যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ওপর আবার ক্ষোভ ঝাড়লেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, সে দেশের সরকার খুনিদের মানবাধিকার রক্ষায় ব্যস্ত।
তিনি এ-ও বলেছেন, আওয়ামী লীগ মানবাধিকার লঙ্ঘন করে না বরং নিশ্চিত করে। শুধু মানুষের জীবন বাঁচানো নয়, খাদ্য নিরাপত্তা, চিকিৎসা, শিক্ষা, বাসস্থান নিশ্চিত করার চেষ্টাও করে।
বিএনপি দেশকে সন্ত্রাসের রাজত্বে পরিণত করেছিল বলে অভিযোগ তার। বলেছেন, তারা দুর্নীতি, লুটপাট, টাকা পাচার, এতিমদের টাকা আত্মসাৎ করে দেশকে খুনের অভয়ারণ্য বানিয়েছিল।
বুধবার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে দলের এক আলোচনায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই আলোচনায় তিনি বলেন, ‘আমেরিকা ও কানাডা খুনিদের মানবাধিকার রক্ষায় ব্যস্ত। জাতির জনকের সাজাপ্রাপ্ত খুনিদের ফেরত দিতে বলি, তারা দেয় না। মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীর মানবাধিকার রক্ষা করছে তারা।’
গত তিন সপ্তাহের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ক্ষোভ জানালেন শেখ হাসিনা। গত ২৫ নভেম্বরের এক আলোচনায়ও তিনি বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফেরত না দেয়ায় দেশটিকে একহাত নেন।
সেদিন তিনি বলেন, ‘অবশ্য আমেরিকার কারবারই এ রকম। এখানে যখন একজন ড্রাগ ডিলার, যখন ড্রাগসহ তাকে ধরতে গেছে পুলিশ তাদের ওপর হামলা করেছে, র্যাব ধরতে গেছে হামলা করেছে। ১৪টা মামলার আসামি এবং ড্রাগসহ ধরা পড়ে তার গ্রুপ পুলিশের ওপর গুলি করে, র্যাবের ওপর গুলি করে, তারপর সে-ও গুলি খায়, মারা যায়। তার জন্য আমাদের দেশের কিছু লোক বিভিন্ন জায়গায় তদবির করে বেড়ায়।
‘অথচ এই ড্রাগ ডিলারদের খোঁজ আনতে যেয়ে, ধরতে যেয়ে আমাদেরই একজন এয়ার ফোর্সের অফিসার, তাকে ড্রাগ ডিলাররা অপহরণ করে নিয়ে যায়, অত্যন্ত নির্মমভাবে তাকে মারে, হত্যা করে।
‘এ ব্যাপারে তাদের কিন্তু উদ্বেগ নেই, মানবাধিকার সংস্থাগুলোরও উদ্বেগ নেই বা যারা আমাদের ওপর স্যাংশন দেয়, আমেরিকা, তাদেরও কোনো উদ্বেগ নেই, কারও কোনো উদ্বেগ নেই। কেমন একটা অদ্ভুত বিশ্ব পরিস্থিতি, সেটাই আমার অবাক লাগে।’
বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ছয় বছর পর দেশে ফিরে ইনডেমনিটি আইনের কারণে বিচার চাইতে না পারার কথা তুলে ধরে তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘তখন কি মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়নি?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মানবাধিকার নিয়ে তো আমি প্রশ্ন করতে পারি। কেন আমি বাবা-মার লাশ দেখতে পারিনি। কেন রেহানার পাসপোর্ট রিনিউ করেনি জিয়াউর রহমান? কেন আমাকে ছয় বছর দেশে আসতে দেয়নি? সে জবাব কী তারা দেবে? কার কাছে দেবে?’
আমেরিকাকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘কোন জঙ্গি, মাদক ব্যবসায়ী কারা মারা গেছে, সেটা নিয়ে ব্যস্ত তারা।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি ৮১তে ফিরে এসে আমার বাবা-মায়ের হত্যার বিচার চেয়ে মামলা করতে যাই, মামলা নিল না। ইনডেমনিটি আছে, বিচার চাইতে পারলাম না। ১৫ আগস্টে যারা স্বজন হারিয়েছি, তারা বিচার চাইতে পারিনি। এটা কোনো আইন? তারা জাতির জনকের খুনিদের দূতাবাসে চাকরি দিয়েছে।’
‘কোন মুখে গুমের কথা বলে বিএনপি’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বিএনপির লোকে গুম খুন নিয়ে কথা বলে। এ দেশে গুম শুরু করেছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। ফাঁসি দেয়ার সংস্কৃতিও তার। একদিনে দশজনকে ফাঁসি দিয়েছে। কত মানুষকে জিয়াউর রহমান হত্যা করেছে!
