গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) বিধান সংশোধনে নির্বাচনের কমিশনের ইচ্ছাকে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের উপেক্ষা করার ঘটনায় সরকারের একটি বক্তব্য শুনতে চেয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
কমিশনের প্রস্তাব নিয়ে সাড়া না দেয়ার পর দুইবার চিঠি পাঠিয়েও জবাব পায়নি কমিশন। এরপর ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে জবাব দিতে সময় বেঁধে দিয়ে কড়া ভাষায় আবার চিঠি দেয়ার পর রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি জানিয়ে দেন, তারা অনুরোধ করেই যাবেন, এটা হতে পারে না।
তিনি বলেন, আইন তো আর কমিশন সরকার না, করবে পার্লামেন্ট ও সরকার। তারা যে প্রস্তাব দিয়েছেন, সেটির বিপরীতে সরকার অবশ্যই মনে করতে পারে এর যুক্তি নেই, তাহলে তারাও পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেনে। কিন্তু একটি জবাব তো দিতে হবে।
সিইসি বলেন, ‘আমরাও তো অনন্তকাল ধরে একটা ম্যাটার (বিষয়) পারসিউ করতে পারব না। এ জন্য আমরা বিষয়টা শেষ করে দিতে চাই। যদি আর কোনো রেসপন্স না হয় আমরা অন্য কাজে মনোনিবেশ করব। এ বিষয়টা নিয়ে হয়তো আমাদেরকে আর পারসিউ করতে হবে না।’
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমে ভোটদানের ক্ষেত্রে আঙুলের ছাপ না মেলায় প্রিসাইংডিং কর্মকর্তার আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে ব্যালট ইউনিট ওপেন করার ব্যবস্থাটি আরপিওতে অন্তুর্ভুক্ত করতে চায় কমিশন। বেশ কিছু আইনের সংস্কারের পক্ষেও তারা।
এ বিষয়ে পাঠানো প্রস্তারের বিষয়ে সাড়ে তিন মাসেও কোনো কিছু জানানো হয়নি কমিশনকে। এতে অসন্তুষ্ট তারা।
রোববার নির্বাচন কমিশনের উপসচিব আব্দুল হালিম স্বাক্ষরিত একটি চিঠি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব বরাবর পাঠানো হয়। এতে বেশ কড়া ভাষা ব্যবহার করা হয়।
খসড়া বিলটি নিয়ে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে ২৮ সেপ্টেম্বর জরুরি পত্র পাঠায় কমিশিন। কিন্তু জবাব আসেনি। এরপর ১০ অক্টোবর আরও একটি চিঠি পাঠানো হয়। এবারও কমিশনের চিঠি উপেক্ষা করা হয়।
এবারের চিঠিতে বলা হয়, ‘আরপিওর সংশোধন-সংক্রান্ত খসড়া বিলের অগ্রগতির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে অবগত করার জন্য শেষবারের মতো বিশেষভাবে সনির্বন্ধ অনুরোধ করেছে।’
সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদের বিধান মতে দায়িত্ব পালনে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করা যে নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য সেই বিষয়টিও চিঠিতে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়।
নির্বাচন কমিশন মনে করে, কমিশনের অনুরোধ ও চাহিদা উপেক্ষিত হলে তারা দায়িত্ব পালনে সক্ষমতা অর্জন করতে পারবে না। এতে নির্বাচন বিষয়ে কমিশনের সক্ষমতা, স্বাধীনতা এবং সরকারের সদিচ্ছা প্রশ্নে জনমনে অনাকাঙ্ক্ষিত সংশয়ের উদ্রেক হতে পারে বলেও ভাবছে তারা।
এই চিঠির বিষয়ে জানাজানি হলে সাংবাদিকরা ভিড় করেন সিইসির কাছে। তিনি বলেন, ‘যেহেতু সময় বেঁধে দিয়েছি, আমাদের প্রত্যাশা ওই সময়ের মধ্যেই তারা রেসপন্স নিশ্চয়ই করবেন। সরকারের বিভিন্ন ব্যস্ততা থাকে ব্যস্ততার কারণে তারা সময় করে উঠতে পারে নাই।’
এই চিঠির পর আর অনুরোধ করা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ওই তারিখটা (১৫ ডিসেম্বর) আসুক। কমিশন বসে তখন একটা সিদ্ধান্ত নেব। এটা কি খুব গুরুত্বপূর্ণ কি না, কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ, তখন আমরা সেটা বিবেচনা করে দেখব।’
গুরুত্বপূর্ণ ছিল বলেই নির্বাচনি আইনে সংস্কার আনতে চেয়েছেন- একজন গণমাধ্যমকর্মীর এমন মন্তব্যের জবাবে সিইসি বলেন, ‘সব কিছুই তো খুবই গুরুত্বপূর্ণ তা না। সবকিছুই যে সব সময় অ্যাড্রেস হবে তা তো না। সরকারের নিশ্চয়ই একটা বক্তব্য আছে, সেটা থাকবে।
