বাংলাদেশের কয়েক হাজার কোটি টাকা জালিয়াতি মামলার মূল হোতা পি কে হালদারসহ ছয়জন অভিযুক্তকে আবারও ৩৬ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতার ব্যাঙ্কশাল কোর্টের বিশেষ সিবিআই আদালত। তার ব্যাপারে পরবর্তী শুনানি আগামী ১৩ জানুয়ারি।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ অভিযুক্তদের বিশেষ সিবিআই আদালতের এজলাসে তোলা হলে দুপক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শোনার পর এই নির্দেশ দেন বিচারক শুভেন্দু সাহা।
ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী জানান, অভিযুক্তদের আগামী ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন বিচার প্রক্রিয়া চলছে।
এদিন পি কে হালদার এবং তার ভাইয়ের জামিনের আবেদন জানান অভিযুক্তদের আইনজীবী। অভিযুক্তদের সেই জামিনের আবেদনের শুনানিও হবে ১৩ জানুয়ারি।
বেআইনি অর্থ পাচার এবং দুর্নীতি দমন আইনে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ১১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ইডি।
বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ভারতে টাকা পাচারের অভিযোগে বাংলাদেশ সরকারের সুপারিশে পশ্চিমবঙ্গের অশোকনগরে আত্মগোপন করে থাকা পি কে হালদারসহ ছয়জনকে ১৪ মে গ্রেপ্তার করে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি।
তদন্তে নেমে ইডির গোয়েন্দারা জানতে পারেন, পি কে হালদারসহ জালিয়াত চক্র বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে এসে জাল ভোটার কার্ড, আধার কার্ড বানিয়ে অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের অশোকনগরে বসবাস করছিলেন। বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থ জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট কেনাসহ বহু ব্যাংকে এবং বিভিন্ন ব্যবসায় নিয়োগ করার নথি বাজেয়াপ্ত করে ইডি। ভারত ছাড়াও অন্যান্য দেশে পি কে হালদার জালিয়াত চক্রের অর্থ পাচারের হদিস পেয়েছেন ইডির তদন্তকারীরা।
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে আইফেল টাওয়ারের কাছে পর্যটকদের ওপর হামলায় একজন নিহত ও দুজন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় ওই হামলার ঘটনা ঘটে বলে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানিনের বরাতে জানিয়েছে বিবিসি।
দারমানিন সাংবাদিকদের বলেছেন, পুলিশ দ্রুত একটি টেজার স্টানগান ব্যবহার করে ২৬ বছর বয়সী একজন ফরাসি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে।
তিনি জানান, সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে ২০১৬ সালে আরেকটি হামলার পরিকল্পনা করার জন্য চার বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল। তিনি ফরাসি নিরাপত্তা পরিষেবার ওয়াচ লিস্টে ছিলেন। তার মানসিক অসুস্থতা রয়েছে।
বিবিসি বলছে, সন্দেহভাজন ব্যক্তি একটি পর্যটক দম্পতির কাছে গিয়ে এক জার্মান নাগরিককে ছুরিকাঘাত করেন। হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করার আগে তিনি হাতুড়ি দিয়ে আরও দুইজনকে আক্রমণ করেন। আহতদের জরুরি সেবা দিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
ফিলিপাইনের দক্ষিণের মিন্দানাও অঞ্চলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ভূমিকম্পের পর মিন্দানাও দ্বীপে সুনামি সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সুনামি সতর্কতা ব্যবস্থা। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি।
শনিবার স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৩৭ মিনিটে এ কম্পন অনুভূত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানায়, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল ফিলিপাইনের হিনাতুয়ান শহরের ২১ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে। ভূপৃষ্ঠের ৩২ দশমিক ৮ কিলোমিটার গভীরে।
