বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপির সমালোচনা করে বলেছেন, ‘যদি আইন করে মিথ্যাচার নিষিদ্ধ করা হয়, তাহলে বিএনপির কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।’
আরও বলেন, ‘এরা ভোট চুরি করেছে, ভুয়া ভোটার তৈরি করেছে। অর্থ পাচার করে মুচলেকা দিয়ে তাদের নেতা লন্ডনে চলে গেছে। সেখানে বসে বসে মাঝেমাঝে হুংকার দেয়। আওয়ামী লীগ এসব হুংকারে ভয় পায় না। আর বাংলাদেশের মানুষও এমন নেতাকে মানে না।’
মঙ্গলবার বিকেলে নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কাদের।
তিনি বলেন, ‘খেলা হবে। আন্দোলনে খেলা হবে। নির্বাচনে খেলা হবে। মোকাবিলায় খেলা হবে। হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে খেলা হবে। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে খেলা হবে।
‘যারা সন্ত্রাস করে আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে, হাজারো মায়ের কোল খালি করেছে, অগণিত স্ত্রীদের স্বামীহারা করেছে, বোনদের ভাইহারা করেছে, তাদের কোনো ক্ষমা নেই।’
আগামী ১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে বিএনপির সম্ভাব্য সমাবেশের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আক্রমণ না করলে কোনো পাল্টা আক্রমণ করা হবে না। কিন্তু যদি আক্রমণের মতলব থাকে, তবে খবর আছে।’
এ সময় দেশের জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হবার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণের পাশে আছি। জনগণকে নিয়েই আমরা এদের প্রতিহত করব।’
শেখ হাসিনার সরকারের সাফল্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বর্তমান সময়ে বিশ্বের বহু দেশে দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। কিন্তু সে তুলনায় আমরা বাংলাদেশের জনগণ অনেক ভালো আছি। শেখ হাসিনা ভালো থাকলে বাংলাদেশ ভালো থাকে।’
সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগের আংশিক নতুন কমিটি ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের। কমিটিতে অ্যাডভোকেট আমীরুল ইসলামকে সভাপতি এবং অ্যাডভোকেট শামছুর রহমান লিটনকে (ভিপি লিটন) সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগের বিদায়ী সভাপতি মতিয়র রহমান খানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরুর পরিচালনায় সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এমপি, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য মারুফা আক্তার পপি, উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং, ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল বীর প্রতীক এমপি, হাবিবা রহমান খান শেফালী এমপিসহ অনেকেই।
সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বিএনপি যতই বলুক না কেন, পৃথিবীর কোনো শক্তিই আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত ও ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবে না। বিএনপির শাসনামলে গণতন্ত্র ছিল বিপন্ন। অর্থনীতি ছিল ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। তারা আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতা-কর্মী ও বহু হিন্দু পরিবারের ধনসম্পদ লুণ্ঠন করেছে, বাড়িতে আগুন দিয়েছে, অত্যাচার করেছে।’
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বিএনপি ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। সে পদ্ধতিতে আর নির্বাচনের সুযোগ নেই। সারা বিশ্বে যে পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়, সে পদ্ধতিতেই দেশের সংবিধান অনুসারে বাংলাদেশের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। '৭১, '৭৫ এবং ২১ আগস্টের খুনিদের আর বাংলার মাটিতে ঠাঁই হবে না।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘পথ হারিয়ে বিএনপি পদযাত্রা শুরু করেছে। তাদের রাজনীতি ভুলের চোরাগলিতে আটকে গেছে। পদযাত্রা করে তা উদ্ধার করা যাবে না।’
সোমবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত শান্তি সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, নৈরাজ্য, অপরাজনীতি ও অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে এ শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনও পালিয়ে যায়নি। ওয়ান ইলেভেনে পালানোর গল্প শুধু বিএনপির আছে। রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে পালিয়ে আছে।
