রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও আশপাশ এলাকা থেকে দলটির ৩০০ নেতা-কর্মী ও সমর্থককে আটক করেছে পুলিশ। একই সময়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে ১৫টি ককটেল উদ্ধারের দাবি করা হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মো. হারুন অর রশীদ বুধবার রাতে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে তাজা ১৫টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। পরে রাত পৌনে ৯টার দিকে নয়াপল্টন সড়কের ওপর দুই দফায় বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সেগুলো নিষ্ক্রিয় করে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট।
‘এর আগে দুপুরে সংঘর্ষের সময় পুলিশের ওপর ককটেল হামলা চালায় বিএনপির সমর্থকরা। এতে অন্তত ৫০ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’
তিনি বলেন, ‘আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছিল ডিএমপি। ১০ তারিখ আসতে এখনও ৩-৪ দিন বাকি। তারা আজ সকালেই নয়াপল্টনে লোক জড়ো করে রান্নার আয়োজন করে মিটিং শুরু করেছে। এতে রাস্তা বন্ধ হয়ে সাধারণের চলাচলে সমস্যা হয়েছে।
‘পুলিশ রাস্তা ছেড়ে দিতে বললে তারা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল ছুড়ে মারে এবং ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এরপর আমরা তাদের দমন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি।’
হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আমরা তাদের কার্যালয়ে অভিযান চালাতে গিয়ে ১৫টি ককটেল উদ্ধার করেছি। সে সঙ্গে নগদ দুই লাখ টাকা, ১৬০ বস্তা চাল, খিচুড়িসহ রান্নার অনেক সরঞ্জাম জব্দ করেছি। এর পাশাপাশি তাদের কার্যালয় ও আশপাশ থেকে ৩০০ জন বিএনপি সমর্থককে আমরা আটক করেছি। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ডিবিপ্রধান বলেন, ‘তাদের এই আয়োজন দেখে আমার বুঝলাম যে তারা এখানে বিপুলসংখ্যক লোক সমাগম করে অপ্রত্যাশিত কোনো ঘটনা ঘটানোর পরিকল্পনা করছিল। এজন্য শান্তিপূর্ণ সমাবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি দেয়া হলেও নয়াপল্টনের রাস্তায় এমন জমায়েত করতে চাচ্ছিল। পাশাপাশি তাদের কাছে মজুদ ককটেল পাওয়ায় প্রমাণ হল তারা সমাবেশের নামে নাশকতার পাঁয়তারা করছিল।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল দাবি করেছেন যে এসব ককটেল পুলিশই সঙ্গে করে নিয়ে এসেছে। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘ককটেল কোথা থেকে এসেছে তা আপনারা সাংবাদিকরা নিজ চোখেই দেখেছেন; এখন ওনারা তো কত কিছুই বলবেন।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর একটি ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন হয়েছে আরেক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যাওয়া এক আসামির ফোনালাপে।
মায়ের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কারাগার থেকে মাকে হত্যা মামলার কথা জানিয়েছিলেন মো. আরিফ। পরে রিমান্ডে নেয়া হলে পুলিশের কাছে আগের হত্যার ঘটনা স্বীকার করেন তিনি।
রোববার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
তিনি জানান, গত ২২ জানুয়ারি ভোরে যাত্রাবাড়ীর ধলপুর কমিউনিটি সেন্টারের পাশের সড়কে ছুরিকাঘাতে খুন হন খলু মিয়া। সিসি টিভি ফুটেজে তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যেতে দেখা যায় কয়েকজনকে।
হাফিজ আক্তার জানান, খলু মিয়া নারায়ণগঞ্জের রূপসী এলাকায় গার্মেন্টস কর্মী হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ওইদিন গাইবান্ধা থেকে সোনালী পরিবহনে করে রাত আনুমানিক সাড়ে তিনটায় গোলাপবাগে পৌঁছান তিনি। সেখান থেকে হেঁটে যাওয়ার সময় ছুরিকাঘাতের শিকার হন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ক্লুলেস এ ঘটনার তদন্তে নেমে বেশকিছু ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করেও কোন কুলকিনারা করতে পারছিল না থানা পুলিশ। এরই মধ্যে ২৬ জানুয়ারি একটি ওয়ারেন্টের ভিত্তিতে যাত্রাবাড়ী এলাকার নিজ বাসা থেকে আরিফকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
তিনি জানান, গ্রেপ্তারের পর কারাগার থেকে আরিফ তার মায়ের সঙ্গে ফোনালাপে জানান, অন্য কোনো ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, আগের ওয়ারেন্টের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডিএমপির এই কর্মকর্তা জানান, আরিফের এই বক্তব্য সন্দেহজনক হওয়ায় খলু মিয়া হত্যা মামলায় তাকে শোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। এর ভিত্তিতে আরিফের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