অন্যদিকে, মিন্দানাওয়ে আঘাত হানা ভূমিকম্পের মাত্রা ৭ দশমিক ৫ ছিল বলে জানিয়েছে ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগরীয় ভূমিকম্প কেন্দ্র (ইএমএসসি)। তাদের তথ্যানুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তি ভূপৃষ্ঠ থেকে ৬৩ কিলোমিটার গভীরে।
ফিলিপাইনের উপকূলীয় শহর হিনাতুয়ানের পুলিশ প্রধান রেমার্ক জেনতালান বলেছেন, ভূমিকম্পের পর শহর এবং আশেপাশের এলাকার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দল এখনও কোথাও হতাহত হওয়া বা ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পায়নি।
ভূমিকম্পের পর ফিলিপাইনের সিসমোলজিক্যাল এজেন্সি-ফিভল্ক্স থেকে দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ওই সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় মধ্যরাতে সুনামি আঘাত হানতে পারে এবং তা কয়েকঘণ্টা স্থায়ী হতে পারে।
এ ঘটনায় জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমের উপকূলীয় অঞ্চলেও সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
জাপানের টেলিভিশন এনএইচকে থেকে প্রকাশিত সতর্কতামূলক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমিকম্প আঘাত হানার প্রায় আধাঘণ্টা পর (জাপানের স্থানীয় সময় রোববার ১:৩০ মিনিট) সমুদ্র থেকে প্রায় এক মিটার উঁচু ঢেউ জাপানের দক্ষিণপশ্চিম উপকূলে উঠে আসতে পারে।
এর আগে, গত ১৭ নভেম্বর ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। ওই ভূমিকম্পে দেশটির সারাঙ্গানি, কোটাবাটো এবং দাভাও প্রদেশে অন্তত আট প্রাণহানি ঘটে, আহত হন আরও ১৩ জন। ভূমিকম্পে দেশটিতে অর্ধ-শতাধিক বাড়িঘর এবং অন্যান্য ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় ‘রিং অব ফায়ারে’ অবস্থিত ফিলিপাইনে প্রায়শই ভূমিকম্প হয়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপসংস্থা রিং অব ফায়ারকে বিশ্বের সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি ও ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
আরও পড়ুন:আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে নেতৃত্বে বড় পরিবর্তন এনেছে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। ইমরান খানের পর এবার দলটির নতুন চেয়ারম্যান হয়েছেন ব্যারিস্টার গহর আলী খান। ইমরান খান নিজেই ব্যারিস্টার খানকে চেয়ারম্যান পদে মনোনীত করার কয়েকদিন পর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলেন তিনি।
শনিবার তার দায়িত্ব গ্রহণের বিষয়টি জানায় পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক ডন। এ ছাড়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দলটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন ওমর আইয়ুব খান।
দলের কয়েকটি পদে নেতাদের দায়িত্ব দিতে শনিবার পিটিআইয়ে ভোটাভুটি হয়। পরে পিটিআইয়ের প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়াজুল্লাহ নিয়াজি নির্বাচিতদের নাম ঘোষণা করেন।
পিটিআই চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর পেশাওয়ারে এক ভাষণে গহর আলী খান বলেন, ‘ইমরান খানের প্রতিনিধি হিসেবে আমি আমার দায়িত্ব পালন করে যাব।’
এ সময় তিনি বলেন, ‘১৯৬০ সাল থেকে পাকিস্তানে বিদ্যমান ১৭৫টি রাজনৈতিক দলের সবাই পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনকে তাদের আন্তঃদলীয় নির্বাচনের বিবরণ প্রদান করে আসছে। তবে কোনো নির্বাচনে কোনো দলকে পিটিআইয়ের মতো এতটা চুলচেরা যাচাই করা হয়নি।
‘জনগণ সবই দেখছে; তারাই এ নিপীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। যেকোনো মূল্যে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এ লক্ষ্যেই সংগ্রাম করে যাচ্ছে পিটিআই এবং এই সংগ্রাম করতে গিয়েই আজ কারাগারে বন্দি ইমরান খান।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘নির্বাচনে আমরা সবাইকে পরাজিত করব।’
