লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ ইব্রাহিম ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুনসহ ১৬১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন শনিবার সকালে নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে শুক্রবার রাতে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আনিছুজ্জামান মামলাটি করেন। এতে ছাত্রদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক ছাত্রদল নেতা জুয়েল আহমেদ, জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি আবদুর রহিম রাজন, আবদুল আজিজ মিশু, পৌর ছাত্রদলের সভাপতি আবুল বারাকাত সৌরভ, সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক হাছিবুর রহমান অভি, যুগ্ম আহ্বায়ক ইসমাইল হোসেন রনি, ছাত্রদল নেতা বায়েজীদ ভূঁইয়া, কাউছার আহমেদ ও রানা।
জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ওপর হামলার প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ মিছিল
বের করলে পুলিশ তাদের ওপর হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে আহত করে। এখন উল্টো নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।’
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
ওসি মো. মোসলেহ উদ্দিন জানান, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ওপর হামলার প্রতিবাদে লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রদলের উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন নেতা-কর্মীরা। দুপুরে কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির বাসভবনের সামনে থেকে মিছিল বের করে জেলা ছাত্রদল।
এ সময় মিছিলটি গোহাটা সড়ক প্রদক্ষিণ শেষ করে বাজারের দিকে আসতে চাইলে বাধা দেয় পুলিশ। এতে পুলিশ ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ লাঠিপেটা করলে আহত হন ছাত্রদলের ৫ নেতা-কর্মী।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামি এলাকায় একটি বহুজাতিক কোম্পানির জুতার কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিটের প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুম সূত্র জানায়, শুক্রবার বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে কারখানাটিতে আগুন লাগে। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট। অবশেষে সন্ধ্যা ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ফায়ার স্টেশনকর্মী শিবলি সাদিক বলেন, ‘কারখানা ভবনটি ছয় তলাবিশিষ্ট৷ এই ভবনের দ্বিতীয় তলায় অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। পরে ভবনের বিভিন্ন তলায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
‘খবর পেয়ে বায়েজিদ ও আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশনের সাতটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কেউ হতাহত হওয়ার কোনো খবর পাওয়া যায়নি। আগুন লাগার কারণ বা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কেও কিছু জানা যায়নি।’
বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি সঞ্জয় কুমার সিনহা বলেন, ‘বায়েজিদ বোস্তামি এলাকায় টেক্সটাইল মোড়ের রংদা ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি কারখানায় জুতার সোল তৈরি করা হয়। এটি চীনের একটি বহুজাতিক কোম্পানির মালিকানাধীন।
‘ছুটির দিন হওয়ায় কারখানায় কোনো কর্মী ছিলেন না। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে দ্রুত কাজ শুরু করে।’
আরও পড়ুন:নীলফামারীতে জমির জন্য বাবার মরদেহ দাফন করতে বাধা দিয়েছেন ছেলে। বাবার কবরে শুয়ে কবর দিতে বাধা প্রদান করেন তিনি। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে দাফনকার্য সম্পন্ন হয়।
শুক্রবার নীলফামারী সদর উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের যাদুরহাট বাটুলটারিতে এ ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার রাতে মারা যান ওই এলাকার বাসিন্দা মজিবুর রহমান। জমি রেজিস্ট্রির করার আগে বাবার মৃত্যু হওয়ায় ছেলে নওশাদ আলী মরদেহ দাফনে বাধা দেন ছেলে নওশাদ আলী।