‘আমরা যেটা প্রত্যাশা করেছি, সরকারের ওই যুক্তি থাকতে পারে যে, এটার প্রয়োজন নাই। এটা অলরেডি অ্যাড্রেস আছে কোথাও। যদি অ্যাড্রেস হয়ে থাকে সেটাও যদি আমরা জানতে পারি আমাদের আর পারসিউ করার প্রয়োজন পড়ে না।
‘তাদেরও তো একটা যুক্তি থাকতে পারে এই প্রস্তাব নিয়ে কারণ অথরিটি তারা। আইন প্রণয়ণের অথরিটি সরকার এবং পার্লামেন্ট। তারা যদি মনে করেন না, পর্যাপ্ত আইন রয়ে গেছে, এ বিষয়ে করণীয় কিছু নেই, সেইটুকু আমাদের জানিয়ে দিলে আমরা বিবেচনা করতাম।’
আইন সংশোধ না হলে ভোট প্রত্যাশা অনুযায়ী হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না আমি পর্যাপ্ত বলেছি।’
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ কারও সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চায় না। তবে কখনও আক্রান্ত হলে সশস্ত্র বাহিনী দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব যাতে রক্ষা করতে পারে, সেভাবেই সক্ষম করে তাদের গড়ে তোলা হচ্ছে।
সোমবার নৌবাহিনীর নবনির্মিত ‘বানৌজা শেখ হাসিনা’ সাবমেরিন ঘাঁটির কমিশনিং অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
গণভবন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে কক্সবাজারের পেকুয়ায় নবনির্মিত ঘাঁটিতে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জাতির পিতার দিয়ে যাওয়া পররাষ্ট্রনীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ অনুসরণ করি আমরা। আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ করব না। তবে যদি কখনও তেমন পরিবেশ-পরিস্থিতি হয় তাহলে যেন আমরা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পারি সেভাবে আমাদেরও দক্ষতা অর্জন করতে হবে। সেভাবেই আমরা আমাদের বাহিনীগুলোকে তৈরি করে দিচ্ছি। আমাদের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক। তারা সব ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করুক সেটাই আমরা চাই।”
সরকার প্রধান বলেন, “জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও আমাদের সশস্ত্র বাহিনী বিশাল ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। সেখানে কর্তব্য পালনে তারা যেন কোনোভাবেই পিছিয়ে না থাকে সেভাবেই আমরা এই বাহিনীগুলোকে প্রস্তুত করছি।
“সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর বঙ্গবন্ধুর প্রতিরক্ষা নীতি-১৯৭৪ এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ প্রণয়ন করে এবং সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক ও সময়োপযোগী হিসেবে রূপান্তরের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।”
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে সশস্ত্র বাহিনী আধুনিকায়নে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করেন। বলেন, ‘গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বহরে ৪টি ফ্রিগেট, ৬টি করভেট, ৪টি বড় প্যাট্রোল ক্রাফট, ৫টি প্যাট্রোল ক্রাফট ও ২টি প্রশিক্ষণ জাহাজসহ মোট ৩১টি যুদ্ধজাহাজ যুক্ত হয়েছে।
‘সামরিক শক্তিতে বাংলাদেশের নতুন মাইলফলক হলো এই সাবমেরিন ঘাঁটি। ২০১৭ সালের ১২ মার্চ দুটি সাবমেরিন যুক্ত করেছি। ফলস্বরূপ, আজ আমাদের নৌবাহিনী একটি ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
‘বাংলাদেশ বর্তমানে স্থানীয় শিপইয়ার্ডে নিজের ও অন্যদের ব্যবহারের জন্য জাহাজ নির্মাণ করছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী খুলনা শিপইয়ার্ডে একটি বড়সহ পাঁচটি প্যাট্রোল ক্রাফট নির্মাণ সম্পন্ন করেছে।’
