১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে বিভাগীয় সমাবেশের দিন থেকে সরকার পতনের দাবিতে সড়কে অবস্থান নেয়ার কোনো পরিকল্পনা যে বিএনপির নেই, সেটি স্পষ্ট করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এই জনসভার স্থল নিয়ে বিরোধের মধ্যে পুলিশ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষের পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে আসেন ফখরুল। এ সময় নানা প্রশ্নের পাশাপাশি এই গুঞ্জনটি নিয়েও কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব জানান, সরকার ও পুলিশ যা-ই করুক, তারা শনিবার ঘোষিত সমাবেশ করবেনই। তারা সেখানে যাবেন। যদি বাধা আসে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তাহলে জনগণই ব্যবস্থা নেবে।
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থাসহ নানা দাবিতে গত ১২ অক্টোবর থেকে বিএনপি যে বিভাগীয় সমাবেশগুলো করে আসছে, তাতে ১০ ডিসেম্বর চূড়ান্ত কর্মসূচি হতে পারে- এমন একটি আভাস দিয়েছিলেন বিএনপির নেতারাই।
দলের দুই কেন্দ্রীয় নেতা আমান উল্লাহ আমান ও শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি ঘোষণা দেন, সেদিন থেকে দেশ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশেই চলবে। পরে মির্জা ফখরুল এই উত্তেজনায় জল ঢেলে বলেছিলেন, ১০ ডিসেম্বর কোনো চূড়ান্ত কর্মসূচি নয়। জনগণের শান্তি নষ্ট হবে, এমন কোনো কিছু করবেন না তারা।
সংবাদ সম্মেলনে একজন গণমাধ্যমকর্মী বলেন, ‘বিএনপি ১০ ডিসেম্বর সড়কে বসে যাবে, এ ধরনের একটি প্রচার চলছে। বিএনপি আসলে কী করবে?’
ফখরুল এই প্রচারের পেছনে দায় দেন সরকারি দলকে। তিনি বলেন, ‘আমরা এই প্রচারে খুব বেশি গুরুত্ব দিই না এই কারণে যে, জনগণ এটাতে বিশ্বাস করে না। জনগণ বুঝে গেছে আওয়ামী লীগ মিথ্যাবাদী, মিথ্যাচার করে ভুল প্রচার করে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে যেমন উন্নয়ন বিভ্রম সৃষ্টি করেছে, তেমনি এই গণতন্ত্র বিভ্রম, রাজনীতি বিভ্রম শুরু করেছে। এটা ছাড়া তারা টিকতে পারে না।’
তাহলে ১০ ডিসেম্বর বিএনপি কী বলবে, এমন প্রশ্নে দলের মহাসচিব বলেন, ‘১০ তারিখে আমাদের লাস্ট ডিভিশনাল প্রেগ্রাম। এখান থেকে আমরা আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি ও দাবি তুলে ধরব। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, সংসদের বিলুপ্তি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিতে বলব।’
বিএনপি নেতা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে পুলিশ প্রত্যাহার, নেতা-কর্মীদেরকে মুক্তি, ‘গায়েবি ও মিথ্যা মামলা’ প্রত্যাহার এবং গ্রেপ্তার এবং তল্লাশি বন্ধ করার দাবিও জানান।
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী- এমন প্রশ্ন ছিল আন্তর্জাতিক এক গণমাধ্যমকর্মীর।
জবাবে ফখরুল বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি, এই সরকার অনির্বাচিত। গত দুই সরকার পুরোপুরি ফ্রড, গত নির্বাচনে আগের রতেই ভোট হয়ে গেছে। এমনকি প্রার্থীরা প্রচারে যেতে পারেননি। তাদের আগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের আক্রমণ করা হয়েছে। আমাদের হাজারো নেতা কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।
‘২০১৪ সালে ১৫৪ জন প্রার্থিকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।’
বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের সময় পরিবহন ধর্মঘট নিয়েও কথা বলেন ফখরুল। বলেন, ‘এখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি এমন, একটি উদার রাজনৈতিক দল যখন একাট শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ঘোষণা করে, তখন সরকারপন্থি পরিবহন ইউনিয়ন ধর্মঘট ঘোষণা করে। বাড়ি থেকে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়।
