রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় গুলিতে নিহত হয়েছেন মকবুল হোসেন নামে এক ব্যক্তি। আহত হয়েছেন অন্তত ১৮ জন। বিএনপি কার্যালয় থেকে ২০ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার বিকেলে এ সংঘর্ষের পর পুরো এলাকায় তৈরি হয় থমথমে পরিবেশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুই পাশের রাস্তা ধরে পুলিশ হঠাৎ বাঁশি বাজিয়ে টিয়ার শেল ছুড়ে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করা নেতা-কর্মীদের দিকে এগিয়ে আসে। এ পর্যায়ে দলটির নেতা-কর্মীরা পিছু হটেন। মূল সড়কের পাশের অলি-গলিতেও লাঠিপেটা করে পুলিশ।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে নয়াপল্টন এলাকায় একাধিক সাঁজোয়া যান, প্রিজন ভ্যান ও পুলিশের অতিরিক্ত স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন করা হয়।
ঘটনাস্থল থেকে নিউজবাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আশিক হোসেন জানান, পুরো এলাকায় পুলিশকে টিয়ার শেল ছুড়তে দেখা গেছে। টিয়ার শেলের তীব্র ঝাঁঝে নিঃশ্বাস নেয়া কঠিন হয়ে যায়।
বিএনপির কার্যালয়ে কিছু নেতা-কর্মী আটকা পড়েন বলে জানান সাইফুল ইসলাম নামের দলটির এক কর্মী।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমিও ভেতরে আটকা আছি; রিজভী সাহেবও। পুলিশের ছোড়া টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেডের ধোঁয়া ভেতরে প্রবেশ করায় শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।’
কার্যালয়ে আছেন জানিয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘তিতুমীর কলেজের ছাত্রদলের কিছু নেতা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।তাদের শরীর থেকে ব্যাপক রক্তক্ষরণ হচ্ছে।
‘তারা নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবরুদ্ধ, হাসপাতালে নেয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে খবর দেয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যত হামলা করা হোক, আগামী ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হবে। সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে বিএনপির নিরীহ নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশের এই গুলি সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে।’
১০ ডিসেম্বর বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ সামনে রেখে বুধবার স্বাভাবিক দিনের তুলনায় দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নেতা-কর্মীদের জটলা বেশি ছিল।
এর আগে মির্জা আব্বাস সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। তার সঙ্গে অনেক নেতা-কর্মী নয়াপল্টনে সমবেত হন।
পুলিশের অ্যাকশনের পর নয়াপল্টন এলাকায় সোয়াট সদস্যদেরও দেখা গেছে।
ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার হায়াতুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘১০ তারিখের সমাবেশের এখনও চার-পাঁচ দিন বাকি আছে, কিন্তু বিএনপির নেতা-কর্মীরা আজকে নয়াপল্টনে রাস্তা বন্ধ করে মিছিল-মিটিং শুরু করেছিল।
‘আমরা তাদের এসব বন্ধ করতে বলায় তারা পুলিশের ওপর হামলা করে। এরপর আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিয়েছি। বিএনপি কর্মীদের চারপাশ থেকে হামলার কারণে বাড়তি ফোর্স আনিয়েছি। বাড়তি সতর্কতার জন্য সোয়াট সদস্যরাও ঘটনাস্থলে এসেছেন।’
আরও পড়ুন:‘আওয়ামী লীগ পালায় না’- রাজশাহীর জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এক এগারোতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর কারা পালিয়েছিল তা সবাই জানে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পদযাত্রা শুরু আগে দেয়া বক্তব্যে সোমবার দুপুরে তিনি এসব কথা বলেন। গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধারে ১০ দফা দাবিতে এ পদযাত্রার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।
ফখরুল বলেন, ‘১/১১ সরকারের সময় গ্রেপ্তার হওয়ার পর কারা-কারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে তা সবাই জানে। তখন দেশে ছিলেন একজন, তিনি হলেন খালেদা জিয়া।’
তিনি বলেন, ‘কোনো দিকে পালাবার পথ নেই। কোন দিকে পালাবেন ? তাই এখনও বলছি, সময় আছে আমাদের দাবি ১০ দফা এই দাবি মানে মানে মেনে নিয়ে পদত্যাগ করুন। সংসদ বাতিল করুন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আসুন। নতুন কমিশন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচন দিন।’
পদযাত্রা প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের পদযাত্রা, গণতন্ত্রের জয়যাত্রা। আমাদের এই পদযাত্রা মানুষের অধিকার আদায়ের পদযাত্রা। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জয়যাত্রা।’
