১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের পর বিএনপি দেশে অরাজকতা ও বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি করবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘আমি খবর পেয়েছি আজ বিএনপির রাজশাহীর সমাবেশ সুপার ফ্লপ হয়েছে। ফখরুল এখন হুংকার ছাড়ছেন। ১০ ডিসেম্বর যখন চলে যাবে, জানি অবরোধ দেবেন, জানি ধর্মঘট দেবেন, জানি আবারও আগুন-সন্ত্রাস শুরু করবেন। জানি আবারও লাঠিখেলা করবেন, ঢাকা দখল করবেন। তবে আমরা কি বসে থাকবো? দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ললিপপ খাবো?’
শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘তারেক রহমান লন্ডনের টেমস নদীর তীর থেকে বাণী পাঠাচ্ছে; আর দেশে বসে ফখরুল হুংকার ছাড়ছেন। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাবে, মন্ত্রীরা সবাই দেশ ত্যাগ করবে, এসব কথা ছড়ানো হচ্ছে, তবে কখনো তা হবে না।
আওয়ামী লীগ কাউকে ভয় পায় না। শেখ হাসিনা আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পায় না। আওয়ামী লীগ ভয় পায় আপনাদের আগুন সন্ত্রাস, লাঠি নিয়ে খেলাধুলাকে। সেই বদ মতলব আপনাদের আছে। সে জন্যই আপনাদের পল্টন দরকার।’
সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যারা ভোট চুরি করে তারাই আবার ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার কথা বলে। তবে গ্রামের নিরীহ মানুষ এখন বলে বিএনপি থেকে সাবধান। বিএনপিকে কেউ বিশ্বাস করে না।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর হবে না। সংবিধান পরিবর্তন করার কোনো সুযোগ নেই। সংবিধানকে অনেক কচুকাটা করেছেন। আইন করে বঙ্গবন্ধু হত্যার ঘাতকদের বিচার বন্ধ করেছিলেন। সংবিধানে হাত দেওয়ার অধিকার কারো নেই। কাজেই তত্ত্বাবধায়ক দিবা স্বপ্ন; রঙিন খোয়াব দেখে লাভ নেই।’
পল্টনে সমাবেশ করার বিএনপির দাবির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি কেন সোহরাওয়ার্দী মাঠকে বাদ দিয়ে পল্টনে জনসভা করতে চায়? তার কারণ আমরা সবাই জানি। গত নির্বাচনের আগেওতো বেগম জিয়া এখানে মিটিং করেছেন।
কিন্তু ফখরুল সাহেব, আপনি কেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে চান না? ধরা পরে গেছে, ধরা পড়ে গেছে! স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আপনার মধ্যে নেই, তা আবারো প্রমাণিত হলো। এ কারণেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে চাইছেন না।’
এ সময় গণমাধ্যমের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আমরা এত বড় বড় জনসভা করি, কিন্তু কিছু মিডিয়া ওভাবে নিউজ দেয় না। কিন্তু ফখরুল দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিলে পুরো ছবিসহ কাভারেজ পান। যারা আমাদের পছন্দ করেন না, তাদেরকে বলেছি- আমরা বেশি চাই না। আমাদের ন্যায্য কাভারেজ দিন।’
দীর্ঘ চার বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিকেল সাড়ে ৩টায় ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় উপস্থিত হলে দলীয় সংগীত এবং জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে দেশ এবং দলের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর গান এবং নৃত্য পরিবেশন শেষে আল নাহিয়ান জয় সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, প্রতি দুই বছর পর পর সম্মেলনের কথা থাকলেও করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ সাড়ে চার বছর পর ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো। ফলে সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা দেখা যায়।
সারাদিন পুরো ক্যাম্পাসে ছিল সাজ সাজ রব; আর উৎসবের আমেজ। দীর্ঘ প্রতিক্ষিত এ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য এবং ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।
এবার ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ এই ইউনিটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ২৪৫ জন নেতা-কর্মী জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন।
ঢাবি ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কমিটি এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের কমিটি এক সঙ্গে ঘোষণা করা হবে।
