নয়াপল্টনের সড়কে সমাবেশ করা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষের পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে রোববার সকালে কার্যালয় খুলে দেয়া হবে বলে জানিয়েছে ডিএমপি। একইসঙ্গে গণপরিবহন চলাচলে নাইটিংগেল মোড় থেকে ফকিরাপুল সড়কের ব্যারিকেড শনিবার রাতেই তুলে নেয়ার কথাও জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
ডিএমপির ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘১০ তারিখের সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা হতে পারে, এমন তথ্য আমাদের কাছে ছিল। এর পাশাপাশি নয়াপল্টনেও তারা (বিএনপি) একটি ইনসিডেন্ট ঘটিয়েছে।
সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে নয়াপল্টন এলাকায় যান চলাচল ও বিএনপির পার্টি অফিসের কার্যক্রম বন্ধ করতে হয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘কাল (রোববার) সকালে পার্টি অফিস খুলে দেয়া হবে ও আজ (শনিবার) রাত থেকেই সড়কে যান চলাচল করতে পারবে।’
পার্টি অফিস খুলে দিতে বিএনপির পক্ষ থেকে অনুরোধ ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, তাদের পক্ষ থেকে এমন কোনো অনুরোধ বা আবেদন আমরা পাইনি, আমাদের তদন্ত সংশ্লিষ্ট কাজ শেষে আমরাই খুলে দিচ্ছি।’
জানতে চাইলে ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার হায়াতুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নয়াপল্টনের সংঘর্ষ ও বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় যেহেতু মামলা হয়েছে তাই তদন্তকারী একাধিক সংস্থার প্রয়োজনে গত কয়েকদিন বিএনপি কার্যালয়ে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।
আলামত জব্দ, ভবন তল্লাশিসহ আরও আইনি প্রক্রিয়া শেষে রোববার সকালে পার্টি অফিস খুলে দেয়া হবে।’
এ বিষয়ে বিএনপির প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রবিবার দুপুর ১টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যাবেন ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স।’
এদিকে রাজধানীর গোলাপবাগে শনিবার বিএনপির ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশ হয়েছে। তবে সকাল থেকেই বিএনপি কার্যালয়ে ছিল সুনসান নীরবতা। দলের কোনো পর্যায়ের নেতা-কর্মীকে নয়াপল্টন এলাকায় ভিড়তে দেখা যায়নি। এমনকি সমাবেশ শেষেও নেতা-কর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে নিজ গন্তব্য ছুটেছেন।
বিএনপি কার্যালয় ছিল নীরব
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে কার্যালয়ের মূল ফটক ছিল তালাবদ্ধ। অন্যদিকে সরকার সমর্থিত বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নয়াপল্টন এলাকায় লাঠি-সোটা নিয়ে টহল দিতে দেখা গেছে।
ভোর থেকেই নাইটিঙ্গেল মোড় ও ফকিরাপুল থেকে আরামবাগমুখী রাস্তা ছিল পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। পুরো এলাকার অলিতে গলিতে ছিল পুলিশের ব্যারিকেড৷ যান চলাচল বন্ধ থাকার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের যাতায়াতও ছিল খুব নিয়ন্ত্রিত।
সড়কের দু’পাশে যত অলিগলি ছিল, সেখানেও ছিল পুলিশের ব্যারিকেড। তবে বেলা শেষে কিছুটা শিথিল অবস্থা দেখা গেছে।
সন্ধ্যা সাতটায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে দেখা গেছে। কার্যালয়ের পাশেই কয়েকশ’ পুলিশ সদস্য অবস্থান করছে। তবে সকালে যেমন তাদের সতর্ক অবস্থান ছিল সন্ধ্যায় তা দেখা যায়নি। এছাড়া ব্যারিকেডও ঢিলে-ঢালা ভাব ছিল।
অন্যদিকে সকালের চেয়ে সন্ধ্যায় অলি-গলিতে সাধারণ মানুষের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশপাশের এলাকার সব মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধ ছিল।
গোলাপবাগে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ
এদিকে নয়াপল্টন নিয়ে সংঘর্ষের পর শেষ পর্যন্ত রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে বিএনপির ধারাবাহিক বিভাগীয় সমাবেশের অংশ হিসেবে শনিবার এই জমায়েতের আগে উত্তেজনা ছড়ালেও মাঠে তার প্রভাব দেখা যায়নি। গোলাপবাগের এই সমাবেশে কোনো ধরনের গোলযোগ হয়নি। নেতা-কর্মীরা নির্বিঘ্নে এসেছেন, বাড়িও ফিরছেন নির্বিঘ্নে।
সকাল ১০টা ২০ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়া সমাবেশ শেষ হয় প্রধান অতিথি বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে।
পরে বিকেল ৪টা ২৬ মিনিটে সমাবেশ সমাপ্তের ঘোষণা দেয়ার পর নেতারা তাদের কর্মীদের শান্তিপূর্ণভাবে বাড়ি ফেরার পরামর্শ দেন।
