× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Has peace returned to the mountains in 25 years?
google_news print-icon

২৫ বছরে শান্তি কি ফিরেছে পাহাড়ে?

২৫-বছরে-শান্তি-কি-ফিরেছে-পাহাড়ে?
পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি চুক্তির ২৫ বছরেও হয়নি চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন। ফাইল ছবি
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ভেঙে এখন চারটি সংগঠন। তাদের মধ্যে মারামারি লেগে আছে। ২০১৪ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পাহাড়ে ৫৩৬ জন অপহরণ এবং ৩৭৬ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। পার্বত্যাঞ্চলে প্রতি বছর প্রায় ৪০০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি হয়ে থাকে।

পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিচুক্তির ২৫ বছরেও বন্ধ হয়নি রক্তপাত। হয়নি চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন। সরকার বলছে, শান্তিচুক্তির কারণে পার্বত্য এলাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে।

পার্বত্য এলাকায় নৃগোষ্ঠীর রাজনৈতিক অধিকারের দাবিতে দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে চলে সহিংসতা। গড়ে ওঠে শান্তি বাহিনী নামের একটি সশস্ত্র সংগঠন। সংঘাতে অসংখ্য পাহাড়ি-বাঙালি নিহত-আহত হন। একসময় পাহাড় ছিল আতঙ্কের নাম।

শান্তি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ সময় অস্ত্র জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরেন শান্তি বাহিনীর প্রায় ২ হাজার সদস্য। শান্তি ফিরতে শুরু করে পাহাড়ে।

এ চুক্তি পার্বত্যাঞ্চলের জনগণের বিশেষ মর্যাদা ও অবস্থানের স্বীকৃতি নিশ্চিত করেছে। চুক্তিটি চার খণ্ডে বিভক্ত, যেখানে ক খণ্ডে চারটি; খ খণ্ডে ৩৫টি; গ খণ্ডে ১৪টি এবং ঘ খণ্ডে ১৯টি অর্থাৎ মোট ৭২টি ধারা রয়েছে। অবশ্য অল্প সময়ের মধ্যে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, যদিও সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, চুক্তির ৭২টির মধ্যে ৬৫টিরও বেশি শর্ত পূরণ করা হয়েছে।

২৫ বছরে শান্তি কি ফিরেছে পাহাড়ে?

সরকার বলছে, শান্তি চুক্তির কারণে পার্বত্য এলাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। ফাইল ছবি

পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একসময় এ এলাকায় মানুষ যেতে চাইত না। সরকারি কর্মকর্তারা সেখানে বদলি হলে তাদের মধ্যে একটা আতঙ্ক থাকত যে আমি কোথায় যাব? এখন কিন্তু সেখানে সবাই যেতে চায়। এটা এখন আর শাস্তির এলাকা নেই। প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের কারণে সেখানে একটি আমূল পরিবর্তন এসেছে। এখানে এখন প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক আসছেন। এ উদ্যোগের কারণে মানুষের মধ্যে উন্নয়ন হয়েছে। যোগাযোগ, শিক্ষা, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, কৃষি প্রতি ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়েছে।

‘সেখানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে, মেডিক্যাল কলেজ হয়েছে। তিন জেলায় প্রায় ২৬টি উপজেলার প্রত্যেকটিতে কলেজ হয়েছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা হাসপাতাল হয়েছে। স্কুলগুলো এমপিওভুক্ত হয়েছে, অনেক স্কুল সরকারিকরণ হয়েছে। প্রত্যেক উপজেলাতেই বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। একদম রিমোট যে এলাকাগুলো রয়েছে, সেগুলোতেও বিশেষ ব্যবস্থায় ৫২ হাজার সোলার সিস্টেম বিনা পয়সায় বিতরণ করেছি। এই চুক্তির ফসলই হলো এই উন্নতি। চুক্তির যে ধারাগুলো রয়েছে ৭২টি, এর মধ্যে ৬৫টিরও বেশি বাস্তবায়ন হয়েছে। আশা করি, এগুলোও বাস্তবায়ন হবে।’

যে জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বে শান্তি বাহিনী গড়ে উঠেছিল, সেটির শক্তিও অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। সংগঠনটি এখন চার থেকে পাঁচটি গ্রুপে বিভক্ত। বিভিন্ন সময়েই এই গ্রুপের সদস্যরা একে অন্যের ওপর হামলা চালিয়ে সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন।

সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, শান্তি চুক্তির অন্যতম শর্ত অস্ত্র সমর্পণ গত ২৫ বছরেও পূরণ হয়নি। এসব অবৈধ অস্ত্র দিয়ে সশস্ত্র দলগুলো স্থানীয় পর্যায়ে অপহরণ, হত্যা ও চাঁদাবাজিতে ব্যবহার হয়ে থাকে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হিসাবে, পার্বত্যাঞ্চলে প্রতি বছর প্রায় ৪০০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি হয়ে থাকে। ২০১৪ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পাহাড়ে ৫৩৬ জন অপহরণ এবং ৩৭৬ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।

২৫ বছরে শান্তি কি ফিরেছে পাহাড়ে?

২০১৪ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পাহাড়ে ৩৭৬ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। ফাইল ছবি

বিভিন্ন সময় পাহাড়ে রক্তপাত হয়, এটা কি চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ার জন্য? জানতে চাইলে বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেন, ‘সেখানে কি যুদ্ধাবস্থা আছে? যারা এগুলো করছে তারা কি এটা বলছে যে চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় এগুলো হচ্ছে? এটা তো বলছে না। এটা সিম্পলি, তাদের মধ্যে অনেক গ্রুপিং। এটা হলো চাঁদাবাজি, কিডন্যাপিং… এটা হলো অর্থ উপার্জন বা চাঁদাকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে গোলাগুলি, কাটাকাটি হয়।

‘কিন্তু এগুলো হলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী তৎপর আছে। চুক্তি বাস্তবায়ন তো যুদ্ধের মাধ্যমে হবে না। হয়নি বলেই তো আমরা একটি জায়গায় এসেছি। হয়তো একটু দেরি হচ্ছে, কিন্তু থেমে তো নেই। চুক্তি বাস্তবায়নের সঙ্গে এগুলোর কোনো সম্পর্ক নেই। এখানে তো কথা বলার সুযোগ আছে। এ জন্য আমরাও দাবি করছি যে, অবৈধ অস্ত্র যেন উদ্ধার করা হয়। সেখানে সবাইকে বলব, সন্ত্রাস করে এলাকায় শান্তি ফিরবে না। সম্মিলিত প্রয়াস থাকতে হবে।’

পাহাড়ে একের পর এক সংগঠন

শান্তি চুক্তিকে কালো চুক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রসিত বিকাশ খীসার নেতৃত্বে ১৯৯৮ সালে আত্মপ্রকাশ করে ইউনাইটেড পিপল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) নামে একটি দল। পাহাড়ে বেড়ে যায় পিসিজেএস ও ইউপিডিএফের মধ্যে ব্যাপক সংঘাত। এতে পাহাড়ের দলীয় কর্মীসহ সাধারণ মানুষও প্রাণ হারান।

২০০৭ সালে জনসংহতি সমিতি আবার ভেঙ্গে জন্মলাভ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা সংস্কারপন্থি) নামে আরেকটি আঞ্চলিক দল। ইউপিডিএফ ভেঙ্গে ২০১৭ সালে ১৫ নভেম্বর তপন জ্যোতি চাকমার নেতৃত্বে খাগড়াছড়িতে গঠিত হয় ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) নামে আরেক আঞ্চলিক সংগঠন। বিশেষ করে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় এ চারটি সংগঠনের আধিপত্য লক্ষ্য করা যায়। বান্দরবানেও পিজেএসএসের আধিপত্য।

দুর্গম এ পাহাড়ি অঞ্চলে চার সংগঠনের মধ্যে হানাহানি লেগে আছে। তবে পিজেএসএস অভিযোগ, সরকারের শাসকগোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রে পাহাড়ে এসব আঞ্চলিক দলের সৃষ্টি হয়েছে।

