মানিকগঞ্জের সিংগাইরে মিছিল থেকে ককটেল বিস্ফোরণ ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় আগুন দেয়ার অভিযোগে বিএনপির এক নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।
সিংগাইর পৌরসভা এলাকা থেকে শনিবার রাতে আটক করা হয় পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল গফুরকে।
সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম মোল্যা জানান, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশকে সামনে রেখে শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সিংগাইর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মিছিল বের করেন পৌর বিএনপির নেতা-কর্মীরা। ওই মিছিল থেকে ককটেল বিস্ফোরণ করে দাঁড়িয়ে থাকা একটি অটোরিকশায় আগুন ধরিয়ে দেন তারা। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।
ওসি আরও জানান, ককটেল বিস্ফোরণ ও অটোরিকশায় আগুন দেয়ার ঘটনায় বিএনপির একজনকে আটক করা হয়েছে। জড়িত অন্যদের আটকের চেষ্টা চলছে।
ওসির ওই বক্তব্য নাকচ করে সিংগাইর পৌর বিএনপির সভাপতি খোরশেদ আলম ভূঁইয়া জয় বলেন, শনিবার রাতে বিএনপির কোনো কর্মসূচি ছিল না। আর অটোরিকশায় আগুন দেয়ার ঘটনা পুলিশের সাজানো।
তার ভাষ্য, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশকে সামনে রেখে দলের নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করতে পারে পুলিশ। এটা পুলিশের সাজানো নাটক হতে পারে।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় চৌদ্দকাউনিয়া গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জেরে বাউল গানের আসরে প্রতিপক্ষের হামলায় একজনের হাতের কব্জি বিচ্ছিন্নসহ চারজন আহত হওয়ায় হয়েছেন।
আহত চারজনকেই প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে, যাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আহত চারজন হলেন চৌদ্দকাউনিয়া গ্রামের নুরুজ্জামান (৬৫), মুক্তার হোসেন (৩৭), শাকিল (২৩) ও হামিম (১৪)।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সীমানা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গজারিয়া উপজেলা বাউশিয়া ইউনিয়নের চৌদ্দকাউনিয়া গ্রামের ফজলুল করিমের সঙ্গে প্রতিবেশী বাসেত মিয়ার বিরোধ চলছিল। এসব বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ গত রজমান মাসে ফজলুল করিমের ভাতিজা সজিব চায়নিজ কুড়াল দিয়ে বাসেত মিয়াকে কুপিয়ে জখম করেন।
আহত বাসেতকে হাসপাতালে নিয়ে যান আরেক প্রতিবেশী নুরুজ্জামান। এ ঘটনায় নুরুজ্জামানের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল ফজলুল করিম ও তার স্বজনরা।
ওই ঘটনার জের ধরে শনিবার রাত ৯টার দিকে বাউল গানের আসরে প্রতিপক্ষের সজিব, জাহাঙ্গীর, ফজলুল করিম, নান্নু, বাবু, রবিউল আউয়াল, হাসানসহ আরও কয়েকজন বগি দা, রামদা, ছুরি নিয়ে হামলা করে নুরুজ্জামানের ওপর। এ সময় তারা তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে। তাকে বাঁচাতে তার ছোট ভাই মুক্তার এবং পরিবারের লোকজন এগিয়ে এলে তাদেরও কুপিয়ে জখম করা হয়।
হামলাকারীরা নুরুজ্জামানের এক হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। ওই সময় আহত লোকজনের চিৎকারে আশেপাশে লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান।
হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হওয়া নুরুজ্জামান বলেন, ‘আমি ঝগড়ার মধ্যে ছিলাম না। আর এ ব্যাপারে আমি কিছু জানিও না। সন্ত্রাসীরা শুধু শুধু আমার ওপর হামলা চালিয়েছে।
‘আমি শুধু একজন আহত মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। এটা ছিল আমার অপরাধ। সন্ত্রাসী সজীব বগি দা দিয়ে কোপ দিয়ে আমার হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে।’
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, তাদের হাসপাতালে আগত তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। আহত লোকজনের মধ্যে নুরুজ্জামান ও মুক্তার হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের মধ্যে নুরুজ্জামানের এক হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে।
অন্যদিকে মুক্তার হোসেনের গায়ের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। আহত অপরজন হামিমকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘খবর পাওয়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে হামলাকারীরা সবাই পলাতক।
