× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
What is going to happen in Dhaka on December 10?
google_news print-icon

১০ ডিসেম্বর কী হতে যাচ্ছে ঢাকায়?

১০-ডিসেম্বর-কী-হতে-যাচ্ছে-ঢাকায়?-
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমানের একটি বক্তব্যের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে ১০ ডিসেম্বর আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসে। এর পর দিনটিকে ঘিরে পাল্টাপাল্টি উত্তেজনাকর বক্তব্য আসে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, অন্যান্য বিএনপি নেতাসহ প্রগতিশীল ও বামপন্থি নেতাদের কাছ থেকে। ছবি কোলাজ: নিউজবাংলা
একদিকে বিএনপি নেতাদের হুঁশিয়ারি, অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কঠোর বার্তা ১০ ডিসেম্বরকে আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে। বিএনপি বলছে, এ দিন তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা ও এটি মেনে নেয়ার আলটিমেটাম দেবে। দিনটি নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকেও প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে হঠাৎ করেই আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেছে ১০ ডিসেম্বরের দিনটি। প্রায় দেড় যুগ ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা দল বিএনপি এ দিন তাদের ধারাবাহিক বিভাগীয় সমাবেশের ইতি টানবে ঢাকায় সমাবেশের মধ্য দিয়ে।

১০ ডিসেম্বরের এই সমাবেশে বিপুল লোকসমাগম করতে চায় বিএনপি। এ নিয়ে সরকারি দলের পক্ষ থেকেও পাড়া-মহল্লায় সতর্ক প্রহরাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি দেয়া হচ্ছে।

গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রাম থেকে শুরু হওয়া বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে নেতা-কর্মীদের বিপুল সমাগম ঘটে, যা দলটির এত দিনকার রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলোর তুলনায় ছিল ব্যতিক্রম। এরপর ২২ অক্টোবর খুলনা, ২৯ অক্টোবর রংপুর, ৫ নভেম্বর বরিশাল, ১২ নভেম্বর ফরিদপুর, ১৯ নভেম্বর সিলেটে ও ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায় গণসমাবেশ করে বিএনপি। আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে গণসমাবেশের পর ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় হবে মহাসমাবেশ।

দিনটি উপলক্ষে একদিকে বিএনপি নেতাদের হুঁশিয়ারি, অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কঠোর বার্তায় আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর থেকে দেশ চলবে খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের নির্দেশে।’

এ সমাবেশকে ঘিরে রাজধানীতে আওয়ামী লীগের পাল্টা কর্মসূচিসহ সতর্ক পাহারা বসানোর পরিকল্পনায় দিনটি ভিন্ন মাত্রা পাচ্ছে। অনেকে রাজনৈতিক সংঘাতের শঙ্কাও করছেন।

ফলে ১০ ডিসেম্বর এলেই ঢাকায় কী হতে যাচ্ছে, তা নিয়ে জনমনে কৌতূহল দেখা দিয়েছে।

১০ ডিসেম্বর তারা কী করতে যাচ্ছেন, জানতে চাওয়া হলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঢাকায় সমাবেশ হবে, যেমনটা হয়েছে চট্টগ্রামে, যেমনটা হয়েছে সিলেটে। বিস্তারিত পলিসির অন্তর্ভুক্ত। সময়মতো জানতে পারবেন।’

দলীয় সূত্র জানায়, বিষয়টি নিয়ে শিগগিরই সংবাদ সম্মেলন করবে বিএনপি। সেখানে ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গণসমাবেশ নিয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করবে বিএনপি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক সিনিয়র নেতা বলেন, ‘সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবেই হবে। তবে ঢাকা দেশের মূল কেন্দ্র। তাই এটা নিয়ে আওয়াজও বেশি। আর বাকি বিভাগে জনস্রোত দেখে সরকার ভয় পেয়েছে। তাদের মন্ত্রী-আমলারাই এটাকে রণক্ষেত্র বানিয়ে তুলছে। তবে বাধা এলে বিএনপি বসে থাকবে না, পিছুও হটবে না।’