এ চার সংগঠনের বাইরেও সক্রিয় আছে বেশ কয়েকটি গ্রুপ। এর মধ্যে বান্দরবানের গহীন জঙ্গলে অবস্থান রয়েছে আরাকান লিবারেশন পার্টির (এএলপি)। পরবর্তী সময়ে এটি ভেঙে ২০১৮ সালে গঠিত হয় মগ পার্টি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সাবেক রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা বলেন, ‘এক পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে শান্তি চুক্তির অনেকটা এখনও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। অন্যদিকে বাস্তবায়ন কমিটি থেকে বলা হচ্ছে, আমরা অধিকাংশ বাস্তবায়ন করেছি। সে ক্ষেত্রে আমার মনে হয় যে, বাকি ধারাগুলো বাস্তবায়নে দুই পক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার বলে যাচ্ছেন, আমরা শান্তিচুক্তি করেছি, আমরাই বাস্তবায়ন করব। তিনি সবসময় বলেছেন, চুক্তির যে রূপরেখা ছিল, প্রত্যেকটি আমরা বাস্তবায়ন দেখতে চাই।’

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) নেতা এবং সাবেক সাংসদ ঊষাতন তালুকদার বলেন, ‘সরকারের সাথে আমাদের বোঝাবুঝির অভাব রয়েছে। সরকারের কী ভাবনা সেটা পরিষ্কার হওয়া দরকার। সরকার যতই সময় ক্ষেপন করবে ততই দলবাজি, নানান অস্ত্রবাজি হবে, নানা চাঁদাবাজি হবে। তখন পরিস্থিতি আরো জটিল হবে। মূল কথা হচ্ছে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন করা ছাড়া বিকল্প নেই।’

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘ভূমি কমিশন আইন তো ঠিকমত হয়েছে। এখন বিধিমালা তো সরকার করছে না। বিধিমালাটা করে ভূমি কমিশন কার্যকর করেন। সরকারের কিছু কিছু গাড়ি আছে, গাড়ির অনুমোদন আছে, কিন্তু গাড়ি নাই। ঠিক তেমনি এখন ভূমি কমিশন চলতে পারে না। আমরা চুক্তির সব একসঙ্গে বাস্তবায়ন চাচ্ছি না। একটা একটা করেন। কোনটা কখন করবেন, কখন কোন বিষয় বাস্তবায়ন করবেন, তা লিখিতভাবে সরকার জানিয়ে দিক এবং সেভাবে কর্মসূচি গ্রহণ করুক এবং সেটাই হবে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির রোডম্যাপ।’

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরকারী খাদ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি বলেন, ‘আমরা রোডম্যাপ করতে চাচ্ছি না তা বলব না। কিন্তু রোডম্যাপ হলেই যে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়িত হবে এটার কোনো গ্যারিন্টি আছে? শান্তিচুক্তির বাস্তবায়ন আমরাও চাই, তারাও চায়, এমনকি প্রধানমন্ত্রীও এ ক্ষেত্রে খুবই আন্তরিক। সে ক্ষেত্রে আমাদের উভয়ের বোঝাপোড়ায় আসতে হবে। কিন্তু এগুলো হচ্ছে না।’

দীপংকর তালুকদার এমপি আরও বলেন ‘শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করতে গেলে উভয় পক্ষকে শক্তিশালী হতে হবে এবং উভয় পক্ষকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। কিন্তু আমরা দেখছি শান্তিচুক্তির স্বাক্ষরকারী আওয়ামী লীগ রাঙ্গামাটি-বান্দরবান-খাগড়াছড়ি এ তিন জেলার যতগুলো আওয়ামী লীগের লোক আছে, তাদের বলা হচ্ছে আওয়ামী লীগ করা যাবে না। আওয়ামী লীগকে যদি নিশ্চিহ্ন করে দেয় তারা, তাহলে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন করবে কে? যার কারণে একে অপরের প্রতি আস্থা, বিশ্বাসের সংকটটা তৈরি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সবাইকে ইতিবাচক ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে, তবেই শান্তিচুক্তি বাস্তবায়িত হবে।’

আরও পড়ুন:
জঙ্গিবিরোধী অভিযান : চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় পর্যটক নিষিদ্ধ
প্রকল্প শেষে কী হবে পাহাড়ের ৪ হাজার কর্মীর
পাহাড়ে শান্তির কপোত কি অধরা?

