বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাত দলের রাজনৈতিক জোট গণতন্ত্র মঞ্চ।
রাজধানীর তোপখানা রোডের শিশু কল্যাণ পরিষদ ভবনের হলরুমে সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জোটের শরিক দল গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
সংবাদ সম্মেলনে সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবিসংবলিত ১৪ দফা পেশ করেন গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুর ২টায় আমরা বিএনপি পার্টি অফিস পরিদর্শনে যাব। বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনের ডাক দিয়ে ১০ দফা দাবি দিয়েছে। সেখানে বিরোধী দলগুলোকে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।’
গণতন্ত্র মঞ্চ বিএনপির দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করবে নাকি আলাদা কর্মসূচি দেবে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমরা বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের বিষয়ে আগেই আলোচনা শুরু করেছি। আলোচনায় আমরা আমাদের ১৪ দফা দাবি তাদের কাছে দিয়েছি। বিএনপি এর আগে তাদের ১০ দফা আমাদের দিয়েছে। উভয়ের যে অবস্থান সেখান থেকে একটি ন্যূনতম ঐক্যের জায়গা আমরা তৈরি করতে আগ্রহী।’
তিনি বলেন, ‘সেই ন্যূনতম কর্মসূচি বা দাবিনামার ভিত্তিতে আমরা একটি যুগপৎ আন্দোলন তৈরি করতে চাই। সেই লক্ষ্যে আমরা অতিদ্রুত বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের মধ্যে একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইতোমধ্যে সেই বিষয়ে কাজ কিছুটা এগিয়েছে। আপনারা শিগগিরই তা জানতে পারবেন।
‘লিয়াজোঁ কমিটি যুগপৎ আন্দোলনের একটি সাধারণ কর্মসূচি কিংবা দাবিনামা সেটা তৈরি করবে এবং পরবর্তীকালে যুগপৎ আন্দোলনের যে মাঠের কর্মসূচি, সেটা এই লিয়াজোঁ কমিটি থেকে আসতে পারে। শিগগিরই এই বিষয়ে অগ্রগতি আপনারা জানতে পারবেন।’
১৪ দফা
১. বর্তমান সংসদ বিলুপ্ত করে সরকারের দ্রুত পদত্যাগ।
২. অবাধ, নিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য, স্বাধীন, দক্ষ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। এই নির্বাচন কমিশন অবাধ নির্বাচনের পূর্বশর্ত হিসেবে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করতে নির্বাচনে টাকার খেলা ও মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ, আরপিও সংশোধন, প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক পরিবর্তন, জনগণের বাঁচার জরুরি সংকটের সমাধান, জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতি বাতিল করে পেপার ব্যালটের মাধ্যমে ভোটের সুষ্ঠু ব্যবস্থা নিশ্চিত এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের ব্যবহার বাতিল করবে।
রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের লক্ষ্যে সাংবিধানিক ক্ষমতা কাঠামো এবং রাষ্ট্র পরিচালনার আইনকানুন সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য তৈরিতে সহায়তা করবে, যাতে করে পরবর্তী নির্বাচিত সংসদ গণতান্ত্রিক সংস্কারের কার্যকর ব্যবস্থা নেয়।
৩. (ক) প্রধানমন্ত্রীকেন্দ্রিক কেন্দ্রীভূত ক্ষমতা ব্যবস্থার বদল ঘটিয়ে সংসদ, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার পৃথকীকরণ ও যৌক্তিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা। ন্যায়পাল ও সাংবিধানিক আদালত প্রতিষ্ঠা এবং নির্বাচন কমিশনসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য সাংবিধানিক কমিশন গঠনের আইন প্রণয়ন।
(খ) সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের সংস্কার করে সরকার গঠনে আস্থা ভোট ও বাজেট পাস ছাড়া সব বিলে স্বাধীন মতামত ও জনগণের প্রতিনিধিত্ব করার অধিকার নিশ্চিত করা।
(গ) প্রত্যক্ষ নির্বাচনের পাশাপাশি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি ও দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট ব্যবস্থা প্রবর্তন।
(ঘ) প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার যৌক্তিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা, বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ, শক্তিশালী ও জবাবদিহিমূলক স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাসহ বিকেন্দ্রীকৃত শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, বিচার বিভাগের পরিপূর্ণ কার্যকর স্বাধীনতা নিশ্চিতসহ গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠা।
(ঙ) রাষ্ট্রের হিসাব ও আর্থিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোর আইন সংস্কার।
৪. বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সাজা বাতিল; সব ‘হয়রানিমূলক’ মামলা প্রত্যাহার ও সব রাজনৈতিক বন্দির দ্রুত মুক্তি।
৫. সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে সভা, সমাবেশ, মিছিলে বাধা সৃষ্টি না করা। বিরোধী দলগুলোর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশি বাধা, হামলা, গ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলা বেআইনি হিসেবে গণ্য করা। পেশাগত দায়িত্বের বাইরে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দলীয় বাহিনী হিসেবে ব্যবহার না করা।
