নরসিংদীর রায়পুরায় কলার বাগান থেকে দুই মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন, জুয়া খেলা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল-আমিন বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় এসব নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- রায়পুরা উপজেলার শেরপুর পশ্চিম পাড়া গ্রামের ১৮ বছর বয়সী মিল্লাত হোসেন বাইজিদ ওরফে কামরুল ও শেরপুর কান্দাপাড়ার ২৫ বছরের কাউসার মিয়া।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল-আমিন জানান, সোমবার বিকেলে দুই মরদেহ উদ্ধারের পর স্বজনেরা তাদের শনাক্ত করেন। নিহতরা হলেন, রায়পুরা উপজেলার উত্তর বাখরনগর ইউনিয়নের লোচনপুর গ্রামের ৪৫ বছর বয়সী আলী হোসেন ও শিবপুর উপজেলার পাহাড় ফুলদী এলাকার ৩৫ বছর বয়সী দ্বীন ইসলাম।
তিনি আরও জানান, অনলাইন জুয়া খেলায় টাকার লেনদেন নিয়ে বিরোধের জেরে এই জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে। নিহতের স্বজনেরা রায়পুরা থানায় মামলা করেছেন। মঙ্গলবার রাতে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় গোয়েন্দা পুলিশ রায়পুরা থেকে দুই জনকে গ্রেপ্তার করেন।
গ্রেপ্তার আসামিরা হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘দুইজনের জবানবন্দি অনুযায়ী হত্যায় ব্যবহার করা ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যায় জড়িত আরও ৪ জনকে গ্রেপ্তারে কাজ চলছে।’
ঢাকার উপকণ্ঠ সাভারে গভীর রাতে নিজ বাড়িতে বাইসাইকেল চালিয়ে ফেরার পথে সন্ত্রাসীদের গুলিতে পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আজিজুল খান।
শনিবার রাত একটার দিকে আশুলিয়ার ভাদাইল পূর্ব পাড়া রূপায়ন মাঠ সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় থানায় এখনও মামলা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রোববার বিকেলে ভুক্তভোগীর চাচাতো ভাই এসব তথ্য জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি বলেন, ‘শনিবার গভীর রাতে সাইকেল চালিয়ে নিজ বাড়ি ফিরছিলেন আজিজুল। এ সময় বাড়ি থেকে কিছু দূরে সামনে অন্ধকারে চারজনকে বসে থাকতে দেখে আজিজুল সেখানে সাইকেল থামিয়ে দাড়ায়ে পরেন। এতো রাতে তারা কারা এবং সেখানে কী করছেন এটা জিজ্ঞেস করেন আজিজুল। তখন তারা আজিজুলকে বলেন- তুই বাসায় যা।
‘এর জবাবে আজিজুল জিজ্ঞাসা তাদের পাল্টা প্রশ্ন করেন তার বাড়ির ওখানে তারা কারা? এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসী বাপ্পী আজিজুলের বাম পায়ে গুলি করে সেখান থেকে দ্রুত পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা আমার ভাইকে প্রথমে আশুলিয়ার নারী ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখান থেকে চিকিৎসকরা তাকে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে রেফার্ড করেন।’
রোববার আজিজুলের পায়ে অস্ত্রপচার শেষে হাসপাতালে তাকে ভর্তি রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আজিজুল বাপ্পীকে চিনতে পেরেছে। বাপ্পী এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। এর আগেও অস্ত্র ও মাদকসহ সে গ্রেপ্তার হয়েছিল। আমরা পরিবারের সবাই আতঙ্কিত। কারণ বাড়ির পাশে গভীর রাতে কারা আড্ডা দিচ্ছে সামান্য এই প্রশ্ন করে আমার ভাইকে গুলি খেতে হয়েছে। আল্লাহর রহমতে সে প্রাণে বেঁচে গেছে। তবে সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা না হলে আমাদের পক্ষে স্বস্তিতে বসবাস করা সম্ভব হবে না।’
