চট্টগ্রামের রাউজানে বাজার থেকে ফেরার পথে বেইলি ব্রিজের ভাঙা অংশে ৮৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের পা আটকে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে দুই ঘণ্টা পর হাটহাজারী ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে উদ্ধার করে।
রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার গহিরা ইউনিয়নে ইছাপুর সড়কের ব্রিকফিল্ড এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
পা আটকে যাওয়া ওই বৃদ্ধের নাম সৈয়দুল হক। তিনি উপজেলার গহিরা ইউনিয়নের জেবল সৌদাগর বাড়ির বাসিন্দা।
হাটহাজারী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের লিডার সাদেক হাসান বলেন, ‘আমরা ৭টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করেছি। তিনি স্বাভাবিক আছেন। প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। উদ্ধারের পর তাকে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য বেলাল উদ্দিন জানান, ২০০০ সালের দিকে ব্রিজটি তৈরি করা হয়েছিল। এর আগেও কয়েকবার এটির পাটাতন ভেঙেছে। ভাঙা অংশে এ ধরনের দুর্ঘটনা এর আগেও কয়েকবার হয়েছে। এমনকি সিএনজি অটোরিকশার চাকাও ঢুকে গিয়েছিল কয়েকবার।
‘আগে আমরা চার পাঁচজন সরিষা আবাদ করতাম। এখন অনেক মানুষ সরিষা চাষ করছে, প্রায় দেড়শ জনের মতো। আরও যারা আছেন এখন তারাও আগ্রহ দেখাচ্ছেন সরিষা আবাদে।’
এমনটাই জানালেন নীলফামারী সদর উপজেলার কুন্দপুকুর ইউনিয়নের কাচারি পাড়ার সরিষা চাষি হারুন উর রশিদ।
তিনি এবার পাঁচ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করেছেন। গতবার যেখানে করেছিলেন তিন বিঘা জমিতে।
কৃষক হারুন বলেন, ‘সরিষাতে খরচ চার হাজার টাকার মতো বিঘা প্রতি। ফলন ভালো হয়, দামও ভালো পাওয়া যায়। পাশাপাশি সরিষার টাকা দিয়ে বোরো আবাদ উঠি যায়। সরিষার কোনো কিছু ফেলানি যায় না, গাছ খড়ি এবং খৈল গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়। অনেক লাভ সরিষাত।’
আরেক কৃষক আলমগীর ইসলাম বলেন, ‘আমন ও বোরো দুটি ধানই আমরা আবাদ করতাম বছরে। এখন তিনটি ফসল ফলাচ্ছি বছরে। আমন এবং বোরোর মাঝখানের তিন মাস জমি পতিত থাকত। কোনো আবাদ করতাম না। কৃষি বিভাগের পরামর্শে এই সময়ে সরিষা করছি।
‘সরিষায় খরচ কম। সেচ দিতে হয় না। সার কীটনাশকও তেমন প্রয়োজন হয় না। সরিষা এখন আমাদের পুরো গ্রাম ছড়িয়ে পড়েছে। এবার যারা আবাদ করেননি তারাও আগামীতে সরিষা আবাদ করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’
আব্দুস ছামাদ নামে আরেক কৃষক বলেন, ‘সরিষা গ্রামের চিত্র বদলে দিয়েছে। এলাকা পরিদর্শনে আসছেন কর্মকর্তাগণ। অনেকে আসছেন ছবি তুলতে।
‘আর ১৫ দিন পরই সরিষা কাটাই মাড়াই শুরু হবে। গতবার আবাদ একটু কম হলেও এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারও ভালো।’
সরেজমিনে কাচারি পাড়া এলাকা গিয়ে দেখা গেছে, ১৪০ জন কৃষক ৩০০ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করছেন। দুই বিঘা থেকে শুরু করে পাঁচ বিঘা পর্যন্ত সরিষা লাগিয়েছেন জমিতে।
সরকারি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় অনেকে পেয়েছেন সার ও বীজ। কৃষি বিভাগের পরামর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে সরিষা করেছেন কৃষকরা। কৃষি বিভাগ কর্মকর্তারা বলছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণে সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয় কৃষকদের।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু তালেব বলেন, ‘বিঘা প্রতি ৫ মণ উৎপাদন হবে সরিষা, যেখানে চার হাজার টাকা মণ বিক্রি হবে। বিঘা প্রতি চার হাজার টাকা খরচ হয় একজন কৃষকের। বিপরীতে একজন কৃষকের ধানে বিঘা প্রতি লাভ আসে তিন হাজার টাকার মতো।’
কাচারী পাড়া ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রশিদুল ইসলাম জানান, কৃষকদের নিয়ে আলোচনা করে এবং পরামর্শ দিয়ে সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়। এতে আস্তে আস্তে চাষির সংখ্যা বাড়তে থাকে। এখন ১৪০ জন কৃষক সরিষা করছেন। এই গ্রাম এখন সরিষা গ্রামে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণ করতে সরিষা আবাদের কোনো বিকল্প নেই এবং কোনো জমি পতিত রাখা যাবে না, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমরা সফল হয়েছি নীলফামারীতে।’
