১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিভাগীয় মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। একইদিনে রাজধানীর অন্যতম প্রবেশপথ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে সাভারে জনসভার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
ইতোমধ্যে এই সমাবেশ ঘিরে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
শনিবার দুপুরে সাভারের রেডিও কলোনি স্কুল-মাঠে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারাসহ ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের শীর্ষ নেতারাও এ সমাবেশে অংশ নেবেন।
নির্ধারিত সমাবেশস্থলে শুক্রবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, ইতোমধ্যে বিশাল মঞ্চ নির্মাণের কাজ শেষ। প্রায় ৫ লাখ মানুষকে জায়গা দেয়ার মতো আয়োজন করা হয়েছে এখানে। কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবি সম্বলিত পোস্টার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে আশপাশের এলাকা।
প্রস্ততির শেষ সময়ে জনসভাস্থল পরিদর্শন করেন স্থানীয় নেতারা। জনসভা সফল করতে ইতোমধ্যে কয়েকটি যৌথসভা করেছে সাভার উপজেলা ও পৌরসভা, আশুলিয়া থানা এবং ধামরাই উপজেলা আওয়ামী লীগ। বড় জমায়েত ঘটাতে দলটির অঙ্গ সংগঠনগুলোকেও দেয়া হয়েছে নির্দেশনা।
জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিশেষ অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক (এমপি), অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম (এমপি), জাহাঙ্গীর কবির নানক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ বলেন, ‘আমাদের জনসভার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। শান্তিপূর্ণ এই জনসভা মহাসমাবেশে রুপ নেবে বলে আশা করি৷ ঢাকা জেলার সব কয়টি ইউনিটকে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। আগামীকালের এই সমাবেশে প্রমাণিত হবে, বাংলাদেশের জনগণ আমাদের পাশে আছে।’
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঢাকা-২০ আসনের সাংসদ বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘সাভারে বিজয়ের মাসে আমরা জনসভার আয়োজন করেছি। আশা করছি, জনসভায় ৫ লাখ লোক হবে।’
আরও পড়ুন:আগামী নির্বাচন নিয়ে মতামত দিতে বিএনপিকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) যে আমন্ত্রণ জানিয়েছে, সেটি আকস্মিক নয় বলে দাবি করেছেন কমিশনার মো. আহসান হাবিব।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত হঠাৎ করে হয়নি। কমিশন সার্বিকভাবে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগেও বিএনপিকে একাধিকবার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।’
এ কমিশনার বলেন, ‘বর্তমান কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের কথা অনুধাবন করে আলোচনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে আসছে। ইসি মনে করে বিএনপির মতো নিবন্ধিত অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক না হোক, অনানুষ্ঠানিক মতবিনিময় হতেই পারে।
‘বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হওয়ার সম্ভাবনা কিছুটা হলেও কমে যাবে। তাই আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে অর্থবহ করার জন্য বিএনপিকে অনানুষ্ঠানিক মতবিনিময় এবং আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, যা বর্তমান নির্বাচন কমিশনের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছারই বহিঃপ্রকাশ।’
সিইসির চিঠি
আলোচনা ও মতবিনিময়ের জন্য বিএনপিকে ২৩ মার্চ চিঠি দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
চিঠিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দলীয় অন্য নেতা এবং প্রয়োজনে সমমনা দলগুলোর নেতাসহ আমন্ত্রণ জানানো হয়।
চিঠিতে সিইসি লিখেন, ‘২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর ধারাবাহিকভাবে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন করে আসছি। বর্তমান কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সংসদ নির্বাচনের কথা অনুধাবন করে আসছে।’
চিঠিতে বর্তমান ইসি ও আগামী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বর্তমান কমিশনের প্রতি অনাস্থা ব্যক্ত করে প্রত্যাখ্যান করে আসছে। আপনারা নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও আপনাদের এমন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও কৌশলের বিষয়ে কমিশনের কোনো মন্তব্য নেই।’
চিঠিতে সিইসি বলেন, ‘আপনাদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হলেও কমিশন মনে করে বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে আনুষ্ঠানিক না হোক, অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা বা মতবিনিময় হতে পারে। আপনাদের নির্বাচন কমিশনে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। সদয় সম্মত হলে দিনক্ষণ আলোচনা করে নির্ধারণ করা যেতে পারে। প্রত্যুত্তর প্রত্যাশা করছি।’