‘এবার ঢাকায় তারা বলতে শুরু করেছে, শহরে কোনো সমাবেশ হবে না। কাউকে জমায়েত হতে দেয়া হবে না।…হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখানে কোনো গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই। আমরা কর্মসূচি পালন করতে পারছি না। এমনকি গণমাধ্যম এখানে ফ্রি না, বিচার ব্যবস্থা সরকারের নিয়ন্ত্রণে।
‘বাংলাদেশ এখন কর্তৃত্ববাদী ও ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। তারা গণতান্ত্রিক রীতিনীতি লঙ্ঘন করছে।’
আরও পড়ুন:রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ ভবনে রাষ্ট্রপতির অফিস কক্ষে এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সরকারের গৃহীত কার্যক্রম সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ অমর একুশে বইমেলায় তার আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘আমার জীবননীতি, আমার রাজনীতি’-এর মোড়ক উন্মোচন করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির অফিস কক্ষে প্রায় ঘণ্টাখানেক অবস্থান করেন। এ সময় রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) দুর্নীতি সূচকে বাংলাদেশকে এক ধাপ নামানোটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একইসঙ্গে বলেছেন, নির্বাচনের বছর বলে বিশ্ব বেনিয়াদের প্রেসক্রিপশনে এটা করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর পান্থপথে বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে বসুন্ধরা বিপণন কেন্দ্রে স্টার সিনেপ্লেক্সে ‘বীরকন্যা প্রীতিলতা’ চলচ্চিত্রের প্রিমিয়ার শো উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এর আগে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তথ্যমন্ত্রী।
মঙ্গলবার প্রকাশিত টিআই’র বিশ্ব দুর্নীতি সূচক-২০২২ প্রতিবেদনে বাংলাদেশের এক ধাপ পিছিয়ে পড়া নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই বলছেন, এটা নির্বাচনের বছর হওয়ায় বিশ্ব বেনিয়াদের প্রেসক্রিপশনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এক পয়েন্ট কমিয়ে দিয়েছে। নির্বাচনের আগে তো আর কোনো প্রতিবেদন হবে না। আগামী বছর আবার জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিতে যখন প্রতিবেদন হবে তখন নির্বাচন হয়ে যাবে।’
ইদানীং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের কার্যক্রম অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘পদ্মা সেতু নিয়ে যখন মিথ্যা অভিযোগ উপস্থাপন করা হলো, তখন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল আগ বাড়িয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে দুর্নীতি হয়েছে বলে। পরে দেখা গেল, দুর্নীতি তো হয়ইনি বরং কানাডার আদালতে বিশ্বব্যাংক হেরে গেছে।
‘বিশ্বব্যাংক আবার এসে প্রস্তাব করেছে যে তারা অর্থায়ন করতে চায়। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা নেননি। কিন্তু ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল তাদের বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চায়নি।
‘এভাবে করোনার টিকা এবং আরও নানা বিষয়ের ওপর ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের নানা বক্তব্য ছিল, যেগুলো অনেকটাই মনে হয়েছে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের মতো সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশন থাকা এবং তাদের কার্যক্রমকে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু তাদের কার্যক্রম যদি বিশ্ব বেনিয়াদের প্রেসক্রিপশনে হয় বা তাদের কারও কারও সহায়ক হিসেবে হয় কিংবা কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয় সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক।
‘বিএনপির সময় পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে দেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। চারবার এককভাবে, একবার যুগ্মভাবে আফ্রিকার একটি দেশের সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতি দমন করার জন্য জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করছেন। বাংলাদেশে দুর্নীতি কমেছে।’
বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে বিএনপির সমালোচনা প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব তো শিক্ষক ছিলেন, ঢাকা কলেজে পড়াতেন। তাকে বলব, আগে পড়াতেন এখন সম্ভব হলে পড়তে হবে। কারণ ইউরোপের সব দেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। আমেরিকাসহ সব উন্নত দেশে বিদ্যুতের মূল্য বেড়েছে। কারণ জ্বালানি তেল ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এরপরও বাংলাদেশ সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহের চেষ্টা করে যাচ্ছে। ভর্তুকিরও তো একটা মাত্রা আছে। আমাদের অর্থনীতি তো টিকিয়ে রাখতে হবে। সে জন্য মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগে শূন্য হওয়া ৬ আসনের উপনির্বাচনে ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ ভোট পড়তে পারে বলে ধারণা করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে ৬ আসনের ভোট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
৬ আসনের ভোটে অনিয়ম বা কারচুপির উল্লেখযোগ্য কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলেও দাবি করেন সিইসি। তিনি বলেন, ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও-৩, বগুড়া-৪, বগুড়া-৬, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচনের ভোট হয় এদিন। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোট চলে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘উপস্থিতির হার তুলনামূলক কম ছিল। আনুমানিক ১৫ থেকে ২০, ২৫ হতে পারে। তবে নিশ্চিত করে এখনো বলা যাবে না। এজন্য আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘৬টি আসনে ৪০ জন প্রার্থী ছিল। ভোটকেন্দ্র ৮৬৭ ইভিএমের মাধ্যমে ভোট হয়েছে। সবকটি আসনে ভোটার সংখ্যা ছিল ২২ লাখ ৫৪ হাজার ২১৭ জন।’
স্থানীয় প্রশাসন থেকে সার্বক্ষণিক তথ্য নিয়েছেন জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘আমরা টিভি চ্যানেলগুলোর উপর সর্বক্ষণ দৃষ্টি রেখেছিলাম। অনিয়ম বা কারচুপির উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। অনলাইন পত্রিকা বিশেষভাবে পাঠ করেছি। ছয়টি জায়গায় ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। একটি জায়গায় ককটেল তাজা পাওয়া গেছে। ভোটকেন্দ্রের বাইরে দু-একটি ককটেল বিষ্ফোরিত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমকে আমরা গুরুত্ব দিয়ে থাকি। ভোটগ্রহণ সাধারণত শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। মেশিনের মাধ্যমে গণানা শুরু হয়েছে অনেক জায়গায়। দু - চার ঘণ্টার মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে দাপ্তরিকভাবে ফলাফল ঘোষিত হবে।’
আরও পড়ুন:কর্মশালার বিষয়ের বাইরে গিয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকদের ওপর চটেছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান।
সচিবালয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বুধবার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের করণীয়বিষয়ক কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এমন ঘটনা ঘটে।
ওই কর্মশালার বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে ২৮ মিনিট কথা বলেন ইয়াফেস ওসমান। এরপর অনুমতি নিয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করতে চাইলে ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘বলো ভাই, তোমাদের তো আবার সময়ের দাম আছে। তো এতগুলো কথা বললাম, এগুলো কি একটাও কাজের কথা হয় নাই? আচ্ছা বলো।’
এরপর ওই সাংবাদিক বলেন, ‘রাশিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল সরবরাহে কত দেরি হতে পারে?’
জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ওই ব্যাপারে এখন কিছু বলব না। এত কথার মধ্যে তোমরা চলে গেলে রূপপুরে।’
ওই সময় মন্ত্রীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব জিয়াউল হাসান বলেন, ‘আজকের ওয়ার্কশপের সঙ্গে এই প্রশ্ন সঙ্গতিপূর্ণ নয়।’
পরে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বুঝি না, তোমরা প্রফেশনাল না? আর ইউ প্রফেশনাল? লেট মি দিস অ্যান্সার? ইউ আর প্রফেশনাল, লাইক মি আর্কিটেকচার। তোমরা তো প্রফেশনাল। তোমাদের রেগুলার প্রফেশনাল স্টাডির কোনো ব্যবস্থা আছে? নাই।’
ওই সময় কয়েকজন সাংবাদিক মন্ত্রীকে জানান, সাংবাদিকদের জন্যও সেই ব্যবস্থা রয়েছে।
তখন মন্ত্রী বলেন, ‘ঘোড়ার ডিম আছে তোমাদের। আমাদের একটা ইনস্টিটিউট আছে। ওখান থেকে যদি সার্টিফিকেট না পাও, ইউ ক্যান নট প্রাকটিস। কারণ হলো, ওটার (ইনস্টিটিউট) শুরুটা হয় আমার হাত দিয়ে। ওইগুলো করো আগে। বিকজ বাংলাদেশকে আমরা ওই জায়গায় নিতে চাই।’
এরপর একজন সাংবাদিক বলেন, ‘সনদ ছাড়া সাংবাদিকতা করা যাবে না সেই বাধ্যবাধকতা নেই।’
এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, ‘ওইটাই তো প্রবেলম। তোমার যদি একটা ব্যাকগ্রাউন্ড না থাকে, কালকে বলে দিলা তুমি সাংবাদিক। তুমি তো প্রফেশনালিজমের কিছু বোঝোই না। একটা প্রফেশন মাস্ট নো দ্যাট সাবজেক্ট। তার একটা ব্যাকগ্রাউন্ড থাকতে হবে। একটা কথা বলে দিলা যেকোনো জায়গা থেকে চলে আসলে। তার মানে তোমাদের কোনো স্ট্যান্ডার্ড নাই।
‘তোমার প্রফেশনালি যদি জ্ঞান-গরিমা থাকে, নেচারালি তখন তুমি একভাবে বলবা, আর যদি না থাকে আরেকভাবে বলবা। তারপরও তুমি বলছো আমরা আসতে পারি যেকোনো জায়গা থেকে? এনিওয়ে ভাই, আমি তোমার এই কথায় যেতে চাই না। একদিন আইসো, তোমাদের বসদের সাথে কথা হয় তো, ওদের সাথেই কথা বলব। তোমাদের সাথে বলে আর লাভ নাই।’
সাংবাদিকরাও এসব বিষয়ে কথা বলতে শুরু করলে মন্ত্রী বলেন, ‘আচ্ছা এই সাবজেক্ট বাদ দিয়ে দাও। আমি ওই জন্য বলছি তোমরা এই সাবজেক্টের ওপর ধরো না কেন? এটা বাদ দিয়ে তুমি চলে গেলে অন্য জায়গায়। এটা নিয়ে আর কোনো কথাই হবে না।
‘তুমি এখানে আসছো কী জন্য? তুমি রূপপুরের ব্যাপারে কথা বলতে আসছো? এখান থেকে তোমার প্রশ্ন বের করতে হবে, উত্তর নিতে হবে। সেটা হলে তুমি প্রোপার জিনিসটা করলা।’
ওই সময় একজন সাংবাদিক মন্ত্রীকে বলেন, ‘আমরা যারা সাংবাদিকতা করি তাদের সাবজেক্টের বাইরেও প্রশ্ন করতে হয়। আপনাকে আমরা পাই না, গত ৮-৯ মাসে আপনার প্রোগ্রামে আসিনি, এই প্রথম আসলাম। তাও আবার জরুরি ভিত্তিতে আসতে বলেছেন। ১১টার প্রোগ্রাম, ১১টা ১০ মিনিটে আমাদেরকে জানিয়েছেন। আমরা গুরুত্বপূর্ণ মনে করে চলে এসেছি।
‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে জনগণের জানার আগ্রহ আছে। জনসাধারণের ভিউ থেকে আমাদেরও অনেক কিছু জানতে হয়।’
তখন মন্ত্রী ক্ষেপে গিয়ে ধমকের সুরে বলেন, ‘আমি একটা কথা পরিষ্কার বলে যাই। ইউ লিসেন টু মি। আপনারা যদি না আসতে চান, চলে যান। গেট গোয়িং।’
এরপর সেখানে উপস্থিত থাকা সাংবাদিকরাও প্রতিক্রিয়া জানিয়ে অনুষ্ঠানস্থল ছাড়তে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘ইউ শুড গো। আমি বললাম প্রশ্নটা ওটার ওপর না করে এটার ওপরে করেন। এটা বলতে পারব না আমি?’