রাষ্ট্রের গোয়েন্দা বাহিনীগুলোকে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের হয়রানির উদ্দেশ্যে ব্যবহার না করা। বিরোধী কণ্ঠস্বরকে দমন করতে নতুন কোনো মামলা না করা, গায়েবি মামলায় বিরোধী দলগুলোর নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার না করা।
৬. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ মৌলিক মানবাধিকার হরণকারী সব কালাকানুন বাতিল করা। গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা। এর আগে সংগঠিত সব বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, খুনের যথাযথ তদন্ত এবং দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করা। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশি ব্যবস্থার নামে শ্রমিক আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের হয়রানি বন্ধ করা।
৭. (ক) জরুরি ভিত্তিতে সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে খাদ্যপণ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনা। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার সিন্ডিকেটমুক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে গ্রাম-শহরের গরিব ও স্বল্প আয়ের পরিবারগুলোর জন্য রেশনিং ব্যবস্থা ও নগদ অর্থ দেয়ার ব্যবস্থা চালু।
(খ) গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানিসহ সেবামূলক খাতগুলোতে ‘স্বেচ্ছাচারী পন্থায়’ মূল্যবৃদ্ধির সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করা। বিদ্যুৎ খাতে রেন্টাল, কুইক রেন্টাল প্রকল্প ও এ খাতে দেয়া দায়মুক্তি আইন অবিলম্বে বাতিল করা।
(গ) সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত, সুলভে গণপরিহন ব্যবস্থা ও বাসাভাড়ার যৌক্তিক সীমা নির্ধারণ।
৮. বিগত বছরগুলোতে, বিশেষ করে গত ১৫ বছর ধরে বিদেশে অর্থপাচার, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত, শেয়ার মার্কেট, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতসহ রাষ্ট্রীয় সব ক্ষেত্রে সংগঠিত দুর্নীতি ও এর দায়দায়িত্ব চিহ্নিত করতে শক্তিশালী কমিশন গঠন। দুর্নীতি, লুটপাট ও অর্থ পাচারে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে অর্জিত অর্থসম্পদ বাজেয়াপ্ত ও পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ।
৯. গত ১৫ বছরে ‘গুমের শিকার’ সব নাগরিককে উদ্ধার। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক হস্তক্ষেপমুক্ত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশনের মাধ্যমে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতন-নিপীড়নের প্রতিটি ঘটনার বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করা।
১০. সাম্প্রদায়িক উসকানি সৃষ্টি করে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, উপাসনালয় ভাঙচুর এবং তাদের সম্পত্তি দখলের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ। তাদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
১১. (ক) স্বাস্থ্যকে সম্পদ হিসেবে বিবেচনা ও ‘বিনা চিকিৎসায় কোনো মৃত্যু নয়’ নীতির ভিত্তিতে গোটা স্বাস্থ্য খাত ঢেলে সাজানো। স্বাস্থ্য খাতে রাষ্ট্রীয় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি ও বেসরকারি খাতে মুনাফার লাগাম টেনে প্রয়োজনীয় সংস্কার।
(খ) ‘শিক্ষা অধিকার, বাণিজ্যিক পণ্য নয়’ নীতির ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে সবার জন্য একই মানের শিক্ষা নিশ্চিত, মাতৃভাষায় শিক্ষাকে অগ্রাধিকার প্রদান। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে জিডিপির ন্যূনতম ৬ শতাংশ বরাদ্দ দেয়া।
১২. রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি, কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি এবং বেকারদের আত্মকর্মসংস্থানের বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ।
১৩. কৃষকের ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত, পাটকল, চিনিকলসহ বন্ধ কলকারখানা চালু, শ্রমিক ও শ্রমজীবীদের বাঁচার মতো মর্যাদাপূর্ণ মজুরি ঘোষণা এবং ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত করা।
১৪. জাতীয় স্বার্থ, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সমতা, ন্যায্যতা, পারস্পরিক স্বার্থের স্বীকৃতি ও স্বীকৃত আন্তর্জাতিক বিধিবিধান অনুযায়ী দ্বিপক্ষীয় সমস্যার সমাধান।
আরও পড়ুন:রাজধানীর পল্টন থানায় করা মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে এবার স্থায়ী জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ রায় দেয়।
আদালতে বিএনপির দুই নেতার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। তার সঙ্গে ছিলেন আসাদুজ্জামান, সগীর হোসেন লিয়ন ও আনিছুর রহমান রায়হান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনির।
এর আগে গত ৩ জানুয়ারি দুই নেতাকে জামিন দিয়ে রুল জারি করেছিল একই আদালত।