আরও পড়ুন:দেশের পরিস্থিতি চিন্তা করে রমজান মাসেও দলের কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রাজধানীর বেইলি রোডের একটি ক্লাবে ওলামা-মাশায়েখ এবং এতিমদের সম্মানে বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে শুক্রবার তিনি এ কথা জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই রমজান মাসেও যেসব কারণে মানুষের কষ্ট হচ্ছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির চলমান আন্দোলন অব্যাহত রাখব। যদিও রমজান মাসে আমাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি দেয়ার কথা নয়।’
বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও নানা ঘটনার প্রতিবাদে এবং পূর্বঘোষিত ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আবারও নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন বিএনপি মহাসচিব।
এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আজকে দেশের যে অবস্থা তৈরি হয়েছে, আমরা বাধ্য হয়েছি এ রমজান মাসেও সাধারণ মানুষকে, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার যে আন্দোলন তা চলমান রাখতে এ কর্মসূচি দিয়েছি। আমরা আশা করব, সেই কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষ অংশ নেবে।’
মির্জা ফখরুল ঘোষিত কর্মসূচিগুলো হলো- ১ এপ্রিল সারা দেশের সব মহানগর ও জেলায় বেলা ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি; ৮ এপ্রিল সারা দেশের সব মহানগরের থানা পর্যায়ে ও জেলার উপজেলা পর্যায়ে বেলা ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি; ৯ থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত বিভাগীয় শহরগুলোতে বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সারা দেশের সব ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রচারপত্র বিলি ও মানববন্ধন করা হবে।
এর মধ্যে ৯ এপ্রিল রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগ, ১০ এপ্রিল রাজশাহী ও সিলেট বিভাগ, ১১ এপ্রিল খুলনা ও কুমিল্লা বিভাগ, ১২ এপ্রিল ঢাকা ও বরিশাল বিভাগ, ১৩ এপ্রিল ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর বিভাগে এসব কর্মসূচি পালন করা হবে।
এ ছাড়া ২৮ মার্চ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সারা দেশের সব জেলা/মহানগর, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় সভা, দুস্থ, অসহায় ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তাসহ বিভিন্ন গণসংযোগমূলক কর্মসূচিতে বিএনপির সব পর্যায়ের নেতা-কর্মী অংশগ্রহণ করবেন।
ইফতারে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান প্রমুখ।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা হবে শনিবার।
এদিন সকাল সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
দলের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে যথাসময়ে সভায় উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
সব ধরনের বৈষম্য ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত সমতা ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে দেশবাসীসহ বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা যুদ্ধ ও সংঘাত চাই না, নর-নারী-শিশু হত্যা আমাদের তীব্রভাবে ব্যথিত করে।
শনিবার ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে শুক্রবার দেয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। খবর বাসসের
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ ও সংঘাত চাই না, নর-নারী-শিশু হত্যা আমাদের তীব্রভাবে ব্যথিত করে। আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি।
‘টেকসই শান্তি বিরাজমান থাকলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর শান্তির নীতি অনুসরণ করি।’
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী বাংলাদেশে বিশ্বের বর্বরতম হত্যাযজ্ঞ পরিচালনা করে।
অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন একাত্তরের ২৫ মার্চের কালরাতে আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের, যাদের তাজা রক্তের শপথ বীর বাঙালিদের অস্ত্রধারণ করে স্বাধীনতা অর্জন না করা পর্যন্ত জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাজার বছর ধরে শৃঙ্খলিত বাঙালি জাতিকে মুক্ত করার প্রয়াসে সারাজীবন ত্যাগ স্বীকার করেছেন। আন্দোলন-সংগ্রামে অত্যন্ত দূরদর্শীতার সঙ্গে নেতৃত্ব প্রদান করেছেন।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা ২০০৮ সাল থেকে সবকটি নির্বাচনে জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন নিয়ে গত ১৪ বছরের বেশি সময় একটানা তাদের ভাগ্যোন্ননের জন্য কাজ করছি। এরই মধ্যে আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানবতা বিরোধী অপরাধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি।