বঙ্গবন্ধু-কন্যা আরও বলেন, ‘এই সমুদ্র সীমায় আমাদের বিশাল সম্পদ রয়েছে। তা অর্থনীতিতে কাজে লাগাতে ‘ব্লু ইকোনমি’ নীতি বাস্তবায়ন করছে সরকার। তাছাড়া এই ক্ষেত্রে আমাদের পর্যটন শিল্প গড়ে তোলা থেকে শুরু করে অনেক সুযোগ রয়েছে কাজ করার।’
বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা সুরক্ষিত রাখতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সক্ষমতা আরও জোরালো হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সরকার প্রধান।
তিনি বলেন, আশা করি দেশপ্রেমের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে নৌবাহিনীর প্রতিটি সদস্য পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত, উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার কাজে তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।’
অনুষ্ঠানে বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি থেকে নৌবাহিনীর সুসজ্জিত একটি চৌকষ দল প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে নৌবাহিনী প্রধান বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটির প্রধান কমোডর এম. আতিকুর রহমানের কাছে কমিশনিং ফরমান হস্তান্তর করেন। এরপরই ঘাঁটিতে প্রথমবারের মতো পতাকা উত্তোলন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সাবমেরিন ঘাঁটির ওপর একটি সংক্ষিপ্ত অডিও ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশনও প্রদর্শিত হয়।
আরও পড়ুন:তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপিকে নির্বাচনী ভীতিতে পেয়েছে। এ কারণে তারা ভোটের পথে না হেঁটে ষড়যন্ত্রের পথে হাঁটছে।
সোমবার ‘সড়ক নিরাপত্তা রিপোর্টিং’ শীর্ষক সেমিনারের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
রাজধানীর কাকরাইলে তথ্য ভবনে এই সেমিনারের আয়োজন করে জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট (এনআইএমসি)।
‘নির্বাচনের ফাঁদে পা দেবে না বিএনপি’- মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপিকে আসলে নির্বাচনী ভীতি পেয়ে বসেছে। ভীতি পাওয়াটাও স্বাভাবিক। কারণ ২০০৮ সালে বিএনপি সর্বশক্তি প্রয়োগ করে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে মাত্র ২৯টি পেয়েছিল। পরবর্তীতে উপনির্বাচনে তারা ৩০টি আসন অতিক্রম করতে পেরেছে।
‘২০১৪ সালে তারা নির্বাচন বর্জন করে। আর ২০১৮ সালের নির্বাচনে সব দলের ঐক্য করে ড. কামাল হোসেন সাহেবের মতো মানুষকে ‘হায়ার’ করে নির্বাচনে অংশ নিয়ে তারা মহিলা আসনসহ মাত্র ৭টি আসন পেয়েছিল।
‘বিএনপি তাদের জনপ্রিয়তা সম্পর্কে জানে, নির্বাচনে সাফল্য কতটুকু হতে পারে সেটি জানে। সে জন্য তাদেরকে নির্বাচনী ভীতি পেয়ে বসেছে। ফলে ষড়যন্ত্রের পথেই হাঁটছে তারা।’
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা চাই, বিএনপি নির্বাচন ভীতি কাটিয়ে ভোটে অংশ নিক। অন্য সব গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় সেভাবে এখানেও নির্বাচনকালীন সরকার হবে চলতি সরকার এবং নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সেখানে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করবে এবং বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করুক এটিই আমাদের প্রত্যাশা।’
‘আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশের কথা শুনলে একাত্তরের শান্তি কমিটির কথা মনে হয়’- বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা সাহেবের বাবা শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন, পাকিস্তানপন্থী ছিলেন। স্বাধীনতার পর মির্জা ফখরুল সাহেবও অনেক দিন আত্মগোপনে ছিলেন। এজন্য ওনার বেশি বেশি শান্তি কমিটির কথা মনে পড়ে।
‘বিএনপি যখনই রাজনৈতিক কর্মসূচি করে, হয় নিজেরা মারামারি করে অথবা পুলিশের সঙ্গে মারামারি করে। কিন্তু দেশে যাতে শান্তি-শৃঙ্খলা স্থিতি বজায় থাকে সে জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ করছে।’