‘এখনও পর্যন্ত থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরও পড়ুন:শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বন্যার পানির স্রোতে নিখোঁজ হওয়া দুই ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ নিয়ে জেলায় বন্যায় সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার নন্নী ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর কুতুবাকুড়া গ্রামের ফসলের মাঠ থেকে শনিবার সহোদর দুই ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছানোয়ার হোসেন মরদেহ উদ্ধারের তথ্য নিশ্চিত করেন।
সর্বশেষ প্রাণ হারানো দুজন হলেন হাতেম আলী (৩০) ও তার ভাই আলমগীর হোসেন (১৮)। তারা অভয়পুর গ্রামের প্রয়াত বাছির উদ্দিনের ছেলে।
এর আগে নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতীতে বন্যার পানিতে ডুবে মৃত্যু হয় ইদ্রিস আলী, খলিলুর রহমান ও বাঘবেড় বালুরচর গ্রামের ওমিজা বেগমসহ পাঁচজন।
প্রাণ হারানো লোকজনের স্বজনরা জানান, শুক্রবার চেল্লাখালী নদীর পাহাড়ি ঢলের স্রোতের তোড়ে নিখোঁজ হন সহোদর দুই ভাই। এরপর থেকে তাদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। কুতুবাকুড়া গ্রামের দুইজন কৃষক শনিবার বিকেলে ধানক্ষেতে তাদের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে স্বজনরা গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন।
নালিতাবাড়ী থানার ওসি ছানোয়ার হোসেন জানান, পাহাড়ি ঢলের স্রোতের তোড়ে নিখোঁজ হওয়া দুই ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
টানা ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সীমান্তবর্তী জেলা শেরপুরের সব নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাঁধ ভেঙে এবং বাঁধ উপচে প্লাবিত হয় জেলার নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী ১৬টি গ্রাম।
নতুন করে শনিবার রাতে নকলা ও সদর উপজেলার সাত ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করায় পানিবন্দি অবস্থায় দুর্ভোগে পড়েছেন দুই লাখ মানুষ।
আরও পড়ুন:রাজধানী ঢাকায় দখল হয়ে যাওয়া খালগুলোর মধ্যে মাত্র ১৫টি খনন করলেই জলাবদ্ধতা সমস্যার প্রায় ৮০ শতাংশ সমাধান হতে পারে বলে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার (আরডিআরসি) সম্প্রতি রাজধানীর নয়টি জলাবদ্ধতাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে চলমান সমস্যার সমাধান তুলে ধরেছে।
‘ঢাকা শহরে জলাবদ্ধতা ও আমাদের দখলকৃত খাল’ শীর্ষক গবেষণাটি পরিচালনা করা হয় চলতি বছরের জুলাই মাসে।
আরডিআরসি যেসব খাল খননের সুপারিশ করেছে সেগুলো হলো- রূপনগর মেইন খাল, বাউনিয়া খাল, বাইশটেকি খাল, সাংবাদিক কলোনি খাল, কল্যাণপুর খাল, ইব্রাহিমপুর খাল, পান্থপথ বক্স কালভার্ট খাল, রায়েরবাজার খাল, জিরানী খাল, রামপুরা খালের দক্ষিণ প্রান্ত, ধোলাই খাল, কদমতলী খাল ও মান্ডা খাল।
গবেষণায় রাজধানীর জলাবদ্ধতার ‘হট স্পট’ হিসেবে নয়টি স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলো হলো- পল্লবী শিয়ালবাড়ি, রূপনগর ও ইস্টার্ন হাউজিং; কালশী ও মিরপুর-১১; টোলারবাগ, আহমেদনগর ও পাইকপাড়া; শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া ও কাফরুল; কলাবাগান, ধানমন্ডি ২৭, কাঁঠালবাগান, গ্রিনরোড ও হাতিরপুল; হাজারীবাগ, নবাবগঞ্জ, রায়েরবাজার, পশ্চিম ধানমন্ডি ও ঢাকা নিউমার্কেট; রামপুরা ও বাড্ডা; সূত্রাপুর, ওয়ারী, নবাবপুর, কাজী আলাউদ্দিন রোড, সিদ্দিক বাজার, নারিন্দা ও তাঁতীবাজার এবং জুরাইন, সিদ্ধিরগঞ্জ, জাকের মঞ্জিল, শ্যামপুর, পূর্ব জুরাইন, সাদ্দাম মার্কেট ও রায়েরবাগ।
আরডিআরসি’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘এক সময় ঢাকা থেকে বৃষ্টির পানি সরতে পারে এমন ৭৭টি খাল ও লেক ছিল। সেগুলোর বেশিরভাগই আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে দখল করা হয়েছে। এর মধ্য থেকে চিহ্নিত ১৫টি খাল খনন করতে পারলে নগরীর জলাবদ্ধতা সমস্যার ৮০ শতাংশ সমাধান হয়ে যাবে।’
এসব জলাশয় পরিষ্কার করতে হলে স্থানীয় জনগণ ও কমিউনিটির সম্পৃক্ততা এবং দৃঢ় রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
খালগুলো পুনরুদ্ধারে মোহাম্মদ এজাজ একটি মডেল অনুসরণের পরামর্শ দেন। সিটি করপোরেশন-সংশ্লিষ্ট খাল এলাকা এবং তীরগুলো পুনরুদ্ধার ও স্থাপত্যের পরিকল্পনা করার জন্য স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনার পর উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
তিনি জানান, মডেলটিতে বলা হয়েছে জনগণকে জলাশয়ের নিজ নিজ অংশ ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণের নিশ্চয়তা দিয়ে জলাশয় তৈরিতে উৎসাহিত করতে হবে।