পাল্টাপাল্টি হুঁশিয়ারি

খালেদা জিয়ার নির্দেশে দেশ চলা সংক্রান্ত আমানউল্লাহ আমানের বক্তব্যের ধারাবাহিক সুর শোনা যায় দলটির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির কণ্ঠে। এ্যানি বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর থেকেই সরকার আর কাজ করবে না। দেশ চলবে বিএনপির শীর্ষ নেতার কথায়।’

পরদিন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশ হবে ‘আটলান্টিক মহাসাগরের’ মতো। এই সমাবেশে খালেদা জিয়া যাবেন।’

এর আগে গত ২ অক্টোবর বিএনপির সঙ্গে সংলাপ শেষে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘চমক আছে সামনে।’

বিএনপি ও তার সমমনা দলের নেতাদের এসব বক্তব্যকে সামনে এনে কথা বলা শুরু করেন ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী-নেতারা। ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকার প্রবেশমুখে সমাবেশ এবং পাড়া-মহল্লায় সতর্ক পাহারায় থাকার ঘোষণা দেয়া হয় ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে।

‘১০ ডিসেম্বরের পর বিএনপিকে লালকার্ড দেখানো হবে’ বলে হুঁশিয়ার করে দেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। ৩১ অক্টেবর গাজীপুরে যুব মহিলা লীগের সম্মেলনে এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ৪ নভেম্বর এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর বিএনপির আন্দোলনের পতন ঘণ্টা বাজবে।’

৫ নভেম্বর রাজধানীর বাড্ডায় আরেক অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপিকে আর ছাড় দেয়া হবে না। ডিসেম্বরে খেলা হবে, প্রস্তুত হয়ে যান।’

৩১ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে এক সভায় যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, ‘বিএনপিকে মোকাবিলা করার জন্য যুবলীগ প্রস্তুত আছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর রাজপথে থাকবে যুবলীগ।’

আওয়ামী লীগের এমন কঠোর হুঁশিয়ারি প্রসঙ্গে আমানউল্লাহ আমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কে কী বলল, সেটা এখন আমরা ভাবছি না, আমলে নিচ্ছি না। আমাদের আট বিভাগে ইতিমধ্যে সমাবেশ হয়ে গেছে। এগুলোতে আওয়ামী লীগ নানাভাবে বাধা দিয়েছে। গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়া থেকে শুরু করে গ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলাসহ সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে। কিন্তু এসব উপেক্ষা করেই প্রতিটি বিভাগীয় সমাবেশে জনস্রোত দেখিয়েছি। ঢাকার সমাবেশের আগেও এমন নানা চাল চালতে পারেন। তবে সেসব উপেক্ষা করেই নয়াপল্টনে লাখো মানুষের সমাগম হবে।’

তবে ঢাকায় নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমোদন এখনো পায়নি দলটি। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বিএনপি চাইলে তাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হবে।

নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি না পেলে কী করবেন জানতে চাইলে দলটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘আমরা ডিএমপি কমিশনারকে সব কিছু বলে এসেছি। অনেক কিছু স্মরণ করিয়ে দিয়েছি। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দেশের জন্য অবদানের কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়ে আসছি। আশা করি সমাবেশের অনুমতি দিবেন। কোনো রাজনৈতিক দলের হুমকি, হুঁশিয়ারি আমরা তোয়াক্কা করি না।’

অনুমিত না পেলেও সমাবেশ করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই অনুমতি দেবে। আমরা সমাবেশ করব। সমাবেশে যাতে কেউ বিশৃঙ্খলা করতে না পারে, সে বিষয়ে পুলিশের সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছি।’

বিএনপি কী করতে চায়?

