গণপরিবহনহীন সিলেট নগরবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে ২০১৯ সালে চালু হয় ‘নগর এক্সপ্রেস’। যাত্রীসেবার নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে চালু হয় এই বাস সার্ভিস। তবে তিন বছরে প্রতিশ্রুতির বেশিরভাগই বাস্তবায়ন হয়নি। উল্টো অব্যবস্থাপনা আর ভোগান্তি বেড়েছে। যাত্রীরাও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। ফলে সঙ্কটে পড়েছে ‘নগর এক্সপ্রেস’।
আশানুরূপ ব্যবসা করতে না পারায় বাস মালিকরাও হতাশ। ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন তারা। কমে এসেছে বাসের সংখ্যা ও চলাচলের রুট।
সিলেট নগরে যাত্রীদের গণপরিবহনের সঙ্কট দূর করতে ২০১৯ সালের ২৬ ডিসেম্বর ২১টি বাস নিয়ে চালু হয় ‘নগর এক্সপ্রেস’। শুরুতে সিটি করপোরেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, প্রতিটি বাসে থাকবে ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবস্থা। বাসের ভেতরে থাকবে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা ও ই-টিকিটের ব্যবস্থা। আর নারীদের জন্য আলাদা একটি বাস থাকবে যার চালক এবং সহযোগীও হবেন নারী। এছাড়া স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য থাকবে আলাদা তিনটি বাস। তবে তিন বছর পেরিয়ে গেলেও এসবের কোনটিই বাস্তবে দেখা মেলেনি।
যাত্রীদের উঠানামার জন্য নগরের বিভিন্ন এলাকায় আলাদা যাত্রী ছাউনি করা হবে বলেও শুরুতে আশ্বাস দিয়েছিলেন সিলেট সিটি মেয়র। তবে এখন পর্যন্ত একটি যাত্রী ছাউনিও নির্মিত হয়নি। বাসগুলোর জন্য নেই নির্দিষ্ট কোনো স্ট্যান্ডও।
শনিবার দুপুরে নগরের বন্দরবাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কের উপর দাঁড় করিয়ে রেখে যাত্রী তুলছে নগর এক্সপ্রেসের তিনটি বাস। একটি বাসের ভেতরে গিয়ে যায় যায়, বেশিরভাগ সিটই ভাঙাচোরা ও ময়লা। ভাড়া নিয়ে এক যাত্রীর সঙ্গে চালকের সহযোগীকে বাকবিতন্ডায় জড়াতেও দেখা গেল।
এই বাসে থাকা আরিফ আহমদ নামের এক যাত্রী বলেন, ‘বাস কখন আসে কখন যায় এসবের ঠিক নেই। যেকোন জায়গায় থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করানো হয়। ফলে গন্তব্যে পৌঁছাতে অনেক সময় লাগে। এছাড়া সিটগুলোর অবস্থাও খুব বাজে।’
এই বাসের চালক সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘বাসের সিট ভাঙাচোরা, ফ্যান চলে না। এগুলো নিয়ে যাত্রীরা প্রতিদিনই ঝামেলা করেন। আমরাও কর্তৃপক্ষকে জানাই। কিন্তু তারা মেরামত করে না দিলে আমাদের কিছু করার নেই।’
তিনি বলেন, ‘বাস সার্ভিস শুরুর পর প্রথমদিকে অনেক সাড়া পাওয়া গিয়েছিল। এখন যাত্রী কমে গেছে। ফলে বাস মালিকরাও আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।’
হেতিমগঞ্জ যাওয়ার জন্য নগরের উপশহর থেকে নগর পরিবহনের একটি বাসে উঠেন তাহমিদা আক্তার নামের এক কর্মজীবী নারী। তিনি অভিযোগ করে বলেন, নারীদের জন্য আলাদা বাস তো চালুই করা হয়নি, উল্টো বাসে নারীদের জন্য বরাদ্ধ আসনেও পুরুষরা বসে থাকেন। নারীদের দেখেও তারা আসন ছাড়তে চান না।
তিনি বলেন, ‘বাসগুলোর জন্য কোনো স্ট্যান্ড বা ছাউনি নেই। ফলে সড়কের উপরেই যাত্রী উঠানামা করানো হয়। এটা খুব ঝুঁকিপূর্ণ।’
‘নগর এক্সপেস’ মালিক সমিতি সূত্রে জানা যায়, নিটল টাটা গ্রুপের কাছ থেকে ছোট আকারের এই বাসগুলো কিনে নগর এক্সপ্রেসের কার্যক্রম শুরু হয়। ৪১টি বাস নিয়ে এই সেবা চালু হওয়ার কথা থাকলেও চালু হয় ২১টি বাস। তবে এখন এই সংখ্যা কমে এসেছে ১২টিতে। এখন কেবল সালুটিকর, বটেশ্বর, মোগলাবাজার ও হেতিমগঞ্জ সড়কে এই বাস চলে।
নগর এক্সপ্রেসের আগে ২০০৮ সালে ৩৫টি মিনি বাস নিয়ে ‘টাউন বাস’ সার্ভিস নামে ব্যক্তি উদ্যোগে সিলেটে গণপরিবহন সেবা চালু হয়েছিল। তবে অব্যবস্থাপনা ও লোকসানের কারণে ছয় বছরের মাথায় বন্ধ হয়ে যায় এই সেবা।
