নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি তেলের সরবরাহ নিশ্চত করতে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ডিপো পর্যন্ত পাইপলাইন স্থাপন করছে সরকার। আগামী বছরের মধ্যে এ পাইপালাইন দিয়ে জ্বালানি তেল সরবরাহ হবে বলে আশা করছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।
বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকায় মেঘনা ডিপোর রিসিভার টার্মিনাল স্থাপনের কাজ পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববাজারের সঙ্গে তেলের দাম সমন্বয় করে দাম নির্ধারণের কাজ চলেছ। ইতোমধ্যে পাইপলাইনের কাজও অনেকদূর এগিয়ে গেছে। আগামী দুই বছরের মধ্যে পাইপালাইন দিয়েই চট্রগ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জে জ্বালানি তেল সরবরাহ হবে। এতে পরিবহন খাতে জ্বালানি তেলের দাম অনেক সাশ্রয়ী হবে।’
প্রতিমন্ত্রী জানান, আগে বড় জাহাজ থেকে ছোট ছোট লাইটার জাহাজে করে পতেঙ্গায় তেল নিয়ে আসা হতো। সেখান থেকে গাড়িতে বা ছোট ছোট জাহাজে করে বিভিন্ন ডিপোতে সরবরাহ করা হতো। এ ক্ষেত্রে বড় জাহাজটি ১২-১৪ দিন বসে থাকার কারণে ডেমারেজ গুনতে হতো।
প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, পাইপলাইনে তেল সরবরাহ করতে স্কাটার্স সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। পাইপলাইন স্থাপনের কাজ তদারকি করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের ২৪ ও ৩৪ ফ্রিগেট।
২০১৬- ২০১৭ সালে এই কাজ শুরু হলেও করোনার কারণে দুই বছর বন্ধ ছিল।
পরে শিবু মার্কেট এলাকায় তেল সরবরাহেব পাইপলাইনের কাজ ও ফতুল্লার মেঘনা পেট্রোলিয়াম ডিপো প্রস্তাবিত রিসিভ টার্মিনালের নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেন প্রতিমন্ত্রী। জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ের সামনে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালেও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভি, বিপিসির চেয়ারম্যান এবিএম আজাদ, জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই সহ বিপিসির ও সেনাবাহনীর ইঞ্জনিয়ারিং কোরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন:বরিশালে সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে ভীত-সন্ত্রস্ত পরিবেশ তৈরির চেষ্টার পাশাপাশি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করছেন মেয়র প্রার্থীরা। এমন কোনো ঘটনা ঘটলে কড়া আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়মী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছাড়া বাকি মেয়র প্রার্থীরা।
শনিবার নগরের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগের সময় এ হুঁশিয়ারি দেন তারা।
গণসংযোগকালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, ‘ভোট দিতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন ভোটাররা। তবে বরিশালে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এখনও নিশ্চিত হয়নি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখানে বিভিন্নভাবে ভীত-সন্ত্রস্ত পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করছে।
‘ছাত্রলীগের বিশেষ এক নেতা এসে নৌকার লোগো লাগিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন বরিশালে। তিনি বরিশালের সিটি নির্বাচনে বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে লোক এনে একটা ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছেন। তাদের উদ্দেশ্য, জনগণ যেন ভোটকেন্দ্রে না যায়।’
এ ধরনের অবস্থা চলতে থাকলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সম্মিলিতভাবে তা প্রতিহত করার ঘোষণা দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, তারা যেন এখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডটা নিশ্চিত করেন। নাহলে সারা দেশে ভোট চুরির বিরুদ্ধে যে গণআন্দোলন শুরু হবে, সেই আন্দোলনে পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে সরকার।’
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, ‘বরিশালে ধীরে ধীরে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হওয়ার দিকেই যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। আমাদের কিছু লোককে হয়রানি করা হয়েছে।
‘টুপি-দাড়ি দেখে আমাদের লোকজনকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, কোথায় বাড়ি? কেন এসেছেন? অথচ, নির্বাচনী আচরণবিধির মধ্যে কোথাও লেখা নেই যে শহরের বাইরের কেউ ভোট চাইতে পারবে না বা আসতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘আশেপাশের কিছু লোক তো আসতেই পারে এবং সব প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণার জন্যই তারা আসেন। আমি মনে করি নির্বাচনী আচরণবিধির মধ্যে যা আছে, সেই দিকে প্রশাসনের লক্ষ্য রাখা উচিত। এর বাইরে অতি উৎসাহিত হয়ে অন্য কিছু না করাই ভালো।
‘নির্বাচনী বিধি ছাড়া যদি আমি কোনো কাজ করি, তাহলে বলবেন। কিন্তু বিধির মধ্যে থেকে কাজ হলে অতি উৎসাহী হয়ে আমাদের বাধা দেয়ার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। আমি প্রশাসনের কাছে দাবি করব, বরিশালের নির্বাচনের দিকে গোটা দেশ তাকিয়ে আছে। ফলে নির্বাচন যদি কোনো অবস্থায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়, যদি গ্রহণযোগ্য না হয়, তাহলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আন্দোলনের পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নেবে।
