আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হয়েছেন তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা সিমিন হোসেন রিমি। আর মহিলা বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন জাহানারা বেগম।
শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের প্রথমে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের নতুন সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে শবনম জাহান শিলার নাম ঘোষণা করেন।
এরপর তিনি আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকির স্থলে (মহিলাবিষয়ক সম্পাদক) জাহানারা বেগমের নাম ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে সিমিন হোসেন রিমির নাম ঘোষণা দেন।
এ ছাড়া মহিলা আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন সাহেদা খানম দিপ্তী। সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন হাসিনা বারী। দক্ষিণের সভাপতি সাবেরা বেগম স্বপদে বহাল রয়েছেন। নতুন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন পারুল আক্তার।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলন উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকা ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুনে ছেয়ে যায়। শাহবাগ থেকে মৎস্য ভবন, অন্যদিকে শাহবাগ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি হয়ে শাপলা চত্বর পর্যন্ত সাজানো হয় নানাভাবে।
ঝালকাঠি-২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও ১৪ দলের মুখপাত্র আমির হোসেন আমুকে তলব করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে তাকে তলব করা হয়েছে। আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে তাকে সশরীরে উপস্থিত হয়ে এ বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
শনিবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে গত ৩০ নভেম্বর সহস্রাধিক নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ঝালকাঠি-২ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেন আমু। ওইদিন বেলা ১১টার দিকে নেতা-কর্মীদের নিয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি। জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা ফারহা গুল নিঝুম ওই মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেন। একই দিন মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর আওয়ামী লীগের এ প্রবীণ নেতা দেশবাসী ও প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।
এদিকে নির্ধারিত সময়ের আগেই নেতা-কর্মী নিয়ে ভোটের প্রচারণার অভিযোগে ঢাকা-৮ আসনের নৌকার প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমকে শোকজ করেছে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি।
১০ ডিসেম্বর নির্ধারিত স্থানে সশরীরে বা প্রতিনিধির মাধ্যমে এর লিখিত ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
শনিবার নির্বাচনি এলাকা-১৮১ এর নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসরাত জাহান নাসরিন এই তলব আদেশ দিয়েছেন।
শোকজের চিঠিতে জানানো হয়, বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, আপনি গত ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। এ সময় আপনি দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এসব এলাকায় যান এবং স্থানীয় নির্বাচনি কার্যালয় পরিদর্শন করেন। তখন বিপুল জনসমাগম ঘটে এবং আপনি নৌকার পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণা চালান; যা নির্বাচনপূর্ব অনিয়ম হিসেবে গণ্য। ওই সংবাদ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা এবং নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত হয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, এই বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর বিষয়টি অত্র কমিটির গোচরীভূত হয় এবং সংবাদের তথ্যসমূহ বিশ্লেষণপূর্বক অত্র অনুসন্ধান কমিটি নির্বাচনপূর্ব অনিয়মের সত্যতা পান। ওই মতবিনিময় সভাকে কেন্দ্র করে নির্বাচনি এলাকা-১৮১ এর বিভিন্ন স্থানে নৌকা প্রতীকের অসংখ্য পোস্টার ও ব্যানার লাগানো হয়েছে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:বিএনপির নির্বাচন বন্ধের আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার পরও বিএনপি ক্ষান্ত হয়নি। এখন তারা সন্ত্রাসী পথ বেছে নিয়েছে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে শনিবার এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যত বাধা আসুক, যত ষড়যন্ত্রই হোক নির্বাচন সম্পন্ন করার বিষয়ে পাহাড়ের মতো অনড় আওয়ামী লীগ। ভোটের পরেও চাপ আসতে পারে, এসব মোকবিলা করার মনোবল ও রাজনৈতিক শক্তি দলের রয়েছে।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বার বার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন, আমাদের নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ।