কুন্দপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ইউনিয়নের প্রতি পাড়া মহল্লায় আবাদ হয়েছে সরিষার। সরকারের প্রণোদনা সফল হয়েছে কৃষকরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন। দিন দিন চাষির সংখ্যা আরও বাড়বে।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. এস এম আবু বকর সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণে এগিয়ে এসেছেন এ এলাকার কৃষকরা। এখন আর পতিত থাকছে না কোনো জমি।’
আগামী তিন বছরের মধ্যে সরকারের দেয়া ভোজ্য তেল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৪০ ভাগ পূরণ করা হবে। ইতোমধ্যে শতকরা ১৪ ভাগ উৎপাদন হচ্ছে।
তিনি জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ৬৭৭৭ হেক্টর জমিতে ৯১০০ টন সরিষায় ৩৬ লাখ ৪০ হাজার লিটার তেল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:হবিগঞ্জে শিয়া ও সুন্নি নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে গিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
হবিগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় শুক্রবার সন্ধ্যায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
একপক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন আলোচিত ইসলামী বক্তা মাওলানা গিয়াস উদ্দিন আততাহেরী এবং অপরপক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন মাওলানা কাওসার।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মর্তুজা জানান, হবিগঞ্জে শিয়া ও সুন্নি নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে বৈঠকে দুই পক্ষের চার জন করে আট জন অংশ নেয়ার কথা থাকলেও উভয়পক্ষই বিপুল সংখ্যক মুসল্লি নিয়ে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রবেশ করে। পুলিশ তাদেরকে কার্যালয় থেকে বের করে দিলে উভয়পক্ষ উত্তেজিত হয়ে ওঠে। এ সময় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়।
তিনি আরও জানান, কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে, তারা দুই পক্ষই চলে গেছে।
লালমনিরহাটের বয়লার মুরগির খামার পরিষ্কার করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক স্কুলছাত্র মারা গেছে।
কালীগঞ্জের সেবকদাসে শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
১৫ বছর বয়সী মো.শাহীন নবম শ্রেণির ছাত্র নিহত হয়েছে। সে স্থানীয় বলাইরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র এবং সেবকদাস এলাকার হাফিজুল ইসলামের ছেলে।
স্থানীয় গোড়ল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমীন নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানান।
স্থানীয় শাহার আলী জানান, প্রতিদিনের মতো শুক্রবার বিকেলে নিজেদের বয়লার মুরগির খামার পরিষ্কার করছিল শাহীন। কাজ করার সময় মাটিতে পড়ে থাকা বিদ্যুতের তারে শাহীনের হাতের কোদাল আটকে গেলে সেও জড়িয়ে যায় তারের সঙ্গে। পরে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে গোড়ল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) মো. মাসুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি, পুলিশ ঘটনাস্থল যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:ভারতের প্রমোদতরি ‘এম ভি গঙ্গা বিলাস’ সুন্দরবনের নৌ সীমান্ত পথে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে এই প্রমোদতরি বাংলাদেশে প্রবেশে করে। দেশের সীমান্ত থেকে সুন্দরবনের নৌপথে ভ্রমণকালে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের একটি টিম এর সঙ্গে রয়েছে।
গত ১৩ জানুয়ারি এই প্রমোদতরির উদ্বোধন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বারানসি থেকে যাত্রা শুরু করা এই নৌযান বাংলাদেশ হয়ে আসাম রাজ্যের ডিব্রুগড়ে পৌঁছাবে ৫১ দিনে। পাড়ি দেবে ৩ হাজার ২০০ কিলোমিটার। দুই দেশের মোট ২৭টি নদী পাড়ি দেবে এই বেসরকারি প্রমোদতরি।
শনিবার দুপুরে মোংলা বন্দরে আসবে গঙ্গা বিলাস। বন্দরের ৬ নম্বর জেটিতে ভিড়বে বিলাসবহুল পাঁচ তারকা মানের এ জাহাজটি। মোংলা বন্দর জেটিতে প্রমোদতরি ও বিদেশি পর্যটকদের স্বাগত জানাতে নানা প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহামুদ চৌধুরী, ভারতীয় হাইকমিশনার ও মোংলা বন্দর চেয়ারম্যানসহ পদস্থ কর্মকর্তারা অভ্যার্থনা অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিদেশি পর্যটকবাহী গঙ্গা বিলাস সুন্দরবনের আংটিহারায় প্রবেশের পর ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরপর থেকে প্রমোদতরিটি সুন্দরবনের অভ্যন্তরে অবস্থান করছে। শনিবার এটি মোংলা বন্দর জেটিতে ভেড়ার ভিড়বে।
