরিষদে নাগরিক সেবা অব্যাহত আছে কি না, তা সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করার আহ্বান জানান।

ইউনিয়ন বিএনপির নেতা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাড়িতে পরিষদের কোনো বৈঠক হয়নি; সিদ্ধান্তও হয়নি। আমার হাত ভেঙে যাওয়ায় আমি অসুস্থ। তাই রাজনীতিক নেতা ও পরিষদের সদস্যরা দেখতে এসেছিল। এর বেশি কিছু না।’

তবে চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান পলাতক থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, ‌‘আবেদনসহ অন্যান্য কাগজ আমি পেয়েছি। উভয় পক্ষকে ডেকে শুনানি করা হবে এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

‘কোনো কৌশলগত বিষয় আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হবে। তবে নিয়ম-বহির্ভূত কাউকে পুনর্বাসন করার সুযোগ নেই।’

আরও পড়ুন:
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা: ঠাকুরগাঁওয়ের তিন সাংবাদিককে খালাস
ট্রেনযাত্রীদের অধিকার রক্ষার ১০ দফা দাবিতে গণস্বাক্ষর
‌‌‘মিথ্যা সাক্ষী দেয়নি বলেই কি বাবা জেলে?’
চার শিক্ষা বোর্ডে নতুন চেয়ারম্যান
প্যারোলে মেলেনি মুক্তি, বাবার জানাজায় অংশ নিতে পারেননি স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Order to pay Tk 10 lakh to children who lost their hands and feet due to electricity

বিদ্যুতে হাত-পা হারানো শিশুকে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ

বিদ্যুতে হাত-পা হারানো শিশুকে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট ভবন। ছবি: বাসস
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও প্রধান বিদ্যুৎ পরিদর্শকের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়।

পল্লী বিদ্যুতের লাইনে বিদ্যুতায়িত হয়ে ডান হাত ও ডান পা হারানো শিশু রাকিবুজ্জামানের চিকিৎসায় জরুরি আর্থিক সহায়তা হিসেবে ৩০ দিনের মধ্যে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও প্রধান বিদ্যুৎ পরিদর্শকের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়।

এ সংক্রান্ত এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুহম্মদ তারিক-উল ইসলাম ও ফরিদ হাসান মেহেদী। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজ বিন ইউসুফ, শফিকুর রহমান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।

রিট আবেদনকারী পক্ষের দাবি সাতক্ষীরার আশাশুনি থানার প্রতাপনগরের মো. আবদুর রাজ্জাকের বসতবাড়ির ওপর দিয়ে নকশা-বহির্ভূতভাবে টানা বিদ্যুতের লাইনে ২০২১ সালের ৯ মে বিদ্যুতায়িত হয় সাত বছরের শিশু রাকিবুজ্জামান। এতে শিশুটির হাড়-মাংস ঝলসে যায়। বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একই বছরের ১২ মে শিশুটির ডান হাত বগল থেকে ও ডান পায়ের হাঁটু থেকে নিচের অংশ কেটে ফেলা হয়।

এ ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে ২০২১ সালের ২৫ মে শিশুটির বাবা সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে ক্ষতিপূরণ ও যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেন। সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় শিশুটির অঙ্গহানির ঘটনায় ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশনা চেয়ে ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর শিশুটির বাবা হাইকোর্টে রিট করেন।

রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ৮ নভেম্বর হাইকোর্ট রুল জারির পাশাপাশি শিশুটির কী কী চিকিৎসার প্রয়োজন এবং এর সম্ভাব্য ব্যয় জানিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালকের প্রতি নির্দেশ দেন।

ওই নির্দেশ অনুসারে ইনস্টিটিউটের পরিচালক ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রতিবেদন জমা দেন, যেখানে সর্বমোট খরচ নির্ধারণ করা হয় ২ কোটি ৬৩ লাখ ৬৯ হাজার ১৮২ টাকা। একপর্যায়ে শিশুটির চিকিৎসায় জরুরি আর্থিক সহায়তা হিসেবে ১০ লাখ টাকা দিতে নির্দেশনা চেয়ে ৫ জানুয়ারি সম্পূরক আবেদন করেন তার বাবা।