‘সুতরাং নিষেধাজ্ঞা আরোপের কোনো যৌক্তিক কারণ আমরা দেখছি না। বরং যারা সন্ত্রাসের মাধ্যমে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার পথ বেছে নিয়েছেন, তাদের ওপরই নিষেধাজ্ঞা আসার কথা। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের যৌক্তিক কারণ নেই।’
কাদের বলেন, ‘যারা মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে, তারা ১৫ ও ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ড এবং জোট সরকারের নিপীড়নের কথা বলেন না।
‘মানবাধিকার দিবসের কর্মসূচির নামে নাশকতার ছক কষছে বিএনপি। কর্মসূচির নামে যাতে তারা নাশকতা করতে না পারে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে, জেলের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সারির চারজন সংগঠককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
‘মানবাধিকার নিয়ে কথা বলেন অনেকেই, কিন্তু ২১ আগস্টের সমাবেশে শেখ হাসিনাকে প্রাইম টার্গেট করে যে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। আইভি রহমানসহ ২৩ জনকে হত্যা করা হয়েছে। মানবাধিকার নিয়ে যারা কথা বলেন, তারা এ নিয়ে কথা বলেন না।’
আরও পড়ুন:মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের দুইবারের সংসদ সদস্য (এমপি) ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে পাননি মকবুল, তবে সেবার তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি।
২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে মকবুল আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে করে পরাজিত হয়েছিলেন। তিনি ১৯৯৬ ও ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে হন বিজয়ী।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন মকবুল, তবে আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে তার ডাকে সাড়া না দেয়ায় এবারও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। যাচাই-বাছাইয়েও পেয়েছেন মনোনয়নপত্রের বৈধতা।
আগামী নির্বাচন উপলক্ষে দেয়া হলফনামা অনুযায়ী, এ প্রার্থীর আয়ের কোনো উৎস নেই। তার মালিকানাধীন কোনো বাড়ি, গাড়ি, এমনকি কৃষিজমিও নেই। স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি আছে নামমাত্র।
নির্বাচনের হলফনামায় তার বার্ষিক আয়, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের যে বিবরণী পাওয়া গেছে, তা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্যই মিলেছে।
হলফনামা অনুযায়ী, যৌথ মালিকানার তিন কাঠা জমি ছাড়া মকবুল হোসেনের আর কোনো স্থাবর সম্পদ নেই।
২০১৩ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দেয়া হলফনামায় মকবুল এবং তার স্ত্রীর কোনো স্থাবর সম্পত্তি ছিল না। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ব্যবসা থেকে তার বার্ষিক আয় ছিল দুই লাখ ২১ হাজার টাকা। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে শূন্যের কোঠায়।
হলফনামা অনুযায়ী, বর্তমানে মকবুল হোসেনের বার্ষিক কোনো আয় নেই। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তার ও তার স্ত্রীর জমাকৃত কোনো টাকা কিংবা বন্ড ও সঞ্চয়পত্র নেই।
বতর্মানে মকবুল ও স্ত্রীর নগদ টাকা রয়েছে যথাক্রমে তিন লাখ ও ৫০ হাজার। তার গৃহস্থালি সামগ্রীর মূল্য ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
মকবুলের স্বর্ণ রয়েছে ৪০ ভরি। তার স্ত্রীর স্বর্ণ রয়েছে ১০ ভরি।
২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে মকবুলের বার্ষিক আয় ছিল দুই লাখ ২১ হাজার টাকা। আয়ের খাত ছিল ব্যবসা। নগদ ছিল ৯ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। সে সময় তার ৪০ ভরি স্বর্ণ ছিল এবং গৃহস্থালি সামগ্রী ছিল ৫০ হাজার টাকার।
ওই বছর তার স্ত্রীর নামে কোনো স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ছিল না। ছিল না কোনো স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা।
হলফনামা অনুযায়ী, মকবুল হোসেনের বর্তমান স্থাবর সম্পদ বলতে যৌথ মালিকানার তিন কাঠা জমি এবং যৌথ মালিকানার পাকা দোতলা বাড়ি ছাড়া আর কিছু নেই। অবশ্য দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় তার কোনো স্থাবর সম্পদ ছিল না।
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
দুইবারের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেনের এমন হলফনামা দেয়ার কথা শুনে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মীই বিরূপ মন্তব্য করেছেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মী সালাউদ্দিন বলেন, ‘এখন গণমাধ্যমের মাধ্যমে হলফনামা সমন্ধে জানতে পারছি। আগে এগুলো নিয়ে কারোর মাথাব্যথা ছিল না। এখন বুঝতে পারছি সংসদ সদস্য নির্বাচনে হলফনামায় তথ্য দেয়ার ক্ষেত্রে নেতারা যত মিথ্যা তথ্য দিয়ে থাকেন।
‘এটা আসলে ঠিক না। যারা তথ্য চুরি করে হলফনামা দিতে পারে, তারা জনগণকে আর কীইবা দিতে পারে?’