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Infant of July coup UNICEF wants protection and accountability

জুলাই অভ্যুত্থানে শিশুমৃত্যু: সুরক্ষা ও জবাবদিহি চায় ইউনিসেফ

জুলাই অভ্যুত্থানে শিশুমৃত্যু: সুরক্ষা ও জবাবদিহি চায় ইউনিসেফ বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স। ফাইল ছবি/ইউনিসেফ
বাংলাদেশের শিশুদের সঙ্গে আর কখনোই যেন এমনটি না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে দেশের সব মানুষের কাছে আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রকাশের পর এটিকে ‌হৃদয়বিদারক বলে উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক অঙ্গ সংস্থা ইউনিসেফ।

গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক অফিসের প্রতিবেদনটির বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে যে ১ হাজার ৪০০ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে শতাধিক শিশু ছিল। ইউনিসেফ এসব মৃত্যুর অনেকের বিষয়ে ইতোমধ্যে রিপোর্ট করেছে এবং মোট কত শিশু নিহত বা আহত হয়েছে, তা স্পষ্ট করার জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা তাদের প্রত্যেকের জন্য শোক প্রকাশ করছি।’

অভ্যুত্থানে নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতার চিত্রও তুলে ধরেন তিনি। তার ভাষ্য, ‘এ সময় নারীদের বিক্ষোভে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখার জন্য শারীরিক নির্যাতন ও ধর্ষণের হুমকিসহ নানা ধরনের জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার ঘটনার নথি পাওয়া গেছে।

‘শিশুরাও এই সহিংসতা থেকে রেহাই পায়নি; তাদের অনেককে হত্যা করা হয়, পঙ্গু করে দেওয়া হয়, নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা হয়, অমানবিক অবস্থায় আটক করে রাখা হয় এবং নির্যাতন করা হয়।’

বিবৃতিতে শিশুদের ওপর সহিংসতার তিনটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন ফ্লাওয়ার্স।

তিনি বলেন, ‘একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে ধানমণ্ডিতে, যেখানে ২০০টি ধাতব গুলি ছোড়ার কারণে ১২ বছর বয়সী এক বিক্ষোভকারী অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের ফলে মারা যায়। আরেকটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে নারায়ণগঞ্জে, সেখানে ছয় বছর বয়সী এক কন্যাশিশু তার বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে সংঘর্ষ প্রত্যক্ষ করার সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়।

‘এই বিক্ষোভের সবচেয়ে ভয়ংকর দিন ৫ আগস্ট পুলিশের গুলি চালানোর বর্ণনা দিয়ে আজমপুরের ১২ বছর বয়সী একটি ছেলে বলে, সব জায়গায় বৃষ্টিপাতের মতো গুলি চলছিল। সে অন্তত এক ডজন মৃতদেহ দেখতে পেয়েছিল সেদিন।’

তিনি বলেন, ‘এই ঘটনাগুলো অবশ্যই আমাদের সবাইকে আতঙ্কিত করে তুলছে।’

বাংলাদেশের শিশুদের সঙ্গে আর কখনোই যেন এমনটি না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে দেশের সব মানুষের কাছে আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ।

প্রাপ্ত এসব ফলাফলের আলোকে এবং এই মর্মান্তিক ঘটনা-বিষয়ক ইউনিসেফের আগের বিবৃতিগুলোর জের ধরে বাংলাদেশের সমস্ত নীতিনির্ধারক, গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও কর্মকর্তাদের বাংলাদেশের শিশু, যুবসমাজ ও পরিবারগুলোকে শারীরিক ও মানসিক ক্ষত সারিয়ে ওঠার পাশাপাশি আশা সঞ্চার করে তাদের এগিয়ে যেতে সহায়তা করতে আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ।

এ জন্য তিনটি বিশেষ ক্ষেত্রে জরুরিভাবে কাজ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক অঙ্গ সংস্থাটি।

প্রথমত, যেসব শিশু প্রাণ হারিয়েছে, তাদের ও তাদের শোকাহত পরিবারের জন্য জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

দ্বিতীয়ত, যারা এখনও আটক অবস্থায় আছে এবং যাদের জীবন কোনো না কোনোভাবে এই ঘটনাগুলোর দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে, তাদের সবার জন্য পুনর্বাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একজোট হওয়া।