যেসব এলাকায় বেশি জলাবদ্ধতা দেখা যায়, খননের জন্য চিহ্নিত খালগুলো ওইসব এলাকার সঙ্গে যুক্ত কি না সেটি খেয়াল রাখা হয়েছে।
১৫টি খালের মধ্যে পল্লবী শিয়ালবাড়ী, রূপনগর ও ইস্টার্ন হাউজিংয়ের জলাবদ্ধতা নিরসনে রূপনগর মেইন খাল খনন করতে হবে। বাউনিয়া খাল, বাইশটেকি খাল ও সাংবাদিক কলোনি খাল খনন করলে কালশী ও মিরপুর-১১ নম্বরের জলাবদ্ধতা নিরসন হবে।
অন্যদিকে টোলারবাগ, আহমেদ নগর ও পাইকপাড়ার জন্য কল্যাণপুর খাল; শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া ও কাফরুলের জন্য ইব্রাহিমপুর খাল ও কল্যাণপুর খাল এবং কলাবাগান, ধানমন্ডি ২৭, কাঁঠালবাগান, গ্রিনরোড ও হাতিরপুলের জন্য পান্থপথ বক্স কালভার্ট খাল খনন করতে হবে।
পাশাপাশি রামপুরা ও বাড্ডার জন্য রামপুরা খালের দক্ষিণ প্রান্ত; হাজারীবাগ, নবাবগঞ্জ, রায়েরবাজার, পশ্চিম ধানমন্ডি ও ঢাকা নিউমার্কেটের জন্য রায়েরবাজার খাল ও জিরানী খালের শেষ অংশ; সূত্রাপুর, ওয়ারী, নবাবপুর, কাজী আলাউদ্দিন রোড, সিদ্দিক বাজার, নারিন্দা ও তাঁতীবাজারের জন্য ধোলাই খাল এবং জুরাইন, সিদ্ধিরগঞ্জ, জাকের মঞ্জিল, শ্যামপুর, পূর্ব জুরাইন, সাদ্দাম মার্কেট ও রায়েরবাগের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য কদমতলী খাল ও মান্ডা খাল খনন করতে হবে।
স্বাধীনতার পর ঢাকায় ৫৭টি খাল থাকলেও বর্তমানে এই সংখ্যা নেমে এসেছে ২৬টিতে, যার অধিকাংশের অবস্থাই বেশ নাজুক। এ কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় রাজধানী। চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় নগরবাসীকে।
গণহত্যার সঙ্গে জড়িত কিংবা মামলার পলাতক আসামি আওয়ামী লীগ নেতা ও তাদের দোসরদের বিষয়ে তথ্য চেয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, মামলার অনুসন্ধানে যে দোষী সাব্যস্ত হবে তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তথ্য পাওয়া মাত্র ত্বরিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শনিবার রাজধানীর উত্তরায় এপিবিএন সদর দপ্তরে শহীদ মীর মুগ্ধ স্মরণে সভা, মিলাদ মাহফিল, মীর মুগ্ধ ভবন ও এপিবিএন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রবেশ তোরণ উদ্বোধন শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, বিগত সরকারের মন্ত্রী-এমপি, আওয়ামী লীগ নেতা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা অনেকে আগেই পালিয়ে গেছেন। এরপর আবার ৫, ৬ ও ৭ আগস্ট অনেকে পালিয়ে গেছেন। ওই তিনদিন সবকিছু ঢিলেঢালা ছিলো। এখন বর্ডার এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সাবেক প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে অনেক মামলা হয়েছে। তারা কোথায় আছেন এবং কেন গ্রেপ্তার হচ্ছেন না জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা (সাংবাদিকরা) আমাদের তথ্য দিন। আমাদের দায়িত্ব তাদের গ্রেপ্তার করা। আপনাদের দায়িত্ব আমাদের তথ্য দেয়া।
‘আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। আপনারাও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করুন। পলাতকদের তথ্য পেলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। তথ্য প্রদানের জন্য প্রয়োজনে খরচের ব্যয়-ভাড়া বহন করা হবে।’
রাজধানীসহ সারাদেশে যেসব মামলা হচ্ছে তাতে সংশ্লিষ্টতা নেই এমন অনেককেই আসামি করা হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন কোনো মামলা পুলিশ বাদী হয়ে করছে না। এই মামলাগুলো করছে সাধারণ জনগণ। তারা (জনগণ) ১০ জনের নাম দিচ্ছে। হয়ে যাচ্ছে ১০০ জনের নামে মামলা। অনুসন্ধানে, যে দোষী সাব্যস্ত হবে তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছে তাদের প্রত্যেকের চিকিৎসা সরকার করবে। প্রয়োজনে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থাও করা হবে।
আরও পড়ুন:সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নির্ভয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি বলেছেন, এই উৎসবে নিরাপত্তা বিধানে সেনাবাহিনী মাঠে আছে। সবার নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
শনিবার দুর্গাপূজা উদযাপনে গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শনকালে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে এসব কথা বলেন সেনাবাহিনী প্রধান। তিনি সেখানে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী সবাইকে শুভেচ্ছা জানান।