আরও পড়ুন:দিনাজপুরে গত বছর অকৃতকার্য কলেজের সংখ্যা ছিল দুটি, তবে এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩টিতে। এই ১৩টি কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল মাত্র ৬৫ জন।
জেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষার পাসের হার গত বছরের তুলনায় কমেছে। এ বছর এ বোর্ডে পাস দাঁড়িয়েছে ৭৯ দশমিক ৮ শতাংশ। একই সঙ্গে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী, জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। তবে সে তুলনায় গত বছরের তুলনায় অকৃতকার্য কলেজের সংখ্যা বেড়েছে।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তোফাজ্জুর রহমানের সই করা এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বুধবার দুপুরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চলতি বছর এসএসসি পাসের হার ৭৯ দশমিক ৮ শতাংশ। গত বছর এই বোর্ডে পাশের হার ছিল ৯২ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এই বোর্ডের অধীনে রংপুর বিভাগের ৮ জেলার ৬৭১টি কলেজ থেকে এক লাখ ২৯৩ জন পরীক্ষার্থী রেজিষ্ট্রেশন করে। কিন্তু পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ৯৯ হাজার ৭০৫ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ৭৮ হাজার ৮৪৯ জন উত্তীর্ণ হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিসূত্রে জানা গেছে, উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ১১ হাজার ৮৩০ জন। এর মধ্যে ৬ হাজার ২৫৫ জন ছাত্রী ও ৫ হাজার ৫৭৫ জন ছাত্র। গত বছর এই বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১৫ হাজার ৩৪৯ জন শিক্ষার্থী। সে তুলনায় চলতি বছর জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যা কমেছে তিন হাজার ৫১৯ জন।
এ বোর্ডে অকৃতকার্য ১৩টি কলেজগুলো হলো- ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলার গড় কলেজ (১৩ জন পরীক্ষার্থী), ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর মহিলা কলেজ (১১ জন পরীক্ষার্থী), কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাটে সিংগার ডাবরিরহাট বিএল হাই স্কুল এন্ড কলেজ (৭ জন পরীক্ষার্থী), পঞ্চগড় জেলার তেতুলিয়া উপজেলার আলহাজ্ব তমিজ উদ্দীন কলেজ (৭জন পরীক্ষার্থী), পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার মারেয়া মডেল হাই স্কুল এন্ড কলেজ (৭জন পরীক্ষার্থী), লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার নাসির উদ্দীন কলেজ (৬জন পরীক্ষার্থী), একই জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার দুহুলা এসসি হাই স্কুল এন্ড কলেজ (৪জন পরীক্ষার্থী), নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার চৌধুরীরানী হাই স্কুল এন্ড কলেজ (৩জন পরীক্ষার্থী), দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার সনকা আদর্শ কলেজ (৩জন পরীক্ষার্থী), গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা মহিলা কলেজ (একজন পরীক্ষার্থী), লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দইখাওয়া মহিলা কলেজ (একজন পরীক্ষার্থী), দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার উত্তর লক্ষিপুর হাই স্কুল এন্ড কলেজ (একজন পরীক্ষার্থী) ও ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার পীরগঞ্জ কলেজিয়েট স্কুল এন্ড কলেজ (একজন পরীক্ষার্থী)।
আরও পড়ুন:বরিশালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবারে কোনো কলেজেই শূন্য পাস নেই, তবে শতভাগ পাস রয়েছে ৩৪টি কলেজে।
বরিশাল বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুন কুমার গাইন বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ ফলাফল প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘এবারে কোনো কলেজেই শূন্য পাস নেই। তবে শতভাগ পাস রয়েছে ৩৪টি কলেজে। এবারে ইংরেজি সাবজেক্টে তুলনামূলক ফলাফল খারাপ হয়েছে পরীক্ষার্থীদের।’
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৮৬ দশমিক ৯৫ ভাগ। গত বছর পাসের হার ছিল ৯৫ দশমিক ৭৬। তবে গত বছরের তুলনায় পাসের হার কম হলেও ফলাফলে সবাই সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ। এদিকে এবারে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৭৩৮৬ জন, যা গত বছরের তুলনায় ২৫৮৫ জন কম।