ভোটারদের সমর্থনের ব্যাপারে এসময় তিনি বলেন, ‘ভোটারদের কাছ থেকে যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছি। তারা ইতোমধ্যে ভোট দেয়ার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলছে। যে ব্যক্তির মাধ্যমে বরিশালের সব দিকের উন্নয়ন হবে, সে রকম একজন প্রার্থীকে ভোটাররা যাতে নির্বাচিত করেন, আমি সে দাবি জানাই। ফেয়ার-ফ্রি ভোট হলে হাতপাখা জয়লাভ করবে।’
জাকের পার্টির প্রার্থী মিজানুর রহমান বাচ্চুও মাঠে নেমে যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছেন বলে জানান। তিনি বলেন, যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় ও কমিশন যদি সঠিকভাবে ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা করতে পারে, তাহলে আমি জয়ের আশা রাখি।’
তবে এখন পর্যন্ত অস্বাভাবিক কিছু দেখছেন না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ (খোকন সেরনিয়াবাত)।
এদিকে নির্বাচনে প্রচারের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক ছাত্রদল নেতা কামরুল আহসান রুপনের তিন কর্মীকে আটকের অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে রুপন বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে গেলেও তারা সঠিকভাবে কিছু বলছে না। বিকেল সাড়ে ৪টায় আদালতে গিয়ে জানতে পারলাম রমজান, মোনায়েম খান, সৈয়দ রফিকুল ইসলাম মন্টু নামে আমার তিন কর্মীকে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ বিনা কারণে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু তাদের এখনও আদালতে তোলেনি।’
এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ সূত্র জানায়, বরিশাল মেট্রোপলিটনের কাউনিয়া ও কোতোয়ালি থানা পুলিশ শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত সন্দেহজনক কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেয়াও হয়েছে।
নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন কাউনিয়া থানার ওসি আব্দুর রহমান মুকুল।
আরও পড়ুন:কুমিল্লার হোমনায় ট্রাকচাপায় মা-মেয়ে ও সদর দক্ষিণে ট্রেনের ধাক্কায় বাবা-ছেলে নিহত হয়েছে।
ট্রাকচাপায় নিহতরা হলেন হোমনা উপজেলার হোমনা পূর্বপাড়া গ্রামের সজল সরকারের স্ত্রী ফেরদৌসী আক্তার ও তার এক বছরের মেয়ে সাউদা।
পুলিশ জানায়, শনিবার সকালে ফেরদৌসী আক্তার তার একমাত্র মেয়ে সাউদাকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি থেকে অটোরিকশাযোগে বাবার বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে হোমনা উপজেলার শ্রীমদ্দি এলাকায় একটি ট্রাককে ওভারটেক করতে গেলে তাদের অটোরিকশাটি হেলে পড়ে। এ সময় ফেরদৌসী আক্তার ও তার কোলে থাকা কন্যা সন্তান সাউদা ট্রাকের চাকার নিচে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদেরকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
হোমনা থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনাকবলিত অটোরিকশা ও ট্রাকটি আটক করা হয়েছে। দুপুরে নিহতদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে কুমিল্লা সদর দক্ষিণে ট্রেনের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রী সোহাত ও তার ছেলে ১২ বছর বয়সী ছেলে সোহেল প্রাণ হারান।
বিকেল সোয়া ৪টার দিকে জেলার সদর দক্ষিণ থানার জেলখানা বাড়ি এলাকার রেল ক্রসিংয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি দেবাশীষ চৌধুরী জানান, চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর ট্রেন জেলখানা বাড়ি এলাকার রেল ক্রসিং পার হওয়ার সময় সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা ধাক্কা খায়। এতে অটোরিকশার যাত্রী সোহাত ও তার ছেলে সোহেল ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। তাদের বাড়ি বরুড়া উপজেলার বাতাইছড়ি এলাকায়।
আরও পড়ুন:দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় এক মেয়র প্রার্থী ও ৪০ কাউন্সিলর প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে বিএনপি।
শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাক্ষরিত নোটিশ সিলেট বিএনপির ওই নেতাদের পাঠানো হয়।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ব্যক্তি স্বার্থে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিতভাবে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দিতে হবে।
প্রদানের তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি কাইয়ুম চৌধুরী ও মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী নোটিশ বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত দলের। এই সিদ্ধান্ত যারা অমান্য করবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সিলেট সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী নগরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সালাউদ্দিন রিমনকে নোটিশ দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ তৌফিকুল হাদি, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ফরহাদ চৌধুরী শামীম, ১৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য নজরুল ইসলাম মুনিম, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য এবিএম জিল্লুর রহমান উজ্জল, সিলেট মহানগর মহিলা দলের সভাপতি অ্যাডভোকেট রুকসানা বেগম শাহনাজ, সিলেট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন, সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক উসমান হারুন পনির, সিলেট জেলা বিএনপির উপদেষ্টা গোলাম মোস্তফা কামাল, গউছ উদ্দিন পাখি, সিলেট জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন নাদিম, ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মুফতি কমর উদ্দিন কামু, ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান মিঠু, ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মো. কামাল মিয়া, ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য খালেদ আকবর চৌধুরী, আমিনুর রহমান খোকন, শাহেদ সিরাজ, ১০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান জুবের, ১১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য আব্দুর রহিম মতছির ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মুজিবুর রহমানকে শোকজ করা হয়েছে।