‘এক বিমান বাহিনীর ৫৬২ জন, সেনা ২ হাজার অফিসার ও সৈনিক। সে পরিবারগুলো আজও তাদের আপনজনের জন্য কেঁদে ফেরে। কই, মরদেহের খবরটাও তো পায়নি।
‘আওয়ামী লীগের বহু নেতা-কর্মীকে গুম করেছে। একই কায়দায় বারবার অসংখ্য মানুষ হত্যা করেছে। সশস্ত্র বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তাদের হত্যা করেছে। সেনাবাহিনী-বিমান বাহিনী থেকে অসংখ্য লোকজনকে গুম করেছে, বহু মানুষকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। তাদের লাশ মাটি চাপা দিয়ে লুকিয়ে ফেলা হয়েছে, তাদের আত্মীয়স্বজন আজও জানে না কোথায় সেসব লাশ।
‘দেশের প্রতিটা কারাগারে ফাঁসি দিয়েছে। ক্যান্টনমন্টে হত্যা করে লাশ লুকিয়েছে। এমনও শোনা যায়, কাটা চামচ দিয়ে নাস্তা করার সময়ও অনেকের ফাইল সই করে তাদের খুন করেছে। এরপর কোন মুখে বিএনপি গুম-খুন নিয়ে কথা বলে?’
‘আওয়ামী লীগ মানবাধিকার রক্ষা করে’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার এ দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে, চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে, শিক্ষা নিশ্চিত করেছে, আয়ু বৃদ্ধি করেছে।
‘অবকাঠামোর উন্নয়ন করেছে, গৃহহীনদের থাকার ঘর দিয়েছে, পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি ফেরাতে চুক্তি করেছে। ভারত থেকে ৬৪ হাজার শরণার্থী ফেরত এনে পুনর্বাসন করেছে। কাজেই আওয়ামী লীগ মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, এর সুরক্ষা দিয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি এ দেশকে সন্ত্রাসের রাজত্বে পরিণত করেছিল। তারা দুর্নীতি, লুটপাট, টাকা পাচার, এতিমদের টাকা আত্মসাৎ করেছে। দেশকে খুনের অভয়ারণ্য বানিয়েছিল।
‘দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সখ্য বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের সঙ্গে। শুধু তা-ই নয়, যারা আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল, খালেদা জিয়া তাদের প্রমোশন দেন, আর ৩ নভেম্বর জেলহত্যার রায়ের প্রাক্কালে আসামিকে চাকরি দিয়ে মালয়েশিয়ায় রাষ্ট্রদূত করে পাঠান।’
‘শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সম্মান করে না বিএনপি’
এই অভিযোগ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে বুদ্ধিজীবী দিবস আমরা পালন করি। বিএনপির কি কোনো কর্মসূচি আছে? সেটাতে কী বোঝা যায়। আবার জিয়া-এরশাদ-খালেদা স্বাধীনতাবিরোধীদের বিভিন্ন পদ দিয়েছে।’
বেগম খালেদা জিয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীদের প্রতি তাদের সম্মান আসবে কেমন করে? এইট পাস আর মেট্রিক ফেল, ইন্টারমিডিয়েট ফেল।’
পদ্মা সেতু জোড়াতালি দিয়ে বানানো হচ্ছে এবং তা ভেঙে পড়বে বলে বেগম খালেদা জিয়ার করা একটি মন্তব্যেরও সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘বিএনপি নেতারা কীভাবে পদ্মা সেতুতে চড়েন, তাদের কি লজ্জা হয় না?’
