আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকার সমাবেশে বিএনপির নেতা-কর্মীরা লাঠি নিয়ে এলে আওয়ামী লীগও কঠোর হবে বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সোমবার বিকেলে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১০ তারিখের বিএনপির সমাবেশে বাধা দেয়া হবে না। তবে বিএনপি লাঠি নিয়ে এলে ললিপপ চুষবে না আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।’
তিনি বলেন, ‘খেলা হবে ভোট চোরের বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে। এ দেশের মানুষকে ধোঁকা দিয়ে বোকা বানানো যাবে না।’
জনগণের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তারেক রহমান থেকে সাবধান। খেলা হবে তৈরি থাকেন। ডিসেম্বরে খেলা হবে, নির্বাচনে খেলা হবে। ১০ তারিখে খেলা হবে।’
সুইচ ব্যাংকসহ বিদেশের অনেক ব্যাংকে তারেক রহমানের হাজার হাজার কোটি টাকা থাকার কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই তারেকের কত বাড়ি কত মার্কেট আছে তার হিসাব নেই।’
জামালপুর জিলা স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত ত্রিবার্ষিক এই সম্মেলন উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।
জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভপতি মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, মারুফা আক্তার পপিসহ আরও অনেকে।
সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে ওবায়দুল কাদের জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ ও বিজন কুমার চন্দকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন।
আলোচনা ও মতবিনিময়ের জন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিকে চিঠি দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার ডিও পত্রের মাধ্যমে এই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
চিঠিতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দলীয় অন্য নেতৃবৃন্দ এবং প্রয়োজনে সমমনা দলগুলোর নেতৃবৃন্দসহ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
চিঠিতে সিইসি লিখেছেন, ‘২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর ধারাবাহিকভাবে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন করে আসছি।
বর্তমান কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সংসদ নির্বাচনের কথা অনুধাবন করে আসছে।’
চিঠিতে বর্তমান ইসি ও আগামী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বর্তমান কমিশনের প্রতি অনাস্থা ব্যক্ত করে প্রত্যাখ্যান করে আসছে। আপনারা নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও আপনাদের এমন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও কৌশলের বিষয়ে কমিশনের কোনো মন্তব্য নেই।’
চিঠিতে সিইসি বলেন, ‘আপনাদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হলেও কমিশন মনে করে বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে আনুষ্ঠানিক না হোক, অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা বা মতবিনিময় হতে পারে। আপনাদের নির্বাচন কমিশনে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। সদয় সম্মত হলে দিনক্ষণ আলোচনা করে নির্ধারণ করা যেতে পারে। প্রত্যুত্তর প্রত্যাশা করছি।’
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির আন্দোলন চোরাবালিতে আটকে গেছে। তাদের আন্দোলনের সঙ্গে জনগণ নেই। ফলে সেই আন্দোলন সফল হবে না এবং হতেও পারে না।
বৃহস্পতিবার ফরিদপুর সার্কিট হাউস মিলনায়তনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি ঢাকঢোল পিটিয়ে আন্দোলন শুরু করে আর প্যানপ্যানানি দিয়ে শেষ করে। তারা দৌড়াতে দৌড়াতে পদযাত্রা তারপর মানববন্ধন করে দাঁড়িয়ে গেছে।
‘বিএনপির আন্দোলন ছিল শুধু তাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে। এতে জনগণের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। ফলে তারা গণআন্দোলন করতে পারেনি। এখন বিএনপির টার্গেট দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা।