এর আগে সেমিনারে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে যানবাহন মালিক, চালক, শ্রমিক, আইন রক্ষাকারীসহ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী।
জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ফায়জুল হকের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আল মাহবুব উদ্দীন আহমেদ, বুয়েটের এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহবুব আলম তালুকদার, বার্তা সংস্থা ইউএনবির উপদেষ্টা সম্পাদক ফরিদ হোসেন, বিআরটিএ পরিচালক (সড়ক নিরাপত্তা) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রাব্বানী, এশিয়া-প্যাসিফিক ইনস্টিটিউট ফর ব্রডকাস্টিং ডেভলপমেন্ট (এআইবিডি) প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাবিল তিরমাযি, এনআইএমসি পরিচালক ড. মো. মারুফ নওয়াজ ও মোহাম্মদ আবু সাদিক।
আরও পড়ুন:দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) মেরামতের জন্য ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এ সংক্রান্ত চিঠি এরই মধ্যে লেখা হয়েছে, যেটি মঙ্গলবার পাঠানো হতে পারে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সোমবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান।
এ কমিশনার জানান, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে এখন পর্যন্ত ১৮০টি আবেদন জমা পড়েছে।
নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন সাবেক কমিশনের রেখে যাওয়া দেড় লাখ ইভিএম মেশিনের ১ লাখ ১০ হাজার মেরামত করতে হবে। বাকি ৪০ হাজার মেশিন প্রায় ব্যবহার অযোগ্য।
১ লাখ ১০ হাজার মেশিন মেরামতে ইভিএম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ) ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা চেয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান বলেন, ‘গত ১৫ মার্চের কমিশন বৈঠকে আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটা চিঠি দেয়ার জন্য বলেছি। এক হাজার ২৬০ কোটি টাকার মতো লাগবে এক লাখ ১০ হাজার ইভিএম মেরামত করার জন্য। সেটা পাওয়া যাবে কি না, নিশ্চিত করার আমরা একটা চিঠি দিতে বলেছি। সেটা রেডি হয়েছে। আগামীকাল (মঙ্গলবার) যেতে পারে।’
টাকার নিশ্চয়তা ইসি এখনও পায়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কাজেই টাকার নিশ্চয়তা না হলে আমরা এই কাজ করব? শেষ পর্যন্ত দিতে পারব না টাকা, সেটা তো ঠিক হবে না। টাকার নিশ্চয়তা যদি পাওয়া যায়, আমরা অর্থবছরভিত্তিক এই অর্থবছরে অর্ধেক দেয়ার জন্য, পরবর্তী অর্থবছরে বাকি অর্ধেক দেয়ার জন্য এ রকম একটা প্রস্তাব আমরা পাঠাচ্ছি।
‘যদি অর্থ বিভাগ টাকা সংস্থান করে তাহলে আমরা ইভিএমের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে উপনীত হব। অন্যথায় যদি টাকা না পাওয়া যায় তাতেও আমাদের সিদ্ধান্তে আসতে হবে কী করব। ব্যালটে কতটা করব বা ইভিএমে আদৌ করব কি না। কাজেই সবটাই নির্ভর করবে অর্থ প্রাপ্তির ওপর।’
কবে নাগাদ ইভিএম ও ব্যালটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে এমন প্রশ্নের জবাবে এই কমিশনার বলেন, ‘আমরা তো আর মানে একেবারে অনির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বসে থাকবে পারব না। আমরা যদি টাকা হাতে পাই, তাতে ইভিএম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ) বলেছে যে, তাদের ছয় মাস সময় দিতে হবে মেরামত করার জন্য। কাজেই আমরা তো মনে করি এখনই হাই টাইম।’
তিনি আরও বলেন, ‘টাকা পাওয়া, না পাওয়াটা (চিঠির জবাব) যদি আমরা আগামী কিছুদিনের মধ্যেই পেয়ে যাই, আগামী সপ্তাহে বা তার পরের সপ্তাহে বা তার পরের সপ্তাহে যদি পেয়ে যাই তাহলে কিন্তু হাতে ছয় মাস সময় পাব। অন্যথায় কিন্তু সময় পাবো না।