বাংলাদেশে অবস্থানকালে গঙ্গা বিলাসের যাত্রীরা খুলনার কয়রার আংটিহারা হয়ে ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন দিয়ে মোংলা বন্দর হয়ে বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদ এলাকা ঘুরবেন। এরপর বিদেশি পর্যটকরা নৌ পথে বরিশাল হয়ে মেঘনা ঘাটে অবস্থান করে সোনারগাঁও ও ঢাকায় ভ্রমণ করবেন।
পরবর্তীতে টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ হয়ে কুড়িগ্রামের চিলমারী, রংপুরের দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণের সুযোগ থাকছে তাদের। ভারতে এই প্রমোদতরি প্রবেশ করবে চিলমারী থেকে।
গঙ্গা বিলাস এ দেশে থাকাকালীন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ প্রটোকল রুটের নাব্য রক্ষা, বার্দিং সুবিধা নিশ্চিতকরণ ও নৌপথ ব্যবহারের জন্য ভয়েজ পারমিশন এবং ভয়েজ পারমিশনের সার্বিক মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকবে।
আগামী ১৩ মার্চ গঙ্গা বিলাস আসামের ডিব্রুগড় থেকে একই পথে ফেরার কথা রয়েছে।
এ প্রমোদতরিতে চেপে ৫১ দিন ভ্রমণে মাথাপিছু খরচ পড়বে প্রায় ২০ লাখ রুপি। এতে রয়েছে মোট ১৮টি বিলাসবহুল স্যুইট। প্রতিটিতে দুজনের থাকার বন্দোবস্ত রয়েছে। এতে রয়েছে অত্যাধুনিক স্পা, জিম, লাইব্রেরি, বিনোদনের বন্দোবস্ত এবং দেশ-বিদেশের খাওয়া।
চোরাই মোটরসাইকেলসহ বগুড়ার শাজাহানপুর ছাত্রলীগের নেতা গোলাম গাউছ লিমনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
শুক্রবার মামলা দায়েরের পর সন্ধ্যায় তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার বনানী এলাকায় মোটরসাইকেলসহ তাকে আটক করা হয়।
গোলাম গাউছ লিমন উপজেলার রহিমাবাদ (বি-ব্লক) এলাকার শাহ আলমের ছেলে এবং উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। পাশাপাশি তিনি শাজাহানপুরে বালু ও ইট সরবরাহের ব্যবসা করেন।
সন্ধ্যায় ডিবি পুলিশের এসআই আলী জাহান গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে বনানী মোড়ে ডিবি পুলিশের টহল টিম তল্লাশি করছিল। এ সময় গোলাম গাউছ লিমনকে তল্লাশি করা হয়। কাগজপত্র যাচাই করতে গিয়ে দেখা যায় মোটরসাইকেলটি চোরাই। পরে তাকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।
এসআই জাহান বলেন, ‘চোরাই মোটরসাইকেলটি হোন্ডা কোম্পানির ১৫০ সিসির কালো রঙের। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় লিমন মোটরসাইকেলটি হিলি সীমান্ত থেকে নিয়ে এসেছেন।’
গোলাম গাউছ লিমনের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত করেন শাজাহানপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিন্টু মিয়া। তিনি বলেন, ‘গোলাম গাউছ লিমন উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তার ঘটনাটি আমরা শুনেছি। এ বিষয়ে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
শাজাহানপুর থানার ওসি আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, ‘ডিবির টিম চোরাই মোটরসাইকেল নিয়ে গোলাম গাউছ নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে। শুক্রবার বিকেলে শাজাহানপুর থানায় মামলা হওয়ার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠায় ডিবি পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আগের তিনটি মামলা আছে। তার মধ্যে একটি মোটরসাইকেল চুরির।’
আরও পড়ুন:সিলেটের রাজপথে নিজেদের শক্তি দেখাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। দুই দল শনিবার দুপুরে নগরের পৃথক স্থানে কর্মসূচি দিয়েছে। দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল দুটি এর মধ্য দিয়ে নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দিতে চাইছে।
জানা যায়, প্রায় ৫ বছর পর একই দিনে পৃথক কর্মসূচি নিয়ে সিলেটের রাজপথে মুখোমুখি হচ্ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এর আগে সবশেষ ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সিলেটে মুখোমুখি হয় তারা। ওইদিন খালেদা জিয়ার সাজার রায়কে কেন্দ্র করে ঘোষিত কর্মসূচি নিয়ে নগরের কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় দুই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হন অনেকে। এরপর উভয় দল নানা ইস্যূতে রাজপথে সরব থাকলেও কখনও মুখোমুখি হয়নি।