কাদের বলেন, ‘অবৈধ দলের অবৈধ মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বড় বড় কথা বলেন। তার নিজ দলেই কোনো গণতন্ত্র নেই। অথচ তারা আমাদের গণতন্ত্রের সবক দেন। তাদের নেতা নেই। তারা দণ্ডিত ব্যক্তিকে নেতা বানান। তাও লন্ডনে পলাতক। যে লন্ডনে পলাতক রয়েছে তাকে বানিয়েছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। যে দলের নেতা নেই সেই দল আন্দোলনেও ব্যর্থ, নির্বাচনেও ব্যর্থ।’
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দুজনই দণ্ডিত। কাজেই বিএনপির এখন আর কিছুই করার নেই। তারা এখন দেশে নাশকতা করবে, বিশৃংখলা করবে, সন্ত্রাস করবে। সেজন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে। আমরা গায়ে পড়ে ঝগড়া করব না। কিন্তু আক্রান্ত হলে ছাড়ব না। আমাদের ওপর আক্রমণ হলে পাল্টা আক্রমণ করব।’
৭ মার্চের ভাষণ সাতটি ভাষায় উপস্থাপন
মতবিনিময় শেষে বিকেল সাড়ে ৩টায় ফরিদপুরে শেখ জামাল স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ সাতটি বিদেশি ভাষায় উপস্থাপনস্থলে যান।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ অনুষ্ঠানে ৭ মার্চের ভাষণটি স্প্যানিজ ভাষায় মোসা. তানভিন ইসলাম, চাইনিজ ভাষায় মো. মারুফ আহমেদ, ফারসি ভাষায় শেখ মো. নাজমুল ইসলাম, ফ্রেঞ্চ ভাষায় কৌশিক সাহা, হিন্দি ভাষায় শ্রেয়া তুলশিয়ান প্রীতি, আরবি ভাষায় সাইফুল ইসলাম সাব্বির ও ইংরেজি ভাষায় ফারহানা জামান উপস্থাপন করেন।
জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর লাবু, পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা ও পৌর মেয়র অমিতাভ বোস।
অনুষ্ঠানে ৭টি ভাষায় বঙ্গবন্ধুর ভাষণ উপস্থাপনকারী এবং ৭ মার্চের ভাষণ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
আরও পড়ুন:ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের আমন্ত্রণেই আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল তার বাসায় মধ্যাহ্নভোজে গিয়েছিল জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, আর বিএনপি যায় পদলেহনে।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের আমন্ত্রণে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল তার বাসায় গিয়েছে। বিএনপির মতো পদলেহন করতে গিয়ে রাত-বিরাতে বসে থাকেনি।
‘যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র। গত ৫১ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে তাদের অবদান আছে। নিরাপত্তা থেকে জঙ্গি দমনে তারা আমাদের সহযোগিতা করছে। বহুমাত্রিক সহযোগিতা তাদের সঙ্গে আছে। সেই দেশের রাষ্ট্রদূত যখন আমন্ত্রণ জানায়, সেখানে তো যেতেই হয়।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি ২০১৪ সালের নির্বাচন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করেছে। ২০১৪ সালে তাদের আন্দোলনের নমুনা আমরা দেখেছি। তাদের সেই কাজ আবার বাংলাদেশের মানুষ করতে দেবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারও কখনো ফিরে আসবে না।’
সম্প্রতি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘দেশে ভয়াবহ রাজনৈতিক সংকট চলছে ’বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেশে কোনো রাজনৈতিক সংকট নেই। বিএনপির মধ্যে ভয়ঙ্কর সংকট চলছে। তাদের চেয়ারপারসন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পলাতক।
‘তারপর তাদের মধ্যে অনেকে আছেন, যারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নেতৃত্ব মানতে নারাজ। আবার অনেকেই আছেন, যারা মির্জা ফখরুলের নেতৃত্ব মানতে নারাজ।’
এ সময় প্রধান তথ্য কর্মকর্তা শাহেনুর মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের মতো এবারও ভোটকে সামনে রেখে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে অভিযোগ করে বিনা পরোয়ানায় সেটি না করতে পুলিশকে অনুরোধ করেছে বিএনপি।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের সঙ্গে বৃহস্পতিবার দুপুরে সাক্ষাৎ করে এ অনুরোধ করে বিএনপির পাঁচ সদস্যদের প্রতিনিধি দল।