অরুন কুমার বলেন, ‘৬১ হাজার ৮৮৫ পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৫৩ হাজার ৮০৭ জন। এর মধ্যে ছেলে ২৫ হাজার ৫৮৮ ও মেয়ে ২৮ হাজার ২১৯ জন। ৭ হাজার ৩৮৬ জন জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের মধ্যে ছেলে দুই হাজার ৫৮০ ও মেয়ে ৫ হাজার ৮০৬ জন।’
৩৩১ কলেজের পরীক্ষার্থীরা ১২৫ কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেয় এবং পুরো পরীক্ষায় বহিষ্কার হয়েছেন ২০ জন পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ৭ জন বিজ্ঞান বিভাগের, ১২ জন মানবিক ও একজন ব্যবসায় শিক্ষার।
বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষার্থী ছিল ১২ হাজার ৭২ জন, পাশ করেছে ১০ হাজার ৮৬১ জন, মানবিক বিভাগে পরীক্ষার্থী ছিল ৪০ হাজার ৩১১ জন ও পাস করেছেন ৩৪ হাজার ৬৭৩ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পরীক্ষার্থী সংখ্যা ৯ হাজার ৫০২ জন ও পাস করেছে ৮ হাজার ২৭৩ জন।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, বরিশাল বিভাগে এবারে পাসের হারে এগিয়ে রয়েছে ভোলা জেলা। এই জেলায় পাসের হার ৯২ দশমিক ৯। এরপরে ৯১ দশমিক ১২ ভাগ নিয়ে এগিয়ে আছে বরিশাল। ঝালকাঠিতে পাসের হার ৮৮ দশমিক ২৫, পিরোজপুরে ৮৮ দশমিক ১৮, বরগুনায় ৮৭ দশমিক ৮৩ ও পটুয়াখালীতে পাসের হার ৭৩ দশমিক ৭৫ ভাগ।
ভোলা পাসের হারে এগিয়ে থাকলেও দুই হাজার ২৯৭টি জিপিএ-৫ এ পেয়ে এগিয়ে বরিশাল জেলা। এ ছাড়া ভোলায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৫৩ জন, ঝালকাঠিতে ২৯৮ জন, পিরোজপুরে ৫৪৭ জন, বরগুনায় ৫২৭ জন ও পটুয়াখালীতে ৪৮৪ জন।
এদিকে ফলাফলে খুশি হয়ে বরিশালে কলেজে কলেজে উচ্ছ্বাস করেছে শিক্ষার্থীরা। কাঙ্খিত ফলাফল পেয়ে খুশি তারা।
আরও পড়ুন:খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামানের বিরুদ্ধে নিয়ম বর্হির্ভূতভাবে পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ তদন্ত করতে ক্যাম্পাসে যাচ্ছে এ ঘটনায় গঠিত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কমিটি।
কমিটি হওয়ার দীর্ঘ ৮ মাস পর সম্প্রতি ইউজিসির পক্ষ থেকে সেখানে যেতে চাওয়ার কথা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার খান গোলাম কুদ্দুস ইউজিসির এই তদন্ত কমিটির চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইউজিসির চিঠি হাতে পেয়েছি। তদন্তের জন্য তাদের সব রকমের সহায়তা করা হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ডিসিপ্লিনে (বিভাগ) ওয়ালিউল হাসানাত নামের একজন অধ্যাপকের নিয়োগে দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ।
এ ঘটনায় ২০২২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে ইউজিসির চেয়ারম্যানকে একটি চিঠি দিয়ে ওই শিক্ষককের নিয়মবর্হিভূত নিয়োগের ব্যাপারটি জানিয়ে তা তদন্ত করার অনুরোধ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ৫ জুন ইউজিসি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
তবে ৮ মাস ধরে ওই তদন্ত কমিটির সদস্যদের কোনো অগ্রগতি ছিল না। অবশেষে সেই তদন্ত কমিটি তাদের কার্যক্রম শুরু করছে।
সম্প্রতি ইউজিসির ইন্সপেকশন ও মনিটরিং শাখা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে জানানো হয়েছে, ৮ ফেব্রুয়ারি কমিটির সদস্যরা সরেজমিনে বিষয়টি তদন্তে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে কমিটি এ দিন বেলা ১২টায় প্রয়োজনীয় নথিপত্র পর্যালোচনা করবেন এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করবেন।
পরিদর্শন শেষে কমিটির সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রারসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সভায় মিলিত হবেন। ওই দিন ও সময়ে দালিলিক প্রমাণাদিসহ অভিযোগপত্রে দেয়া বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে উপস্থিত রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
ইউজিসি গঠিত ওই তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে আছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রাক্তন অধ্যাপক ড. বাসুদেব চন্দ্র ঘোষ। কমিটির বাকি দুজন সদস্য হচ্ছেন ইউজিসিরি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. ফজলুর রহমান ও ইউজিসির ইন্সপেকশন ও মনিটরিং শাখার সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. গোলাম দস্তগীর।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ওয়ালিউল হাসানাতের নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু কাগজ হাতে এসেছে নিউজবাংলার।
