বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের পর দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশি তাণ্ডব, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনাকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস উল্লেখ করে নিরপেক্ষ ও বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা।
সোমবার বিকেলে রাজনৈতিক জোটটির নেতারা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিদর্শন করেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু , সহ-তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল, দপ্তরে সংযুক্ত আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোর্শেদ আলম গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের বিএনপি কার্যালয়ে স্বাগত জানান।
বিএনপির ক্ষতিগ্রস্ত কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিদর্শন শেষে মঞ্চের নেতারা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। তারা এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
নেতারা অবিলম্বে খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাসসহ আটক সব নেতা-কর্মীর মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর বলেন, ‘বিএনপি অফিসে পুলিশের ভাঙচুরের নিন্দা জানাই। আশা করি, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মুক্তির পর প্রধানমন্ত্রী তাকে ফোন করে এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করবেন। এ ঘটনার নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়া দরকার।’
এ সময় তিনি সংসদের অন্য সদস্যদেরও পদত্যাগের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘এই সরকারকে অবিলম্বে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। নয়তো সবার ওপর আঘাত আসবে।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যেভাবে হামলা চালিয়ে লন্ডভন্ড করা হয়েছে, তা একেবারেই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। তারা জিয়ার ম্যুরাল ভাঙচুরের চেষ্টা করেছে।
'আওয়ামী লীগ যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু করছে, তা ভয়াবহ। তারা দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। আসলে সরকারের পায়ের তলায় মাটি নেই। তাদের অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।’
এ সময় জাতীয় গণফ্রন্টের টিপু বিশ্বাস বলেন, ‘যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন অনিবার্য। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব বন্দিকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।’
নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘বিএনপির নেতা-কর্মীরা যথেষ্ট ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন। তারা শান্তিপূর্ণভাবে গণসমাবেশ শেষ করেছেন। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ। আজ পুলিশ হলো ডাকাত। তারা যা করেছে, এটা নজিরবিহীন।
'জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভাঙা হলো। এটা কোনো সভ্য দেশে ভাবা যায়? এই ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে গণ-অভ্যুত্থান ঘটিয়ে সরকারের পতন ঘটাতে হবে।’
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক বলেন, ‘বিএনপির অফিসে যারা হামলা ও তছনছ করেছে তাদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে হবে। দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
'বিএনপির প্রত্যেকটি নেতা-কর্মীর প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে সরকারের প্রতি আহ্বান আপনারা নিজেরাও দুঃখ প্রকাশ করুন। তা না হলে গণজাগরণের মধ্য দিয়েই আপনাদের বিদায় হবে।’
ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, ‘আমরা সংহতি জানাতে এসেছি। যা দেখলাম '৭১-এর তাণ্ডবলীলাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এই সরকারের পতন ছাড়া দেশের মানুষের মুক্তি আসবে না। খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাসসহ সব বন্দির মুক্তি দাবি করছি।’
অন্যদের মধ্যে গণতন্ত্র মঞ্চের হাসিব উদ্দিন, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের ফয়জুল হাকিম লালা, জাসদের শহীদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ সামনে রেখে বুধবার সকাল থেকে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ও সংলগ্ন এলাকায় জড়ো হচ্ছিলেন দলটির নেতা-কর্মীরা, যাদের কাছাকাছি ছিলেন পুলিশের বিপুলসংখ্যক সদস্য।