স্থানীয়রা জানান, সদ্য প্রয়াত মুজিবুর রহমানের দুই স্ত্রী রয়েছেন। মৃত্যুর আগে দ্বিতীয় স্ত্রীকে ২ শতাংশ ও ছোট ছেলেকে ৫ শতাংশ জমি লিখে দেন তিনি। প্রথম স্ত্রীর তিন ছেলের মধ্যে ওয়াজেদ আলী, খয়রাত আলী ও নওশাদ আলীকে মৌখিকভাবে ৩ শতাংশ জমি প্রদান করেন বাবা মজিবুর রহমান। কিন্তু মৃত্যুর আগে প্রথম পক্ষের তিন ছেলেকে দেয়া জমি রেজিস্ট্রি করে না দেয়ায় বাবার মরদেহ দাফনে বাধা দেন নওশাদ। এক পর্যায়ে কবরে শুয়ে পড়েন তিনি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চাপড়া ইউনিয়নের পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মাহাবুল ইসলাম বলেন, ‘জমি লিখে না দেয়ায় বাবাকে কবর দিতে বাধা প্রদানের ঘটনাটি আসলেই দুঃখজনক। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।’
রাঙামাটির সাজেক উপত্যকায় পণ্য পরিবহনের সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ের খাদে পড়ে এক মাহেন্দ্র চালক নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার দুপুরে সাজেকের কংলাক পাহাড়ে যাওয়ার সময় প্রাণ কোম্পানির পণ্যবাহী মাহেন্দ্রটি খাদে পড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ৩৫ বছর বয়সী চাঁন মিয়া দীঘিনালা উপজেলার উত্তর রশিক নগর এলাকার তৈয়ব আলীর ছেলে।
জানা যায়, গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারালে প্রাণ কোম্পানির ২ প্রতিনিধি লাফ দিয়ে নেমে গেলেও রক্ষা হয়নি চালকের। অন্তত ১৫০ ফুট পাহাড়ের নিচে পড়ে গাছের সঙ্গে আটকে যায় গাড়িটি। এতে মাথা ফেটে মগজ বের হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন চাঁন মিয়া।
সাজেক থানার ওসি আবুল হাসান খান দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আইনগত প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে হাজার হাজার মৃত জেলিফিশের পর এবার ভেসে এলো দুটি মৃত কচ্ছপ। এদের একটির ওজন প্রায় ৪০ কেজি, অন্যটির ৩৫ কেজি।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টের পশ্চিম দিকে কচ্ছপ দুটিকে দেখতে পান কুয়াকাটা ডলফিন রক্ষা কমিটির সদস্য কেএম বাচ্চু। পরবর্তীতে সেগুলোকে মাটিচাপা দেয়া হয় বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
বাচ্চুর ধারণা, ডিম ছাড়তে কচ্ছপগুলো উপকুলে এসেছিল। তবে শক্ত কোনো কিছুর সঙ্গে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে এগুলো মারা গিয়েছে।
কচ্ছপ দুটির মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটনের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলেও জানান কুয়াকাটা ডলফিন রক্ষা কমিটির এ সদস্য।
এ বিষয়ে ইকোফিশ-২ বাংলাদেশ প্রকল্পের সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, ‘মূলত কদিন ধরে সমুদ্রে জেলিফিশের আধিক্য বেড়ে যাওয়ার কারণে কচ্ছপ দুটি তীরে আসতে পারে। কারণ এই কচ্ছপগুলো জেলিফিশ খেতে পছন্দ করে।’
তিনি জানান, যে দুটি কচ্ছপ এসেছে, এদের বৈজ্ঞানিক নাম লেপিডোসেলিস ওলিভেসিয়া (Lepidochelys Olivacea)। এরা সাধারণত ৫০ বছরের বেশি বেঁচে থাকে।
কুয়াকাটা ডলফিন রক্ষা কমিটির সদস্য আবুল হোসেন রাজু বলেন, ‘একটি কচ্ছপের লেজে আঘাতের চিহ্ন ছিল এবং সেখান থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। সম্ভবত, কোনো কিছুর সঙ্গে আটকে তাদের মৃত্যু হয়েছে।’
তিনি জানান, এর আগে ২০২৩ সালের মাঝামাঝি বেশকিছু কচ্ছপের দেখা মিলছিল এই সৈকতে। তবে ২০২৪ সালে এই প্রথম মৃত কচ্ছপ এসেছে কুয়াকাটায়। এসব সামুদ্রিক প্রাণীর মৃত্যু সমুদ্রের পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ বলে জানান রাজু।
কলাপাড়া উপজেলার বনবিভাগ মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ নিউজবাংলাকে বলেন, খবর পেয়ে ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত চলে আসি। মৃত কচ্ছপ থেকে দূর্গন্ধ ছড়ানোর কারণে তাৎক্ষণিক সেগুলোকে মাটিচাপা দেয়ার ব্যবস্থা করেছি।’
প্রসঙ্গত, গত প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে কুয়াকাটা সৈকতজুড়ে হাজার হাজার মৃত জেলিফিশের কারণে পর্যটকসহ জেলেদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গত এক যুগের তুলনায় এ বছর অস্বাভাবিক হারে মৃত জেলিফিশ সৈকতে ভেসে আসছে।
কেন প্রতি বছর ঠিক এই সময়টাতেই সৈকতে মৃত জেলিফিশের আবির্ভাব ঘটে, সেটি নিয়ে বিভিন্ন দপ্তর গবেষণা করলেও আজ অবধি এর সদুত্তর মেলেনি।