‘ছয় মাস সময়ের পরে টাকা দিলে তো আমাদের লাভ হবে না। কারণ এক লাখ ১০ হাজার মেশিন যদি আমরা ব্যবহারযোগ্য করতে পারি, তাহলে ৭০, ৮০ যে সংখ্যাটা (আসন) হয়, আমরা যেতে পারব। না হলে তো পারব না বা করব কি না, তা পরে সিদ্ধান্ত নেব। আশা করছি যে, হয়তো টাকার ব্যবস্থা করবে সরকার। কীভাবে করবে তা…।’
এখনও সরকার টাকার বিষয়ে পুরোপুরি না করেনি জানিয়ে এই কমিশনার বলেন, ‘আমরা এটুকু ইঙ্গিত পেয়েছিলাম যে, টাকার একটা ব্যবস্থা হবে। আর যদি না দেয়, সে জন্যেই সর্বশেষ একটা চিঠি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
সরকার কোনো বরাদ্দ না দিলে ইসি করবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তখন আমরা সিদ্ধান্ত নেব। আবার কমিশনে আসবে এটা, কমিশন তখন যে সিদ্ধান্ত নেবে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে। সেটা এখন বলার সুযোগ নাই।’
কতগুলো আসনে ইভিএমে ভোট করা যাবে, এমন প্রশ্নের জবাবে এ কমিশনার বলেন, ‘সেটাও এখন পর্যন্ত পর্যালোচনা করে দেখিনি। যেগুলো আমাদের হাতে আছে সেগুলোসহই তো এক লাখ ১০ হাজার মেরামতযোগ্য; আরও ৪০ হাজার মেরামত করলেও ব্যবহারযোগ্য হবে না। কাজেই আমরা এক লাখ ১০ হাজারকেই মেরামত করব। আর যদি আংশিক পাওয়া যায় বা কী হবে, সেটার ওপর নির্ভর করবে তখন।’
সীমানা পুনর্নির্ধারণ করতে এখন পর্যন্ত ১৮০টা আবেদন পাওয়া গেছে জানিয়ে এই কমিশনার বলেন, ‘আরও দুই-চারটা বিভিন্ন দপ্তরে থাকতে পারে। আবেদনগুলো আসনভিত্তিক বিন্যাস করা হবে। কোন আসনে কতটি আপত্তি পাওয়া গেছে, সেগুলো নিয়ে কাজ করবে সচিবালয়। আসনভিত্তিক ভাগ করলে বোঝা যাবে কোন আসনে কতটা আবেদন পড়েছে। এরপর কমিশনের প্লেস করবে। কমিশন তখন শুনানি করবে। কোনটার সীমানা পরিবর্তন করতে হবে, কোনটার লাগবে না তখন নির্ধারণ হবে।’
আগামী সপ্তাহে শুনানি হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। আগে আসনভিত্তিক বিন্যাস হোক, তারপর। বর্তমান সীমানাই বহাল রাখার আবেদন যারা করেছেন তাদের আবেদন তো আর আমলে নেয়ার দরকার নেই। যদি বিপক্ষে কেউ বলে থাকে তখন শুনানির দরকার আছে।
‘একই আসনে পক্ষে-বিপক্ষে এমন থাকতে পারে। কোনোটায় আবার নতুন কোনো আবেদন থাকতে পারে। এটা যখন বিন্যাস করা হবে, তখনই বোঝা যাবে, কে কী চেয়েছে। এটা করতে একটু সময় লাগবে।’
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধনের বিষয়ে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘একটু আগে আইন মন্ত্রণালয় থেকে সর্বশেষ অবস্থান জানতে পারলাম। এটা এখন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে গেছে। আইনমন্ত্রী দেশের বাইরে আছেন। তিনি ২৮ তারিখে ফিরবেন সম্ভবত। এরপর হয়তো মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে ওঠবে।
‘আমি তো মনে করি পরবর্তী অধিবেশনে এটি জাতীয় সংসদে ওঠতে পারে। আমরা যে রকম প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম মোর অর লেস ওই রকমই আছে। আমাদের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত পোষণ করেছে আইন মন্ত্রণালয়।’
ভোটের ফল গেজেট আকারে প্রকাশ হয়ে গেলেও ভোট বাতিলের ক্ষমতা ইসি পাচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আনিছুর রহমান বলেন, ‘দেখা যাক। সংসদে যাওয়ার আগে ক্যাবিনেট অনুমোদন করবে। আমরা যেটা দিয়েছি সেটা অনুমোদন হতেও পারে, নাও হতে পারে। আরও কয়েকটা স্টেপ বাকি আছে। কাজেই এই কথাগুলোর বলার মনে হয় এখন উপযোগী পরিবেশ না।’
আরও পড়ুন:২০২৬ সালের পর স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার কথা বিবেচনা করে নতুন দীর্ঘমেয়াদি রপ্তানি নীতি প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘২০২৬ সালের পর যখন আমরা এলডিসি থেকে একটি উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হব, আমরা কিছু সুযোগ পাব... আমাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে এবং দেশের আরও উন্নয়ন করতে আমাদের সেই সুযোগগুলোকে কাজে লাগাতে হবে।’