১০ ডিসেম্বরের পরিকল্পনা নিয়ে বিএনপির সিনিয়র নেতা থেকে তৃণমূল পর্যায়ে একাধিক নেতা-কর্মীর সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা।

বিএনপির নেতারা বলছেন, সারা দেশে বিভাগীয় পর্যায়ে যে গণসমাবেশ তারা করেছেন, তারই ধারাবাহিকতায় ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণসমাবেশ হবে। ৯টি বিভাগে সমাবেশের পর ঢাকায় তাদের শেষ গণসমাবেশ। এই সমাবেশ ঘিরে ঢাকা দখল বা অবরুদ্ধ করে সরকার পতনের ডাক দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। শুধু বড় জনসমাবেশ করাই তাদের লক্ষ্য। একই সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে আলটিমেটাম ও যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা ঘোষণা হবে বলেও জানা যায়।

গত ১ অক্টোবর থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সভাগুলোতে দলের ১০ সাংগঠনিক বিভাগের নেতারা দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে আন্দোলনের ধরন ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত পরামর্শ দিয়েছেন।

এসব গণসমাবেশে বিএনপির স্থানীয় নেতারা দাবি আদায়ে কঠোর কর্মসূচি চেয়েছেন। সে ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে কঠোর হওয়ার প্রস্তাব করেছেন তারা। পাশাপাশি ইস্যু হিসেবে জনসম্পৃক্ত বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেওয়ার জন্য শীর্ষ নেতৃত্বকে পরামর্শ দেন বিভাগের নেতারা।

বৈঠকে অংশ নেওয়া নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, প্রস্তাবিত কর্মসূচির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে: অবরোধ, লংমার্চ, জেলা থেকে জেলায় রোড মার্চ, ঢাকা থেকে বিভাগীয় শহরে রোড মার্চ, ৬৮ হাজার গ্রামে একই দিন গণমিছিল।

নেতদের প্রস্তাবে আরও রয়েছে, ১০ ডিসেম্বর থেকে লাগাতার কর্মসূচি প্রদান এবং সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি।

হরতাল-অবরোধ নয়, জনস্রোত দেখানোই লক্ষ্য

বিএনপির গত দুই মাসের কর্মসূচিগুলোতে দলের নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত দেখা গেছে। সভা-সমাবেশগুলোতে উপস্থিতি দিন দিন বেড়েছে। আবার দলীয় নেতা-কর্মীর বাইরে সমাবেশস্থলে সাধারণ মানুষের উপস্থিতিও দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে, শহরকেন্দ্রিক সমাবেশগুলোতে রিকশাচালক থেকে শুরু করে সমাজের নিম্নস্তরের লোকজনের উপস্থিতি ছিল। বিএনপির সাম্প্রতিক কর্মসূচিতে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস এবং তেল-গ্যাস-জ্বালানির দাম কমানোর দাবি জানানো হয়।

১০ ডিসেম্বরের মহাসমাবেশকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত সকল থানা ও ওয়ার্ডসহ সারা দেশ থেকে সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের এ মহাসমাবেশে জড়ো করে বড় ধরনের শোডাউনের চেষ্টা করছে দলটি।

সমাবেশে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী জড়ো করতে দলের জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। কেন্দ্র থেকে শুরু করে সারা দেশের সকল স্তরের বিএনপি নেতা-কর্মী নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছে। কীভাবে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী ও সমর্থককে নিজ নিজ এলাকা থেকে মহাসমাবেশে উপস্থিত করানো যায়, সেই পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিচ্ছেন শীর্ষ নেতারা। এ জন্য আগেই দলটির সর্বস্তরে প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়েছে। লন্ডন থেকে তারেক রহমানও বিভিন্ন স্তরের নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।

বিএনপি সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, তারা এবার এমনভাবে আন্দোলন এগিয়ে নিতে চায়, যাতে সরকার চাপে পড়ে তাদের দাবি মেনে নেয়। তাই ২০১৩ সালের মতো এবারো তৃণমূল থেকে আন্দোলন জোরদারের কৌশল নিয়েছে দলটি।