ওই কাগজ বিশ্লেষণ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওয়ালিউল হাসনাত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি তাকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
ওই নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্য সব যোগ্যতা ও শর্তের সঙ্গে সহযোগী অধ্যাপক পদে কমপক্ষে চার বছরের বাস্তব শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকা বাধ্যতামূলক ছিল। কিন্তু ওয়ালিউল হাসানাতকে সরাসরি অধ্যাপক পদে নিয়োগ দেয়ার সময় তা মানা হয়নি।
তার নিজ হাতে লেখা অধ্যাপক পদের আবেদনপত্রে দেখা যায়, সহযোগী অধ্যাপক পদে তার বাস্তব অভিজ্ঞতা তিন বছর ছয় মাস সাত দিন। তিনি ১০ মাস ১৪ দিন লিয়েনে (শর্তসাপেক্ষে ছুটি) ছিলেন। ওই কার্যকালকে অভিজ্ঞতা হিসেবে দেখিয়ে তাকে অধ্যাপক পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এমনকি নিয়োগের ক্ষেত্রে আবেদনপত্র স্ক্রুটিনি (যাচাই-বাছাই) করা হয়নি।
ওয়ালিউল হাসানাতের নিয়োগ প্রক্রিয়াও হয়েছে খুব দ্রুততার সঙ্গে। ২০১৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর ওই ডিসিপ্লিনের একটি মাত্র অধ্যাপক পদের বিপরীতে নিয়োগ বোর্ড হয়। ৩১ ডিসেম্বর সিন্ডিকেটের ১৮৯তম সভায় সেটি উপস্থাপন করে অনুমোদন করিয়ে নেয়া হয়। পরদিন ১ জানুয়ারি তিনি ডিসিপ্লিনে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন।
শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিন্ডিকেট সভার অনুমোদনের পর সেটি রেজুলেশন করতে হয়। তারপর শিক্ষককে যোগদান করার জন্য চিঠি পাঠাতে হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে তার কিছুই করা হয়নি। রেজুলেশন করার আগেই ওয়ালিউল হাসানাত রেজিস্ট্রারের কাছে চিঠি দিয়ে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে খুবি রেজিস্ট্রার অধ্যাপক গোলাম কুদ্দুস বলেন, ‘তদন্তের স্বার্থে দুদক থেকে চিঠি পাঠিয়ে ওয়ালিউল হাসানাতের নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু কাগজপত্র চাওয়া হয়। ওই কাগজগুলো যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে কিছু অনিয়মের তথ্য দেখা যায়।
‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগবিধি অনুযায়ী লিয়েনে থাকা সময়কে অভিজ্ঞতা হিসেবে দেখানোর সুযোগ নেই। কিন্তু এক্ষেত্রে তা দেখানো হয়েছিল। অন্যদিকে রেজুলেশন না করেই তাকে যোগদান করতে দেয়া হয়।’
অধ্যাপক ফায়েক উজ্জামান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক। ২০১০ সালে ২৮ নভেম্বর তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। তখন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক মো. শাইফুদ্দিন শাহ।
২০১২ সালের অক্টোবরে তার মেয়াদ শেষ হলে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান ফায়েক উজ্জামান। ২০১৩ সালে ১০ জানুয়ারি তিনি পূর্ণ উপাচার্যের দায়িত্ব পান। সেখান থেকে পরপর দুই মেয়াদে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করে ২০২১ সালের ২৯ জানুয়ারি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে যান তিনি। তার দিত্বীয় মেয়াদে রয়েছে অহরহ দুর্নীতি ও স্বজন প্রীতির মাধ্যমে নিয়োগের অভিযোগ।
আরও পড়ুন:মোটরসাইকেলের ধাক্কায় এক ছাত্র গুরুতর আহত হওয়ার জেরে নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশার গতি নিয়ন্ত্রণসহ চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে এসব কর্মসূচি পালন করেন তারা।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো দুর্ঘটনায় আহত ছাত্রের চিকিৎসা ও শিক্ষার ব্যয়ভার প্রশাসনের বহন, মোটরসাইকেল চালকের শাস্তি, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশার গতি নিয়ন্ত্রণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর সামনে গতি নিরোধক নির্মাণ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হল সংলগ্ন সড়কে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের (৫১ ব্যাচ) ছাত্র জাহিদ হাসান। তাকে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘আমি আহত শিক্ষার্থীকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। তার অবস্থা এখনও শঙ্কামুক্ত নয়। আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় বহন করবে।