‘সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি, ফলে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পথ বন্ধ হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছি। প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে গণহত্যা এড়াতে ভীত-সন্ত্রস্ত ১১ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়েছি। আমরা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করে যাচ্ছি।
‘ইতোমধ্যেই বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেছি। ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আমরা বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০'প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছি, ভবিষ্যত প্রজন্ম এই পরিকল্পনাকে সময়োপযোগী করে বাস্তবায়ন করতে পারবে।’
প্রধানমন্ত্রী ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে নেয়া সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।
আরও পড়ুন:বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমগীরের মর্মবেদনা বোঝেন জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মির্জা ফখরুলদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা বিএনপির আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নেই।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে শুক্রবার তিনি এ কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিবের সাম্প্রতিক বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে এই বিবৃতি দেয়া হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল আলমগীরের মর্মবেদনা আমরা বুঝি! প্রকৃতপক্ষে বিএনপির আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে মির্জা ফখরুলদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। সুদূর লন্ডন থেকে যে ওহি নাযিল হয়, যে সিদ্ধান্ত আসে মুখ বন্ধ করে তা মেনে নিতে বাধ্য হন ফখরুল সাহেবরা।’
তিনি বলেন, ‘দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামির প্রেসক্রিপশনে পরিচালিত হয় বিএনপি; অগণতান্ত্রিক ও অগঠনতান্ত্রিকভাবে কমিটি ভাঙে-গড়ে, বহিষ্কার-পুরস্কার নির্ধারিত হয় এবং কমিটি ও মনোনয়ন নিয়ে বাণিজ্য চলে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আয়নার সামনে নিজের অসহায়-নিরুপায়-পরাধীন চেহারা দেখতে দেখতে বিএনপি মহাসচিব ফখরুল সাহেব জনগণের বাক-স্বাধীনতাকে ওই একই ফ্রেমে বন্দি করে ফেলেছে! তাই মির্জা ফখরুল সাহেব তোতা পাখির মতো সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারে লিপ্ত থাকেন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মানুষের বাক, ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলেছেন। মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্য ভূতের মুখে রাম নাম ছাড়া কিছু নয়! কারণ বিএনপি কখনোই জনগণের বাক-স্বাধীনতা ও জনমতকে ধারণ করেনি। বিএনপির জন্মই হয়েছিল বন্দুকের নলের মুখে জনগণকে জিম্মি করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের বাক-স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অবাধ সুযোগ প্রতিষ্ঠায় অবিরাম আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশে মানুষের বাক, ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা সুসংহত হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের মধ্য দিয়ে মতপ্রকাশের অনিরুদ্ধ দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘অর্ধশতাধিক বেসরকারি টেলিভিশন, এফএম রেডিও, কমিউনিটি রেডিও এবং সহস্রাধিক সংবাদপত্রের নিবন্ধন দিয়ে সরকার মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্প্রসারিত করেছে। সেই সঙ্গে ডিজিটাল বাংলাদেশের কল্যাণে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাক, ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার দুয়ার উন্মুক্ত হয়েছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতার সুযোগের অপব্যবহার করে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা প্রতিনিয়ত চিরায়ত ভঙ্গিতে সরকারের বিরুদ্ধে নিলর্জ্জভাবে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। শুধু বাক-স্বাধীনতা ভোগ করাই নয়, নিজেদের ইচ্ছা মতো মনগড়া অপপ্রচার চালাতেও তারা কুণ্ঠাবোধ করে না।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘শেখ হাসিনা জনগণের কল্যাণে, গণ-আকাঙক্ষা ও প্রত্যাশাকে ধারণ করেই সরকার পরিচালনা করে আসছে। মানুষকে নির্বাক করে রাখতে নয় বরং গণমানুষের আশা-আকাঙক্ষা প্রতিধ্বনিকে প্রতিষ্ঠা করতেই পরিচালিত হয় সরকারের সকল উদ্যোগ।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি আমলে জনগণের বাক-স্বাধীনতা এবং ন্যূনতম নাগরিক অধিকারও ছিল না। বিএনপি রাষ্ট্রযন্ত্রকে অপব্যবহার করে গোষ্ঠীতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল।