সরকারি বাসভবন গণভবনে রপ্তানি সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির ১১তম সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সোমবার প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। খবর ইউএনবির
তিনি উল্লেখ করেন, একটি উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পর লক্ষ্য হবে উন্নত দেশে পরিণত হওয়া।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উদ্ভূত বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য বাড়ানোর সুযোগ কাজে লাগাতেও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে থাকায় বাংলাদেশের নিজস্ব পণ্যের নতুন বাজার সৃষ্টির সুযোগ রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে অনেক দেশ বাংলাদেশ থেকে খাদ্য সামগ্রী আমদানিতে আগ্রহ দেখিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে আমরা খাদ্য সামগ্রী রপ্তানি করতে পারতাম। আমরা এর জন্য উদ্যোগ নিতে পারি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প স্থাপন এবং সেসব পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে বিপুল সুযোগ সৃষ্টি করা যেতে পারে। সরকার রপ্তানি খাতকে গুরুত্ব দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ভারত গ্রহণের পর, আমরা এক বছরের ভিত্তিতে নীতির পরিবর্তে দীর্ঘমেয়াদি রপ্তানি নীতি প্রণয়নের পদক্ষেপ নিয়েছি। অর্জনগুলো ধরে রাখতে হলে দীর্ঘমেয়াদি কৌশলের কোনো বিকল্প নেই।’
শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘...কিন্তু এর পর আমরা কী করব? এরই মধ্যে, আমরা একটি উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হচ্ছি। আমি মনে করি আগামী দিনে আমরা কী করব বা আমরা কীভাবে এগিয়ে যাব তা বিবেচনা করার এটাই সঠিক সময়।’
প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাপী বর্তমান অর্থনৈতিক অস্থিরতার কথা মাথায় রেখে অর্থনীতির জন্য পরবর্তী পদক্ষেপগুলো নির্ধারণের ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সারা বিশ্বে নতুন বাজার খুঁজতে হবে। আমাদের পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে হবে, আমাদের রপ্তানি ঝুড়িতে নতুন আইটেম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বেসরকারি খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে এবং প্রতিটি সেক্টরকে উদ্যোক্তাদের জন্য উন্মুক্ত করেছে কারণ সরকারের একার পক্ষে দেশের উন্নয়ন করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, রপ্তানি খাতের উন্নয়নের জন্য একটি কৌশল গ্রহণ করতে হবে এবং পণ্য চিহ্নিত করতে হবে। এ জন্য আমরা একটি সম্ভাব্য পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি-২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করতে।
প্রধানমন্ত্রী আইসিটি এবং ডিজিটাল ডিভাইস, আরএমজি, ফার্মাসিউটিক্যালস, হালকা ও মাঝারি ওজনের শিল্প, মোটর যান এবং ইলেকট্রনিক মোটর গাড়ির কথা উল্লেখ করে পণ্য বৈচিত্র্যের কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, সরকার দেশ-বিদেশের বিনিয়োগ নিয়ে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করছে। বাংলাদেশ বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে।
আরও পড়ুন:আগামী কয়েক দিন দেশের তাপমাত্রা বাড়তে পারে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, এমন অবস্থা চলতে পারে রোজার শুরুর সময়েও।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির সোমবার দুপুরে নিউজবাংলাকে জানান, গত কয়েক দিন বৃষ্টিপাতের কারণে তাপমাত্রা কমে এসেছিল। সেটি আগামী কয়েক দিন বাড়তে পারে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৪ মার্চ থেকে রোজা শুরু হবে। সে সময়ে তাপমাত্রা বাড়তে পারে কি না জানতে চাইলে এ আবহাওয়াবিদ বলেন, সে সময়ে তাপমাত্রা এখনকার তুলনায় সামান্য বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে রয়েছে।