‘শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে আমরা সম্পূর্ণ একমত পোষণ করছি। আশা করছি সবাই মিলে একটি সুষ্ঠু সমাধানে পৌঁছাতে পারব।’
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে উপাচার্য নূরুল আলম বলেন, ‘আহত শিক্ষার্থীর সকল চিকিৎসার দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় গ্রহণ করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান আইনে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে আমরা ঘাতক চালকের বিচার নিশ্চিত করব।
‘বাইক, অটোরিকশার গতি নিয়ন্ত্রণে আমি নিরাপত্তাকর্মীদের নির্দেশ করব। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে স্পিডব্রেকার নির্মাণ করা হবে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সকলের সহযোগিতা কাম্য।’
আরও পড়ুন:শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যেই সংস্কারের কাজের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউট এক মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলো। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার রাত ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ও ছাত্রা বাস ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এদিন দুপুর ৩টায় জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয় সর্বোচ্চনীতি নির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেট।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, 'সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একমাস বন্ধ থাকবে ইনস্টিটিউট। এ সময় অনলাইনে ক্লাস নেবেন শিক্ষকরা। পাশাপাশি আজ রাত ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের চারুকলা ক্যাম্পাস ত্যাগের নির্দেশনাও দিয়েছে সিন্ডিকেট।'
এর আগে গত বছরের ২ নভেম্বর থেকে ২২ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি ও ক্লাসবর্জন শুরু করেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন দাবি মানতে ইতিবাচক সাড়া দিলেও পরে ২২ দফা দাবি হঠাৎই মূল ক্যাম্পাসে ফেরার এক দাবিতে রূপ নেয়। শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, মূল ক্যাম্পাস ছাড়া তাদের এই ২২ দফা দাবির সবগুলো পূরণ করা সম্ভব নয়। আন্দোলন নিয়ে গত ২১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। পরদিন অর্থাৎ ২২ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক ও মহানগর আওয়ামী এর সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম নাছির উদ্দিনের সঙ্গে আলোচনার পর আন্দোলন স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে ক্লাসে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা। তবে শর্তপূরণ না হওয়ায় গত মঙ্গলবার থেকে ফের আন্দোলনে নামেন তারা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মূল ক্যাম্পাস শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে হাটহাজারীতে অবস্থিত। ২০১০ সালে চবি চারুকলা বিভাগ এবং চট্টগ্রাম সরকারি চারুকলা কলেজকে একীভূত করার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি চারুকলা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ২০১১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি নগরীর বাদশাহ মিয়া চৌধুরী সড়কে বর্তমান চারুকলা ইনস্টিটিউটের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।
মধ্যরাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিল্পী রশিদ চৌধুরী হোস্টেলে (ছাত্রাবাস) তল্লাশি চালিয়েছে প্রক্টরিয়াল বডি।
প্রক্টরিয়াল টিম পুলিশের উপস্থিতিতে বুধবার রাত ১টার দিকে এ অভিযান চালায়।
তল্লাশির সময় ওই ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে এক ছাত্রীর উপস্থিতি পাওয়া যায়। অনুমতি ছাড়া ছাত্রহলে ঢোকায় তাকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আরেকটি কক্ষ থেকে উদ্ধার হয়ছে কিছু পরিমাণ গাঁজা।