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার এসআই সোহেল মোল্লা বলেন, ‘শনিবার অনেক রাতে ভাদাইল এলাকায় গুলির ঘটনা শুনে আমি সেখানে গিয়েছিলাম। একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সামান্য বিষয়েই ওই যুবককে গুলি করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। ঘটনাস্থল থেকে কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী ও তার স্বজনরা হাসপাতালে থাকায় এখনও লিখিত অভিযোগ দেয়নি তারা। লিখিত অভিযোগ পেলে মামলা রুজু হবে। পাশাপাশি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।’
‘আমাদের জাহাজের ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে ইঞ্জিন রুমে পানি ঢুকতেছে। এখন জাহাজের কন্ট্রোল নাই, সাগরে এলোমেলো ভাসতেছি। আমরা ১৪ জন ক্রু আছি জাহাজে। আমাদের উদ্ধারের ব্যবস্থা নেন দয়া করে।’
এমন অনুরোধ জানিয়ে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় মুরাদ (১৮) নামে একটি লাইটার জাহাজের ক্রু জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন। পরবর্তীতে তৎপরতা চালিয়ে কোস্টগার্ড ওই ১৩ নাবিককে উদ্ধার করে।
জানা যায়, এমভি মাস্টার সুমন-২ নামে একটি লাইটার জাহাজ এক হাজার ১০০ টন কয়লা বোঝাই করে চট্টগ্রাম থেকে দাউদকান্দি যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। ইঞ্জিন রুমে পানি ঢুকে জাহাজটি সাগরে নিয়ন্ত্রণহীন ভাসতে থাকে। এ সময় জাহাজটি সাঙ্গু গ্যাস ফিল্ড থেকে আনুমানিক ৯ দশমিক ৫ নটিক্যাল মাইল উত্তরে গভীর সাগরে অবস্থান করছিল।
নাবিক মুরাদের কলটি রিসিভ করেন ৯৯৯ কলটেকার কনস্টেবল মো. আবদুল কাদের। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে কোস্টগার্ড নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ও সন্দ্বীপ কোস্টগার্ডে ঘটনাটি জানিয়ে দ্রুত উদ্ধারে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
পরবর্তীতে ৯৯৯ ডেসপাচার এসআই কবির রায়হান উদ্ধার-সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে যোগাযোগ করে উদ্ধার তৎপরতার আপডেট নিতে থাকেন।
সংবাদ পেয়ে কোস্টগার্ডের নিয়মিত টহল কার্যক্রম পরিচালনাকারী জাহাজ ‘সবুজ বাংলা’ দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে লাইটার জাহাজটি থেকে ১৩ জন ক্রুকে নিরাপদে উদ্ধার করে।
উদ্ধারকৃতদের প্রাথমিক শুশ্রূষা এবং খাবার সরবরাহ করা হয়। পরবর্তীতে মালিক পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে উদ্ধারকৃত ক্রু এবং জাহাজটি বুঝিয়ে দেয়া হয়।
কোস্টগার্ড উদ্ধারকারী দলের নেতৃত্ব দেয়া লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন ৯৯৯-কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন:দিনাজপুরে বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ক্ষোভে ২০০ টাকা দিয়ে একটি ধারাল দা কিনে সেটি দিয়ে প্রকাশ্যে জয়া বর্মনকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন তরিকুল ইসলাম চালু।
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে গ্রেপ্তার তরিকুল ইসলাম চালুর স্বীকারোক্তির বরাতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আব্দুল্লাহ আল মাসুম। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) জিন্নাহ আল মামুন ও কোতয়ালী থানার ওসি ফরিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিফিংয়ে আব্দুল্লাহ আল মাসুম বলেন, ‘গত প্রায় ৬ মাস ধরে হোটেল শ্রমিক জয়া বর্মন ও তরিকুল ইসলাম চালুর মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক চলে আসছিল। ভালোবাসা চলাকালে তরিকুলের কাছ থেকে বহু টাকা ধার নিয়েছেন জয়া বর্মন। কিছুদিন আগে জয়া বর্মনকে বিয়ের প্রস্তাব দেন তরিকুল। কিন্তু সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন জয়া বর্মন। বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার ক্ষোভে ২০০ টাকা দিয়ে একটি ধারালো দা কিনে সেটি দিয়ে জয়াকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেন তরিকুল।’