পরে পুলিশ সড়কে সমবেত বিএনপি নেতা-কর্মীদের সরিয়ে দিতে গেলে দুই পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। এতে মকবুল হোসেন নামের একজন প্রাণ হারান। তাকে নিজেদের কর্মী বলে দাবি করেছে বিএনপি।
সংঘর্ষের পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তল্লাশি চালিয়ে দলটির অনেক নেতা-কর্মীকে আটক করে পুলিশ। সেখান থেকে চাল, খিচুড়ি, ১৫টি ককটেলের পাশাপাশি বোতলজাত পানি ও টাকা উদ্ধারের কথা জানায় বাহিনীটি।
পুলিশ শুরুতে নয়াপল্টন এলাকা থেকে বিএনপির ৩০০ নেতা-কর্মীকে আটকের কথা বললেও দলটির দাবি, সংখ্যাটি ছয় শতাধিক।
সংঘর্ষের খবরে বিকেলে দলীয় কার্যালয়ে এসে ঢুকতে না পেরে ফুটপাতে বসে কয়েক ঘণ্টা পর চলে যান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
পরের দিন সকালে বিচারিক আদালতে নাশকতার মামলায় হাজিরা দিয়ে বিজয়নগর হয়ে নয়াপল্টন যাওয়ার পথে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন তিনি।
সংঘর্ষের পর ক্রাইম সিন ঘোষণা করা কার্যালয়টি ঘিরে রেখেছিল পুলিশ।
আরও পড়ুন:নোয়াখালীর সেনবাগে বাড়িঘরে হামলা ভাংচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় করা মামলায় এক ইউপি সদস্যকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
নোয়াখালী মুখ্য বিচারিক আদালতের বিচারক ইকবাল হোসাইনের আদালত মঙ্গলবার বিকেলে এ আদেশ দেন।
এর আগে দুপুরে তাকে উপজেলার কেশারপাড় ইউনিয়ন থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার ৪৮ বছর বয়সী আলেক হোসেন উপজেলার কেশারপাড় ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য।
সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার বরাতে তিনি বলেন, ‘ইউপি নির্বাচন নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে সোমবার রাতে উপজেলার কেশারপাড় ইউপি আবদুস সাত্তার মেম্বারের বাড়িতে আলেক মেম্বারের নেতৃত্বে ১৪/১৫ জন দুর্বৃত্ত আগ্নেয়াস্ত্র ও দা-ছেনী, লাঠিসোঠা নিয়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে করে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার ভুক্তভোগী ফারুক হোসাইন বাদী হয়ে ইউপি সদস্য আলেক হোসেনসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫/৬ জনের নামে থানায় মামলার পর পুলিশ দুপুরে ইউপি সদস্য আলেক হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।
তিনি আরও বলেন, ‘গ্রেপ্তার আলেককে নোয়াখালী মুখ্য বিচারিক আদালতের বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।’
আরও পড়ুন:ঢাকার কামরাঙ্গীর চরের রসুলপুরে এক মাদ্রাসা ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের পর সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির সময় তার পায়ুপথে অস্বাভাবিকতার চিহ্ন পেয়েছে পুলিশ। এই শিশু শিক্ষার্থী কারও দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে।
সোমবার রাতে তাকে ঘরের ভেতর ঝুলন্ত অবস্থায় পায় পরিবারের সদস্যরা। পরে মধ্যরাতে তার মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
নিহত ১৪ বছর বয়সী ওই শিক্ষার্থী পড়াশোনা করতেন কামরাঙ্গীর চরে নুরিয়া মাদ্রাসায়। এই মাদ্রাসা থেকে হাফেজ হয়ে গত শুক্রবার ওয়াজ মাহফিলে পাগড়ি পান। পাগড়ি গ্রহণ শেষে সে বাসায় ফেরে। এরপর থেকে ওই শিক্ষার্থী বাসাতেই ছিল।
কামরাঙ্গীর চর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, গতকাল ওর মাদ্রাসার যাওয়ার কথা। কিন্তু যেতে চাইনি। রাতে একটি কক্ষে দরজা বন্ধ করে অনেকক্ষণ ভেতরে থাকলে পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হয়। ভেতরে তাকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
শিশু শিক্ষার্থীর পায়ুপথে অস্বাভাবিকতা দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন ওসি মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, আত্মহত্যা করলে পায়ুপথে বীর্য ও মল আসে। এই ভিকটিমের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এর বাইরে তার পায়ুপথ স্ফিত ছিল। যেটা দেখে আমাদের সন্দেহ হয়েছে। আমরা মরদেহ ময়নাতদন্ত করিয়েছি। ডাক্তার কোনো কিছু জানাননি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য আমরা অপেক্ষা করছি।
এ ঘটনায় এরইমধ্যে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে, তবে তদন্তে যৌন নির্যাতন বা অন্য কিছু পাওয়া গেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওসি মোস্তাফিজুর।