দুর্নীতির মামলায় বিএনপি নেত্রীর সাজার বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এক এগারোর সময় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছিল তারই নিজের লোক ফখরুদ্দিন-ইয়াজউদ্দিন, মঈন উদ্দিন।
‘এতিমের টাকা মেরে খেয়েছেন খালেদা জিয়া। এতিমদের টাকা তার একাউন্টে ছিল, এতিমরা এক টাকাও পায়নি।’
ক্ষমতায় থাকার সময় খালেদা জিয়া তার বিরুদ্ধে ১২ টি মিথ্যা মামলা দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ করেন শেখ হাসিনা।
আলোচনায় বক্তব্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, স্বাস্থ্য সম্পাদক রোকাইয়া সুলতানাও বক্তব্য দেন।
সভাটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।
আরও পড়ুন:প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানের গ্রেপ্তার বিষয়ে আমেরিকাসহ ১২টি দেশের বিবৃতির সমালোচনা করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, দূতাবাসগুলোর পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি তাদের ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছে। ভারতের দিকে তাকান, সেখানে কয়েকদিন ধরে বিবিসির কার্যালয়ে তল্লাশি করা হয়েছে, সেখানে কি বিভিন্ন দেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, বিবৃতি দিয়েছে ? দেয়া হয়নি। কারণ ভারত বড় দেশ, ভারতের শক্তি সামর্থ্য বেশি, সেজন্য সেখানে সেই সাহস দেখাতে পারেনি।
শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরে দেওয়ানজী পুকুর পাড়ের বাসায় সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সঙ্গে রাষ্ট্রের বিকাশ, গণতন্ত্রের বিকাশ জড়িত, গণতান্ত্রিক রীতিনীতি চর্চার আমাদের যে সংস্কৃতি সেটিকে আরও গভীরে পতিত করা নির্ভর করে। একইসঙ্গে আমাদের সম্মিলিত দায়িত্বশীলতাও আছে। স্বাধীনতার নামে যদি আমরা কেউ অপসাংবাদিকতা করি তাহলে দেশের আপামর জনগণ এবং সাংবাদিক সমাজ নিশ্চয় সেটিকে সমর্থন করে না। সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকতার নামে রাজনীতি করা সেটি যে সমীচীন নয় সেটিও নিশ্চয়ই আপনারা আমার সঙ্গে একমত হবেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে কূটনীতিকদের সহায়তা কামনা করছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা তো প্রথম থেকেই বলে আসছি তারা (বিএনপি) জনগণের কাছে যায় না। তারা বিদেশি কূটনীতিকদের ধারে গিয়ে পদলেহন করে। আমি আশা করেছিলাম, তারা দুস্থ মানুষের সঙ্গে ইফতার করবে, সেটি না করে ফাইভ স্টার হোটেলে বসে কূটনীতিকদের সঙ্গে ইফতার করেছে। সেখানে গিয়ে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের জন্য অনুনয়-বিনয় করেছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আসলে দোষটা কূটনীতিকদের চেয়েও আমাদের অনেকের অনেক বেশি। কারণ আমরা গিয়ে তাদের হাতে পায়ে ধরি একটু কিছু বলার জন্য। আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য। এটি আসলে দেশ বিরোধী এবং দেশের বিরেুদ্ধে ষড়যন্ত্রের শামিল।
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগর সভাপতি এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সফর আলী উপস্থিত ছিলেন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বাংলাদেশের অভিযাত্রায় প্রবাসীদের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন।
জাতিসংঘের সদরদপ্তরে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আয়োজিত ‘উন্নয়নের এজেন্ট হিসেবে প্রবাসী, অভিবাসী এবং বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মাসুদ বিন মোমেন প্রবাসীদের ক্ষমতায়নে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক মডেল উদ্ভাবনের পাশাপাশি আইসিটি শিক্ষার মাধ্যমে তাদের দক্ষতা উন্নয়নে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বিদেশের মাটিতে নিজ দেশের পণ্যের অন্যতম ভোক্তা হিসেবে প্রবাসীরা রপ্তানি বৃদ্ধি ও রপ্তানি বৈচিত্র্য আনয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তারা বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক মডেল তৈরিতে অবদান রাখে এবং নিজ দেশে তাদের পরিবার ও পরিচালিত ব্যবসায় অর্থ পাঠিয়ে সেখানকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করেন।’
দেশের আট বিভাগে বর্ষণের আভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, কোথাও কোথাও হতে পারে শিলা বৃষ্টি।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দেয়া হয়।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সীমান্তবর্তী বাংলাদেশে রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