সমাবেশ শেষে নেতা-কর্মীরা মিছিল করতে করতে বাড়ি ফিরছেন। তাদের বক্তব্য, এই সমাবেশ সফল হয়েছে। তাদের ভাষায়, নানা বাধার পরও তারা জমায়েত হতে পেরেছেন এবং এটিই তাদের সার্থকতা।
১৩ ও ২৪ ডিসেম্বর বিক্ষোভ
সমাবেশে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন যুগপৎ আন্দোলনের ১০ দফা দাবি আদায়ে ২৪ ডিসেম্বর দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলায় ও ইউনিটে গণমিছিল ও গণবিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন।
এ ছাড়া দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের মুক্তির দাবি ও নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে পুলিশি তাণ্ডবের প্রতিবাদে ১৩ ডিসেম্বর একই কর্মসূচি পালনের কথাও জানান তিনি।
এরআগে, বুধবার ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে নয়াপল্টনে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে প্রাণ যায় একজনের।
সংঘর্ষের পর আমান উল্লাহ আমান, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, আবদুস সালাম, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ বিএনপির প্রায় পাঁচশ’ নেতা-কর্মী আটক ও গ্রেপ্তার হন।
বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন শুনানি শেষে আমান উল্লাহ আমান ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েলের জামিন দেন।
এরপর, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে ডিবি পুলিশের সদস্যরা নিজ নিজ বাড়ি থেকে তুলে নেয়।
পরে নয়াপল্টনে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের আদালতে উপস্থিত করা হয়। ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসিম তাদের জামিন আবেদন নাকচ করে শুক্রবার বিকেলে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আরও পড়ুন:
অপহরণের ৬ ঘণ্টার মধ্যে সিরাজগঞ্জ থেকে তামিম হোসেন নামের ৭ বছরের এক শিশুকে উদ্ধার করেছে র্যাব। এ সময় এ মামলার আসামি আল-আমিন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ভোরে বেলকুচি উপজেলার চন্দনগাতী গ্রাম থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে র্যাব ১২-এর একটি দল। বুধবার দুপুর তিনটার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলার হানুরবাড়াদি গ্রাম থেকে তাকে অপহরণ করা হয়।
অপহৃত তামিম হোসেন চুয়াডাঙ্গার হানুরবাড়াদি গ্রামের মো. সুন্নত আলীর ছেলে। অপরদিকে গ্রেপ্তার হওয়া ২৯ বছর বয়সী আল-আমিন কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানায় মেষতলী বাজারের বাসিন্দা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব ১২-এর অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মারুফ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, অপহরণের পর শিশুটির বাবা সুন্নত আলী চুয়াডাঙ্গা থানায় মামলা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিষয়টি র্যাবকে জানালে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামির অবস্থান নির্ণয় করা হয়। পরে অভিযান চালিয়ে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, তামিমের বাবার সঙ্গে আল আমিনের দুই মাস আগে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়েই সুকৌশলে তামিমকে অপহরণ করা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মুক্তিপণের জন্যই শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছিল।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় হস্তান্তর করার আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:বান্দরবানে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ৫৩জনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। রুমা থানার দুটি মামলায় বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি এক নারীকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদসহ মামলায় ৫৭জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বান্দরবান সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নাজমুল হোছাইন বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
আদালতে আসামি পক্ষে একাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। আইনজীবীরা জানান, রুমা থানার জিআর মামলা নং- ৪ ও ৭ মামলায় পুলিশ আসামিদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ৫৩জনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এর মধ্যে ৫২জনকে দু’দিন করে রিমান্ড এবং একজনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়া হয়।