সরকার জনগণের পকেটের টাকা কেড়ে নিচ্ছে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, ‘এই পুরান ঢাকায় গ্যাস নেই। শুধু পুরান ঢাকা নয়, গোটা বাংলাদেশে এখন গ্যাস নেই। ওরা গ্যাসও খেয়ে ফেলেছে। আবার গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে, বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। প্রত্যেকটি পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে নিয়েছে। জনগণের পকেট থেকে টাকা কেটে নেয়া হচ্ছে। আর সেই টাকা তারা বিদেশে পাচার করছে।’
বক্তব্য শেষে যাত্রাবাড়ী থেকে জুরাইন রেলগেটের উদ্দেশে পদযাত্রা শুরু করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। পদযাত্রায় অংশ নেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান বরতক উল্লাহ বুলু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, সদস্য সচিব রকিফুল আলম মঞ্জু প্রমুখ।
রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেটে বোতলজাত ‘জমজমের পানি’ সাময়িকভাবে বিক্রি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত দিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
এই পানি বিক্রির কোনো বৈধতা আছে কি না, তা যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ সংশ্লিষ্ট সবার মতামত নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
সোমবার দুপুরে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে ‘পবিত্র জমজম কূপের পানি খোলা বাজারে বিক্রয়’ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় এ পানি বিক্রির আইনগত ও নৈতিক বৈধতা নিয়ে আলোচনার পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
বায়তুল মোকাররম মার্কেটে বোতলজাত করে জমজমের পানি বিক্রি হচ্ছে, এমন সংবাদে ভোক্তা অধিদপ্তর রোববার অভিযান চালায়। ওই অভিযানে ৫ লিটার ও ২৫০ মিলিলিটারের বোতলে পানি বিক্রির প্রমাণ পাওয়ার পর ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সংস্থাটি।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা এই পানি হাজি কিংবা হজ পরিচালনাকারী বিভিন্ন এজেন্সি থেকে পেয়ে থাকেন।
সভায় ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি সংবেদনশীল। এটা আমাদের সামনে আসার পরে আমরা দ্রুত সভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখানে যেটুকু আলোচনা হয়েছে, তার ভিত্তিতে সাময়িকভাবে বায়তুল মোকাররম মার্কেটে পবিত্র জমজমের পানি বিক্রি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। কারণ, এমনকি সৌদি আরবেও এই পানি বিক্রি হয় এমন কোন তথ্য আমাদের জানা নেই।’
তিনি বলেন, ‘যতটুকু জানা গেছে, জমজমের পানি বিক্রির আইনি কোনো বৈধতা নেই। এরপরেও আমরা যাচাই-বাছাই করতে চাই। এ জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের মতামত নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’
এ এইচ এম সফিকুজ্জামান আরও বলেন, ‘আমার এটাও মনে হয় না, কোনো হাজি সৌদি থেকে জমজমের পানি নিয়ে আসবেন বায়তুল মোকাররমের এই মার্কেটে বিক্রি করার জন্য। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, সৌদি সরকার যদি এটা জানে, তাহলে আমাদের দেশের ব্যাপারে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হতে পারে। তা ছাড়া এমনও হতে পারে যে বাংলাদেশিদের জন্য জমজমের পানি নিয়ে আসা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।’
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. গোলাম ইয়াজদানীর উপর হামলার তীব্র নিন্দা ও দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছে জাতীয় পেশাজীবী প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)।
সোমবার আইইবির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. শাহাদাৎ হোসেন শীবলুর স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আইইইবি এই দাবি জানায়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রবিবার বিকেলে নগরের টাইগারপাসে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী কার্যালয় ভবনের চারতলায় প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. গোলাম ইয়াজদানী সরকারি কাজ করছিলেন। এমতাবস্থায় তার কক্ষে প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন ঠিকাদার ঢুকে পড়েন। কথা বলার একপর্যায়ে তার ওপর হামলা করেন ঠিকাদারেরা।