দিনভর আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গা এবং রংপুর বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে পূর্বাভাসে জানানো হয়, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে। রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
ঢাকায় শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ১৪ মিনিটে সূর্য অস্ত যাবে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, শনিবার ঢাকায় সূর্যোদয় ৫টা ৫১ মিনিটে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থা নিয়ে বলা হয়, এ সময়ের শেষের দিকে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয় টাঙ্গাইলে। বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ ৩৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে। শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড কর হয় কিশোরগঞ্জের নিকলীতে।
আরও পড়ুন:সংবাদ প্রকাশের জেরে প্রথম আলোর প্রতিবেদককে মধ্যরাতে বাসা তুলে নিয়ে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা দায়ের এবং পত্রিকাটির সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি)।
একইসঙ্গে দৈনিক যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি মাহবুবুল আলম লাবলুর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি তুলেছে সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার সংগঠনটির দপ্তর সম্পাদক সিরাজুস সালেকিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৬ মার্চ প্রথম আলো অনলাইনের একটি প্রতিবেদন ফেসবুকে প্রকাশকে কেন্দ্র করে প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে গভীর রাতে বাসা থেকে তুলে নেয়া হয়। এর প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর রমনা থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে আনা হয়। পরবর্তীতে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মধ্যরাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের হয়।
১৪ মার্চ দৈনিক যুগান্তরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে মাহবুবুল আলম লাবলুর বিরুদ্ধে বুধবার সাইবার ট্রাইব্যুনাল চট্টগ্রামে মামলা করেন সরকার দলীয় অঙ্গ সংগঠনের এক নেতা।
এসব ঘটনার নিন্দা জানিয়ে আরএফইডি সভাপতি সাইদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মুকিমুল আহসান হিমেল বলেছেন, ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের লক্ষ্যেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নানা নিবর্তনমূলক আইন প্রণয়ন করা হয়েছে এবং হচ্ছে। এসব আইনের জেরে সাংবাদিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে সংকুচিত হয়ে পড়ছে। পাশাপাশি তাদের পেশাগত নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়েছে।’
দৈনিক প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে করা মামলার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত দু-তিনটির খবর জানি, আরও মামলা হচ্ছে বলে আমরা শুনছি।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সিআইডি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দিয়েছিল। এরপর বেশ কয়েকটি মামলা বিভিন্ন স্থানে হয়েছে সেসব মামলার ভিত্তিতে তাকে পুনরায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা এখন পর্যন্ত দুই-তিনটির খবর জানি।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি গতকাল স্পষ্ট করে বলেছি, একটা সংবাদের ভিত্তিতে দুই একটা মামলা হচ্ছে বলে আমি শুনেছি। কিন্তু মামলাগুলো কোথায় কখন হচ্ছে, সেটার বিস্তারিত তথ্য আমার কাছে এখন পর্যন্ত নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমি এখন বলতে চাই, প্রাথমিকভাবে যে তথ্য ৭১ টিভি ও প্রথম আলোসহ বিভিন্ন পত্রিকায় বা মিডিয়ায় আসছে, সেগুলো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিআইডি তাকে নিয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ছেড়েও দিয়েছিল। এরপর বেশ কয়েকটি মামলা বিভিন্ন স্থানে হয়েছে, সেসব মামলার ভিত্তিতে তাকে পুনরায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
যদি কেউ ভুল করে থাকে সেটি মামলা হবে, বিচারের আওতায় আসবে, কিন্তু যে পদ্ধতির ভেতর দিয়ে শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হলো সেজন্য গণমাধ্যম কর্মী হিসেবে আমরা ভয়ে থাকব কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনি ভয়ে থাকবেন কেন? আপনিতো কোনো দিন মিথ্যা তথ্য দেননি, বিভ্রান্তিকর নিউজ দেননি, কোনো দিন অসত্যকে সত্য করার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে কোনো সংবাদ প্রকাশ করেননি। তাহলে আপনি ভয়ে থাকবেন কেন। আপনি নির্ভয়ে চলবেন।’