তিনি জানান, রিমান্ডে আরিফকে জিজ্ঞাসাবাদেই বেরিয়ে আসে খলু মিয়া হত্যাকাণ্ডের রহস্য। একপর্যায়ে খলু মিয়াকে খুনের দায় স্বীকার করেন আরিফ, পরে তার হেফাজত থেকে খলু মিয়ার খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়।
আরিফকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে হাফিজ আক্তার জানান, একাধিক ছিনতাই মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হওয়ায় আরিফ দীর্ঘদিন ধরে তার নিজ বাসায় অবস্থান না করে পলাতক ছিলেন। কিন্তু খুনের ঘটনার পরপর পুলিশি তৎপরতা দেখে হত্যার ঘটনা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে আগের ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার হতে তিনি বাসায় অবস্থান করছিলেন।
তিনি জানান, ঘটনার সময় আরিফ সহযোগীদের নিয়ে একটি ছুরিসহ ধলপুর নতুন রাস্তায় একটি ব্যাটারির দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। খলু মিয়া রাস্তা দিয়ে আসার পথে তারা তার গলায় ছুরি ধরলে তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে খলুর বুকে ছুরিকাঘাত করে মোবাইল ও মানিব্যাগ নিয়ে দৌঁড়ে পালিয়ে যান আরিফসহ কয়েকজন।
আরও পড়ুন:হিটার হৃদয় গত ২ থেকে ৩ বছর ধরে মোহাম্মদপুর এলাকায় ‘বিডিএসকে’ (ব্রেভ ডেঞ্জার স্ট্রং কিং) গ্যাং এর নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। সে স্থানীয় একটি স্কুল থেকে ৩য় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। হৃদয় বিভিন্ন সময়ে লেগুনার হেলপার হিসেবে কাজ করত। পাশাপাশি ‘বিডিএসকে’ গ্যাং পরিচালনা করত।
সন্ত্রাসী গ্রুপ ‘বিডিএসকে’ গ্যাং এর প্রধান হৃদয় ওরফে হিটার হৃদয়সহ আটজন সদস্যকে দেশি ও বিদেশি অস্ত্রসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ও ফরিদপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার রাতে ফরিদপুর, রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ স্টেশন, মোহাম্মদপুর বেড়িবাধ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ‘বিডিএসকে’ গ্রুপের লিডার শ্রীনাথ মন্ডল ওরফে হৃদয় ওরফে হিটার হৃদয়, রবিন ইসলাম ওরফে এসএমসি রবিন, রাসেল ওরফে কালো রাসেল, আলামিন ওরফে ডিশ আলামিন, লোমান ওরফে ঘাড়ত্যাড়া লোমান, আশিক ওরফে হিরো আশিক, জোবায়ের ইসলাম ওরফে চিকনা জোবায়ের, সুমন ওরফে বাইট্টা সুমনকে গ্রেপ্তার করে।
রোববার দুপুরে র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, গ্রুপের সদস্যদের মাধ্যমে হৃদয় মোহাম্মদপুর, আদাবর ও বেড়িবাধ এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা পরিচালনা, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করত। তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। সে একাধিকবার কারাভোগ করেছে।
তিনি আরও জানান, ৭ জানুয়ারি রাত আনুমানিক ৮টায় রাজধানীর আদাবর তিন রাস্তার মোড় এলাকায় একজন ভুক্তভোগীকে জখম করে তার কাছে থাকা মোবাইল ও টাকা ছিনতাইকারীরা নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ওই ভুক্তভোগীকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। একইভাবে কিছুদিন আগে একই এলাকার এক কলেজ শিক্ষার্থীর কাছ থেকেও একই কায়দায় ছিনতাইকারীরা মোটা অংকের অর্থ ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
র্যাব উক্ত ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে উল্লেখিত সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। যেখানে দেখা যায়, ৮ থেকে ১০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত ছিল।
পরবর্তীতে গ্রেপ্তারকৃতদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী মোহাম্মদপুরে তাদের আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করে ১টি বিদেশি পিস্তল, ২টি চাপাতি, ১টি রামদা, ১টি চাইনিজ কুড়াল, ৪টি চাকু (বড় ও ছোট), ২টি হাঁসুয়া, ১টি কাঁচি এবং ১টি লোহার রড উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে খন্দকার আল মঈন জানান, ‘বিডিএসকে গ্যাং এর প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন সদস্য রয়েছে। তাদের গ্যাং লিডার হৃদয়ের নেতৃত্বে গত ২ থেকে ৩ বছর আগে গ্যাং গঠন করে। এই গ্রুপের সদস্যরা আগে সবুজ বাংলা গ্রুপ, টপ টেন গ্রুপ ও ভাই বন্ধু গ্রুপের অন্তর্ভূক্ত ছিল। গ্রেপ্তারকৃতরা মোহাম্মদপুর, আদাবর, বেড়িবাধ ও ঢাকা উদ্যান এলাকায় চুরি-ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করত।
তিনি আরও জানান, তারা বিভিন্ন সময় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঢাকা উদ্যান, আদাবর, শ্যামলী, মোহাম্মদপুরসহ আশেপাশের এলাকায় মারামারিসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করত। তারা এই এলাকাগুলোতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তির স্বার্থ হাসিলের জন্য ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবেও কাজ করত। এ ছাড়াও তারা মাদকসেবনসহ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল। গ্রেপ্তারকৃতদের অধিকাংশের নামে মাদক, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও মারামারিসহ রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