দিনভর আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে বলা হয়, ঢাকা, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গা এবং রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল এবং চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়া হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে পূর্বাভাসে জানানো হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থা নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে এবং তাপমাত্রা বাড়তে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, রোববার দেশের সর্বোচ্চ ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায়। সোমবার দেশের সর্বনিম্ন ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় রাজশাহীতে।
আজ ঢাকায় সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে সূর্যাস্ত হবে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, মঙ্গলবার ঢাকায় সূর্যোদয় হবে ভোর ৬টা ৩ মিনিটে।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মেছিলেন বলেই পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়েছে। তার জন্মই হয়েছিল এই বাঙালি জাতিকে একটি আত্মপরিচয়, স্বতন্ত্র জাতিসত্তা ও স্বতন্ত্র রাষ্ট্র দেয়ার জন্য।’
বঙ্গবন্ধুর ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রোববার এই আলোচনার আয়োজন করা হয়।
বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা বলেন, ‘মাতৃভাষার আন্দোলন দিয়ে যাত্রা শুরু করেন বঙ্গবন্ধু। তারই হাত ধরে আসে দেশের স্বাধীনতা। দেশ গঠনের জন্য তিনি অল্প কিছুদিন সময় পেয়েছিলেন। তার মধ্যেই একটি শক্তিশালী রাষ্ট্রের ভিত রচনা করেছিলেন।
‘একটি উন্নত-সমৃদ্ধ রাষ্ট্রের যা যা প্রয়োজন তার সবই গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু পাকিস্তানের দোসরদের সঙ্গে এদেশীয় কিছু বেঈমান মিলে তাকে হত্যা করে দেশের স্বাধীনতার চেতনা ধ্বংস করে। থমকে যায় সামনে এগিয়ে যাওয়া। পেছনের দিকে হাঁটতে থাকে দেশ। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সেই চেতনা ফিরিয়ে আনে।’
স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া দল আওয়ামী লীগকেও বার বার ধ্বংসের অপচেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ করেন দলটির সভাপতি। তিনি বলেন, হাজার অত্যাচার আর নির্যাতন করেও আওয়ামী লীগকে কেউ দমাতে পারেনি। আওয়ামী লীগ একটি আদর্শ নিয়ে এগিয়ে গেছে, বঙ্গবন্ধুর চিন্তা-চেতনা নিয়ে এগিয়ে গেছে। যে দল মাটি ও মানুষ থেকে গড়ে ওঠে তার শেকড় উপড়ে ফেলা যায় না।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসেই এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে শুরু করেন। ইতিহাস শুধু বিকৃত করা নয়, স্বাধীনতার আদর্শকে বিসর্জন দেন তিনি। বাংলাদেশের মানুষ আবার সেই অন্ধকারে হারিয়ে যেতে বসে। ১৯৭৫ থেকে ৯৬ সাল পর্যন্ত, আবার ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত মানুষের ভাগ্য নিয়ে শুধু ছিনিমিনি খেলা হয়েছে।’
বিএনপির কোনো শেকড় নেই মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এরা (বিএনপি) অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর হাতে তৈরি। জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়িত্ববোধ নেই। জনগণের প্রতি তাদের কোনো আস্থাও নেই। তারা যখনই ক্ষমতায় এসেছে লুটপাতের রাজত্ব কায়েম করেছে।