আরও পড়ুন:আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগের তিন দিন ও পরের তিন দিন ফেরিতে সাধারণ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান পারাপার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার নৌ-মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নৌপথে স্টিমার, লঞ্চসহ জলযান সুষ্ঠুভাবে চলাচল, যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে যথাযথ কর্মপন্থা গ্রহণের লক্ষ্যে আয়োজিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বৈঠকে বলা হয়, সাধারণ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান পারাপার বন্ধ থাকলেও নিত্যপ্রয়োজনীয় ও দ্রুত পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার করতে পারবে। ঈদের আগের পাঁচ দিন এবং ঈদের পরের পাঁচ দিন সার্বক্ষণিক (দিন এবং রাত) সব বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া রাতের বেলায় স্পিডবোট চলাচল বন্ধ থাকবে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ বৈঠকে জানান, পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ রয়েছে। শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি রুটে মোটরসাইকেল পারাপারে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করা হচ্ছে। এপ্রিলে আবহাওয়া খারাপ থাকে; কালবৈশাখীর হওয়ার শঙ্কা থাকে। সে সময় সবাইকে আবহাওয়া বার্তা মেনে চলতে হবে। ঢাকা সদরঘাট এলাকায় যাত্রীদের চলাচলের সুবিধার জন্য ঢাকা সিটি করপোরেশন ও নৌ-পুলিশ আরও সতর্কতার সঙ্গে কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
এ ছাড়া সদরঘাট এলাকায় ছোট ছোট নৌযানে করে লঞ্চে যাতে যাত্রী ওঠানামা করতে না পারে, সে জন্য কঠোর নজরদারি করতে হবে। নদীবন্দরগুলোতে যাত্রী সেবার জন্য যেসব ওয়াশরুমের সুবিধা আছে, সেগুলোর সংখ্যা ও সেবার মান বাড়াতে হবে। পাটুরিয়া, দৌলতদিয়া, আরিচা, কাজিরহাট, হরিনা, আলুবাজার ফেরিরুটে ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হবে। সন্দ্বীপ ও হাতিয়ার মতো উপকূলীয় অঞ্চলে যাত্রী পারাপারে সি-ট্রাক চালু থাকবে। ফিটনেসবিহীন নৌযান যাতে চলাচল করতে না পারে, সে জন্য নৌপরিবহন অধিদপ্তর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। অভ্যন্তরীণ নৌপথে যাত্রীসাধারণের সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নে যাতায়াতের লক্ষ্যে ঢাকা ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন এলাকায় গার্মেন্টস ও নিটওয়্যার সেক্টরের নিয়োজিত কর্মীদের এলাকাভিত্তিক পর্যায়ক্রমে ছুটি প্রদানের জন্য বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে নৌ-সেবাটা নিতে পারে, সে বিষয়ে আমরা আন্তরিক। পদ্মা সেতু আমাদের অনুভূতির জায়গাটা দখল করে নিয়েছে। অনেকে মনে করেছিল পদ্মা সেতু হয়ে গেলে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষরা আর লঞ্চ ব্যবহার করবে না। এটা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। নৌপথে আগ্রহ কমে যায়নি বরং আগ্রহ বেড়েছে। সাধারণ মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে নৌ-সেবা নিতে পারে সে লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। সেবা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরও পড়ুন:‘বাসন্তীকে জাল পরিয়ে বানোয়াট সংবাদ পরিবেশনের মতো একটি শিশুকে ১০ টাকা দিয়ে তার নাম ব্যবহার করে অসত্য লিখে স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করা কি অপরাধ নয়’- এমন প্রশ্ন রেখেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘এর মাধ্যমে অবশ্যই রাষ্ট্রের ওপর আঘাত হানা হয়েছে।’
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) প্রকাশিত ‘সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনে বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
স্বাধীনতা দিবসে দৈনিক প্রথম আলোর অনলাইন ভার্সনে ও ফেসবুকে দেয়া একটি পোস্ট প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তথ্যমন্ত্রী এমন প্রশ্ন রাখেন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক আহমেদ, পিআইবি’র মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, গ্রন্থকার ও গবেষক পপি দেবী থাপা প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমার প্রশ্ন- স্বাধীনতা দিবসে স্বাধীনতাকে এভাবে কটাক্ষ করে সংবাদ প্রচার করাটা সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতার পরিপন্থী নয়? সে জন্যই এটার প্রচণ্ড সমালোচনা হয়েছে। এটি ঠিক নয় বলেই অনলাইনে আপলোড হওয়ার পর সেটি তারা সরিয়ে ফেলেছিল। কিন্তু সেটির স্ক্রিনশট তো বিভিন্ন জায়গায় ছিলো। অনেকে শেয়ার করেছে। সেগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়িয়েছে, ঘুরছে।