শনিবার সকাল ৬টার দিকে জেলার খানসামা উপজেলার পাকেরহাটে মাহিন সুইট হোটেলের ভেতর থেকে কোতয়ালী থানা পুলিশ আসামি তরিকুলকে গ্রেপ্তার করে। সেই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রটিও উদ্ধার করে পুলিশ। তরিকুল দিনাজপুর সদর উপজেলার মুরাদপুর নামপুকুর এলাকার মৃত আশরাফ আলীর পালক ছেলে।
জয়া ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বনডাঙ্গা গ্রামের সপাল রায়ের স্ত্রী। সপাল রায় দিনাজপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি ট্রাক্টর শো-রুমের নৈশ প্রহরী হিসেবে কাজ করেন। সপাল রায় ও জয়া বর্মন ফকিরপাড়ার একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, জয়া বর্মন ও তরিকুল ইসলাম চালু বাস টার্মিনাল প্রাঙ্গণে সাউদিয়া হোটেলে কাজ করতেন। দীর্ঘদিন এক সঙ্গে কাজ করায় এক পর্যায়ে দুইজনের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। স্বামী সপাল রায় নৈশ প্রহরীর চাকরী করার সুযোগে জয়া তরিকুলকে নিয়ে প্রায় তার বাসায় আসতেন।
কিছুদিন আগে তিনিজয়াকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু এক সন্তানের জননী জয়া তার সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। দীর্ঘদিনের ভালোবাসার পর বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়ায় তরিকুলের মনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। সেই ক্ষোভ থেকে প্রেমিকাকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকেন তিনি। পরিকল্পনা মোতাবেক শহরের মহারাজার মোড়ের কামারের দোকান থেকে ২০০ টাকা দিয়ে একটি ধারালো দা কেনেন তরিকুল।
গত শুক্রবার দুপুরের পর হোটেল থেকে ছুটি নেন তরিকুল। প্রতিদিনের মতো হোটেলের কাজ শেষে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরছিলেন জয়া। মির্জাপুর বাস টার্মিনাল বিসমিল্লাহ হোটেলের সামনে পৌঁছালে তার ওপর হামলা করেন তরিকুল। ধারালো দায়ের কোপে গুরুতর আহত হন তিনি।
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কিছুক্ষণ পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে নিহত জয়ার স্বামী সপাল রায় বাদী হয়ে কোতয়ালী থানায় একটি মামলা করেন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর মোহাম্মদপুরে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িতে হামলার মামলায় ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ ১৯ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদপুর থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় এই অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে।
রোববার আদালত সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।
চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের শ্যালক ইশতিয়াক মাহমুদ, মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নাইমুল হাসান ওরফে রাসেল, ফিরোজ মাহমুদ, মীর আমজাদ হোসেন, সাজু ইসলাম, রাজীবুল ইসলাম, শহিদুল আলম খান, সিয়াম ও অলি আহমেদ। তাদের মধ্যে ইশতিয়াক মাহমুদ পলাতক। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে। অন্য আসামিরা জামিনে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় ২০১৮ সালের ১০ আগস্ট রাতে ড. বদিউল আলম মজুমদার বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন।
২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. আব্দুর রউফ ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