কারণ দর্শানোর নোটিশপ্রাপ্ত অন্যান্যরা হলেন- সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সালমান চৌধুরী শাম্মী, ২৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি মামুনুর রহমান মামুন, এমসি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বদরুল আজাদ রানা, ২৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য হুমায়ুন কবির সুহিন, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি সেলিম আহমদ রনি, সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আলী আব্বাস, বরইকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সহসাধারণ সম্পাদক জাবেদ আমিন সেলিম, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রাজু মিয়া, বরইকান্দি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি সানর মিয়া, টুলটিকর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল মুকিত, সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সাবেক আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট হেদায়েত হোসেন তানভীর, সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য দুলাল আহমদ, সিলেট জেলা বিএনপি নেতা দেলওয়ার হোসেন জয়, সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আব্দুল হাছিব, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সহ-ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদক সুমন আহমদ সিকদার, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপি নেতা সাহেদ খান স্বপন ও বরইকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক নেতা নুরুল ইসলাম মাসুম।
এ ছাড়াও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে নোটিশপ্রাপ্তরা হলেন- সিলেট জেলা মহিলা দলের সভাপতি সালেহা কবির শেপী, সিলেট মহানগর মহিলা দলের সহ-সভাপতি রুহেনা বেগম মুক্তা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, সিলেট ইউনিটের সদস্য অ্যাডভোকেট জহুরা জেসমিন ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি কামরুন নাহার তান্নি।
তবে এখন পর্যন্ত কোনো নোটিশ হাতে পাননি বলে জানিয়েছেন মেয়র প্রার্থী সালাউদ্দিন রিমন। তিনি বলেন, ‘আমি বর্তমানে গণসংযোগে ব্যস্ত, এসব নোটিশ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না।’
এসময় তিনি দলীয় পরিচয়ে প্রার্থী হননি বলেও জানান।
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর বিএনপি সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, ‘আজ রাতের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হোয়াটসঅ্যাপে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হবে। যাদের হোয়াটসঅ্যাপে পাওয়া যাবে না, তাদের সশরীর রোববার চিঠি পৌঁছে দেয়া হবে।’
যাদের কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে, তাদের কাছ থেকে জবাব পাওয়ার পর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি বলে জানান তিনি।
২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন:দুয়ারে কড়া নাড়ছে খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচন। নিজের পক্ষে ভোট টানতে ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে ছুটছেন প্রার্থীরা। একদিকে যেমন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি ও নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির আশ্বাস, অন্যদিকে তেমনি প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে রটাচ্ছেন নানা রকমের কথা।
এর প্রেক্ষিতে এবার দুই মেয়র প্রার্থীর মধ্যে প্রকাশ্যে শুরু হয়েছে দ্বন্দ্ব। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে কালো টাকা ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু। তবে মধুর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন খালেক।
শনিবার সকালে ভোটের মাঠে প্রচারকালে পাল্টাপাল্টি এ অভিযোগ পাওয়া যায়।
নগরীর সোনাডাঙা এলাকায় গণসংযোগকালে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মধু। এসময় তিনি বলেন, ‘খালেক তালুকদারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোঁজ করুন, তার কোথায় কি আছে! আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট শূন্য। আমার কোনো টাকা নেই।’
এসময় আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ইঙ্গিত করে মধু বলেন, ‘অনেক দলের প্রার্থীর দেখছি প্রতিটি ওয়ার্ডে দুই-তিনশ’ করে মানুষ নির্বাচনী প্রচারে নিয়োজিত। কিন্তু, নির্বাচন কমিশন যে টাকা বাজেট করে দিয়েছে, তাতে এত লোক কাজ করানো সম্ভব নয়। তাহলে এ টাকার উৎস কোথায়? নাকি তারা আলাউদ্দিনের চেরাগ খুঁজে পেয়েছে?’