এর আগে বান্দরবান জেলা কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তায় ১৮জন নারী ও ৩৯জন পুরুষ বন্দিকে দুটি গাড়িতে করে আদালতে হাজির করা হয়। সম্প্রতি বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে লুটের ঘটনায় তাদেরকে রুমা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে বান্দরবানে চলমান যৌথ অভিযানে সন্দেহভাজন আরও একজনকে আটক করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৬৬জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মাদারীপুরের কালকিনিতে এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে তিনজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
ওই কলেজছাত্রীর মা এ মামলা করেন বলে বৃহস্পতিবার সকালে জানিয়েছে থানা পুলিশ।
মামলার প্রধান আসামি ও তার পরিবারের সদস্যরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন।
স্থানীয়, পুলিশ ও কলেজছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার একটি গ্রামের নাজমুছ সাকিবের সঙ্গে একই এলাকার কলেজছাত্রীর প্রায় দুই বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এর জেরে গত শুক্রবার রাতে ওই কলেজছাত্রীকে তার বসতঘরে একা পেয়ে ধর্ষণ করেন নাজমুছ সাকিব।
এ ঘটনা জানতে পেরে স্থানীয় লোকজন সালিশ করে নাজমুছ সাকিবকে জিজ্ঞাসা করলে ওই কলেজছাত্রীকে বিয়ে করবেন বলে তিনি আশ্বাস দেন, কিন্তু সালিশের বেশ কয়েক দিন পার হলেও ওই কলেজছাত্রীকে বিয়ে না করে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান সাকিব।
পরে কলেজছাত্রীর মা বাদী হয়ে নাজমুছ সাকিবসহ তার পরিবারের তিনজনকে আসামি করে আদালতে ধর্ষণের মামলা করেন। এর প্রেক্ষাপটে থানা পুলিশ ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে চিকিৎসা পরীক্ষার জন্য সদর হাসপাতালে পাঠায়।
মামলার বাদী কলেজছাত্রীর মা বলেন, ‘আমার মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ধর্ষণ করেছে নাজমুছ সাকিব, কিন্তু এখন আমার মেয়েকে বিয়ে করতে চায় না বলে ধর্ষণকারীসহ তার পরিবারের তিনজনের নামে আমি মামলা করেছি। আমি এর বিচার চাই।’
বিষয়টি জানার জন্য অভিযুক্ত পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের এলাকায় পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘এই ঘটনা জানতে পেরে আমরা নাজমুছ সাকিবকে জিজ্ঞেস করলে ওই কলেজছাত্রীকে বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দেয়, কিন্তু ঘটনার বেশ কয়েক দিন পার হলেও ওই কলেজছাত্রীকে বিয়ে না করে ধর্ষণকারী ও তার পরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়, তবে ওই যুবকের বিরুদ্ধে এই ধরনের ঘটনা আরও আছে।’
কালকিনি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, ‘কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় আদালতে একটি মামলা হয়েছে। পরে ওই ছাত্রীকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং আসামিকে গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহের নান্দাইলে এক নারীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় তিন যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
পৌর শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চারি আনি পাড়া এলাকায় বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো ৩৫ বছর বয়সী নাজমা আক্তার একই এলাকার আবদুল মান্নানের স্ত্রী। তিনি চার সন্তানের মা।
নান্দাইল মডেল থানার ওসি আবদুল মজিদ বলেন, ‘পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া শেষে রাতে পান কিনতে বের হন নাজমা আক্তার। বাড়ি ফিরতে দেরি হওয়ায় পরিবারের লোকজন তার খোঁজ শুরু করলে সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে ধানক্ষেতে ওই নারীকে ক্ষতবিক্ষত উলঙ্গ অবস্থায় মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা।
‘পরে খবর পেয়ে নাজমার পরিবারের লোকজন গিয়ে তাকে শনাক্ত করে। এরপর পুলিশ এসে মরদেহটি উদ্ধার করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চাঁন মিয়া, ফাহিম ও নাঈম নামে তিন যুবককে হেফাজতে নেয়া হয়েছে। নাজমার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা প্রক্রিয়াধীন।’
আরও পড়ুন:কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার সহায়তায় তিন বহিরাগতকে অস্ত্রাগার পরিদর্শনের সুযোগ ও ফেসবুকে তা সরাসরি সম্প্রচারের ঘটনায় পুলিশ সুপার (এসপি) পদমর্যাদার এক কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ গত ৯ এপ্রিল এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনটি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়।
