বিএনপির শাসনামলে সংবাদমাধ্যম কর্মীদের ওপর নির্যাতনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যেসব গণমাধ্যম বিএনপির কাছে ধরনা দিচ্ছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেয়া হয়েছে।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের যৌথ সভায় যোগ দিয়ে এ কথা বলেন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন শেখ হাসিনা।
বার্তাসংস্থা বাসস-এর প্রতিবেদনে জানানো হয়, দেশে যাতে আর কেউ কোনো নৈরাজ্য ঘটাতে না পারে পারে সেজন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের যেসব নেতাকর্মী বিএনপি আমলে নির্যাতন মারধরের শিকার হয়েছেন সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারেরও আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, ‘যে সমস্ত মিডিয়া এখন বিএনপির কাছে ধরনা দিচ্ছে, এত টেলিভিশন, এ তো আমারই দেয়া। আমি যদি উন্মুক্ত করে না দিতাম এত মানুষের চাকরিও হতো না এত মানুষ ব্যবসাও করতে পারতো না।’
বিএনপি আমলে সাংবাদিক নির্যাতনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘এই মিডিয়া একটা উল্টা-পাল্টা লিখলেই তো মারতো। তার পরেও এতো আহ্লাদ কিসের, এত তেল মারা কিসের।’
দুর্নীতিবাজ, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও অগ্নিসংযোগকারী সন্ত্রাসীরা যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য জনগণকে সতর্ক থাকতে বলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। তিনি বলেন, ‘অগ্নিসন্ত্রাসীদের আর ক্ষমতায় আসতে দেয়া যাবে না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপির মুখে গণতন্ত্র মানায় না। জিয়াউর রহমান কারফিউতন্ত্র দিয়ে গেছে। আর খালেদা দিয়েছে দুর্নীতিতন্ত্র। বিএনপির দুই গুণ, দুর্নীতি আর মানুষ খুন।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীদের প্রতিটি এলাকায় প্রস্তুত থাকতে হবে যাতে তারা (বিএনপি-জামায়াত) আবার নিপীড়নের পথ অবলম্বন করতে না পারে।’
হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, ‘সবার মনে রাখতে হবে আওয়ামী লীগ কারও পকেট থেকে আসে নাই বরং জাতির পিতার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় এর অস্তিত্ব গভীরে প্রোথিত।’
বিএনপি উর্দি পরা সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমানের পকেট থেকে এসেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাসসের প্রতিবেদনে জানানো হয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘সবাই প্রস্তুত থাকবেন। একটা মানুষের ক্ষতি যেন কেউ করতে না পারে। কেউ আগুন দিয়ে পোড়াতে এলে, যে হাত দিয়ে আগুন দেবে ওই হাতটা ওই আগুনে পুড়িয়ে দিতে হবে। আর বসে থাকার সময় নাই। কোনো ক্ষমা নাই।
‘আর তারেক জিয়া মুচলেকা দিয়ে গিয়েছিলো, সে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। আমি ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করবো, তারেক জিয়াকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনব। ব্রিটিশ সরকারকে বলব যে, তারেক জিয়া সাজা প্রাপ্ত আসামি তাকে হ্যান্ডওভার করতে হবে বাংলাদেশের কাছে। দেশে নিয়ে এসে সাজা আমি বাস্তবায়ন করব।’
তিনি এ সময় জাতির পিতার খুনীদের দেশে ফিরিয়ে দিতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমেরিকা খুনিদের পালছে, আবার কানাডা পালে আরেকটা, পাকিস্তানে আছে দুইটা। সবার কাছে বলব এই খুনিদের ফেরত পাঠাতে হবে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘অগ্নিসন্ত্রাসীদের এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের আর ক্ষমতায় আসতে দেয়া যাবে না, এটা পরিস্কার কথা। ওরা আমাদের উৎখাত করবে? ওরা পকেট থেকে এসেছে আবার পকেটেই থাকবে।’
প্রতিটি এলাকায় নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আর আমাদের যতগুলো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে তাদেরকে বলতে হবে তারা কি শান্তিতে থাকতে চায়? নাকি আবার অশান্তিকে জায়গা দিতে চায়। তাদের সিদ্ধান্ত দিতে হবে।