আরও পড়ুন:ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবারও আদালত বর্জন শুরু করেছেন আইনজীবীরা। দুইজন বিচারককে প্রত্যাহারের দাবি পূরণ না হওয়ায় এবার দুটি নয়, সব আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার জেলা আইনজীবী সমিতির এক সাধারণ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এবারের আদালত বর্জনের সময়সীমা দেয়া হয়েছে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের অপসারণ দাবিতে আন্দোলন করছেন আইনজীবীরা।
আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানভীর ভূঞা আদালত বর্জনের এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১ জানুয়ারি থেকে পর্যায়ক্রমে আইনজীবীদের আদালত বর্জনের কর্মসূচি শুরু হয়। প্রথমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই বিচারকের আদালত ও ৫ জানুয়ারি থেকে সব আদালত বর্জনের কর্মসূচি পালন করেন আইনজীবীরা। এতে জেলার বিচার কার্যক্রম অচল হয়ে পড়ে।
রাজধানীতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠকের পর ১৫ জানুয়ারি থেকে আইনজীবীরা জেলা ও দায়র জজ শারমিন নিগার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ব্যতীত অন্যান্য আদালত বর্জন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন। তবে ওই দুই আদালতের বিচারককে অপসারণে দাবিতে তারা ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আল্টিমেটাম দেন। মঙ্গলবার সেই সময়সীমা শেষে আইজীবী সমিতির সভায় ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বান্দরবানের থানচির দুর্গম পাহাড়ে জঙ্গিদের সঙ্গে র্যাবের গোলাগুলির পর ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র ১৭ সদস্য ও পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের ৩ সদস্যকে বান্দরবানের থানচি উপজেলার রেমাক্রি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ দেশি ও বিদেশি অস্ত্র, বোমা তৈরির সরঞ্জাম, গোলাবারুদ ও ৭ লাখ টাকা জব্দ করা হয়।
মঙ্গলবার রাত শোয়া ৯টার দিকে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখা থেকে এক খুদে বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়। বলা হয়, বুধবার বেলা পৌনে ১১টায় বান্দরবান র্যাব ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
মঙ্গলবার ভোরে ওই অভিযান শুরুর পর দুপুর পর্যন্ত ৫জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানকালে র্যাবের ৮ থেকে ৯ জন সদস্য আহত হয়েছেন।
অভিযান চলাকালেই বিকেল ৩টার দিকে থানচির লিক্রি সীমান্ত সড়কে তমা-তুঙ্গী পর্যটন স্পট এলাকায় সাংবাদিকদের সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে র্যাবের প্রধান এম খুরশীদ হোসেন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘২০২২ সালের আগস্ট মাসে কুমিল্লা থেকে ৮ তরুণ নিখোঁজ হয়। নিখোঁজদের পরিবার কুলিল্লা সদর থানায় জিডি করে। ওই জিডির সূত্র ধরে র্যাব তাদের খুঁজে বের করতে গিয়ে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সন্ধান পায়।
‘পরে আমরা জানতে পারি নিখোঁজদের নিয়ে জঙ্গি সংগঠনটি পাহাড়ে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা ৩ অক্টোবর বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান শুরু করি। এখন পর্যন্ত আমরা ৩১ জন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি।’
র্যাব প্রধান বলেন, ‘আমরা তথ্য পেলাম থানচিতে জঙ্গিরা আবার জড়ো হচ্ছে। আজ (মঙ্গলবার) সকালে তাদের সঙ্গে আমাদের সংঘর্ষ হয়। এখনও গোলাগুলি চলছে। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত পাঁচ জঙ্গি গ্রেপ্তার হয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না।’
তিনি বলেনম ‘আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ফায়ার করতে করতে জঙ্গিদের গোলাবারুদ শেষ হওয়ার অপেক্ষায় আছি আমরা। উদ্দেশ্য, ওদেরকে যেন অক্ষত অবস্থায় আমরা গ্রেপ্তার করতে পারি। একজন জঙ্গি থাকলেও আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
এই অভিযানে এখন পর্যন্ত কোন নিহতের ঘটনা আছে কি না-সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে র্যাব প্রধান বলেন, ‘আমাদের ৮ থেকে ৯ জন সদস্য আহত হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি।’