ডিএমপি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশাসন আবারও গ্রেপ্তার শুরু করেছে। আপনার দেখেছেন, বিনা ওয়ারেন্টে যুবদলের সাধারণ সম্পাদককে গ্রেপ্তার করেছে। বনানীর একটি ক্লাবে সামাজিক অনুষ্ঠানে থেকে ৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এমনিভাবে অনেক নেতা-কর্মী তারা গ্রেপ্তার করেছে। আমরা তাদেরকে অনুরোধ করেছি রমজানে বিনা ওয়ারেন্টে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার না করতে।’
আমানউল্লাহ বলেন, ‘যেখানে কথা বলছি, সবাই বলছে ওপরের নির্দেশে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আমরা বলেছি, এই গ্রেপ্তার বন্ধ করতে হবে। যদি ওয়ারেন্ট থাকে দেখিয়ে গ্রেপ্তার করবেন।
‘যাদের নামে ওয়ারেন্ট নেই, বাসায় ঘুমাচ্ছে তাদেরকে রাত ৩টায় তুলে নিয়ে আসবেন, এটা হবে না।’
এর আগে বেলা ১১টার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কার্যালয়ে যায় বিএনপির পাঁচ সদস্যের দল। সেখানে ডিএমপির কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন বিএনপি নেতারা।
ওই সময় আমান ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু এবং দলটির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি।
আরও পড়ুন:দেশে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকায় উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৩’ পাওয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখন সরকারে আসে তখনই কিন্তু ধীরে ধীরে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটতে শুরু করে। কারণ ক্ষমতাকে আমরা বাংলাদেশের মানুষের সেবা করার সুযোগ হিসেবেই দেখি।
‘অনেক চড়াই-উতড়াই, অনেক ঘটনা ঘটে গেছে। ২০০৮-এ নির্বাচিত হয়ে ২০২৩; এই একটানা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই কিন্তু আজকের উন্নয়নটা সম্ভব হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বলেছিলেন, মহান অর্জনের জন্য মহৎ ত্যাগ প্রয়োজন। যে কোনো অর্জনের জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করতে হয়, সেই ত্যাগ স্বীকার করতে পেরেছি বলেই আমাদের অর্জনগুলো একে একে আমরা জনগণের কল্যাণে আনতে পেরেছি।’
৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পরের সময়ের কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বারবার গণতন্ত্র থমকে দাঁড়িয়েছে, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকতে পারেনি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অব্যাহত থাকতে পারেনি; কাজেই বাংলাদেশও সেভাবে এগোতে পারেনি। ক্ষমতাসীন যারা ছিল তাদের বাংলাদেশ নিয়ে কী চিন্তা-ভাবনা ছিল সেটা নিয়েও প্রশ্ন আছে।’
বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত ছিল কিন্তু করোনা ভাইরাসের অতিমারি সে অগ্রযাত্রা কিছুটা স্থিমিত করে দেয়। এরপর আসলো রাশিয়া ক্রেন যুদ্ধ, উন্নত দেশগুলোও এখন হিমশিম খাচ্ছে। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে।’
বিগত বছরগুলোতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে দারিদ্র্য কমে আসার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দারিদ্র্যের হার যেখানে ৪০ ভাগের ওপরে ছিল সেখানে আমরা কমিয়ে এনেছি ২০ ভাগে। আরও একটি সুখবর দিতে পারব, আমাদের দারিদ্র্যের হার আরও হ্রাস পেয়েছে। যেটা সঠিকভাবে এখন তথ্য নেয়া হচ্ছে।
‘সেই সঙ্গে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদাকে ধরে রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা সরকার গ্রহণ করেছে।’
আরও পড়ুন:
ফেসবুকসহ সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পরিচালনাকারী আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে আইনানুগভাবে নিবন্ধনের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনার সুপারিশ করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে সংসদীয় কমিটির ১২তম বৈঠকে এমন সুপারিশের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু।
বৈঠকে কমিটির সদস্য এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সদস্য বেগম সিমিন হোসেন (রিমি), মুহম্মদ শফিকুর রহমান, মো. মুরাদ হাসান ও খ. মমতা হেনা লাভলী অংশ নেন।
কমিটির ১১তম বৈঠকের কার্যবিবরণী নিশ্চিতকরণ ও গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা করা হয়।