কেন্দ্রীয় দুই নেতার পাশাপাশি কয়েকটি প্রদেশেও নেতৃত্বে পরিবর্তন এনেছে দলটি। এর মধ্যে বালুচিস্তান প্রদেশে পিটিআইয়ের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মুনির আহমেদ বালুচ, সিন্ধ প্রদেশে হালীম আদিল শেখ, পাখতুনখাওয়া প্রদেশে আলী আমিন গেন্দাপুর খাইবার এবং পিটিআইয়ের পাঞ্জাব প্রদেশের সভাপতি হয়েছেন ইয়াসমিন রশিদ।
পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে ২০২২ সালের এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত হন পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান। ক্ষমতা হারিয়েই দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদসহ বিভিন্ন অভিযোগে শতাধিক মামলার শিকার হন তিনি। এর মধ্যে তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় এ বছরের ৫ আগস্ট তিন বছরের কারাদণ্ড হয় ইমরানের। যদিও এ মামলায় তার সাজা স্থগিত রয়েছে, তবে কূটনৈতিক তারবার্তা ফাঁসের আরেক মামলায় বর্তমানে কারাবন্দি তিনি।
আগামী বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচনের আগে ইমরানের মুক্তি পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় তার নেতৃত্বে পিটিআইয়ের নির্বাচনে অংশ নেয়া-না নেয়া নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গহর খানকে দলটির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:ব্রাজিলে এক নারীকে হাসপাতাল থেকে মৃত বলে জানানোর পর তাকে মর্গে জীবিত অবস্থায় পাওয়া যায়। এ ঘটনার দুইদিন পর তাকে ফের মৃত বলে জানান চিকিৎসক।
সান জোসে শহরে শনিবার এ ঘটনা ঘটে বলে ব্রাজিলের একটি মিডিয়া আউটলেটের বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়।
ব্রাজিলের এক সমাধিস্থানকর্মী জানান, গত ২৫ নভেম্বর (শনিবার) হাসপাতালের কর্মীরা ৯০ বছর বয়সী নরমা সিলভেরা দা সিলভাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর কয়েক ঘণ্টা পর তিনি মরদেহ সংগ্রহ করতে মর্গে গেলে বডি ব্যাগের মধ্যে সিলভাকে জীবিত অবস্থায় পান।
সিলভার বন্ধু জেসিকা মার্টিন্স সিলভি পেরেইরা জানান, সিলভাকে গত ২৪ নভেম্বর (শুক্রবার) খুব খারাপ অবস্থায় সাও হোসের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন শনিবার রাতে সিলভার মৃত্যু হয় বলে হাসপাতালের কর্মীরা নিশ্চিত করেন। এর পর রাত ১১টা ৪০ মিনিটে মৃত্যু সনদ দিয়ে তার মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়।
রাত দেড়টার দিকে সমাধিস্থানকর্মী মরদেহ সংগ্রহ করতে গেলে তিনি ব্যাগটি খুলে দেখেন সিলভা খুব দুর্বলভাবে শ্বাস নিচ্ছিলেন এবং কিছুটা নড়ছিলেন।
এ ঘটনার পর সিলভাকে আবারও হাসপাতালের কক্ষে নেয়া হয়, তবে ২৭ নভেম্বর (সোমবার) সকালে তার মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেন চিকিৎসক।
আরও পড়ুন:সাত দিনের বিরতির পর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ফের হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। শুক্রবার সকাল থেকে উপত্যকায় অনবরত বোমা হামলায় কমপক্ষে ১০৯ ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ডা. আশরাফ আল-কুদরা বলেছেন, শুক্রবার সকাল থেকেই গাজায় তীব্র বোমাবর্ষণ শুরু করে ইসরায়েল। হামলায় এখন পর্যন্ত ১০৯ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিস এবং রাফাহ অঞ্চলে সবচেয়ে তীব্র হামলা চলছে। ওই অঞ্চলে কয়েক লাখ ফিলিস্তিনি গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এ ছাড়া গাজার মধ্য ও উত্তরাঞ্চলের বাড়িঘরগুলোও বোমা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি শেষে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের পূর্বাঞ্চলে অনবরত বোমাবর্ষণ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। শুক্রবার ভোর থেকেই আকাশ ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় বলে রয়টার্সের সাংবাদিকরা জানিয়েছেন।