খুলনা সিটি নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ি হচ্ছে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘এটার সঠিক তদন্ত করা উচিত। তার অনেক লোক লাগানো আছে, এ বাড়ি আছে, সে বাড়ি আছে। এ নির্বাচনে তার জিততেই হবে। যেভাবে হোক; ভোট কেটে হোক, প্রশাসন দিয়ে হোক, তার জিততেই হবে।’
নগরবাসীর কাছে সমর্থন চেয়ে তিনি বলেন, ‘আমার বড় ভাই, তালুকদার (খালেক) ভাই। তিনি তো গত তিনবার কেসিসি নির্বাচন করে দুইবার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তাহলে এবারও কেন মেয়র হতে এত চেষ্টা? তিনি আমার হাতে মেয়রের সিট ছেড়ে দিক, আমি খুলনাবাসীকে দেখিয়ে দেব যে উন্নয়ন কাকে বলে।
‘আমিও অনেক কিছু জানি ও বুঝি। আশা করি, খুলনা সিটিকে আধুনিক সিটিতে গড়ে তুলব ইনশাআল্লাহ। নির্বাচন নিয়ে আমি ভোটারদের বলব, আপনারা ভোট কেন্দ্রে যাবেন ও বুঝে-শুনে সঠিক প্রার্থীকে নিজের মূল্যবান ভোটটা দেবেন।’
বয়সের কারণে খালেক দায়িত্ব পালনে দুর্বল হয়ে পড়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘বয়স হয়ে গেলে মানুষ একটু এলোমেলো হয়ে যায়। আমার তো এখনও তার মত অত বয়স হয়নি। তাই আমি বলছি, তিনি এবার আমাকে ছেড়ে দিক, আমরা একটু দেখি, কী করে সিটি কর্পোরেশন চালাতে হয়।’
তবে গণসংযোগের সময় মধুর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উল্টো মধুর দিকেই অভিযোগের তীর ছোঁড়েন তালুকদার আব্দুল খালেক।
নগরীর বানরগাতি এলাকায় গণসংযোগকালে তিনি বলেন, ‘কালো টাকা ছড়ানো মধুর মত প্রার্থীর পক্ষে সম্ভব। খুলনায় আমাদের পক্ষ থেকে কোনো কালো টাকা ছড়াছড়ি হচ্ছে না। তারা পারলে এটার প্রমাণ দেখাক।’
খুলনা সিটির উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন তুলে এসময় তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টির এরশাদ তো ৮-১০ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। তারা এই শহরে কী উন্নয়ন করেছেন, আর আমরা আমি কী করেছি, তা জনগণ জানে।’
১২ জুন খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইভিএমে ভোটগ্রহণের এ নির্বাচনে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
আরও পড়ুন:বিএনপির ভোট বর্জনের সিদ্ধান্তের পরও সিটি নির্বাচনে নিজের প্রার্থীতা প্রত্যাহার না করার কারণ জানিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন। দলটির দেয়া কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাবে তিনি তা জানিয়েছেন।
এসময় মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দকে দোষারোপ করেছেন রুপন। মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়া ও প্রত্যাহারের বিষয়ে কেউ কখনও যোগাযোগ করেনি বলে অভিযোগ তার।
তিনি জানান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বেঁধে দেয়া সময়সীমা শুক্রবার রাত ১০টার মধ্যেই শোকজের জবাব দিয়েছেন তিনি।
নোটিশের জবাবে রুপন উল্লেখ করেন, ‘বরিশাল সিটি নির্বাচনের প্রার্থীতা ঘোষণার পর গণমাধ্যমে এই মর্মে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয় যে আমি বিএনপির কেউ নই। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া আমার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় বলে উল্লেখ করা হয়। তারপরও আমি সবসময় মিডিয়ায় বক্তব্য দিয়েছি, বিএনপির পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা আসলে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করব।’
বর্তমানে তিনি কোনো সাংগঠনিক পদে নেই জানিয়ে বলেন, ‘এখন প্রার্থীতা প্রত্যাহারের সুযোগ নেই। তবে দল যে সিদ্বান্ত দেবে, তা মেনে নেব।’