‘জ্বালাও, পোড়াও, হত্যা, খুন, মানিলন্ডারিং এসবের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এর আগে বহু যন্ত্রনা দিয়েছে তারা। আমরা অনেক সহ্য করেছি। আমার কৃষক শ্রমিক, আমাদের নেতা-কর্মী কারও গায়ে হাত দিলে আর ক্ষমা নেই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জামায়াতকে নিয়ে বিএনপি আবার ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশ পিছিয়ে যাবে। দেশের আর উন্নয়ন হবে না। তারা দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে। আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেবে না। কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে আওয়ামী লীগ বসে থাকবে না।’
বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি আবারও বিশৃঙ্খলা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। রাস্তায় পুলিশের ওপর হামলা করছে। চালডাল দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে খেয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে সরকার পতন করা যাবে না। সরকার পতন করা এতো সহজ কাজ নয়। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হলে আওয়ামী লীগ বসে থাকবে না।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির ব্যবসায়ীই হোক বা আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ীই হোক, সবাই কিন্তু শান্তিতে ব্যবসা করেছে। হাওয়া ভবনও আমরা খুলি নাই বরং ব্যবসা করার সুযোগ করে দিয়েছি। আবারও হাওয়া ভবন আসলে, এখন আরেকটা নাম দিবে। আবারও চুষে চুষে খাবে। শান্তিতে ব্যবসা করতে হবে না। আজ বিএনপিকে যারা তেল মারছে, আমরা তাদেরও হিসাব করব।’
আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০১ সালে তারা যে অত্যাচার আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর করেছে আমরা ২০০৯ এ ক্ষমতায় আসার পর গুনে গুনে সেই অত্যাচারের জবাব দিতে পারতাম, সেই ক্ষমতা আওয়ামী লীগ রাখে। কই আমরা তো তা করি নি। আমরা তো তাদের ওপর এভাবে অত্যাচার নির্যাতন করতে যাইনি। সেই ৭৫ থেকে ২১ বছর এবং এরপর ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত শুধু মার খেয়েছি।’
২০০৮ সালের নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিএনপি ভোট চুরি করেছিল বলেই তাদেরকে জনগণ ২০০৮ সালে ভোট দেয়নি। দেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছে।’
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রেখেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনও ভোট চুরি করে না, জনগণের ভোট সংরক্ষিত করে। তারা আওয়ামী লীগকে ভোট চুরির অপবাদ দেয়ার চেষ্টা করেছিল কিন্তু পারেনি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ক্ষমতা ভোগের বস্তু নয়। বিএনপি-জামায়াত থাকতে দেশের কোনো উন্নতি হয়নি। উন্নয়ন পোকার মতো খেয়েছে। উন্নয়ন করতে মানসিকতা থাকা দরকার। দিকদর্শন থাকা দরকার।
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেব না। দেশের মধ্যে কোনো বিশৃঙ্খলা করতে দেব না। তাদেরকে (বিএনপিকে) আর কোনো ক্ষমা করা হবে না, তাদেরকে কিসের ক্ষমা। বিএনপির নেতাকর্মী শান্তিতে ব্যবসা করছে, আওয়ামী লীগ কোনো বাধা দিচ্ছে না।’
আরও পড়ুন:সুইডেনের পর এবার ডেনমার্কে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। দেশটির রাজধানী কোপেনহেগেনে শুক্রবার তুরস্কের দূতাবাসের কাছে অবস্থিত একটি মসজিদ ও তুরস্কের দূতাবাসের কাছে এ ঘটনা ঘটে।এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, মুসলমানদের পবিত্র মূল্যবোধ ও ধর্মীয় নিদর্শন অবমাননার এ ধরনের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশ আবারও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ডেনমার্কের উগ্র ডানপন্থি রাজনৈতিক কর্মী রাসমুস পালুদান ও তার দল হার্ড লাইনের অনুসারীরা এ ঘটনার সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভে পালুদান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক জোট ন্যাটোতে যতদিন সুইডেনকে অন্তর্ভুক্ত করা না হবে ততদিন এই কর্মসূচি অব্যহত রাখবেন তিনি ও তার অনুসারীরা।
সুইডেন ও ডেনমার্কের দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে পালুদানের। গত ২১ জানুয়ারি স্টকহোমে তুরস্কের দূতাবাসের সামনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনাতেও সংশ্লিষ্টতা আছে তার। সেদিন সুইডিশ অনুসারীরাই সেদিন এ ঘটনা ঘটিয়েছিল।