আবেদনের শুনানি শেষে আদেশ দেন উচ্চ আদালত।

আরও পড়ুন:
সামিনা লুৎফাকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতির নির্দেশ
হাইকোর্টে শুরু হচ্ছে কাগজমুক্ত বিচার কার্যক্রম
ঘাটাইলে পল্লী বিদ্যুতের গ্রিডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, ভোগান্তিতে গ্রাহক
এস আলমের বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর অব্যাহতি সুবিধা বাতিল
শেখ হাসিনা, জয় ও টিউলিপের দুর্নীতি অনুসন্ধানে রুল

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Human rights violations during the July coup report of the United Nations mission in mid February

জুলাই অভ্যুত্থানকালীন মানবাধিকার লঙ্ঘন: জাতিসংঘ মিশনের প্রতিবেদন মধ্য ফেব্রুয়ারিতে

জুলাই অভ্যুত্থানকালীন মানবাধিকার লঙ্ঘন: জাতিসংঘ মিশনের প্রতিবেদন মধ্য ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক (বাম দিক থেকে দ্বিতীয়) বুধবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ছবি: ইউএনবি
ভলকার তুর্ক বলেন, জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় থেকে প্রতিবেদনটির প্রকাশনা সামনে রেখে বাংলাদেশের সঙ্গেও এটি শেয়ার করা হবে।

গত বছরের জুলাই থেকে আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধানী মিশনের প্রতিবেদন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে, যা মধ্য ফেব্রয়ারিতে প্রকাশ করা হবে।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক এমন তথ্য জানান।

স্থানীয় সময় বুধবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে দুই নেতার মধ্যে এ বৈঠক হয়।

পরে প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এমন তথ্য জানান।

এ সময় রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে জাতিসংঘের সহায়তা চান ড. ইউনূস।

ভলকার তুর্ক বলেন, জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় থেকে প্রতিবেদনটির প্রকাশনা সামনে রেখে বাংলাদেশের সঙ্গেও এটি শেয়ার করা হবে।

শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের সময় অপরাধের তদন্ত করায় জাতিসংয়ের মানবাধিকার কমিশনকে ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা। এ ছাড়া ছয়টি স্বাধীন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনও একই সময়ে প্রকাশিত হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

তাদের পর্যবেক্ষণ, এসব প্রতিবেদন একটি অন্যটির পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে।

ওই সময় রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে সহায়তার জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধানের কাছে আহ্বান জানান ড. ইউনূস।

এ ক্ষেত্রে পরিপূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দিয়ে তুর্ক বলেন, তিনি এ বিষয়ে মিয়ামারে জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত জুলি বিশপসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে কথা বলবেন।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবি থেকে সরকার পতন আন্দোলন এবং তার পরবর্তী সময়ে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের আমন্ত্রণে বাংলাদেশে কাজ করেছে জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধানী মিশন।

গত বছরের ১ জুলাই থেকে ১৫ অগাস্ট পর্যন্ত সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে তারা।

অভিযোগের সত্যতা উদঘাটন, দায়-দায়িত্ব চিহ্নিতকরণ, মানবাধিকার লঙ্ঘনের মূল কারণ বিশ্লেষণের পাশাপাশি এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে সুপারিশ করবে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দল।

আরও পড়ুন:
জুলাই অভ্যুত্থান: এনটিএমসি-বিটিআরসির কাছে থাকা সব তথ্য সংরক্ষণের নির্দেশ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের গেজেট প্রকাশ
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সর্বদলীয় বৈঠকে অংশ নেবে না এলডিপি
জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ১০০ জনের কর্মসংস্থানের প্রস্তাব
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর জুলাই ঘোষণাপত্র ‍চূড়ান্ত: প্রেস সচিব

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Ordinance issued for the appointment of Supreme Court Judges

সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগে অধ্যাদেশ জারি

সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগে অধ্যাদেশ জারি সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ। ফাইল ছবি
প্রধান বিচারপতি এ কাউন্সিলের চেয়ারপারসনের দায়িত্বে থাকবেন।

স্বতন্ত্র কাউন্সিলের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগের বিধান রেখে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মঙ্গলবার জারিকৃত আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক পদে নিয়োগের নিমিত্ত বা পরামর্শ প্রদান প্রক্রিয়ায় প্রধান বিচারপতিকে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে, এই অধ্যাদেশ উপযুক্ত ব্যক্তি বাছাইপূর্বক সুপারিশ করার জন্য একটি স্থায়ী কাউন্সিল থাকবে এবং তা সুপ্রিম জুডিসিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল নামে অভিহিত হবে।’

এতে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি এ কাউন্সিলের চেয়ারপারসনের দায়িত্বে থাকবেন।

প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের দুজন বিচারক (একজন অবসরপ্রাপ্ত ও একজন কর্মরত), হাইকোর্টের দুজন বিচারক এবং অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়ে সাত সদস্যের এ কাউন্সিল গঠন করা হবে। অপর সদস্য হবেন এ কাউন্সিলের চেয়ারপারসন মনোনীত একজন আইনের অধ্যাপক বা আইন বিশেষজ্ঞ।

এ কাউন্সিল নিজ উদ্যোগে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম সংগ্রহ করবে। একই সঙ্গে যেকোনো মানুষ, যেকোনো আইনজীবী যাতে নিজের ইচ্ছায় আবেদন বা কারও নাম প্রস্তাব করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা রয়েছে। এ কাউন্সিল প্রাথমিক যাচাই-বাছাই করার পর সাক্ষাৎকার নেবে।

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল পদাধিকার বলে কাউন্সিলের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এবং তিনি ও তার দপ্তর কাউন্সিলের কার্য সম্পাদনে প্রয়োজনীয় সাচিবিক সহায়তা প্রদান করবেন।

তবে রেজিস্ট্রার জেনারেল নিজে বিচারক পদে প্রার্থী হলে সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রিতে কর্মরত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে গ্রেডেশন তালিকা অনুযায়ী তার পরবর্তী জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা কাউন্সিলের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এবং অনুরূপভাবে জ্যেষ্ঠ দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ বা তৎপরবর্তী কর্মকর্তা প্রার্থী হলে গ্রেডেশন তালিকা অনুযায়ী তার পরবর্তী কর্মকর্তা এ দায়িত্ব পালন করবেন।

কাউন্সিলের সব সভা চেয়ারপারসন নির্ধারিত স্থান ও সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। তবে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক পদে নিয়োগের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় বিচারকের সংখ্যা নির্ধারণ করার জন্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অনুরোধপ্রাপ্ত হলে, প্রধান বিচারপতি এ উদ্দেশ্যে অবিলম্বে কাউন্সিলের সভা আহ্বান করবেন।

সুপ্রিম কোর্টের কোনো অতিরিক্ত বিচারকের পদে নিযুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার অন্যূন দুই মাস আগেই কাউন্সিলের সভা আহ্বান করতে হবে।

গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোনো নির্দিষ্ট সময়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক পদে সম্ভাব্য শূন্যতা অথবা বিচারাধীন মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির প্রয়োজনীয়তা অথবা নিষ্পত্তি সংক্রান্ত আনুষঙ্গিক বিষয়াদি অথবা এসব বিষয় সম্মিলিতভাবে বিবেচনাক্রমে কাউন্সিলের সভায় সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় বিচারকের সংখ্যা নির্ধারণ করা হবে, যা প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করবেন।

প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বা নিজ বিবেচনায় রাষ্ট্রপতি প্রয়োজনীয় বিচারকের সংখ্যা চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করে উল্লিখিতসংখ্যক বিচারক নিয়োগের লক্ষ্যে প্রধান বিচারপতির পরামর্শ চাইলে উপযুক্ত ব্যক্তি বাছাই করার উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি কাউন্সিলের পরবর্তী সভা আহ্বান ও অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