তৃতীয়ত ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, এ সময়টাকে ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য সার্বিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। সব রাজনৈতিক নেতা, দল ও নীতিনির্ধারকদের পুলিশ ও বিচার ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য একজোট হতে হবে, যাতে বাংলাদেশের কোনো শিশুকে আর কখনও এমন বিচার-বহির্ভূতভাবে ও যথাযথ প্রক্রিয়ার অভাবে আটক থাকতে না হয়। শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে গিয়ে, যা তাদের অধিকার, তাদের যেন নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হতে না হয়। আর এভাবে বাংলাদেশের শিশুদের সুরক্ষা, মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের অধিকার সমুন্নত রাখা সম্ভব।

আরও পড়ুন:
অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া শুরু
শাহবাগ মোড় অবরোধ, বিচার ও পুনর্বাসনের দাবি শহিদ পরিবারের স্বজনদের
কিডস টাইম ফেয়ার: গান-গল্পে শিশুদের মন জিতে নিল শক্তি মাসকট লায়ন
জুলাই অভ্যুত্থানকালীন মানবাধিকার লঙ্ঘন: জাতিসংঘ মিশনের প্রতিবেদন মধ্য ফেব্রুয়ারিতে
অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা বাবদ ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ সরকারের

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Dr Yunus urges the UAE to take more staff to withdraw visa ban

ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, আরও কর্মী নিতে আমিরাতের প্রতি আহ্বান ড. ইউনূসের

ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, আরও কর্মী নিতে আমিরাতের প্রতি আহ্বান ড. ইউনূসের আমিরাতের দুবাইয়ে দুই দিনব্যাপী ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটে অংশগ্রহণের পাশাপাশি দেশটির বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: ইউএনবি
ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটে অংশগ্রহণ শেষে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস। দুবাই বিমানবন্দরে শুক্রবার তাকে বিদায় জানান সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রীড়ামন্ত্রী ড. আহমদ বেলহৌল আল ফালাসি।

বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর থেকে ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পাশাপাশি আরও বাংলাদেশি কর্মী নিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

আমিরাতের দুবাইয়ে দুই দিনব্যাপী ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটে অংশগ্রহণের পাশাপাশি দেশটির বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ আহ্বান জানান।

বৈঠকগুলোতে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়, বাণিজ্য ও ব্যবসার সম্প্রসারণ, চট্টগ্রাম বন্দরে আমিরাতি বিনিয়োগ পরিকল্পনা এবং ক্রীড়া ও শিক্ষা খাতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানান প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

তিনি জানান, আমিরাতি কোম্পানিগুলোকে তাদের কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরের আমন্ত্রণ জানান প্রধান উপদেষ্টা।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্যমন্ত্রী থানি বিন আহমেদ আল জেয়ৌদি এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করলে ড. ইউনূস আমিরাতি ব্যবসার জন্য বিশেষ শিল্প পার্ক স্থাপনের বিষয়ে নীতিগত সম্মতি দেন।

অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান আমিরাতের বাণিজ্যমন্ত্রীকে বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশকে একটি ‘হালাল পণ্য উৎপাদন কেন্দ্র’ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে, যেখানে কম খরচে শ্রম সুবিধা পাওয়া যাবে।

এরপর আগামী কয়েক মাসের মধ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রতিনিধিদল নিয়ে বাংলাদেশ সফর করতে চান বলে প্রধান উপদেষ্টাকে জানান আমিরাতের বাণিজ্যমন্ত্রী।

প্রধান উপদেষ্টার এ সফরে তার সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী ও জ্যেষ্ঠ সচিব লামিয়া মোরশেদ।

ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটে অংশগ্রহণ শেষে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস।

দুবাই বিমানবন্দরে শুক্রবার তাকে বিদায় জানান সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রীড়ামন্ত্রী ড. আহমদ বেলহৌল আল ফালাসি।

আরও পড়ুন:
বাংলাদেশে সরকার পতনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ছিল না: ট্রাম্প
লিবিয়ায় আটকে পড়া ১৪৫ অভিবাসনপ্রত্যাশী ঢাকায়
দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ ১৪তম
বাংলাদেশ-সৌদি শ্রম ও অভিবাসন সম্পর্ক জোরদার হবে: আসিফ নজরুল
বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিকল্পনা তুরস্কের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানির

মন্তব্য

পবিত্র শবে বরাত আজ

পবিত্র শবে বরাত আজ শবে বরাতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইবাদতে মশগুল মুসল্লিরা। ফাইল ছবি
হিজরি সালের শাবান মাসের ১৪ তারিখ গভীর রাতটি মুসলমানরা শবে বরাত বা সৌভাগ্যের রজনী হিসেবে পালন করে থাকেন। রাতটি লাইলাতুল বরাত হিসেবেও পরিচিত।

যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদায় শুক্রবার রাতে দেশজুড়ে পালন করা হবে পবিত্র শবে বরাত।

হিজরি সালের শাবান মাসের ১৪ তারিখ গভীর রাতটি মুসলমানরা শবে বরাত বা সৌভাগ্যের রজনী হিসেবে পালন করে থাকেন। রাতটি লাইলাতুল বরাত হিসেবেও পরিচিত।

পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাণী দিয়েছেন। এ উপলক্ষে শনিবার সরকারি ছুুটি থাকবে।

বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলিম জনগোষ্ঠীকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানান।

তিনি বলেন, ‘এ সৌভাগ্যময় রজনী মানব জাতির জন্য বয়ে আনে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অশেষ রহমত ও বরকত। এ রাতে আল্লাহপাক ক্ষমা প্রদান ও প্রার্থনা পূরণের অনুপম মহিমা প্রদর্শন করেন।’

পবিত্র এ রাতে আল্লাহর অশেষ রহমত ও নিয়ামত বর্ষণ হয় উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এ মহিমাময় রাতে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে আমরা মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারি; অর্জন করতে পারি তার অসীম রহমত, বরকত, নাজাত ও মাগফিরাত।’

পবিত্র শবে বরাতের মাহাত্ম্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানব কল্যাণ ও দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করতে তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘আসুন, সকল প্রকার অন্যায়, অনাচার, হানাহানি ও কুসংস্কার পরিহার করে আমরা শান্তির ধর্ম ইসলামের চেতনাকে ব্যক্তি, সমাজ ও জাতীয় জীবনের সকল স্তরে প্রতিষ্ঠা করি।’

এ রাতে বাসাবাড়ি ছাড়াও মসজিদে মসজিদে নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানায়।

আরও পড়ুন:
পবিত্র শবে বরাত আজ
শবে বরাতের তারিখ নির্ধারণে চাঁদ দেখা কমিটির সভা রোববার

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Mask Unus discussion to launch Starlink Internet Services in Bangladesh

বাংলাদেশে স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা চালু করতে মাস্ক-ইউনূস আলোচনা

বাংলাদেশে স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা চালু করতে মাস্ক-ইউনূস আলোচনা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ক। কোলাজ: ইউএনবি
ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের অবকাঠামোতে স্টারলিংকের কানেক্টিভিটি যুক্ত করা হলে লাখ লাখ মানুষের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং বৈশ্বিক ডিজিটাল অর্থনীতির সঙ্গে দেশকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে একীভূত করা যাবে।

বাংলাদেশে স্পেসএক্সের স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালু করতে কোম্পানিটির প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের সঙ্গে আলোচনা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

ভিডিও কলে আলোচনার সময় ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সঙ্গে মাস্কের কোম্পানির সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়েও তারা আলাপ করেন।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে অবস্থানরত প্রধান উপদেষ্টা স্পেসএক্স ও টেসলার প্রধান ইলন মাস্কের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন রোহিঙ্গা সংকট ও অগ্রাধিকারবিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা তথা এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার ও গ্লোবাল এঙ্গেজমেন্ট অ্যাডভাইজার রিচার্ড গ্রিফিথস।

বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ইলন মাস্কের সঙ্গে আলাপকালে ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্টারলিংকের স্যাটেলাইট যোগাযোগের রূপান্তরমূলক প্রভাব, বিশেষ করে বাংলাদেশের উদ্যোগী তরুণ, গ্রামীণ ও ঝুঁকিপূর্ণ নারী এবং প্রত্যন্ত জনগোষ্ঠীর ওপর প্রভাব নিয়ে কথা বলেন।

উচ্চগতির ও স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট সংযোগ কীভাবে বাংলাদেশের ডিজিটাল বৈষম্য দূর করার পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিত অঞ্চলে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করেন ড. ইউনূস ও ইলন মাস্ক।

ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের অবকাঠামোতে স্টারলিংকের কানেক্টিভিটি যুক্ত করা হলে লাখ লাখ মানুষের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং বৈশ্বিক ডিজিটাল অর্থনীতির সঙ্গে দেশকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে একীভূত করা যাবে।

তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে প্রযুক্তিতাড়িত সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্ণ সম্ভাবনা উন্মোচনে মাস্কের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, স্টারলিংক গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণ পল্লী ফোনের একটি সম্প্রসারিত অংশ হতে পারে, যা গ্রামের নারী ও তরুণদের বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। তারা বৈশ্বিক উদ্যোক্তায় পরিণত হবে।

ইলন মাস্ক ওই সময় গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ মডেলের প্রশংসা করে দারিদ্র্য বিমোচনে এর বৈশ্বিক প্রভাবের কথা জানান।

টেসলা মোটরসের প্রতিষ্ঠাতা জানান, গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণফোন উভয়ের কাজের ব্যাপারেই তিনি অনেক বছর ধরে জানেন।

মাস্ক বলেন, স্টারলিংকের মতো প্রযুক্তিগত অগ্রগতিকে কাজে লাগালে বাংলাদেশে উদ্ভাবন, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তি আরও ত্বরান্বিত হতে পারে বলে তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস ব্যক্ত করেন।

আরও পড়ুন:
অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতের প্রক্রিয়ায় গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার
ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো’ আন্দোলনের প্রশংসায় আল গোর
পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে ইসিবির সহায়তা চান ড. ইউনূস
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ
৪ আগস্টের পর ৪০ মাজারে ৪৪ বার হামলা: প্রেস উইং

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Everyone will decide on the UN recommendation Home Advisor

জাতিসংঘের সুপারিশের বিষয়ে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জাতিসংঘের সুপারিশের বিষয়ে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার এসবি ইমিগ্রেশনের বিদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা অন অ্যারাইভাল/ট্রানজিট ভিসা আবেদনে অনলাইন অ্যাপ উদ্বোধন, পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন সহজীকরণ ও পাসপোর্ট আবেদনকারীদের জটিলতা/অভিযোগ ৯৯৯-এ জানানোর কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: ইউএনবি
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘একটা প্রস্তাব তারা দিয়েছে। আমরা সবাই বসবো। বসার পর আমাদের যা ডিসিশন (সিদ্ধান্ত), সেটা আমরা জানাব।’

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) বিভিন্ন সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়ে সবাইকে নিয়ে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার এসবি ইমিগ্রেশনের বিদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা অন অ্যারাইভাল/ট্রানজিট ভিসা আবেদনে অনলাইন অ্যাপ উদ্বোধন, পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন সহজীকরণ ও পাসপোর্ট আবেদনকারীদের জটিলতা/অভিযোগ ৯৯৯-এ জানানোর কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

জাতিসংঘ র‌্যাব-বিলুপ্তির প্রস্তাব দিয়েছে। বিজিবিকে সীমান্ত রক্ষার মধ্যে থাকা, ডিজিএফআইকে কেবল সামরিক গোয়েন্দা তৎপরতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা ও আনসারের ওপর থেকে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ না রাখার বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছে জাতিসংঘ।

এ বিষয়ে অবস্থান জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘একটা প্রস্তাব তারা দিয়েছে। আমরা সবাই বসবো। বসার পর আমাদের যা ডিসিশন (সিদ্ধান্ত), সেটা আমরা জানাব।

‘তাদের এই তদন্তের বিষয়ে আমরা তো সবাই স্বাগত জানিয়েছি। তারা একটা ভালো কাজ করেছে। আমরা বসে একটা সিদ্ধান্ত নেব।’

বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঘিরে গত বছরের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের অনুসন্ধানী দল।

জেনেভায় বুধবার সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ফলকার টুর্ক ও অন্যরা।

এতে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সরকার ও সে সময়ের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল।

স্বৈরাচারী সরকার নিরাপত্তা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা এবং দল ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে যুক্ত করে মাত্রাতিরিক্ত বল প্রয়োগ করেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

এতে আরও বলা হয়, ‌বিচার-বহির্ভূত হত্যা, মারণাস্ত্র দিয়ে নির্বিচার গুলি, গ্রেপ্তার, নির্যাতন, চিকিৎসা পেতে বাধা দেওয়ার মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। মূলত ক্ষমতায় টিকে থাকতে আন্দোলনকারীদের ওপর মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগে সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

