খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলা মেহেরপুর বিসিক শিল্পনগরীর এখন করুণ দশা। প্রতিষ্ঠার আট বছর পেরিয়ে গেলেও বিসিক শিল্পনগরীতে ফিরছে না প্রাণ। বাহির থেকে দেখে বোঝার উপাই নেই, আসলে এটি বিসিক শিল্পনগরী, নাকি গাড়ি চালনা শেখার মাঠ, নাকি গরু-ছাগলের চারণভূমি।
প্লট বরাদ্দ নিয়ে জায়গা দখল করে বাগান করে ফেলে রেখেছেন উদ্যোক্তারা। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও কোনো কার্যক্রম শুরু করছেন না তারা।
প্লট বরাদ্দ নিতে আগ্রহ নেই নতুন উদ্যোক্তাদের। তাদের অভিযোগ, মেহেরপুর বিসিক শিল্পনগরীর পরিবেশ শিল্পবান্ধব নয়। বিদ্যুৎব্যবস্থা থেকে শুরু করে ড্রেনেজব্যবস্থা নেই। নিরাপত্তাও নেই। ফলে ইচ্ছা থাকলেও এখানে অনেকে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চাইছেন না।
বিসিক কর্মকর্তারা বলছেন, বিসিক শিল্পনগরীতে প্লট বরাদ্দ নিয়ে যেসব উদ্যোক্তা শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছেন না, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন তারা। শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য সহযোগিতা করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কে পুলিশলাইনের সামনে খেড়ের মাঠ নামক জায়গায় ১০ একর জমির ওপর ২০০৬ সালে ৭০টি প্লট নিয়ে যাত্রা শুরু করে মেহেরপুর বিসিক শিল্পনগরী। এ সময় ৩৫টি শিল্প ইউনিটের জায়গায় ৬৮টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আর খালি রয়েছে ২টি ইউনিট। সেখানে ২৭ হাজার বর্গফুট জায়গা খালি পড়ে আছে। প্রতি শতাংশ জমির মূল্য ধরা হয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা করে।
বতর্মানে বিসিক শিল্পনগরীতে চালু রয়েছে ৯টি কারখানা। তবে তা চলছে কোনো রকমে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।
বিসিক শিল্পনগরীর শর্ত অনুযায়ী প্লট বরাদ্দ নেয়ার ১৮ মাসের মধ্যে উৎপাদনে যেতে হবে। এ শর্তকে তোয়াক্কা না করে প্লট বরাদ্দ নেয়া উদ্যোক্তারা সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করে তার মধ্যে গাছ লাগিয়ে বাগান করে ফেলে রেখেছেন।
খোলা জায়গায় গরু-ছাগল বেঁধে রাখার ফলে বিসিকের জায়গা এখন চারণভূমিতে পরিণত হয়েছে। বিসিক শিল্পনগরীর পাশে থাকা টিটিসি ট্রেনিং সেন্টারের প্রশিক্ষণ গাড়িগুলোর প্রশিক্ষণ চলছে বিসিকের সীমানার মধ্যে থাকা নির্মীয়মাণ সড়কে। সড়কেরও কার্পেটিং উঠে গেছে।
লতা-পাতা আর জঙ্গলে ভরে গেছে বিসিক নগরীর খালি প্লটগুলো। সন্ধ্যা হলেই মাদকসেবীদের আড্ডা বসে এখানে।
অপূর্ব চানাচুর কোম্পানির স্বত্বাধিকারী আকবর আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘উদ্যোক্তাদের বড় সমস্যা, এরা ঠিকমতো আসেন না। বিসিক কর্মকর্তারা আমাদের চিঠি দেন, কিন্তু উদ্যোগ নেন না। আমরা হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছি। সব ইউনিট চালু হলে এখানে প্রাণ ফিরবে।’
আল মদিনা স্টিল ফার্নিচারের স্বত্বাধিকারী হাশেম হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যারা প্লট নিয়েছেন, তারা বাউন্ডারি দিয়ে গাছ লাগিয়ে জঙ্গল বানিয়েছেন। সম্প্রতি বিসিকের সামনের দিকের জঙ্গল কেটেছে। অন্যদিকে জঙ্গল আছে। বিসিক কর্মকর্তারা দেখে যান, কিছুই করেন না।’
নতুন উদ্যোক্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি পার্কিং টাইলসের ব্যবসা করি। আমার টাইলস কারখানা গ্রামের মধ্যে। সেখান থেকে টাইলস বানিয়ে শহরে নিয়ে এসে ব্যবসা করতে খরচ বেড়ে যায়। তাই আমি ভাবলাম বিসিকের মধ্যে অনেক সরকারি জায়গা পড়ে আছে, সেখানে জায়গা পেলে আমাদের খরচ কমে যাবে এবং দ্রুত শহরের মধ্যে মাল ডেলিভারি দিতে পারব। অথচ এখানে এসে খোঁজ নিয়ে দেখি, কোনো জায়গা ফাঁকা নেই। অথচ বাস্তবে দেখি সব জায়গাই ফাঁকা পড়ে আছে।’