সেবার মান না বাড়ালে ও ব্যবস্থাপনা উন্নত না হলে নগর এক্সপ্রেসও হারিয়ে যাবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘গণপরিবহন না থাকা সিলেটের একটি বড় সমস্যা। সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে গণপরিবহন চালু করা খুবই ভালো উদ্যোগ ছিল। কিন্তু চালুর পর ব্যবস্থাপনা ও সেবার মানের দিকে তারা লক্ষ্য দেননি। চালুর সময়ে দেয়া প্রতিশ্রুতিগুলোও পূরণ করেননি। অব্যবস্থাপনার কারণে একটি ভালো উদ্যোগ এখন বন্ধের উপক্রম।’
নগর এক্সপ্রেসের নাজুক অবস্থা সম্পর্কে জানতে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে একাধিকবার যোগযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের পরিবহন শাখার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবর চৌধুরী বলেন, নগর এক্সপ্রেস পরিসেবাটি সিটি করপোরেশনের নয়। নগরবাসীকে ভোগান্তিবিহীন পরিবহনসেবা দিতে সিটি করপোরেশন একটি বাস মালিক গ্রুপের সঙ্গে সমন্বয় করে এই সেবা চালু করেছে। তবে এর লাভ-লোকসান বা ব্যবস্থাপনার সঙ্গে আমরা জড়িত নয়। সিটি করপোরেশন শুধু রোড ম্যাপ করে দিয়েছে এবং সমন্বয় করে।
নারী ও স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা বাস সার্ভিস চালুসহ বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুরুতে কিছুদিন এসব সার্ভিস ছিল। কিন্তু আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ায় পরে বন্ধ হয়ে গেছে।
‘নগর এক্সপ্রেস সিটি বাস মালিক গ্রুপ’-এর মাধ্যমে এই বাস সার্ভিস পরিচালিত হয়। এই গ্রুপের আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মখলিছুর রহমান কামরান।
তিনি বলেন, কয়েকটি বাসে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছিল। কিন্তু কিছুদিন পর এসব চুরি হয়ে যায়। এরপর বাকিগুলোতে আর লাগানো হয়নি।
নারী চালক ও সহকারী দিয়ে বাস চালানো হয়েছিল দাবি করে কামরান বলেন, ‘নারীচালকের বাসে নারী যাত্রীরা উঠতে চান না। এ কারণে ওই সার্ভিসটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে প্রতিটি গাড়িতে নারীদের জন্য আলাদা আসন আছে।’
বাস পরিচালনায় কিছু বিশৃঙ্খলা রয়েছে স্বীকার করে তিনি বলেন, এটি এখন পর্যন্ত লোকসানে চলছে। যে প্রত্যাশা নিয়ে নগর এক্সপেস চালু করা হয়েছিল, ভালো ব্যবসা না হওয়ায় তাতে ভাটা পড়েছে। এখন বাস মালিকরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।
তবে সিটি মেয়রের সঙ্গে আলাপ করে বাস স্ট্যান্ড নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানান কামরান।
আরও পড়ুন:কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, "জুলাই পুনর্জাগরণ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের চেতনার বাতিঘর। সেই শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। আজকের এই সম্মিলিত শপথ হোক দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার একটি নতুন অঙ্গীকার। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারে।"
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।
বক্তারা জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের এই সফল আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে যৌথবাহিনীর অভিযানে একজনকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলাঝাড়ি বাজারের করতোয়া নদীসংলগ্ন এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়।
দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর জুবায়ের হোসেন সিয়ামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক্টরসহ চালক রাজু ইসলাম ও শান্ত আহমেদকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
আদালতের রায়ে রাজু ইসলামকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন করায় দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। তবে রাজু ইসলাম অর্থদণ্ডের অর্থ পরিশোধ করায় ট্রাক্টর দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
মন্তব্য