ওই বছর ২৯ ডিসেম্বর যেভাবে সারা দেশ থেকে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের ঢাকায় জড়ো করতে ‘রোড ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল দলটি, একইভাবে তারা এবারো ১০ ডিসেম্বর ঢাকার মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সারা দেশ থেকে নেতা-কর্মীদের জড়ো করতে চায়।

সূত্র জানায়, মহাসমাবেশের কয়েক দিন আগে ঢাকার বাইরে থেকে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী জড়ো করতে ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট দলীয় নেতাদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপি হাইকমান্ড। আগে আসা নেতাকর্মীদের মধ্যে যাদের ঢাকায় কোনো আত্মীয়স্বজন নেই, তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হবে। এ জন্য রাজধানীর বিভিন্ন হোটেল, কমিউনিটি সেন্টার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও নির্মীয়মাণ বিভিন্ন ভবন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আর রাজধানীতে বসবাসকারী বিএনপি নেতাদের বলা হয়েছে, নিজ নিজ নির্বাচনি এলাকা থেকে আসা নেতাকর্মীদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করতে।

দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা এখন অব্দি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেছি। ঢাকার সমাবেশেও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে চাই। জনগণের দাবিকে সামনে রেখেই আমাদের এসব কর্মসূচি। আর সেদিন আমাদের নতুন কর্মসূচি আসবে।’

নতুন কর্মসূচি কী আসবে—জানতে চাইলে দুদু বলেন, ‘আমাদের দলের স্থায়ী কমিটি এ বিষয়ে বৈঠক করবে। তারা আলোচনার মাধ্যমে কর্মসূচি নির্ধারণ করবে। তবে এটা বলা যায়, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি আসবে; যদি সরকার কর্মসূচিকে ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে না দেয়।’

তবে সরকার যদি বাধা সৃষ্টি করে তবে তা মোকাবিলার জন্যেও প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন বলে জানান আরেক বিএনপি সিনিয়র নেতা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ নেতা তিনি বলেন, ‘পথে-ঘাটে বাধা দিবে? আটকায় রাখবে। আমরা তো আর তামাশা দেখব না। বাধা উপেক্ষা করতে হবে। কেমন বাধা আসবে, সেটা পরিস্থিতি বিবেচনায় স্টেপ নিব। আর সে নিয়েও আমরা আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আলটিমেটাম

আর এই মহাসমাবেশ থেকেই নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে সরকারকে আলটিমেটাম দেবে দলটি। আলটিমেটাম অনুসারে দাবি না মানলে রাজপথে দুর্বার আন্দোলনের ঘোষণাও দেওয়া হবে। এ ছাড়া এই মহাসমাবেশ কর্মসূচি পালনের মাধ্যমেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মাঠ দখলের চেষ্টা করবে বিএনপি।

১০ ডিসেম্বরের মহাসমাবেশ থেকে কী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে এবং এই সমাবেশ থেকে দলের নেতাকর্মী, দেশের সাধারণ মানুষ ও সরকারকে বিএনপি কী বার্তা দেবে, তা ঠিক করতে বিএনপির সিনিয়র নেতারা এখনও কাজ করছেন বলে সূত্র জানায়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করতে ১০ ডিসেম্বরের মহাসমাবেশ থেকে মূলত একটি দাবিই উপস্থাপন করবে বিএনপি। আর এটি হচ্ছে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন।

এ ব্যাপারে সরকারকে আলটিমেটাম দেবে দলটি। আর এ আলটিমেটামের পক্ষে জনমত বৃদ্ধি করতে ও রাজপথে শক্তি প্রদর্শন করতে নতুন করে আরও কিছু ধারাবাহিক কর্মসূচি দেওয়ার চিন্তা করছে দলটির হাইকমান্ড।

