বিএনপির শাসনামলে সংবাদমাধ্যম কর্মীদের ওপর নির্যাতনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যেসব গণমাধ্যম বিএনপির কাছে ধরনা দিচ্ছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেয়া হয়েছে।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের যৌথ সভায় যোগ দিয়ে এ কথা বলেন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন শেখ হাসিনা।
বার্তাসংস্থা বাসস-এর প্রতিবেদনে জানানো হয়, দেশে যাতে আর কেউ কোনো নৈরাজ্য ঘটাতে না পারে পারে সেজন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের যেসব নেতাকর্মী বিএনপি আমলে নির্যাতন মারধরের শিকার হয়েছেন সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারেরও আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, ‘যে সমস্ত মিডিয়া এখন বিএনপির কাছে ধরনা দিচ্ছে, এত টেলিভিশন, এ তো আমারই দেয়া। আমি যদি উন্মুক্ত করে না দিতাম এত মানুষের চাকরিও হতো না এত মানুষ ব্যবসাও করতে পারতো না।’
বিএনপি আমলে সাংবাদিক নির্যাতনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘এই মিডিয়া একটা উল্টা-পাল্টা লিখলেই তো মারতো। তার পরেও এতো আহ্লাদ কিসের, এত তেল মারা কিসের।’
দুর্নীতিবাজ, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও অগ্নিসংযোগকারী সন্ত্রাসীরা যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য জনগণকে সতর্ক থাকতে বলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। তিনি বলেন, ‘অগ্নিসন্ত্রাসীদের আর ক্ষমতায় আসতে দেয়া যাবে না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপির মুখে গণতন্ত্র মানায় না। জিয়াউর রহমান কারফিউতন্ত্র দিয়ে গেছে। আর খালেদা দিয়েছে দুর্নীতিতন্ত্র। বিএনপির দুই গুণ, দুর্নীতি আর মানুষ খুন।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীদের প্রতিটি এলাকায় প্রস্তুত থাকতে হবে যাতে তারা (বিএনপি-জামায়াত) আবার নিপীড়নের পথ অবলম্বন করতে না পারে।’
হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, ‘সবার মনে রাখতে হবে আওয়ামী লীগ কারও পকেট থেকে আসে নাই বরং জাতির পিতার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় এর অস্তিত্ব গভীরে প্রোথিত।’
বিএনপি উর্দি পরা সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমানের পকেট থেকে এসেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাসসের প্রতিবেদনে জানানো হয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘সবাই প্রস্তুত থাকবেন। একটা মানুষের ক্ষতি যেন কেউ করতে না পারে। কেউ আগুন দিয়ে পোড়াতে এলে, যে হাত দিয়ে আগুন দেবে ওই হাতটা ওই আগুনে পুড়িয়ে দিতে হবে। আর বসে থাকার সময় নাই। কোনো ক্ষমা নাই।
‘আর তারেক জিয়া মুচলেকা দিয়ে গিয়েছিলো, সে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। আমি ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করবো, তারেক জিয়াকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনব। ব্রিটিশ সরকারকে বলব যে, তারেক জিয়া সাজা প্রাপ্ত আসামি তাকে হ্যান্ডওভার করতে হবে বাংলাদেশের কাছে। দেশে নিয়ে এসে সাজা আমি বাস্তবায়ন করব।’
তিনি এ সময় জাতির পিতার খুনীদের দেশে ফিরিয়ে দিতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমেরিকা খুনিদের পালছে, আবার কানাডা পালে আরেকটা, পাকিস্তানে আছে দুইটা। সবার কাছে বলব এই খুনিদের ফেরত পাঠাতে হবে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘অগ্নিসন্ত্রাসীদের এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের আর ক্ষমতায় আসতে দেয়া যাবে না, এটা পরিস্কার কথা। ওরা আমাদের উৎখাত করবে? ওরা পকেট থেকে এসেছে আবার পকেটেই থাকবে।’
প্রতিটি এলাকায় নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আর আমাদের যতগুলো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে তাদেরকে বলতে হবে তারা কি শান্তিতে থাকতে চায়? নাকি আবার অশান্তিকে জায়গা দিতে চায়। তাদের সিদ্ধান্ত দিতে হবে।
‘জ্বালাও, পোড়াও, হত্যা, খুন, মানিলন্ডারিং এসবের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এর আগে বহু যন্ত্রনা দিয়েছে তারা। আমরা অনেক সহ্য করেছি। আমার কৃষক শ্রমিক, আমাদের নেতা-কর্মী কারও গায়ে হাত দিলে আর ক্ষমা নেই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জামায়াতকে নিয়ে বিএনপি আবার ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশ পিছিয়ে যাবে। দেশের আর উন্নয়ন হবে না। তারা দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে। আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেবে না। কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে আওয়ামী লীগ বসে থাকবে না।’
বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি আবারও বিশৃঙ্খলা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। রাস্তায় পুলিশের ওপর হামলা করছে। চালডাল দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে খেয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে সরকার পতন করা যাবে না। সরকার পতন করা এতো সহজ কাজ নয়। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হলে আওয়ামী লীগ বসে থাকবে না।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির ব্যবসায়ীই হোক বা আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ীই হোক, সবাই কিন্তু শান্তিতে ব্যবসা করেছে। হাওয়া ভবনও আমরা খুলি নাই বরং ব্যবসা করার সুযোগ করে দিয়েছি। আবারও হাওয়া ভবন আসলে, এখন আরেকটা নাম দিবে। আবারও চুষে চুষে খাবে। শান্তিতে ব্যবসা করতে হবে না। আজ বিএনপিকে যারা তেল মারছে, আমরা তাদেরও হিসাব করব।’
আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০১ সালে তারা যে অত্যাচার আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর করেছে আমরা ২০০৯ এ ক্ষমতায় আসার পর গুনে গুনে সেই অত্যাচারের জবাব দিতে পারতাম, সেই ক্ষমতা আওয়ামী লীগ রাখে। কই আমরা তো তা করি নি। আমরা তো তাদের ওপর এভাবে অত্যাচার নির্যাতন করতে যাইনি। সেই ৭৫ থেকে ২১ বছর এবং এরপর ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত শুধু মার খেয়েছি।’
২০০৮ সালের নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিএনপি ভোট চুরি করেছিল বলেই তাদেরকে জনগণ ২০০৮ সালে ভোট দেয়নি। দেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছে।’
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রেখেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনও ভোট চুরি করে না, জনগণের ভোট সংরক্ষিত করে। তারা আওয়ামী লীগকে ভোট চুরির অপবাদ দেয়ার চেষ্টা করেছিল কিন্তু পারেনি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ক্ষমতা ভোগের বস্তু নয়। বিএনপি-জামায়াত থাকতে দেশের কোনো উন্নতি হয়নি। উন্নয়ন পোকার মতো খেয়েছে। উন্নয়ন করতে মানসিকতা থাকা দরকার। দিকদর্শন থাকা দরকার।
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেব না। দেশের মধ্যে কোনো বিশৃঙ্খলা করতে দেব না। তাদেরকে (বিএনপিকে) আর কোনো ক্ষমা করা হবে না, তাদেরকে কিসের ক্ষমা। বিএনপির নেতাকর্মী শান্তিতে ব্যবসা করছে, আওয়ামী লীগ কোনো বাধা দিচ্ছে না।’
আরও পড়ুন:দেশের বৃহত্তর স্বার্থে চলতি বছরের আগস্টের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা মনে করি এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব।’
দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পরের দিন মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবির কথা জানান।
এর আগে সোমবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অংশ নেন নেতারা।
চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন আয়োজনে পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, নির্বাচন কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, যেহেতু নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং প্রশাসনে আপেক্ষিক স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে, তাই নির্বাচন পেছানোর কোনো কারণ নেই।’
বিএনপির বর্ষীয়ান এ রাজনীতিক বলেন, সরকার গঠিত নির্বাচন সংস্কার কমিশনও বুধবার তাদের প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে।
ফখরুল বলেন, ‘তাই নির্বাচন পেছানোর কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে আমরা মনে করি না। যত বিলম্ব হবে, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট তত গভীর হবে।’
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন যে, নির্বাচিত সরকারের কোনো বিকল্প নেই। কারণ এটি গণতন্ত্রের ভিত্তি।
আরও পড়ুন:চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে ফের সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন পুলিশের ৪০তম ব্যাচের অব্যাহতিপ্রাপ্ত শিক্ষানবিশ উপপরিদর্শকরা (এসআই)।
আব্দুল গনি রোডে সচিবালয়ের ১ ও ২ নম্বর গেটের বিপরীত পাশে সোমবার সকাল থেকে অবস্থান নেন তারা।
বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে তারা শান্তিপূর্ণভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তারা দাবি পূরণে কোনো আশ্বাস না পেলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানান।
অব্যাহতি পাওয়া এসআইদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘ট্রেনিং থেকে অন্যায়ভাবে অব্যাহতি দেওয়ার প্রতিবাদ ও চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে আমরা ৩২১ জন সাব-ইন্সপেক্টর গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করি। আমাদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র সচিব দেখা করে আমাদের দাবির বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
‘এখন পর্যন্ত আমাদের বিষয়ে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে না পাওয়ায় আমরা সবাই (৩২১ জন) আজ আবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলমান থাকবে।’