মেহেরপুর চেম্বার অফ কমার্সের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল এনাম বকুল বলেন, ‘বিসিক কর্মকর্তা আর উদ্যোক্তাদের মাঝে সমন্বয়ের ঘাটতি আছে। ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তাসহ সার্বিক সেবা প্রদান নিশ্চিত করতে ব্যর্থ বিসিক। সেই সঙ্গে যেসব উদ্যোক্তা অর্থসংকটের কারণে ব্যবসা চালু করতে পারছেন না, তাদের যদি ঋণ দেয়া হয়, তাহলে তারা শিল্প চালু করতে পারবে।’
মেহেরপুর বিসিক শিল্পনগরীর উপব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. ইব্রাহিম খলিল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিসিক শিল্পনগরী অনেক দিন ধরে পতিত হয়ে আছে। সেখানে কোনো শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠেনি। ইতোমধ্যে শিল্প ইউনিটের মালিকদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে এবং সেখানকার সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এর সমাধান করা হবে। তা ছাড়া শিল্পোদ্যোক্তাদের কাছে অর্ধকোটি টাকার বেশি সার্ভিসচার্জ বকেয়া আছে।
‘বিসিক শিল্পনগরী সব সময় নতুন উদ্যোক্তাদের স্বাগত জানায়। মেহেরপুর বিসিক শিল্পনগরী খুব দ্রুত সময়ে প্রাণ ফিরে পাবে এবং এটি সম্ভাবনাময় শিল্প এলাকা হিসেবে এগিয়ে যাবে, সে লক্ষ্যে কাজ করছি।’
আরও পড়ুন:ঈদ ও রমজানসহ বিভিন্ন পার্বণ সামনে রেখে বরাবরই রেমিট্যান্সে বাড়তি প্রবাহ তৈরি হয়। ব্যতিক্রম হচ্ছে না এবারও। রমজান মাস সামনে রেখে বাড়তে শুরু করেছে রেমিট্যান্স। পরিবার-পরিজনের কাছে বেশি বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। চলতি মার্চ মাসের ১৭ দিনেই ১১৬ কোটি ৪২ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন তারা।
ব্যাংকগুলোতে বর্তমানে রেমিট্যান্সে প্রতি ডলারের বিপরীতে ১০৭ টাকা দেয়া হচ্ছে। সে হিসাবে এই ১৭ দিনে ১২ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা দেশে পাঠিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা। প্রতিদিন গড়ে এসেছে ৭৩৩ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) আট মাস ১৭ দিনে ১ হাজার ৫১৮ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় সাড়ে ৪ শতাংশ বেশি।
রেমিট্যান্স প্রবাহে বাড়তি গতি আসায় স্ফীত হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও। রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩১ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার।
ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পবিত্র রমজান মাস শুরু হবে ২৩ মার্চ (চাঁদ দেখাসাপেক্ষে)। রোজা ও ঈদ সামনে রেখে আগামী দিনগুলোতে রেমিট্যান্স আরও বাড়বে আশা করা যায়।
দেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ সূচক রেমিট্যান্সের প্রবাহ টানা তিন মাস বাড়ার পর ফেব্রুয়ারিতে হোঁচট খায়। ওই মাসে ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। তার আগের তিন মাসে এসেছিল যথাক্রমে ১৫৯ কোটি ৫২ লাখ, ১৬৯ কোটি ৯৭ লাখ ও ১৯৫ কোটি ৮৯ লাখ ডলার। সে হিসাবে প্রতিদিন এসেছিল ৫ কোটি ২৫ লাখ ডলার।
মার্চ মাসে এই সূচকে ফের গতি ফিরেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক রোববার রেমিট্যান্স প্রবাহের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, এই মাসের প্রথম ১৭ দিনে ১১৬ কোটি ৪২ লাখ ডলারের যে রেমিট্যান্স এসেছে, তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ৬ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে প্রায় ১৫ কোটি ডলার। বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২ কোটি ৫২ লাখ ২০ হাজার ডলার। ৪২টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৯৮ কোটি ৬১ লাখ ১০ হাজার ডলার। আর ৯টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩৭ লাখ ৪০ হাজার ডলার। এই গতিতে রেমিট্যান্স এলে মাস শেষে ২ বিলিয়ন বা ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন ব্যাংকাররা।
বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর সূচক বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভের অন্যতম প্রধান উৎস প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স।
২০২১-২২ অর্থবছরে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স আসে, যা আগের বছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ কম ছিল।
চলতি অর্থবছরটা বেশ উল্লম্ফনের মধ্য দিয়েই শুরু হয়। প্রথম মাস জুলাইয়ে ২১০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা। আগস্টে আসে ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। পরের মাস সেপ্টেম্বরে এক ধাক্কায় তা নেমে আসে ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলারে। অক্টোবরে তা আরও কমে দাঁড়ায় ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলারে।
রেমিট্যান্সে নিম্নগতি থেমে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দেয় নভেম্বরে। এই মাসে রেমিট্যান্স আসে ১৫৯ কোটি ৫২ লাখ ডলার। আর ডিসেম্বরে আসে ১৭০ কোটি ডলার। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে তা বেড়ে হয় ১৯৬ কোটি ডলার। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে তা আবার ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলারে নেমে যায়।
ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স কমার কারণ জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, ‘প্রতি বছরই ফেব্রুয়ারি মাসে অন্যান্য মাসের চেয়ে রেমিট্যান্স কিছুটা কম আসে। কারণ ফেব্রুয়ারি মাস ২৮ দিনে শেষ হয়।’
বর্তমানে রেমিট্যান্স বাড়ার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রতি বছরই রোজা ও দুই ঈদের আগে রেমিট্যান্স বাড়ে; এবারও তাই হচ্ছে। দুই-তিন দিন পর রোজা শুরু হবে। রোজা সামনে রেখে প্রবাসীরা পরিবার-পরিজনের বাড়তি প্রয়োজন মেটাতে বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন।
‘এই ইতিবাচক ধারা রোজার ঈদ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছি। এরপর কোরবানির ঈদ সামনে রেখে চলতি অর্থবছরের শেষ মাস জুনেও রেমিট্যান্স বাড়বে।’
ব্যাংকের চেয়ে খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম বেশি হওয়ায় বেশি টাকা পাওয়ার জন্য মাঝে কয়েক মাস প্রবাসীরা অবৈধ হুন্ডির মাধ্যমে দেশে অর্থ পাঠিয়েছেন। এর ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স কমে গিয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক হুন্ডির বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়ায় এখন ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়তে শুরু করেছে।
২০২০-২১ অর্থবছরে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে, যা ছিল আগের বছরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।
বাড়ছে রিজার্ভ
রোববার দিন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩১ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার। গত ৭ মার্চ এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের ১ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৩১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছিল। রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়ায় গত কয়েক দিনে তা কিছুটা বেড়ে ৩১ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।