গত মঙ্গলবার দলীয় এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, ১০ ডিসেম্বর থেকে এক দফার আন্দোলন শুরু হবে। এই ‘এক দফার আন্দোলন’ বলতে তিনি নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বুঝিয়েছেন, যে সরকারের রূপরেখা মহাসমাবেশ থেকে ঘোষণা করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা আন্দোলনে থাকলেও এখনও আসল ঘোষণা দেইনি, আসল ঘোষণা দেব ১০ ডিসেম্বর।’

এর আগে আরেক দলীয় কর্মসূচি পালন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি মহাসচিব জানিয়েছিলেন, সময়মতো নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা জানিয়ে দেওয়া হবে। ১৯৯৬ সালের সংবিধানের আলোকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা তৈরি করছে বিএনপি।

তিনি আরও বলেন, ‘ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নিরঙ্কুশ আসনে বিজয়ী হয়ে ১৯৯৬ সালের ২৭ মার্চ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনে সংবিধানের সংশোধনী পাস করে। তাই আমাদের রূপরেখা তৈরি হবে সংবিধানের ওই সংশোধনীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার যেমন ছিল, তারই আলোকে।’

যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা ঘোষণা

১০ ডিসেম্বররের মহাসমাবেশ থেকে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারকে আলটিমেটাম দেওয়ার পর সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোও যুগপৎ আন্দোলন শুরু করবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে টার্গেট করে সরকারকে চাপে ফেলতে এবার আটঘাট বেঁধে মাঠে নামতে চায় বিএনপির নেতৃত্বে ডান, বাম ও মধ্যপন্থি বেশকটি রাজনৈতিক দল। এ জন্য তাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, যুগপৎ এ আন্দোলন দেশের সব রাজনৈতিক দলের জন্য উন্মুক্ত থাকলেও কৌশলগত কারণে আপাতত ফ্রন্টলাইনে থাকছে না জামায়াত।

বিএনপির সঙ্গে গোপন সমঝোতার ভিত্তিতে জামায়াত এ কৌশল নিয়েছে বলে সূত্র জানায়। যুগপৎ আন্দোলনে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো।

এরই প্রস্তুতি হিসেবে ২ অক্টোবর থেকে শুরু হয় সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির দ্বিতীয় দফা সংলাপ। এ পর্যন্ত প্রায় ২০টি দলের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপ করেছে বিএনপি। এর আগে গত ২৪ মে থেকে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম দফা সংলাপ শুরু করে দলটি। প্রথম দফায় ২৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের সিনিয়র নেতারা।

বিএনপির নেতারা বলছেন, তাদের লক্ষ্য ঢাকার সমাবেশের পর দ্বিতীয় ধাপের আন্দোলনে যাওয়া। এর মধ্যে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মকৌশলও ঠিক করা হবে। নির্দলীয় সরকারের রূপরেখা এবং নির্বাচনের পরে জাতীয় সরকারের কাঠামোও ঘোষণা করা হবে। মূলত ঢাকার সমাবেশ থেকেই এক দফার আন্দোলনে নামার ঘোষণা আসতে পারে বলে বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘১০ তারিখের পর জানতে পারবেন। সত্য মিথ্যা সামনে আসবে তখন। এখন আমরা খুবই ব্যস্ত সময় পার করছি।’

জামায়াতের সাথে জোট নিয়ে জানতে চাইলে ২০ দলীয় জোটের এই সমন্বয়ক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এত ব্যস্ততার মধ্যে এসব নিয়ে ভাবার সময় নেই। আমাদের দাবির কাতারে যারা এসে দাঁড়াবে, আমরা তাদের ওয়েলকাম জানাব।’

আরও পড়ুন:
ঝামেলা না করে নয়াপল্টন দিন: পুলিশকে ফখরুল
‘খুবই বিপদগ্রস্ত’ অর্থনীতিতে উদ্বিগ্ন দুদু
১০ ডিসেম্বরের ভয়ে ব্যাগ গোছাচ্ছেন আ.লীগ নেতারা: দাবি বিএনপির
খালেদা জিয়ার কাছে মাফ চান: আ.লীগকে বিএনপি নেতা