অব্যাহতি পাওয়া এসআই অম্লান মিত্র বলেন, ‘আমি ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর ট্রেনিংয়ে অংশ নিই। অব্যাহতি দেওয়া হয় ২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর। আমাকে বলা হচ্ছে ক্লাসে অমনোযোগী এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী। কিন্তু আমি অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষায় ৮০৪ জনে ১০০ জনের মধ্যে ছিলাম। অমনোযোগী থাকলে তো এমন ফলাফল হওয়ার কথা না।’
কর্মসূচিতে আসা আরেকজন নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘আমরা এক বছর অনেক ত্যাগ স্বীকার করে প্রায় বিনা বেতনে ট্রেনিং করেছি। যখন চাকরিতে নিয়মিত হব, তখনই আমাদের বাদ দেওয়া হলো। এর থেকে কষ্টের আর কিছু হতে পারে না।’
৪০তম ক্যাডেট এসআই ব্যাচে প্রশিক্ষণের জন্য মোট ৮২৩ জন ছিলেন। তারা গত বছরের ৪ নভেম্বর থেকে রাজশাহীর সারদায় পুলিশ একাডেমিতে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ শুরু করেন।
তাদের মধ্যে তিন ধাপে ৩১৩ জন এসআইকে মাঠে ও ক্লাসে বিশৃঙ্খলার অভিযোগ তুলে শোকজ করে একাডেমি। এরই মধ্যে তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি) সদ্য নিয়োগ পাওয়া ছয় সদস্যের নিয়োগ বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল হায়াত মো. রফিকের সই করা প্রজ্ঞাপনে সোমবার এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি কর্মকমিশনে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত নিম্ন বর্ণিত ছয় সদস্যের নিয়োগ আদেশ বাতিল করা হলো।
নিয়োগ বাতিল করা ছয় সদস্য হলেন অধ্যাপক ড. শাহনাজ সরকার, মো. মুনির হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. এ এফ জগলুল আহমেদ, ড. মো. মিজানুর রহমান, সাব্বির আহমেদ চৌধুরী ও অধ্যাপক ডা. সৈয়দা শাহিনা সোবহান।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।
দেশে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসের (এইচএমপিভি) প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এক বিজ্ঞপ্তিতে অধিদপ্তর জানায়, চীনসহ উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে ভাইরাসটি উদ্বেগজনকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশু ও ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের মধ্যে এ সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘সেই সাথে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা, যেমন: হাঁপানি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, গর্ভবতী নারী ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য উচ্চ ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে।’
পৃথিবীর অন্যান্য অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও এই রোগের সংক্রমণ দেখা গেছে। কিন্তু রোগটি যাতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সে জন্য বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সংক্রমণ প্রতিরোধে নির্দেশনা
১. শীতকালীন শ্বাসতন্ত্রের রোগ থেকে বাঁচতে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে
২. হাঁচি-কাশির সময় বাহু/টিস্যু দিয়ে নাক মুখ ঢেকে রাখুন
৩. ব্যবহৃত টিস্যুটি অবিলম্বে ঢাকনাযুক্ত ময়লা ফেলার ঝুড়িতে ফেলুন এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার অথবা সাবান পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন
৪. আক্রান্ত হয়েছেন এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন এবং কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন
৫. ঘন ঘন সাবান ও পানি কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুইতে হবে(অন্তত ২০ সেকেন্ড)
৬. অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক, মুখ ধরবেন না
৭. আপনি জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে থাকুন। প্রয়োজনে কাছের হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা রোববার জানান, বাংলাদেশের এক নারী এইচএমপিভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এইচএমপিভি না, নিউমোনিয়ার কারণে তার স্বাস্থ্যের অবস্থার অবনতি ঘটেছে। বর্তমানে ঢাকার একটি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন।
চীনের উত্তরাঞ্চলে রোগটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে এতে আরেকটি মহামারির ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ ভাইরাস থেকে সুরক্ষায় নাগরিকদের পূর্ব সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছে চীনের রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (সিডিসি)।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিয়াং জানান, শীত মৌসুমে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগটির সংক্রমণ বেশি ঘটে। তবে আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার কমই ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন:যুক্তরাজ্যের লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন রোববার এমন তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘তার স্বাস্থ্যের রুটিন পরীক্ষা প্রতিদিনই চলছে। তবে সোমবার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শে বিশেষ কিছু পরীক্ষা করা হতে পারে। হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে দেখেছেন বিখ্যাত হেপাটোলজিস্ট অধ্যাপক জন প্যাট্রিক কেনেডি। এ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অধীনেই তার চিকিৎসা চলছে।