দেশের অন্যান্য অঞ্চলে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত উত্তরের জেলাগুলোতে সেটি সামান্য কমতে পারে।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এমন আভাস দেয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, উপমহাদেশীয় উচ্চতাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপটি বিরাজ করছে। এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
সারা দেশের আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে পূর্বাভাসে জানানো হয়, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। দেশের উত্তরাঞ্চলে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেরে এবং অন্য অঞ্চলে তা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, তাপমাত্রা সামান্য পরিবর্তন হতে পারে, তবে কোন ধরনের পরিবর্তন, সেটি স্পষ্ট করা হয়নি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ও কক্সবাজারের টেকনাফে। শনিবার দেশের সর্বনিম্ন ১২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়।
আরও পড়ুন:বায়ুদূষণে নিয়মিত সামনের সারিতে থাকা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বাতাস আগের দিনের মতো শনিবারও সবচেয়ে দূষিত বলে জানিয়েছে আইকিউএয়ার।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানিটির র্যাঙ্কিংয়ে আজ সকাল ১০টা ১০ মিনিটের দূষিত বাতাসে ১০০ শহরের মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে ছিল বাংলাদেশের সবচেয়ে জনবহুল নগর।
গতকালের মতো আজও দূষিত বাতাসের দিক থেকে ঢাকার পরের অবস্থানে ছিল পাকিস্তানের লাহোর।
নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর, তা জানায় আইকিউএয়ার।
কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।
৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।
আইকিউএয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।
১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।
র্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়। তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।
সকালের নির্দিষ্ট ওই সময়ে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ২২১। এর মানে হলো খুবই অস্বাস্থ্যকর বাতাসের মধ্যে বসবাস করতে হয়েছে রাজধানীবাসীকে।
আইকিউএয়ার জানায়, ঢাকার বাতাসে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ২৯ দশমিক ২ গুণ বেশি।
আরও পড়ুন:রাজশাহীতে প্রায় ১ হাজার ৩১৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকার ২৫টি প্রকল্প উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আগামী রোববার দিনব্যাপী সফরে এসব প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন তিনি। ওইদিন এছাড়া প্রধানমন্ত্রী আনুমানিক ৩৭৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে আরও ছয়টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করবেন।
সরকারি সূত্রের বরাতে বাসস জানায়, বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলো হলো- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল। রাজশাহী সিটি করপোরেশন প্রায় ৫ কোটি ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নগরীর সিএন্ডবি ক্রসিংয়ে ম্যুরালটি নির্মাণ করেছে।
এ ছাড়া সিটি করপোরেশন আরও যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে সেগুলো হচ্ছে- শেখ রাসেল শিশু পার্ক, মোহনপুর রেল ক্রসিংয়ের ওপর ফ্লাইওভার, চার লেনের সড়ক এবং ভাদ্রা রেল ক্রসিং থেকে নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল পর্যন্ত ধীরগতির যানবাহনের জন্য একটি পৃথক লেনসহ রোড ডিভাইডার, চার লেনের সড়ক এবং রোড ডিভাইডার।
বিলসিমলা রেলক্রসিং থেকে সিটির হাট পর্যন্ত ধীরগতির যানবাহনের জন্য আলাদা লেন এবং সড়ক প্রশস্তকরণ, কল্পনা সিনেমা হল থেকে তালাইমারী ক্রসিং এবং কার্পেটিং সড়কের উন্নয়ন, হাই-টেক পার্ক হয়ে রেন্টুর খারির আড়ত থেকে ধলুর মোড় পর্যন্ত নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ এবং কার্পেটিং। কোর্ট থেকে শাহারতলী ক্লাব পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ।
রাজশাহী নগরীর সিএন্ডবি ক্রসিং সংলগ্ন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সবচেয়ে বড় ম্যুরাল নির্মাণ করা হয়েছে। আরসিসি ‘রাজশাহী সিটিতে সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক’ ২ হাজার ৯৯৩ কোটি টাকার প্রকল্পের অংশ হিসেবে প্রায় ৫ কোটি ২ লাখ টাকা ব্যয়ে দেশের বৃহত্তম ম্যুরাল নির্মাণ করেছে।