তাদের বর্ণনা অনুসারে, প্রাণ বাঁচাতে স্থানীয় বাসিন্দারা পশ্চিমাঞ্চলে পালাতে শুরু করেছে। ভোর থেকেই গাড়িতে জিনিসপত্র বোঝাই করে তারা রাস্তায় নেমে পড়ে।
উপত্যকার উত্তরাঞ্চল, যে জায়গা থেকে হামলার শুরু, সেখানে পুনরায় হামলা করতে দেখা গেছে। বোমা হামলার সঙ্গে সেখানে গোলাগুলির শব্দও শোনা গেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। এমনকি কয়েকবার রকেট হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
এ ঘটনার কারণ হিসেবে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে রকেট ছুড়ে হামাস যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ করেছে ইসরায়েল।
গত শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) চার দিনের সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় হামাস ও ইসরায়েল। দুই পক্ষের কাছে জিম্মিদের মুক্তি, গাজায় ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ ও বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার সুযোগ দিতে এ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় তারা।
কাতার ও মিশরের মধ্যস্ততায় এবং রেড ক্রসের সহযোগিতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
চার দিনের ওই বিরতি পরে আরও দুইদিন বাড়ানো হয়। পরে তা বাড়ে আরও একদিন। সেটিকে স্থায়ী রূপ দিতে চাপ দিচ্ছিল জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহল। তবে বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বৃদ্ধির চুক্তিতে একমত হতে পারেনি হামাস-ইসরায়েল। এরপর শুক্রবার সকাল থেকেই উপত্যকায় নির্বিচারে হামলা শুরু করে দখলদার ইসরায়েলি সেনারা।
সাত দিনের এই যুদ্ধবিরতিকালে মোট ১০৫ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। এর মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলি নাগরিক, বিদেশি নাগকি ও দ্বৈত নাগরিক। অন্যদিকে ২৪০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে আকস্মিক হামলা চালায় হামাস। ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় টানা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। হামলা শুরুর পর ৯ অক্টোবর গাজায় সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দেয় দখলদার ইসরায়েল।
টানা হামলার শিকার গাজায় খাবার, পানি, ওষুধ ও জ্বালানির সংকট দেখা দেয়। এ অবস্থায় যুদ্ধবিরতি চলাকালে মিশরের রাফা ক্রসিং দিয়ে কয়েকটি ত্রাণবাহী ট্রাক ঢোকে উপত্যকতায়। তবে যুদ্ধবিরতির সাত দিনে যে পরিমাণ চিকিৎসা সরঞ্জাম গাজায় পৌঁছেছে, সেগুলো দিয়ে আহতদের আর মাত্র একদিন চিকিৎসা সেবা দেয়া যাবে বলে জানিয়েছে হামাস সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। চিকিৎসা সামগ্রী প্রবেশে রাফাহ ক্রসিং খুলে দেয়ার অনুরোধও জানিয়েছে তারা।
এতদিন গাজায় জ্বালানি প্রবেশে ইসরায়েলের অনুমতি ছিল না। বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে সম্প্রতি শুধু হাসপাতাল ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর জন্য জ্বালানির অনুমতি দেয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে ঢুকেছে কয়েকটি জ্বালানিবাহী ট্রাক।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসে বিমান হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলির নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নারী ও শিশুসহ ১৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী গাজার সীমান্তের বড় অংশই ইসরায়েলের সঙ্গে, বাকিটা মিশরের সঙ্গে। এর দৈর্ঘ্য ৪১ কিলোমিটার এবং প্রশস্ত ১০ কিলোমিটার।