‘এসবের পরিপ্রেক্ষিতে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা মামলা করেছেন। আর মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। পুলিশের তদন্তে সব বেরিয়ে আসবে এবং আইনের গতিতে আইন চলবে।’
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার আগে বাসন্তীর গায়ে জাল পরিয়ে ছবি তুলে সেটি প্রকাশ করা হয়েছিল। তখন জালের দাম কিন্তু কাপড়ের দামের চেয়ে বেশি ছিলো। এখনো জালের অনেক দাম। কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে বাসন্তীর গায়ে জাল পরিয়ে ছবি তুলে প্রকাশ করা হয়েছিল।
‘অনেকে বলছে, ২৬ মার্চে প্রথম আলোর এ ঘটনা বাসন্তীকে জাল পরানোর মতোই। রাষ্ট্র, সমাজ, স্বাধীনতার বিরুদ্ধে এ ধরনের অসত্য সংবাদ পরিবেশন সর্বমহলের মতে একটি অপরাধ, ডিজিটাল অপরাধ।’
অপরাধ আর সাংবাদিকতা এক জিনিস নয় উল্লেখ করে মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘কোনো সাংবাদিক যদি অপরাধ করে তার কি শাস্তি হবে না? কেউ যদি অপসাংবাদিকতা করে, স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করে এবং একটি ছেলের হাতে ১০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে তার নামে অসত্য লেখে, চাইল্ড এক্সপ্লয়টেশন করে, সেটার কি বিচার হবে না? আমরা কি কেউ বিচারের ঊর্ধ্বে, আইনের ঊর্ধ্বে? তা তো নয়।’
এ বিষয়ে বিএনপি’র বিবৃতি দেয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনো কিছু পেলেই বিএনপি বিবৃতি দেয়। এটি সেই অপচেষ্টা ছাড়া অন্য কিছু নয়।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে মতপ্রকাশের যে স্বাধীনতা সেটি অনেক উন্নয়নশীল দেশে নেই। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন হচ্ছে দেশের সব মানুষের ডিজিটাল নিরাপত্তা দেয়ার জন্য, সাংবাদিকদেরও ডিজিটাল নিরাপত্তা দেয়ার জন্য।
‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করে অনেক সাংবাদিকও মামলা করেছেন। ক’দিন আগে একজন নারী সাংবাদিক বিদেশ থেকে চরিত্র হননের দায়ে আরেক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।’
বিশ্বের দেশে দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের উদাহরণ দিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে সাইবার সিকিউরিটি ল’জ অ্যান্ড রেগুলেশন ২০২২, যুক্তরাষ্ট্রে সাইবার ল’ অ্যান্ড পানিশমেন্টসহ বিশ্বের বহু দেশে এ ধরনের আইন রয়েছে।
‘যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের অপরাধের শাস্তি ২০ বছর কারাদণ্ড। সেখানে ডিজিটাল মাধ্যমে গুজব ছড়ানোর কারণে যদি কারো মৃত্যু হয় তবে সেই অপরাধের শাস্তি হচ্ছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। আমাদের দেশের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য অনেক দেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনেক বেশি কঠিন।’
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এ ঘটনায় স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করা হয়েছে। জাতীয় স্মৃতিসৌধ- যেটি আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক, স্বাধীনতা দিবসে সেখানে একটি ছেলেকে ১০ টাকা দিয়ে ফুঁসলিয়ে তাকে দিয়ে কথা বলানোর চেষ্টা করা হয়েছে এবং সে যা বলেনি তা প্রচার করা হয়েছে। এর মাধ্যমে অবশ্যই রাষ্ট্রের ওপর আঘাত হানা হয়েছে।’
এর আগে ‘সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনে বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন তথ্যমন্ত্রী। এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধুর কর্ম, বঙ্গবন্ধুর আন্দোলনকে সমর্থন করে ১৯৭১ সালের জানুয়ারি থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের সংকলন প্রকাশ করার জন্য পিআইবিকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, ‘আশা করি এই সংকলনের মাধ্যমে সবাই বঙ্গবন্ধুর অজানা আরও অনেক তথ্য জানতে পারবে। এই সংকলন প্রকাশিত না হলে এই কথাগুলো হারিয়ে যেত। স্বাধীনতার আগেও বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা, স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলনকে সমর্থন করে প্রকাশিত বঙ্গবন্ধুর ছবিসহ বিজ্ঞাপনের সংকলন একটি অসাধারণ প্রকাশনা।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য