এরপর এ আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে আপিল করলে আপিল বিভাগ দুজনের জামিন বহাল রেখে রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়।
আপিল বিভাগের এ নির্দেশের আলোকে রুল শুনানি শেষ করে আদালত বিএনপির দুই নেতাকে স্থায়ী জামিন নিয়ে রুলটি নিষ্পত্তি করে দেয়।
এ মামলায় এক মাস কারাভোগের পর গত ৯ জানুয়ারি অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে মুক্তি পান মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাস।
গত বছরের ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশ সামনে রেখে ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পরের দিন ৮ ডিসেম্বর রাতে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে বাসা থেকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের সংঘর্ষের ঘটনায় পল্টন থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
আরও পড়ুন:বন্যাসহ বিভিন্ন কারণে পিছিয়ে যাওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় কমেছে পাসের হার ও জিপিএ ফাইভ।
গত বছর অনুষ্ঠিত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আগেরবার এ হার ছিল ৯৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। সে দিক থেকে গত বছর অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় পাসের হার কমেছে ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ।
এইচএসসি ও সমমানে এবার জিপিএ ফাইভ পেয়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৮২ পরীক্ষার্থী। আগেরবার এ সংখ্যাটি ছিল ১ লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯। এর মানে হলো এবার জিপিএ ফাইভ কম পেয়েছে ১২ হাজার ৮৮৭ শিক্ষার্থী।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চামেলী হলে বুধবার বেলা ১১টা ৪৬ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে বেলা সোয়া ১১টার পর পরীক্ষার ফলের অনুলিপি প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। পরে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি ও মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা ফল হস্তান্তর করেন।
দুপুরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে ফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান।
মন্ত্রী জানান, এইচএসসিতে ৯ বিভাগে পাসের হার ৮৪ দশমিক ৩১ শতাংশ। মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিমে এ হার ৯২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। অন্যদিকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৯৪ দশমিক ৪১ শতাংশ।
২০২২ সালে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ পরীক্ষার্থী অংশ নেন। তাদের মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ২২ হাজার ৭৯৬। ছাত্রীর সংখ্যা ৫ লাখ ৮০ হাজার ৬১১।
আরও পড়ুন:তিনটি বই না রাখার শর্তে অমর একুশে বইমেলায় আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেয়।
আপত্তি থাকা তিনটি বই আদালতে জমা এবং বইগুলো বিক্রি করা হবে না মর্মে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয় মঙ্গলবার। এক দিন পর আদালত শুনানি শেষে স্টল বরাদ্দের নির্দেশ দেয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অনীক আর হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সেলিম আযাদ।
বইমেলায় স্টল বরাদ্দ না পেয়ে গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে রিট করেন আদর্শ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মো. মাহবুবুর রহমান।
রিট আবেদনে বলা হয়, ‘শুধু একটি বইয়ের জন্য মেলায় পুরো প্রকাশনীর অংশগ্রহণ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অথচ সে বইটি ব্ল্যাকলিস্টেড বা কালো তালিকাভুক্ত নয়। বাংলা একাডেমি আইন-২০১৩ অনুযায়ী তাদের এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার কোনো বৈধতা নেই।
‘একই সঙ্গে প্রতি বছর একাডেমি থেকে যে নীতিমালা করা হয়, তারও ব্যত্যয় ঘটিয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছে বাংলা একাডেমি। তাদের এ সিদ্ধান্ত সংবিধানের বাক-স্বাধীনতার বিরোধী।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে নিয়ে গুজব রটানোর অভিযোগে করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ পিছিয়েছে।
বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান নূর এই প্রতিবেদন জমার জন্য আগামী ১৯ মার্চ নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন।
এদিন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমার দিন ঠিক করা থাকলেও তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন জমা দিতে পারেননি।
গত বছরের ২৮ এপ্রিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের ব্যক্তিগত সহকারী মনিরুল ইসলাম অজ্ঞাতপরিচয় ফেসবুক ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে শাহবাগ থানায় মামলাটি করেন। মামলায় দুজনের নাম ও তিনটি পেজের নাম উল্লেখ করা হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ‘ইলিয়াস হোসাইন মিডিয়া’ নামের একটি পেজ থেকে ভিডিও সম্প্রচার করা হয়েছে। রাকিবুর রহমান ফাহিম নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ‘বাংলাদেশ টাইমস’ নামের একটি পেজে প্রকাশিত ভিডিও শেয়ার করা হয়।