আরও পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে: প্রেস সচিব
প্রকৃতি সংরক্ষণের জায়গা হবে বোটানিক্যাল গার্ডেন: পরিবেশ উপদেষ্টা
‘আয়নাঘর’ পরিদর্শনে যাবেন প্রধান উপদেষ্টা
এলডিসি থেকে উত্তরণে বাণিজ্য সুবিধা রোডম্যাপ বাস্তবায়ন জরুরি: বাণিজ্য উপদেষ্টা
জগন্নাথ হলে সরস্বতী পূজামণ্ডপ পরিদর্শন দুই উপদেষ্টার

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Night temperatures across the country can drop from 1 to 2 degrees

দেশজুড়ে রাতের তাপমাত্রা কমতে পারে ১ থেকে ২ ডিগ্রি

দেশজুড়ে রাতের তাপমাত্রা কমতে পারে ১ থেকে ২ ডিগ্রি শীতের রাতে যান চলাচল। ফাইল ছবি
পূর্বাভাসে বলা হয়, শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এ ছাড়া অস্থায়ীভাবে মেঘলা আকাশসহ সারা দেশে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তবে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় হালকা অথবা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটি বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানায়।

এতে বলা হয়, শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এ ছাড়া অস্থায়ীভাবে মেঘলা আকাশসহ সারা দেশে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তবে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় হালকা অথবা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

পূর্বাভাসে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রংপুর বিভাগের তেঁতুলিয়ায় ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বুধবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালীতে ৩১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আরও পড়ুন:
ঘন কুয়াশায় ব্যাহত হতে পারে বিমান, নৌ ও সড়ক যোগাযোগ
আজও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলে, বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ: চার বন্দরে ১ নম্বর সংকেত
পাঁচ দিনে তাপমাত্রা আরও কমবে
শৈত্যপ্রবাহ: নওগাঁয় তাপমাত্রা নামল ৯.৯ ডিগ্রিতে

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Libya trapped in Libya

লিবিয়ায় আটকে পড়া ১৪৫ অভিবাসনপ্রত্যাশী ঢাকায়

লিবিয়ায় আটকে পড়া ১৪৫ অভিবাসনপ্রত্যাশী ঢাকায় বুরাক এয়ারের চার্টার্ড ফ্লাইটে বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পা রাখেন লিবিয়াফেরত বাংলাদেশিরা। ছবি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এসব অভিবাসনপ্রত্যাশীর বেশির ভাগই সমুদ্র পথে অবৈধভাবে ইউরোপ গমনের উদ্দেশ্যে মানব পাচারকারীদের প্ররোচনা ও সহযোগিতায় লিবিয়ায় অনুপ্রবেশ করেন। তাদের অধিকাংশই লিবিয়াতে বিভিন্ন সময়ে অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হন।

লিবিয়ায় আটকে পড়া ১৪৫ অভিবাসনপ্রত্যাশী বাংলাদেশি ঢাকায় পৌঁছেছেন।

বুরাক এয়ারের চার্টার্ড ফ্লাইটে বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে তারা ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পা রাখেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এসব অভিবাসনপ্রত্যাশীর বেশির ভাগই সমুদ্র পথে অবৈধভাবে ইউরোপ গমনের উদ্দেশ্যে মানব পাচারকারীদের প্ররোচনা ও সহযোগিতায় লিবিয়ায় অনুপ্রবেশ করেন। তাদের অধিকাংশই লিবিয়াতে বিভিন্ন সময়ে অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হন।

এতে জানানো হয়, দেশে ফেরত আসার পর এই ভয়ংকর পথ পাড়ি দিয়ে আর যেন কেউ লিবিয়াতে না যান, এ বিষয়ে তাদের সচেতন হওয়ার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আহ্বান জানিয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার পক্ষ থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশিদের প্রত্যেককে ছয় হাজার টাকা, কিছু খাদ্যসমগ্রী উপহার, মেডিক্যাল চিকিৎসা ও প্রয়োজনে অস্থায়ী বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, লিবিয়ার বিভিন্ন বন্দিশালায় আটক বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপদে প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং আর্ন্তজাতিক অভিবাসন সংস্থা একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।

মন্তব্য

p
উপরে