আইইবি মনে করে, সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে প্রকৌশলী মো. গোলাম ইয়াজদানীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। একজন সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীর সঙ্গে এ ধরনের ঘটনায় সারা দেশের প্রকৌশলীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে এবং দেশের সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটবে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আইইবি এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে জড়িত সবাইকে দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে।
রাজশাহীতে বিএনপির সমাবেশের চেয়ে আওয়ামী লীগের জনসভা ১৪ গুণ বড় বলে দাবি করেছেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
সচিবালয়ে সোমবার তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে এমন দাবি করেন তিনি।
রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে রোববার জনসভা করে আওয়ামী লীগ, যাতে অংশ নেন দলটির বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল একটা অসাধারণ সভা হয়েছে। পুরো রাজশাহী শহরই জনসভাস্থলে পরিণত হয়েছিল। মাদ্রাসা মাঠের বাইরে কমপক্ষে আরও ১০ থেকে ১২ গুণ মানুষ ছিল।’
বিএনপিও রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশ করেছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশের চেয়ে কত গুণ বড় সমাবেশ হয়েছে, সেটা অনুমান করা কঠিন, তবে বিএনপির সমাবেশের চেয়ে কমপক্ষে ১২ থেকে ১৪ গুণ বড় তো বটেই।
‘আকাশ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও সমাবেশটি দেখেছেন। এটি অভাবনীয়। আমাদের ধারণার বাইরে সমাবেশটি হয়েছে। পুরো শহরজুড়ে মানুষের মধ্যে উদ্দীপনা, সমাবেশে যাওয়ার জন্য আগ্রহ আমি দেখেছি শুরু থেকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি, তার দলের প্রতি জনগণের যে সমর্থন রয়েছে, গতকালের জনসভা সেটিই প্রমাণ করে।’
স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও মানুষকে ভোট ও ভাতের অধিকার, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম ও লড়াই করতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে আমি সবিনয়ে অনুরোধ জানাব আয়নায় নিজের চেহারাটা দেখানোর জন্য; নিজের দলের চেহারাটাও দেখার জন্য।
‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচারে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে রূপান্তর করে কারা বন্ধ করেছিল? বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। সেখানে ন্যায়বিচার নয়, বিচারটাই বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।’
মন্ত্রী বলেন, “কারাগারের অভ্যন্তরে চার জাতীয় নেতাকে হত্যা করা হয়। সেই বিচারও বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। আর ভোটের অধিকার? জিয়াউর রহমানের সময় সাত্তার সাহেবের সময়, খালেদা জিয়ার সময়, এরশাদ সাহেবের সময় স্লোগান ছিল ‘১০টা হোন্ডা, ২০টা গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা।’ এখন মানুষ সেই স্লোগান দেয় না। সেই সংস্কৃতি তারাই চালু করেছে।”
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচন বিএনপিই করেছিল। তারা এক মাসের বেশি ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি।
‘আয়নায় নিজের চেহারাটা দেখলেই উনি উত্তরটা পেয়ে যাবেন। এ দেশে মানবাধিকারের লঙ্ঘন শুরু করেছেন জিয়াউর রহমান।’
আরও পড়ুন:ঢাকার হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় বাহরাইনের জাতীয় বিমান সংস্থা গালফ এয়ারের এক পাইলটের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই পাইলটের বোন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক তালা এলহেন্ডি জোসেফিনো।
সোমবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেন।
গত ১৫ ডিসেম্বর রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান পাইলট ইউসুফ হাসান আল হিন্দি। ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য ইউনাইটেড হাসপাতালকে দায়ী করে হাসপাতালটির লাইসেন্স বাতিল ও কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন তালা।
সংবাদ সম্মেলনে তালা জানান, গত ১৪ ডিসেম্বর রাতে তার ভাই ঢাকার মেরিডিয়ান হোটেলে ছিলেন। রাত পৌনে তিনটার দিকে উঠে তিনি ফ্লাইটের জন্য প্রস্তুত হন। ভোর ৪টার দিকে তিনি বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনের প্রক্রিয়ার মাঝে পড়ে যান।
তিনি জানান, পরে তাকে সাড়ে ৫টার মধ্যে ইউনাইটেড হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে নেয়া হয়। এরপর তিনি পর পর চার বার কার্ডিনাল অ্যারেস্টের শিকান হন। মৃতুবরণ করেন দুপুর ১২টার দিকে। এই সময়ের মধ্যে কোনো কার্ডিওলজিস্ট তার ভাইকে চিকিৎসা দেননি। কার্ডিওলজিস্ট ছাড়া পুরো চিকিৎসা প্রক্রিয়া শেষ করে চিকিৎসার অবহেলা করা হয়েছে।
যু্ক্তরাষ্ট্রের এই নাগরিক অভিযোগ করেছেন, পুরো ৮ ঘন্টা হাসপাতালে থাকলে তার ভাইয়ের জীবন বাঁচাতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এমনকি যে চিকিৎসক চিকিৎসা দিয়েছেন তার নামও ব্যবস্থাপত্রে নেই।