বরিশাল সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে মেয়র পদের রুপনসহ সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদের ১৯ জনকে শোকজ দেয় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি।
২৪ ঘন্টার মধ্যে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত ওই নোটিশের জবাব দিতে নির্দেশ দেয়া হয়।
নোটিশের জবাবে রুপনকে দায়ী করা প্রসঙ্গে বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মীর জাহিদুল কবির জাহিদ বলেন, ‘সে বিএনপি পরিবারের সন্তান। সারা দেশের মানুষ জানে নিশিরাতে ভোটের এ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির কেউ অংশ নেবে না। সে যদি বিএনপিকে ভালবাসত, তাহলে নির্বাচনে অংশ নিত না।’
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক বলেন, ‘নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সিদ্বান্ত। বিএনপির সবাই এটা জানে। ঘরে ঘরে গিয়ে তো বলার কিছু নেই।’
আরও পড়ুন:চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্তে এক লাখ ৪৩ হাজার ১০০ ডলার ও ১০ হাজার ইউরোসহ এক পাচারকারীকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাঈদ মোহাম্মাদ জাহিদুর রহমান।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে অবৈধভাবে বৈদেশিক মুদ্রা পাচার করা হচ্ছে- এমন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সকাল ১০টায় সেখানে অভিযান চালানো হয়। এ সময় শেখ তপন নামে এক যাত্রীর ব্যাগ তল্লাশি করে অভিনব কায়দায় লুকানো এক লাখ ৪৩ হাজার ১০০ ইউএস ডলার ও ১০ হাজার ইউরো উদ্ধার করা হয়। বাংলাদেশী মুদ্রায় এর মূল্য প্রায় এক কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আটক তপন ঢাকার যাত্রাবাড়ী ভাঙ্গা প্রেস এলাকার শেখ জালাল উদ্দিনের ছেলে।
চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাঈদ মোহাম্মাদ জাহিদুর রহমান জানান, ওই ঘটনায় আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে দর্শনা থানায় মামলা দায়ের ও উদ্ধারকৃত বৈদেশিক মুদ্রা চুয়াডাঙ্গা ট্রেজারি অফিসে জমা দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভাটিয়ারী থেকে এক কেজি হেরোইন উদ্ধার হয়েছে। আর হেরোইন খুঁজে বের করেছে একটি কুকুর।
শনিবার সকালে ভাটিয়ারীর ওয়েল ফুড রেস্টুরেন্টের সামনে কুষ্টিয়া থেকে চট্টগ্রাম শহরের উদ্দেশে ছেড়ে আসা শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস থেকে এই হেরোইন উদ্ধার করা হয়। এ সময় হেরোইনের বাহককে ধরতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাসটির চালক ও তার সহযোগীকে আটক করা হয়েছে।
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ওই বাসে হেরোইনের চালান পাচার হচ্ছে- এমন তথ্য ছিল বিজিবির কাছে। সকালে পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহায়তায় ওই বাসে অভিযান পরিচালনা করে বিজিবি।
‘আমরাও অভিযানে ছিলাম। এ সময় বিজিবির প্রশিক্ষিত একটি কুকুরের সাহায্যে বাসে যাত্রীদের মালামাল রাখার স্থান থেকে একটি ব্যাগে থাকা পলিথিনের প্যাকেটজাত এক কেজি হেরোইন উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা হেরোইনের মূল্য প্রায় কোটি টাকা।’
চট্টগ্রাম-৮ বিজিবি’র অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহেদ মিনহাজ সিদ্দিকী বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই বাসে অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখানে হেরোইনের মালিক পাওয়া যায়নি। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাসের চালক ও চালকের সহযোগীকে আটক করা হয়েছে।’
মন্তব্য