আরও পড়ুন:ইতালি নেয়ার কথা বলে লিবিয়ায় আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির আলোচিত ঘটনায় ৭ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন ভুক্তভোগীর বাবা। মামলার পর মানবপাচার দলের প্রধান মুকুল ঠাকুরের মেয়ে-জামাতা ফরিদপুরের সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এসএম শাকিল হোসাইনকে গ্রেপ্তার করেছে সালথা থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তার হওয়া এসএম শাকিল হোসাইন উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের বিভাগদী গ্রামের মৃত নওফেল মাতুব্বরের ছেলে। বর্তমানে তিনি সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। কয়েক মাস আগে তিনি বিয়ে করেন পার্শ্ববর্তী রামকান্তপুর ইউনিয়নের রামকান্তপুর গ্রামের মুকুল ঠাকুর নামক এক ব্যক্তির মেয়েকে।
শুক্রবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সালথা থানার ওসি মোহাম্মাদ ফায়েজুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘মুক্তিপণের দাবিতে লিবিয়ায় ভিকটিম শাকিলকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে। এ ঘটনায় শাকিলের বাবা টিটুল মিয়া প্রথমে মামলা করতে চাননি। অবশেষে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেলে মানবপাচার দমন আইনে ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি।’
ওসি বলেন, ‘মামলার পর শুক্রবার সকালে আসামি শাকিলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি মামলার প্রধান আসামি মুকুল ঠাকুরের মেয়ে-জামাতা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাকিল অনেক তথ্য দিয়েছেন।’
ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল নগরকান্দা) মো. আছাদুজ্জামান বলেন, ‘লিবিয়ায় শাকিলের ওপর নির্মম নির্যাতন ও মুক্তিপণের বিষয়টি প্রথম থেকেই আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে আসছি। এ ঘটনায় জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি ভিকটিমকে উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
প্রসঙ্গত, অভাবের সংসারে পরিবারের মুখে একটু হাসি ফোটাতে লেখাপড়া বাদ দিয়ে চার মাস আগে প্রতিবেশী মুকুল ঠাকুর নামের এক দালালের মাধ্যমে ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে ইতালির উদ্দেশ্য রওয়ানা হন শাকিল মিয়া। কিন্তু দালালরা তাকে ইতালির বদলে লিবিয়ায় নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তাকে আটকে রেখে দালালরা আরও ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। একইসঙ্গে শাকিলের ওপর চলতে থাকে নির্মম নির্যাতন।
আরও পড়ুন:ঈদযাত্রায় মানুষের ভোগান্তি ও গলার কাঁটা ছিল উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়ক, কিন্তু এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তির করতে মহাসড়কে পুরোদমে চলছে চার লেন প্রকল্পের কাজ।
সড়কে গাড়ির চাপ সামাল দিতে ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম পাড় থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত চার লেন চালু করা হয়েছে। ঘরমুখো মানুষের যাতায়াতের স্বস্তি ফেরাতে দ্রুতই কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন যাত্রী ও চালকেরা।
সংশ্লিষ্টরাও ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ওই সব স্থানে রাত-দিন কাজ করছে।
তারা জানান, বছরের দুইটি ঈদের সময় বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার মহাসড়ক পারাপারে যাত্রী ও চালকদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হতো। প্রতিদিন উত্তরের ২২ জেলার প্রায় ২০ থেকে ২২ হাজার যানবাহন চলাচল করলেও ঈদযাত্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার ছাড়িয়ে যায়। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট, কিন্তু এবার সে চিত্র হবে অন্যরকম।
সাসেক-২ প্রকল্পের সুফল পাবে এ অঞ্চলের মানুষ। বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড় থেকে বগুড়ার মির্জাপুর পর্যন্ত দুই লেনের মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প চলমান রয়েছে। এ প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৮০৫ কোটি টাকা।