আরও পড়ুন:চিনির দাম কেজিতে পাঁচ টাকা কমাতে ব্যবসায়ীরা রাজি হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেছেন, ‘চিনির শুল্ক ও ভ্যাট কমানোর কারণে কেজিতে সাড়ে ৪ টাকার মতো কমে আসবে। আমরা ব্যবসায়ীদের চিনির দাম কেজিতে ৫ টাকা কমানোর অনুরোধ করছি। তারা আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছেন। রোজার প্রথম সপ্তাহেই কম দামের চিনি বাজারে পাওয়া যাবে।’
রোববার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের সভা শেষে সাংবাদিকদের টিপু মুনশি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘ট্যারিফ হ্রাসকৃত চিনি এখনো বাজারে আসেনি। রোজার প্রথম সপ্তাহে ট্যারিফ সুবিধায় আমদানি হওয়া পণ্য পাওয়া যাবে। মিলগেটর মূল্য থেকে খুচরা পর্যায়ে প্রায় ৫/৬ টাকা বেশি দামে চিনি বিক্রি হয়। আমদানিকারকরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মিলগেটের দামে ট্রাকসেলে তারা চিনি বিক্রি করবেন। এতে ভোক্তাদের ৫ থেকে ৬ টাকা সাশ্রয় হবে।’
রোজায় চিনির কোনো সংকট হবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে চিনির যে মজুদ আছে এবং যে পরিমাণ চিনি পাইপলাইনে রয়েছে, তাতে সরবরাহে কোনো ঘাটতি হবে না।’
রোজায় নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে না উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, ছোলা, ডাল, শাকসবজিসহ সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। কোনো পণ্যের ঘাটতি বা মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই।’
প্রয়োজনের অতিরিক্ত পণ্য না কেনার আহবান জানিয়ে টিপু মুনশি বলেন, ‘এক সঙ্গে বেশি পণ্য ক্রয় করে বাজারে কোনো ধরনের প্যানিক (আতঙ্ক) সৃষ্টি করবেন না।’
চাহিদা মত পেঁয়াজ আমদানি করা হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। রোজার মাসে আমরা পেঁয়াজের বাজার নিবিড় মনিটারিং করবো। কোনো কারণে দাম বেড়ে গেলে ভারত থেকে আমদানির পরিমাণ বাড়ানো হবে।’
বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে নজরদারি বাড়ানো হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘রোজা উপলক্ষে বেগুন, টমেটো, শসা, মুরগির মাংসসহ অন্যান্য কৃষিজাত পণ্যের ব্যবহার বেড়ে যায়। সেই সুযোগে মহাসড়কে খাদ্যদ্রব্য ও শাক সবজি আনার পথে কোনোভাবেই যেন চাঁদাবাজি না হয় সে ব্যাপারে কঠোর মনিটারিং করা হবে। ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ ব্যাপারে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সকল জেলা প্রশাসনকেও বলা হবে।’
টিসিবির মাধ্যমে সরকার নিত্যপণ্যে ভর্তুকি দিচ্ছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ১ কোটি পরিবারকে ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপণ্য দেয়া হচ্ছে। সে হিসাবে প্রায় ৫ কোটি মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। দেশে দারিদ্র্যসীমার নিচে ২০ শতাংশ মানুষকে যদি ধরা হয়, তাহলেও দেখা যায় টিসিবির মাধ্যমে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ মানুষ সুবিধা পাচ্ছেন। এবার রোজার মাসে দুইবার করে টিসিবির পণ্য দেয়া হবে। সাধারণ মানুষকে সহায়তা দিতে সরকার বছরে টিসিবির মাধ্যমে ৯৮০০ কোটি টাকার ভর্তুকি দিচ্ছে।’
অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিয়ে টিপু মুনশি বলেন, ‘কোনো ব্যবসায়ী অবৈধভাবে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাজারে মুরগির দাম ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নিয়েছে।’
বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দামের বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমেছে। কিন্তু দেশে মার্কিন ডলারের বাড়তি দাম থাকায় আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্যহ্রাসের সুফলটা পাওয়া যাচ্ছে না।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে টাস্কফোর্স সভায় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মো. ফয়জুল ইসলাম, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান, এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবুসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের মধ্যে গ্রিন ট্রান্সফর্মেশন ফান্ড (জিটিএফ) এর আওতায় পার্টিসিপেশন এগ্রিমেন্টে-এর স্বাক্ষর হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে এই আয়োজনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
চুক্তি স্বাক্ষর শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার সোনালী ব্যাংকের সিইও অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আফজাল করিমের কাছে চুক্তিপত্র হস্তান্তর করেন। এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নররা ও সোনালী ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
চলতি হজ মৌসুমে হজযাত্রীদের প্রথম ফ্লাইট শুরু হবে ২১ মে। ওইদিন রাত পৌনে ৪টায় প্রথম হজ ফ্লাইট হজযাত্রীদের নিয়ে সৌদি আরবের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ জানায়, বিমানের প্রথম ফ্লাইট বিজি-৩০০১ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জেদ্দার উদ্দেশে যাত্রা করবে এবং ফ্লাইটটি জেদ্দা বিমানবন্দরে স্থানীয় সময় ২২ মে সকাল সাড়ে ৭টায় অবতরণ করবে। আর ২২ জুন বিমানের প্রি-হজ ফ্লাইট শেষ হবে।
রাজধানীর কুর্মিটোলায় বলাকা ভবনে রোববার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শফিউল আজিম। হজসহ সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিমান।
বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পবিত্র হজ পালনের অনুমতি পেয়েছেন। এর মধ্যে বিমান ৫০ শতাংশ অর্থাৎ ৬৩ হাজার ৫৯৯ জন পরিবহন করবে। হজযাত্রী পরিবহনে বিমানের নিজস্ব ৪টি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর উড়োজাহাজ এবং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার ব্যবহৃত হবে।’
শফিউল আজিম জানান, এবারের প্রি-হজ ফ্লাইটে মোট ১৬০টি ডেডিকেটেড ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। এর মধ্যে ঢাকা-জেদ্দা রুটে ১১৬টি, ঢাকা-মদিনা রুটে ২০টি, চট্টগ্রাম-জেদ্দা রুটে ১৪টি, চট্টগ্রাম-মদিনা রুটে ৬টি, সিলেট-জেদ্দা ও সিলেট-মদিনা রুটে ২টি করে ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম এক লাফে রেকর্ড ৭ হাজার টাকার বেশি বাড়ানো হয়েছে। আর স্বর্ণের ভরি ছুঁতে চলেছে লাখ টাকার ঘর।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) শনিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, রোববার থেকে দেশের বাজারে সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) প্রতি ভরি স্বর্ণ বিক্রি হবে ৯৮ হাজার ৭৯৪ টাকায়।
এছাড়া ২১ ক্যারেট ৯৪ হাজার ৩০৩ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৮০ হাজার ৮৩২ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির সোনা ৬৭ হাজার ৩০১ টাকা ভরি বিক্রি হবে।
দেশে তিন সপ্তাহের ব্যবধানে স্বর্ণের দামে এমন উল্লম্ফন ঘটল। বাংলাদেশে এর আগে আর কখনোই এক দিনে স্বর্ণের দাম এমন অংকে বাড়েনি।
এর আগে ২৬ ফেব্রুয়ারি ভরিতে ১ হাজার ১৬৬ টাকা কমিয়ে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল বাজুস। সেই দর অনুযায়ী শনিবার পর্যন্ত ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণ বিক্রি হয়েছে ৯১ হাজার ৯৬ টাকায়।