এ ছাড়া তাজউদ্দীন আহমেদ রাসেল নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ‘আইনিউজবিডি ডটকম’ নামের একটি পেজে প্রকাশিত ভিডিও শেয়ার করা হয়।
মামলায় বলা হয়, এসব ফেসবুক পেজ ও আইডি থেকে মিথ্যা, ভিত্তিহীন, মানহানিকর ও কুরুচিপূর্ণ পোস্ট করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে এক কিশোরীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী এলাকায় মঙ্গলবার রাত দশটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ওই কিশোরীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা তার বাবা বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে বাসায় এসে দেখি ঘরের দরজা বন্ধ, জানালার ফাঁকা দিয়ে দেখি আমার মেয়ের গলায় ওড়না প্যাঁচানো ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে। পরে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় ঘরের দরজা ভেঙ্গে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে নেয়ার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে মৃত বলে জানান।’
ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।
ঢাকার কামরাঙ্গীর চরের রসুলপুরে এক মাদ্রাসা ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের পর সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির সময় তার পায়ুপথে অস্বাভাবিকতার চিহ্ন পেয়েছে পুলিশ। এই শিশু শিক্ষার্থী কারও দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে।
সোমবার রাতে তাকে ঘরের ভেতর ঝুলন্ত অবস্থায় পায় পরিবারের সদস্যরা। পরে মধ্যরাতে তার মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
নিহত ১৪ বছর বয়সী ওই শিক্ষার্থী পড়াশোনা করতেন কামরাঙ্গীর চরে নুরিয়া মাদ্রাসায়। এই মাদ্রাসা থেকে হাফেজ হয়ে গত শুক্রবার ওয়াজ মাহফিলে পাগড়ি পান। পাগড়ি গ্রহণ শেষে সে বাসায় ফেরে। এরপর থেকে ওই শিক্ষার্থী বাসাতেই ছিল।
কামরাঙ্গীর চর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, গতকাল ওর মাদ্রাসার যাওয়ার কথা। কিন্তু যেতে চাইনি। রাতে একটি কক্ষে দরজা বন্ধ করে অনেকক্ষণ ভেতরে থাকলে পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হয়। ভেতরে তাকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
শিশু শিক্ষার্থীর পায়ুপথে অস্বাভাবিকতা দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন ওসি মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, আত্মহত্যা করলে পায়ুপথে বীর্য ও মল আসে। এই ভিকটিমের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এর বাইরে তার পায়ুপথ স্ফিত ছিল। যেটা দেখে আমাদের সন্দেহ হয়েছে। আমরা মরদেহ ময়নাতদন্ত করিয়েছি। ডাক্তার কোনো কিছু জানাননি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য আমরা অপেক্ষা করছি।
এ ঘটনায় এরইমধ্যে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে, তবে তদন্তে যৌন নির্যাতন বা অন্য কিছু পাওয়া গেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওসি মোস্তাফিজুর।
আরও পড়ুন:মেট্রোরেলের পিলারে যারা পোস্টার লাগিয়েছেন তাদের নিজ দায়িত্বে তা সরাতে বলেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) উদ্যোগে সড়ক নিরাপত্তা সংক্রান্ত সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোরেলের পিলারে যারা পোস্টার লাগিয়েছেন, তারা নিজ দায়িত্বে সেগুলো সরাবেন। অন্যথায় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ সময় ইজিবাইকগুলোকে নীতিমালায় আনার কাজ শেষের দিকে জানিয়ে তিনি বলেন, ইজিবাইকগুলোকে একটা নীতিমালার মধ্যে আনা হচ্ছে। যার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এই সরকারের আমলে সড়ক যোগাযোগে পরিবর্তন এখন দৃশ্যমান। সড়কে নিরাপত্তা সবাই চায়। তাই সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে। আর এজন্য প্রয়োজন জনগণের সচেতনতা।
রাষ্ট্রপতি পদের নির্বাচন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, রাষ্ট্রপতি কে হবেন, সে সম্পর্কে কিছু জানি না। আজকে আমাদের সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এটা এজেন্ডা আকারে আসতে পারে। আজকে সবকিছু হয়ে যাবে এমন নয়।
তিনি বলেন, আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, তার আগেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। তবে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটিই বাস্তবায়ন করা হবে।
ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, বায়ুদূষণে বাংলাদেশের অবস্থান অবশ্যই লজ্জার। এসব মানুষেরই সৃষ্টি। প্রতিরোধে যে ব্যবস্থা সংশ্লিষ্টদের, সেগুলো খুবই বাজে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য