তবে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি না থাকলেও গত বছরের ৬ নভেম্বর রাতে জেলা বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক আ ফ ম কামাল হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে নগরের রিকাবীবাজারে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সঙ্গে বিএনপি ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
শনিবার ‘বিভাগীয় সমাবেশ’ ও ‘শান্তি সমাবেশ’-এর মাধ্যমে আবার রাজপথে মুখোমুখি হচ্ছে দুদল। দীর্ঘদিন পর একই দিনে দুই দলের কর্মসূচির কারণে সংঘাতের শঙ্কাও দেখা দিয়েছে। তবে দুই দলের নেতাদের প্রত্যাশা, শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হবে সমাবেশ।
‘আওয়ামী সন্ত্রাস, সরকারের দমন-নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে, বিরোধী দলের গ্রেপ্ততারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানোসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা’ দাবিতে গত জানুয়ারিতেই সিলেটসহ সব বিভাগীয় শহরে সমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপি। শনিবার বেলা ২টায় সিলেট রেজিস্ট্রি মাঠে এই সমাবেশ শুরু হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বেগম সেলিমা রহমান।
সমাবেশ সফলে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। সিলেটজুড়ে কর্মিসভা, পথসভা, জনসংযোগের মাধ্যমে সমাবেশে ব্যাপক জনসমাগমের চেষ্টা করছেন তারা। সমাবেশের বিষয়টি অবহিত করে দলটির পক্ষ থেকে মহানগর পুলিশ কমিশনার বরাবরে চিঠিও দেয়া হয়েছে।
এই সমাবেশ সফলে নগরের ২১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে শুক্রবার প্রস্তুতি সভা হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির।
তিনি বলেন, ‘৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিএনপি আহূত বিভাগীয় সমাবেশ ইতিহাস সৃষ্টি করবে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে শুধু জাতীয়তাবাদী শক্তি নয়, গণতন্ত্রকামী সিলেটবাসীর মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্যের সূচনা হয়েছে। সিলেটবাসী সব বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে সমাবেশ সফলে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।’
অপরদিকে একই দিনে সিলেটে ‘শান্তি সমাবেশ’ করার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। প্রথমে এই সমাবেশ বিএনপির সমাবেশস্থল রেজিস্ট্রি মাঠে করার ঘোষণা দেয় দলটি। পরে স্থান পরিবর্তন করে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিকেল ৩টায় এই সমাবেশ শুরু হবে। শান্তি সমাবেশ সফলেও প্রচার চালাচ্ছে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ। এই সমাবেশের মাধ্যমে রাজপথে নিজেদের শক্ত অবস্থানের জানান দিতে চায় ক্ষমতাসীন দলটি।
শান্তি সমাবেশ সফলে বৃহস্পতিকার সন্ধ্যায় প্রস্তুতি সভা করে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ। এতে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে স্ব স্ব ওয়ার্ড থেকে মিছিল সহকারে সমাবেশে অংশগ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়।
সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘দেশব্যাপী বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য ও অগ্নি-সন্ত্রাস রুখে দিতে আওয়ামী লীগ রাজপথে থাকবে। কোনোভাবেই তাদেরকে সাধারণ মানুষের জান-মালের ক্ষতি করার সুযোগ দেয়া হবে না।’
দুই দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি আর ব্যাপক শো-ডাউনের প্রস্তুতির কারণে হঠাৎ করেই সিলেটের রাজনীতিতে দেখা দিয়েছে উত্তাপ। উঁকি দিচ্ছে সংঘাতের শঙ্কাও।
তবে বিএনপি শান্তিুপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে চায় জানিয়ে সিলেট মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী বলেন, ‘সিলেটের রাজনীতিতে সম্প্রীতির ঐতিহ্য রয়েছে। আমরা আশাবাদী এটা কেউ নষ্ট করার চেষ্টা করবেন না। যার যার কর্মসূচি যার যার মতো করে পালন করবেন। তবে কোনো প্রতিবন্ধকতা এলে তা জয় করে বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের সমাবেশ সফল করবে। আমরা সেরকম প্রস্তুতি নিয়েছি।’