‘হাসপাতালে ভর্তির পরই খালেদা জিয়ার ফিজিওথেরাপি করানো হয়েছে। এতে তার শারীরিক অবস্থার আরও উন্নতি হয়েছে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার সার্বক্ষণিক পরিচর্যা করছেন বলেও জানান জাহিদ হোসেন।
উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৮ জানুয়ারি খালেদা জিয়া লন্ডনে যান। ওই দিনই হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি বিশেষায়িত হাসপাতাল দ্য লন্ডন ক্লিনিকে তাকে ভর্তি করা হয়।
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বিভিন্ন পরীক্ষা এরই করা হয়েছে। সেই পরীক্ষার ফলের ওপর ভিত্তি করে তার চিকিৎসা চলছে।
লিভার সিরোসিস, কিডনি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও আর্থ্রাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া।
আরও পড়ুন:শতাধিক পণ্যে শুল্ক ও কর বাড়ানো হলেও দেশের মানুষের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানোর জন্যই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে দেশের অর্থনীতির স্বাস্থ্যটা ভালো হবে। দেশের মানুষেরই উন্নয়ন হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের অজনপ্রিয় হওয়ার কোনো কারণ নেই।
রাজধানীর ফরেন একাডেমিতে রোববার প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রেস সচিব বলেন, ‘বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশে ট্যাক্স আদায় সবচেয়ে কম। সরকার চায় ট্যাক্স, জিডিপি এমন জায়গায় থাক, যাতে বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটে। তাহলে সামনে দেশের মানুষেরও উন্নয়ন হবে।
‘ম্যাক্রো ইকোনমি বাড়ানোর জন্য ট্যাক্স বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে আইএমএফের চাহিদার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশেও তো ভালো অর্থনীতিবিদ আছেন। তাদের পরামর্শেই এটা করা হয়েছে। এটা করা না হলে ডলারের দাম ১২৫ টাকা থেকে বেড়ে ১৯০ টাকা হয়ে যাবে। বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। কারণ বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দেখেন দেশের ট্যাক্স আদায়ের পরিমাণ কেমন; অর্থনৈতিক স্বাস্থ্যটা কতটা মজবুত।
‘এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমেরও উচিত বিষয়টি নিয়ে জনগণকে বোঝানো।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘খরচ কীভাবে কমানো যায়, সরকার সে জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। আগের প্রধানমন্ত্রী ৩০০ লোক নিয়ে বিদেশে যেতেন। এখন প্রধান উপদেষ্টার বহরে ৫০ জন যাচ্ছেন। তারও একটি বড় অংশ থাকছে নিরাপত্তার জন্য।
‘আগে দেখা গেছে, একজন মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর জন্য কর্ণফুলী টানেল করা হয়েছে। টানেল থেকে নেমে তার বিশ্রাম নেওয়ার জন্য সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা খরচ করে সেভেন স্টার হোটেল বানানো হয়েছে।’
পাচার করা অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘সেগুলো ফেরত আনার চেষ্টা চলছে। গতকালও পূর্বাচলের একটি প্লট নিয়ে দুদকের মামলা হয়েছে। এগুলো সরকারের কোষাগারে আনা যায় কি না, সেই চেষ্টা চলছে।’
গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেখতে হবে বাজারে সরবরাহ চাহিদা মতো আছে কি না। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যটা ভালো থাকলে মূল্যস্ফীতিও কমিয়ে আনা যাবে।
‘যারা ভ্যাট-ট্যাক্সের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, তারা অনেক বুঝে-শোনেই দিয়েছেন। মানুষের ভালোর জন্যই এটা করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:রাজনৈতিক কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে বিঘ্ন ঘটলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কুসুমপুর জাগরণী সংসদ মাঠে রোববার বেলা তিনটার দিকে ঢাকা ব্যাংকের কৃষিজ যন্ত্রপাতি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
ওই সময় স্থানীয় ৩০ জন কৃষকের মাঝে শ্যালো মেশিন ও ট্রাক্টর বিতরণ করেন উপদেষ্টা।
অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাদের কাউকে ছাড় না দিয়ে কাজ করার নির্দেশ দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশে আরও অগ্রসর হতে হবে সাংবাদিকদের।
উপদেষ্টা বিক্রমপুর কুঞ্জবিহারী সরকারি কলেজে তারুণ্য মেলায় অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শামসুল আলম সরকার, জেলা কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার মোহন্ত, ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ মো. মারুফ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য