‘জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ এবং ৩৮ এর আংশিক সংশোধন করে মার্শাল অর্ডিন্যান্স দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেন। যারা যুদ্ধাপরাধী, যাদের বিচার শুরু হয়েছিল, তাদেরকেও জিয়াউর রহমান মুক্তি দিয়েছিলেন। এরপর তাদের দিয়ে রাজনৈতিক দল গঠন করান। এমনকি ৭ খুনের আসামিকেও রাজনীতি করার সুযোগ দেয়া হয়।’
আওয়ামী লীগ মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়নে কাজ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা গ্রামে শহরের সব ধরনের সুবিধা নিশ্চিতকরণে কাজ করছি। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। শতভাগ ছেলেমেয়ে স্কুলে যাচ্ছে। কর্মসংস্থান বেড়েছে।
‘বিএনপি অন্ধ বলে উন্নয়ন দেখে না। তারা মাইক লাগিয়ে সারাদিন ভাঙা রেকর্ডের মতো মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের করে দেয়া ডিজিটাল দেশের সুবিধা নিয়ে বিএনপি সারাদিন বলে বেড়ায় যে সরকার কোনো উন্নয়ন করেনি।’
আসন্ন রমজান মাসে যাতে মানুষের কষ্ট না হয় সে জন্য ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘রমজানে সব ধরনের পণ্যের যথেষ্ট মজুত রয়েছে। এসবের মধ্যে কেউ যাতে মজুতদারি, কালোবাজারি করে জনগণের ভোগান্তি না বাড়ায় সে জন্য সবাইকে নজর রাখতে হবে।’
আরও পড়ুন:দেশের গবেষণা ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করল অ্যাডভান্সড রিসার্চ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ-এআরএফবি। ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই গবেষণা সংস্থার উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
রাজধানীর আর্মি গলফ ক্লাবে এই অনুষ্ঠানে দেশের বিশিষ্ট গবেষক, চিকিৎসক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী ও এআরএফবির আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে কেক কাটা হয়। জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানে নানা বয়সী শিশুরাও অংশ নেয়।
পরে আলোচনা সভায় বক্তারা বঙ্গবন্ধুর জীবন ও দর্শন নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে এই মহান নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। পরে এআরএফবির ১৯ সদস্যের নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এআরএফবি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) মো. ফসিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত চিকিৎসক এআরএফবির সহ-সভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. নুরুন নাহার ফাতেমা বেগম, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের উপাচার্য প্রফেসর ড. জহিরুল হক, এআরএফবির সাধারণ সম্পাদক শিক্ষক-গবেষক ড. জহির বিশ্বাস, নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. জালাল উদ্দিন ও বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি ওয়াই এম বেলালুর রহমান।
আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. লতিফুল বারী, দৈনিক ইত্তেফাকের সিনিয়র সাংবাদিক মোহাম্মদ নাদিম, কারিতাস বাংলাদেশের প্রশিক্ষণ ও গবেষণা বিভাগের প্রধান ড. থিওফিল নকরেক, এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমেটেডের সাবেক ডিজিএম সেলিনা বানু, চিত্রশিল্পী দেলোয়ার হোসেন, মেটাডোর কোম্পানির কো. সেক্রেটারি ইসমাইল হোসেন, সংগীত গবেষক ড. এবিএম রেজাউল রিপন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা পদক পাওয়ায় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. নুরুন নাহার ফাতেমা বেগম, পদোন্নতিতে অতিরিক্ত আইজিপি ওয়াই এম বেলালুর রহমান এবং আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাওয়ায় আনিকা সুবাহ্ আহমেদকে সন্মাননা ক্রেস্ট দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য