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Meeting seven political parties with the chief adviser

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাত রাজনৈতিক দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাত রাজনৈতিক দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ বিকেল ৫টায় সাতটি রাজনৈতিক দল ও একটি সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, বৈঠকে অংশ নেন- এবি পার্টি, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, এলডিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় গণফ্রন্ট এবং হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।

এরআগে গত রোববার প্রধান উপদেষ্টা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি’র সঙ্গে বৈঠক করেন।

ধারাবাহিক এই বৈঠক আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতিতে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
International Crimes Tribunal 1 may be formed Law Advisor

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-৩ গঠন করা হতে পারে: আইন উপদেষ্টা

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-৩ গঠন করা হতে পারে: আইন উপদেষ্টা

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-৩ গঠন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

আজ সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ভবন ও সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

এ সময় আইন উপদেষ্টা বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। বিগত সরকারের হত্যা, গুম, নির্যাতনসহ সব ধরনের অপরাধের বিচারের বিষয়ে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আইন উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবন সংলগ্ন টিনশেড ভবন খালি হয়ে গেলে আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-৩ গঠন করতে পারি। এটি করা গেলে গুমসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচার কাজ দ্রুত করা যাবে।

তিনি আরো বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা নিয়ে বেশ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন আমাদের বিচারকসহ প্রসিকিউশন ও তদন্ত টিম।

আইন উপদেষ্টা বলেন, দেশের ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের স্বার্থে আমাদের যে ন্যায়বিচার আছে, আইনের শাসন আছে ও মানবাধিকার আছে এটাকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বার্থে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে এক হাজারেরও বেশি ছাত্র-জনতাকে হত্যা এবং হাজারও মানুষকে পঙ্গু করার ভয়াবহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার অপরিহার্য-অনিবার্য। সেই বিচারকার্যের প্রথম থেকেই আমরা অবিচল আছি। বিচারের যে গতি আছে সেটা নিয়েও আমরা সন্তুষ্ট আছি।

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবন আজ পরিদর্শন করেন। এসময় তাদের সঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ অপর প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
People will play a key role in the free and fair and participatory elections Home Advisor

অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে জনগণই মুখ্য ভূমিকা রাখবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে জনগণই মুখ্য ভূমিকা রাখবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে জনগণই মুখ্য ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।

উপদেষ্টা আজ সিলেট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।

মতবিনিময় সভায় সিলেট বিভাগের সকল জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি), আনসার-ভিডিপি, কারা অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সিলেট জেলার বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

উপদেষ্টা বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য। তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে মাঠ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য শুধু নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি যথেষ্ট নয়, মাঠ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে যথাযথ প্রস্তুতি নিতে হবে। জনগণ যেন নির্ভয়ে নির্বাচন কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোট প্রদান করতে পারে সেরকম পরিবেশ তৈরি করতে প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে একযোগে কাজ করতে হবে। সকলের সহযোগিতায় সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভবপর হবে।

পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়োগ ও পদায়ন সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, এবার বিভিন্ন বাহিনীর নিয়োগ প্রক্রিয়া ও পদায়ন অনেক স্বচ্ছ হয়েছে। তাই সবাইকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। মাদককে দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য অন্যতম হুমকি উল্লেখ করে তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে মাদক ব্যবসায়ীদের প্রতি জিরো টলারেন্স দেখানোর নির্দেশনা দেন। এছাড়া পরিবেশ রক্ষায় সিলেটের পাথরখেকোদের বিরুদ্ধে সবসময় সজাগ থাকার কথা বলেন।

দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে কৃষির গুরুত্ব তুলে ধরে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেন, কৃষকরাই এদেশের খাদ্য নিরাপত্তার মূল কারিগর। তাই উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষকেরা যেন তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। উপদেষ্টা এসময় পতিত কৃষিজমিগুলো আবাদের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান।

সভায় উপস্থিত কর্মকর্তাবৃন্দ সিলেটের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও এর চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে বিভিন্ন মতামত প্রদান করেন। উপদেষ্টা সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যৌক্তিক পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। মতবিনিময় সভা শেষে উপদেষ্টা উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।

উপদেষ্টা এর আগে বিজিবি'র সিলেট সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স এবং সিলেট পুলিশ লাইন পরিদর্শন করেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Roadmap of national elections will be announced tomorrow EC Secretary

জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে কাল: ইসি সচিব

জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে কাল: ইসি সচিব

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে সচিব সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘আমরা যে কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) করেছি, সে কর্মপরিকল্পনাটা আপনাদের জানাবো। আমি ঢাকার বাইরে থাকায় একটু পিছিয়ে পড়েছি। এটা আমার টেবিলে এখন আছে। আগামীকাল পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করেন।’
এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব আজ এক বৈঠকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) অনুমোদন করেছে কমিশন।
এখন যেকোনো সময় নির্বাচনের এই রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হতে পারে বলে ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অনুমোদন হয়েছে, এখন শুধু টাইপিং চলছে।’
উল্লেখ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইসির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে দল নিবন্ধন, সীমানা নির্ধারণ, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংস্কার, বিধিমালা ও নীতিমালা জারি, প্রবাসীদের জন্য আইটি সাপোর্টেড নিবন্ধন ও পোষ্টাল ব্যালট পদ্ধতি ও নির্বাচনী সরঞ্জাম কেনাকাটা বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে রোডম্যাপে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Authorization of the Roadmap of the National Election

জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ অনুমোদন

জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ অনুমোদন

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) অনুমোদন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

যে কোনো সময় এই নির্বাচনের রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করতে পারে ইসি।

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন, চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব এ নিয়ে বৈঠকও করেছেন।

বৈঠকে কর্মপরিকল্পনার (রোডম্যাপ) অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। এখন, যে কোনো সময় নির্বাচনের এই রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হতে পারে বলে ইসি’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অনুমোদন হয়েছে, এখন শুধু টাইপিং চলছে।’

এদিকে সংসদীয় আসনের পুনঃনির্ধারিত সীমানার বিষয়ে ইসি’র শুনানি আজ বিকেলে শেষ হচ্ছে।

শুনানি শেষে বিকেলে সার্বিক বিষয় নিয়ে ইসি’র সিনিয়র সচিব আকতার আহমেদের ব্রিফিং করার কথা রয়েছে।

এ বিষয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘আমরা ব্রিফিংয়ে আসব। তখন সীমানার শুনানির বিষয়টির পাশাপাশি এ বিষয়টিও (রোডম্যাপ) দেখা যাবে।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি কর্মকর্তা বৈঠক করেন।

ওই দিন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছিলেন, বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে ইসি সচিব ব্রিফ করবেন।

গত ১৮ আগস্ট ইসি’র সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়ে ছিলেন, ‘একটা কর্মপরিকল্পনার (নির্বাচনী রোডম্যাপ) বিষয়ে বলেছিলাম, আমরা এই সপ্তাহে এটা করবো। কর্মপরিকল্পনার তো আমাদের আন্তঃঅনুবিভাগ সম্পর্কিত এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে। কর্মপরিকল্পনার ড্রাফ্ট করা হয়েছে। ড্রাফ্টটি এখন কমিশনে দিয়ে আমরা অ্যাপ্রুভ করবো।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The 5th meeting of the Tripartisan Advisory Council was held in the amendment of Labor Act

শ্রম আইন সংশোধনে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের ৮৯ তম সভা অনুষ্ঠিত