২০২২ সালের ১ মার্চ ৯ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। গত বছরের ২৮ মার্চ এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।
গত ৪ ডিসেম্বর এ মামলায় ছয়জনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়। পরে দেখা যায়, এদের মধ্যে সাক্ষী ড. বদিউল আলম মজুমদার, খুশি বেগম ও মাহবুবুল আলম মজুমদার তাদের জবানবন্দিতে জনৈক ইশতিয়াক মাহমুদের নাম উল্লেখ করেন।
পরে গত ২৭ ডিসেম্বর আদালত মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায় থেকে তুলে এনে অধিকতর তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ঢাকার সিএমএম বরাবর পাঠায়।
এদিকে ১ জানুয়ারি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম চৌধুরীর আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দেয়।
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ে পদ্মা সেতুতে উঠে রিকশাচালকের নদীতে ঝাঁপ দেয়ার ঘটনা ঘটে চলতি বছর ১৯ জুনে।
এ ঘটনায় কয়েকদিন ধরে উদ্ধার চললেও ওই সময় খোঁজ মেলেনি তার।
প্রায় তিনমাস পর শরিফুল ইসলাম নামের ওই রিকশাচালকের খোঁজ মিলেছে। বেঁচেও আছেন তিনি।
পদ্মা সেতু উত্তর থানার ওসি আলমগীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘তার বাড়ি বাগেরহাটে, তবে তিনি ঢাকার হাজারীবাগে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। ঘটনার দিন রাতে পারিবারিক কলহের জেরে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান তিনি। তার উদ্দেশ্য ছিল, ঢাকা থেকে বাগেরহাটে চলে যাবেন।
‘মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত হয়ে রিকশা চালিয়ে পদ্মা সেতুর ওপরে উঠেন তিনি। একপর্যায়ে একটি যানে ধাক্কা লাগলে নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে ধাওয়া করেন। তখন ভয়ে সে রিকশা রেখেই সেতু থেকে ঝাঁপিয়ে নদীতে পড়েন।’
শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রাতভর নদীতে ভেঁসেছিলাম। নদীতে অনেক ঢেউ ছিল তাই কোনো কূল-কিনারা খুঁজে পাই নাই। নিজের মতো করে সাঁতরাচ্ছিলাম।
‘সকালে মাওয়া প্রান্ত থেকে দূরের একটি এলাকায় উঠি। পরে বাসে উঠে বাড়িতে গেলেও পরিবারের কেউ আমার এ ঘটনা বিশ্বাস করে নাই। সবাই বলছিল অটোরিকশাটি আমি চুরি করে বিক্রি করে দিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিস্তির টাকা দিয়ে রিকশাটি কিনেছিলাম, পরে জানতে পারি এটি থানায় আছে। এ জন্য পদ্মা সেতু উত্তর থানায় আসি।
এ বিষয়ে শরিফুল ইসলামের শ্বশুর মোহাম্মদ দাউদ মোল্লাহ বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের কাছে বলার পর আমরা বিশ্বাস করতে পারিনি, কারণ পদ্মা নীতিতে পড়ে কেউ জীবিত ফিরতে পারে এটা বিশ্বাস করার মতো না। থানায় এসে দেখলাম তার অটোরিকশাটি। এখন বিশ্বাস হচ্ছে।’
পদ্মা সেতু উত্তর থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান, থানা এলাকায় সকাল বেলা গিয়ে অটোরিকশাটি তার বলে দাবি করেন। তার পরিচয় ও যাচাই-বাছাই চলছে। বিস্তারিত পরে জানা যাবে।
আরও পড়ুন:মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার শিকারমঙ্গল ইউনিয়নের মৃধাকান্দি গ্রামে এক প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতির অভিযোগে দুজনের চোখ তুলে নিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের ভাষ্য, ডাকাতি করে পালানোর সময় দুজনকে আটক করে সংঘবদ্ধ পিটুনি দিয়ে চোখ উঠিয়ে নিয়েছে গ্রামবাসী।