আরও পড়ুন:মাদারীপুরের কালকিনিতে ধর্ষণের পর ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন এক প্রবাসীর স্ত্রী।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। পরে দুপুরে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পুলিশের ভাষ্য, কালকিনির পৌর এলাকার আয়নাল খানের ছেলে শফিক খান (২০) স্থানীয় এক প্রবাসীর স্ত্রীকে উত্যক্ত করতেন। প্রায় ৬ মাস আগে অভিযুক্ত ভুক্তভোগীকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যান। বিষয়টি ভুক্তভোগীর পরিবার মান-সম্মানের ভয়ে এতদিন গোপন রাখার চেষ্টা করলেও একপর্যায়ে ওই নারীর অন্তঃসত্ত্বা খবরটি পুরো এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। পরে ওই নারী কালকিনি থানায় শফিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন বলেন, থানায় ধর্ষণ মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেফতার করার চেষ্টা অব্যহত আছে।
ফেনীর দাগনভূঞায় প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের মামলায় যুবলীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের উত্তর আলীপুর এলাকা থেকে সোমবার বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই গৃহবধূ আগেরদিন তার বিরুদ্ধে মামলা করেন।
গ্রেপ্তার দেলোয়ার হোসেন ইউনিয়নটির ৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।
দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান ইমাম নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, চার বছর আগে দেলোয়ার হোসেন স্থানীয় এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করে। ওই ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে এবং দুই সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দিয়ে এতদিন ধরে তাকে ধর্ষণ করে আসছিল।
ওই গৃহবধূ জানান, ভিডিওর ভয় দেখিয়ে শুধু ধর্ষণ নয়, নানা অজুহাতে বেশ কয়েকবার মারধরও করেন ওই নেতা। গত দুই মাস আগে প্রবাস ফেরত স্বামীর কাছে বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করলেও পরে বাধ্য হয়ে তার স্বামী ও ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে বিষয়টি জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামী প্রবাসে থাকায় ঘরে আমার শ্বাশুড়ি ও দুই সন্তান নিয়ে থাকি। একদিন দেলোয়ার ঘরে ঢুকে আমাকে ধর্ষণ করে। পরে তাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেও পারিনি। এরপর থেকে ফেসবুকে ছবি ছড়িয়ে দেয়ার ভয় ও পরিবারের সবাইকে হত্যার হুমকি দেয় সে।
‘এর প্রতিবাদ করলে মারধর করত। সম্প্রতি আমার স্বামী দেশে আসলে আবারও উৎপাত শুরু করলে বিষয়টি স্বামীকে জানাই। রাতের বেলায় ঘরের আশেপাশে দেলোয়ার ঘুরাফেরা করে। তার প্রস্তাবে রাজি না হলে মোবাইল ফোনে স্বামীকে মেরে আমাকে বিধবা করার হুমকি দেয়।’
ওই নারীর প্রবাস ফেরত স্বামী বলেন, ‘রাতের বেলায় কয়েকবার তাকে ধাওয়া করেছি। পরিবার-পরিজন নিয়ে আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছি।’
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, গৃহবধূ নির্যাতনের ঘটনাটি ভুক্তভোগীর পরিবার আমাকে জানিয়েছে। সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্রও ছাড় দেয়া হবে না।
ওসি হাসান ইমাম বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা যে যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দরকার আমরা সেটি করব। অপরাধী যে দলের রাজনৈতিক পরিচয় দিক না কেন ছাড় দেয়া হবে না।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র এবং কিশোর গ্যাং গ্রুপের ২০ সদস্যকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর, হাজারীবাগ, বসিলা এবং কাওরান বাজার এলাকায় সোমবার বিকেল ৪টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-২-এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক ফজলুল হক জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা রাজধানীর মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, শ্যামলী, ফার্মগেট, চাঁদ উদ্যান, ঢাকা উদ্যান, বসিলা এবং কাওরান বাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় সংঘবদ্ধভাবে ছিনতাই ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে থাকে। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময় তারা এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতে দেশীয় অস্ত্র দেখিয়ে এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।
তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তার এসব ব্যক্তিদের নামে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মাদক, দস্যুতা, ছিনতাই, অস্ত্র ও ডাকাতির মামলা রয়েছে।
মন্তব্য