আরও পড়ুন:জলবায়ু বিষয়ক কর্মকাণ্ডে নেতৃত্বের কণ্ঠস্বর হিসেবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষের পক্ষে বিশ্বব্যাপী অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ক্লাইমেট মোবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার অ্যাওয়ার্ডে’ ভূষিত করেছে আইওএম এবং জাতিসংঘ সমর্থিত গ্লোবাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট মোবিলিটি সংস্থা।
শুক্রবার দুপুরে দুবাইয়ে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৮-এর সাইডলাইনে একটি উচ্চ স্তরের প্যানেল অধিবেশনে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি রাষ্ট্রদূত ডেনিস ফ্রান্সিস এবং ইন্টারন্যাশনাল অর্গাইনাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের (আইওএম) মহাপরিচালক অ্যামি পোপের কাছ থেকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পুরস্কারটি গ্রহণ করেন।
কপ-২৮-এ বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের প্রধান তথ্যমন্ত্রী ও পরিবেশবিদ ড. হাছান মাহমুদ এ সময় ‘অভিযোজন এবং সহনশীলতার জন্য জলবায়ু গতিশীলতাকে বাগে আনা’ শীর্ষক উচ্চ স্তরের এ প্যানেল অধিবেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
‘জলবায়ু গতিশীলতার বিষয়টিকে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আলোচনার মূলধারায় আনার এখনই উপযুক্ত সময়’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনের ক্লাইমেট মোবিলিটি সামিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ুজনিত কারণে বাধ্য হয়ে অভিবাসন এবং বাস্তুচ্যুতির দিকটি বিশ্ব নেতাদের দৃষ্টিতে নিয়ে আসেন।
এর আগেও বাংলাদেশ গত কয়েক বছর ধরে ঢাকায় আইওএমের সহযোগিতায় আয়োজিত দুটি সংলাপ এবং গত বছর মিশরের শার্ম এল শাইখে কপ-২৭-এ বিষয়টি তুলে ধরে বলে জানান ড. হাছান মাহমুদ।
একইসঙ্গে কক্সবাজারে বাস্তুচ্যুত অন্তত ৪ হাজার ৪০০ পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য বিশ্বের বৃহত্তম বহুতল সামাজিক আবাসন প্রকল্প নির্মাণসহ জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উদ্যোগের নানা দিক তুলে ধরেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘ক্লাইমেট মোবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার অ্যাওয়ার্ড প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি উল্লেখযোগ্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এবং জলবায়ু গতিশীলতা ও এ থেকে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের ক্রমাগত নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বের সমর্থন। বাংলাদেশ সন্তুষ্ট যে, এখন জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর একটি বিস্তৃত জোট এই ইস্যুতে একযোগে কাজ করছে।’
পুরস্কার প্রদানকারী গ্লোবাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট মোবিলিটি সংস্থাটি জাতিসংঘ, আঞ্চলিক আন্তঃসরকারি সংস্থা এবং উন্নয়ন অর্থ সংস্থাগুলির সঙ্গে সহযোগিতায় জলবায়ু গতিশীলতা মোকাবিলায় সহযোগিতামূলক বিস্তৃত সমাধানের জন্য কাজে নিয়োজিত রয়েছে।
কমনওয়েলথ মহাসচিবের সঙ্গে তথ্যমন্ত্রীর বৈঠক
এ দিন বিকেলে দুবাইয়ে কপ-২৮ সম্মেলনস্থলে কমনওয়েলথ সেক্রেটারি জেনারেল প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যাণ্ডের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী।
এ সময় বন ও পরিবেশ সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবু জাফরসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে মন্ত্রী হাছান সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রগতি হয়েছে। কমনওয়েলথ মহাসচিব তার ভূয়সী প্রশংসা করেন। একইসঙ্গে তার সঙ্গে দেশের রাজনৈতিক বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:সাত দিনের বিরতির পর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ফের হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল।