উপজেলার শিকারমঙ্গল ইউনিয়নের মৃধাকান্দি গ্রামে শনিবার রাত দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন বরিশালের মুলাদী উপজেলার টুমচর বাটামারা এলাকার ৪৫ বছর বয়সী দাদন হাওলাদার ও একই এলাকার ৫০ বছর বয়সী সোহরাব হাওলাদার।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার গভীর রাতে শিকারমঙ্গল ইউনিয়নের মৃধাকান্দি এলাকার সেকান্দার হাওলাদারের বাড়িতে ১০ থেকে ১৫ জনের একদল মুখোশ পরা ডাকাতদল ঘরে প্রবেশ করে। তারা ঘরের লোকদের জিম্মি করে মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। বিষয়টি স্থানীয়রা টের পেয়ে ডাকাত সন্দেহে দাদন হাওলাদার ও সোহরাব হাওলাদারকে আটক করেন। ওই সময় উত্তেজিত জনতা তাদের পিটুনি দিয়ে চোখ তুলে ফেলেন।
পরে পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরে দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ার চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘দুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল। তাদের দুজনের চোখেই গভীর ক্ষত রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।’
কালকিনি থানার ওসি নাজমুল হাসান বলেন, ‘৯৯৯-এ ফোন পেয়ে আহত দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, তারা ডাকাতির উদ্দেশ্যে এসেছিল।
‘তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের রাউজানে কলেজছাত্র শিবলী সাদি হৃদয়কে অপহরণের পর গলা কেটে হত্যার ঘটনায় আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
কর্ণফুলী থানার নতুনব্রিজ এলাকা থেকে শনিবার বিকেল ৫টার দিকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন উচিংথোয়াই মারমা ও তার সহযোগী ক্যাসাই অং মারমা। এদের মধ্যে উচিংথোয়াই মারমা শিবলীর গলা কেটেছেন বলে জানায় র্যাব।
র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম রোববার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘রাউজানে কলেজছাত্র খুনের ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে গলা কেটে হত্যাকারীও রয়েছে।
‘ভুক্তভোগী শিবলী সাদিক রাউজানের কদলপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি এলাকার একটি মুরগির খামার দেখাশোনা করতেন। সেই খামারে কাজ করা কয়েকজনের মধ্যে বিরোধকে কেন্দ্র করে গত ২৮ আগস্ট শিবলী সাদিককে অপহরণ করা হয়।’
তিনি আরও জানান, অপহরণের ঘটনার দুই দিন পর অপহরণকারীরা হৃদয়ের পরিবারের কাছে ফোন করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। অপহরণকারীদের সঙ্গে কথা বলে পরিবারের সদস্যরা দুই লাখ টাকা দিতে রাজি হয়। কয়েক দিন পর অপহৃত শিবলীর বাবা শফি বান্দরবান এলাকার ডুলাপাড়ায় গিয়ে একজনের হাতে দুই লাখ টাকা তুলে দেন, কিন্তু তারা শিবলীকে মুক্তি দেননি।
এরপর ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে রাউজান থানায় মামলা করেন।
এর আগে ১০ সেপ্টেম্বর চান্দগাঁও থানা এলাকা থেকে শিবলীকে অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সুইচিংমং মারমা, অংথুইমং মারমা ও উমংচিং মারমাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের মধ্যে পরের দিন (১১ সেপ্টেম্বর) উমংচিং মারমাকে নিয়ে শিবলীর মরদেহ উদ্ধার করতে যায় পুলিশ। ওই দিন কদলপুর-রাঙ্গুনিয়া সীমান্তবর্তী দলুছড়ি পাহাড়ি এলাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে অপহৃত যুবকের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সেখান থেকে ফেরার পথে পঞ্চপাড়া গ্রামে কয়েক শ মানুষ জড়ো হয়ে পুলিশের গাড়ি আটকে দেয়। ওই সময় উত্তেজিত জনতা গাড়ি থেকে আসামি উমংচিং মারমাকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নিয়ে হত্যার ঘটনায় এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য