‘রিমোট কন্ট্রোলে অদৃশ্য নির্দেশে চলা আন্দোলন করে বাংলাদেশে জেতা যাবে না।’
মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও ডাক্তার মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন; যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবু্ব উল আলম হানিফ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবিরসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক বিএনপি-জামায়াত সহিংস রাজনীতির উসকানি দিচ্ছে। ঐক্যবদ্ধভাবে এদের প্রতিহত করতে হবে।
আরও পড়ুন:শিক্ষক পদে ছাত্রলীগ কর্মীর চাকরি না হওয়ায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্যের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। একই সঙ্গে শাটল ট্রেন অবরোধ করে রেখেছে তারা।
চবির সিন্ডিকেট সভা চলাকালে সোমবার বিকাল চারটার দিকে ভাঙচুর চালানো হয়।
চবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মঈনুল ইসলাম রাসেল বলেন, ‘ছাত্রলীগের স্বর্ণপদক প্রাপ্ত ছেলেকে চাকরি না দিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন নেতা ও জামাত-শিবির মদদপুষ্ট নিয়োগপ্রার্থীকে নেয়া হচ্ছে। আমাদের দাবি এদেরকে বাদ দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত জামাত-শিবির মদদপুষ্ট নিয়োগপ্রার্থীকে বাদ দেয়া হবে না ততক্ষণ পর্যন্ত ট্রেন অবরোধ থাকবে।’
চবির প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূইয়া বলেন, ‘ভাঙচুর কেন হয়েছে সেটা তদন্ত সাপেক্ষে বুঝা যাবে। নিয়োগের বিষয়ে এক্সপার্ট বোর্ড যাদের ভালো মনে করছে তাদের নিয়েছে। শাটলের বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।’
আরও পড়ুন:‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবহার হলে সবার জন্যই ভালো হয়। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) শতভাগ ইচ্ছা রয়েছে। তবে এখানে অর্থনীতি একটি বড় বিষয়। এ নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে এখনও কোনো আলোচনা হয়নি।’
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা এসব কথা বলেন।
ইভিএম কেনা বা ব্যবহারের জন্য প্রকল্প পাস করার বিষয় থাকলেও সিসি ক্যামেরার জন্য এমন কিছু লাগে না বলে মনে করেন রাশেদা সুলতানা। তিনি বলেন, ‘ওই রকম বিষয় নয়, যদি প্রজেক্ট পাস করতে না হয়...। নির্বাচনী বাজেটের ব্যাপার। সিসি ক্যামেরা বাদ দিয়েছি এমনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আবার আমরা আনবই- এমন সিদ্ধান্তও হয়নি।’
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন হতে আর বছরখানেক আছে উল্লেখ করে ইসি রাশেদা বলেন, ‘এই এক বছরের মধ্যে দেশের অর্থনীতির পরিস্থিতি কোনদিকে যায় সেটাও আমরা বুঝতে পারব। সব মিলিয়ে এটা সিদ্ধান্তের প্রশ্ন।
‘সিসি ক্যামেরা দিয়ে ভোট করব কি করব না এ বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত হয়নি। আইনে কোথাও বলা নেই যে ভোটে সিসি ক্যামেরার ব্যবহার করতেই হবে। তবে কমিশন চাইলেই তো আর নিজে নিজে তা করতে পারবে না। সবকিছু মিলিয়ে পরিবেশ পরিস্থিতি যদি পারমিট করে তবে আমরা অবশ্যই করব। আমরা পরীক্ষামূলকভাবে (ব্যবহার) করেছি।’
রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘ভোটে সিসি ক্যামেরার একটা ইফেক্টিভ রেজাল্ট আছে। তবে ব্যবহার করতে চাইলে একটা বড় বাজেট লাগবে। তিন শ’ আসনে এর ব্যবহার করতে চাইলে একটা ম্যানেজমেন্ট বা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। সেটা কীভাবে করা যায়, আদৌ সম্ভব কি না, করলে কতটুকু করা যায়- এসব বিষয় নিয়ে আমরা এক ধরনের আলোচনা করে আসছি।’
নির্বাচনের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে কমিশন সমন্বয় করছে বলেও জানান রাশেদা সুলতানা।