আরও পড়ুন:অমর একুশে বইমেলা উদ্বোধন করতে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার বিকেলে তার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে মেলার এবার আসর।
উদ্বোধনের পর সংক্ষিপ্ত ভাষণ শেষে বইমেলা ঘুরে দেখার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।
তিন বছর পর সশরীরে হাজির হয়ে বাঙালির বই উৎসব উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। করোনাভাইরাস মহামারির আগে প্রতি বছরই তিনি সশরীরে হাজির হয়ে বইমেলা উদ্বোধন করতেন। তিনি মেলায় ঘুরে বইও কিনতেন।
গত তিন বছর মহামারির কারণে প্রধানমন্ত্রী মেলায় উপস্থিত হতে পারেননি। তিনি বইমেলা উদ্বোধন করেছেন ডিজিটালি সংযুক্ত হয়ে। এবার তার উপস্থিতি বইমেলায় ভিন্ন মাত্রা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রানওয়ের লাইটিং ব্যবস্থা সংস্কারকাজের অংশ হিসেবে আগামী দুই মাস ৫ ঘণ্টা করে উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।
বৃহস্পতিবার রাত ২টা থেকে শুরু হবে এ সংস্কারকাজ।
শাহজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, রানওয়ের সেন্ট্রাল লাইন লাইট স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে ফ্লাইট ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা বাড়বে। এর অংশ হিসেবে ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ এপ্রিল বিমানবন্দরের রানওয়ে রাত ২টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এ সময়ের মধ্যে সংস্কারকাজ চলবে, যে কারণে এ ৫ ঘণ্টায় বন্ধ থাকবে উড়োজাহাজ ওঠানামা।
এই সময়ে যেসব ফ্লাইটের শিডিউল থাকবে, সেগুলো দিনের অন্য সময়ে চলবে। ফ্লাইট চলাচলের সূচি পুর্নবিন্যাস করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট (এটিএম) বিভাগ থেকে নোটিশ জারি করা হয়েছে।
ফ্লাইট পুর্নবিন্যাসের ফলে সকাল ৭টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা এবং রাত ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত বিমানবন্দরে ফ্লাইটের চাপ হতে পারে। এ চাপ সামলাতে মনিটরিং টিম গঠন করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। সাধারণত রাত ২টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত শাহজালাল বিমানবন্দরে সাত থেকে আটটি ফ্লাইট চলাচল করে।
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বিমানবন্দরের রানওয়ের লাইটিং ব্যবস্থার সংস্কারকাজ শুরু হবে। এ জন্য ২ ফেব্রুয়ারি থেকে দুই মাস রাত ২টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে।
‘বছরের এ সময়ে কুয়াশা থাকায় ফ্লাইট চলাচলে বিঘ্ন ঘটে, যে কারণে লাইটিং ব্যবস্থা সংস্কারকাজ করতে এ সময়কে বেছে নেয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন:এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার খরচ পড়বে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে বুধবার সচিবালয়ে হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
সভা শেষে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বেসরকারি হজ প্যাকেজ কত টাকার মধ্যে নির্ধারণ করতে হবে, সে বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এর ভিত্তিতে বেসরকারিভাবে হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে।’
তিনি আরও জানান, সরকারি হজ প্যাকেজের মধ্যে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা লাগবে বিমান ভাড়া বাবদ। রিয়ালের মূল্য ২১ টাকা থেকে বেড়ে ৩০ টাকা হওয়ায় হজে যাওয়ার খরচ বেড়েছে।
বাংলাদেশ থেকে এবার ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ১ লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন।
বেসরকারি হজ প্যাকেজ বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন হাব নেতারা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য