চারুকলার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের আন্দোলনকে বাধাগ্রস্থ ও প্রশ্নবিদ্ধ করতে এই তল্লাশি চালানো হয়েছে। তল্লাশি ছাড়াও শিক্ষক ক্লাবের তালা এবং তাদের ব্যানার-ক্যানভাস ভেঙে ফেলা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া বলেন, ‘চারুকলার ক্লাস নেয়ার পক্ষে ও বিপক্ষে অনেকেই আন্দোলন করছেন। এখন সেখানে বহিরাগত কেউ হোস্টেলে আছে কি না, মাদক আছে কি না সেগুলো তল্লাশিতে অভিযান চালানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অভিযানে আমরা এক ছাত্রীকে ১২টা ৪০ এর সময় ছাত্র হোস্টেলের একটি কক্ষে পেয়েছি। পাশে আরেকটি কক্ষে কিছু পরিমাণ গাঁজা পাওয়া গেছে। ছাত্রীর মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।’
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে প্রক্টর বলেন, ‘এখানে তল্লাশির বাইরে আর কিছুই হয়নি।’
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই ছাত্রী অনুমতি ছাড়াই ছাত্র হোস্টেলে অবস্থান করছিলেন। নিয়মানুযায়ী হোস্টেল ওয়ার্ডেনের অনুমতি ছাড়া রাতে কিংবা দিনে কোনো সময়ই ছাত্রীরা ছাত্রদের হোস্টেলে প্রবেশ করতে পারবেন না।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মো. শহীদ বলেন, ‘রাতে চারুকলার দুই গেইট দিয়েই পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডি আসে। একজন ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসছিল। যার বাসায় যাবে সে চারুকলায় অপেক্ষা করছিল। প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ এসে সবাইকে রুমে যেতে বলে, ওই সময় ওই ছাত্রী রুমে গিয়ে বসে যায়। এরপরই যার জন্য অপেক্ষা করছিল, সে আসে। পরে সে বিষয়টা বিস্তারিত খুলে বললে তাকে ছেড়ে দেয়। তবে মুচলেকার বিষয়টা একটু বাড়াবাড়ি হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা হলে তল্লাশি করে ঠিক আছে। কিন্তু শিক্ষক ক্লাবের তালা ভেঙে ফেলা ও আমাদের ব্যানার-ক্যানভাস ছিড়ে দিল কেন সেটা আমরা বুঝতেছি না। তবে মাদকের বিষয়টা তারা প্রমাণ দিক ৷ তারা তো সব তন্নতন্ন করে খুঁজেছে। আমি ভিডিও করার সময় আমার মোবাইলও কেড়ে নেয়া হয়।’
আরেক শিক্ষার্থী জহির রায়হান অভি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্যই প্রশাসন এটি করছে।’
আরও পড়ুন:বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার মোশতাক আহমদের প্রতি ‘শ্রদ্ধা’ জানিয়ে বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও আইন অনুষদের অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতির সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. বোরহান উদ্দিনসহ পাঁচ বিচারকের আপিল বেঞ্চের এ আদেশের ফলে তার একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চালাতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম, তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন।
আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন বলেন, হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে দ্রুত এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। এ আদেশের ফলে ঢাবি শিক্ষক রহমত উল্লাহর একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চালাতে বাধা নেই।
গত বছরের ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাবি প্রশাসন। সেখানে অধ্যাপক রহমত উল্লাহ মুজিবনগর সরকারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে খন্দকার মোশতাকের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান।শ্রদ্ধা জানানোর পর খন্দকার মোশতাকের প্রতি ঘৃণা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেও বক্তব্য দেন তিনি।
এ ঘটনায় ওই বছরের ২০ এপ্রিল রহমত উল্লাহকে সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতির সিদ্ধান্ত দেয় বিশ্ববিদ্যালয়।
পরে এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে তিনি হাইকোর্টে আবেদন করলে গত বছরের ৮ জুন তা স্থগিত করে বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিলে যায় ঢাবি কর্তৃপক্ষ। ঢাবি কর্তৃপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশটি বহাল রাখে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য