আওয়ামী লীগের কর্মী বিপুল হোসেন বলেন, ‘সাবেক এমপি মকবুল হোসেনের আয়ের উৎস নেই, এটা কেমন কথা! তাহলে উনি চলেন কীভাবে?
‘আর তার কোনো ব্যাংকে টাকা নেই, এটা ঠিক। টাকা যদি ছেলেদের অ্যাকাউন্টে থাকে, তাহলে তার অ্যাকাউন্টে থাকবে কীভাবে?’
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুরো দেশ উন্নয়নের আলোয় আলোকিত, তাই এখন কোনো অভাব নেই বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
শুক্রবার বিকেলে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগ নেতাদের আয়োজনে বিজয়ের মাস উপলক্ষে আয়োজিত যুবসমাবেশ ও আনন্দর্যালি পরবর্তী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মন্ত্রী বলেন, আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচনে নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে। নৌকা স্বাধীনতার প্রতীক, নৌকা উন্নয়নের প্রতীক। গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট, স্কুল-কলেজ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, নিরাপদ পানির জন্য টিউবওয়েল, ল্যাট্রিন ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশে কোনো কিছুর সংকট নেই। আগামী দিনেও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করতে হবে। তাই নিজেদের স্বার্থে এই সরকারের সঙ্গেই থাকতে হবে।
এম এ মান্নান বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুরো দেশ এখন উন্নয়নের আলোয় আলোকিত। দেশে এখন কোনো কিছুর অভাব নেই। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গ্রামের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীসহ সারা দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের এই অভাবনীয় উন্নয়ন দেখে মানুষ খুশি। আগে সব জায়গায় বিদ্যুৎ ছিল না, এখন ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, বিদ্যুতের আলোয় সারা বাংলাদেশ হাসছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমি আপনাদের সন্তান। আমার কোনো চাহিদা নেই। আপনাদের সেবা করাই আমার কাজ। আমি শেখ হাসিনার সাথে কাজ করে বলছি, তিনি হাওরাঞ্চলের মানুষকে ভালোবাসেন। তিনি চান হাওরাঞ্চলের উন্নয়ন হোক৷ তাই হাওরাঞ্চলের মানুষের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করতে আবার শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে হবে।
যুব সমাবেশে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সিতাংশু শেখর ধর সিতুর সভাপতিত্বে ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম শিপনের পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পরিকল্পনামন্ত্রীর পুত্র সাদাত মান্নান অভি, সাধারণ সম্পাদক হাসনাত হোসেন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক নূর হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান দুলন রানী তালুকদার, জয়কলস ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত সুজন প্রমুখ৷
এরআগে যুব সমাবেশ উপলক্ষে একটি আনন্দ র্যালি শান্তিগঞ্জ বাজার থেকে শুরু হয়ে স্লোগানে স্লোগানে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে আলোচনা সভায় এসে মিলিত হয়৷
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আগামী রোববার ঢাকাসহ সারা দেশের জেলা সদরে দলটির গুম-খুন হওয়া নেতা-কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মানবন্ধন করবে বিএনপি।
শুক্রবার বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি আগামী ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে।’
রিজভী বলেন, ‘ঢাকায় মানববন্ধন হবে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে, ওইদিন সকাল ১১টায়। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর বিএনপি সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। সেইসঙ্গে ঢাকার বাইরে অন্যান্য জেলাসমূহে মানববন্ধনে সফল করার জন্যও প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সেদিন গুম ও খুনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সমন্বয়ে এ মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে।’
উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিএনপি ও এর সমমনা দলগুলো দফায় দফায় হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে আসছিল। দশম দফায় তারা অবরোধ ডাকার পর আগামী সপ্তাহে প্রথম ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। রোববার হরতাল-অবরোধ না দিয়ে শুধু মানববন্ধন করবে তারা।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘মানবাধিকার একটি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। মানবাধিকারের কথা বলে কোনো কোনো দেশকে দমন করে রাখার চেষ্টা করা হয়। দেশে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, অথচ বিবৃতিজীবীরা হারিয়ে গেছে। বিশ্ব মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে দেশে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চক্রান্ত হচ্ছে।’
শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের আয়োজনে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিবৃতিদাতাদের সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, ‘কোনো কোনো সন্ত্রাসীর মানবাধিকার নিয়েও কেউ কেউ সোচ্চার হয়। কিন্তু সেই সন্ত্রাসী যে এত মানুষ মারল, সেটি নিয়ে কোনো কথাবার্তা নাই। পৃথিবীতে কিছু মানবাধিকার সংগঠন আছে যেগুলো মূলত মানবাধিকারের ব্যবসা করে। যে সমস্ত বিশ্ববেনিয়া মানবাধিকারের কথা বলে এবং বাংলাদেশেও যারা মানবাধিকার নিয়ে কথা বলেন, ফিলিস্তিনে পাখি শিকার করার মতো মানুষ শিকার করা হচ্ছে, সাধারণ মানুষসহ দশ হাজারের বেশি নারী ও শিশুকে হত্যা করা হলো, কিন্তু এটি নিয়ে বড় বড় সংগঠনগুলোর কোনো কথা ও বিবৃতি নেই। অথচ তারা বরিশালে একজন আরেকজনকে ঘুষি মারল এবং কোথায় কিছু মানুষ একজনকে ধাওয়া করল- সেজন্য বিবৃতি দিল। আমি কথাগুলো বলছি কারণ আগামী পরশু দিন ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে ১৯৭৫ সালে। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বেই ইন্ডেমিনিটি অধ্যাদেশ এবং সেটিকে আইনে পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ করা হয়। দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে ১৯৭৭ সালে। সে বার নির্বিচারে সেনা অফিসার ও বিমান বাহিনীর অফিসারদেরকে বিনা বিচারে হত্যা করা। একজনের নামের সঙ্গে আরেকজনের মিল আছে, সেজন্য ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেয়া হয়। এমনকি ফাঁসি কার্যকর হবার পর রায় হয়েছে- এমন ঘটনাও আছে। তারপর ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা; ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে চলেছে মানুষ পোড়ানোর মহোৎসব। এগুলো চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা।’
তিনি বলেন, ‘কিছু বিবৃতিজীবী আছেন, বিবৃতি দেয়াই তাদের পেশা। বাংলাদেশেও কিছু বিবৃতিজীবী আছেন, ইদানিং অবশ্য তাদের দেখা যাচ্ছে না। দেশে যেভাবে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, অথচ এখন তাদের বিবৃতি দেখতে পাচ্ছি না। এই বিবৃতিজীবীরা কই? জনগণ এদের খুঁজছে, আমিও তাদের খুঁজছি। আমি একটু উদ্বিগ্ন তাদের জন্য। তারা জ্বর কিংবা ডেঙ্গুতে আক্রন্ত হলো কি না- তা নিয়ে মানুষ চিন্তায় আছে।’
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘ফিলিস্তিনে হামলা চালিয়ে একই হাসপাতালে একসঙ্গে পাঁচ শ’ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আরেকটি হাসপাতালে হামলা চালিয়ে হাসপাতালকে অকেজো করে দেয়ার পর সেখানে আইসিইউ’তে থাকা সবগুলো মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। এই ধরনের চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন বিশ্ববেনিয়ারা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেছে। আবার ইসরাইলি বাহিনী যাতে ভালো মতো বোমা বর্ষণ করতে পারে সেজন্য সহায়তাও করছে।