আরও পড়ুন:স্ত্রীকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন দিয়েছে হাইকোর্ট।
রোববার বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ, আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম মাসুদ রানা, তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী নাফিউল মাজিদ ও আইনজীবী উম্মে ছালমা।
রায়ের পর আইনজীবী এম মাসুদ রানা বলেন, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ছিল ত্রুটিপূর্ণ। এ ছাড়া সাক্ষীদের বক্তব্য পরস্পরবিরোধী ছিল। শুনানিতে এসব বক্তব্য উপস্থাপন করেছি।
তিনি বলেন, রায়ে আদালত মৃত্যুদণ্ডাদেশ দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দণ্ড দিয়েছে। পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে অনাদায়ে ছয় মাসের দণ্ড দিয়েছে।
মামলা থেকে জানা যায়, দণ্ডপ্রাপ্ত আবদুল জলিল বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার বাইনচটকি গ্রামের নয়া মিয়ার ছেলে। ১৯৯৮ সালে ফরিদপুরের মালতি বেগমের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
পারিবারিক কলহের জেরে ২০০৩ সালের ২৮ আগস্ট মালতিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর তার মরদেহ বস্তায় ভরে বাড়ির পেছনে পোড়াবাড়ির বাগানে পুঁতে রাখা হয়। পরদিন মালতির মরদেহ শেয়াল-কুকুরকে খেতে দেখে প্রতিবেশীরা কাকচিড়া পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় কাকচিড়া পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মো. একরামুল মালতির স্বামী, দুই দেবর, ননদ ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ২০০৪ সালের ৮ এপ্রিল সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিচার শেষে ছয়জনকে খালাস দিয়ে মালতির স্বামী জলিলকে ২০১৭ সালের ৯ মে মৃত্যুদণ্ড দেন বরগুনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. আবু তাহের।
এরপর মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামি জেল আপিল ও ফৌজদারি আপিল করেন।
আরও পড়ুন:বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা গ্যাটকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি আবার পিছিয়েছে। আগামী ১৪ মার্চ শুনানির পরবর্তী তারিখ দিয়েছে আদালত।
রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক আলী হোসাইনের আদালতে মামলাটির অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল।
এ দিন খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি; এ কারণ উল্লেখ করে তার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার সময় চেয়ে আবেদন করেন। আদালত তা মঞ্জুর করে অভিযোগ গঠন শুনানির নতুন তারিখ ঠিক করে।
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলাটি করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী।
২০০৮ সালের ১৩ মে তদন্ত শেষে দুদকের উপপরিচালক জহিরুল হুদা খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। মামলায় আসামি ১৭ জন। এর মধ্যে সাতজন মারা গেছেন।
বগুড়ার জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সরকারি মোবাইল ফোন নম্বর ক্লোন করে উপনির্বাচনে অংশ নেয়া এক প্রার্থীর কাছে অর্থ দাবির অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার রাত সোয়া ৮টার দিকে জেলা প্রশাসকের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এ বিষয়ে সতর্কীকরণ পোস্ট দেয়া হয়।
পোস্টে বলা হয়েছে, সম্প্রতি জেলা প্রশাসক বগুড়া ও উপনির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের অফিসিয়াল নম্বর ক্লোন করে বিভিন্ন প্রার্থীর কাছে অর্থ দাবি করা হয়েছে।
এজন্য সবাইকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে কেউ অর্থ দাবি করলে যাচাই-বাছাই ও তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসক বগুড়াকে জানাতে বলা হয়েছে।
পোস্টের বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিসি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘শনিবার উপনির্বাচনে এক প্রার্থীকে ফোন দেয় চক্রটি। তার সন্দেহ হলে আমাকে ফোন দিলে বিষয়টি জানাজানি হয়। সঙ্গে সঙ্গে প্রতারক চক্রের বিষয়ে ফেসবুকে পোস্টসহ আর্থিক লেনদেন না করতে নিষেধ করা হয়েছে।’
বগুড়ার ডিসি আরও বলেন, ‘একটি প্রতারক চক্র প্রশাসনের নাম করে অবৈধভাবে টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য নম্বরটি ক্লোন করে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ’