ম্যুরালটির উচ্চতা ৫৮ফুট এবং ম্যুরালের মূল অংশে ৫০ফুট উচ্চতা এবং ৪০ফুট চওড়া বঙ্গবন্ধুর ছবি রয়েছে। সীমানা প্রাচীরের উভয় পাশে ৭০০ ফুট জায়গায় টেরাকোটার কাজ করা হয়েছিল। গ্যালারি এবং ল্যান্ডস্কেপিং সুপার গ্রানাইট দিয়ে সুসজ্জিত। ম্যুরালে নাইট ভিশনসহ সুসজ্জিত বৈদ্যুতিক বাতি রয়েছে।
রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ম্যুরালটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ তার জীবন, কর্ম এবং দেশের স্বাধীনতায় প্রশংসনীয় অবদান ও ত্যাগ সম্পর্কে জানতে অনুপ্রাণিত করে।
মানুষের বিশেষ করে শিশুদের বিনোদনের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের লক্ষে রাজশাহী নগরীতে শেখ রাসেল শিশু পার্কের নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে।
আরসিসির উদ্যোগে ছোট বনগ্রাম এলাকায় ২.১৪ একর জমির উপর পার্কটি নির্মাণ করা হয়, যার আনুমানিক ব্যয় প্রায় ৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ প্রায় ১১৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে পুঠিয়া থেকে বাগমারা পর্যন্ত একটি মহাসড়ক নির্মাণ করেছে।
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) প্রায় ১০ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রধান কার্যালয়ের ষষ্ঠ তলা থেকে দশম তলা পর্যন্ত সম্প্রসারণ করেছে।
প্রায় ২০ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) সদর দপ্তর ভবন নির্মাণ করেছে।
লক্ষ্মীপুর এলাকায় প্রায় ১৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজশাহী ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। মোহনপুর উপজেলায় ২২ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে।
প্রায় ২২ কোটি ৯০ লাখ টাকায় রাজশাহী শিশু হাসপাতালও নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ১২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজশাহীতে একটি বহুতল সমাজসেবা ভবন নির্মিত হয়েছে।
রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজে প্রায় ৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ছয় তলার ওপর দুই তলা বিশিষ্ট মহিলা হোস্টেল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।চারঘাট উপজেলায় ১৭ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাঁচতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। রাজশাহী সিভিল সার্জনের অফিস নির্মাণ করা হয়েছে ৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় পদ্মার ভাঙ্গন থেকে বাম তীর রক্ষায় ৬৯৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) গ্রামীণ সংযোগ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৪৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে দুটি সড়ক নির্মাণ করছে।
রাজশাহী পিটিআইতে প্রায় ৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি অডিটোরিয়াম নির্মাণ করা হয়েছে। রাজশাহী মহানগরীতে প্রায় ২ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন।
অন্যদিকে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ২৪ কোটি টাকায় তথ্য কমপ্লেক্স ভবন, ৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা আঞ্চলিক জন প্রশাসন অফিস ভবন, ৬২ কোটি টাকায় শহীদ জননী জাহানারা ইমাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান বালক উচ্চ বিদ্যালয়। ১৬২ কোটি টাকায় বিকেএসপির আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং ৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজশাহী ওয়াসা ভবন নির্মাণ করা।