‘বিশ্ব প্রেক্ষাপটে এ মানবাধিকার লঙ্ঘন, এতে আমরা চুপ থাকতে পারি না। আমি প্রথম থেকেই এটার বিরুদ্ধে সোচ্চার আছি এবং থাকব। আমাদের সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীও আছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে গিয়ে এটার বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছেন। আরব রাষ্ট্রগুলোর সমস্ত রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বসে এ ব্যাপারে করণীয় নির্ধারণ করার জন্য তাদের অনুরোধ জানিয়েছেন।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কেউ হরতাল-অবরোধের ডাক দিতে পারে, সরকার পতনের ডাক দিতে পারে, সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখতে পারে, এটিই গণতান্ত্রিক ও বহুমাত্রিক সমাজের রীতি। কিন্তু ঘরে বসে সেই ডাক দিয়ে গাড়ির মধ্যে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা, সেটি তো কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নয়। এগুলো একদিকে যেমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, অপরদিকে মানুষের অধিকার এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন করা। আমি আশা করব, সাংবাদিকরা এগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলবেন, কলম ধরবেন।’
শ্রমিক অধিকারের নামে বছরে ১২ বার বিদেশ সফরকারী দুয়েকজন শ্রমিক নেতা কারও এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে কি না- প্রশ্ন রেখে সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘দেখা গেল, আলপনা আক্তার, কল্পনা আক্তার, জল্পনা আক্তাররা বছরে ১২ বার বিদেশ গেছেন, ১৮-২০ লাখ টাকা বিমান ভাড়া দিয়েছেন। এদের কারও কারও আবার গাড়ি আছে, ঢাকা শহরে বড় বড় ফ্ল্যাট আছে। শ্রমিক সমাবেশে যাবার সময় কিছু দূরে গাড়ি রেখে হেঁটে কিংবা রিকশায় যান, যদি শ্রমিকরা গাড়ি দেখে ফেলে। এরা কীভাবে এবং কারও এজেন্ট হিসেবে কাজ করে সেটি আজকে স্পষ্ট। এ সমস্ত এজেন্টের ব্যাপারেও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমি সাংবাদিক সমাজের কাছে অনুরোধ জানাবো তাদের মুখোশ উন্মোচন করার জন্য।’
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলামের সঞ্চালনায় ও সভাপতি তপন চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ শহীদুল আলম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আলী আব্বাস, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য কলিম সরওয়ার, সিইউজে’র সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি রুবেল খান, সহ-সভাপতি অনিন্দ্য টিটু, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক প্রমুখ।
আরও পড়ুন:কোনো নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আওয়ামী লীগ উদ্বিগ্ন নয় বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, সংবিধান মেনেই আমরা স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। এখানে নিষেধাজ্ঞা আসবে কেন? কোনো নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আওয়ামী লীগের উদ্বেগ নেই।
ওবায়দুল কাদের শুক্রবার দুপুরে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। খবর বাসসের
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি নিষেধাজ্ঞা দিতে চায় তাহলে বিএনপি ও তার দোসররাই নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। নিষেধাজ্ঞা আসলে বিএনপির বিরুদ্ধে আসবে। বিএনপিই নির্বাচনের পথে প্রধান অন্তরায়। তাদের বিরুদ্ধে এখনও কেন নিষেধাজ্ঞা আসছে না?
ওবায়দুল কাদের বলেন, পোশাক খাতের শ্রমিকদের নিজেদের স্বার্থে ব্যবহারের পাঁয়তারা আছে। দেশেও আছে, বিদেশেও আছে। পোশাক খাতের স্বার্থেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রমিকদের বেতন বাড়িয়েছেন। এ খাতের শ্রমিকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বর্তমান সরকার আন্তরিক। পরবর্তীতেও এ সরকার ক্ষমতায় আসলে সংসদে নতুন শ্রম আইন প্রণয়নে ব্যবস্থা নেবে। এ নিয়ে পানি ঘোলা করার দরকার নেই। যারা করছেন নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে করছেন।
জোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে তিনি বলেন, যা হবার ১৭ তারিখের আগে হবে। এরপর আর এ সমস্যা থাকবে না।
নির্বাচনের দিন ভোটার উপস্থিতি ভালো হবে এমন আশা প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো বাধা বিপত্তি, হুমকি, নাশকতা, অগ্নি সন্ত্রাস এ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধা হতে পারবে না। নির্বাচনমুখী ভোটাররাই যারা নির্বাচনে বাধা দিতে আসবে তাদের প্রতিহত করবে। আজকে বিএনপি ও তার সহযোগীরা নির্বাচনে অংশ নেয়নি। এরপরও নির্বাচন নিয়ে উৎসাহ উদ্দীপনা, জাগরণের কমতি নেই। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ও সুজিত রায় নন্দী এবং দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য