বিএনপি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করলে সংঘাত হবে না জানিয়ে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সবসময় শান্তিপূর্ণ রাজনীতির পক্ষে। রাজনৈতিক সহাবস্থানের পক্ষে। তাই আমরা উদারতা দেখিয়ে নিজেদের কর্মসূচির স্থানও পরিবর্তন করেছি। এখন বিএনপি যদি বিশৃঙ্খলা না করে তবে আমাদের শান্তি সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হবে।’
দুই দলের পৃথক কর্মসূচির কারণে বিশৃঙ্খলা এড়াতে প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশও। সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) সুদীপ দাস বলেন, ‘শুক্রবার বিকেল থেকেই নগরে অতিরিক্ত পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। নগরের সব মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নগরের প্রবেশপথগুলোতে পেকপোস্ট বসানো হয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য পুলিশ সতর্ক রয়েছে।’
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা যতদিন রাষ্ট্রক্ষমতায় আছেন দেশের উন্নয়নের ধারাও ততদিন বজায় থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এই ধারা বজায় রাখতে মানুষ আবারও নৌকা প্রতীকে ভোট দেবে বলে মনে করেন তিনি।
শুক্রবার বিকেলে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে বিনামূল্যে ছানি অপারেশন এবং চক্ষু চিকিৎসা সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘সামনে আমাদের নির্বাচন আসছে। শেখ হাসিনা যতদিন ক্ষমতায় আছেন, ততদিন দেশে শান্তি-সমৃদ্ধি, উন্নয়ন আছে। দেশের মানুষ পিছিয়ে যেতে চায় না, বিএনপির অন্ধকার যুগে, বোমার যুগে যেতে চায় না। আমরা আশা করবো, জনগণ আগামী নির্বাচনে বিপুল ভোটের শেখ হাসিনার দলকে, শেখ হাসিনার পার্থীকে জয় লাভ করাবে।’
বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকারকে বিএনপি ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে চায়। কিন্তু বিএনপি জানে না, আওয়ামী লীগ ইস্পাতের সরকার। এখানে হাত দিলে হাত কেটে যাবে। কারণ জনগণের জন্য যারা কাজ করে, জনগণ তাদের সঙ্গে আছে। দেশের জনগণ আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছে, শেখ হাসিনার সঙ্গে আছে।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘চক্ষু রোগীরা বিনামূল্যে চোখ অপারেশন ও চোখের লেন্স পাচ্ছেন। রোগীদের যে লেন্স দেয়া হচ্ছে, তার প্রতিটি লেন্সের দাম ২০-৩০ হাজার টাকা। এ ছাড়াও বিনামূল্যে চশমা ও ওষুধ পাবেন এবং রোগীদের থাকা খাওয়ার ফ্রি ব্যবস্থা করা হয়েছে। মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়া, স্বাস্থ্য সেবার উন্নতি করা এবং দেশের মানুষকে ভালো ও শান্তিতে রাখা আওয়ামী লীগের কাজ। কারণ আমরা মনে করি দেশের মানুষকে ভালো রাখা আওয়ামী লীগের রাজনীতি। এই রাজনীতি আমরা করতে চাই।’
বিএনপির সমালোচনা করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার বিনামূল্যে মানুষের চোখের অপারেশন করে ও চোখের লেন্স পরায়। আর বিএনপির গ্রেনেড হামলায় বহু মানুষের চোখ উঠে গেছে, চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। বিএনপি মানুষের চোখের আলো ছিনিয়ে নেয় আর আওয়ামী লীগ মানুষের চোখের আলো ফিরিয়ে দেয়।’
মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে বিনামূল্যে ছানি অপারেশন এবং চক্ষু চিকিৎসা সেবা প্রসঙ্গে তিনি জানান, বিনামূল্যে চক্ষু সেবার মাধ্যমে প্রায় ৮ শ লোক নতুন করে চোখের আলো পাবেন। অপারেশন ছাড়া এর আগে প্রায় ৪ হাজার চক্ষু রোগীকে বিভিন্ন চিকিৎসা এবং ৫ হাজার চশমা দেয়া হয়েছে। আগামীতেও মানিকগঞ্জবাসির জন্য বিনামূল্যে চক্ষু সেবার ব্যবস্থা করা হবে।
এ সময় ন্যাশনাল আই কেয়ার এর লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা, জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ, পৌরসভার মেয়র মো. রমজান আলী, কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মো. জাকির হোসেন, সিভিল সার্জন মো. মোয়াজ্জেম আলী চৌধুরী খান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালামসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য