কাউন্সিলের সব সভায় চেয়ারপারসন সভাপতিত্ব করবেন এবং তার অনুপস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট সভায় উপস্থিত আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতার ক্রমানুসারে প্রবীণতম বিচারক সভাপতিত্ব করবেন।

আরও পড়ুন:
বিচারকদের ভারতে প্রশিক্ষণের সিদ্ধান্ত বাতিল
নিয়মিত বিচারিক কার্যক্রমে ফিরল সুপ্রিম কোর্ট
হাসান আরিফের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচার কার্যক্রম বন্ধ বৃহস্পতিবার
দুই বিচারককে বদলি
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে অপ্রীতিকর ঘটনায় প্রধান বিচারপতির উদ্বেগ

মন্তব্য

বাংলাদেশ
2500 harassment cases to be withdrawn in 7 days Legal Advisor

৭ দিনে আড়াই হাজার হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার হবে: আইন উপদেষ্টা

৭ দিনে আড়াই হাজার হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার হবে: আইন উপদেষ্টা আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল মঙ্গলবার সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ছবি: ইউএনবি
উপদেষ্টা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গায়েবি ও রাজনৈতিক হয়রানিমূলক আড়াই হাজারের বেশি মামলা শনাক্ত করতে পেরেছি। এসব মামলা সাত দিনের মধ্যে প্রত‍্যাহার করতে পারব বলে আশা করছি। ২৫টি জেলায় এসব মামলা হয়েছে।’

আগামী সাত দিনের মধ্যে আড়াই হাজারের বেশি গায়েবি ও রাজনৈতিক হয়রানিমূলক হামলা প্রত্যাহার করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মঙ্গলবার সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গায়েবি ও রাজনৈতিক হয়রানিমূলক আড়াই হাজারের বেশি মামলা শনাক্ত করতে পেরেছি। এসব মামলা সাত দিনের মধ্যে প্রত‍্যাহার করতে পারব বলে আশা করছি। ২৫টি জেলায় এসব মামলা হয়েছে।’

সাইবার নিরাপত্তা আইনে যে মামলাগুলো হয়েছে, সেগুলোও প্রত্যাহারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান আসিফ নজরুল।

তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে অনেক মামলা প্রত‍্যাহার করা হয়েছে। বাকিগুলোও পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করা হবে।’

আরও পড়ুন:
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা: ঠাকুরগাঁওয়ের তিন সাংবাদিককে খালাস
অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার আপিলের রায় বুধবার
তারেক রহমানের চার মামলা বাতিলের রায় বহাল
গোপন লেনদেন, ট্রাম্পের মামলার রায় ১০ জানুয়ারি
স্ত্রী-সন্তানসহ সাবেক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Demand to open daily Bhor paper by Thursday

বৃহস্পতিবারের মধ্যে দৈনিক ভোরের কাগজ খুলে দেওয়ার দাবি

বৃহস্পতিবারের মধ্যে দৈনিক ভোরের কাগজ খুলে দেওয়ার দাবি সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভোরের কাগজের প্রধান প্রতিবেদক খোন্দকার কাওছার হোসেন। ছবি: বাসস
প্রধান প্রতিবেদক খোন্দকার কাওছার হোসেন বলেন, ‘ভোরের কাগজের নির্বাহী সম্পাদক এ কে সরকার স্বাক্ষরিত নোটিশে পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ করা হয়েছে, এমন কোনো ঘোষণা আমরা দেখতে পাইনি। আমরা বিশ্বাস করি ভোরের কাগজের প্রকাশনা বন্ধ করা হয়নি।’

আগামী বৃহস্পতিবারের (২৩ জানুয়ারি) মধ্যে দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকা খুলে দিয়ে প্রকাশনা অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সংবাদকর্মীরা।