ভাই-বোন দুজনই যুক্তরাষ্ট্র ও জর্ডানের দ্বৈত নাগরিক। ভাই ইউসুফ আল হিন্দি গলফ এয়ারের পাইলট ছিলেন আর বোন তালা ব্রিটিশ সরকারের হয়ে কাজ করেন।
ভাইয়ের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর পর তিনি বাংলাদেশে ছুটে এসে খোঁজ-খবর নিয়ে ইউনাইটেড হাসপাতাল ও গালফ এয়ার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবহেলার প্রমাণ পান বলে জানান সাংবাদিকদের।
আরও পড়ুন:খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি নিয়ে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের ফেসবুকে আপলোড করা দুটি ভিডিও সরাতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ নির্দেশ দেয়।
আদালতে রিটকারী সুমনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক। আবদুস সালাম মুর্শেদীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী, সাঈদ আহমেদ রাজা ও সালাম মুর্শেদীর মেয়ে সেরিনা সালাম ঐশী।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন মাসুদ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
সেরিনা সালাম ঐশী সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত ২৩ ও ২৫ জানুয়ারি (ব্যারিস্টার সুমন) আমাদের বাড়ি নিয়ে লাইভ করেছেন। আদালত শুনানি নিয়ে সেই লাইভের ভিডিও অপসারণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে এই মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত এমন কোনো বিষয় নিয়ে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত লাইভ বা ভিডিও প্রকাশ করতে নিষেধ করেছেন আদালত।’
আবদুস সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি নিয়ে অভিযোগ অনুসন্ধানে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছে দুদক।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘আবদুস সালাম মোর্শেদীর বাড়ি-১০, গুলশান-২, ঢাকা ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে রাজউকের চেয়ারম্যানের সহায়তায় পরিত্যক্ত বাড়ি দখলের প্রাপ্ত অভিযোগটি ২ সদস্যবিশিষ্ট টিমের মাধ্যমে অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে মহাপরিচালক (তদন্ত-১) বরাবর পত্র প্রেরণের জন্য কমিশনের সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান আদালতকে জানান, অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে, যেটি অনুসন্ধান শুরু করেছে।
দুদক ছাড়াও রাজউকের প্রতিবেদন হাইকোর্টে জমা দেয়া হয়েছে, যাতে বলা হয়, আবদুস সালাম মুর্শেদীর গুলশানের বাড়ি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকায় নেই।
গত ১৬ জানুয়ারি আবদুস সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি সংক্রান্ত মূল নথি ও প্রতিবেদন অ্যাফিডেভিট করে এক সপ্তাহের মধ্যে জমার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট।
সরকারের সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিয়ে বাড়ি বানানোর অভিযোগে আবদুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে গত ১ নভেম্বর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে এ সম্পত্তি সম্পর্কিত সব কাগজপত্র ১০ দিনের মধ্যে আদালতে জমা দিতে (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) রাজউক, গণপূর্ত বিভাগ ও সালাম মুর্শেদীকে নির্দেশ দেয় আদালত।
আরও পড়ুন:জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আগামী ১ মার্চ দিন ধার্য করেছে আদালত।
সোমবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালতে মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ছিল। এ দিন সম্রাট আদালতে হাজিরা দেয়ার পর তার আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য সময় আবেদন করেন। আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে নতুন তারিখ দেন। স্থায়ী জামিনের আবেদন ও পাসপোর্ট নিজ জিম্মায় নেয়ার আবেদন করেন সম্রাটের আইনজীবী। আগামী ১ মার্চ এসব বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
সারা দেশে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর সম্রাট ও তার সহযোগী তৎকালীন যুবলীগ নেতা এনামুল হক ওরফে আরমানকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ওই বছরের ১২ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে দুদকের করা মামলায় ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। পরের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক।
অভিযোগপত্রে সম্রাটের বিরুদ্ধে ২২২ কোটি ৮৮ লাখ ৬২ হাজার ৪৯৩ টাকা জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
মন্তব্য