এদিকে স্বর্ণের দাম কমানো হলেও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী, ২২ ক্যারেটের রুপার দাম প্রতি ভরি ১ হাজার ৭১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২১ ক্যারেটের দাম ১ হাজার ৬৩৩ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১৪০০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১০৫০ টাকায় অপরিবর্তিত আছে।
গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি ভরি স্বর্ণের (২২ ক্যারেট) দাম ছিল ৮৭ হাজার ২৪৭ টাকা। ওইদিন ১ হাজার ১৬৬ টাকা বেড়ে হয় ৮৮ হাজার ৪১৩ টাকা। এরপর থেকে ক্রমাগত বাড়ছে স্বর্ণের দাম।
৭ জানুয়ারি ২ হাজার ৩৩৩ টাকা বেড়ে হয় ৯০ হাজার ৭৪৬ টাকা, ১৪ জানুয়ারি ২ হাজার ৬৮৩ টাকা বেড়ে হয় রেকর্ড ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা। এরপর ৪ ফেব্রুয়ারি স্বর্ণের দাম কিছুটা কমলেও তা ৯০ হাজারের ঘরেই থেকে যায়।
সবশেষ শনিবার এক লাফে ৭ হাজার ৬৯৮ টাকা বাড়িয়ে প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হলো ৯৮ হাজার ৭৯৪ টাকা।
আরও পড়ুন:টাকার অংকে বা মূল্যভিত্তিক রপ্তানি বাড়লেও কার্যাদেশের দিক থেকে প্রবৃদ্ধি হয়নি। বরং আগের বছর তুলনায় পোশাক পণ্য রপ্তানি কমেছে। এর প্রভাবে আগামী এপ্রিল মাস থেকে মূল্যভিত্তিক রপ্তানি আয়ও কমে যাবে।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান এসব কথা বলেছেন।
শনিবার বিজিএমইএ’র সভা কক্ষে পোশাক শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ফারুক হাসান। এ সময় বিজিএমএ’র ভাইস প্রেসিডেন্ট নাসির উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
ফারুক হাসান বলেন, ‘ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে এক অস্থির পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এর প্রভাব পড়েছে আমাদের অর্থনীতি ও শিল্পে। আমাদের প্রধান বাজারগুলো বিশেষ করে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছেছে।
‘মূল্যস্ফীতির কারণে এসব উন্নত দেশের ভোক্তারা ভোগ্যপণ্যের ব্যয় কমিয়ে দিয়েছে। ফলে কমে আসছে পোশাকের চাহিদা। এমন বাস্তবতায় পোশাকের অর্ডার কমিয়ে দিয়েছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে অফ প্রাইস বা ডিসকাউন্টেড পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বাড়ছে।’
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, এলডিসি গ্রাজুয়েশন পরবর্তীতে আমাদের বড় ধরনের সংকটের মধ্যে পড়তে হবে। বিশেষ করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ মানবাধিকার ও ডিউ ডিলিজেন্স প্রটোকল গ্রহণ করছে। যেগুলো প্রতিপালন করতে আমাদের সক্ষমতা তৈরি করতে হবে।
‘আবার এই প্রটোকলগুলো ইউজার লেভেলে যেন কোনো ভোগান্তি তৈরি না করে সেজন্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানত দুটি কারণে রপ্তানি অর্ডার ক্রমাগত কমছে। প্রথমত, বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির কারণে জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে আমাদের উৎপাদন খরচ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। তার প্রভাব পড়ছে পোশাকের মূল্যের ওপর।
‘দ্বিতীয়ত, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের শিল্পের মূল্য সংযোজিত পণ্যে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ হয়েছে। আমাদের বেশ কিছু কারখানা অপেক্ষাকৃত উচ্চ মূল্যে পণ্য রপ্তানি করছে। ফলে পোশাকের ইউনিট প্রাইস বেড়েছে। সুতরাং আমাদের যে হারে মূল্যভিত্তিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে সে অনুপাতে পরিমাণভিত্তিক প্রবৃদ্ধি হয়নি।’
আরও পড়ুন:তামাক শিল্পের অস্তিত্ব রক্ষায় সিগারেটের নিম্ন স্ল্যাব দেশীয় কোম্পানির জন্য সংরক্ষণ এবং প্রতিযোগিতা আইনের দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি করেছে দেশীয় তামাক কোম্পানিগুলো।