এ সময়ের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে সাংবাদিক ইউনিয়নসহ সব সাংবাদিক সংগঠনের নেতাদের নিয়ে কাকরাইলের এইচআরটি ভবন ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দেন তারা।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে মঙ্গলবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভোরের কাগজের প্রধান প্রতিবেদক খোন্দকার কাওছার হোসেন।

তিনি বলেন, ‘ভোরের কাগজের নির্বাহী সম্পাদক এ কে সরকার স্বাক্ষরিত নোটিশে পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ করা হয়েছে, এমন কোনো ঘোষণা আমরা দেখতে পাইনি। আমরা বিশ্বাস করি ভোরের কাগজের প্রকাশনা বন্ধ করা হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভোরের কাগজের প্রকাশনা অব্যাহত থাকবে। অনতিবিলম্বে প্রধান কার্যালয়ের তালা খুলে দিয়ে ভোরের কাগজের প্রকাশনা পুনরায় চালু করার নির্দেশ দেওয়া হোক। আমরা ভোরের কাগজকে বাঁচিয়ে রাখতে চাই।’

ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তের গ্রেপ্তারের বিষয়টি উল্লেখ করে খোন্দকার কাওছার হোসেন বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পরে ১৬ সেপ্টেম্বর ভোরের কাগজের সম্পাদক গ্রেপ্তার হন। সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। এরপর আমরা দেখলাম ভোরের কাগজের মালিক সাবের হোসেন চৌধুরীর স্বাক্ষরে এ কে সরকার ভোরের কাগজে নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে নিয়োগপত্র নিয়ে আমাদের অফিসে হাজির হয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘এ কে সরকার মূলত সাবের হোসেন চৌধুরীর মালিকানাধীন কর্ণফুলী গ্রুপের আবাসিক পরিচালক। গণমাধ্যম বিষয়ে তার কোনো ধরনের অভিজ্ঞতা নেই বলে তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। আমরা তার সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ একদিন তিনি আমাদের জানালেন সাবের হোসেন চৌধুরী আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চান।

‘এক মিটিংয়ে আমাকেসহ আটজন বিভাগীয় প্রধানের নাম চূড়ান্ত করে উনাকে জানানো হলে, তিনি ৩০ নভেম্বর আমাদের সঙ্গে বসলেন। সেখানে অর্থ বিভাগের প্রধান আর্থিক সংকটের কথা জানালে তিনি সরাসরি প্রশ্ন করলেন, গত ১৫ বছরে যে আয় হয়েছে, সেই টাকা কোথায়? অর্থ বিভাগ তার কোনো উত্তর দিতে পারেনি।’

প্রধান প্রতিবেদক আরও বলেন, ‘ভোরের কাগজ অষ্টম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করেছে ঘোষণা দিয়ে সরকারের কাছ থেকে ৯০০ টাকা কলাম ইঞ্চি হারে বিজ্ঞাপন বিলসহ নানা সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে। কিন্তু আমাদের ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করেনি; নিয়োগপত্র দেয়নি। যদি আমাদের ছাঁটাই করা হয়, তাহলে অষ্টম ওয়েজ বোর্ডের সব সার্ভিস বেনিফিটসহ এরিয়ার বেতন পরিশোধ করতে হবে।

‘যদি ছাঁটাই করা না হয়, তবে যেদিন থেকে আমি ভোরের কাগজে কাজ শুরু করেছি, সেই তারিখ থেকে নিয়োগপত্র দিতে হবে। অষ্টম ওয়েজ বোর্ডে প্রাপ্য সব বকেয়া বেতন দিতে হবে। এখন থেকে ওয়েজ বোর্ড অনুযায়ী বেতন-ভাতা দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‌‘অনতিবিলম্বে ভোরের কাগজ খুলে দেওয়ার দাবি জানাই। পত্রিকার প্রকাশনা অব্যাহত রাখার দাবি করছি। সঙ্গে আমাদের সব পাওনা পরিশোধ করার দাবি জানাই।’