শ্রম আইন সংশোধনে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের ৮৯ তম সভা অনুষ্ঠিত

শ্রম আইন, ২০০৬ সংশোধনের লক্ষ্যে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ (টিসিসি)-এর ৮৯তম সভায় শ্রমিক, মালিক ও সরকারের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গত এক বছরের পর্যালোচনা ও সকল পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে শ্রম আইন ২০০৬ সংশোধনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

আজ মঙ্গলবার ঢাকার এক হোটেলে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, "শ্রমিক ও মালিক পক্ষের পরামর্শের ভিত্তিতে শ্রম আইন যুগোপযোগী করা হবে। এটি বাংলাদেশের শ্রমখাতের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হবে এবং আন্তর্জাতিক মানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হবে।’

সভায় শ্রমিক ও মালিক পক্ষের প্রতিনিধিরা তাদের মতামত তুলে ধরেন। একটি সুসমন্বিত ও আন্তর্জাতিক মানের শ্রম আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা উপস্থিত সকলেই করেন। অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত এ সভায় সংশোধিত শ্রম আইন দ্রুত সম্পন্ন করার তাগিদ দেওয়া হয়।

সভায় বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন দূতাবাস, কানাডা হাই কমিশন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর প্রতিনিধিরা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত জনাব লুৎফে সিদ্দিকী।

এছাড়াও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) এর নির্বাহী পরিচালক এবং শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন (বিইএফ)-এর সভাপতি, টিসিসি সদস্যবৃন্দের মধ্যে তাসলিমা আক্তার, কোহিনুর মাহমুদ, বাবুল আকতার , নাজমা আক্তার, রাজেকুজ্জামান রতন, এডভোকেট আতিকুর রহমান, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্লেষকদের মতে, এই সংশোধনী বাংলাদেশের শ্রমবাজারকে আরও গতিশীল ও আন্তর্জাতিক মানসম্মত করবে এবং শ্রমিক-মালিক সম্পর্কের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Quick Response Team is working to prevent violence against women

নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে

নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে

সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সারাদেশে কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থা আয়োজিত প্রযুক্তি সুবিধাপ্রাপ্ত লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা মোকাবেলায় নীতিগত সুপারিশ শীর্ষক জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা একথা বলেন।

সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, সারাদেশে প্রযুক্তিগত সুবিধা নিয়ে বিভিন্ন স্থানে নারীদের সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। এ সকল অপকর্ম প্রতিরোধে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরিচালিত কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে বাল্য বিয়ের সংজ্ঞা পাল্টে গেছে। এর মূল কারণ হচ্ছে মোবাইল নামক যন্ত্রটি। মোবাইল প্রযুক্তির অপব্যবহারের ফলে ছোট ছোট মেয়েরা প্রেমের ফাঁদে পড়ে নারী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।

মেয়েরা অবুঝ এজন্য অভিভাবকদেরকে এ বিষয়ে আরো সচেতন হতে হবে। যাতে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েরা প্রেমের ফাঁদে পড়ে নারী সহিংসতা শিকার না হয়।

উপদেষ্টা বলেন, জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থা, নারী পক্ষ, হিউম্যান রাইটস বাংলাদেশ, সাইবার টিনস ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), ব্র্যাকসহ বাইশটি সংগঠন আজ নারী নির্যাতন প্রতিরোধে একযোগে কাজ করছে। তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

উপদেষ্টা বলেন এই ২২ টি সংগঠনের প্ল্যাটফর্মে যে সমস্ত শিক্ষিত তরুন যুবক যুবতীরা আছেন তাদেরকে টেকনোলজির মাধ্যমে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন ব্যক্তিগত এবং সামাজিক ও পরিবারের সচেতনতাই পারে একটি মেয়েকে নির্যাতন থেকে রক্ষা করতে। এজন্য সবাইকে আরো সচেতন হতে হবে।

মন্তব্য

p
উপরে