আরও পড়ুন:ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা নির্বাচন অফিসারকে নিয়ে গঠিত কমিটিকে দ্রুত তদন্ত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা সোমবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে ইসি রাশেদা বলেন, ‘তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। রিপোর্ট আসুক। তারপর কী হয় দেখা যাবে। জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা নির্বাচন অফিসারকে বলেছি তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে। ঘটনাটা আসলে কী, এর সত্যতা কতটুকু। রিপোর্ট পাওয়ার পর সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে।’
তিনি জানান, ‘কমিশন ওখানকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে- যেভাবে যেখান থেকে পারো ওনাকে উদ্ধার করো। ওনাকে তারা উদ্ধার করতে পারবে না এটা আমরা বিশ্বাস করি না। নির্বাচনের আগেই যদি (উদ্ধার) হয় তাহলে ভালো হয়। কমিশন নিজে গিয়ে তো তাকে ধরে আনতে পারবে না।’
বুধবার অনুষ্ঠেয় ৬ সংসদীয় আসনে উপনির্বাচন প্রসঙ্গে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘প্রার্থীরা তাদের মতো করে নির্বাচনী প্রচার চালিয়েছেন। ভোটের সব প্রস্তুতি শেষ। ক্যামেরা নেই এবার। ব্যালটে নয়, ইভিএমে ভোট হবে।
‘মেশিন যা দরকার তার চেয়ে দেড় গুণ বেশি দেয়া হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যতটুকু সম্ভব রক্ষা করার জন্য নির্দেশনা দেয়া আছে। ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন সে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন:‘আওয়ামী লীগ পালায় না’- রাজশাহীর জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এক এগারোতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর কারা পালিয়েছিল তা সবাই জানে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পদযাত্রা শুরু আগে দেয়া বক্তব্যে সোমবার দুপুরে তিনি এসব কথা বলেন। গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধারে ১০ দফা দাবিতে এ পদযাত্রার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।
ফখরুল বলেন, ‘১/১১ সরকারের সময় গ্রেপ্তার হওয়ার পর কারা-কারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে তা সবাই জানে। তখন দেশে ছিলেন একজন, তিনি হলেন খালেদা জিয়া।’
তিনি বলেন, ‘কোনো দিকে পালাবার পথ নেই। কোন দিকে পালাবেন ? তাই এখনও বলছি, সময় আছে আমাদের দাবি ১০ দফা এই দাবি মানে মানে মেনে নিয়ে পদত্যাগ করুন। সংসদ বাতিল করুন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আসুন। নতুন কমিশন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচন দিন।’
পদযাত্রা প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের পদযাত্রা, গণতন্ত্রের জয়যাত্রা। আমাদের এই পদযাত্রা মানুষের অধিকার আদায়ের পদযাত্রা। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জয়যাত্রা।’
সরকার জনগণের পকেটের টাকা কেড়ে নিচ্ছে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, ‘এই পুরান ঢাকায় গ্যাস নেই। শুধু পুরান ঢাকা নয়, গোটা বাংলাদেশে এখন গ্যাস নেই। ওরা গ্যাসও খেয়ে ফেলেছে। আবার গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে, বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। প্রত্যেকটি পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে নিয়েছে। জনগণের পকেট থেকে টাকা কেটে নেয়া হচ্ছে। আর সেই টাকা তারা বিদেশে পাচার করছে।’
বক্তব্য শেষে যাত্রাবাড়ী থেকে জুরাইন রেলগেটের উদ্দেশে পদযাত্রা শুরু করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। পদযাত্রায় অংশ নেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান বরতক উল্লাহ বুলু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, সদস্য সচিব রকিফুল আলম মঞ্জু প্রমুখ।
বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ‘মরণযাত্রা’ বলে যে মন্তব্য করেছেন, তার জবাবে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘মরণযাত্রা না। এই যাত্রা আপনাদের জন্য আগাম শোকযাত্রা।’
সোমবার দুপুরে যাত্রাবাড়ীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে পদযাত্রা করার আগে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ কথা বলেন বিএনপি নেতা গয়েশ্বর। ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’ ১০ দফা দাবিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে এ পদযাত্রা হয়।
ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘এটা আমাদের কোনো মরণযাত্রা না। আপনারা মরলে জানাজা পড়ানোর লোক থাকে না। তাই আমরা আগাম আপনাদের জন্য শোক মিছিল করছি।
‘ভবিষ্যতে তো আপনাদের জন্য শোক মিছিল করার কেউ থাকবে না। সুতরাং এই শোক মিছিলের মধ্য দিয়েই এই অবৈধ সরকারকে পতন করব। এই মাফিয়া সরকারের হাত থেকে এই দেশকে জনগণের হাতে তুলে দেব।’
তিনি বলেন, ‘এই অবৈধ সরকার সব ব্যাংক খালি করে দেশকে দেউলিয়ার পথে ঠেলে দিয়েছে। এদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়তে হবে। এই পদযাত্রার মাধ্যমেই রাজপথ দখল করা হবে এবং এই স্বৈরাচার সরকারকে পতন করা হবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘দেশের জনগণের একটাই দাবি- নিরপেক্ষ নির্বাচন। এই মুদ্রা পাচারকারী শিশু হত্যাকারী সরকারকে এ দেশের জনগণ আর দেখতে চায় না। কিন্তু এ সরকার জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে।
‘দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সাধারণ জনগণ ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। এ আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে এবং দেশের প্রকৃত মালিক জনগণ তাদের মালিকানা ফেরত পাবে।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে পদযাত্রায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু প্রমুখ।
আরও পড়ুন:রাজশাহীতে বিএনপির সমাবেশের চেয়ে আওয়ামী লীগের জনসভা ১৪ গুণ বড় বলে দাবি করেছেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
সচিবালয়ে সোমবার তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে এমন দাবি করেন তিনি।
রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে রোববার জনসভা করে আওয়ামী লীগ, যাতে অংশ নেন দলটির বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল একটা অসাধারণ সভা হয়েছে। পুরো রাজশাহী শহরই জনসভাস্থলে পরিণত হয়েছিল। মাদ্রাসা মাঠের বাইরে কমপক্ষে আরও ১০ থেকে ১২ গুণ মানুষ ছিল।’
বিএনপিও রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশ করেছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশের চেয়ে কত গুণ বড় সমাবেশ হয়েছে, সেটা অনুমান করা কঠিন, তবে বিএনপির সমাবেশের চেয়ে কমপক্ষে ১২ থেকে ১৪ গুণ বড় তো বটেই।
‘আকাশ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও সমাবেশটি দেখেছেন। এটি অভাবনীয়। আমাদের ধারণার বাইরে সমাবেশটি হয়েছে। পুরো শহরজুড়ে মানুষের মধ্যে উদ্দীপনা, সমাবেশে যাওয়ার জন্য আগ্রহ আমি দেখেছি শুরু থেকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি, তার দলের প্রতি জনগণের যে সমর্থন রয়েছে, গতকালের জনসভা সেটিই প্রমাণ করে।’
স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও মানুষকে ভোট ও ভাতের অধিকার, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম ও লড়াই করতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে আমি সবিনয়ে অনুরোধ জানাব আয়নায় নিজের চেহারাটা দেখানোর জন্য; নিজের দলের চেহারাটাও দেখার জন্য।
‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচারে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে রূপান্তর করে কারা বন্ধ করেছিল? বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। সেখানে ন্যায়বিচার নয়, বিচারটাই বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।’
মন্ত্রী বলেন, “কারাগারের অভ্যন্তরে চার জাতীয় নেতাকে হত্যা করা হয়। সেই বিচারও বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। আর ভোটের অধিকার? জিয়াউর রহমানের সময় সাত্তার সাহেবের সময়, খালেদা জিয়ার সময়, এরশাদ সাহেবের সময় স্লোগান ছিল ‘১০টা হোন্ডা, ২০টা গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা।’ এখন মানুষ সেই স্লোগান দেয় না। সেই সংস্কৃতি তারাই চালু করেছে।”
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচন বিএনপিই করেছিল। তারা এক মাসের বেশি ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি।
‘আয়নায় নিজের চেহারাটা দেখলেই উনি উত্তরটা পেয়ে যাবেন। এ দেশে মানবাধিকারের লঙ্ঘন শুরু করেছেন জিয়াউর রহমান।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য