চালক ও যাত্রীরা জানান, ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে রাস্তা উন্নীতকরণ ও ফ্লাইওভার নির্মাণকাজ অধিকাংশ জায়গায় শেষ হলেও হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় আন্তর্জাতিক মানের ইন্টারচেঞ্জ নির্মাণকাজের অনেক জায়গায় চার লেনের কাজ চলমান রয়েছে। এর ফলে কিছু কিছু জায়গায় রাস্তা সরু হয়ে গেছে।
এসআই এন্টারপ্রাইজ বাসের চালক হাফিজুর রহমান বাবু বলেন, বিগত দিনের চেয়ে এ বছর মহাসড়কের অবস্থা অনেক ভালো। বগুড়া পর্যন্ত চার লেনের কাজ শেষের দিকে। কিন্তু এখনও অনেক জায়গায় খানাখন্দ রয়েছে। ঈদের আগে মেরামত করা হলে যানজট হবে না।
শ্যামলী পরিবহনের চালক জাহিদুল ইসলাম বলেন, বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কের ভূঁইয়াগাতী থেকে ঘুড়কা বেলতলা পর্যন্ত ঈদযাত্রায় সমস্যা হতে পারে। দ্রুত এ স্থান সংস্কার ও মহাসড়কে পুলিশ মোতায়েন থাকলে যানজট থাকবে না।
সাউথ এশিয়ান সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক-২) প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ঈদযাত্রায় ঘরে ফেরা মানুষের যাতায়াতে যেন বিঘ্ন না ঘটে, এ জন্য হাটিকুমরুল মোড়ে এক মাস আগেই কংক্রিটের রাস্তা মেরামত করে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ চারটি লেনের মেরামত কাজ শুরু করেছে।
তিনি বলেন, বিশেষ করে কড্ডার মোড় ও নলকার মোড়ে প্রতি বছর যানজট বেশি দেখা গেলেও, এবার এ জায়গাগুলোতে আন্ডারপাস খুলে দেয়ায় দূরপাল্লার গাড়িগুলো ওপর দিয়ে চলে যাবে। আর অন্য গাড়িগুলো আন্ডারপাসের নিচ দিয়ে চলাচল করলে আশা করা যাচ্ছে, এ বছর যানজট হবে না। এবারের ঈদযাত্রা হবে অনেকটা স্বস্তিদায়ক।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বলেন, এ বছর মহাসড়কের অবস্থা খুবই ভালো। ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করে সব তথ্য সড়ক বিভাগের কর্তৃপক্ষকে দেয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ সেগুলো ৩১ মার্চের মধ্যে সংস্কার করে দেয়ার কথা দিয়েছেন।
তিনি জানান, ঈদযাত্রায় মানুষের নিরাপদে ঘরে ফেরা ও নিশ্চিন্তে যাতায়াতে মহাসড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৭৫০ জন পুলিশ মোতায়েন করা হবে। মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ থাকবে, সেই সঙ্গে বেশ কয়েকটি মোবাইল টিম থাকবে।
আরও পড়ুন:নীলফামারী সদরে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সদরের সোনারায় ইউনিয়নের আরাজি কুখাপাড়া বাবুরহাট গ্রাম থেকে বৃহস্পতিবার রাতে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় শোভা রাণী রায় নামের ওই নারীর স্বামী দীপু রায়কে পুলিশ আটক করেছে।
প্রাণ হারানো শোভা রানী রায় সদর উপজেলার কচুকাটা ইউনিয়নের মহববত বাজিতপাড়া এলাকার হরিপদ রায়ের মেয়ে। তার স্বামী দীপুর বাড়ি দিনাজপুরের চিরির বন্দরের ফেরসাডাঙ্গা এলাকায়।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, পাঁচ বছর আগে শোভার স্বামীর মৃত্যু হয়। শোভা ও দীপু উভয়েই নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে চাকরি করতেন। ইপিজেডে চাকরির সুবাদে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
পুলিশ আরও জানায়, দীপু রায় তার প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে গত ৪ মার্চ শোভা রায়কে বিয়ে করেন। ঘটনার আগে নীলফামারী সদরের নারায়ণ মাস্টারের ভাড়া বাসায় প্রথম স্ত্রী নমিতা রাণী রায় দীপুর খোঁজ নিতে এলে প্রথম বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হন শোভা। এর পর থেকে এ নিয়ে দীপুর সঙ্গে তার বিবাদ সৃষ্টি হয়।
নীলফামারী সদর থানার ওসি তানভীরুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে দীপু রায় বাসায় এসে তার দ্বিতীয় স্ত্রী শোভাকে ডাকাডাকি করেও সাড়া পাননি। তখন পাশের জানালা দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় শোভাকে দেখতে পান। পরে অন্য ভাড়াটিয়ারা দীপুকে ধরে পুলিশে খবর দিলে বাহিনীর সদস্যরা এ ব্যক্তিকে আটকের পাশাপাশি মরদেহটি উদ্ধার করেন।
ওসি আরও জানান, দীপুর প্রথম বিয়ের বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে শোভা আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে স্বামী দীপুকে আটক করা হয়।
আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে শোভার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশর এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য