আরও পড়ুন:সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা বন্ধের পাশাপাশি মাদকদ্রব্যসহ সব ধরনের পণ্যের চোরাচালান বন্ধের দাবিতে কাঁটাতার মিছিল ও সমাবেশ করেছে নতুনধারা বাংলাদেশ (এনডিবি)।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শুক্রবার সমাবেশ শেষে কাঁটাতার মিছিল নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন দলটির নেতারা। মিছিলটি বিজয়নগরে এনডিবির কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিলপূর্ব সমাবেশে বক্তাদের একজন বলেন, দেশের সীমান্তগুলো দিয়ে প্রতিনিয়ত মাদকসহ বিভিন্ন পণ্য চোরাচালানের মাধ্যমে আসে। এসব চোরাচালান করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত হত্যার শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশিরা। সীমান্তে এসব হত্যা বন্ধ এবং মাদকদ্রব্যসহ অন্যান্য পণ্যের চোরাচালান রোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে দেশের অর্থনীতি ধ্বংসের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সভাপতির বক্তব্যে এনডিবির চেয়ারম্যান মোমিন মেহেদী বলেন, ‘আমাদের বন্ধু দেশের মাদকদ্রব্য অহরহ দেশে আসছে। সেই মাদক সেবন করে দেশের মানুষ অসুস্থ হচ্ছে। আবার সেই অসুস্থতার চিকিৎসার জন্য বন্ধু দেশেই যাচ্ছে। এ কেমন বন্ধুত্ব?’
তিনি অনতিবিলম্বে সীমান্ত হত্যা ও চোরাচালান বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা হলেও রোধ করা যায়নি প্রাণহানি।
মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ২০২২ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে ২৩ বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ১৬ জন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২২ সালে দেশের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের হাতে ১৫ জন বাংলাদেশি মারাত্মক শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
আরও পড়ুন:দেশ থেকে শীত চলে যায়নি জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, তাপমাত্রা ওঠানামা করতে পারে দুই থেকে তিন দিন।
শীত চলে যাওয়ার সময় এখনও আসেনি জানিয়ে রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক শুক্রবার নিউজবাংলাকে বলেছেন, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীতের মাস ধরা হয়। এর আগে শীত চলে গেছে বলা যায় না।
দেশের সামগ্রিক আবহাওয়া পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, আগামী দুই থেকে তিন দিন শীত ওঠানামা করতে পারে। অর্থাৎ তাপমাত্রা বাড়া-কমার মধ্যে থাকবে।
২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তরের শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, উপমহাদেশীয় উচ্চতাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত।
এতে বলা হয়, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
কুয়াশা পরিস্থিতি নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
তাপমাত্রা নিয়ে পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে রাতের ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, রাতের তাপমাত্রা কমতে পারে।
আরও পড়ুন:সংবাদকর্মী আহসানুল হক টুটুল মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর। তার মৃত্যুতে সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ী অনেকে শোক প্রকাশ করেছেন।
টুটুলের মরদেহ দিনাজপুরের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নামাজে জানাযা শেষে সেখানেই তাকে দাফন করা হবে।
আহসানুল হক টুটুল দৈনিক কালের কণ্ঠ, আমার দেশ, সকালের খবরসহ বেশকিছু সংবাদ মাধ্যমে কম্পিউটার গ্রাফিকস বিভাগে সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন। কয়েক বছর ধরে তিনি চাকরি ছেড়ে ব্যবসায় নিয়োজিত হয়েছিলেন।
বেশ কয়েক বছর আগে টুটুলের হার্টে ব্লক ধরা পড়ে। জটিল সেই সার্জারি ঢাকায় করা সম্ভব হয়নি। ভারতের চেন্নাইয়ে গিয়ে তিনি হার্টের সার্জারি করান। এরপরও একাধিক বার তিনি চিকিৎসার জন্য চেন্নাইয়ে গেছেন। সেখানকার চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই চলছিলেন তিনি।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দুদিন আগে কল্যাণপুরের পাইকপাড়ার বাসায় হার্ট অ্যাটাক হয় টুটুলের। তাৎক্ষণিক তাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) রেখে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার স্ত্রী সামিনা হক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভির অনলাইন পোর্টালে জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক হিসেবে কর্মরত।
পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে মরহুমের রূহের মাগফিরাত কামনা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য