রাজধানীর সিক্স সিজনস হোটেলে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান লোকালি ওন্ড সিগারেট ম্যানুফেকচারার মালিক সমিতি।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নাজমুন নাহার লাকি লিখিত বক্তব্যে দাবি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “অভ্যন্তরীণ রাজস্বের সিংহভাগ আসে মূসক খাত হতে। আর এই খাতে আহরিত মোট রাজস্বের এক তৃতীয়াংশ আসে দেশের সিগারেট খাত হতে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশীয় শিল্পের বিকাশ, উৎপাদন বৃদ্ধি, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, বেকারত্ব দূরীকরণসহ শিল্প বাণিজ্যের উন্নয়নে সকল সেক্টরে ইতিবাচক নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেছেন।
“শুধু দেশীয় শিল্পের বিকাশ ও স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য ২০২১-২২ অর্থবছরে বাজেটে ‘Made in Bangladesh’ স্লোগানে দেশীয় শিল্পকে বিশেষ প্রণোদনা অথবা কর অব্যাহতি সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। দেশীয় শিল্প উদ্যোক্তা হিসেবে আমরাও সিগারেট খাতে অনুরূপ প্রণোদনা ও স্বার্থ সংরক্ষণের নীতি সহায়তা চাই।”
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, “মাননীয় অর্থমন্ত্রী ২০১৮-১৯ সালের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে দেশীয় কোম্পানির স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য নীতিমালা গ্রহণ করে বলেন, ‘বিদেশি ব্র্যান্ডের সিগারেট শুধু মধ্যম এবং উচ্চ স্তরে তৈরি করা যাবে। নিম্ন স্তরে কোনো বিদেশি ব্র্যান্ড আমরা অ্যালাউ করব না, এটা শুধু দেশি শিল্পের জন্য, দেশি ব্র্যান্ডের জন্য রিজার্ভ থাকছে।’”
এই নির্দেশনা উপেক্ষিত হচ্ছে জানিয়ে সংগঠনের সেক্রেটারি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে ইতিপূর্বে বাজেটের মাধ্যমে গৃহীত সকল সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়ন হয়েছে। শুধু সিগারেট খাতে শতভাগ দেশীয় মালিকানাধীন শিল্পের সুরক্ষার্থে এবং জাতীয় বৃহত্তর স্বার্থে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটের মাধ্যমে অনুমোদিত এই সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নে বিলম্বিত হচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, দেশে সিগারেটের বাজার প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি। এ খাতে সরকারের চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আহরণ হবে ৩০ হাজার কোটি টাকা। এ খাতের ব্যবসায়িক লাভ ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি ডিভিডেন্ট হিসেবে বৈদেশিক মুদ্রায় বাইরে নিয়ে যাচ্ছে। তারা এই লাভের কোনো অংশ দেশের অন্য কোন খাতে বিনিয়োগ করে না। অন্যদিকে দেশীয় কোম্পানির লাভ দেশেই থেকে যায় এবং অন্যান্য খাতে রাজস্ব সঞ্চারি বিনিয়োগের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।
সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়ে লাকি বলেন, ‘২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট নীতি অনুযায়ী বাজারের ভারসাম্য এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিম্ন স্ল্যাবের ব্র্যান্ড শুধু শতভাগ দেশীয় মালিকানাধীন কোম্পানির জন্য সংরক্ষিত রাখা এবং এর মূল্য বৃদ্ধি না করে শতভাগ দেশীয় মালিকানাধীন তামাক কোম্পানিগুলোর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সুযোগ দিতে হবে।’
তিনি সিগারেট খাতে দেশীয় শিল্প উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ সুরক্ষা ও বাজারে সুষম বণ্টন ব্যবস্থা আনয়নে প্রতিযোগিতামূলক আইন-২০১২ বাস্তবায়নে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
মন্তব্য