‘রাষ্ট্রযন্ত্রকে অপব্যবহার করে বিরোধীদলকে নিশ্চিহ্ন করতে ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের নারকীয় গ্রেনেড হামলার মতো ভয়াবহ গণহত্যা সংঘটিত করেছিল বিএনপি।’
আরও পড়ুন:আলোচনা ও মতবিনিময়ের জন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিকে চিঠি দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার ডিও পত্রের মাধ্যমে এই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
চিঠিতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দলীয় অন্য নেতৃবৃন্দ এবং প্রয়োজনে সমমনা দলগুলোর নেতৃবৃন্দসহ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
চিঠিতে সিইসি লিখেছেন, ‘২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর ধারাবাহিকভাবে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন করে আসছি।
বর্তমান কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সংসদ নির্বাচনের কথা অনুধাবন করে আসছে।’
চিঠিতে বর্তমান ইসি ও আগামী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বর্তমান কমিশনের প্রতি অনাস্থা ব্যক্ত করে প্রত্যাখ্যান করে আসছে। আপনারা নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও আপনাদের এমন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও কৌশলের বিষয়ে কমিশনের কোনো মন্তব্য নেই।’
চিঠিতে সিইসি বলেন, ‘আপনাদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হলেও কমিশন মনে করে বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে আনুষ্ঠানিক না হোক, অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা বা মতবিনিময় হতে পারে। আপনাদের নির্বাচন কমিশনে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। সদয় সম্মত হলে দিনক্ষণ আলোচনা করে নির্ধারণ করা যেতে পারে। প্রত্যুত্তর প্রত্যাশা করছি।’
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির আন্দোলন চোরাবালিতে আটকে গেছে। তাদের আন্দোলনের সঙ্গে জনগণ নেই। ফলে সেই আন্দোলন সফল হবে না এবং হতেও পারে না।
বৃহস্পতিবার ফরিদপুর সার্কিট হাউস মিলনায়তনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি ঢাকঢোল পিটিয়ে আন্দোলন শুরু করে আর প্যানপ্যানানি দিয়ে শেষ করে। তারা দৌড়াতে দৌড়াতে পদযাত্রা তারপর মানববন্ধন করে দাঁড়িয়ে গেছে।
‘বিএনপির আন্দোলন ছিল শুধু তাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে। এতে জনগণের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। ফলে তারা গণআন্দোলন করতে পারেনি। এখন বিএনপির টার্গেট দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা।
কাদের বলেন, ‘অবৈধ দলের অবৈধ মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বড় বড় কথা বলেন। তার নিজ দলেই কোনো গণতন্ত্র নেই। অথচ তারা আমাদের গণতন্ত্রের সবক দেন। তাদের নেতা নেই। তারা দণ্ডিত ব্যক্তিকে নেতা বানান। তাও লন্ডনে পলাতক। যে লন্ডনে পলাতক রয়েছে তাকে বানিয়েছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। যে দলের নেতা নেই সেই দল আন্দোলনেও ব্যর্থ, নির্বাচনেও ব্যর্থ।’
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দুজনই দণ্ডিত। কাজেই বিএনপির এখন আর কিছুই করার নেই। তারা এখন দেশে নাশকতা করবে, বিশৃংখলা করবে, সন্ত্রাস করবে। সেজন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে। আমরা গায়ে পড়ে ঝগড়া করব না। কিন্তু আক্রান্ত হলে ছাড়ব না। আমাদের ওপর আক্রমণ হলে পাল্টা আক্রমণ করব।’
৭ মার্চের ভাষণ সাতটি ভাষায় উপস্থাপন
মতবিনিময় শেষে বিকেল সাড়ে ৩টায় ফরিদপুরে শেখ জামাল স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ সাতটি বিদেশি ভাষায় উপস্থাপনস্থলে যান।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ অনুষ্ঠানে ৭ মার্চের ভাষণটি স্প্যানিজ ভাষায় মোসা. তানভিন ইসলাম, চাইনিজ ভাষায় মো. মারুফ আহমেদ, ফারসি ভাষায় শেখ মো. নাজমুল ইসলাম, ফ্রেঞ্চ ভাষায় কৌশিক সাহা, হিন্দি ভাষায় শ্রেয়া তুলশিয়ান প্রীতি, আরবি ভাষায় সাইফুল ইসলাম সাব্বির ও ইংরেজি ভাষায় ফারহানা জামান উপস্থাপন করেন।
জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর লাবু, পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা ও পৌর মেয়র অমিতাভ বোস।
অনুষ্ঠানে ৭টি ভাষায় বঙ্গবন্ধুর ভাষণ উপস্থাপনকারী এবং ৭ মার্চের ভাষণ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য