অবসরে যাওয়া ওই কর্মকর্তা হলেন মো. শাহেদ ফেরদৌস রানা। তিনি পুলিশের খুলনা রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে নিয়োজিত ছিলেন।
২০২০ সালের ২৯ আগস্ট ঢাকা এসপিবিএন–১ এ অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পালনের সময় দুজন পুলিশ পরিদর্শক ও তিনজন উপপরিদর্শকের সহায়তায় তিনজন বহিরাগত ব্যক্তিকে অস্ত্রাগার পরিদর্শনের সুযোগ করে দেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার সহায়তায় এসপি শাহেদ ফেরদৌস তিনজন বহিরাগত ব্যক্তিকে অস্ত্রাগার পরিদর্শন করানো, অস্ত্রের বর্ণনা দিয়ে ফেসবুকে তা সরাসরি সম্প্রচারের সুযোগ করে দেয়ার অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে।
এতে বলা হয়, পরে এ ঘটনায় কয়েক দফায় তদন্ত এবং শাহেদ ফেরদৌসের জবাব নেয়া হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা বিধিমতে সাক্ষ্য, সাক্ষীদের জেরা, উপস্থাপিত ভিডিওসহ সব দলিল পর্যালোচনা সরেজমিনের তদন্ত করার পর তার বিরুদ্ধে আনা অসদাচরণ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে মর্মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
‘গুরুদণ্ড’ হিসেবে ওই কর্মকর্তাকে ‘বাধ্যতামূলক অবসর’ দেয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয় বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে বারুনীর মেলায় রাতভর জুয়ার আসর চালানোর অভিযোগে জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যের নামে মামলা করা হয়েছে।
সাদুল্লাপুর থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বুধবার রাতে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুরে ওই ইউপি সদস্যের নামে সাদুল্লাপুর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে জুয়া আইনে মামলা করেন।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্যের নাম আল-আমিন সরকার, যিনি সাদুল্লাপুর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য।
জামালপুর ইউনিয়নের কল্যাণপুরে গত ১৫ এপ্রিল রাতে বারুনীর মেলা উপলক্ষে জামুডাঙ্গা গ্রামের গোলজারের বাড়ির সামনে জুয়া বসান আল-আমিন।
জুয়ার আসরের একটি ভিডিও এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে।
জুয়া খেলার সময় প্রত্যক্ষদর্শী একজনের ধারণ করা ১৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, জুয়ার বোর্ডে বসে আল-আমিন নিজেই গুনে গুনে টাকা নিচ্ছেন।
ইউপি সদস্যের জুয়ার আসর বসানোর ঘটনাটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয়দের মধ্যে নানা সমালোচনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
অভিযোগের বিষয়ে মোবাইলে কল করে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আল-আমিন সরকার তার নেতৃত্বে জুয়া বসানোর বিষয়টি অস্বীকার করেন।
তিনি মেলা উপলক্ষে জুয়ার আসরে যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমি জুয়ার আসরে ছিলাম, কিন্তু জুয়া আমি বসাইনি।’
মামলার বিষয়ে সাদুল্লাপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কল্যাণপুরের বারুনীর মেলায় জুয়া খেলার অভিযোগে সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে সাত জুয়াড়িকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
‘এই জুয়ার আসর বসানোর অভিযোগে ইউপি সদস্য আল-আমিনের বিরুদ্ধে জুয়া আইনে মামলা করা হয়েছে, তবে ঘটনার পর থেকে আল-আমিন পলাতক। তাই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে।’
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জ পৌরসভায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই ভাইয়ের হাতাহাতিতে একজন নিহত হয়েছেন।
পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে বুধবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো কমল রায় (৬২) মানিকগঞ্জ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বদাশড়া এলাকার প্রয়াত কৃষ্ণ রায়ের ছেলে। এ ঘটনায় ছোট ভাই মিঠু রায়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
স্বজন ও স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে কমল রায়ের সঙ্গে ছোট ভাই মিঠু রায়ের কথাকাটাকাটি হয়। এর একপর্যায়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। হাতাহাতিতে বড় ভাই কমল রায় অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ওসি হাবিল হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
‘এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই মিঠু রায়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য