বৃহস্পতিবারের পর আর যুদ্ধবিরতির মেয়াদ না বাড়ার প্রেক্ষাপটে স্থানীয় সময় শুক্রবার গাজাজুড়ে বোমার শব্দ শোনা গেছে বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এই হামলা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগেও যুদ্ধবিরতির চুক্তির অধীনে ইসরায়েল ৩০ বন্দিকে এবং হামাস ৮ জিম্মিকে ছেড়ে দেয়।
হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের আগের দু দফার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ ছিল ছয় দিন, সেই মেয়াদ শেষ হয় বুধবার। এরপর বৃহস্পতিবার আরও একদিন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
শুক্রবার সকালে গাজা থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক আবু আজজুম জানান, এই মুহূর্তে, দক্ষিণ ইসরায়েলি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এটি এমন একটি এলাকা যা ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বেসামরিকদের পালিয়ে যাওয়ার জন্য নিরাপদ বলে সুপারিশ করেছিল।
তিনি বলেন, গত এক ঘণ্টায় আমরা ব্যাপকভাবে ইসরায়েলি বোমা হামলার শিকার হয়েছি।
এমন পরিস্থির আগে অবশ্য ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছিল, জিম্মিদের মুক্তির প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য মধ্যস্থতাকারীদের প্রচেষ্টায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি অব্যাহত থাকবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর একজন সিনিয়র উপদেষ্টা মার্ক রেগেভ বৃহস্পতিবার বলেন, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চালিয়ে যেতে ইচ্ছুক যতদিন পর্যন্ত হামাস জিম্মিদের মুক্তি দিতে থাকবে। হামাসের ওপর চাপ দিতে হবে। যদি তারা জিম্মিদের মুক্তি দিতে থাকে, তাহলে বিরতি চলতে পারে।
তবে শেষ পর্যন্ত আর এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকেনি। যার প্রভাব পড়ল শুক্রবারই। একের পর এক বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।
রয়টার্স বলছে, দেড় মাসের বেশি সময় গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ১৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত ও ইসরায়েলে হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হওয়ার পর গত শুক্রবার থেকে সোমবার নাগাদ চার দিনের যুদ্ধবিরতিতে যায় দুই পক্ষ।
সেই যুদ্ধবিরতি আরও দুই দিন বাড়িয়ে বুধবার পর্যন্ত করতে সম্মত হয় হামাস ও ইসরায়েল। পরে তা বাড়ে আরও একদিন। সেটিকে স্থায়ী রূপ দিতে চাপ দিচ্ছে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহল।
ইসরায়েলে ঢুকে হামাস গত ৭ অক্টোবর আকস্মিক হামলা চালায়। ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় টানা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। হামলা শুরুর পর ৯ অক্টোবর গাজায় সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।
টানা হামলার শিকার গাজায় খাবার, পানি, ওষুধ ও জ্বালানির সংকট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় কদিন আগে মিশরের রাফা ক্রসিং দিয়ে কয়েকটি ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকেছে ওই উপত্যকতায়।
এতদিন গাজায় জ্বালানি প্রবেশে ইসরায়েলের অনুমতি ছিল না। বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে সম্প্রতি শুধু হাসপাতাল ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর জন্য জ্বালানির অনুমতি দেয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে ঢুকেছে কয়েকটি জ্বালানিবাহী ট্রাক।
ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী গাজার সীমান্তের বড় অংশই ইসরায়েলের সঙ্গে, বাকিটা মিশরের সঙ্গে। এর দৈর্ঘ্য ৪১ কিলোমিটার এবং প্রশস্ত ১০ কিলোমিটার।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য