সেনাপ্রধান এ সময় উপস্থিত মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি এবং বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এর অংশ হিসেবে জেলায় জেলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন থেকে পূজামণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে সদা তৎপর রয়েছে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, হিন্দু ধর্মাবলম্বী প্রত্যেক বাংলাদেশি অত্যন্ত উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে উৎসবমুখর পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন করবেন। পাশাপাশি তিনি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনে অন্য ধর্মাবলম্বীদেরও সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রম শুরুর আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। শনিবার বিএনপির সঙ্গে সংলাপের পর জামায়াতের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
জামায়াতে ইসলামীর ছয় প্রতিনিধিসহ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপের পর দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে কিছু মৌলিক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে কথা হয়েছে।
‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আগামী ৯ অক্টোবর দলীয়ভাবে রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রকাশ করবে।’
জামায়াতের আমির বলেন, ‘পর পর তিনটি জাতীয় নির্বাচনে জাতি বঞ্চিত হয়েছে। এই সরকার দেশ শাসনের জন্য আসেনি। তারা এসেছে দেশ শাসনের সুষ্ঠু পথ বিনির্মাণের জন্য। তাদের কাজ হচ্ছে, গত তিন নির্বাচনে জাতি যা থেকে বঞ্চিত হয়েছে, একটা গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেয়ার পরিবেশ তৈরি করা। কী কী মৌলিক বিষয়ে তারা সংস্কার করবে, আমরা সে বিষয়ে কথা বলেছি।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন আয়োজনের জন্য কিছু মৌলিক বিষয়ের সংস্কার করতেই হবে। কী কী বিষয়ে তারা সংস্কার করবে তা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। সংস্কারের জন্য সরকারকে আমরা যৌক্তিক সময় দিতে চাই। আমরা আশা করছি এই যৌক্তিক সময়টা নাতিদীর্ঘ হবে না।’
গণমাধ্যমকে উদ্দেশ করে ডা. শফিকুর বলেন, ‘আগামী ৯ অক্টোবর আপনাদের মাধ্যমে আমাদের প্রস্তাবগুলো জাতির সামনে উন্মুক্ত করব। আমরা আমাদের চিন্তা জাতির সামনে তুলে ধরব- কী কী সংস্কার এই মুহূর্তে প্রয়োজন, কী কী সংস্কার পরবর্তী পর্যায়ে আমাদের লাগবে।’
জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানের নেত্বত্বে প্রতিনিধি দলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন দলটির নায়েবে আমির আবু তাহের মুহাম্মদ আবদুল্লাহ, এম এম শামসুল ইসলাম, মজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
অপরদিকে সরকারের পক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন উপদেষ্টা হাসান আরিফ, আদিলুর রহমান খান ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম।
আরও পড়ুন:পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্য সচিব ও জামালপুর-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে শনিবার সন্ধ্যায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডিএমপি ডিবি প্রধান বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর কলাবাগান এলাকার একটি বাসায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় আবুল কালাম আজাদকে শনিবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও মামলা রয়েছে। তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে। রিমান্ড চেয়ে আগামীকাল রোববার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
মো. আবুল কালাম আজাদ ২০১৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব হিসেবে নিয়োগ পান। এর আগে তিনি একই কার্যালয়ে সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তারও আগে তিনি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ও বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
আবুল কালাম আজাদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়কের দায়িত্বও পালন করেন।
সবশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জামালপুর-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন সাবেক আমলা আবুল কালাম আজদ। গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর তিনি এই পদ হারান।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য