বৈঠকে জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনে প্রদর্শিত অডিও-ভিডিও প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে সংগ্রহ করে সারাদেশে প্রচারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
অনলাইন নিউজ পোর্টাল, অনলাইন/আইপি টেলিভিশন এবং অনলাইন রেডিও নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সচেতনভাবে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করে কমিটি।
‘The Censorship of Films Act, 1963 (Amended 2006)’ যুগোপযোগী করার জন্য ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইন’ দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রণয়নে কার্যক্রম গ্রহণেরও সুপারিশ করা হয় বৈঠকে।
এছাড়া বাংলাদেশ বেতারের অর্গানোগ্রাম (পদ সৃজন) ফাইলটি দ্রুত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর সুপারিশ করা হয়।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা মহাপরিচালকসহ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সংস্থার প্রধানগণ, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:ছাত্রলীগের যারা খারাপ ও কুকর্মে জড়িত তাদের সংগঠন থেকে বের করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন অভিভাবক সংগঠন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘যারা খারাপ তাদের সংশোধন না করে বের করে দাও। যে কমিটি চাঁদাবাজি করে ওই কমিটির কোনো প্রয়োজন নেই।’
বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশ দেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্রলীগ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ছাত্রলীগের নামে কেউ অপকর্ম করলে তাকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু কয়েকদিন পর তা তুলেও নেয়া হয়। এদের শাস্তি হতে হবে স্থায়ী। প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে হবে। জেলে দিতে হবে।
‘অনেক দিনের পচা গলিত জিনিস এখনও রয়ে গেছে। এই অংশকে বাদ দিতে হবে। তাতে ছাত্রলীগের কোনো ক্ষতি হবে না। ভালো ছেলেমেয়ে থাকলে আরও অনেক ভালো ছেলেমেয়ে ছাত্রলীগে আকৃষ্ট হবে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কোথাও কোথাও অনেকে লাগামছাড়া হয়ে গেছে। এদের লাগাম টেনে ধরতে হবে। কোনো ছাড় দেয়া যাবে না। অপকর্মকারী স্মার্ট কর্মীর দরকার নেই। ভালো কাজের স্মার্টনেস দরকার। আবেগের নয় চেতনার সৈনিক হতে হবে।’
ছাত্রলীগ নেতাদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের নেত্রী অনেক আশা করে অনেক যাচাই-বাছাই করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণ ছাত্রলীগের কমিটি দিয়েছেন। তোমরা তাকে হতাশ করো না। আমাদের আশার প্রদীপ যেন নিভে না যায়।’
পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিষয়ে কাদের বলেন, ‘আমি আশা করি অনতিবিলম্বে কমিটি ঘোষণা করা হবে। তবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে খারাপ ছেলেমেয়েদের আমাদের দরকার নেই। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদক আর সিট বাণিজ্যের মানসিকতা যাদের আছে তারা যেই হোক পরিহার করতে হবে। অপকর্মে জড়িত কাউকে নেতা বানানো যাবে না।’
কাদের আরও বলেন, তোমাদের এই আয়োজন বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে হলে ভালো হয়। একবার স্টেজ ভাঙছে দেখে সবাই ভয় পেয়ে গেছে। ভয় পাওয়ার দরকার নেই। স্টেজ ভেঙে আমার দুই পা রক্তাক্ত। তখনও কিন্তু আমি দাঁড়িয়ে পুনরায় বক্তব্য দিয়েছি। কাউকে বুঝতে দেয়নি যে আমার কোনো ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু ক্ষতি হয়েছে অনেক বেশি। পাঁচবার আমার ড্রেসিং করতে হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ধানমণ্ডি পার্টি অফিসে কেন ঘুরে বেড়াতে হবে? ছাত্রলীগের অফিস কি সভাপতির কার্যালয়ে? ছাত্রলীগের জায়গা ২৩ নম্বর আর মধুর ক্যান্টিনে।’
ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য তারানা হালিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শাওন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সভা সঞ্চালনা করেন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য