তবে ওই প্রার্থীর নাম ও কী পরিমাণ টাকা দাবি করা হয়েছে, তা প্রকাশ করেননি ডিসি।
আরও পড়ুন:বার ও বেঞ্চের সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সারাদেশ থেকে আসা বিভিন্ন জেলার আইনজীবী সমিতির নেতারা। একইসঙ্গে তারা নিম্ন আদালতে দুর্নীতি, আইনজীবীদের প্রশিক্ষণের অভাব ও বিচারকদের রায়ের মান নিম্নমুখী বলে অভিযোগ করেছেন। নিম্ন আদালতে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানিয়েছেন তারা।
শনিবার বার কাউন্সিল ভবনে কাউন্সিলের বর্ধিত সভায় অংশ নিয়ে আইনজীবী নেতারা এসব কথা বলেন।
এদিকে সভার প্রথমার্ধে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের কথা বলার সুযোগ না দেয়ায় দু’পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল বাধে। পরে অ্যাটর্নি জেনারেলের হস্তক্ষেপে দু’পক্ষ শান্ত হয়।
বর্ধিত সভায় সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি বার কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্য অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘অতি সম্প্রতি আইনজীবীদের রাস্তাঘাটে মারধর করা হয়। অথচ বার কাউন্সিল এ নিয়ে কিছু বলে না।’
সিলেট বার থেকে আসা আইনজীবী সমিতির সভাপতি বলেন, ‘আইন পেশার মান উন্নয়ন, নবীন আইজীবীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারলে বার ও বেঞ্চের মধ্যে সম্পর্কে ভালো হবে।’
আড়াই হাজার নতুন আইনজীবীকে বসার জায়গা দিতে পারছে না বলেও বার কাউন্সিলকে জানান তিনি।
বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি লস্কর নুরুল হক বার কাউন্সিলের নেতাদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘বার ও বেঞ্চে তিক্ততা বন্ধে উদ্যোগ নিন; তাদের সুরক্ষা দিন। অনেক আইনজীবী হয়রানির শিকার হন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইনজীবীরা কেন প্রতিবাদ করছেন তার কারণ খুঁজে বের করুন।’
বিভিন্ন জেলা থেকে আসা আইনজীবীরা বার ও বেঞ্চের মধ্যে বিদ্যমান বিরোধ দূর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
বর্ধিত সভায় সভাপতিত্বে করেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রেজাউর রহমানসহ বার কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্যরা।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ৫২ জন বিশিষ্ট নাগরিক। এই হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে তাদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো নাগরিক সমাজের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অধিকারভিত্তিক সংগঠনের ওপর এ ধরনের ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা উদ্বেগজনক। আমরা এর তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানাচ্ছি। রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে নাগরিকদের চলাফেরা ও নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। রাষ্ট্রকে সব নাগরিকের এই অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
২৬ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরীর আকবরশাহ এলাকায় রিজওয়ানা হাসানের গাড়ি লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়া হয়। এ সময় তার সফরসঙ্গী বেলার কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, আকবরশাহ থানাধীন লেকসিটি আবাসিক এলাকায় পাহাড় কেটে ভরাট করা ছড়া পরিদর্শনের সময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহুরুল আলম ওরফে জসিমের নেতৃত্বে তার অনুসারী দুর্বৃত্তরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
ভবিষ্যতে কোনো দখলদার, পাহাড়খেকো, নদীখেকো ও ভূমিদস্যু যেন এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর সাহস না দেখায়, সে বিষয়ে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতেও বিবৃতিতে দাবি জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে সই করেছেন- মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন সুলতানা কামাল, অর্থনীতিবিদ ওয়াহেদউদ্দিন মাহমুদ, পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, মানবাধিকার কর্মী ড. হামিদা হোসেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সভাপতি জেড আই খান পান্না, অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্যপরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাণা দাশগুপ্ত, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, নারীপক্ষ’র সদস্য শিরিন হক, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, আইনজীবী শাহদীন মালিক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত, লেখক রাহনুমা আহমেদ, ব্লাস্ট-এর অনারারি নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, অধ্যাপক আসিফ নজরুল প্রমুখ।
মন্তব্য