ওই সময় ভোরের কাগজের ১১টি বিভাগের প্রধানসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন:
ভোরের কাগজ প্রকাশনা বন্ধ ঘোষণা
‌‌‘মিথ্যা সাক্ষী দেয়নি বলেই কি বাবা জেলে?’
সব কোচিং সেন্টার ২২ দিন বন্ধের নির্দেশ, না মানলে কঠোর ব্যবস্থা
নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন
হজযাত্রী নিবন্ধনে শেষবারের মতো সময় বৃদ্ধি

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Arakan Army released Bangladeshi 3 cargo ships

বাংলাদেশি ৩ পণ্যবাহী জাহাজ ছেড়ে দিল আরাকান আর্মি

বাংলাদেশি ৩ পণ্যবাহী জাহাজ ছেড়ে দিল আরাকান আর্মি মিয়ানমার থেকে পণ্য নিয়ে টেকনাফ স্থলবন্দরে আসার পথে নাফ নদীর মোহনা থেকে বৃহস্পতিবার তিনটি কার্গো জাহাজ আটক করা হয়েছিল। ছবি: নিউজবাংলা
টেকনাফ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এতেশামুল হক বাহাদুর বলেন, পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তারা মিটিংয়ে বসেছেন। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

তিন দিনের মাথায় অবশেষে মিয়ানমারে আটকে রাখা বাংলাদেশি তিন পণ্যবাহী জাহাজ ছেড়ে দিয়েছে আরাকান আর্মি।

মিয়ানমার থেকে পণ্য নিয়ে টেকনাফ স্থলবন্দরে আসার পথে নাফ নদীর মোহনা থেকে বৃহস্পতিবার তিনটি কার্গো আটক করা হয়েছিল।

টেকনাফ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এতেশামুল হক বাহাদুর সোমবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে সকাল ১০টার দিকে আটক কার্গো জাহাজের মধ্যে দুটি বাংলাদেশ-মিয়ানমার নাফ নদের জলসীমা নাইক্ষ্যংদিয়া থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। অন্যটি সেখানে ছিল।

টেকনাফ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এতেশামুল হক বাহাদুর বলেন, পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তারা মিটিংয়ে বসেছেন। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন থেকে পণ্যবাহী চারটি কার্গো জাহাজ কক্সবাজার জেলার টেকনাফ স্থলবন্দরের উদ্দেশে আসার পথে আরাকান আর্মি আটক করে তাদের জিম্মি করে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুটি করে পর্যায়ক্রমে চারটি কার্গো আটক করে এ সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী।

আরাকান আর্মির সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে ছাড়পত্র নিয়ে গত শনিবার একটি কাঠবাহী কার্গো বন্দরে আসে। তিন দিন পর বাকি তিনটি ছেড়ে দেওয়া হয়।

মিয়ানমারে সংঘাতের মধ্য দিয়ে আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের বেশির ভাগ এলাকা দখলে নেয়। এ সংঘাতের প্রভাব পড়েছে টেকনাফ স্থলবন্দরের সীমান্ত বাণিজ্যে। বেশ কিছুদিন ধরে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।

বিচ্ছিন্নভাবে যেসব পণ্য আমদানি হয়, তাও ইয়াঙ্গুন শহর থেকে। এ শহর থেকে আসার পথে নাফ নদীতে প্রবেশ করতে রাখাইন রাজ্যের সীমান্ত হয়ে আসতে হয়।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, কার্গো জাহাজগুলোতে ৫০ হাজার বস্তা শুঁটকি, সুপারি, কফিসহ বিভিন্ন পণ্যের আনুমানিক ৫০ কোটি টাকার মালামাল রয়েছে।

আরও পড়ুন:
টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুনে প্রাণ গেল শিশুর
মিয়ানমার থেকে এলো ২২ হাজার টন আতপ চাল
মিয়ানমারে সংঘাত: মাছ ধরার নৌকায় অনুপ্রবেশ ৩৬ রোহিঙ্গার
টেকনাফে বনকর্মীসহ ১৭ রোহিঙ্গা শ্রমিক অপহরণের শিকার
সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার পথে মাঝসাগরে জাহাজের ইঞ্জিন বিকল

মন্তব্য

p
উপরে